hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর পথে দাওয়াত

লেখকঃ ড. আ.ন.ম. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

৩৬
আদেশ-নিষেধ বনাম গীবত-অনুসন্ধান
কুরআন হাদীসের জ্ঞানের অভাবে ও আবেগের প্রভাবে আমরা আরেকটি ভুল করি। আমরা আদেশ-নিষেধের নামে পরচর্চা ও দোষ খোঁজায় লিপ্ত হই। আদেশ-নিষেধ এবং পরনিন্দা ও গোপন দোষ অনুসন্ধানের মধ্যে পার্থক্য আসমান ও জমিনের। প্রথমটি ফরয ইবাদত আর দ্বিতীয়টি হারাম, কবীরা গুনাহ।

মহান আল্লাহ যেমন অসৎ ও অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনি তিনি অন্যের গোপন অন্যায় বা দোষ খোঁজ করতেও নিষেধ করেছেন। যে অন্যায় প্রকাশ্যে দেখতে পাবেন, আপনি প্রকাশ্যে তার প্রতিবাদ-প্রতিকার করবেন। আপনি যে অন্যায় কাজটি দেখতে পেয়েছেন তা যদি অন্যেরা না দেখে তাহলে আপনি অন্যায়কারীকে ভয় প্রদর্শন বা আদেশ-নিষেধের মাধ্যমে সংশোধনের চেষ্টা করবেন। একান্ত বাধ্য না হলে বা মানবাধিকার তথা হক্কুল ইবাদ সংশ্লিষ্ট না হলে বিষয়টি আইন বা জনসম্মুখে তুলবেন না।

কারো দোষ গোপনে অনুসন্ধান করা বা গোপন দোষ জানার চেষ্টা করা হারাম। অনুরূপভাবে কারো কোনো গোপন অন্যায় বা দোষের কথা জানলে তা প্রকাশ না করে গোপন রাখা এবং গোপনেই তাকে নসীহত করা হাদীসের নির্দেশ। সর্বোপরি কারো দোষের কথা তার অনুপস্থিতিতে আলোচনা করা গীবত বা পরচর্চা এবং তা কঠিনতম হারাম কাজ। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কারো অন্যায়ের কথা মানুষের কাছে বলে বেড়ানোর নাম সৎকাজে আদেশ বা অসৎকাজে নিষেধ করা নয়, বরং এই কাজটিই একটি অসৎকাজ। আল্লাহ তা‘আলা সূরা হুজুরাতের ১২ নং আয়াতে বলেছেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱجۡتَنِبُواْ كَثِيرٗا مِّنَ ٱلظَّنِّ إِنَّ بَعۡضَ ٱلظَّنِّ إِثۡمٞۖ وَ لَا تَجَسَّسُواْ وَلَا يَغۡتَب بَّعۡضُكُم بَعۡضًاۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمۡ أَن يَأۡكُلَ لَحۡمَ أَخِيهِ مَيۡتٗا فَكَرِهۡتُمُوهُۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ إِنَّ ٱللَّهَ تَوَّابٞ رَّحِيمٞ ١٢﴾ [ الحجرات : ١٢ ]

“হে মুমিনগণ তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোনো কোনো অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إيَّاكُمْ والظَّنَّ فَإنَّ الظَّنَّ أكْذَبُ الْحَدِيثِ ولا تَحَسَّسُوا ولاتَجَسَّسوا ولاتَنَافَسُوا ولا تّحَاسَدُوا ولاتّبَاغَضُوا ولا تَدَابَرُوا وكُونُوا عِبَادَ اللهِ إخْوانًا»

“খবরদার! তোমরা অবশ্যই অনুমান থেকে দূরে থাকবে। কারণ, অনুমাণই হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যা এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় জানার চেষ্টা করবে না। গোপন দোষ অনুসন্ধান করবে না, পরস্পর হিংসা করবে না, পরস্পরে বিদ্বেষে লিপ্ত হবে না এবং পরস্পরে শত্রুতা ও সম্পর্কচ্ছেদ করবে না। তোমরা পরস্পরে আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে যাও।” [সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]

এভাবে আমরা জানতে পারছি যে, অনুমানে কথা বলা এবং অন্যের দোষ অনুসন্ধান করা হারাম। শুধু তাই নয়, অনুসন্ধান ছাড়াও যদি অন্যের কোনো দোষত্রুটি মানুষ জানতে পারে তা তার অনুপস্থিতিতে উল্লেখ করা গীবত ও হারাম। গীবত হলো ১০০% সত্য কথা। কোনো ব্যক্তির ১০০% সত্য দোষ-ত্রুটির কথা তার অনুপস্থিতিতে উল্লেখ করার নামই গীবত। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

«إنَّ رسُولُ الله صلي الله عليه وسلَّمَ قَالَ أتَدْرُونَ مَا الْغِيْبَةُ قَالُوا اللهُ ورَسُولُهُ أعْلَمُ قَالَ ذِكْرُكَ أخَاكَ بَمَا يَكْرَهُ قِيْلَ أفَرَأيْتَ إنْ كَانَ في أخِي مَا أقُولُ قَالَ إنْ كَانَ فِيْهِ مَا تَقُولُ فَقَدْ اغْتَتَبْتَهُ وإنْ لَمْ يَكُن فِيْهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ «

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা কি জান! গীবত বা অনুপস্থিতের নিন্দা কী? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তোমার ভাইকে তার অনুপস্থিতিতে এমনভাবে উল্লেখ করা যা সে অপছন্দ করে। তখন প্রশ্ন করা হলো, বলুন তো আমি যা বলছি তা যদি সত্যই আমার ভাইয়ের মধ্যে বিরাজমান হয় তাহলে কী হবে? তিনি বললেন, তুমি যা বলছ তা যদি তার মধ্যে বিরাজমান থাকে তাহলে তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তাহলে তুমি তার মিথ্যা অপবাদ করলে।” [সহীহ মুসলিম।]

আমরা ভাবি, সত্য কথা বলব তাতে অসুবিধা কী? আমরা হয়ত বুঝি না বা প্রবৃত্তির কুমন্ত্রনায় বুঝতে চাই না যে, সব সত্য কথা জায়েয নয়। অনেক সত্য কথা মিথ্যার মত বা মিথ্যার চেয়েও বেশি হারাম। আবার কখনও বলি, আমি এ কথা তার সামনেও বলতে পারি। আরে সামনে যা বলতে পারেন তা পিছনে বলাই তো গীবত।

গীবত অর্থাৎ অন্যের দোষত্রুটি তার অনুপস্থিতিতে আলোচনা করা অত্যন্ত আনন্দদায়ক কর্ম। মানবীয় প্রবৃত্তি তা খুবই পছ্ন্দ করে। কুরআনে এ জন্য একে গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে। গোশত খাওয়া খুবই মজাদার, তবে নিজ মৃতভাইয়ের গোশত খাওয়া মজাদার নয়, ঘৃণ্য কাজ। কুরআনের নির্দেশনা যার হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করেছে সেই মুমিন অনুভব করেন যে গীবতের মাধ্যমে তিনি মৃতভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করছেন। এজন্য কাজটি তাঁর কাছে অত্যন্ত ঘৃণ্য। কিন্তু আমরা দুর্বল ঈমানের অধিকারীরা তা বুঝতে পারি না, বরং গরুর ভুনা গোশতের মতোই পরিতৃপ্তির সাথে আমরা তা ভক্ষণ করি।

মানব প্রবৃত্তির কাছে গীবত মজাদার বস্তু হওয়ার দুইটি কারণ:

প্রথমত, নিজের দোষের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া বিরক্তিকর। অন্যের দোষ আলোচনা করলে এ বিরক্তি থেকে বাঁচা যায়।

দ্বিতীয়ত, নিজের ভালোত্ব, ও প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার সহজ উপায় গীবত। নিজের বড়ত্ব নিজে বলা একটু খারাপ দেখায়। অন্যদের গীবতের মাধ্যমে সহজেই প্রমাণ করা যায় যে, সকলেই দোষযুক্ত, আমি অনেক ভালো।

মানবীয় দুর্বলাতার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«يُبْصِرُ أحَدُكُمْ الْقَذَاةَ في عَيْنِ أخِيهِ وَ يَنْسَي الْجذْعَ في عَيْنِهِ»

“তোমাদের মধ্যে একজন মানুষ নিজ ভাইয়ের চোখের সামান্য কুটা টুকু দেখতে পায়, কিন্তু নিজের চোখের মধ্যে বিশাল বৃক্ষের কথা ভুলে যায়।” [সহীহ ইবন হিব্বান, হাদীস নং ৫৭৬১; মাওয়ারিদুয যামআন: ৬/৯০, হাদীসটি সহীহ। শাইখ আল-আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]

গীবতের নিন্দায় এবং এর কঠোরতম শাস্তির বর্ণনায় অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এখানে সেগুলোর বিস্তারিত আলোচনা সম্ভব নয়। আমরা দা‘ওয়াত কেন্দ্রিক ঘৃণ্য গীবত ও গীবতের কারণগুলো বুঝতে চাই। আমাদের সমাজে দা‘ওয়াতে লিপ্ত সম্মানিত মুমিনগণকে শয়তান বিভিন্নভাবে গীবতে লিপ্ত করে। তন্মধ্যে প্রধান পথ দুইটি:

১. পাপে বা অন্যায়ে লিপ্তগণের গীবত এবং

২. দা‘ওয়াতে লিপ্ত অন্য মুসলিমের গীবত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন