মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইসলামি অর্থনীতি শান্তি ও সমৃদ্ধির অব্যর্থ ব্যবস্থা
লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব
১৭
ব্যক্তি মালিকানার অধিকার :
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/478/17
এটি একটি স্বতসিদ্ধ বিষয় যা শরিয়ত সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা রাখে এমন ব্যক্তিও জানে যে, ইসলাম মানুষের ব্যক্তি মালিকানার স্বীকৃতি দিয়েছে। এই স্বীকৃতির বদৌলতেই মানুষ সম্পদের মালিক হতে পারে। ইরশাদ হয়েছে- আর তারা কি দেখেনি, আমার হাতের তৈরী বস্ত্তসমূহের মধ্যে আমি তাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তারা হল এগুলোর মালিক। [. ইয়াসীন : ৭১]
সুতরাং জানা গেল, আল্লাহ তা’আলা যা সৃষ্টি করেছেন, মানুষের জন্য তার মালিকানা সাব্যস্ত করেছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন- আর যদি তোমরা তাওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে। তোমরা যুলম করবে না এবং তোমাদের যুলম করা হবে না। [. বাকারা : ২৭৯] এ আয়াত মানুষের ব্যক্তি মালিকানা সাব্যস্ত করছে। এখানে মাল বা সম্পদকে মানুষের দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে। আর সম্বন্ধ সূচক পদটি বিশিষ্টতার অর্থ দিচ্ছে যা তার মালিকানা প্রমাণ করছে। আরো ইরশাদ হয়েছে- (ক) আর তোমরা ইয়াতীমের সম্পদের কাছে যেয়ো না সুন্দরতম পন্থা ছাড়া, যতক্ষণ না সে বয়সের পূর্ণতায় উপনীত হয়। [. বনী ইসরাঈল : ৩৪] (খ) আর তা থেকে দূরে রাখা হবে পরম মু্ত্তাকীকে। যে তার সম্পদ দান করে আত্ম-শুদ্ধির উদ্দেশ্যে। [. লাইল : ১৭-১৮] (গ) তার ধন-সম্পদ এবং যা সে অর্জন করেছে তা তার কাজে আসবে না। [.লাহাব : ০২] এসব এবং ইত্যাকার অন্যসব আয়াতে সম্পদকে মানুষের দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে যা দ্বারা সুস্পষ্ট বোঝা যায় যে, ইসলাম ব্যক্তি মালিকানার স্বীকৃতি দেয়।
সুন্নাতে নাববিয়াতেও অনেক হাদিস মেলে যা একে স্বীকৃতি দেয়। যেমন- ‘কোনো মুসলমানের জন্য বৈধ হবে না কারো মাল তার মনের স্বতস্ফূর্ত অনুমতি ছাড়া।’ [. মুসনাদে আহমদ : ২০১৭০ দারে কুতনি : ২৯২৪] এ ছাড়াও ইসলামে এমন কিছু বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে যার ভিত্তি ব্যক্তি মালিকানার ওপর। যেমন- মিরাছ, জাকাত, বিবাহের মোহর এবং অন্যান্য খরচ। কেননা ব্যক্তি মালিকানা স্বীকার না করলে মিরাছের কোনো অর্থই থাকে না। আবার জাকাতের ফরজ বাস্তবায়নও সম্ভব নয় সত্ত্ব বা মালিকানা ছাড়া।
শরিয়তের যেসব প্রমাণাদি ব্যক্তি মালিকানা স্বীকার করে তার মধ্যে সব ধরনের মাল বা সম্পদই অন্তর্ভুক্ত। চাই সে সম্পদ স্থাবর বা অস্থাবর হোক, খাদ্যদ্রব্য বা অন্যকিছু কিংবা চাই তা প্রাণী বা উদ্ভিদ হোক। উৎপাদনের মাধ্যম হোক চাই ধ্বংসের- মালিকানার অধিকার সম্পদের এতসব প্রকারের সবগুলোকেই অন্তর্ভুক্ত করে। কারণ আয়াত ও হাদিসগুলোতে যে মালিকানাকে মানুষের দিকে সম্বন্ধ করা হয়েছে তা শর্তহীনভাবে। কোনো রূপ তারতম্য না করে। শুধু ওই সব ছাড়া যেগুলোর মালিকানা লাভ হারাম হওয়া স্বতন্ত্র নসের মাধ্যমে জানা গেছে। যেমন- মদ ও শূকর। অথবা জিনিসটি হালাল কিন্তু তার মালিক হওয়ার পদ্ধতিটা হারাম। যেমন-চুরি, ছিনতাই অথবা আত্মসাৎকৃত সম্পদ।
ইসলাম শুধু ব্যক্তি মালিকানার স্বীকৃতিই দেয়নি তা সংরক্ষণের ব্যবস্থাও নিয়েছে। সবার জন্য অত্যাবশ্যক করেছে এর প্রতি সম্মান দেখানো এবং বৈধ কোনো কারণ ছাড়া এতে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা। ইরশাদ হয়েছে- তোমরা পরস্পরের মধ্যে তোমাদের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না। [. নিসা : ২৯] হাদিসে এসেছে- ‘কোনো মুসলমানের জন্য বৈধ হবে না কারো মাল তার মনের স্বতস্ফূর্ত অনুমতি ছাড়া।’ [. মুসনাদে আহমদ : ২০১৭০ দারে কুতনি : ২৯২৪] যে এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে। হস্তক্ষেপ করবে অন্যের মালিকানায় তার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করেছে। যেমন-চুরি, ডাকাতি, আত্মসাৎ ও ছিনতাই প্রভৃতি অপরাধের ‘হদ’, ‘তাযির’ ইত্যাদি শাস্তি ঘোষিত হয়েছে।
তবে ব্যক্তি মালিকানার স্বীকৃতি দেয়ার অর্থ কিন্তু এই নয় যে, ইসলাম ব্যাপারটিকে লাগামহীনভাবে ছেড়ে দিয়েছে। ইসলামের অবস্থান এ ক্ষেত্রে প্রহরীর ন্যায়। বাস্তবতা হলো, ইসলাম ব্যক্তি মালিকানার স্বীকৃতি দিয়েছে, একে রক্ষা করেছে; কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এর সূচনা থেকে সমাপ্তি অবধি নানা বিধি-নিষেধও দাঁড় করিয়েছে। ইসলাম এভাবেই ব্যক্তি মালিকানার দুই প্রান্তিক অবস্থানের মাঝে সমন্বয় সাধন করেছে। একদিকে একে স্বীকৃতি ও সুসংহতি দিয়েছে, অপরদিকে বিধি ও সীমা নির্ধারণ করেছে। নিচের পয়েন্টগুলো আলোচনা দ্বারা আমরা এ দু’টি দিক বিশেষণ করব।
এক. ব্যক্তি মালিকানার অধিকার সৃষ্টির দিক দিয়ে:
ইসলাম শর্ত দিয়েছে মালিকানার অধিকার সৃষ্টি হতে হবে শরিয়ত অনুমোদিত উপায়ে। যদি শরিয়ত সম্মত উপায়ে সৃষ্টি না হয় তাহলে ইসলাম তার স্বীকৃতি দেয় না। তা সংরক্ষণও করে না। বরং তা দখলকারীর অধিকার থেকে নিয়ে বৈধ মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়। যদি মালিককে খুঁজে বের না করা যায় তাহলে বাইতুল মালে জমা দিতে হবে। আর সত্তাধিকার অর্জনের শরিয়ত সম্মত পথ তিনটি। যথা-
(ক) বৈধ মালের ওপর কর্তৃত্ব লাভ। যেমন- শিকার, মৃত বা পতিত ভূমিকে আবাদ, ঘাস বা ঝোপঝাড়ের ওপর কর্তৃত্ব লাভ কিংবা খনি বা গুপ্তধন আবিষ্কারের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ। তবে এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে হবে শরিয়ত নির্ধারিত শর্তানুযায়ী।
(খ) বিনিময় চুক্তি ও লেনদেন। যেমন- কেনাবেচা, দান, অসিয়ত, ইজারা, মুদারাবা, মুযারা’আ বা বর্গাচাষ ইত্যাদি।
(গ) মিরাছ। কেননা ওয়ারিশ তার উত্তরাধিকারের হকদারকে নিজের রেখে যাওয়া মালিকানায় শরিয়ত নির্ধারিত বিশুদ্ধ পন্থায় প্রতিনিধি বানিয়ে যায়। সেসব পন্থা ও অংশ নিয়ে শর্তসহ সবিস্তার আলোচনা রয়েছে ফিকহের কিতাবগুলোতে।
এগুলো হলো ব্যক্তি মালিকানা সৃষ্টির শরিয়ত অনুমোদিত উপায়। অতএব কেউ যদি এসব উপায়ে মালিকানা লাভ করে তাহলে ইসলাম তার স্বীকৃতি দিবে। এ ব্যাপারে তার মান (ছঁধষরঃু) বা পরিমাণ (ছঁধহঃরঃু) কোনোটাই বিবেচ্য নয়। ব্যক্তি মালিকানার ব্যাপারে ইসলামে লক্ষণীয় এর বৈধতা; সংখ্যা বা গুণগত মান নয়। দেখা হবে মালিকানা লাভের উপায়টি কেমন। যদি তা হয় শরিয়তসিদ্ধ তাহলে তার মালিকানা শরিয়তসম্মত এবং শরিয়ত কর্তৃক সংরক্ষিত। এ জন্যই ইসলাম অনেক বেশি মালিকানা সংরক্ষণ করে যদি তার উপায় বৈধ হয়। অথচ অল্প মালিকানা সংরক্ষণ করতেও অস্বীকৃতি জানায় যদি তা অর্জনের উপায় হয় অবৈধ। বিশাল বিস্তৃত ভূমির মালিকানাও স্বীকার করে যখন তা অধিকারের উপায় বৈধ হয়। পক্ষান্তরে এক বিঘত পরিণাম ভূমির মালিকানা স্বীকারেও অস্বীকৃতি জানায়- যদি সেটা হয় আত্মসাৎকৃত। কারণ আত্মসাৎ মালিকানা লাভের কোনো বৈধ পন্থা নয়।
দুই. মালিকানার স্থায়িত্ব ও বৃদ্ধির শর্তের দিক দিয়ে:
ইসলাম মানুষের সম্পদে হক রেখেছে। যথাযথভাবে এসব হক আদায় ওয়াজিব করেছে। যেমন- জাকাতের হক এবং শরিয়ত নির্ধারিত অন্যান্য খরচ। যেমন শর্তগুলো প্রতিভাত হয় মালিকানা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে। সুতরাং দেখা যায়, ইসলাম সম্পদ বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। তার মধ্য থেকে ব্যবসায় বাণিজ্য, চাষাবাদ, যৌথ কারবার উলেখযোগ্য।
এ জন্য ইসলাম হারাম পন্থায় উপার্জিত সম্পদের বৈধতা দেয় না। যেমন-সুদ, মদ বিক্রি, জুয়া, হাউজি ইত্যাদি হারাম কারবার থেকে উপার্জিত অর্থ। এসব হারাম পন্থায় অর্জিত প্রবৃদ্ধি ইসলামের দৃষ্টিতে অসুস্থ লোকের ফুলে যাওয়া দেহের ন্যায়, মূর্খরা যেটাকে মোটা হওয়া মনে করে। অথচ ডাক্তার ও বিচক্ষণ ব্যক্তি মাত্রেরই দৃষ্টিতে সেটি এক আপদ এবং রোগ যা থেকে পরিত্রাণ জরুরি।
তিন. মালিকানাধীন সম্পদ ব্যয়ের শর্তের দিক দিয়ে:
ইসলাম সম্পদ ব্যয়ের শর্ত দিয়েছে যে তা করতে হবে ন্যায়ানুগভাবে। ইরশাদ হয়েছে- খাও, পান কর ও অপচয় কর না। [. আ’রাফ : ৩১] আরো ইরশাদ হয়েছে- আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে। [. ফুরকান : ৬৭] আর খরচে ন্যায়ের প্রতি যে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে তা বৈধ খাতে খরচের বেলায়। যেমন- আহার-পোশাকের মত মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ ইত্যাদি। নয়তো অবৈধ স্থানে ব্যয়; তা অল্পই হোক আর বেশি- সবই নিষিদ্ধ। অতএব হারাম স্বাদ আস্বাদনে ব্যয় করা বৈধ নয়। যেমন- যেনা, মদ, নৃত্য বা পুরুষদের স্বর্ণ ব্যবহার ইত্যাদি কাজে ব্যয়- যেমন আল্লাহ ও আখিরাত বিমুখ বিলাসী লোকেরা করে থাকে। আর এ সবের কারণে সমাজে ব্যাভিচার ছড়িয়ে পড়ে। অনেক বিকৃত দলের প্রকাশ ঘটে যারা এসব হারামে লিপ্ত হয়ে সমাজে অশান্তি ডেকে আনে।
চার. জনস্বার্থে একান্ত প্রয়োজনে ইনসাফপূর্ণ প্রতিদান দিয়ে মালিক থেকে সত্তাধিকার কেড়ে নেয়া হয়। ফুকাহায়ে কিরাম এমন প্রয়োজনের উদাহরণ দিয়েছেন। যেমন- সর্বসাধারণের চলাচলের পথ সম্প্রসারণের জন্য মালিকানা নিয়ে নেয়া বৈধ। তেমনি বাধ্যতামূলক মালিকানা বিক্রি করে দেয়া বৈধ যদি তার ওপর অন্যদের বৈধ পাওনা থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/478/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।