hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবদান

লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের

দাসত্ব থেকে স্বাধীনতার অধিকার
দাসত্বের পরাধীনতা মাবেতিহাসের এক চরম অমানবিক ও অবমাননাকর অধ্যায়। এর প্রচলন ছিল বিশ্বব্যাপী এবং ১৮৯০ সালে ব্রাসেলসে দাস-ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ কনফারেন্সের পূর্ব পর্যন্ত বিশ্বের কোথাও এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধাচারণ করা হয়নি। "মানব প্রকৃতি অপরিবর্তনীয়" এ দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গীর ভিত্তিতে প্লেটো ও এরিস্টটল থেকে শুরু করে আঠারো শতকের অধিকাংশ দার্শনিক দাসপ্রথাকে সমর্থন করেছেন।

গ্রীক, রোমান, পারসিক প্রভৃতি প্রাচীন সভ্যতাসমূহে ইহুদী, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও সনাতন হিন্দু ধর্মে এমনকি আধুনিক ইউরোপ ও আমেরিকাতেও প্রথমদিকে দাস প্রথা স্বীকৃত প্রথার মর্যাদা পায়।" [.উদ্ধৃতি : মুহাম্মদ শফিক আহমদ ও মুহাম্মদ রুহুল আমীন, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬০।] এ থেকে অনুমিত হয় যে, এ প্রথাটির নৈতিকতা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রাথমিক কৃতিত্ব মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এরই প্রাপ্য।

মানবতার মুক্তিদূত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেই সপ্তম শতাব্দীতেই এ প্রথার বিরোধিতা ও এর বিলুপ্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করেছেন। এখানে তাঁর দর্শন ছিল : সমগ্র মানব জাতি একজন নারী ও পুরুষ থেকে উদ্ভূত, সুতরাঙ জন্মগতভাবে সকল মানুষ সমান ও স্বাধীন। "ইসলামের আবির্ভাব কালে, ... কৌশলগত কারণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে ইসলাম সাময়িকভাবে যুদ্ধবন্দীগণকে দাস-দাসীরূপে গ্রহণের বিষয়টি অনুমোদন করে। তবে, তাও এ শর্তসাপেক্ষে ছিল যে, এক. অনুগ্রহ প্রদর্শন পূর্বক মুক্তকরণ, দুই. মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্তকরা, তিন. বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে মুক্তকরণ। যখন এ তিনটি ব্যবস্থার কোনটির মাধ্যমে বন্দীমুক্তি সম্ভব হবে না কেবলমাত্র তখনই যুদ্ধবন্দীদেরকে দাস-দাসী হিসেবে গ্রহণ করা যাবে।" [.উদ্ধৃতি : প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬১।] রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অনুসৃত এ নীতির মূলে ছিল পবিত্র কুরআনের এই নির্দেশ: "তোমরা যখন তাদেরকে (শত্রু পক্ষকে) পরাভূত করবে তখন তাদের বন্দী করবে। অতঃপর অনুগ্রহ প্রদর্শণপূর্বক কিংবা মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্ত করে দিবে।" [.আল্-কুরআন, সূরা মুহাম্মাদ : ৪।] এ নীতির আলোকে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রবর্তিত ইসলামী রাষ্ট্রে গৃহীত কতকগুলো অভূতপূর্ব ব্যবস্থা সকল ধরনের দাস-দাসীর পুনরুদ্ধারের পথ খুলে দিয়েছিল, যাতে কিছুদিনের মধ্যে দাস প্রথা প্রকৃত অর্থে বিলুপ্ত হতে পারে। এগুলো হচ্ছে:

১. তাকতিব : এমন লিখিত দলীল যার মাধ্যমে দাস-দাসীরা তাদের স্বাধীন বৃত্তির দ্বারা উপার্জিত সম্পদের বিনিময়ে স্বাধীন হতে পারে; ২. তাদবির : দাসপতির মৃত্যুর পর স্বাধীনতা লাভের অধিকার সম্পর্কিত চুক্তি, ৩. ইসতিলাদ : প্রভুর সন্তান জন্মদান হেতু স্বাধীনতা লাভের অধিকার সম্পর্কিত আইনগত ব্যবস্থা [.এখানে উল্লেখ্য যে, এমনকি অষ্টাদশ শতকের শেষ ভাগ পর্যন্ত, আমেরিকা ও ফ্রান্সে কোন দাসীকে বিয়ে করার অপরাধে স্বাধীন পুরুষকেও তার সকল নাগরিক অধিকার হারাতে হত।], ৪. প্রভূ কর্তৃক গর্ভবতী হয়ে কোন দাসী কোন সন্তান প্রসব করলে সে সন্তান স্বাধীন মানুষের মর্যাদা লাভ করত; ৫. পিতা দাস হওয়া সত্ত্বেও একজন স্বাধীন নারীর গর্ভজাত সন্তান স্বাধীন হিসাবে স্বীকৃত হতো; ৬. যতদিন পর্যন্ত দাস প্রথা প্রচলিত ছিল ততদিন ইসলামী আইনে বিভিন্ন অপরাধের কাফ্‌ফারা হিসাবে দাস মুক্তির বিধান রাখা হয়েছিল এবং ৭. দাসদাসীদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যাকাতের অর্থ ব্যয় করার আইনগত ব্যবস্থা ঘোষিত হয়।

এসব আইনগত বিধানের পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাস-দাসী মুক্তির বিষয়টি অত্যন্ত পূণ্যের কাজ এবং আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের উপায় হিসেবে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেছেন, "যে মুসলিম একজন বিশ্বাসী দাস-দাসীকে মুক্ত করবে আল্লাহ মুক্ত দাস-দাসীর প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে দাসপতির প্রতিটি অঙ্গকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।"

তিনি আরো বলেন: "যে ব্যক্তি স্বীয় দাসীকে শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নত করার পর মুক্ত করে বিববাহ করবে সে দিগুণ সওয়াব পাবে ...।" বলা বাহুল্য, মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর এসব বাণী ও নীতিমালার ফলে বহু দাস-দাসী তাদের দাসত্ব থেকে মুক্তি লাভ করে। "স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাতষট্টি, আবূ বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) অসংখ্য, আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সত্তর, ওসমান (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বিশ, হাকীম ইব্‌ন হিযায (রাদিয়াল্লাহু আনহু) একশত, ইবন ওমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এক হাজার, আব্দুর রহমান ইবন আউফ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ত্রিশ হাজার দাসদাসীকে স্বাধীনতা দান করেন। [.মুহাম্মাদ আবুল হাসান থেকে উদ্ধৃত করেছেন মুহাম্মদ শফিক আহমদ ও মুহাম্মদ রুহুল আমিন, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬৩।] রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দাস প্রথা বিরোধী এসব নীতিমালা ও সক্রিয় নেতৃত্বের সুদূর প্রসারী ফল হিসাবে "খলীফাদের আমলে আরবের সকল দাস-দাসী স্বাধীনতা লাভ করে এবং আরবের দাসপ্রথার সমাধান এভাবে চল্লিশ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল।" [.উদ্ধৃত, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬৩।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন