HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিয়া আলেম ও অধিকাংশ মুসলিম আলেমের মধ্যে বিরোধের বাস্তব চিত্র

লেখকঃ সা‘ঈদ ইসমাঈল

ইজমা
ইজমার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শিয়া আলেমদের পক্ষে ও বিপক্ষে অভিমত রয়েছে। সুতরাং ইজমা দ্বারা যখন তাদের মতামতকে সমর্থন দেবে, তখন তারা ইজমাকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করবে। উদাহরণস্বরূপ আত-তাবতাবায়ী’র ব্যবহার করা অনেক কথা: “সবটাই শিয়া মতবাদ ও সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত ...” এবং “... সকলেই তাকে স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন”। [তাবতাবায়ী, পৃ. ৪০।] [কারণ, এগুলো তাদের মতের সমর্থনে হয়েছে, তাই তারা তখন ইজমা স্বীকার করছে; নতুবা নয়]

অপরদিকে শিয়া আলেমগণ ইজমাকে প্রত্যাখ্যান করে; অতএব উদাহরণস্বরূপ:

১. তারা বলে, সাহাবীগণের সংখ্যা হাজার হাজার; তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালের পর তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে এবং দশ জনেরও কম সংখ্যক সাহাবী তাঁর সুন্নাতের উপর বলবৎ ছিলেন। এই জন্য তারা এই কম সংখ্যক সাহাবীকেই তাদের উপর মিথ্যা কথা আরোপ করে অধিকাংশ সাহাবীর উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকে।

২. তারা বিশ্বাস করে যে, ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময় ও স্থানে কোটি কোটি মুসলিম ইসলাম ও ঈমানের গুণগত পরিপূর্ণতা লাভ করেনি। কারণ, তারা শিয়াদের বিশ্বাস অনুযায়ী ইসলাম ও ঈমানের একটি অন্যতম রুকনকে (স্তম্ভ) প্রত্যাখ্যান করে; আর তা হল ইমামত তথা শিয়া ইমামগণের প্রতি বিশ্বাস। অর্থাৎ বার জন নিস্পাপ ইমামের অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা, তাদের ধারণা মতে, যাদের ব্যাপারে রাসূল বক্তব্য দিয়েছেন যাতে তাদের জন্য রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব নির্ধারিত হয় এবং তারা একের পর এক তার উত্তরাধিকারী হবে। [অথচ এটা মিথ্যাচার]

৩. তারা আল-কুরআনুল কারীমের বিশুদ্ধতা ও পরিপূর্ণতার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করে; অথচ সকল মুসলিম আলেম একবাক্যে তা বিশ্বাস করেন।

আর অধিকাংশ মুসলিম আলেম ইজমাকে কুরআন ও সুন্নাহর পরে ইসলামী শরীয়তের তৃতীয় উৎস হিসেবে বিবেচনা করেন। [ফাতাওয়া, খণ্ড (১৯), পৃ. ৫ - ৮, ১৯২ – ২০২।] সুতরাং হাদিসের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বক্তব্য হল যার সনদ মুতাওয়াতিরের পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেমন সাহাবীদের একদল হাদিস বর্ণনা করেছেন; আর তাঁদের নিকট থেকে তাবেয়ীদের একদল তা বর্ণনা করেছেন। [ইবনু আছীর আল-জাযারী, জামে‘উল উসূল ফী আহাদীসের রাসূল ( جامع الأصول في أحاديث الرسول ), ১ম খণ্ড, পৃ. ১২০ - ১২৬] আর উদ্ভাবিত সমাধান ও ফতোয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নতমানের হল যার ব্যাপারে আলেমগণ ইজমা বা ঐক্যমত পোষণ করেছেন। [ফাতাওয়া, খণ্ড (৯), পৃ. ২৬৭ – ২৭২।] কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর সুস্পষ্ট কিতাবে বলেন:

﴿وَٱعۡتَصِمُواْ بِحَبۡلِ ٱللَّهِ جَمِيعٗا وَلَا تَفَرَّقُواْ ﴾ [ سورة آل عمران :103]

“তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।” [সূরা আলে ‘ইমরান: ১০৩।]

আর আল্লাহ তা‘আলা ঐসব লোকদেরকে অপছন্দ করেন, যারা তাদের দীনকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করেছে; সুতরাং তিনি তাঁর নবীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন:

﴿ إِنَّ ٱلَّذِينَ فَرَّقُواْ دِينَهُمۡ وَكَانُواْ شِيَعٗا لَّسۡتَ مِنۡهُمۡ فِي شَيۡءٍۚ إِنَّمَآ أَمۡرُهُمۡ إِلَى ٱللَّهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُواْ يَفۡعَلُونَ ١٥٩﴾ [ سورة الأنعام : 159]

“যারা দীন সম্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে, তাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়; তাদের বিষয় আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন।” [সূরা আল-আন‘আম: ১৫৯।]

ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« أوصيكم بأصحابي ثم الذين يلونهم ... عليكم بالجماعة وإياكم والفرقة فإن الشيطان مع الواحد وهو من الاثنين أبعد من أراد بحبوحة الجنة فيلزم الجماعة» ( أخرجه الترمذي و أحمد ).

“আমি তোমাদেরকে আমার সাহাবী ও তাদের পরবর্তীদের (তাবেয়ীদের) অনুসরণের নির্দেশ দিচ্ছি ... তোমাদের কর্তব্য হল সংঘবদ্ধভাবে থাকা এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে বেঁচে থাকা। কারণ, শয়তান একা ব্যক্তির সাথে থাকে; আর সে দুইজন থেকে বহু দূরে অবস্থান করে। সুতরাং যে ব্যক্তি জান্নাতের কল্যাণ লাভ করতে চায়, সে জামাতের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে।” [তিরমিযী, ফিতান, বাব নং- ৭, হাদিস নং- ২১৬৫ ; আহমদ, ইবনু আছীর আল-জাযারী, জামে‘উল উসূল ফী আহাদীসের রাসূল ( جامع الأصول في أحاديث الرسول ), ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ৬৬৯।]

আর কোন সন্দেহ নেই যে, মুসলিম জামাত দ্বারা উদ্দেশ্য হল তাদের আলেমগণ; সাধারণ মুসলিমগণ উদ্দেশ্য নয়, যারা ইসলামের মৌলিক গ্রন্থসমূহ অধ্যয়ন ব্যতীত শুধু অনুসরণ ও অনুকরণ নির্ভরশীল।

অপর এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: «لا تجتمع أمتي على خطأ»

(আমার উম্মত ভুলের উপর ঐক্যবদ্ধ হবে না)।

তিনি আরও বলেন: «لم يكن الله ليجمع أمتي على الضلالة»

(আল্লাহ আমার উম্মতকে ভ্রষ্টতার উপর ঐক্যবদ্ধ করবেন না)।” [রাসূলের বাণী: " لا تجتمع أمتي على ضلالة " (আমার উম্মত ভ্রষ্টতার উপর ঐক্যবদ্ধ হবে না) -এর শাব্দিক উদ্দেশ্যের আলোকে সাখাবী এই অর্থটিকে বিশুদ্ধ বলেছেন।]

তিনি আরও বলেন:

«ما رآه المسلمون حسنا فهو عند الله حسن»

(মুসলিমগণ যা উত্তম মনে করে, তা আল্লাহর নিকটও উত্তম)। [সাখাবী এই হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।]

আর তা এই জন্য যে, মুজতাহিদ তথা গবেষকদের প্রেক্ষাপট ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশের বিভিন্নতা সত্ত্বেও কোন হুকুম বা সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাদের ঐক্যমত পোষণ দ্বারা হকের উপর তাদের ইজমাই অর্জিত হয়। [‘ইজ্জুদ্দীন বালীক, মিনহাজুস্ সালেহীন ( منهاج الصالحين ), পৃ. ৫৪৪।]

আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর উম্মত অচিরেই তিহাত্তর দলে বিভক্ত হয়ে যাবে; তন্মধ্যে একটি দল হবে মুক্তিপ্রাপ্ত, আর বাকি সবগুলো জাহান্নামী। আর যখন তাঁকে মুক্তিপ্রাপ্ত দল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, তখন তার জওয়াবস্বরূপ প্রাপ্ত একটি বর্ণনার মর্মার্থ হল, সে দলটি হল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণের নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত দল; আবার অন্য বর্ণনা অনুযায়ী সেই মুক্তিপ্রাপ্ত দল হল ‘জামাত’ অর্থাৎ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত। [মিনহাজুস্ সুন্নাহ ( منهاج السنة ), ২য় খণ্ড, পৃ. ১২২ – ১২৫।]

হে ভাই ও বোনেরা! তোমরা কি বিশ্বাস করবে না যে, নিয়ম-কানুনের যে কোন কার্যকরী মানদণ্ড নির্ভর করে তার যথাযথ ব্যবহার ও নির্ভেজাল ফলাফলের উপর। নতুবা এক বার তা গ্রহণ করা হবে; আরেক বার তা প্রত্যাখ্যান করা হবে। আর এই কারণে এমন কোন ফকীহর (আইনবিদ) উপর নির্ভর করা সম্ভব হবে কি, যিনি মূলত দলিল ব্যবহার করেন কোন বস্তু নিজের জন্য বৈধ করার জন্য, যা অন্যদের জন্য সেই বস্তুটিকে অবৈধ করে দেয়? অথবা যিনি নিজের পক্ষে দেয়া দলিল যখন তার বিপক্ষে চলে যায়, তখন তিনি তার দলিলের স্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেন? আর যখন তার পক্ষে থাকে, তখন তার উপর নির্ভর করেন?

হে ভাই ও বোনেরা! মনে কর, কোন মুসলিম ব্যক্তি জান্নাতে যাওয়ার পথ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল, তখন তার জওয়াব দিল কমপক্ষে দশ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল যারা ঐ পথ সম্পর্কে ভালভাবে জানেন; কিন্তু অপর একজন যদি এমন বর্ণনা দেয়, যা উপরোক্ত বর্ণনার বিপরীত, এমতাবস্থায় সেই মুসলিমকে তুমি কি উপদেশ দিবে? সে কি দশ সদস্য বিশিষ্ট একটি দলের বক্তব্যের অনুসরণ করবে, নাকি ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকারী একক ব্যক্তির কথার অনুসরণ করবে? যদি ধরে নেয়া হয় যে, প্রশ্নকারী ব্যক্তি ঐসব ব্যক্তিদের কারো সম্পর্কে কিছুই জানে না এবং তার কাছে উভয় বর্ণনাই যুক্তিসঙ্গত মনে হয়

অতঃপর কি সমাধান হবে, যদি পরিষ্কার হয় যে, ভিন্ন অভিমত পেশকারী ব্যক্তির বর্ণনার মধ্যে ব্যক্তিস্বার্থ নিহিত রয়েছে এবং বাকিদের বর্ণনায় এই রকম ব্যক্তিস্বার্থ নেই? আবার কিইবা সমাধান হবে, যদি তুমি জানতে পার যে, স্বতন্ত্র রায় পেশকারী ব্যক্তি অচিরেই প্রশ্নকারী ব্যক্তির উপর বিদ্বেষ পোষণ করবে, যখন সে তার বর্ণনা বা পরামর্শের অনুসরণ করবে না; যে সময়ে বাকিদের অভিমত হল যে, তাদের মতের বিরোধিতা কারী বিদ্বেষ ও ঘৃণার উপযুক্ত হবে না?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন