HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

উপদেশতত্ত্ব

লেখকঃ আকীল ইবন মুহাম্মাদ আল-মাকতিরী

১৪
উপদেষ্টার উদ্দেশ্য কিভাবে বুঝা যাবে
ইমাম হাফেয ইবন রজব রহ. ‘আল-ফারকু বাইনান নসীহাতে ওয়াত তা‘য়ীর’ নামক গ্রন্থের ৩৬ পৃষ্ঠায় বলেন, উপদেশদাতার উদ্দেশ্য বুঝা যাবে কখনও উপদেশ প্রত্যাখ্যানকারীর স্বীকারোক্তির দ্বারা, আবার কখনও তার ব্যক্তিগত কথা-কাজকে ঘিরে উদ্বুত ইঙ্গিতের দ্বারা। যার থেকে জ্ঞান-বুদ্ধি, দীন, মুসলিম নেতৃবৃন্দকে সম্মান করার ব্যাপারে জানা যাবে, যিনি বিনা কারণে ভুল-ত্রুটির কথা উথ্থাপন করেন না।

সাহিত্যকর্ম ও উৎসাহ-উদ্দীপনার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে তার কথা গ্রহণ করা আবশ্যক হয়ে পড়ে এবং উল্লেখিত পরিস্থিতিতে যার কথা গ্রহণ করা হয়, তিনি যদি এমন ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত হন, যিনি নির্দোষ ব্যক্তির ব্যাপারে মন্দ ধারণা পোষণ করেন, তবে তিনি আল্লাহর বাণীর আওতাধীন হয়ে যান। আর কুধারণা এমন এক ধারণার নাম যাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল হারাম করে দিয়েছেন। আল্লাহ সুহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن يَكۡسِبۡ خَطِيٓ‍َٔةً أَوۡ إِثۡمٗا ثُمَّ يَرۡمِ بِهِۦ بَرِيٓ‍ٔٗا فَقَدِ ٱحۡتَمَلَ بُهۡتَٰنٗا وَإِثۡمٗا مُّبِينٗا ١١٢﴾ [ النساء : ١١٢ ]

“কেউ কোনো দোষ বা পাপ করে পরে তা কোনো নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি আরোপ করলে সে তো মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।” [আন-নিসা, আয়াত: ১১২]

অতএব, যার মধ্য থেকে কোনো মন্দ কর্মের নিদর্শন প্রকাশিত হয় নি, তার ব্যাপারে মন্দ ধারণা পোষণ করাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল হারাম করে দিয়েছেন।

সুতরাং এই ধারণা পোষণকারী ব্যক্তি দোষ ও পাপ কাজ করা এবং তা নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি আরোপ করার মত অন্যায়ের সমাবেশ ঘটায়। এই ধারণা পোষণকারী ব্যক্তি থেকে এ ধরণের অন্যায় কাজ প্রকাশিত হলে সে (আয়াতে উল্লিখিত) এই হুমকির অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টি জোরদার হবে। খারাপ কাজের নিদর্শন হলো যেমন, বেশি বেশি অন্যায়-অপরাধ ও বাড়াবাড়ি করা, ভয়-ভীতি কম করা, বেশি কথা বলা, বেশি বেশি গিবত করা ও অপবাদ দেওয়া, যেসব মানুষকে আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহ দান করেছেন, তাদের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা এবং নেতৃত্ব লাভের জন্য চরম আগ্রহ প্রকাশ করা।

আর যে ব্যক্তির মাঝ থেকে এসব মন্দ গুণাবলী প্রকাশিত হয়েছে বলে জানা যাবে যা ঈমানদার ও আলিম সম্প্রদায় পছন্দ করেন না, তার কথাকে আলিমদের নিকট অভিযোগে আকারে পেশ করা হবে এবং সে তাদের নিকট তা প্রত্যাখ্যান করলে তখন উচিৎ হবে অপমান করে তাকে মোকাবিলা করা। আর যে ব্যক্তির মাঝ থেকে এসব মন্দ গুণাবলী পুরাপুরি প্রকাশিত হয় নি, তবে তার কথাকে ভালো অবস্থায় গ্রহণ করা আবশ্যক এবং মন্দ অবস্থায় গ্রহণ করা অবৈধ।

উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “তোমার মুসলিম ভাইয়ের মুখ থেকে বের হওয়া কথাকে খারাপ বলে ধারণা করো না। কারণ, তাতে তুমি ভালো কিছুও পেতে পার।”

হামদুন বলেন, যা আবুল বারাকাত আল-গাযী’র ‘আদাবুল ‘ইশরত’ গ্রন্থের ১৩ পৃষ্ঠায় উদ্ধৃত: “যখন তোমার ভাইদের মধ্যে কোনো ভাই ভুল করে, তবে তাকে ক্ষমা চাইতে বল। অতঃপর সে যদি তা গ্রহণ না করে, তবে তুমি ত্রুটিপূর্ণ।”

আবুল বারাকাত আল-গাযী ‘আদাবুল ‘ইশরত’ গ্রন্থের ১৪ পৃষ্ঠায় বলেন, “উপদেষ্টার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ভাইদের পদস্খলনকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা। যেমনিভাবে গোলামের ওপর আবশ্যক তার মনিবের সাথে উত্তম ব্যবহার করা, তেমনিভাবে মনিবেরও উচিৎ তার সহযোগীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করা।”

জ্ঞানী ব্যক্তিদের কেউ কেউ বলেন, “মুমিন স্বভাবগত ও প্রকৃতিগতভাবেই মুমিন।”

ইবনুল আরাবী বলেন, “ভাইদের দুঃখ-কষ্টে সমবেদনা জ্ঞাপন কর, তবে তোমার প্রতি তাদের ভালোবাসা দীর্ঘস্থায়ী হবে।”

ইবন রজব বলেন, তিরস্কারকারী থেকে নসীহতকারী তথা হিতাকাঙ্খীকে পৃথক করে চিনার উপায় হলো, নসীহতকারী দোষ-ত্রুটি গোপন করে এবং গোপনে উপদেশ দেয়, বিশেষ করে ঐসব আমলের ক্ষেত্রে, যেসব কর্ম-কাণ্ডে অন্যের কোনো ক্ষতি হয় না। অর্থাৎ বিরোধিতাকারী যে কাজটির ব্যাপারে বিরোধ করে, তা তার সাথেই সীমাবদ্ধ। আর বিষয়টি দ্বারা অন্যের ক্ষতি হলে তখনও তাকে গোপনেই উপদেশ দিবে। আর সঠিক পথে ফিরে না এলে এবং বিষয়টি যদি এমন হয় যে বিষয়ে ইখতিলাফের বৈধতা নেই, তবে এই অবস্থায় উপদেষ্টার জন্য তার ব্যাপারে জনসমক্ষে কথা বলা বৈধ হবে এবং তিনি তাদেরকে সতর্ক করবেন যাতে তারা হকের বিরোধিতাকারীর কথা ও কাজে তারা প্রতারিত না হয়।

ফুদাঈল ইবন ‘আইয়াদ রহ. বলেন, যা ‘আল-ফারকু বাইনান নসীহাতে ওয়াত তা‘য়ীর’ নামক গ্রন্থের ৩৯ পৃষ্ঠায় উদ্ধৃত: “মুমিন দোষ-ত্রুটি গোপন করে এবং কল্যাণ কামনা করে উপদেশ দেয়, আর ফাসিক সম্মান নষ্ট করে এবং তিরস্কার করে।”

হাফেয ইবন রজব রহ. বলেন, “এ বিষয়টি ফুদাঈল ‘নসীহত ও তিরস্কারের আলামত’ বিষয়ক পরিচ্ছেদে আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, কল্যাণ কামনা তথা নসীহতের সাথে দোষ-ত্রুটি গোপন রাখার বিষয় সম্পৃক্ত, আর তিরস্কারের সাথে দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করার বিষয় সম্পৃক্ত। আর তাকে বলা হত: “যে ব্যক্তি তার ভাইকে জনসমক্ষে কোনো বিষয়ে আদেশ করল, সে যেন তার ভাইকে তিরস্কার করল।”

আবুল বারাকাত বদরুদ্দীন মুহাম্মাদ আল-গাযী ‘আদাবুল ‘ইশরত’ গ্রন্থের ১৩ পৃষ্ঠায় বলেন, ইবন মাযেন বলেন, “মুমিন ব্যক্তি তার ভাইদের জন্য ক্ষমা চায়, আর মুনাফিক তাদের পদস্খলন বা অধপতন চায়।”

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম রহ. তার ‘আর-রূহ’ নামক গ্রন্থের ৫১০ পৃষ্ঠায় বলেন, “গিবত এবং নসীহতের মধ্যে পার্থক্য হলো, নসীহতের উদ্দেশ্য হলো মুসলিম ব্যক্তিকে বিদ‘আতপন্থী, ফিতনাবাজ, প্রতারক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী থেকে সতর্ক করা। সুতরাং যখন কেউ তোমার নিকট তার (উপরোক্ত ব্যক্তির) সাথে বন্ধুত্ব, লেন-দেন ও অন্য কোনো সম্পর্ক গড়তে পরামর্শ চায়, তখন তুমি তার মধ্যে বিদ্যমান দোষ-গুণ স্পষ্ট করে বলে দিবে। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ফাতেমা বিনতে কায়েস মুয়াবিয়া ও আবু জাহামকে বিয়ে করার ব্যাপারে পরামর্শ চাইলে তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “মুয়াবিয়া দরিদ্র মানুষ, আর আবু জাহামের ব্যাপারে কথা হলো তার ঘাড়ে সব সময় লাঠি থাকে অর্থাৎ সে স্ত্রীকে মারধর করে।” তিনি তাঁর সাথে যেসব সাহাবী সফর করেন তাদের কাউকে কাউকে বলেন, “যখন তুমি কোনো জাতির আঙ্গিনায় অবতরণ করবে, তখন তাকে সতর্ক করবে।”

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন