hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর পথে দাওয়াত

লেখকঃ ড. আ.ন.ম. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর

৬৫
উপকরণ বনাম ইবাদত: বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি
প্রাচীন যুগ থেকেই মুসলিম উম্মাহর মধ্যে দা‘ওয়াত বা দীন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি, দল ও মতের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কল্যাণকর ও প্রয়োজনীয়। প্রত্যেকেই কুরআন ও হাদীস থেকে নিজেদের কর্মের অনুপ্রেরণা গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি যুগ ও পরিবেশের চাহিদা মোতাবেক কিছু নতুন পদ্ধতি সংযোজন করেছেন। সাধারণভাবে এ সকল পদ্ধতি ইবাদত হিসেবে চালু করা হয় নি। ইবাদত পালনের সহায়ক উপকরণ হিসাবেই এগুলোকে চালু করা হয়েছে। কিন্তু কালের আবর্তনের সাথে সাথে এ সকল পদ্ধতির অনুসারীরা এসকল পদ্ধতিকে ইবাদতের অংশ বলে মনে করে বিভ্রান্তি ও দলাদলির মধ্যে নিপতিত হয়েছেন।

এ সকল নব উদ্ভাবিত দল বা পদ্ধতির ক্ষেত্রে দুইটি বিষয় লক্ষণীয়:

প্রথমত, মাসনূন উপকরণগুলো প্রয়োজন অনুসারে খেলাফে সুন্নাতভাবে সীমিত করা বা নির্ধারিত করা। যেমন, কুরআন-হাদীস, ওয়াজ ইত্যাদির মাধ্যমে দা‘ওয়াত প্রদানের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো সিলেবাস-পাঠ্যক্রম, সময়, স্থান বা পদ্ধতি নির্ধারণ করে দেন নি। এ সকল উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে প্রয়োজন অনুসারে তা নির্ধারিত করা হয়েছে। নির্ধারিত গ্রন্থাবলী পড়ার বা নির্ধারিত দিন, মাস বা বছর ধরে বা নির্ধারিত সময়ে বা স্থানে দাওয়াতি কর্ম করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, এগুলোর মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে খলাফে সুন্নাত বা সুন্নাত বহির্ভূত নতুন কিছু উপকরণ বা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।

অনেক সময় এ প্রকারের সংযোজন বা নির্ধারণের জন্য কুরআন হাদীস থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়। যেমন, আল্লাহ রমযানে একমাস সাওম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন, কাজেই আমরা আমাদের দা‘ওয়াতের কোর্স একমাস নির্ধারণ করেছি। এর মধ্যে বিশেষ বরকত পাওয়া যাবে অথবা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ দিন ইতিকাফ করতেন, এজন্য আমরা আমাদের ওয়াজ মাহফিল দশদিন ব্যাপি করেছি। অথবা তিনি হিজরত করে চিরস্থায়ীভাবে মক্কা শরীফ ত্যাগ করে মদিনায় গমন করেছিলেন, এজন্য আমরা দা‘ওয়াত, ওয়াজ বা দীন প্রতিষ্ঠার জন্য এক দেশের মানুষকে হিজরত করে অন্য দেশে স্থায়ী বসবাসের ব্যাবস্থা করি। অথবা তিনি হজের সময় ইহরামের কাপড় পরিধান করতেন, এজন্য আমরা দা‘ঈদেরকে দা‘ওয়াতের সময় ইহরামের কাপড় পরিধান করার ব্যবস্থা করেছি।

এ প্রকারের অনুপ্রেরণার ভালো দিক থাকলেও তা বহু বিদ‘আত ও সুন্নাত বিরোধিতার জন্ম দেয়। যেমন, সালাত আদায়ের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন বা উৎসাহ দিয়েছেন। কিন্তু কুরআন তিলাওয়াতের জন্য তিনি এরূপ কোনো নির্দেশ বা উৎসাহ দেন নি। তিলাওয়াতের ইবাদত তিনি উন্মুক্তভাবে পালন করেছেন। বসে বা দাঁড়িয়ে যে কোনো অবস্থায় তিলাওয়াত করলে সমান সাওয়াব পাওয়া যাবে। এখন যদি কেউ মনে করেন যে, সালাতের জন্য দাঁড়ানো ফরয বা উত্তম, অতএব তিলাওয়াতও দাঁড়িয়ে করা উত্তম বা দাঁড়িয়ে তিলাওয়াত করলে অতিরিক্ত সাওয়াব বা বরকত পাওয়া যাবে, তবে তিনি খেলাফে সুন্নাত একটি কর্মকে ইবাদতের অংশ মনে করে বিদআত করলেন ও সুন্নাত বিরোধিতায় লিপ্ত হলেন।

আমি এহইয়াউস সুনান গ্রন্থে সুন্নাত থেকে বিদ‘আতে উত্তরণের বিভিন্ন কারণ ও পদ্ধতির আলোচনা করেছি। গ্রন্থটির পঞ্চম অধ্যায়ের পঞ্চম পদ্ধতির আলোচনায় উপকরণকে ইবাদত মনে করার বিভিন্ন প্রবণতা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমি পাঠককে আবারো সবিনয় অনুরোধ করছি বইটি পড়তে। এখানে শুধুমাত্র একটি বিষয়ের প্রতি পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। বর্তমান সময়ে অনেক নেককার মুমিন দা‘ওয়াতের কাজে রত রয়েছেন। সকলেরই উদ্দেশ্য আল্লাহর পথে দা‘ওয়াতের মাধ্যমে সমাজের সর্বত্র ইসলামকে প্রতিপালিত ও প্রতিষ্ঠিত করা। এ সকল কাজের মধ্যে পার্থক্য:

প্রথমত, নাম ও পরিভাষা ব্যবহারে। তাযকিয়া, আন্দোলন, ইকামতে দীন, তাবলীগ, জিহাদ, মাদ্‌রাসা, ওয়াজ ইত্যাদি বিভিন্ন নাম ব্যবহার করা হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, দা‘ওয়াতের বিষয়বস্তু নির্ধারণে। ঈমান-আক্বীদাহ, শিক্ষা, আত্মশুদ্ধি, ব্যক্তিগত কর্ম, সমাজ সেবা, রাজনৈতিক পরিবর্তন ইত্যাদি একেক দল একেক বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

তৃতীয়ত, পদ্ধতিতে। বিভিন্ন দল বিভিন্ন পদ্ধতিতে কাজ করছেন। পদ্ধতিগুলো কোনোটিই হুবহু মাসনূন পদ্ধতি নয়।

এ সকল পদ্ধতিতে দা‘ওয়াত ও দীন প্রতিষ্ঠায় রত অনেকেই এ সকল খেলাফে সুন্নাত বা সুন্নাত বহির্ভূত পদ্ধতি ও উপকরণকে মূল ইবাদত দা‘ওয়াত এর অংশ মনে করছেন এবং বিভিন্ন বিভ্রান্তির মধ্যে নিপতিত হচ্ছন।

প্রথমত, একে অন্যের দা‘ওয়াতের ইবাদত পালিত হচ্ছে না বলে মনে করছেন। কেউ হয়ত ওয়াজ, গ্রন্থ রচনা, মাদ্‌রাসা ইত্যাদি মাধ্যমে দা‘ওয়াতের দায়িত্ব পালন করছেন, কিন্তু অন্য পদ্ধতির দা‘ঈ ভাবছেন, যেহেতু তিনি আমার পদ্ধতিতে কাজ করছেন না, সেহেতু তার দা‘ওয়াতের ইবাদত পালিত হচ্ছে না।

দ্বিতীয়ত, অনেক সময় একে অন্যের কোনো ইবাদতই হচ্ছে না বলে মনে করছেন। যেহেতু ঐ ব্যক্তির দা‘ওয়াত বা দীন প্রতিষ্ঠা নামক ইবাদত পালিত হচ্ছে না, সেহেতু তার অন্য কোনো ফরয, সুন্নাত ও নফল ইবাদত কবুল হচ্ছে না। কাজেই আমার পদ্ধতির বাইরে যারা রয়েছেন তাদের সালাত, সাওম, হজ, যিকির, তিলাওয়াত, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি সবই মূল্যহীন বা অপূর্ণ।

এ সকল বিভ্রান্তির অন্যতম কারণ হলো নব উদ্ভাবিত খেলাফে সুন্নাত উপকরণ বা পদ্ধতিকে মূল ইবাদতের অংশ মনে করা। আমাদের উচিৎ পদ্ধতির চেয়ে মূল ইবাদতের দিকে বেশি লক্ষ্য রাখা, নিজের ইবাদত কবুল হচ্ছে কিনা সেদিকে বেশি লক্ষ্য রাখা এবং সকল মুসলিম ও সকল দা‘ঈকে আল্লাহর ওয়াস্তে ভালোবাসা।

সবচেয়ে দুঃখজনক হলো এ সকল কারণে দলাদলির জন্ম নেওয়া। কুরআন ও হাদীসে উম্মাহর মধ্যে ইফতিরাক বা দলাদলি কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে। কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামি আকিদা গ্রন্থে আমি এ বিষয়ক আয়াত ও হাদীস বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ইসলামে মতভেদ থাকতে পারে কিন্তু দলভেদ থাকতে পারে না। বস্তুত আমাদের একটিই দল আছে, তার নাম ইসলাম। সকল মুসলিম আল্লাহর দল এবং সকল কাফির শয়তানের দল। শয়তানের দলকে মুমিন অন্য দল বলে মনে করেন। কোনো মুসলিমকে অন্য মুসলিম অন্য দল বলে মনে করতে পারেন না। পদ্ধতিগত বা মতামতগত পার্থক্যের কারণে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে দলাদলি ও বিভক্তি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত বেদনাদায়ক বিষয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন