hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর পথে দাওয়াত

লেখকঃ ড. আ.ন.ম. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

৩৫
দা‘ওয়াত ও সংশোধন বনাম বিচার ও শাস্তি
সঠিক জ্ঞানের অভাবে ও আবেগের প্রভাবে যে কঠিন ভুল ঘটে যেতে পারে তা হলো আদেশ নিষেধের নামে বিচার-শাস্তি প্রদান। আদেশ-নিষেধ ও বিচার-শাস্তির মধ্যে পার্থক্য অনুধাবন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষমতা অনুসারে অন্যায়কে পরিবর্তন করা বা অন্যায় বন্ধ করা মুমিনের দায়িত্ব। কিন্তু অন্যায় বন্ধ করা এবং অন্যায়ের বিচার ও শাস্তি দেওয়া সম্পূর্ণ দুইটি পৃথক দায়িত্ব। প্রথমটি সকল মুসলিমের করণীয়। আর বিচার ও শাস্তি একমাত্র রাষ্ট্রের অধিকার ও দায়িত্ব। রাষ্ট্র যেন তার ওপর অর্পিত সঠিক বিচার-শাস্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করে সে জন্য মুমিন যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই মুমিনকে বিচার নিজ হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয় নি। এজন্য ইমাম আহমদ রহ. বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যায়ের পরিবর্তন হাত দিয়ে করতে বলেছেন, তরবারী বা অস্ত্র দিয়ে নয়। [আল-কানযুল আকবর ১/৭৮।]

অতীত বা ভবিষ্যৎ অন্যায় বা অসৎ কাজের জন্য ওয়াজ নসীহত বা উপদেশ দিতে হবে। আর বর্তমানে কাউকে অন্যায়ে লিপ্ত দেখতে পেলে সম্ভব হলে তাকে বিরত করতে হবে কিন্তু কোনো অবস্থাতেই বিচারের দায়িত্ব হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। নিম্নের উদাহরণ থেকে আমরা তা বুঝতে পারব:

মদপান বা মাদক দ্রব্য গ্রহণ একটি কঠিন পাপ ও অন্যায়। ইসলামি শরী‘আতে এর শাস্তি বেত্রাঘাত। যদি কোনো মুমিন কোথাও কাউকে মদপান বা নেশা গ্রহণ করতে দেখেন তাহলে তার দায়িত্ব হলো তা বন্ধ করার চেষ্টা করা। তিনি সম্ভব হলে তাকে শক্তি দিয়ে একাজ থেকে বিরত করবেন। না হলে তাকে বিরত হতে উপদেশ দিবেন। না হলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করবেন এবং এই পাপ বন্ধ হোক তা কামনা করবেন। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তিনি মদপানকারীর বিচার করতে পারবেন না বা শরী‘আত নির্ধারিত শাস্তি দিতে পারবেন না।

অনুরূপভাবে ব্যভিচার, ধর্মত্যাগ, খুন, চুরি ইত্যাদি কঠিন পাপ। ইসলামে এগুলোর শাস্তি বেত্রাঘাত, মৃত্যুদণ্ড বা হস্তকর্তন। কোনো মুমিন কাউকে এসকল পাপে লিপ্ত দেখতে পেলে তিনি উপর্যুক্ত পদ্ধতিতে তা বন্ধ করার চেষ্টা করবেন। কিন্তু তিনি কোনো অবস্থাতেই তার বিচার বা শাস্তি প্রদান করতে পারবেন না। বিচার ও শাস্তির জন্য ইসলামে নির্ধারিত প্রক্রিয়া রয়েছে। সাক্ষ্য, প্রমাণ, আত্মপক্ষ সমর্থন ইত্যাদি প্রক্রিয়ার বাইরে শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাষ্ট্রপ্রধান বা বিচারকেরও নেই।

উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু আব্দুর রহমান ইবন আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন, আপনি শাসক থাকা অবস্থায় যদি কাউকে ব্যভিচার বা চুরির অপরাধে রত দেখতে পান তাহলে তার বিচার বিধান কী? (নিজের দেখাতেই কি বিচার করতে পারবেন?) আব্দুর রহমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আপনার সাক্ষ্যও একজন সাধারণ মুসলিমের সাক্ষ্যের সমান। উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। [সহীহ বুখারী।]

অর্থাৎ স্বয়ং রাষ্ট্রপ্রধানও নিজের দেখার ভিত্তিতে বিচার করতে পাবেন না এবং তাঁর একার সাক্ষ্যেও বিচার হবে না।

অন্য এক ঘটনায় উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাত্রে মদিনায় ঘোরাফেরা করার সময় এক ব্যক্তিকে ব্যভিচারে লিপ্ত দেখতে পান। তিনি পরদিন সকালে সাহাবীগণকে জিজ্ঞাসা করেন, যদি রাষ্ট্রপ্রধান কাউকে ব্যভিচারে লিপ্ত দেখতে পান তাহলে তিনি কি শাস্তি প্রদান করতে পারবেন? তখন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, কখনই না। আপনি ছাড়া আরো তিনজন প্রতক্ষ্যদর্শী সাক্ষী যদি অপরাধের সাক্ষ্য না দেয় তাহলে আপনার উপরে মিথ্যা আপবাদের শাস্তি প্রয়োগ করা হবে। [আল-কানযুল আকবর ১/২২৭।]

এখানে আরো একটি বিষয় লক্ষনীয়, তা হলো দেখা ও শোনার মধ্যে পার্থক্য। কোনো অন্যায় সংঘটিত হতে দেখলে সাধ্যমত তা পরিবর্তন বা প্রতিবাদ-প্রতিকার করতে হবে। কিন্তু যদি কোথাও অন্যায় হচ্ছে শুনে সেখানে গিয়ে দেখা গেল যে অন্যায় সংঘটিত হয়ে গিয়েছে। এখন আর কেউ তাতে লিপ্ত নেই। এই অবস্থায় বিষয়টি বিচার্য বিষয়ে পরিণত হবে। এক্ষেত্রে কোনো মানুষ কোনো অবস্থাতেই অমুক কিছুক্ষণ আগে অমুক অপরাধে লিপ্ত ছিল, বলে তাকে বিচার করতে পারবেন না বা শাস্তি দিতে পারবেন না। প্রয়োজন ও সুযোগ অনুসারে উপদেশ নসীহত করবেন বা আইনে সোপর্দ করবেন।

অনেক সময় সঠিক বিচার হবে না, বা শরী‘আত সম্মত বিচার হবে না এ চিন্তা কাউকে বিচার হাতে তুলে নেওয়ার জন্য প্ররোচিত করতে পারে। এক্ষেত্রে আমাদের আবারো মনে রাখতে হবে যে, আমাদের দায়িত্ব হলো, আদেশ, নিষেধ ও আহ্বান। বিচার করা বা সকল অন্যায় মিটিয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব নয়। সঠিক বিচার বা ইসলাম সম্মত বিচার না থাকলে তা প্রতিষ্ঠার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সাধ্যমত আদেশ-নিষেধ করা বা তা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই বিচার হাতে তুলে নেওয়ার কোনো অধিকার আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে দেন নি। দা‘ওয়াতের পরেও যদি সঠিক বিচার না হয় বা শরী‘আত বিরোধী বিচার হয় তবে সেজন্য সংশ্লিষ্টরা আল্লাহর নিকট অপরাধী হবেন এবং দা‘ঈগণ বিমুক্ত থাকবেন। সঠিক বিচার হবে না মনে করে গণপিটনি, ভাংচুর বা আইন হাতে তুলে নেওয়া কঠিন অন্যায় ও হারামসমূহের অন্যতম। লোকটি সত্যিকার অপরাধী কিনা, কতটুকু অপরাধী এবং এই অপরাধে ইসলামে তার শাস্তি কি, তা নির্ধারণ করার জন্য শরী‘আতের সঠিক প্রক্রিয়ার বাইরে কিছু করার অর্থই হলো যুলুম। আর পূর্বের হাদীসে আমরা দেখেছি যে, এতে অংশগ্রহণ তো দূরের কথা, এখেনে উপস্থিত থাকলেও লা‘নতের ভাগী হতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন