hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নুসাইরিয়া সম্প্রদায়

লেখকঃ ড. গালেব ইব্‌ন আলি আওয়াজি

দ্বিতীয় অধ্যায়: মুহাম্মদ ইব্‌ন নুসাইরি কর্তৃক শিয়া মতবাদ ত্যাগ করার কারণ ও তার ব্যাপারে শিয়াদের মন্তব্য:
নুসাইরিয়া সম্প্রদায়ের সূচনা মুহাম্মদ ইব্‌ন নুসাইর আন-নুমাইরি থেকে। তার উপনাম আবু শু‘আইব। সে ছিল শিয়া দ্বাদশ ইমামিয়া মতবাদের অনুসারী ও পারস্যের অধিবাসী। একসময় “বাবের” দাবিতে শিয়াদের সাথে তার বিরোধ দেখা দেয়, ফলে সে তাদের ত্যাগ করে। তার দাবি: তিনি প্রতীক্ষার মাহদি মুহাম্মদ ইব্‌ন হাসান আল-আসকারির “বাব” (দরজা) ও মানুষের নিকট তার উকিল বা প্রতিনিধি। কিন্তু ইমামিয়্যাগণ তার এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে, তাই সে তাদের ত্যাগ করে স্বীয় অনুসারীদের নিয়ে আলাদা দল গঠন করে এবং ২৬০হি. মতান্তরে ২৭০হি.-তে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে দলের নেতৃত্ব দেন। ফির্কা গবেষকগণ বলেছেন: তিনি শিয়া ইমামিয়াদের এগারতম ইমাম হাসান আসকারির মাওলা বা দাস ছিল, কিন্তু হাসান আসকারি তার ও তার ভ্রান্ত কুফরি মতবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন।

মুহাম্মদ ইব্‌ন নুসাইরি স্ব সৃষ্ট নুসাইরি মতবাদের প্রত্যেক শাখা শির্ক ও নাস্তিকতায় ভরে দেন। তার মতবাদের মূল মন্ত্র দুর্বোদ্ধ কয়েকটি সংক্ষিপ্ত বাক্য, যারা দ্বারা সে মানুষদেরকে তার ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি আহ্বান করে। তার ধর্মের উপর গবেষণা ও তাদের সংশ্রব ব্যতীত যার অর্থ জানা অসম্ভব। এ জাতীয় একটি উদাহরণ [অনুবাদ করে] পেশ করছি:

“আমি, মহান আলি ও মাজহারে আসনা [“মাজহারে আসনা” অর্থ দীপ্তিময় ও উজ্জ্বল বাহ্যিক রূপ, অবয়ব বা দৃশ্য। খুব সম্ভব এখানে উদ্দেশ্য আলি ইব্‌ন আবু তালিব, কারণ তাদের বিশ্বাস আল্লাহ আলি ইব্‌ন আবু তালিবের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছেন। তাই তারা তাকে মাজহারে আসনা বা দীপ্তিময় অবয়ব বলে। অনুবাদক।] সম্পর্কে যা বিশ্বাস করি তার শপথ। নূর ও তার থেকে যা সৃষ্টি হয় তার শপথ, মেঘ ও তাতে অবস্থানকারীর শপথ, অন্যথায় আমি সম্পর্ক ছিন্ন করব মহান আলির থেকে, তাকে সমর্থন থেকে ও সত্য বিকশিত হওয়ার বাহ্যিক সত্তা থেকে। আমি অনুমতি ছাড়া সালমানের পর্দা উন্মুক্ত করেছি, হুজ্জত ইব্‌ন নুসাইরির দাওয়াত থেকে বিচ্ছেদ ঘোষণা করছি। আমি ইব্‌ন মুলজিমকে লা‘নতকারীদের দলে প্রবেশ করেছি। আমি খাত্তাবকে অস্বীকার করছি, -অর্থাৎ তার দীন ও দাওয়াত-, আমি সংরক্ষিত রহস্য প্রকাশ করে দিয়েছি ও আহলে হকের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছি, অন্যথায় আমি আমার হাতে আঙ্গুর গাছের কাণ্ড জমিন থেকে উপড়ে ফেলব, যেন মূলসহ তা উঠে যায়। আমি তার প্রাপ্তির স্থান নিঃশেষ করে দেব। আমি হাবিলের বিপক্ষে কাবিলের সাথে ও ইবরাহিমের বিপক্ষে নমরুদের সাথে। এভাবে প্রত্যেক ফিরাউনের পক্ষ নিব, যতক্ষণ না আমি মহান আলির সাথে সাক্ষাত করব, আমার উপর তার অসন্তুষ্টি নিয়ে। আমি কুন্বুরের কথা থেকে বিচ্ছিন্ন, আর বলব যে, সে আগুনের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনে সক্ষম হয়নি”। [“আল-আলাবিউন আও আন-নুসাইরিয়্যাহ”: (পৃ.৩), এসব বাক্যে আলির প্রতি তাদের ক্ষোভ স্পষ্ট হয়। আলির প্রতি তাদের ক্ষোভ সম্ভবত এ জন্য যে, যারা তাকে ইলাহ জ্ঞান করেছে, তিনি তাদের জ্বালিয়ে দিয়েছেন।] আমাদের আগামি আলোচনা থেকে এসব কসমের অর্থ স্পষ্ট হবে, ইনশাআল্লাহ।

‘হাসান আসকারি’কে সম্পৃক্ত করে ইব্‌ন নুসাইর স্বীয় দীনের ঘোষণা দিয়ে বলল: আমি হাসান আসকারির ছেলে মুহাম্মদ ইব্‌ন হাসান আসকারির “বাব”। এতে হাসান আসকারি তার প্রতি ক্ষুব্ধ হন ও অনুসারীদেরকে তার থেকে সতর্ক করেন। ইব্‌ন নুসাইর ও তার ভ্রান্ত মতবাদ থেকে সতর্ক করে এক অনুসারীকে লেখা তার একটি পত্র:

“আমি ইব্‌ন নুসাইর আন-নুমাইরি ও ইব্‌ন বাবা আল-কুম্মির সাথে আল্লাহর নিকট বিচ্ছেদ ঘোষণা করছি, আমি তাদের উভয় থেকে বিচ্ছিন্ন। আমি তোমাকে ও আমার সকল অনুসারীকে সতর্ক করছি, আর তোমাকে বলছি যে, আমি তাদের উভয়ের উপর লা‘নত করছি। তাদের উপর আল্লাহর লা‘নত, তারা ফেতনা সৃষ্টিকারী ও কষ্টদাতা। আল্লাহ তাদেরকে কষ্ট দিন, তাদের উপর লা‘নত করুন ও ফেতনায় তাদের নিমজ্জিত রাখুন”। [“আল-আলাবিউন আও আন-নুসাইরিয়্যাহ”: (পৃ.৪),]

হাসান আসকারী কর্তৃক তাকে লা‘নত করার কারণ:

ইব্‌ন নুসাইর আহলে বাইতের জন্য উলুহিয়্যাত ও নিজের জন্য নবুওয়ত দাবি করে অগ্নিপূজক মূর্তিপূজকদের নীতির উপর স্বীয় ধর্ম ঘোষণা দেন, তাই হাসান আসকারি তার উপর লা‘নত করেন। আব্দুল হুসাইন ‘আল-কুম্মি’র সূত্রে মুহাম্মদ ইব্‌ন নুসাইরির স্বভাব সম্পর্কে বলেন: সে ছিল নির্লজ্জ ও সমকামি। সে সমকামিতা ও অন্যান্য হারাম বস্তু বৈধ ঘোষণা করেছিল, তার দাবিতে এগুলো হচ্ছে দ্বিতীয় ব্যক্তির সাথে বিনয় ও নমনীয়তার আলামত... আরো অনেক কিছু, [“আল-আলাবিউন আও আন-নুসাইরিয়্যাহ”: (পৃ.২১), মাকালাতুল কুম্মি থেকে সংকলিত: (পৃ.১০০)] আমরা এখানে তার উদ্ধৃতি পছন্দ করছি না।

অবশ্য “আল-হাফতুশ শরিফে” এসব অস্বীকার করে বলা হয়েছে কোনো মুমিন থেকে এ জাতীয় কর্মকাণ্ড প্রকাশ পেতে পারে না, বরং তার পক্ষেই সম্ভব, যে আলির সাথে বিদ্বেষ পোষণ করে। মুফাদ্দাল এরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে শিয়াদের সব কিতাবে রয়েছে: ইব্‌ন নুসাইর প্রথমে “বাব”, অতঃপর নবুওয়ত, অতঃপর আলির উলুহিয়্যাত দাবি করে। হারাম হালাল করে ও পুর্নজন্ম তথ্য পেশ করে। শিয়া আব্দুল হুসাইন স্বীয় রচনা “আল-আলাবিউন আও আন-নুসাইরিয়্যাহ” গ্রন্থে তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন শিয়াদের প্রথিতযশা লেখকদের লিখনি থেকে, যেমন সাদ আল-কুম্মি, [“আল-মাকালাত ওয়াল ফেরাক”] আন-নওবখতি, [“ফেরাকুশ শিয়া”।] আবু ওমর আল-কাশি, [“রিজালুল কাশি”।] আবু জাফর আত-তুসি, [“রিজালুত তুসি” ও “কিতাবুল গাইবাহ”।] আল-হিল্লি, [“আর-রিজাল”।] আত-তাবরাসি [“আল-ইহতেজাজ”।] ও ড. মুস্তফা আশ-শায়বি [ الصلة بين التصوف والتشيع ] প্রমুখ।

অতঃপর আব্দুল হুসাইন নুসাইরিয়া সম্প্রদায়, ইব্‌ন নুসাইর ও তার সকল চিন্তা-বিশ্বাস থেকে নিজেকে মুক্ত ঘোষণা করেন, যদিও শিয়াদের কিতাবে হাসান আসকারির সাথে নুসাইরির সম্পর্কের প্রমাণ রয়েছে। [হাসান আসকারি শিয়াদ্বের দ্বাদশ ইমাম, তাই তার শিষ্য বা দাস থেকে কোনো শিয়ার বিচ্ছেদ ঘোষণা করা তাদের ইমান পরিপন্থী বিষয়। শিয়াদের প্রামাণ্য গ্রন্থে ইব্‌ন নুসাইরি এর সাথে হাসান আসকারির সম্পর্কের উল্লেখ থাকা সত্যেও আব্দুল হুসাইন তার থেকে বিচ্ছেদ ঘোষণা করে তাই করলেন। [অনুবাদক]] হাসান আল-আসকারির মৃত্যুর পর ইবন নুসাইরি তার (তথাকথিত) ছেলে দ্বাদশ ইমাম মুহাম্মদের সকল ‘উকিল’ বা প্রতিনিধি অস্বীকার করে নিজেকে “বাব” দাবি করেন। [শিয়া দ্বাদশ ইমামিয়াদের দাবি, মুহাম্মদ ইব্‌ন হাসান আল-আসকারির গুহায় আত্মগোপনের পর মানুষের প্রতি তার চারজন উকিল বা প্রতিনিধি হয়েছিল: উসমান ইব্‌ন সায়্যেদ আল-উমরি, মুহাম্মদ ইব্‌ন উসমান আল-খাল্লানি, হুসাইন ইব্‌ন রূহ আন-নওবখতি ও আলি ইব্‌ন মুহাম্মদ আস-সামরি।] এ জন্য রাফেযিরা (বর্তমান ইরানী শিয়ারা, যারা নিজেদেরকে জা‘ফরী বলে থাকে, তারা) তার থেকে প্রতিশোধ নেয় ও তার উপর নানা অপবাদ আরোপ করে।

শিয়া দ্বাদশ ইমামিয়া মতবাদে বিশ্বাসী মুহাম্মদ রেযা শামসুদ্দিন নিশ্চিত করে বলেন, যিনি ১৩৭৬হি.-তে নুসাইরিদের জানার জন্য নাজাফের আবদুল হাদী আশ-শীরাযী নামীয় জনৈক আলেমের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হয়ে সেখানে যান ও তাদের বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বলেন: “নুসাইরিরা এখনো তাদের নেতা মুহাম্মদ ইব্‌ন নুসাইরির মতবাদ আঁকড়ে আছে। তিনি বলেন: যখন তিনি সেখানে পৌঁছেন, তারা তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। তিনি তাদের মধ্যে সালাত, হজ ও ইসলামি অন্যান্য ফরয ইবাদতের প্রতি কোনো আগ্রহ দেখেন নি, তাদের অঞ্চলে কোনো মসজিদ নেই। তিনি লক্ষ্য করেন তারা ব্যাপকভাবে পুর্নজন্মে বিশ্বাসী, এটাকে তারা রূহের পোশাক পরির্বতন বলে”। [দেখুন তার লেখা গ্রন্থ: “আল-আলাবিউন ফি সুরিয়া”: (পৃ.৫৪), “আল-আলাবিউন আও আন-নুসাইরিয়া”: (পৃ.৪৬)]

মুহাম্মদ রেযার সাক্ষী সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই, কারণ তিনি তাদের সম্পর্কে বেশী জানেন, “আর তাদের নিজেদের লোক সাক্ষ্য দিল”। অতএব সালাত, হজ ও মসজিদ নির্মানের বিরোধিতা করে তারা কোন্ ইসলামের দাবি করে! পুর্নজন্ম আকিদা তো আছেই; যা মূলত অগ্নিউপাসকদের আকীদা-বিশ্বাস। তবুও আহলে সুন্নাহ তাদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাফেল, তাদের ষড়যন্ত্র থেকে বে-খবর।

এখানে উল্লেখ্য যে, ইদানিং শিয়া দ্বাদশ ইমামিয়া সম্প্রদায় (ইরানী শিয়ারা যারা নিজেদেরকে জা‘ফরী বলে থাকে) তারা নুসাইরিয়া ফেরকাসহ কঠিনভাবে বিভ্রান্ত বাতেনি সকল ফেরকার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে, উদ্দেশ্য [আহলে সুন্নার বিরুদ্ধে] [ব্রাকেটের অংশ অনুবাদকের পক্ষ থেকে বৃদ্ধি করা হয়েছে।] দ্বাদশ ইমামিয়া মতবাদের উপর সবাইকে এক কাতারে সমবেত করা। এর অংশ হিসেবে তারা ঘোষণা দিয়েছে নুসাইরি [আলাবি] সম্প্রদায় আহলে বাইতের অনুসারী। শিয়া আব্দুল হাদি সিরাজি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। [দেখুন আব্দুল হাদি সিরাজি লিখিত: “আলাবিউন শিয়াতু আহলিল বাইত”।] বর্তমান যুগে রাফেজিদের (ইরানী শিয়াদের) পাশে আলাবিদের (নুসাইরিয়াদের) দাঁড়ানো তার বড় প্রমাণ [আমার উস্তাদজী ড. গালেব যখন গ্রন্থখানি লিখেন তখনকার অবস্থা এটি ছিল, আমরা এখনও দেখছি যে, ইরানী শিয়ারা বর্তমান সিরিয়ার শাসক বাশশার আল-আসাদ নুসাইরী, যাকে তারা আলাওয়ী বলে থাকে, তার পক্ষ নিয়ে সিরিয়ার সুন্নী মুসলিমদের নিধনে সহযোগিতা করছে। [সম্পাদক]]।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন