hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামী দাওয়াহ প্রসারে গণমাধ্যমের অবদান

লেখকঃ ড. মো: আব্দুল কাদের

ক. ইসলামের দৃষ্টিতে গণমাধ্যম ব্যবহারের গুরুত্ব
গণমাধ্যম আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃত। ইসলামের প্রচার-প্রসারে গণমাধ্যমের গুরুত্ব অত্যাধিক। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তির কাছ থেকে অন্যজনের নিকট তথ্য ও ধারণা রূপান্তর করা যায়। ফলে ইসলামী দা‘ওয়াহ কার্যক্রম আধুনিককালে গণমাধ্যম ব্যতীত সফলভাবে সম্পন্ন করা অসম্ভব। পবিত্র কুরআন ও হাদীসে এ ধরনের মাধ্যমের ব্যবহার সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

কুরআনুল কারীম মিডিয়া ও ইনফরমেশনের গ্রন্থ। আল কুরআনে দা‘ওয়াহ এর সর্বপ্রথম যে নির্দেশনা এসেছে তাতেও মিডিয়ার বহিঃপ্রকাশ রয়েছে। মিডিয়া বিভিন্নভাবে কাজ করে। যেমন: নির্দেশনা দান, বক্তব্য, অংকন, ঘোষণা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রভৃতি। আর আল কুরআন হল একটি Textual Media (মূলপাঠ সংক্রান্ত মিডিয়া)। কুরআন অবতীর্ণের সূচনাকালে যে প্রথম পাঁচটি আয়াত নাযিল হয়েছিল তার বিশ্লেষণ করলে মিডিয়ার সকল উপাদান পাওয়া যায়।

মিডিয়ার উপাদান পাঁচটি। যথা:

প্রেরক (Sender)

গ্রাহক (Receiver)

সংবাদ (Massage)

চ্যানেল (Channel)

উদ্দেশ্যাবলী (Objectives)

মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর প্রথম নাযিলকৃত ওহীর আয়াত হলো:

﴿ٱقۡرَأۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلَّذِي خَلَقَ ١ خَلَقَ ٱلۡإِنسَٰنَ مِنۡ عَلَقٍ ٢ ٱقۡرَأۡ وَرَبُّكَ ٱلۡأَكۡرَمُ ٣ ٱلَّذِي عَلَّمَ بِٱلۡقَلَمِ ٤ عَلَّمَ ٱلۡإِنسَٰنَ مَا لَمۡ يَعۡلَمۡ ٥﴾ [ العلق : ١، ٥ ]

‘‘পড়ুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে। পড়ুন, আর আপনার রব মহামহিমান্বিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।’’ [.সূরা আল্-আলাক্ব : ১-৫।]

এখানে প্রেরক হলেন আল্লাহ তা‘আলা, গ্রাহক মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সংবাদ হলো ইসলাম, চ্যানেল হলেন জিবরাঈল ‘আলাইহিস সালাম, আর উদ্দেশ্য হলো মানবজাতির হিদায়াত। [.আবু সুলাইমান, আব্দুল হামীদ, আল ‘ই‘লামুল ইসলামী ওয়া আলাকাতুল ইনসানীয়্যাহ, রিয়াদ : ওয়ার্ল্ড এসেম্বলী অব মুসলিম ইয়ুথ, ১৯৭৬, পৃ. ১৮১, ১৮২।]

এছাড়াও আল্লাহ তা‘আলা মানবজাতিকে সৃষ্টি করে যুগে যুগে তাদের হেদায়াতের জন্য যেমন নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন, তাদেরকে সমকালীন শ্রেষ্ঠ মাধ্যম আয়ত্ব করে দিয়েছেন এবং তা দিয়ে জাতিকে হেদায়াতের আলোকবর্তিকা দেখাতে নির্দেশ দিয়েছেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময়ে সাহিত্যের উৎকর্ষ থাকায় তাঁকে যে মাধ্যম ব্যবহার করতে হয়েছে তা ছিল আল্-কুরআন, যা যুগ শ্রেষ্ঠ সাহিত্য (Textual Media)।

এরূপে মূসা ‘আলাইহিস সালাম এর যুগে জাদুবিদ্যার প্রভাব থাকায় তাকে সেটার মত বস্তু দিয়ে প্রেরণ করেছেন। তাঁর মুযিজা ছিল সমকালীন শ্রেষ্ঠ জাদুস্বরূপ- হাত বগল থেকে বের করলে সর্প হয়ে যাওয়া। তিনি শ্রেষ্ঠ বক্তা ছিলেন না। তাই তাকে সহযোগিতা করার জন্য গণমাধ্যমরূপে শুদ্ধভাষী ও স্পষ্টভাবে বক্তব্য প্রদানকারী হারুন ‘আলাইহিস সালাম-কে প্রেরণ করেছেন। কুরআনে এসেছে,

﴿ قَالَ رَبِّ ٱشۡرَحۡ لِي صَدۡرِي ٢٥ وَيَسِّرۡ لِيٓ أَمۡرِي ٢٦ وَٱحۡلُلۡ عُقۡدَةٗ مِّن لِّسَانِي ٢٧ يَفۡقَهُواْ قَوۡلِي ٢٨ وَٱجۡعَل لِّي وَزِيرٗا مِّنۡ أَهۡلِي ٢٩ هَٰرُونَ أَخِي ٣٠ ٱشۡدُدۡ بِهِۦٓ أَزۡرِي ٣١ وَأَشۡرِكۡهُ فِيٓ أَمۡرِي ٣٢ ﴾ [ طه : ٢٥، ٣٢ ]

‘‘মূসা বললেন, ‘হে আমার রব! আমার বক্ষ সম্প্রসারিত করে দিন এবং আমার কাজ সহজ করে দিন। আর আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন। যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। আর আমার জন্য করে দিন একজন সাহায্যকারী আমার স্বজনদের মধ্য থেকে। আমার ভাই হারূনকে। তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় করুন এবং তাকে আমার কাজে অংশীদার করুন।’’ [.সূরা ত্বা-হা : ২৫-৩২।]

পরিশেষে ফেরআউনের জাদু পরাস্ত হল এবং সকল জাদুকর ঈমান আনলেন। মহান আল্লাহ বলেন-

﴿ قَالَ بَلۡ أَلۡقُواْۖ فَإِذَا حِبَالُهُمۡ وَعِصِيُّهُمۡ يُخَيَّلُ إِلَيۡهِ مِن سِحۡرِهِمۡ أَنَّهَا تَسۡعَىٰ ٦٦ فَأَوۡجَسَ فِي نَفۡسِهِۦ خِيفَةٗ مُّوسَىٰ ٦٧ قُلۡنَا لَا تَخَفۡ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡأَعۡلَىٰ ٦٨ وَأَلۡقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلۡقَفۡ مَا صَنَعُوٓاْۖ إِنَّمَا صَنَعُواْ كَيۡدُ سَٰحِرٖۖ وَلَا يُفۡلِحُ ٱلسَّاحِرُ حَيۡثُ أَتَىٰ ٦٩ فَأُلۡقِيَ ٱلسَّحَرَةُ سُجَّدٗا قَالُوٓاْ ءَامَنَّا بِرَبِّ هَٰرُونَ وَمُوسَىٰ ٧٠ ﴾ [ طه : ٦٦، ٧٠ ]

‘‘তারা বলল, ‘হে মূসা! হয় তুমি নিক্ষেপ কর নতুবা আমরাই প্রথম নিক্ষেপকারী হই। মূসা বললেন, ‘বরং তোমরাই নিক্ষেপ কর।’ অতঃপর তাদের জাদুর প্রভাবে হঠাৎ মূসার মনে হল তাদের দড়ি ও লাঠিগুলো ছুটোছুটি করছে। তখন মূসা তার অন্তরে কিছু ভীতি অনুভব করলেন। আমি বললাম, ‘ভয় করবেন না, আপনিই উপরে থাকবেন। ‘আর আপনার ডান হাতে যা আছে তা নিক্ষেপ করুন, এটা তারা যা করেছে তা খেয়ে ফেলবে। তারা যা করেছে তা তো শুধু জাদুকরের কৌশল। আর জাদুকর যেখানেই আসুক, সফল হবে না।’ অতঃপর জাদুকরেরা সিজদাবনত হল, তারা বলল, ‘আমরা হারূন ও মূসার রবের প্রতি ঈমান আনলাম’।’’ [.সূরা ত্বাহা : ৬৫-৭০।]

অনুরূপভাবে ইব্রাহিম ‘আলাইহিস সালাম প্রতিবছর একবার একটি স্থানে একত্রিত হওয়ার জন্য মানুষকে আহবান করেছেন। তিনি কাবাঘর তৈরি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা এ ঘরকে মানব জাতির জন্য ইবাদতগৃহ বানিয়ে দিয়েছেন। কুরআনে এসেছে,

﴿ وَإِذۡ جَعَلۡنَا ٱلۡبَيۡتَ مَثَابَةٗ لِّلنَّاسِ وَأَمۡنٗا وَٱتَّخِذُواْ مِن مَّقَامِ إِبۡرَٰهِ‍ۧمَ مُصَلّٗىۖ وَعَهِدۡنَآ إِلَىٰٓ إِبۡرَٰهِ‍ۧمَ وَإِسۡمَٰعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيۡتِيَ لِلطَّآئِفِينَ وَٱلۡعَٰكِفِينَ وَٱلرُّكَّعِ ٱلسُّجُودِ ١٢٥ ﴾ [ البقرة : ١٢٥ ]

‘‘আর স্মরণ করুন, যখন আমরা কা‘বাঘরকে মানবজাতির মিলনকেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল করেছিলাম এবং বলেছিলাম, তোমরা মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর। আর ইব্রাহীম ও ইসমা‘ঈলকে আদেশ দিয়েছিলাম তাওয়াফকারী, ই‘তিকাফকারী, রুকূ‘ ও সিজ্দাকারীদের জন্য আমার ঘরকে পবিত্র রাখতে।’’ [.সূরা আল্-বাকারাহ : ১২৫।]

সুলাইমান ‘আলাইহিস সালাম-কে মহান আল্লাহ অসংখ্য যোগাযোগ শক্তি দান করেছিলেন। এমনকি তিনি পাখিদের ভাষাও বুঝতে পারতেন। সাবার রাণীর অবস্থান তিনি হুদহুদ পাখির মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন। কুরআনে এসেছে,

﴿ وَتَفَقَّدَ ٱلطَّيۡرَ فَقَالَ مَا لِيَ لَآ أَرَى ٱلۡهُدۡهُدَ أَمۡ كَانَ مِنَ ٱلۡغَآئِبِينَ ٢٠ ﴾ [ النمل : ٢٠ ]

‘‘ আর সুলাইমান পাখিদের সন্ধান নিলেন এবং বললেন, ‘আমার কি হলো যে, আমি হুদহুদকে দেখছি না! না কি সে অনুপস্থিত?’’ [.সূরা আন্-নামল : ২০।]

দাউদ ‘আলাইহিস সালাম অত্যন্ত বাগপটু ছিলেন, তিনি সুললিত কন্ঠে আল্লাহর বাণী আবৃত্তি করতেন। পাখিরা তার আবৃত্তি উপভোগ করতে একত্রিত হতো। এ মর্মে কুরআনে এসেছে,

﴿ إِنَّا سَخَّرۡنَا ٱلۡجِبَالَ مَعَهُۥ يُسَبِّحۡنَ بِٱلۡعَشِيِّ وَٱلۡإِشۡرَاقِ ١٨ وَٱلطَّيۡرَ مَحۡشُورَةٗۖ كُلّٞ لَّهُۥٓ أَوَّابٞ ١٩ وَشَدَدۡنَا مُلۡكَهُۥ وَءَاتَيۡنَٰهُ ٱلۡحِكۡمَةَ وَفَصۡلَ ٱلۡخِطَابِ ٢٠ ﴾ [ص: ١٨، ٢٠ ]

‘‘নিশ্চয় আমরা অনুগত করেছিলাম পর্বতমালাকে, যেন এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় তার সাথে আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। এবং সমবেত পাখীদেরকেও; সবাই ছিল তার অভিমুখী। আর আমরা তার রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাকে দিয়েছিলাম হিকমত ও ফয়সালাকারী বাগ্মিতা [.সূরা ছোয়াদ : ১৮-২০।]।’’

এছাড়াও তিনি লোহার ব্যবহার সহজ করে দিয়েছিলেন যাতে তিনি তা দ্বারা সভ্যতার উন্নতি সাধন করতে পারেন।

অতএব, বলা যায় যে, সকল নবী-রাসূল সমকালীন শ্রেষ্ঠ সম্পদ প্রাপ্ত হয়েছেন এবং তার যথোপযুক্ত ব্যবহার করে ইসলাম প্রচারে ব্রতী হয়েছেন। সাধারণভাবে সকলে মৌখিক যোগাযোগ ও সভ্যতার উন্নয়নে অবদান রেখেছিলেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন