hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর পথে দাওয়াত

লেখকঃ ড. আ.ন.ম. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

২৩
বিনম্রতা ও বন্ধুভাবাপন্নতা
দা‘ওয়াতের ক্ষেত্রে অন্যতম মৌলিক শর্ত হলো বিনম্রতা ও বন্ধুভাবাপন্নতা। আমরা অনেক সময় সৎকাজে আদেশ বা অন্যায় থেকে নিষেধ করাকে ব্যক্তিগত অহং প্রতিষ্ঠার পর্যায়ে নিয়ে যাই। ফলে আমরা কথা বলি মাতব্বরি ভঙ্গিতে যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে মানুষের অহংবোধে আঘাত করে এবং আমাদের কথা গ্রহণ করতে বাধা দেয়। এরপর যখন সে তা গ্রহণ না করে বা আমাদের বিরুদ্ধে খারাপ কথা বলে তখন আমরা তাকে ইসলামের শত্রু আখ্যায়িত করে কঠিনভাবে তার বিরুদ্ধে আক্রোশমূলক কথা বলি। এগুলো সবই কঠিন অন্যায় এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার পথ। আমরা অনেক সময় গরম কথা বা কড়া কথা বলাকে সাহসিকতা ও জিহাদ বলে মনে করি। অথচ আল্লাহ কুরআনুল কারীমে নরম কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ হক কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন কিন্তু গরম কথা বলতে কখনও নির্দেশ দেন নি। হক্ক কথাকে নরম করে বলতে নির্দেশ দিয়েছেন। বিশ্বের অন্যতম তাগুত আল্লাহদ্রোহী যালিম ফির‘আউনের কাছে মূসা ও হারূন আলাইহিস সালামকে প্রেরণ করে তিনি নরম কথার নির্দেশ দিয়ে বলেন,

﴿ٱذۡهَبَآ إِلَىٰ فِرۡعَوۡنَ إِنَّهُۥ طَغَىٰ ٤٣ فَقُولَا لَهُۥ قَوۡلٗا لَّيِّنٗا لَّعَلَّهُۥ يَتَذَكَّرُ أَوۡ يَخۡشَىٰ ٤٤﴾ [ طه : ٤٣، ٤٤ ]

“তোমরা উভয়ে ফির‘আউনের নিকট গমন কর, সে অবাধ্যতা ও সীমালংঘন করেছে। তোমরা তার সাথে নরম কথা বলবে, হয়ত সে উপদেশ গ্রহণ করবে বা ভয় করবে।” [সূরা ত্ব-হা, আয়াত: ৪৩-৪৪]

এ যদি হয় কাফিরকে দা‘ওয়াত দেওয়ার বা আদেশ-নিষেধের ক্ষেত্রে নবী-রাসূলগণের প্রতি নির্দেশ, তাহলে যারা কালেমা পড়েছেন তাদেরকে আদেশ নিষেধ করার ক্ষেত্রে আমাদের আরো কত বিনম্র ও বন্ধুভাবাপন্ন হওয়া উচিৎ তা একটু চিন্তা করুন।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَسُبُّواْ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ فَيَسُبُّواْ ٱللَّهَ عَدۡوَۢا بِغَيۡرِ عِلۡمٖ﴾ [ الانعام : ١٠٨ ]

“তারা আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিবে না কারণ ফলে তারা সীমালংঘন করে অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিবে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১০৮]

এ যদি হয় কাফিরদের দেবদেবীর ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশ, তাহলে কালেমা পাঠকারী মুসলিম বলে পরিচিত ব্যক্তিকে আদেশ নিষেধ করতে গিয়ে তাকে তার ভ্রান্ত বা জাগতিক মতের নেতা বা সাথীদেরেক গালি দেওয়া কীভাবে বৈধ হবে? গালাগালি, কঠোরতা, হিংসা, ঘৃণা, গীবত, অহংকার ইত্যাদি দ্বারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাতে মূলত নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করা হবে, কোনো ইবাদত পালন করা হবে না। আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন।

সম্মানিত পাঠক, দা‘ওয়াত বা সৎকাজের নির্দেশনা ও অসৎকাজের নিষেধ-এর উদ্দেশ্য মানুষের ওপর মাতব্বরি করা বা মানুষের ভুল ধরা নয়। বরং মানুষদেরকে সৎপথে আহ্বান করা এবং যথাসম্ভব মানুষকে ভালো পথে আসতে সাহায্য করা। এজন্য সর্বোচ্চ বিনম্রতা, ভদ্রতা ও ধৈর্য প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় দা‘ঈ ও আদেশ নিষেধকারী ছিলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আর তার অন্যতম বৈশিষ্ট ছিল বিনম্রতা। বিনম্রতা ও ধৈর্যের অনুপম আদর্শ দিয়ে তিনি জয় করেছিলেন অগণিত বেদুঈন আরবের কঠিন হৃদয়। অস্ত্র বা শক্তি দিয়ে তিনি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন নি। অনুপম চরিত্র ও ভালোবাসাময় আদেশ নিষেধ বা দা‘ওয়াত দিয়ে হৃদয়গুলোকে জয় করে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মদিনার রাষ্ট্র। এরপর সে রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা করেছেন যুদ্ধের মাধ্যমে। মহান আল্লাহ হৃদয় জয়ের এ কাহিনী বিধৃত করে বলেছেন,

﴿فَبِمَا رَحۡمَةٖ مِّنَ ٱللَّهِ لِنتَ لَهُمۡۖ وَلَوۡ كُنتَ فَظًّا غَلِيظَ ٱلۡقَلۡبِ لَٱنفَضُّواْ مِنۡ حَوۡلِكَ﴾ [ ال عمران : ١٥٩ ]

“আল্লাহর দয়ার অন্যতম প্রকাশ যে আপনি তাদের প্রতি বিনম্র-কোমল হৃদয় ছিলেন। যদি আপনি রূঢ় ও কঠোর চিত্ত হতেন তাহলে তারা আপনার আশপাশ থেকে সরে পড়ত।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯]

একটি হাদীসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,

«أنَّ يَهُودَ أَتَوا النَّبِيَّ صلي اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّمَ فَقَالُوا السَّامُ عَلَيْكُمْ فَقَالَتْ عَائشَةُ عَلَيْكُم ( السَّام ) ِوَلَعَنَكُمُ اللهُ وَ غَضِب اللهُ عَلَيْكُم قَالَ مَهْلاً يَا عَائِشَةُ عَلَيْكَ بِالرِّفْقِ ( إنَّ اللهَ يُحِبُّ الرِّفْقَ في الأمْرِ كُلِّهِ ) وإيَّاكَ وَالْعُنْفَ والْفُحْشَ قَالَتْ أَوَ لَمْ تَسْمَعْ مَا قَالُوا قَالَ ( أَوَ لَمْ تَسْمَعِي مَا قُلْتُ ) قَد قُلْتُ وَعَلَيْكُم»

“কতিপয় ইয়াহূদী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, আস-সামু আলাইকুম (আপনার ওপর মরণ অভিশাপ) আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাগান্বিত হয়ে বলেন, তোমাদের ওপর মরণ, তোমাদেরকে আল্লাহ অভিশপ্ত করুন এবং তোমাদের ওপর তার ক্রোধ অবতীর্ণ হোক। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আয়েশা শান্ত হও। তুমি অবশ্যই সর্বদা বিনম্রতা ও বন্ধুভাবাপন্নতা অবলম্বন করবে। আল্লাহ সকল বিষয়ে বিনম্রতা ও বন্ধুভাবাপন্নতা ভালোবাসেন। আর খবরদার! কখনই তুমি উগ্রতা ও অভদ্রতার নিকটবর্তী হবে না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তারা কী বলেছে আপনি কি তা শুনেননি? তিনি বলেন, আমি কি বলেছি তা কি তুমি শোন নি? আমি বলেছি, ওয়ালাইকুম অর্থাৎ তোমাদের উপরে। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন