hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবদান

লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের

১৮
উপসংহার
উপসংহারে কয়েকটি বিশেষ দিক উল্লেখ একান্ত প্রয়োজন। প্রথমত, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছেন তা ছিল পবিত্র কুরআনের বর্ণিত আদেশ-নির্দেশ এর হুবহু অনুরূপ। পবিত্র কুরআন তার স্বাক্ষী দিচ্ছে: "মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজের ইচ্ছায় কিছুই বলেন না। তিনি তো তাই বলেন যা তাঁর নিকট আল্লাহর ওহীরূপে আসে।" অর্থাৎ তাঁর প্রত্যেকটা কথা আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীনের কথা, আর তাঁর প্রতিটি কাজ আল্লাহ্‌র বিধি-নিষেধের বাস্তবায়ন ব্যতীত আর কিছুই নয়। [.মাওলানা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, প্রাগুক্ত, পৃ. ৭৮।] সুতরাং নিজের ইচ্ছায় বা খেয়াল খুশিমত তিনি কিছুই করেন নি। তিনি যে জীবনদর্শন, মানবিক মর্যাদার রূপরেখা, মানবাধিকারের পরিধি ও সীমা নির্দিষ্ট করেছেন তা মহান আল্লাহ্‌ পাকেরই অনুমোদিত জীবন বিধান। একমাত্র স্রষ্টাই জানেন সৃষ্টির কিসে মঙ্গল কিসে অমঙ্গল। সমগ্র সৃষ্টি জগতের সবচেয়ে প্রিয় এবং সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে 'মানুষ'। সেই প্রিয় সৃষ্টির পথচলার দিকনির্দেশনা হচ্ছে মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কেননা, আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) যেমন বলেছেন: রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছিলেন 'জীবন্ত কুরআন'। সুতরাং সেই জীবনদর্শন সার্বজনীন ও সার্বিক কল্যাণকর হবে তাতে আর সন্দেহ কি !

দ্বিতীয়ত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এই জীবন বিধান- যা মানবাধিকারের প্রথম মৌলিক এবং পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা হিসাবে স্বীকত তা কেবল কোন লিখিত দলীল নয়, কোন স্বাক্ষরিত চুক্তি নয়, কোন অনুকল্প (hypothesis) নয়, বরং তা হচ্ছে কঠোর বাস্তবতা। নিজের শৈশব থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ৬৩ বছরের প্রত্যক্ষ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে আদর্শ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রত রেখে নিজের জীবদ্দশাতেই একটি ধ্বংসস্তুপ থেকে, একটি পুঁতিগন্ধময় অন্ধকার আস্তাকুড় থেকে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও মানবিক মূল্যবোধকে তুলে এনে এক সুষম লাগসই, অনুসরণযোগ্য, সার্বজনীন কল্যাণকর সভ্যতা গড়ে তুলেছিলেন। মানবাধিকার মানুষের মর্যাদা ও আল্লাহ্‌ পাকের আনুগত্যই ছিল যার ভিত্তি।

তৃতীয়ত, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এই জীবন বিধান যা বর্তমান প্রবন্ধে তুলে ধরা হয়েছে তা পৃথিবীর সবচাইতে বেশি যাচাইযোগ্য, নির্ভূল বা বিশ্বাসযোগ্য গ্রন্থসমূহে সংকলিত, সবচেয়ে বেশি ভাষায় অনূদিত এবং সুরক্ষিত গ্রন্থপুঞ্চ বা তথ্যউৎস থেকে নেয়া- যার ভিত্তি হলো ১. আল্-কুরআন এবং ২. সহীহ হাদীস গ্রন্থসমূহ। সুতরাং এখানে উদ্ধৃত মৌলিক বিষয়গুলো ঐতিহাসিকভাবে এবং গবেষণা সাহিত্য পর্যালোচনার (literature review) দিক দিয়েও যে কোন ধরনের সংশয় ও সন্দেহের ঊর্ধ্বে।

মানবতার মুক্তিদূত নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জীবনে এই অর্জন, এই স্পষ্ট সর্বজনগ্রাহ্য কল্যাণকর জীবন বিধান বিশ্বের অনেক গবেষক, সাহিত্যিক, দার্শনিক ও পণ্ডিত ব্যক্তিদের দ্বারা শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি পেয়েছে। "জর্জ বার্ণাড শ' তার একাধিক লেখায় মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আদর্শি পৃথিবীতে সুখ ও শান্তি দিতে পারে বলে দৃঢ়তার সাথে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন: "I have prophesied about the faith of Muhammad that is would be acceptable tomorrow as it is beginning to be acceptable to the Europe of today." [.অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম, "পাশ্চাত্যের প্রাচ্যবিদদের নজরে মুহাম্মদ (সা.)", সীরাত স্মরণিকা ১৪১৭ হিজরী, ইফাবা, ঢাকা, পৃ. ৫৬।] মাইকেল হার্ট 'দ্য হানড্রেড : একশ জন ব্যক্তির শ্রেষ্ঠত্বের ক্রম-বিন্যাস করেছেন। তালিকার প্রথমেই (অর্থাৎ ১ নম্বরে) মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে নির্দ্বিধায় দাঁড় করিয়ে তিনি লিখেছেন: "My choice of Muhammad to lead the list of the world's most influential persons may surprise some readers and may be questioned by others, but he was the only man in history who was supremely successful on both the religious and secular levels." [.প্রাগুক্ত, পৃ. ৫৫।]

সুতরাং তাঁর এই ভাবমূর্তি এমনকি অমুসলিম পণ্ডিত গবেষকদেরও নজরে এসেছে, যে ক'টি প্রধান কারণে- তাঁর উদার মানবতাবাদ, শান্তি ও সাম্যবাদ, মানবাধিকারের জন্য আদর্শ নীতি-দর্শন ও তাঁর বাস্তব প্রতিফলন এর মধ্যে অন্যতম। নির্দ্বিধায় তাই বলা যায়, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছিলেন মানব মর্যাদা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ।

আজ যেখানে সারা বিশ্বে সার্বজনীন মানবাধিকার চরম হুমকির সম্মুখীন; আন্তর্জাতিক, রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক সন্ত্রাসবাদের কবলে পড়ে মানুষের জীবন যখন একেবারেই তুচ্ছ হয়ে পড়েছে; ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে চরম উচ্ছৃঙ্খলতা, হত্যা-ধর্ষণ, সম্পদ লুণ্ঠন, ঘুষ-দুর্নীতি, অবিচার-অত্যাচার, সম্ভ্রমহানী, মত প্রকাশের স্বাধীনতার অভাব এবং মৌল মানবিক চাহিদার অপূরণ জনিত কারণে মানবতা ও মানবাধিকার যখন চরমভাবে লঙ্গিত হচ্ছে দিকে দিকে- তখন বিশ্ব প্রচলিত মানবাধিকার নীতিমালার সাথে তুলনামূলক গবেষণা বা বিচার বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রদত্ত মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদার নীতিমালাই আজকের দিনে গণমানুষের মুক্তির সর্বশ্রেষ্ঠ পথ ও পন্থা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন