মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
শিয়া আলেম ও অধিকাংশ মুসলিম আলেমের মধ্যে বিরোধের বাস্তব চিত্র
লেখকঃ সা‘ঈদ ইসমাঈল
১২
তাকীয়া (التقية)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/706/12
শিয়া আলেমগণ বলেন:
“নিশ্চয় আল্লাহর দ্বীনের দশ ভাগের নয় ভাগ ‘তাকীয়া’ ( التقية )-র মধ্যে; যার ‘তাকীয়া’ নেই, তার ধর্ম নেই। আর নবীয তথা খেজুর থেকে গ্রহণ করা মদ ও মোজার উপর মাসেহ ব্যতীত সকল বস্তুর মধ্যে ‘তাকীয়া’ আছে।” [আল-কাফী মিনাল উসূল ( الكافي من الأصول ), ২য় খণ্ড, প্রকাশকাল: ১৯৬৮, পৃ. ২১৭ – ২১৯।]
অর্থাৎ- ‘তাকীয়া’ হচ্ছে মানুষ তার মনের মধ্যে যা গোপন করে রাখে, কথায় ও কাজে তার বিপরীত প্রকাশ করা; যেমন কোন ব্যক্তির অপর কারোর সাথে প্রকাশ্যে ভদ্রতা ও নম্রতা প্রকাশ করে কথা বলা, তবে মনে মনে ও তার একান্ত লোকদের কাছে অভিশাপ দেয়া। এমনকি যদিও সেখানে কোন জোর করার মত কারণ নাও থাকে [আল-কাফী ফিল ফুরু‘উ( الكافي في الفروع ), ৩য় খণ্ড, প্রকাশকাল: ১৯৬১, পৃ. ১৮৮ – ১৮৯।]। ‘তাকীয়া’র সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বর্ণনা প্রসঙ্গে খোমেনী তার গ্রন্থে বলে:
“তাকীয়া’র উদ্দেশ্য হল ইসলাম ও শিয়া মাযহাবকে হেফাযত করা; কারণ শিয়াগণ যদি তাকীয়া’র আশ্রয় গ্রহণ না করত, তবে অবশ্যই শিয়া চিন্তাধারা নিঃশেষ হয়ে যেত।” [আল-খামেনী, পৃ. ১৪৪।]
অপর অর্থে, শিয়াগণ ব্যতীত অন্যদের বিরুদ্ধে ‘তাকীয়া’ ( التقية )-কে ব্যবহার করার অনুমতি রয়েছে, এমনকি সমস্ত মুসলিমের বিরুদ্ধে। আর তা হবে কেবল শিয়া জা‘ফরীয়দের আকিদাকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।
শিয়া আলেমদের অন্যতম বিজ্ঞ আলেম আত-তাবতাবায়ী বলেন: “শিয়া মাযহাবের মধ্যে ‘তাকীয়া’ ( التقية )-র আকিদা বা বিশ্বাসের শিকড়ের সূত্রপাত হল সূরা আলে ইমরানের ২৮ নং আয়াত থেকে, যার মধ্যে আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“মুমিনগণ যেন মুমিনগণ ব্যতীত কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যে কেউ এইরূপ করবে, তার সাথে আল্লাহর কোন সম্পর্ক থাকবে না; তবে ব্যতিক্রম, যদি তোমরা তাদের নিকট থেকে সতর্কতা অবলম্বন কর। আর আল্লাহ তাঁর নিজের সম্পর্কে তোমাদেরকে সাবধান করছেন এবং আল্লাহর দিকেই প্রত্যাবর্তন।” [সূরা আলে ইমরান: ২৮।]
“কেউ তার ঈমান আনার পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং কুফরীর জন্য হৃদয় উন্মুক্ত রাখলে তার উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তার জন্য আছে মহাশাস্তি; তবে তার জন্য নয়, যাকে কুফরীর জন্য বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার চিত্ত ঈমানে অবিচলিত।” [সূরা আন-নাহল: ১০৬।]
আর অধিকাংশ মুসলিম আলেম বলেন: আমরা যখন আল-কুরআনুল কারীম নিয়ে গবেষণা করব, তখন আমরা বুঝতে পারব যে, মানুষের অভ্যন্তরে যা আছে, তার বিপরীত প্রকাশ করাটা মুনাফিকের অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে গণ্য করা হয় এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাকে ঘৃণা করেন; যেমন তিনি সূরা আল-বাকারার ১৪ ও ১৫ নং আয়াতে বলেন:
“যখন তারা মুমিনগণের সংস্পর্শে আসে, তখন বলে: আমরা ঈমান এনেছি; আর যখন তারা নিভৃতে তাদের শয়তানদের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে: আমরা তো তোমাদের সাথেই রয়েছি; আমরা শুধু তাদের সাথে ঠাট্টা-তামাশা করে থাকি। আল্লাহ তাদের সাথে তামাশা করেন এবং তাদেরকে তাদের অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াবার অবকাশ দেন।” [সূরা আল-বাকারা: ১৪ ও ১৫।]
“তোমরা কি এই আশা কর যে, তারা তোমাদের কথায় ঈমান আনবে— যখন তাদের একদল আল্লাহর বাণী শ্রবণ করে, অতঃপর তারা তা হৃদয়ঙ্গম করার পরও বিকৃত করে, অথচ তারা তা জানে। তারা যখন মুমিনগণের সংস্পর্শে আসে, তখন বলে: আমরা ঈমান এনেছি; আর যখন তারা নিভৃতে একে অন্যের সাথে মিলিত হয়, তখন বলে: আল্লাহ যা তোমাদের কাছে ব্যক্ত করেছেন, তোমরা কি তা তাদেরকে বলে দাও? এর দ্বারা তারা তোমাদের প্রতিপালকের সম্মুখে তোমাদের বিরুদ্ধে যুক্তি পেশ করবে; তোমরা কি অনুধাবন কর না? তারা কি জানে না যে, তারা যা গোপন রাখে কিংবা ঘোষণা করে, নিশ্চিভাবে আল্লাহ তা জানেন।” [সূরা আল-বাকারা: ৭৫ – ৭৭।]
“দেখ তোমরাই তাদেরকে ভালবাস, কিন্তু তারা তোমাদেরকে ভালবাসে না; অথচ তোমারা সমস্ত কিতাবের উপর ঈমান রাখ, আর তারা যখন তোমাদের সংস্পর্শে আসে, তখন বলে: আমরা ঈমান এনেছি; কিন্তু তারা যখন একান্তে মিলিত হয়, তখন তোমাদের প্রতি আক্রোশে তারা নিজেদের আঙুলের অগ্রভাগ দাঁতে কাটতে থাকে। বল, তোমাদের আক্রোশেই তোমরা মর। অন্তরে যা রয়েছে, সে সম্পর্কে আল্লাহ অবহিত।” [সূরা আলে ইমরান: ১১৯।]
এই জন্য আল্লাহ তা‘আলা ঐসব মুনাফিকদের জন্য কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন, যারা মনের ভিতর যা নেই তা প্রকাশ করে বেড়ায়; কেনানা তিনি বলেন:
﴿ إِنَّ ٱلۡمُنَٰفِقِينَ فِي ٱلدَّرۡكِ ٱلۡأَسۡفَلِ مِنَ ٱلنَّارِ وَلَن تَجِدَ لَهُمۡ نَصِيرًا ١٤٥ ﴾ [ سورة النساء : 145]
“মুনাফিকগণ তো জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে থাকবে এবং তাদের জন্য তুমি কখনও কোন সহায় পাবে না।” [সূরা আন-নিসা: ১৪৫।]
আর তারা (জমহুর ওলামা তথা অধিকাংশ আলেম) মুসলিম ব্যক্তির মনে যা আছে, কথা ও কাজের মাধ্যমে তার বিপরীত প্রকাশ করাটাকে এক ধরনের মিথ্যা ও মুনাফিকীর আলামত বলে বিবেচনা করেন; আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বলেন:
«آية المنافق ثلاث إذا حدث كذب وإذا وعد أخلف وإذا اؤتمن خان» ( أخرجه البخاري ).
“মুনাফিকের আলামত তিনটি: যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে, যখন ওয়াদা করে ভঙ্গ করে এবং যখন তার নিকট কিছু আমানত রাখা হয়, তখন সে তা খেয়ানত করে।” [সহীহ বুখারী, ঈমান, বাব নং- ২৩, হাদিস নং- ৩৩] অপর এক হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিমুখী ব্যক্তির নিন্দা করেছেন। [সহীহ মুসিলম, ৪র্থ খণ্ড, পৃ. ২০১১] সুতরাং সর্বজন বিধিবদ্ধ ইসলামী নিয়ম হল, মুসলিমদের উপর মিথ্যারোপ করা হারাম এবং ঘৃণিত কাজ।
পবিত্র কুরআনের সূরা আলে ইমরানের ২৮ নং আয়াতে মনের বিপরীত কথা বলার যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, তা শুধু কাফিরদের সাথে এবং বিশেষ কোন সংকটকালীন অবস্থায় কৌশল অবলম্বন করার জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। [আহমদ ইবন তাইমিয়্যা, মিনহাজুস্ সুন্নাহ আন-নববীয়া ফী নকযে কালামেশ্ শিয়া ওয়াল কাদরিয়া ( منهاج السنة النبوية في نقض كلام الشيعة و القدرية ), ১ম খণ্ড, পৃ. ২১৩ এবং অন্যান্য নির্ভরযেগ্য তাফসীর গ্রন্থসমূহ।]
আর সূরা আন-নাহলের ১০৬ নং আয়াত, যা নাযিল হয়েছে ‘আম্মার ইবন ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহুর শানে; তাতে ‘আম্মারের মত ব্যক্তিকে মনের বিপরীত কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়েছে; আর তা ছিল এমন প্রেক্ষাপট, যাতে তিনি অনুমান করতে পেরেছিলেন যে, তাকে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে, হয় তাকে মুশরিকদের শাস্তির অধীনে তার পিতা-মাতার মত মরতে হবে, অথবা মুখে কুফরের ঘোষণা দিয়ে মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে; অথচ তাঁর অন্তর ছিল ঈমান দ্বারা ভরপুর।
সুতরাং এই ধরনের পরিবেশ-পরিস্থিতির ব্যাপারটি একেবারে স্বতন্ত্র। তাছাড়া ব্যাপকভাবে এই নীতি অবলম্বন করা বৈধ নয়। অতএব এই ধরনের মিথ্যা ও নিফাকের মধ্যে দীনের দশ ভাগের নয় ভাগ নির্ধারণ করার পেছনে কী যৌক্তিকতা আছে?!
হে ভাই ও বোনেরা! এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করুন, যদি মুসলিমগণ বাস্তবিক পক্ষে এই কথায় বিশ্বাস করে যে, দীনের দশ ভাগের নয় ভাগ ‘তাকীয়া’ ( التقية )-র মধ্যে আছে, তবে তাতে কী ফায়দা হাসিল হবে? অর্থাৎ- যা মুসলিম ব্যক্তির হৃদয় বা অভ্যন্তরে নেই, তা প্রকাশ করা তার দীনের দশ ভাগের নয় ভাগের সমান; এমতাবস্থায় আপনার পক্ষে কাউকে বিশ্বাস করা সম্ভব হবে কি?
হে মুসলিম ভাই ও বোনেরা! যেসব আলেম এই ‘তাকীয়া’র নীতিতে বিশ্বাস করে, তাদের নিকট থেকে আমরা সত্যিকার অর্থে আমাদের ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হব কি? তারা যেসব হাদিস অথবা ঐতিহাসিক ঘটনা বর্ণনা করবে, আমরা তা বিশ্বাস করতে পারব কি? যখন কোন মানুষ বিশ্বাস করবে যে, আল্লাহ তা‘আলা, তাঁর রাসূল ও মুসলিমদের উপর মিথ্যারোপ করাটা তার পক্ষপাতমূলক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তার দীনের মৌলিক অংশের অন্তর্ভুক্ত করে দেয়া হয়েছে, তখন তার বিশ্বস্ততা উপলব্ধি করার কোন উপায় আছে কি? যখন আমাদের মূল লক্ষ্য পরকালীন নাজাত তথা মুক্তি যা স্থায়ী জীবন, তখন আমাদের উচিত শিয়া আলেমদের পেশ করা মিথ্যা বক্তব্য ও অসার তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা বিতর্ক থেকে সতর্ক থাকা।
হে ভাই ও বোনেরা! চিন্তা-ভাবনা করে দেখুন যে, ‘তাকীয়া’র সুযোগটি শুধু সাধারণ নিয়ম-কানুন থেকেই আলাদা নয়, বরং তা শর্তযুক্তভাবে স্বতন্ত্র সুযোগ। সুতরাং তা অমুসলিমদের সাথে ঢালাওভাবে প্রতারণার সুযোগ দেয় না; কিন্তু ‘আম্মার রা.-এর মত পরিস্থিতির শিকার হলে তাদের সাথে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া বৈধ হবে। আর আয়াতের অর্থ তো এটাই যে, মুসলিম ব্যক্তি মিথ্যা না বলেই ইসলামের শত্রুদের থেকে তার রাগ ও ক্রোধ গোপন করে রাখতে পারে, যখন তার এই রাগ বা ক্রোধ প্রকাশ করাটা ইসলাম অথবা ইসলামী সমাজকে বিপদের সম্মুখীন করবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/706/12
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।