মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবদান
লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের
১৬
পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে শান্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায়
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/421/16
অন্যান্য অনেক ধর্মগুরু, ধর্মপ্রচারক বা মহাপুরুষের পারিবারিক ও সামাজিক জীবন কিভাবে কেটেছে তা জানা যায় না। কিন্তু সম্ভবত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর পারিবারিক ও সামাজিক জীবন সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি আলোচনা পর্যালোচনা হয়েছে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পারিবারিক জীবনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। 'বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি'র পথ তিনি পরিহার করে চলেছেন। বরং তার মতে পরিবার ও সমাজে শান্তি, সাম্য, ন্যায়বিচার ও আল্লাহ পাকের আনুগত্য করাই প্রকৃত ধর্মাচরণ। আমরা ইতোপূর্বে 'বিবাহ' ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিবারের ভিত্তি রচনা, উত্র সন্তানের পাশাপাশি কন্যা সন্তানকে স্বাগত জানানো এবঙ কন্যাকে অধিক গুরুত্বদান, স্ত্রীর অধিকার প্রভৃতি সম্পর্কে তাঁর জীবন-দর্শন আলোচনা করেছি- যেখানে দেখা গেছে মানুষের জীবনের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে অধিকার ও মানবতা প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। এখানে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান সম্পর্কে অন্য কয়েকটি বিশেষ দিকের উপর আলোকপাত করা হলো:
মানবাধিকারের এই উচ্চকণ্ঠের যুগে পরিবার-ব্যবস্থা ক্রমশ যেখানে দূর্বল হয়ে পড়ছে, নগরায়ন ও শহরায়নের পাশাপাশি লাগামহীন ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পরিবারের নির্ভরশীল সদস্য বিশেষত শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও অন্যান্যদের প্রতি ক্রমশ নিরাপত্তহীনতা, অধিকার না পাওয়ার ও লাঞ্চনার আশংকা বাড়ছে। অথচ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দৃঢ়ভাবে পারিবারিক দায়িত্ব পালনে তাগিত দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে পিতা-মাতার সাথে সন্তানের সম্পর্ক ও দায়িত্বের কথা স্পষ্ট ঘোষণা করে বলা হয়েছে: "তোমরা কখনো তাদের প্রতি বিরক্তিসূচক হুঁ অথবা উঃ শব্দটি উচ্চারণ করবে না। প্রত্যক্ষ পরোক্ষ উভয়ভাবেই মাতার সম্মান করবে। ভাষায় নম্র এবং অন্তরেও বিনয়ী হবে।" [.আল্-কুরআন, সূরা বনী ইসরাইল : ৩।]
মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে মা-বাবার সম্মান-মর্যাদা ও পরিবারে তাদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি কুরআনের নির্দেশনার আলোকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেছেন, "তোমাদের মাতা তোমাদের চেয়ে শ্রদ্ধার পাত্রী" (বুখারী, কিতাবুল আদাব)। বলতেন, "মাতা পিতার সন্তুষ্টি ব্যতীত বেহেশতের দ্বার উন্মুক্ত হবে না" (তিরমিযী, কিতাবুল বিরর ওয়াসসিলা)। [.মাওলানা মুহাম্মদ যখীরুদ্দিন পূরানুভীহাভী, ইসলামের যৌন বিধান (মাওলানা মুহাম্মাদ হাসান রহমতী অনূদিত), ইফাবা, ১৯৮৭, পৃ. ২৭।] নিজের পরিবারে যিনি সততা, ন্যায়পরায়ণতা, দায়িত্ববোধ ও সকল সদস্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না তিনি যতই জগৎ জয় করুন, শ্রেষ্ঠ মানুষ হতে পারবেন না- এটিই মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জীবন দর্শন। অন্যদিকে তাঁর মতে, পরিবারে স্ত্রীর মর্যাদাও অনেক উঁচুতে। তিনি বলেছেন, "তোমাদের মধ্যে তারাই সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ব্যক্তি যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উৎকৃষ্ট এবং আপন পরিবার-পরিজনদের সাথে স্নেহশীল ব্যবহার করে"। [.হাফেজা আসমা খাতুন, পূর্বোক্ত, পৃ. ৫২।] মনে রাখতে হবে তাঁর যুগে এই কথা বলা ও পরিবারে তার অনুশীলন করা ছিল অত্যন্ত কঠিন এবং যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ।
কেবল নিজের পিতা-মাতা নয়, অন্যের পিত-মাতাকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের কথাও গুরুত্বের সাথে বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: "কবিরা গুনাহ্গুলোর মধ্যে সবচাইতে বড় গুনাহ্ হলো কোন লোকের পিতা-মাতার উপর লানত করা। কিজ্ঞাসা করা হলো: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কিভাবে কেউ নিজ পিতা-মাতার উপর লানত করতে পারে? তিনি বললেন, একজন অপরজনের পিতা-মাতাকে গালি দেয়। তখন সেও ঐ ব্যক্তির পিতা-মাতাকে গালি দেয় (নিজ পিতা-মাতার গালির কারণ হয়)। [.বোখারী, হাদীস নং ২৫০১, বাংলায় বোখারী শরীফ, পূর্বোক্ত, পৃ. ৬৯৬।] পিতা মাতার সেবা যত্ন সম্পর্কে তাঁর আরেকটি হাদীস প্রণিধানযোগ্য: "যে সন্তান তার পিতা-মাতার দু'জনের একজনকেও বার্ধক্যে পেলো, অথচা জান্নাতে যেতে পারলো না, তার মতো দূর্ভাগা আর নাই।" [.আল্-হাদীস, বোখারী ও মুসলিম থেকে উদ্ধৃত, হাফেজা আসমা খাতুন, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫২।] পারিবারিক জীবনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেমন ব্যবহার করতেন সে সম্পর্কে চমৎকারভাবে বলেছেন তাঁরই স্ত্রী আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা)। তাঁর ভাষায়, "রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাউকে তিরস্কার করতেন না। দূর্ব্যবহারের দ্বারা তিনি দূর্ব্যবহারের জবাব দিতেন না, বরং ক্ষমা প্রদর্শন করতেন। ... ব্যক্তিগত কারণে তিনি কারো উপর কোনদিন প্রতিশোধ গ্রহণ করেন নি। কোন দাস-দাসী, স্ত্রী বা চাকর-চাকরানী এমনকি কোন পশুকেও তিনি কোনদিন আঘাত করেন নি। কারো কোন সংগত আবেদন বা অনুরোধ তিনি কখনো প্রত্যাখ্যান করেন নি।" [.গাজী আবু হুরায়রা, ঘনিষ্ঠ সাথীদের দৃষ্টিতে মহানবী (সা.), সীরাত স্মরণিকা ১৪১৫ হিজরী, ইফাবা, ঢাকা, পৃ. ৭৩।]
পারিবারিক জীবনে তিনি নিজে স্ত্রীদের সাথে আমোদ-প্রমোদ এমনকি ঘরোয়া দৌড় প্রতিযোগিতা (খেলাচ্ছলে) পর্যন্ত করেছেন। তিনি নিজ হাতে নিজের টুপি বা জামা সেলাই করতেন, পরিবারের অন্যদের উপর কাজ চাপিয়ে দিতেন না। "নিজ হাতে বকরীর দুধ দহন করতেন। তরি-তরকারী কেটে দিতেন এবং ঘরের বিভিন্ন কাজে স্ত্রীগণকে সাহায্য করতেন।" [.মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র.), কুরআন হাদীসের আলোকে পারিবারিক জীবন, প্রাগুক্ত, পৃ. ১০২।] ... অর্থাৎ রাষ্ট্রনায়ক ও নেতা হিসাবে জগদ্বিখ্যাত হওয়ার পরও, বিশ্ব মানবতার এই মুক্তিদূত পারিবারিক জীবনকে মোটেই অবহেলা করেন নি বরং সেখানে প্রতিষ্ঠা করেছেন শান্তি, মানবতা ও অধিকারের উত্তম আদর্শ।
অন্যদিকে সামাজিক জীবনে আত্মীয়-পরিজন প্রতিবেশী সকলের সাথে সদ্ব্যবহার, সৌহার্দপূর্ণ আচরণ, মমতার বন্ধন ও সহনশীলতা রচনা করার জোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি। আত্মীয় সম্পর্কের উপর তিনি কতখানি জোর দিয়েছেন তা নিম্নোক্ত ৩টি হাদীসের আলোকে বোঝা যাবে। [.বুখারী, হাদীস নং ২৫০৩, ২৫০৫ ও ২৫০৮, বাংলায় বুখারী শরীফ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৬৯৬-৯৭।]
ক. "আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী বেহেশতে প্রবেশ করবে না।"
খ. "যে ব্যক্তি হায়াত ও রিজিক বৃদ্ধি পছন্দ করে সে যেন আত্মীয়দের সাথে সদ্ব্যবহার করে।" ও
গ. "রক্ত সম্পর্কিত আত্মীয়তা ডালস্বরূপ। যে ব্যক্তি এর সাথে সম্পর্ক জুড়ে রাখে, আমি তার সাথে সম্পর্ক জুড়ে রাখি। আর যে ব্যক্তি এর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি।"
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/421/16
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।