মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
নুসাইরি নারীদেরকে দুনিয়ার সবচেয়ে মূর্খ নারী জ্ঞান করা হয়, তবে তাদের শিক্ষা থেকে মুক্তিপ্রাপ্তা নারীগণ ব্যতীত। তাদের মাযহাবের দাবি কোন নারীকে মাযহাবের রহস্য জানানো যাবে না। কারণ তাদের দৃষ্টিতে নারীর বিবেক ও দৃঢ়তা দুর্বল। দ্বিতীয়ত পুরুষের তুলনায় নারী অধিক দুষ্ট, ছলনাময়ী ও ষড়যন্ত্রকারী। তারা সকল অনিষ্টের মূল, “আল-হাফতুশ শরিফ”এ অনুরূপই বলা হয়েছে। তাদের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতাই জ্ঞান, অর্থাৎ নুসাইরি নারী তুলনামূলক অধিক অজ্ঞ।
অতএব নুসাইরি নারীর কোন ধর্ম নেই, [দেখুন: “দায়েরাতু মা‘আরিফিল কারনিল ইশরিন”, মূল ধাতু: ( نصر ), “আল-আলাবিউন”: (পৃ.৫৭), “তায়েফাতুন নুসাইরিয়াহ”: (পৃ.৪৩)] তাদের উক্ত কিতাবে নারীদের থেকে সতর্ক থাকার অনেক উপদেশ রয়েছে। তাতে নারীদের থেকে প্রকাশ পাওয়া অনেক অপকর্মের বর্ণনা রয়েছে। দুষ্ট পুরুষদেরকে পুনর্জন্মে নারী বানিয়ে শাস্তি দেয়া হয়, যদি সে পূর্বের জীবনে মুমিন না হয়, অর্থাৎ নুসাইরি না হয়, বা নুসাইরি ভাইদের উপর যুলম করে, বা শায়খদের সম্মান না করে ও তাদেরকে উপহার ও উন্নত খাবার না দেয়। [“আল-জিয়ালুত তালী”: (পৃ.৯)]
মুফাদ্দাল আল-জু‘ফি সাদেক থেকে বর্ণনা করেন, (যা মূলত সাদিকের উপর তাদের মিথ্যাচার), তিনি মাযহাবের গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব সম্পর্কে বলেন: “অনুরূপ কাফেররা পুরুষের মর্যাদা থেকে বিচ্যুত হয়ে সাধারণ কাফের নারীতে পরিণত হয়”। মুফাদ্দাল বলল: হে আমার মনিব, আপনার পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন: নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশী খারাপ, তারা অধিক ছলনাময়ী ও ষড়যন্ত্রকারী। সাদেক বললেন: হে মুফাদ্দাল, প্রত্যেক খারাপির মূল নারী। আমাদের পিতা আদমকে যখন জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল, [তাদের বিশ্বাস আমাদের আদমের পূর্বে সাতজন আদম ছিল, প্রত্যেক আদম একটি জাতির ন্যায়। সব আদম শেষে আমাদের আদম আগমন করেছেন, তিনি অষ্টম নাম্বার। দেখুন: আল-হাফতুশ শরিফ”: (বাব: ৬০ও৬১, পৃ.১৫০ ও ১৫৩)] তার কারণ ছিল হাওয়া। সে তাকে নির্দিষ্ট গাছের ফল খেতে প্ররোচিত করে।
অনুরূপ কাবিল সহোদর ভাই হাবিলকে হত্যা করেছে নারীর কারণে। তুমি নূহ ও লুতের স্ত্রীর ঘটনা আল্লাহর কালামে দেখ নি, তারা কিভাবে স্ব স্ব স্বামীর খিয়ানত করেছে [খিয়ানতের ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আকীদা এই যে, তারা নবীদের দীন প্রত্যাখ্যান করে তাদের খিয়ানত করেছে, পবিত্রতা ও সম্মানের ক্ষেত্রে খিয়ানত করে নি। ইব্ন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: “কোন নবীর স্ত্রী কখনো ব্যভিচার করেনি”। দেখুন: “আয়সারুত তাফাসির: (৫/৩৮৯, ৩৯১)]। অনুরূপ ইয়াহইয়াকে হত্যা করা হয়েছে জনৈক ব্যভিচারী নারীর কারণে। জাহান্নাম দেখে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত সুন্দর, কঠিন ও ধমকের সুরে বলেন: তিনি সেখানে তার অধিকাংশ অধিবাসী দেখেছেন নারী। অতঃপর সাদেক বলেন:
কেন এরূপ হবে না, তারা [নারীরা] [ব্রাকেটের নারী শব্দটি অনুবাদক কর্তৃক বর্ধিত, মূল কিতাবে এখানে পুরুষের সর্বনাম “হুম” রয়েছে, যার অনুবাদ করা হয়েছে “তারা” সর্বনাম দ্বারা। এখানে যেহেতু নারীর আলোচনা চলছে, তাই “হুম” এর স্থলে “হুন্না” স্ত্রীলিঙ্গের সর্বনাম সঠিক ছিল। কারো ভুলে হয়ত এরূপ হয়েছে। অনুবাদক।] ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্রে পুরুষদের থেকে শক্তিশালী। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, তার থেকে [আলি] [ব্রাকেটের আলি শব্দটি অনুবাদক কর্তৃক বর্ধিত।] আলাইহিস সালাম বলেন: শয়তানরা তো নারীই, মানুষ যখন কুফরি, সীমালঙ্ঘন ও একগুয়েমির চরম পর্যায় পৌঁছে যায়, তখন সে ইবলিসে পরিণত হয় ও তাকে নারীর আকৃতিতে প্রেরণ করা হয়। আমি বললাম: সুবহান্নাল্লাহ হে আমার মনিব! আমি কখনো এরূপ শুনিনি, আমি ভাবিনি এ বিষয়টি আমাকে কাঁদাবে। সাদেক বলল: তুমি কুরআনে আল্লাহর বাণী পড়নি:
“নিশ্চয় শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল”। [সূরা আন-নিসা: (৭৬)] তিনি অন্যত্র বলেছেন:
﴿ إِنَّ كَيۡدَكُنَّ عَظِيمٞ ٢٨ ﴾ [ يوسف : ٢٨ ]
“নিশ্চয় তোমাদের ষড়যন্ত্র ভয়ানক”। [সূরা ইউসূফ: (২৮)] এগুলো নারীদের আকৃতি। আমি বললাম: আমার মনিব সত্য বলেছেন”। [“আল-হাফতুশ শরিফ”: (পৃ.১৪৪)]
নারীদের প্রতি তাদের অশুভ দৃষ্টির কারণে তারা নারীদের সংশোধন কল্পে কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করে নি। তারা প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে তাদের দূরে রাখে, বিশেষ করে দীনের গোপনীয়তা থেকে। পক্ষান্তরে ইসলাম তার বিপরীত। ইসলাম তাকে দায়িত্বশীল ও জিম্মাদার বানিয়েছে। আল্লাহ কারো আমলই বিনষ্ট করেন না, হোক সে পুরুষ বা নারী। আল্লাহ পুরুষকে যা নির্দেশ দিয়েছেন, নারীকেও তা নির্দেশ দিয়েছেন, তবে নারীদের স্বার্থে কিছু বিষয় ব্যতিক্রম রয়েছে। ইসলাম নারীকে সম্পদের মালিক হওয়ার অধিকার দিয়েছে। সম্পদের যাকাত দেয়া, সদকা করা ও নেক আমলের প্রতি নারীদের উদ্বুদ্ধ করেছে, বরং মায়েদের পায়ের নিচে জান্নাত ঘোষণা দিয়েছে। [এ সম্পর্কিত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন: ইমাম আহমদ, নাসায়ি, ইব্ন মাজাহ ও হাকেম, তিনি হাদিসটি সহিহ বলেছেন। তবে ইমাম সাখাবি এ হাদিসের সনদে ইজতিরাব উল্লেখ করেছেন। দেখুন: “আল-মাকাসিদুল হাসানাহ”: (পৃ.১৭৬)] আল্লাহ নারীর [মাতার] আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার আনুগত্যের সাথে নিজের আনুগত্য একত্রে উল্লেখ করেছেন।
ইসলাম নারীদের যে সম্মান ও অধিকার দিয়েছে, তার সামনে নারীবাদীদের মাথা লজ্জায় অবনত করা উচিত, কিন্তু তার অধিকাংশ তারা জানে না, ফলে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বলে: ইসলাম নারীদের উপর জুলম করেছে। ইসলাম সম্পর্কে না জেনে এ বিষয়ে কথা বলা তাদের বোকামি বৈ কিছু নয়। তাদের উচিত প্রথমে ইসলামে নারীর অধিকারগুলো জানা, জ্ঞানীদের লেখা পড়া, তাহলে নিশ্চিত ইসলামের সামনে তারা নিজেদের হেয় জ্ঞান করত।
খ. পুরুষদের ধর্মের রহস্য শিক্ষা দেয়ার পদ্ধতি:
নুসাইরিরা কিভাবে নারীকে দীন শিক্ষা দেয় উপরে আমরা তার বর্ণনা দিয়েছি। এখানে আমরা পুরুষকে দীনদার বানানো বা তাকে দীন শিখানোর পদ্ধতি আলোচনা করব। দেখুন কঠোর গোপনীয়তা রক্ষার পর কিভাবে তারা পুরুষকে দীন শিক্ষা দেয়। নুসাইরি আকিদা যেহেতু সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও ভ্রান্তিতে ভরপুর, তাই তারা সবার সামনে তাদের মাযহাব প্রকাশ করে না। তারা নিজেরাও একে অপর থেকে অনেক বিষয় গোপন করে, যতক্ষণ না পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ দ্বারা পরস্পর উত্তীর্ণ হয়। তাদের পরীক্ষায় রয়েছে নানা অপমান, বিভিন্ন প্রকার হীনতা ও অনুতাপ।
তাদের তৈরি অশ্লীল ও অমানবিক পদ্ধতিতে যখন একজন ব্যক্তি তাদের দীনে প্রবেশ করে, তখন তার পৌরুষত্ব ও চিন্তার স্বাধীনতা বলে কিছু অবশিষ্ট থাকে না। তাকে অসম্মান করা হয় ও তার ইজ্জত বিনষ্ট করা হয়।
নুসাইরি দীন শিখতে এসে ছাত্র প্রথমে শায়খদের মজলিসে উপস্থিত হয়, অতঃপর তাদের থেকে একজনকে বেছে নেয়, যার কাছ থেকে সে দীন শিখবে। তারা তাকে রূহানী পিতা বা দীনি পিতা নাম দেয়। অতঃপর ছাত্রকে তারা উস্তাদের আনুগত্য ও বিনা বাক্যে তার সামনে বিনয়ী হওয়ার দীক্ষা দেন। যেমন সূফীরা তাদের মুরিদদের আনুগত্য শিক্ষা দেয়ার জন্য বলেন: “পীরের সামনে নিজেকে এমনভাবে সপে দাও, যেমন মৃত ব্যক্তি গোসল দাতার সামনে নিজেকে সপে দেয়”।
শিক্ষার্থীকে অপমান করার আরেক পদ্ধতি: শিক্ষার্থী শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করে শায়খদের জুতো মাথায় নিয়ে একপাশে চুপ দাঁড়িয়ে থাকবে, কোন কথা বলবে না। অতঃপর তার খাস উস্তাদ অন্য উস্তাদগণের নিকট তাকে গ্রহণ করার দরখাস্ত পেশ করে ও তাদের দলে নেয়ার আবেদন জানায়। শায়েখদের তাকে গ্রহণ করা সম্পন্ন হলে সে মাথা থেকে তাদের জুতো নামায় ও উপস্থিত শায়খদের হাত-পা চুম্বন করে।
অতঃপর সে স্বস্থানে দাঁড়ালে তার মাথার উপর একটি সাদা কাপড় রাখা হয়। উস্তাদ ও শিষ্যের মধ্যে একজন শায়খ অঙ্গিকারনামা পাঠ করেন, যা বিবাহের খুতবার ন্যায়। এ স্তরকে তারা বিবাহের প্রস্তাব, শ্রবণ করার স্তরকে বিবাহ, ইলম অর্জন করার স্তরকে গর্ভধারণ ও শিক্ষা দেয়ার স্তরকে তারা প্রসব করা বলে।
শিক্ষার এসব স্তর শেষে ছাত্রকে বলা হয়: তোমার প্রতিদিন পাঁচশত বার বি-হক্কে (ع.م.س) বলা ওয়াজিব, একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। এসব নিষ্ঠুর পরীক্ষা মেনে নিয়ে সে আসে অবশিষ্ট শিক্ষার জন্য, যেখানে তাকে আরো কঠিন বিষয়ে সন্তুষ্ট হতে হয়, যদিও তাতে তার পুরুষত্ব চলে যায়।
নিম্নে আমরা নুসাইরি মাযহাব শিক্ষার কয়েকটি শর্ত উল্লেখ করছি:
১- শিক্ষার্থীর বয়স উনিশের অধিক হওয়া জরুরি। [“আল-আলাবিউন আও আন-নুসাইরিয়্যাহ”: (পৃ.৫৭), دائرة معارف القرن العشرين مادة " نصر " গ্রন্থ থেকে সংকলিত।]
২- নিম্নের স্তরগুলো ধীরে ধীরে সমাপ্ত করা জরুরি:
প্রথম-স্তর: এ স্তরকে মূর্খতার স্তর বলা হয়। এ স্তরে তারা নুসাইরি বংশ থেকে মনোনীত শিক্ষার্থীকে মাযহাবের গোপনীয়তা বহন করার উপযুক্ত করে তুলে।
দ্বিতীয়-স্তর: এ স্তরকে সম্পৃক্ত করার স্তর বলা হয়। এ স্তরে শিক্ষার্থীকে তারা মাযহাবের কতক বিষয় শিক্ষা দেয়। এ তবকায় শিক্ষার্থী কোনো শায়খের তত্ত্বাবধানে এক বছর বা দু’বছর অবস্থান করে, সে তাকে ধীরে ধীরে মাযহাবের গোপনীয়তা শিক্ষা দেয়। সে যদি তার মধ্যে গ্রহণ করা ও শিক্ষা হাসিলের যোগ্যতা দেখে, তৃতীয়-ধাপে উন্নীত করে, অন্যথায় বের করে দেয়।
তৃতীয়-স্তর: এ স্তরকে শ্রবণ করার স্তর বলা হয়। এ স্তরকে তারা উচ্চ স্তর বলে। এখানে শিক্ষার্থীকে নুসাইরি মাযহাবের অধিকাংশ বিষয় শিক্ষা দেয়া হয়। অতঃপর তাকে মাযহাবের অন্যান্য গোপন বিষয় শিক্ষা দেয়ার জন্য নুসাইরি সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দানকারী শায়েখগণ একটি বিশেষ মজলিস ডাকেন। অতঃপর শায়েখগণ তাকে সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যান, যাকে তদের ভাষায় শায়খের স্তর বা সাহেবুল আহ্দ বলা হয়।
অনেক কাফিল ও সাক্ষীর উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীর এ স্তর সমাপ্ত করা হয়, তারা সবাই তার মধ্যে মাযহাবের গোপনীয়তা গ্রহণ করা ও তার হিফাজত করার যোগ্যতার সাক্ষী দেয়। অতঃপর তার থেকে প্রচলিত শপথ নেয়া হয় যে, জান গেলেও মাযহাবের গোপনীয়তা রক্ষা করব। এ স্তর পার করে সে নুসাইরিদের শায়খে পরিণত হয়। [“তায়েফাতুন নুসাইরিয়াহ”: (পৃ.৪৫ ও ৪৬), “আল-আলাবিউন”: (পৃ.৫৭), “দায়েরাতু মা‘আরিফিল কারনিল ইশরিন”, ( نصر ) ধাতু থেকে সংগৃহীত।]
এখানে উল্লেখ্য যে, শিক্ষার্থী উস্তাদকে যত সময় দিক, যতক্ষণ না তার বিবেক ও চিন্তা শক্তি বিলোপ হয়, তাকে মাযহাবের কোনো বিষয় শিক্ষা দেয়া হয় না। যেন তার বিবেক তাদের নোংরা আকিদা গ্রহণে অস্বীকার না করে, যা দেখে অন্তর কেঁপে উঠে, বিবেক ধিক্কার জানায় ও সুস্থ মস্তিষ্ক ঘেন্না করে। যেমন, তারা মদ বণ্টনকারীর হাতে মদ ও তার অবস্থাকে আব্দুন নূর বলে। শিক্ষার্থীর উপর বিভিন্ন পর্যায়ে কঠোর অধ্যবসায় চেপে দেয়। অতঃপর তাকে মাযহাব শিক্ষার যোগ্য ও প্রতিকূল পরিবেশে মাযহাবের সংরক্ষণকারী হিসেবে গড়ে তুলে।
নুসাইরি শায়েখরা মাযহাবের গোপন বিষয় শিক্ষা দেয়ার জন্য যে আচরণ করে, তার বার্ণনা দিয়েছে তাদের মাযহাব গ্রহণকারী মাখলুফ নামে জনৈক ব্যক্তি। মুহাম্মদ হুসাইন তার বিবরণ দেন:
“নির্দিষ্ট দিনে অনেক শায়েখ, গ্রামবাসী ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের অনেক লোক জমা হল। তারা আমাকে তাদের নিকট ডেকে নিল ও আমার হাতে মদের পাত্র তুলে দিল। [নুসাইরিয়াহ দীন শিক্ষার অপরিহার্য শর্ত হচ্ছে, দীন শিক্ষার সময় শিক্ষার্থীকে অবশ্যই মদ্যপ অবস্থায় থাকতে হবে। আশ্চর্য! এ কেমন দীন, যার শুরু মদ ও লাঞ্ছনা!] অতঃপর আমার পাশে একজন শায়খ দাঁড়ালেন, নুসাইরি ধর্মে তার উপাধি নকিব। তিনি আমাকে বললেন: “বল, হে আমার চাচা, আমার মনিব ও আমার মাথার মুকুট, আপনার অনুগ্রহের রহস্যের শপথ। আমি আপনার শিষ্য, আপনার জুতো আমার মাথার উপর”। আমার জীবনে এই প্রথম মদ পান করার ঘটনা কোনোভাবে এড়াতে পারলাম না। আমি যখন মদ পান করলাম, ইমাম আমার দিকে মুখ করে বললেন: তোমার উস্তাদের সম্মানার্থে উপস্থিত সবার জুতো তোমার মাথায় তুলতে রাজি আছ? আমি বললাম: কখনো না, বরং শুধু আমার উস্তাদের জুতো। নিয়মের প্রতি আমার অস্বীকৃতি প্রকাশের কারণে উপস্থিত সবাই হেসে দিল। অতঃপর তারা খাদেমকে বলল, সে আমার উস্তাদের জুতো আমার মাথা উন্মুক্ত করে তার উপর রাখল ও জুতোর উপর এক টুকরো সাদা কাপড় দিল। অতঃপর নকিব আমার মাথার উপর প্রার্থনা আরম্ভ করেন ও আমাকে গোপন রাখার নির্দেশ দেন। এরপর সবাই প্রস্থান করেন।
চল্লিশদিন পর অপর এক জমাত জড়ো হল, তারা আমাকে তাদের নিকট ডেকে নিল। প্রধান শায়েখ মদের পাত্র নিয়ে আমার পাশে দাঁড়ালেন ও আমাকে পান করালেন। আমাকে বললেন, আমি যেন বলি: (ع.م.س) রহস্যের শপথ। অতঃপর ইমাম বললেন: এ কালিমাগুলো অর্থাৎ (ع.م.س) রহস্যের শপথ তোমার প্রতিদিন পাঁচশত বার পড়া ওয়াজিব। অতঃপর তারা আমাকে ধর্মের গোপনীয়তা রক্ষার উপদেশ দিলেন ও প্রস্থান করলেন।
আবার সাতমাস পর আমাকে নিয়ে অপর এক জমাত [এ ধর্মের প্রত্যেকের উপর দীনের সবক’টি ধাপ অতিক্রম করা জরুরি। আমার ধারণা এতো কঠোর গোপনীয়তার ফলে তাদের দীনের দাওয়াত ব্যাপক ছিল না।] জড়ো হল, সাধারণের জন্য যার মেয়াদ নয় মাস। তাদের অভ্যাস মোতাবেক আমাকে তারা ডাকল ও তাদের থেকে দূরে দাঁড় করাল। তারা সবাই ইমামের সামনে ধর্মীয় রেওয়াজ অনুযায়ী দাঁড়াল। অতঃপর সমবেত সবার থেকে একজন উকিল দাঁড়ালেন, তিনি ইমামকে বললেন: হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ হে সায়্যেদ ইমাম। ইমাম তাকে বলল: তোমার উদ্দেশ্য কি, তুমি কি চাও? সে উত্তর দিল: রাস্তায় আমার সাথে একব্যক্তির দেখা... [একপর্যায়ে বলল:] তার নাম মাখলুফ। সে আপনাদের কাছে আদব শিখতে এসেছে।
তিনি বললেন: কে তাকে আমাদের সন্ধান দিয়েছে? সে উত্তর দিল:
( المعنى المعنى، والاسم العظيم، والباب الكريم وهي لفظة ع .م.س)
ইমাম বললেন: তাকে নিয়ে আস, আমরা তাকে দেখব। আমার উস্তাদ আমার হাত ধরে ইমামের নিকট নিয়ে গেলেন। আমি যখন তার নিকটবর্তী হলাম, তিনি আমার জন্য তার দু’পা প্রসারিত করলেন আমি তার দু’পা ও দু’হাত চুম্বন করলাম। তিনি আমাকে বললেন: হে যুবক তোমার কি প্রয়োজন, তুমি কি চাও? অতঃপর নকিব উঠে আমার পাশে দাঁড়ালেন ও আমাকে বলতে শিখালেন:
( بسر الذي أنتم فيه يا معاشر المؤمنين )
অতঃপর ভ্রুকুটি করে আমার দিকে তাকালেন ও বললেন: মুতি ও পরশ পাথরে আবৃত রহস্য জানার জন্য তুমি কেন আমাদের নিকট এসেছ, যা নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা বা প্রেরিত নবী ব্যতীত কেউ গ্রহণ করে নি? হে বৎস, জেনে রেখ, ফেরেশতাদের সংখ্যা অনেক, কিন্তু নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যতীত কেউ এ রহস্য গ্রহণ করে নি। নবীদের সংখ্যা অনেক, কিন্তু পরীক্ষিত ব্যতীত কেউ এ রহস্য গ্রহণে সক্ষম হয় নি। তুমি কি প্রস্তুত, তোমার মাথা কাটা যাবে, হাত কাটা যাবে, পা কাটা যাবে, তবু তুমি এ রহস্য প্রকাশ করবে না? আমি বললাম: হ্যাঁ। তিনি বললেন: তোমার পক্ষে এক শো জিম্মাদার চাই। তখন উপস্থিত সবাই বলল: হে আমাদের মনিব-ইমাম, আল-কানুন, ফলে তিনি বলেন: তোমাদের সম্মানার্থে অন্তত বারো জন অবশ্যই জরুরি।
অতঃপর দ্বিতীয় উস্তাদ দাঁড়ালেন ও বারো জিম্মাদারের হাতে চুমু খেলেন, আমিও তাদের হাত চুমু খেলাম।
অতঃপর কাফিল, তথা জিম্মাদারগণ উঠে দাঁড়াল ও বলল: হ্যাঁ, হ্যাঁ, হ্যাঁ, হে আমাদের মনিব ইমাম। ইমাম বললেন: হে সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ তোমাদের কি প্রয়োজন? তারা বলল: আমরা আপনার নিকট মাখলুফের দায়িত্ব নেয়ার জন্য এসেছি। তিনি বললেন: যদি সে এ গোপন রহস্য প্রকাশ করে, তাকে আমার নিকট নিয়ে আসবে, আমরা তাকে টুকরো টুকরো করব, তার রক্ত পান করব? তারা বলল: হ্যাঁ, তিনি বললেন: আমি শুধু তোমাদের জিম্মাদারিকে যথেষ্ট মনে করি না, বরং দু’জন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি চাই, যে তোমাদের দায়িত্ব নিবে।
উপস্থিত কাফিলদের থেকে একজন সামনে এগিয়ে গেলেন, আমি তার পাশেই ছিলাম, তিনি নির্দিষ্ট দু’জন কফিলের হাতে চুমু খেলেন। আমিও তাদের হাতে চুমু খেলাম। অতঃপর তারা উভয়ে বুকে হাত রেখে উঠে দাঁড়ালেন। ইমাম তাদের দিকে তাকালেন ও বললেন: হে নির্ভরযোগ্য পবিত্র জিম্মাদারগণ, আল্লাহ তোমাদেরকে কল্যাণের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখুন, তোমরা কি চাও? তারা উভয়ে উত্তর দিল আমরা আপনার নিকট এসেছি বারোজন কাফিল ও তার জিম্মাদারি গ্রহণ করার নিমিত্তে। তিনি বললেন: যদি সে এসব সালাত মুখস্থ করার পূর্বে পলায়ন করে বা এ রহস্য প্রকাশ করে, তাহলে তোমরা তাকে হত্যার জন্যে নিয়ে আসবে? তারা উভয়ে বলল: হ্যাঁ। ইমাম বললেন: জিম্মাদারগণ নিঃশেষ হয়ে যাবে, জিম্মাদারদের জিম্মাদারীও নিঃশেষ হবে, কিন্তু আমি তার থেকে এমন এক জিনিস চাই যা কখনো শেষ হবে না। তারা তাকে বলল: আপনার যা ইচ্ছা করুন, অতঃপর তিনি আমার দিকে মুখ করে বললেন:
হে মাখলুফ কাছে আস, আমি তার কাছে গেলাম। তিনি আমাকে সপ্ত আসমানের কসম দিলেন, যেন আমি এ রহস্য প্রকাশ না করি। অতঃপর আমার ডান হাতে “আল-মাজমু” গ্রন্থ দিলেন ও আমার পাশে দণ্ডায়মান নকিব আমাকে বলতে শিখালেন: হে আমার মনিব ইমাম, মহান এ রহস্যের উপর আমার কসম গ্রহণ করুন। আপনি আমার সকল অপরাধ থেকে মুক্ত। তিনি আমার থেকে “আল-মাজমু” কিতাবটি গ্রহণ করলেন, যা হাস্তাক্ষরে লিখা ছিল... তিনি বলেন: অতঃপর ইমাম বললেন: হে আমার বৎস, জেনে রেখ, যদি তুমি এ রহস্য প্রকাশ কর, তাহলে জমিন তোমাকে গ্রহণ করবে না। তুমি পুনরায় মানুষের পোশাকেও প্রবেশ করতে পারবে না, বরং তোমার মৃত্যুর পর থেকে তুমি বিকৃত জন্তুতে প্রবেশ করবে, তার থেকে কখনো মুক্তি পাবে না।
অতঃপর তারা আমাকে তাদের মাঝে বসাল, আমার মাথা উন্মুক্ত করল ও তার উপর একটি পর্দা রেখে দিল। অতঃপর কাফিলগণ আমার মাথার উপর হাত রেখে উপাসনা আরম্ভ করল। তারা প্রথমে সূরা ফাতহ, সূরা সূজুদ ও আইন পড়ল। অতঃপর মদ পান করল ও সূরাতুস সালাম পাঠ করে আমার মাথার উপর থেকে তাদের হাত হটাল। [দেখুন: “আল-জাইলুত তালি”: (পৃ.৩৯-৪৭)]
খাদেম আমাকে প্রথম উস্তাদের নিকট সোপর্দ করল। অতঃপর তিনি হাতে মদের পাত্র নিয়ে আমাকে পান করালেন ও বলতে শিখালেন: “বিসমিল্লাহ, [মদ পান করার পূর্বে বিসমিল্লাহ বলা শিখায়!!!] আল্লাহ ও সায়্যেদ আবু আব্দুল্লাহর রহস্যের শপথ, যিনি আল্লাহর মারেফাতের জ্ঞানে জ্ঞানী। তিযকার ও সালেহের রহস্যের শপথ, আল্লাহ তাকে সৌভাগ্যশীল করুন”।
অতঃপর সবাই চলে গেল, শায়খ সালেহ জাবালি আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে চললেন ও আমাকে শিক্ষা দেয়া আরম্ভ করলেন, প্রথমে শিক্ষা দিলেন “তাবাররি” অর্থাৎ গালি। এ সময় তিনি আমাকে নুসাইরি সালাত শিক্ষা দেন। যেখানে রয়েছে আলির ইবাদত, অর্থাৎ ষোলটি সূরা”। [এগুলো হচ্ছে কিছু দোয়া ও দুর্বোধ্য বাক্য, যার অধিকাংশ আমিরুন নাহলের মোনাজাত থেকে সংগৃহীত। আমিরুন নাহাল দ্বারা তাদের উদ্দেশ্য আলী ইব্ন আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু, আল্লাহ তাকে নুসাইরিদের দীন থেকে মুক্ত রেখেছেন, যা শির্ক ও আলির রুবুবিয়্যাত আকিদায় পরিপূর্ণ। যেমন তারা বলে তিনিই আল্লাহ, রাব্বুল আলামিন, আসমান ও জমিন সৃষ্টিকারী। আমরা এসব উল্লেখ করে কলেবর বৃদ্ধি করতে চাই না, প্রয়োজন হলে “আল-জাইলুত তালি” গ্রন্থটি দেখুন।]
আমি মখলুফের ঘটনার বর্ণনাক্রম ঠিক রেখে সংক্ষিপ্ত করার চেষ্টা করেছি, তাই বেশ কিছু বিষয় ত্যাগ করেছি।
এ ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, নুসাইরিদের মাযহাব শিক্ষা দেয়ার একটি জামাত বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা মানুষের বিবেক হরণকারী। তাদের উদ্দেশ্য যেভাবে হোক নেতৃত্ব ও সম্পদ জমা করা। তারা কতিপয় লোক পেয়েছে, যারা তাদের পথভ্রষ্টতা ও বাতিল পন্থাকে সত্য জ্ঞান করছে। যার সূচনা (ع.م.س) এর অযিফা এবং সমাপ্তি গায়রুল্লাহর ইবাদত। তারা পারস্যের মূর্তিপূজারীদের থেকে আমদানি করা শির্কের মাধ্যমে মানুষের সরলতা ও বিবেক নিয়ে তামাশা করছে। তারা এসব শয়তানী মতবাদ দ্বারা একটি জাতিকে বিভ্রান্ত করে সঠিক দীন থেকে বিচ্যুত করছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/702/7
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।