HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

উপদেশতত্ত্ব

লেখকঃ আকীল ইবন মুহাম্মাদ আল-মাকতিরী

নসীহতের আদব বা বৈশিষ্ট্য
১. আল্লাহ তা‘আলার প্রতি আন্তরিকতা ও একনিষ্ঠতা: যেহেতু নসীহত তথা কল্যাণ কামনা হচ্ছে সামগ্রিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর ইবাদত করে থাকি। সুতরাং একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদত না হলে তিনি তা গ্রহণ করবেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُواْ ٱللَّهَ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ﴾ [ البينة : ٥ ]

“তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে তাঁর ইবাদত করতে।” [সূরা আল-বায়্যিনাহ, আয়াত: ৫]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿فَٱعۡبُدِ ٱللَّهَ مُخۡلِصٗا لَّهُ ٱلدِّينَ﴾ [ الزمر : ٢ ]

“সুতরাং আল্লাহর ইবাদত কর তাঁর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে।” [সুরা আয-যুমার, আয়াত: ২]

বরং এই নসীহত প্রদানের পদ্ধতি হতে হবে আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সালফে সালেহীনদের পদ্ধতি অনুসারে। আর এ জন্যই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ » .

“কোনো ব্যক্তি এমন কাজ করল যার ব্যাপারে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই, সে কাজটি প্রত্যাখ্যাত।” [সহীহ মুসলিম।]

২. সত্য প্রকাশের ইচ্ছা পোষণ করা: নসীহতের অন্যতম আদব হলো উপদেশদাতার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকবে সত্য প্রকাশ করা। চাই সে সত্যের প্রকাশ তার ভাষায় হউক অথবা অন্যের ভাষায়। কারণ, অনেক সময় উপদেশদাতা নিজের কথার দ্বারাই পরাজিত হয়। কেননা, সে যখন তার বিরোধীদেরকে নসীহত করে এবং তার জন্য তাদের দলীলসমূহ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়, তথন সে বুঝতে পারে যে, তাদের কথাটিই সত্য ও যুক্তিসম্মত। কিন্তু যখন সে অহেতুক ছুটাছুটি করবে এবং তার অযৌক্তিক ও মন্দ দিকটি প্রকাশ পাবে, সে স্বীয় কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। এ জন্যই ইমাম শাফেঈ রহ. তার সঙ্গী-সাথীদেরকে তার কথার বিপরীতে সত্যের অনুসরণ ও সুন্নাহকে গ্রহণ করার নির্দেশ দিতেন এবং তাঁর কথাকে দেওয়ালের অপর দিকে ফেলে দিতে বলতেন। আর তিনি তাঁর কিতাবসমূহের ব্যাপরে বলতেন: “এগুলোর মধ্যে কুরআন ও সুন্নাহর বিপরীত কিছু বিদ্যমান থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَوۡ كَانَ مِنۡ عِندِ غَيۡرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُواْ فِيهِ ٱخۡتِلَٰفٗا كَثِيرٗا﴾ [ النساء : ٨٢ ]

“এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নিকট থেকে আসত, তবে তারা তাতে অনেক অসঙ্গতি পেত।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৮২]

তিনি (ইমাম শাফে‘ঈ রহ.) আরও চমৎকারভাবে বলেন, “আমার সাথে কেউ বিতর্কে লিপ্ত হলে আমি কামনা করতাম যে, তার ভাষায় হউক অথবা আমার ভাষায় হউক যাতে সত্য ও যৌক্তিক বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে যায়।” [আল-ফারকু বাইনান নসিহাতে ওয়াত তা‘য়ীর, পৃ. ৩১]

৩. বিতর্কের সময় মন্দ কথা থেকে জিহ্বাকে হিফাযত করা: যেহেতু নসীহতকারীর নসীহতের মূল উদ্দেশ্য হলো বিরোধী ব্যক্তিকে কথায় ও কাজে তার বিরোধিতা থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, সেহেতু তার সাথে মন্দ কথা বলা মানেই শয়তানকে সহযোগিতা করা। আর এ জন্যই যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের কাউকে অপর সাহবীদের মধ্যে কাউকে বলতে শুনতেন: “ঐ ব্যক্তির ওপর আল্লাহর লা‘নত, যে ব্যক্তিকে বার বার রাসূলের দরবারে হাযির করা হয়।” অর্থাৎ সে বার বার মদ খেত, অতঃপর তাকে রাসূলের দরবারে হাজির করা হত এবং বেত্রাঘাত করা হত, তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لَا تُعِينُوا الشَّيْطَانَ عَلَي أخيكم» .

“তোমরা তোমাদের ভাইয়ের ব্যাপারে শয়তানকে সহযোগিতা করো না” এছাড়া আরও অনেক হাদীস রয়েছে।

ইমাম ইবন হাযম ‘মুদাওয়াতুন্ নুফুস’ নামক গ্রন্থের ৫৫ পৃষ্ঠায় বলেন, “অজ্ঞ, অপরাধী ও চরত্রিহীন ব্যক্তিবর্গকে উপদেশদাতার উপদেশ প্রদানের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নীতি অনুসরণ করা আবশ্যক। সুতরাং যে ব্যক্তি রুক্ষ মেযাজে ও বিবর্ণ চেহারায় উপদেশ প্রদান করে, সে ভুল করে এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত বিরুদ্ধ কাজ করে। সে অধিকাংশ ক্ষেত্রে উপদেশ দ্বারা উপদিষ্টের জন্য প্রীতিকর ও উদার মনের হবে। কারণ, রুক্ষ স্বভাবের উপদেশদাতার উপদেশ মন্দ ছাড়া ভালো হয় না।”

ইমাম হাফেয ইবন রজব ‘আল-ফারকু বাইনান নসীহাতে ওয়াত তা‘য়ীর’ নামক গ্রন্থের ৩২ পৃষ্ঠায় বলেন, ইমাম আহমদ রহ. হাতেম আল-আসম থেকে একটি সুন্দর ঘটনা বর্ণনা করেছেন, তাকে বলা হলো: “আপনি তো অনারবি লোক ভালোভাবে কথা বলতে পারেন না, আপনার সাথে কোনো লোক বিতর্কে লিপ্ত হলে আপনি কিভাবে তার মোকাবেলা করবেন এবং কিসের বলে আপনি বিতর্কে জয় লাভ করবেন? প্রতিত্তুরে তিনি বলেন, তিনটি বস্তুর দ্বারা আমি বিজয় লাভ করব, আমার তর্ক সঠিক হলে আমি আনন্দিত হব, ভুল হলে অনুতপ্ত হব এবং প্রতিপক্ষকে মন্দ বলা থেকে আমি আমার জিহ্বাকে হিফাযত করব।”

ইবন রজব আরও বলেন, “কোনো আলিম আদব-লিহাজের সাথে বক্তব্য দান ও মত বিনিময়ের সময় যদি ভুল করে ভুল স্বীকার করে, তাতে দোষের কিছু নেই এবং সে নিন্দিত হবে না।”

৪. উপদিষ্টের জন্য দো‘আ করা: উপদেশদাতার বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো উপদিষ্টের জন্য বেশি বেশি দো‘আ করা, যাতে আল্লাহ তাকে উপদেশ বুঝার তাওফীক দান করেন, মনোযোগসহ উপদেশ শোনার এবং সে অনুযায়ী আমল করার জন্য তার বক্ষকে উম্মোচন করে দেন। এ প্রসঙ্গেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أللهم اهد قومي فإنهم لا يعلمون»

“হে আল্লাহ! তুমি আমার জাতিকে হিদায়াত দান কর, কারণ, তারা বুঝে না।”

৫. উপদেশের জন্য উপযুক্ত সময় ও স্থান নির্ধারণ করা: সুতরাং উপদেশদাতা উপদিষ্টকে তার ক্রোধ ও উত্তেজনা অবস্থায় এবং জনসাধারণের উপস্থিতিতে উপদেশ প্রদান করবে না। কারণ, এসব পরিস্থিতিতে উপদেশ দিলে তা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রাখে। সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত আছে যে, ক্রোধের করণে জনৈক ব্যক্তির চেহরা রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছিল এবং তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফুলে উঠেছিল, তার এ অবস্থা দেখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “আমি এমন একটা কথা জানি, যা সে পাঠ করলে তার ক্রোধ দূর হয়ে যাবে। আর তা হলো: أعوذ بالله من الشيطان الرجيم (আমি বিতাড়িত শয়তানের আক্রমন থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই)। জনৈক ব্যক্তি ঐ ক্রোধে আক্রান্ত ব্যক্তিকে এই কথা বা দো‘আ পাঠ করার উপদেশ দিলে, তখন সে বলল: আমি কি পাগল? অতঃপর সে নসীহত প্রত্যাখ্যান করল। আরও প্রত্যাখ্যান করল أعوذ بالله من الشيطان الرجيم (আমি বিতাড়িত শয়তানের আক্রমন থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই) বলা। এ জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দয়া পরবশ হয়ে কাউকে সরাসরি তার উপদেশ দেওয়া থেকে বিরত থাকতেন।

৬. উপদিষ্টের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা: উপদেশদাতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো: যাকে সে উপদেশ দিবে, তার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ না করে গোপন রাখা। বিশেষ করে যখন তা তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কোনো অবস্থাতেই তা সকল মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ করবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন