HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিয়া আলেম ও অধিকাংশ মুসলিম আলেমের মধ্যে বিরোধের বাস্তব চিত্র

লেখকঃ সা‘ঈদ ইসমাঈল

১১
সাহাবা
ইরানের শিয়া আলেমগণ বলে থাকে যে, খোলাফায়ে রাশেদীনের প্রথম দুই খলিফা আবূ বকর ও ওমর রাদিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন হাদিসসমূহকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে; এমনকি তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থের আলোকে আল-কুরআনুল কারীমের তাফসীর সম্পন্ন করেছেন; (নাউযুবিল্লাহ) যেমনিভাবে তারা আরও বলে থাকে যে, খোলাফায়ে রাশেদীনের প্রথম তিন খলিফা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেয়া তাঁদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। [মাহাদী আল-‘আসকারী, পৃ. ৩৪ – ৩৮।]

ইরানস্থ ইসলামী প্রজাতন্ত্রের ইসলামী শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেছে [আলী শরীয়তী, পৃ. ২৮ – ৩০।] যাতে সাহাবায়ে কেরামের প্রজন্মকে নিম্নোক্ত শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে:

১. এক দল হলেন তাঁরা, যাঁদের প্রতি শিয়া আলেমগণ সন্তুষ্ট; আর তাঁদের সংখ্যা দুই হাতের আঙুলের পরিমাণ, অর্থাৎ দশ জনের বেশি হবে না।

২. আরেক দল হলেন তাঁরা, যাঁদেরকে লেখক বর্ণনা করেছেন এইভাবে: “নিকৃষ্ট গোষ্ঠী এবং সীমালঙ্ঘনকারীদের পদতলে আত্মাহুতি দিয়েছে”; এই দলের মধ্যে আলী শরীয়তীর মতে আবদুল্লাহ ইবন ওমর একজন। [নাউযুবিল্লাহ] অথচ তিনি প্রায় চার হাজার হাদিস বর্ণনা করেছেন এবং সুন্নাহ (হাদিস) সংরক্ষণে ও ইসলাম প্রচারে তাঁর বড় ধরনের ভূমিকা ছিল।

৩. অন্য আরেক দল হলেন তাঁরা, যাঁদেরকে লেখক আলী শরীয়তী বর্ণনা করেছেন এইভাবে: “তারা নিজেদের মান-সম্মান বিক্রয় করে দিয়েছে ... এবং প্রতিটি হাদিস এক দীনারের বিনিময়ে বিক্রিয় করে প্রচুর মুদ্রা সঞ্চয় করেছে।” এই দলের মধ্য থেকে আলী শরীয়তী যাঁদের নাম বর্ণনা করেছেন, তাঁরা হলেন: আবূ হুরায়রা, আবুদ দারদা এবং আবূ মূসা আল-আশ‘আরী, [নাউযুবিল্লাহ] অথচ তাঁরা সুন্নাহ (হাদিস) সংরক্ষণে ও ইসলাম প্রচারে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করেছেন।

শিয়াদের আধুনিক গ্রন্থপঞ্জির মধ্য থেকে অপর তথ্যসূত্রে বর্ণিত আছে, ‘আল-জিহাদ’ নামক পত্রিকায় বিবরণ দেয়া হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর রিসালাতের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আলীর পক্ষাবলম্বন করেছেন; এরপর লেখক আরও একটু বাড়িয়ে বলল, “বরং আমরা এর চেয়ে বেশি লক্ষ্য করেছি যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমসাময়িক প্রজন্ম সুস্পষ্ট ও তীক্ষ্ণ চিন্তা-চেতনার অধিকারী ছিলেন না, এমনকি ধর্মীয় ব্যাপারেও যেগুলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীগণের চোখ ও কানের সামনে শত শত বা অনুশীলন বা চর্চা করতেন।”

শিয়া জা‘ফরীয় অপর এক আলেম বলেন: “আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ হল সম্পদের পূজারী, ওসমান হল জাত্যাভিমানী শ্রেণীর লোক, খালিদ ইবন ওয়ালিদ হল বেপরোয়া এবং সা‘দ ইবন আবি ওয়াক্কাস হল তাকওয়া শূন্য ব্যক্তি।” [আলী শরীয়তী, ফাতেমা হিয়া ফাতেমা ( فاطمة هي فاطمة ), পৃ. ২০৭।] [নাউযুবিল্লাহ]

অপরদিকে মুসলিম আলেমগণ বলেন: সাহাবীদের সকলেই ন্যায়পরায়ণ এবং কোন একজন সাহাবীও ইচ্ছাকৃতভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর মিথ্যারোপ করেছেন বলে প্রমাণ নেই। আর তাঁরা সকলেই সম্মানের অধিকারী। [আহমদ ইবন তাইমিয়্যা, মিনহাজুস্ সুন্নাহ আন-নববীয়া ফী নকযে কালামেশ্ শিয়া ওয়াল কাদরিয়া ( منهاج السنة النبوية في نقض كلام الشيعة و القدرية ), ১ম খণ্ড, পৃ. ৩০৭ ।] সুতরাং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁদের প্রশংসা করেছেন এবং তিনি বলেন:

﴿كُنتُمۡ خَيۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ﴾ [ سورة آل عمران : 110]

“তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে; তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান কর, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর।” [সূরা আলে ‘ইমরান: ১১০।]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:

﴿وَٱلسَّٰبِقُونَ ٱلۡأَوَّلُونَ مِنَ ٱلۡمُهَٰجِرِينَ وَٱلۡأَنصَارِ وَٱلَّذِينَ ٱتَّبَعُوهُم بِإِحۡسَٰنٖ رَّضِيَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ وَرَضُواْ عَنۡهُ وَأَعَدَّ لَهُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي تَحۡتَهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدٗاۚ ذَٰلِكَ ٱلۡفَوۡزُ ٱلۡعَظِيمُ ١٠٠﴾ [ سورة التوبة : 100]

“মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রগামী এবং নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও তাতে সন্তুষ্ট এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, যেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। এটা মহাসফলতা।” [সূরা আত-তাওবা: ১০০।]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরও বলেন:

﴿لَقَدۡ رَضِيَ ٱللَّهُ عَنِ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ إِذۡ يُبَايِعُونَكَ تَحۡتَ ٱلشَّجَرَةِ فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمۡ فَأَنزَلَ ٱلسَّكِينَةَ عَلَيۡهِمۡ وَأَثَٰبَهُمۡ فَتۡحٗا قَرِيبٗا ١٨ ﴾ [ سورة الفتح : 18]

“আল্লাহ তো মুমিনদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন, যখন তারা বৃক্ষতলে তোমার নিকট বায়‘আত গ্রহণ করেছে, তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি অবগত ছিলেন; তাদেরকে তিনি দান করলেন প্রশান্তি এবং তাদেরকে পুরস্কার দিলেন আসন্ন বিজয়।” [সূরা আল-ফাতহ: ১৮।]

একই সূরার ২৯ নং আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আরও বলেন:

﴿ مُّحَمَّدٞ رَّسُولُ ٱللَّهِۚ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ أَشِدَّآءُ عَلَى ٱلۡكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيۡنَهُمۡۖ تَرَىٰهُمۡ رُكَّعٗا سُجَّدٗا يَبۡتَغُونَ فَضۡلٗا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضۡوَٰنٗاۖ سِيمَاهُمۡ فِي وُجُوهِهِم مِّنۡ أَثَرِ ٱلسُّجُودِۚ ذَٰلِكَ مَثَلُهُمۡ فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِۚ وَمَثَلُهُمۡ فِي ٱلۡإِنجِيلِ كَزَرۡعٍ أَخۡرَجَ شَطۡ‍َٔهُۥ فَ‍َٔازَرَهُۥ فَٱسۡتَغۡلَظَ فَٱسۡتَوَىٰ عَلَىٰ سُوقِهِۦ يُعۡجِبُ ٱلزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ ٱلۡكُفَّارَۗ وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ مِنۡهُم مَّغۡفِرَةٗ وَأَجۡرًا عَظِيمَۢا ٢٩ ﴾ [ سورة الفتح : 29]

“মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল; তার সহচরগণ কাফিদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল; আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাদেরকে রুকূ ও সিজদায় অবনত দেখবে। তাদের লক্ষণ তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার প্রভাব পরিস্ফুট থাকবে; তাওরাতে তাদের বর্ণনা এইরূপ এবং ইঞ্জিলেও তাদের বর্ণনা এরূপই। তাদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা থেকে বের হয় কিশলয়, অতঃপর তা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে, যা চাষীর জন্য আনন্দদায়ক। এভাবে আল্লাহ মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের।” [সূরা আল-ফাতহ: ২৯।]

আরও পাঠ করুন, সূরা আত-তাহরীমের অষ্টম আয়াত এবং সূরা আল-হাশরের অষ্টম, নবম ও দশম আয়াত।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

«خير الناس قرني ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم ...» [ أخرجه البخاري ]

“সর্বোত্তম মানুষ আমার যুগের মানুষ; অতঃপর তাদের সাথে যারা সম্পৃক্ত হবে (তাবেয়ীগণ); অতঃপর তাদের সাথে যারা সম্পৃক্ত হবে (তাবে তাবেয়ীগণ) ...।” [সহীহ বুখারী, শাহাদাত (সাক্ষ্য) অধ্যায়, বাব নং- ৯, হাদিস নং- ২৫০৯।]

ইসলামের অনুসারী আলেমগণ এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ পোষণ করেন না যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন প্রকার স্বজনপ্রীতি বা বন্ধুপ্রীতি ছাড়াই রিসালাত প্রচার করেছেন এবং আমানত আদায় করেছেন। আর সাহাবীগণ সামগ্রিকভাবে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম থেকে বেশী জ্ঞানী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে এমন লোকরাও রয়েছেন, যাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তাদের শুধু মুমিনেই ভালবাসবে এবং মুনাফিকে ঘৃণা করবে।” অবশ্য এ ভালবাসা দ্বারা সে ভালোবাসা উদ্দেশ্য নয়, যে ভালোবাসা তার সীমালঙ্ঘন করেছে। সে ভালোবাসাও নয় যা পক্ষপাতমূলক ও অন্ধ। কেননা এ ধরণের ভালবাসা মূলত ঘৃণা ও শত্রুতা হিসেবেই বিবেচিত। আর সাহাবীদের মধ্যে এমন সাহাবীও ছিলেন, যিনি আলী ইবন আবি তালিব রা. অথবা নবী পরিবারের অন্যান্যদের চেয়ে বেশি জ্ঞানী ছিলেন। [আহমদ ইবন তাইমিয়্যা, মিনহাজুস্ সুন্নাহ আন-নববীয়া ফী নকযে কালামেশ্ শিয়া ওয়াল কাদরিয়া ( منهاج السنة النبوية في نقض كلام الشيعة و القدرية ), ৩য় খণ্ড, পৃ. ১১৬ – ১৭৩ ; মুসলিম, ১ম খণ্ড, পৃ. ৮৫ – ৮৬।] আর শিয়া আলেমগণ যাদেরকে গালি দেয়, তাদের মধ্যে জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীগণও রয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে কাউকে উদ্দেশ্য করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমার পিতা-মাতা তোমার জন্য উৎসর্গ হোক” অথবা তাঁদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন: “তোমরা আমার এবং আমি তোমাদের অন্তর্ভুক্ত” এবং এইভাবে সাহাবীদের মর্যাদা ও ফযিলত প্রসঙ্গে বহু হাদিস রয়েছে।

তবে যেখানেই সাহাবায়ে কিরাম -রিদওয়ানুল্লাহে তা‘আলা ‘আলাইহিম আজমা‘ইন- এর মধ্যে মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়, সেখানেই এটা মানতে হবে যে, তাঁদের মধ্যে এ বিষয়ে কোন মহৎ উদ্দেশ্য ও ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা বিদ্যমান আছে। আর সেই মতবিরোধ ছিল শুধুই ইজতিহাদ তথা গবেষণাগত, যার জন্য তাঁরা প্রতিদান পাবেন, চাই তাঁরা সঠিক করুক অথবা ভুল করুক। আর তাঁরা সকলেই আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে গেছেন, আর তিনি সকল বিচারকের মহাবিচারক। আর আমরা তাঁদের বিচার থেকে কী পেতে চাই? আর আমরাই বা কারা যে তাঁদের বিচার করব? অথচ এই ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন; কারণ, তিনি আল-কুরআনুল কারীমের দুই জায়গায় বলেন:

﴿تِلۡكَ أُمَّةٞ قَدۡ خَلَتۡۖ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَلَكُم مَّا كَسَبۡتُمۡۖ وَلَا تُسۡ‍َٔلُونَ عَمَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٣٤ ﴾ [ سورة البقرة : 134 و 141]

“সেই ছিল এক উম্মত, তা অতীত হয়েছে। তারা যা অর্জন করেছে তা তাদের। আর তোমরা যা অর্জন করেছে তা তোমাদের। আর তারা যা করত, সে সম্পর্কে তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে না।” [সূরা আল-বাকারা: ১৩৪ ও ১৪১]

একজন মুসলিম ব্যক্তির জন্য সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত সাহাবীদের ফযিলত অধ্যায় পাঠ করলেই যথেষ্ট হয়ে যাবে; তাতে সে তাঁদের জন্য প্রমাণিত মর্যাদা ও ফযিলত সম্পর্কে জানতে পারবে, আরও জানতে পারবে যে আমরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতেও সঠিকভাবে সক্ষম হচ্ছি না।

হে ভাই ও বোনেরা! আমাদের জন্য কি আল-কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ এবং পরিষ্কাভাবে বিধৃত বিশুদ্ধ হাদিসসমূহ সত্য বলে মেনে নেয়াটা উত্তম হবে, নাকি ঐসব শিয়া আলেমদের কথাকে সত্য বলে মেনে নেয়া উত্তম হবে, যারা সাহাবীদের একটা ক্ষুদ্র অংশকে সম্মান করে এবং দশ লক্ষ সাহাবীকে অসম্মান করে?

আমরা কি নিশ্চিত হতে পারি না যে, সাহাবীগণের সম্পর্কে আমাদের অবস্থান [যে অবস্থান শিয়ারা গ্রহণ করে থাকে, সটা] কী বাস্তবেই আমাদেরকে জান্নাতের পথের দিকে নিয়ে যাবে? আমরা নির্বোধ ও বোকাদের মত কাজকর্ম করা থেকে দূরত্ব বজায় রাখব; আর মনে হয় যেন আমরা ইসলামের শত্রুদের কর্মচারী, যারা সকল উপায়-উপকরণ দিয়ে ইসলামের প্রথম দিকের আমানতপূর্ণ উৎস ও প্রাথমিক শিক্ষকগণ সম্পর্কে আমাদের মনে সন্দেহের বীজ বপন করে দিয়ে তাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কী স্মরণ করতে পারি না ইমাম আহমদ ইবন হান্বল রহ. এর বক্তব্য, যাতে তিনি বলেছেন: “যখন তুমি কাউকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের ব্যাপারে মন্দ আলোচনা করতে দেখবে, তখন তুমি ইসলামের ব্যাপারে সন্দেহ করবে।” আর ইসহাক ইবন রাহাওয়াই র. বলেন: “যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদেরকে গালি দেবে, সে ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হবে এবং বন্দী করা হবে।” আর ইমাম মালেক র. বলেন: “যে ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেবে, সে ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে; আর যে ব্যক্তি তাঁর সাহাবীদেরকে গালি দেবে, সে ব্যক্তিকে শাস্তি দেয়া হবে।” আর কাযী আবূ ইয়া‘লা র. বলেন: “যে ব্যক্তি সাহাবীদেরকে গালি দেওয়াটা বৈধ মনে করে গালি দিয়েছে, সে ব্যক্তির উপর ফিকাহবিদগণের রায় হল সে কুফরি করেছে; আর যে ব্যক্তি হালাল মনে না করে গালি দিয়েছে, সেই ব্যক্তি পাপ করেছে।” আর ইবন তাইমিয়্যা র. বলেন: “যে ব্যক্তি ধারণা করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালের পর দশ জনের বেশি নয় এমন সংখ্যক সাহাবী ব্যতীত বাকি সকলেই মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছেন অথবা তাঁরা সকলেই অপকর্ম করেছেন, তবে সেই ব্যক্তি কাফির হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।” [আবূ মুয়াবিয়া মুহাম্মদ, পৃ. ১১ - ১৩]

আবূ যুর‘আ আর-রাযী র. বলেন: “যখন তুমি কোন ব্যক্তিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের কোন একজনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতে দেখবে, তখন জেনে রাখবে যে, সে ব্যক্তি হল নাস্তিক।”

আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: “যদি কোন ব্যক্তি আবূ বকর ও ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমার উপর আমাকে প্রাধান্য দেয়, আমি তাকে অপবাদ দাতার শাস্তির পরিমাণ বেত্রাঘাত করব।”

ইবনু হাজার আল-হাইসামী ইমাম মালেক র. থেকে বর্ণনা করেন: “যে ব্যক্তিকে সাহাবীগণ ক্রুদ্ধ করল, সে ব্যক্তি কাফির ...।” ইমাম শাফেয়ী র.ও ইমাম মালেক র.-এর মত অভিমত ব্যক্ত করেছেন। [আবূ মুয়াবিয়া মুহাম্মদ, পৃ. ২৫]

ইবনু ‘আবেদীন বলেন: “যদি কোন ব্যক্তি শায়খাইন তথা আবূ বকর ও ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে গালি দেয় অথবা উভয়ের ব্যাপারে অপবাদ দেয়, সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে এবং তার তওবা কবুল করা হবে না।” [আবূ মুয়াবিয়া মুহাম্মদ, পৃ. ৬২]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন