মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার অনেকগুলো উপায় আছে। নিম্নে আমরা কয়েকটি উপায় উল্লেখ করছি।
১. আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করলে দুনিয়া ও আখিরাতের যে সব উপকার, ফযিলত ও লাভের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা লাভ করার প্রতি অধিক খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, কোনও বস্তুর ফলাফল, লাভ উপকারিতা ও পরিণতি জানলেই তা করার সদিচ্ছা জন্মে এবং তা করতে মানুষ অধিক আগ্রহী হয়।
২. আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার ভয়ানক পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা করতে হবে। কারণ, তা ব্যক্তি জীবনে একদা বিশেষ চিন্তা, বিষণ্ণতা, লজ্জা ও আফসোস বয়ে আনে। কেননা, কোনও জিনিসের ভয়ানক পরিণতির কথা জানা থাকলেই তো তা থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।
৩. এ ব্যাপারে সর্বদা আল্লাহ তা‘আলার একান্ত সহযোগিতা কামনা করবে। কারণ, একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই বান্দার সকল কাজ সহজ করে দিতে পারেন।
৪. আত্মীয়-স্বজনদের দুর্ব্যবহারকে আপনি নিজ ভালো ব্যবহার ও দয়া দিয়ে মোকাবিলা করবেন।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: একদা জনৈক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ্য করে বলেন: হে আল্লাহর রাসূল! আমার এমন কিছু আত্মীয়-স্বজন রয়েছে যাদের সাথে আমি আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করি; অথচ তারা আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। আমি তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করি; অথচ তারা আমার সাথে দুর্ব্যবহার করে। আমি তাদের সাথে ধৈর্যের পরিচয় দেই; অথচ তারা আমার সাথে কঠোরতা দেখায়। অতএব তাদের সাথে এখন আমার করণীয় কি? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:
“তুমি যদি সত্যি কথাই বলে থাক, তা হলে তুমি যেন তাদেরকে উত্তপ্ত ছাই খাইয়ে দিচ্ছ। আর তুমি যতদিন পর্যন্ত তাদের সাথে এমন ব্যবহার করতে থাকবে, ততদিন আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাদের উপর তোমার জন্য একজন সাহায্যকারী নিযুক্ত থাকবে”। [মুসলিম, হাদীস: ২৫৫৮]
৫. আত্মীয়-স্বজনদের খুঁটিনাটি ভুলত্রুটির কৈফিয়তসমূহ মেনে নিবে। কারণ, মানুষ বলতেই তো ভুল হওয়া একান্তই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে ইউসুফ আলাইহিস সালামের রেখে যাওয়া জ্বলন্ত আদর্শের কথা মাঝে মাঝে স্মরণ করা যেতে পারে। কেননা, তিনি এতো কিছুর পরও তাঁর ভাইয়েরা যখন তাদের কৃতকর্মের জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছে তখন তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। বরং তিনি তাদের ক্ষমার জন্য আল্লাহ তা‘আলার নিকট একান্তভাবে ফরিয়াদও করেছেন।
৬. আত্মীয়-স্বজনরা নিজেদের ভুলের জন্য ক্ষমা না চাইলেও নিজের উদারতাবশত তাদেরকে ক্ষমা করে দিবে এবং তাদের দোষ-ত্রুটি সমূহ একেবারেই ভুলে যাবে।
কারণ, তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উন্নত মানসিকতা ও পরম সাহসিকতার পরিচয় বহন করে। বুদ্ধিমান ব্যক্তি তো সেই যে নিজ আত্মীয়-স্বজনকে ক্ষমা করে দেয় এবং তাদের দোষ-ত্রুটিগুলো একেবারেই ভুলে যায়।
৭. নিজ আত্মীয়-স্বজনদের সাথে নম্রতা ও ভদ্রতার পরিচয় দিবে। কারণ, এতে করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনরা তাকে অধিক হারে ভালবাসবে এবং তার নিকটবর্তী হওয়ার জন্য সর্বদা চেষ্টা করবে।
৮. আত্মীয়-স্বজনদের খুঁটিনাটি ভুল-ত্রুটিসমূহ নিজ চোখে দেখেও তা না দেখার ভান করবে এবং তা নিয়ে কখনো ব্যস্ত হবে না। কারণ, এটি হল মহান ব্যক্তিদের অনুপম চরিত্র। আর এভাবেই তো পরস্পরের ভালোবাসা দীর্ঘ দিন টিকে থাকে এবং পরস্পরের শত্রুতা ধীরে ধীরে লোপ পায়। আর এটি হচ্ছে উন্নত মানসিকতা ও স্বচ্ছতার পরিচায়ক। এতে করে মানুষের মান-সম্মান ক্রমেই বাড়তে থাকে। কখনো তা কমে না।
আল্লামা ইব্নু হিব্বান [রাহিমাহুল্লাহ্] বলেন: যে ব্যক্তি মানুষের সাথে চলার ক্ষেত্রে তাদের দোষ-ত্রুটিসমূহ এড়িয়ে চলা এবং তাদের থেকে বেশি কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করার নীতি অবলম্বন করে না সে স্বচ্ছ জীবনের চাইতে অস্বচ্ছ জীবনই বেশি ভোগ করবে। মানুষের বন্ধুত্বের চাইতে তাদের শত্রুতাই তার ভাগ্যে বেশি জুটবে। [রাওযাতুল-উক্বালা’: ৭২]
৯. যথাসাধ্য আত্মীয়-স্বজনদের খিদমত করার চেষ্টা করবে। চাই তা সরাসরি হোক অথবা নিজের ধন-সম্পদ ও পদ-মর্যাদা দিয়েই হোক না কেন।
১০. আত্মীয়-স্বজনদেরকে কখনো নিজ অনুগ্রহের খোঁটা দিবে না। এমনকি তাদের থেকে সমপর্যায়ের আচরণের আশাও করবে না। কারণ, ইতোপূর্বেই বলা হয়েছে, সে ব্যক্তি আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষাকারী হিসেবে গণ্য হবে না যে ব্যক্তি কেউ তার সাথে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করলেই তবে সে তার সাথে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে।
১১. আত্মীয়-স্বজনদের সাথে অল্পতে তুষ্ট থাকার নীতি অবলম্বন করবে। কারণ, এ নীতি অবলম্বন করলেই আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা অতি সহজতর হয়। নতুবা নয়।
১২. আত্মীয়-স্বজনদের অবস্থা ও মানসিকতা বুঝেই তাদের সাথে অনুরূপ আচরণ করবে। কারণ, আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কেউ তো এমনও রয়েছে যে, তার সাথে বছরে অন্তত একবার সাক্ষাৎ এবং মাঝে মাঝে সামান্য ফোনালাপই যথেষ্ট। আবার কেউ কেউ তো এমনও রয়েছে যে, তার সাথে মাঝে মাঝে কিছু হাসিখুশি কথা বললেই সে তাতে খুব খুশি। আবার কেউ কেউ এমনও রয়েছে যে, তার সাথে বারবার সাক্ষাৎ দিতে হয় এবং সর্বদা তার খবরাখবর নিতে হয়। নতুবা সে রাগ করে। অতএব আত্মীয়দের প্রত্যেকের সাথে তার মেজাজ অনুযায়ী আচরণ করবে। তা হলেই তাদের সাথে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা অতি সহজেই সম্ভবপর হবে।
১৩. আত্মীয়দের সাথে আপ্যায়নে বাড়াবাড়ি করবে না।
কারণ, আত্মীয়-স্বজনরা যখন দেখবে আপনি তাদের আপ্যায়নে বাড়াবাড়ি করছেন না তখন তারা বারবার আপনার সাথে সাক্ষাতে উৎসাহী হবে। আর যখন তারা দেখবে আপনি তাদের আপ্যায়নে বাড়াবাড়ি করছেন তখন তারা আপনার সাথে বারবার সাক্ষাতে সঙ্কোচ বোধ করবে এ মনে করে যে, তারা আপনার সাথে বারবার সাক্ষাৎ করে আপনাকে বিরক্ত করছে না তো?!
১৪. কোনও কারণে আত্মীয়-স্বজনদের কাউকে একান্ত তিরস্কার করতে হলে তা হালকাভাবে করবে। কারণ, সত্যিকারার্থে ভদ্র ব্যক্তি সে, যে মানুষের অধিকারগুলো পুরোপুরিভাবে আদায় করে এবং নিজের অধিকারগুলো প্রয়োজন বোধে ছেড়ে দেয়। যাতে করে আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় থাকে। তবে নিজের অধিকার খর্ব হওয়ার দরুন কাউকে একান্ত তিরস্কার করতে হলেও তা হালকাভাবে করবে।
১৫. আত্মীয়-স্বজনদের তিরস্কার সহ্য করবে এবং তার একটি সুন্দর ব্যাখ্যাও বের করবে। এটি হচ্ছে সত্যিকারার্থে বিশিষ্ট গুণীজনদেরই চরিত্র। যাঁদের মধ্যে মানবিক যাবতীয় গুণাবলী বিদ্যমান এবং যারা শীর্ষ স্থানীয় চরিত্রবান তাঁরাই তো সমাজের অত্যন্ত ধৈর্যশীল ব্যক্তিবর্গই হয়ে থাকেন। তাঁদের কোনও আত্মীয়-স্বজন তাঁদেরকে তিরস্কার করলে তাঁরা মনে করেন, তাঁদের উক্ত আত্মীয় সত্যিই তাঁদেরকে অত্যধিক ভালোবাসেন এবং তাঁদের বারবার আসা-যাওয়া ও সাক্ষাৎ তিনি অবশ্যই কামনা করেন। তাই তাঁরা তাঁদের উক্ত আত্মীয়ের নিকট তাঁদের কৃত অপরাধ স্বীকার করেন। কারণ, দুনিয়াতে কিছু লোক তো এমনও রয়েছে যে, তারা অন্যদেরকে খুবই ভালোবাসেন ঠিকই। তবে তারা অন্যের কোনও দোষ-ত্রুটি দেখলেই তাকে খুবই তিরস্কার করে।
১৬. আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যে কোনও ধরনের হাসি-ঠাট্টা করতে তাদের সার্বিক অবস্থার প্রতি খেয়াল রাখবে এবং তাদের মধ্যে যারা হাসি-ঠাট্টা মোটেই পছন্দ করে না তাদের সাথে তা করবে না।
১৭. আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কোনভাবেই বাগবিতণ্ডা ও তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়বে না। কারণ, তা ধীরে ধীরে পরস্পরের মাঝে বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে। বরং তাদের সাথে এমন সকল আচরণ করা থেকে দূরে থাকবে যা সাধারণত পারস্পরিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে।
১৮. কখনো নিজ আত্মীয়-স্বজনদের কারোর সাথে কোনও ধরনের ঝগড়া-বিবাদ ঘটে গেলে যথাসাধ্য আকর্ষণীয় উপঢৌকনের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার পূর্বের ভাব ও সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। কারণ, হাদিয়া ও উপঢৌকন এমন একটি জিনিস যা পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি করে এবং পরস্পরের মধ্যকার ভুল ধারণাসমূহ নিরসন করে।
১৯. সর্বদা এ কথা মনে রাখবে যে, আত্মীয়-স্বজনরা হচ্ছে নিজের শরীরের একটি অংশের ন্যায়।
সুতরাং, তাদেরকে পরিত্যাগ করা কখনোই সম্ভবপর নয়। বরং তাদের সম্মানই নিজের সম্মান এবং তাদের অসম্মানই নিজের অসম্মান। আরবরা বলে থাকে,
«أَنْفُكَ مِنْكَ وَإِنْ ذَنَّ»
“নাক তো তোমারই যদিও তা থেকে লাগাতার সিন বের হয়”।
২০. সর্বদা এ কথা মনে রাখবে যে, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা সত্যিই একটি নিকৃষ্ট কাজ।
কেউ এতে নিজকে লাভবান মনে করলেও মূলত: সে ক্ষতিগ্রস্ত এবং কেউ এতে নিজকে বিজয়ী মনে করলেও মূলত: সে পরাজিত।
২১. বিয়ে-শাদি, আক্বীকা ইত্যাদি তথা যে কোনও অনুষ্ঠানে আত্মীয়-স্বজনদেরকে দাওয়াত দেয়ার প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখবে। এ জন্য সহজ উপায় হচ্ছে, প্রত্যেকেই নিজের সকল আত্মীয়-স্বজনদের একটি লিস্ট সংরক্ষণ করবে। যাতে থাকবে তাদের নাম ও টেলিফোন কিংবা মোবাইল নম্বর। আর যখনই কোনও অনুষ্ঠান করার চিন্তা করবে তখনই উক্ত লিস্ট খুলে সবাইকে যথাসাধ্য দাওয়াত দেওয়ার চেষ্টা করবে। চাই তা সরাসরি হোক অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে। যদি কোনও আত্মীয় যে কোনোভাবে উক্ত দাওয়াত থেকে বাদ পড়ে যায় তা হলে অতি দ্রুত নিজের ভুল স্বীকার করে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবে এবং তাকে যে কোনোভাবে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করবে।
২২. আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে কোনও ধরনের সমস্যা ঘটে গেলে তাদের মধ্যে যাকে আল্লাহ তা‘আলা সবার ভালোবাসা কুড়ানোর সুযোগ দিয়েছেন তাকে উক্ত সমস্যা দূর করার জন্য দ্রুত এগিয়ে যেতে হবে। তা না করলে একদা উক্ত সমস্যা বড় থেকে বড় হয়ে সবাইকেই জড়িয়ে ফেলবে।
২৩. নিজেদের মধ্যকার কেউ মারা গেলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি দ্রুত ওয়ারিশদের মাঝে বণ্টন করে দিবে।
যেন কারোর ওয়ারিশই সম্পত্তি নিয়ে ওয়ারিশ আত্মীয়-স্বজনদের পরস্পরের মাঝে দ্বন্দ্ব-বিগ্রহ সৃষ্টি না হয়।
২৪. আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যকার যৌথ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সবাই নিজেদের মধ্যে সর্বদা একতা ও সমঝোতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিবে। আমানতদারিতা, সত্যবাদিতা, পরস্পর দয়া, ভালোবাসা ও পরামর্শ এবং অন্যকে নিজের উপর অগ্রাধিকার দেয়ার প্রতি সর্বদা যত্নবান থাকবে। প্রত্যেকে অন্যের জন্য তাই ভালবাসবে যা নিজের জন্য ভালোবাসে এবং প্রত্যেকে নিজের অধিকারের পাশাপাশি অন্যের অধিকারের প্রতিও যত্নবান হবে।
কখনো কোনও সমস্যা অনুভূত হলে তা অত্যধিক সুস্পষ্টতার সাথে বিশেষ পর্যালোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করবে। প্রত্যেকেই নিষ্ঠার সাথে কাজ করার চেষ্টা করবে। অন্যের কাজের প্রতি বেশি দৃষ্টি দিবে না। যে কোনও ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে কোনও সিদ্ধান্ত হলে তা লিখে রাখার চেষ্টা করবে। এভাবে চলতে থাকলে ইনশাআল্লাহ তাদের মধ্যে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে রহমত ও বরকত নাযিল হবে এবং নিজেদের মধ্যকার ভালোবাসা দীর্ঘ দিন অটুট থাকবে।
২৫. মাসে, ছয় মাসে অথবা বছরে অন্তত একবার হলেও আত্মীয়-স্বজনরা সবাই কোথাও না কোথাও একত্রিত হওয়ার চেষ্টা করবে। এভাবে সবাই একত্রিত হলে পরস্পর পরিচিতি, সহযোগিতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে উক্ত বৈঠকগুলোর নেতৃত্বে যদি থাকে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানরা।
২৬. আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য নিজেদের মধ্যে সর্বদা একটি ফাণ্ড রাখা উচিত। তাতে সবার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট হারে মাসিক চাঁদা, নিজেদের মধ্যকার ধনীদের বিশেষ দান-সদকা সংগ্রহ করা যেতে পারে। আত্মীয়-স্বজনদের কেউ কোনও সমস্যায় পড়লে তা বিশেষভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে সে ব্যাপারে তাকে যথাযোগ্য সহযোগিতা করবে। এতে করে পরস্পরের মাঝে ভালোবাসা জন্মাবে ও বৃদ্ধি পাবে।
২৭. আত্মীয়-স্বজনদের একটি ফোন বুক তৈরি করে তা কপি করে সবার মাঝে বিতরণ করবে। উক্ত ফোন বুকটি সর্বদা নিজ আত্মীয়-স্বজনকে স্মরণ করিয়ে দিবে। এতে করে ফোনের মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজনদের খবরাখবর নেয়া এবং তাদেরকে বিশেষ অনুষ্ঠানাদিতে দাওয়াত দেওয়া সহজ হবে। আত্মীয়তার বন্ধনও রক্ষা পাবে।
২৮. আত্মীয়-স্বজনদের যে কাউকে বার বার বিরক্ত করা ও ঝামেলায় ফেলা থেকে বিরত থাকবে। কাউকে তার সাধ্যাতীত কিছু করতে বার বার বিরক্ত করবে না। বিশেষ করে আত্মীয়-স্বজনদের কেউ যদি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বা ধনী ব্যক্তি হন, তা হলে তাদেরকে এমন কাজ করতে চাপ সৃষ্টি করবে না যা তাদের সাধ্যের বাইরে অথবা কষ্টসাধ্য। যদি তাঁরা কোনও কারণে কারোর কোনও আবদার রক্ষা করতে না পারে তা হলে তাঁদেরকে কোনও তিরস্কার করবে না। বরং তাঁদেরকে এ ক্ষেত্রে অপারগ মনে করবে।
২৯. আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে পারস্পরিক পরামর্শ আদান-প্রদানের সুব্যবস্থা থাকা উচিত। বরং তাদের মাঝে একটি স্থায়ী মজলিসে শুরা থাকলে তা আরও ভালো। যাতে করে কারোর কোনও বড়ো সমস্যা দেখা দিলে তাদের উপযুক্ত পরামর্শ নেয়া যায় এবং এমন এক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যাতে আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্ট থাকবেন। উপরন্তু আত্মীয়-স্বজনরাও সবাই খুশি থাকবে। তবে মজলিসে শূরার সদস্যরা এমন হতে হবে যাদের রয়েছে অত্যধিক দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতা, ধৈর্য ও যথা সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার দুর্বার ক্ষমতা।
৩০. তবে উপরোক্ত সকল বিষয়ে এ কথার খেয়াল রাখবে, আত্মীয়তার সম্পর্ক যেন একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির জন্য হয় এবং পারস্পরিক সহযোগিতা পরোকল্যাণ ও তাকওয়া তথা আল্লাহ সচেতনতার ভিত্তিতে হয়। জাহিলি যুগের বংশ ও আত্মীয় প্রেমের ভিত্তিতে যেন না হয়।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে এ পরম আত্মীয়তার বন্ধনটুকু ছিন্ন করা থেকে সর্বদা বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমীন!
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/495/29
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।