hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবদান

লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের

১৭
বৃহত্তর সমাজ-জীবনে শান্তি, সাম্য ও অধিকার প্রতিষ্ঠায়
মুহাম্মাদ (সা.) নিজ পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের পর দৃঢ়ভাবে প্রতিবেশীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। মেহমানদের অধিকারও তিনি নির্ধারিত করেছেন। তাঁর মতে "যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষদিনে ঈমান রাখে, সে যেন অবশ্যই মেহমানের সম্মান করে, প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয় এবং অবশ্যই ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে।" [.প্রাগুক্ত, হাদীস নং ২৫২৩, পৃ. ৬৯৯।] মানুষ আজকের দিনেও তার অন্যান্য প্রতিবেশীদের অনিষ্ট থেকে মুক্ত নয়- তা সে সমাজ জীবনে হোক বা রাষ্ট্রীয় জীবনে হোক। অথচ নবী করীম (সা.) বার বার প্রতিবেশীর- তা সে যে ধর্ম, বর্ণ, যে গোত্রেরই হোক না কেন- সন্তুষ্টি ও তার সাথে ন্যায় বিচারের কথা বলেছেন। অত্যন্ত কঠোর ভাষায় তিনি ঘোষণা করেন: "আল্লাহ্‌র কসম! সে লোক মুমিন নয়, আল্লাহ্‌র কসম! সে লোক মুমিন নয়, আল্লাহ্‌র কসম! সে লোক মুমিন নয় ... যে লোকের অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী (তা সে যে-ই হোক) নিরাপদ নয়।" [.প্রাগুক্ত, হাদীস নং ২৫২১, পৃ. ৬৯৯।] সামাজিক শান্তির এর চেয়ে বড় দলীল আর কি হতে পারে।

বৃহত্তর সমাজ জীবনেও তিনি শান্তি, সাম্য, ভালবাসা, ভ্রাতৃত্ববোধ, পরস্পরের প্রতি অধিকার ও দায়িত্ববোধে উজ্জীবিত করেছেন বিশ্ববাসীকে। তাঁর সমাজ দর্শন এমনই যে, "মানুষ সহজ সরল বিনয়ী জীবন যাপন করবে। আচার-আচরণ, চলাফেরা ও কথাবার্তায় সে এমনভাবে থাকবে, যেন অপরের উপর নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ না পায়। মজলিসে বসলে এমনভাবে বসবে যেন নিজেকে মজলিসের প্রধান মনে না হয়।" [.মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (র.), প্রাগুক্ত, পৃ. ১০২।] সমাজকে তিনি দেখেছেন মানব দেহের মত করে। তিনি বলেছেন: "দয়া প্রদর্শনে, প্রেম-ভালবাসায়, মায়া-মমতায় এবং একের সাহায্যে অন্যের ছুটে আসাকে ঈমানদারগণ তার দেহের সমতুল্য করে দেখবে। দেহের কোন অঙ্গ ব্যাথা হলে গোটা দেহটাই অনিদ্রা ও জ্বরে তার শরীক হয়ে যায়।" [.বোখারী শরীফ, হাদীস নং ২৫৭১, বাংলায় বোখারী শরীফ, প্রাগুক্ত, পৃ. ৬৮৯, ৬৯৯।] সমাজে ভিন্ন পথ, ভিন্ন মতাবলম্বী মানুষ থাকতেই পারে কিন্তু তাই বলে তাদের মধ্যে বিবাদ, দ্বন্দ, অশান্তি ও হিংসা-বিদ্বেষকে কোনভাবেই অনুমোদন দেননি তিনি। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ "তোমরা সহজ পন্ধা অবলম্বন কর, কঠিন পন্থা অবলম্বন করো না। মানুষকে শান্তি ও স্বস্তি দাও, মানুষের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়াইও না।" অন্য একটি হাদীসে তিনি বলেছেন: "তোমরা পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষভাব রেখো না, হিংসা করো না, বিচ্ছেদাত্মক আচরণ করো না। বরং সবাই এক আল্লাহ্‌র বান্দা হয়ে ভাই বনে যাও ...।" [.প্রাগুক্ত, হাদীস নং ২৫৪৩ ও ২৫৩৪, পৃ. ৭০৩ ও ৭০২।] অমুসলিম বা ধর্মে-কর্মে নিয়মিত নন এমন কোন মানুষকে গালি দেয়া তিনি নিষেধ করেছেন: "কেউ যেন অন্য ব্যক্তিকে ফাসেক ও কাফের বলে অভিহিত না করে। কেননা, যাকে বলা হয়েছে সে তা না হলে যে বলেছে তা তার উপর ফিরে আসবে।" [.প্রাগুক্ত, হাদীস নং ২৫২৯, পৃ. ৭০১।]

মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সমাজে এতীম, বিধবা অসহায়দের অধিকার রক্ষার ও তাদের কল্যাণে নিজে যেমন সারা জীবন কাজ করে গেছেন অন্যকেও তেমনি দায়িত্ব পালনের তাগিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন: "ক্ষুধার্তকে খাবার দিও, পীড়িত ও রুগ্নকে দেখতে যেও এবং মুসলিম হোক কি অমুসলিম হোক, সকল নির্যাতিত মানুষকে সাহায্য করো।" [.মাওলানা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, প্রাগুক্ত, পৃ. ৩২।] এতীমের তত্ত্বাবধানকে উৎসাহিত করতে তিনি বলেছেন (শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুলের মধ্যকার দূরত্ব দেখিয়ে) : "আমি এবং এতীমের তত্ত্বাবধানকারী বেহেশতে এভাবে (কাছাকাছি) থাকবো।" [.প্রাগুক্ত, হাদীস নং ২৫১৪, পৃ. ৬৯৮।] তিনি আরো বলেছেন: "বিধবা এবং গরীব-মিসকীনদের সাহায্য-সহায়তার চেষ্টা সাধনকারী, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী অথবা দিনভর রোযা ও রাতভর নামায আদায়কারীর অনুরূপ।" [.প্রাগুক্ত, হাদীস নং ২৫১৫, পৃ. ৬৯৮।] একাধিক বর্ণনাকারী থেকে প্রাপ্ত এই হাদীসটিতে দেখা যায়, অপরিহার্য এবাদত এর সাথে গরীব-মিসকীন ও বিধবাদের সাহায্য ও সেবাদান করাকে সমতুল্য ঘোষণা করে তাদের অধিকার আদায়ের পথ সুপ্রশস্ত করেছেন এই মানবতাবাদী মহাপুরুষ। এতীম, অসহায়দের সম্পদ হরণ করাকে তিনি কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন: "এতীমদের সম্পদ আত্মসাৎ করা মানুষের ইহকাল ও পরকাল ধ্বংসকারী পাপের মধ্যে গণ্য হবে।" [.হাদীস দু'টি বুখারী ও মুসলিম শরীফ ও বাযফর থেকে নেয়া, মাওলানা মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৩৬।] রাগ বা ক্রোধ যা প্রায়শই আমাদের সমাজ জীবনে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাকে তিনি সর্বান্তকরণে দমন করতে বলেছেন। তিনি বলেন: "যে কুস্তিতে (অন্যকে) হারিয়ে দেয় সে প্রকৃত বীরপুরুষ য়, বরং সে-ই প্রকৃত বীর পুরুষ যে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।" [.আবু সাঈদ চৌধুরী, প্রাগুক্ত, পৃ. ১১।] এভাবে পরনিন্দা, পরচর্চা, কুৎসা রচনা, চুরি এমনকি অযথা সন্দেহ করাকেও নিষিদ্ধ করেছেন তিনি।

এমনিভাবে সমাজে শান্তির জন্যে যা যা প্রয়োজন, যাতে মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, অধিকার অর্জন সম্ভব হয় এমন সব কাজই তিনি করেছেন বা এমন সব বিষয়েই স্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি কেবল কোন ধর্ম, জাতি, দেশ বা কালের জন্য নয়- সর্বকালে, সব সমাজের সকল মানুষের জন্যে সমভাবে কল্যাণকর, শান্তি, সাম্য ও মানবাধিকারের নিয়ামক। পৃথিবীর যে কোন নিরপেক্ষ গবেষকের গবেষণায় এ সত্য উদ্‌ঘাটিত হবে এবং হয়েছে। শুধু তত্ত্বগতভাবে নয়, ছোট ছোট উদাহরণের মাধ্যমে তাঁর এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের পন্থাও তিনি দেখিয়েছেন। নিরপেক্ষ বিচারে, পৃথিবীর ইতিহাসে সমাজ জীবনে শান্তি, সাম্য, মৈত্রী, ভালবাসা, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এতবড় সুস্পষ্ট নিদর্শন আর কেউ কোথাও রেখে যেতে পেরেছেন বলে আমার জানা নেই। বিচারপতি আবূ সাঈদ চৌধুরী মানবাধিকারের গোড়ার কথা বলতে গিয়ে নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন, "মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আবির্ভাবের পর সমাজ জীবনে নীতি ও নিষ্ঠার প্রবর্তন ঘটে এবং শান্তি ও সহমর্মিতাকে তিনিই মানব জীবনের আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন।" তিনি বলেন যে, "প্রত্যেক মানুষের বাঁচার অধিকার আছে, স্বস্তির অধিকার আছে এবং নির্বিঘ্ন জীবনের অধিকার আছে।" [.প্রাগুক্ত, হাদীস নং ২৫১৪, পৃ. ৬৯৮।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন