HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিয়া আলেম ও অধিকাংশ মুসলিম আলেমের মধ্যে বিরোধের বাস্তব চিত্র

লেখকঃ সা‘ঈদ ইসমাঈল

১৩
মুত‘আ বিয়ে
শিয়া আলেমগণ মুত‘আ তথা সাময়িক বিয়ে বৈধতার পক্ষে কথা বলে। কারণ, তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে বৈধ ছিল। শুধু ওমর ইবনুল খাত্তাব রা. তাঁর খিলাফত কালে তা নিষিদ্ধ করেছিলেন। [তাবতাবায়ী, পৃ. ২২৭ – ২৩০।] আর মুত‘আ বিয়ের উদ্দেশ্য হল শুধু যৌনতৃপ্তি দান। আর মুত‘আ বিয়ের মধ্যে তালাক নেই, উভয় পক্ষের মধ্যে কোন উত্তরাধিকার ব্যবস্থা নেই এবং স্ত্রীর জন্য রাত্রির অধিকার নির্ধারণ কিংবা ভরণপোষণের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। [আবদুল হোসাইন আল-আল মাউসুবী, মাসায়েলু ফিকহীয়া ( مسائل فقهية ), পৃ. ৮১।]

অন্যদিকে অধিকাংশ মুসলিম আলেম নিম্নোক্ত বক্তব্য পেশ করেন:

১. আল-কুরআনুল কারীম পুরুষ ও নারীর মধ্যে শরীয়ত সম্মত সম্পর্কের নীতিমালা তৈরি করে দিয়েছে এবং তা দুই প্রকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেছে:

প্রথমত: বিবাহ বন্ধন, যার উপর বিন্যস্ত হয়েছে তালাক, উত্তরাধিকার এবং স্ত্রীর প্রতি রাতের দায়িত্ব-কর্তব্য ও ভরণপোষণের বাধ্যবাধকতা।

দ্বিতীয়ত: পুরুষ এবং তার অধিকারভূক্ত দাসীগণের মধ্যে সম্পর্ক। কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:

﴿ وَٱلَّذِينَ هُمۡ لِفُرُوجِهِمۡ حَٰفِظُونَ ٥ إِلَّا عَلَىٰٓ أَزۡوَٰجِهِمۡ أَوۡ مَا مَلَكَتۡ أَيۡمَٰنُهُمۡ فَإِنَّهُمۡ غَيۡرُ مَلُومِينَ ٦ فَمَنِ ٱبۡتَغَىٰ وَرَآءَ ذَٰلِكَ فَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡعَادُونَ ٧ ﴾ [ سورة المؤمنون : 5-7]

“যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে নিজেদের স্ত্রী অথবা অধিকারভূক্ত দাসীগণ ব্যতীত, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না, আর কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তার হবে সীমালংঘনকারী।” [সূরা আল-মুমিনুন: ১ - ৭ ; সূরা মা‘আরিজ: ২৮ – ৩১।]

২. এই ব্যাপারে সূরা নিসার শুরু থেকে বেশ তাগিদ এসেছে; বিশেষ করে (সূরা নিসার ) ২৪ ও ২৫ নং আয়াতে মোহর পরিশোধ করে দেয়াকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যখন পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়। আর অধিকাংশ মুসলিম আলেম দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, আল্লাহ তা‘আলার বাণী: ﴿ فَمَا ٱسۡتَمۡتَعۡتُم بِهِۦ مِنۡهُنَّ ﴾ (তাদের মধ্য থেকে তোমরা যাদেরকে সম্ভোগ করেছ) -এর অর্থ হল বিবাহ বন্ধনের আওতায় থেকে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে ভোগ করা। আর এই অর্থে বর্ণিত আছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস, যা ইমাম বুখারী ও মুসলিম র. বর্ণনা করেছেন; তিনি বলেছেন:

«اسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خيرا فَإِنَّ الْمَرْأَةَ خُلِقَتْ مِنْ ضِلَعٍ وَإِنَّ أَعْوَجَ فِى الضِّلَعِ أَعْلاَهُ , فَإِنِ اسْتَمْتَعْتَ بِهَا اسْتَمْتَعْتَ بِهَا وَبِهَا عِوَجٌ وَإِنْ ذَهَبْتَ تُقِيمُهَا كَسَرْتَهَا وَكَسْرُهَا طَلاَقُهَا » . [ أخرجه مسلم ]

“তোমরা নারীদেরকে পরস্পর কল্যাণকামী হও, পরস্পরকে অসিয়ত কর। কারণ, নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে বাঁকা হাড় থেকে; আর হাড়ের মধ্যে বাঁকা হল উপরের হাড়। সুতরাং যদি তোমরা তাকে ভোগ করতে চাও, তবে তাকে ভোগ কর তার বক্রতা নিয়েই। আর তুমি তার বক্রতাকে সোজা করতে গেলে তা ভেঙ্গে যাবে; আর তার ভেঙ্গে যাওয়া মানে তার তালাক হয়ে যাওয়া।” [সহীহ মুসলিম, রিদা‘ অধ্যায়, বাব নং- ১৮, হাদিস নং- ৩৭১৯ ; আহমদ আসকালানী, ফতহুল বারী শরহু সহীহিল বুখারী ( فتح الباري شرح صحيح البخاري ), ৯ম খণ্ড।]

৩. বিশুদ্ধ হাদিসে সাব্যস্ত আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুত‘আ বিয়ে বৈধ করেছিলেন আকস্মিকভাবে সংঘটিত কঠিন প্রয়োজনের মুহূর্তে; যেমন আল্লাহর পথে জিহাদের মত কঠিন সময়। আর ঐ প্রয়োজন শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি তা নিষিদ্ধ করেছেন; বরং তিনি যখন শেষ বারের মত তা বৈধ করেন, তখন তার পর পরই চূড়ান্তভাবে মুত‘আ বিয়ে নিষিদ্ধ হওয়ার ঘোষণা আসে। সহীহ মুসলিমে বর্ণনা এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

« يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّى قَدْ كُنْتُ أَذِنْتُ لَكُمْ فِى الاِسْتِمْتَاعِ مِنَ النِّسَاءِ وَإِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ ذَلِكَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ فَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ مِنْهُنَّ شَىْءٌ فَلْيُخَلِّ سَبِيلَهُ وَلاَ تَأْخُذُوا مِمَّا آتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا » . [ أخرجه مسلم ]

“হে মানব সম্প্রদায়! আমি তোমাদেরকে (সাময়িক বিয়ের মাধ্যমে) নারীদের ভোগ করার অনুমতি দিয়েছিলাম; আর আল্লাহ তা কিয়ামতের দিন পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সুতরাং যার নিকট তাদের পক্ষ থেকে কোন বস্তু রয়েছে, সে যেন তার পথ উন্মুক্ত করে দেয়; আর তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ, তার মধ্য থেকে কিছুই গ্রহণ করো না।” [সহীহ মুসলিম, বিবাহ ( نكاح ) অধ্যায়, বাব নং- ৩, হাদিস নং- ৩৪৮৮।]

সুতরাং বাস্তবে মুত‘আ বিয়ের বৈধতা ছিল একটা সাময়িক বৈধতা এবং মৌলিক নীতিমালা থেকে স্বতন্ত্র। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই স্বতন্ত্র বিধানটি কায়েম করেছিলেন; আর তিনি এই ধরনের ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। কারণ, তিনি খেয়াল-খুশিমত কোন কথা বলতেন না। তবে তিনি ব্যতীত অন্য কেউ এই ধরনের ক্ষমতার অধিকার সংরক্ষণ করে না। আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দরজা বন্ধ করার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী ছিলেন, যাতে করে তাঁর ঘোষণার মাধ্যমে আল্লাহ কর্তৃক মুত‘আ বিয়ের নিষিদ্ধকরণের বিষয়টি কিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকে। [আহমদ আসকালানী, ফতহুল বারী শরহু সহীহিল বুখারী ( فتح الباري شرح صحيح البخاري ), ৯ম খণ্ড, পৃ. ১৬৪ – ১৭৪।]

আর শিয়া জা‘ফরীয় আলেমদের কথা- ‘মুত‘আ বিয়ের নিষিদ্ধকরণের বিষয়টি ওমরের পক্ষ থেকে হয়েছিল’; [এটা আসলে ঠিক নয়] কারণ ওমর ইবনুল খাত্তাব রা. যা বলেছেন, তা হল:

« إِنَّ اللَّهَ كَانَ يُحِلُّ لِرَسُولِهِ مَا شَاءَ بِمَا شَاءَ وَإِنَّ الْقُرْآنَ قَدْ نَزَلَ مَنَازِلَهُ فَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ كَمَا أَمَرَكُمُ اللَّهُ وَابْتَغُوْا نِكَاحَ هَذِهِ النِّسَاءِ فَلَنْ أُوتَى بِرَجُلٍ نَكَحَ امْرَأَةً إِلَى أَجَلٍ إِلاَّ رَجَمْتُهُ بِالْحِجَارَةِ . » . [ أخرجه مسلم ]

“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূলের জন্য যা চাইতেন তাই হালাল করতেন; আর আল-কুরআন নাযিল হয়েছে তার স্থান, মান ও অবস্থা অনুযায়ী। সুতরাং তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে তিনি যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, ঠিক সেভাবে হাজ্জ ও ওমরা পরিপূর্ণ কর; আর এসব নারীদের বিয়ের পথ অনুসন্ধান কর। কারণ, আমার নিকট এমন কোন ব্যক্তিকে হাজির করা হবে, যে ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন নারীকে বিয়ে করেছে, তবে আমি অবশ্যই তাকে পাথর মেরে হত্যা করব।” [সহীহ মুসলিম, হাজ্জ অধ্যায়, বাব নং- ১৮, হাদিস নং- ৩০০৬।]

আর ওমর রা. ‘আমর ইবন হুরাইসের ঘটনা জানার পর তিনি হারামের ঘোষণাটিকে তাগিদ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। [কারণ, উমর রা. এর সময়ে আমর ইবন হুরাইস মদীনায় এসে মুত‘আ করে বসলেন, পরে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়, আর উমর রা. বুঝতে পারেন যে, আমর ইবন হুরাইস তা হরাম হওয়ার ব্যাপারটি জানত না] তাই উমর রা. মূলত: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হারাম ঘোষণাটির পুনারাবৃত্তি করছেন তাদের জন্য, যাদের নিকট উক্ত নিষেধাজ্ঞার খবরটি পৌঁছেনি। [অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর রাসূলের নির্দেশকে বাস্তবায়ণ করার জন্যই উমর রা. তা করেছিলেন]

হে ভাই ও বোনেরা! এমন কাজে সত্যিকার অর্থে কোন পার্থক্য আছে কি, যেখানে নারী তার শরীরকে ভাড়ায় দিয়েছে, অথবা পুরুষ কোন নারীর শরীরকে ভাড়ায় নিয়েছে কয়েক মিনিটের জন্য, অথবা কয়েক দিনের জন্য, অথবা কয়েক মাসের জন্য ... যখন এটা পূর্ব থেকে নির্ধারিত হবে যে, এটা কত সময়ের জন্য চলবে? মুসলিম পুরুষ ও নারী কী বিশ্বাস করে না যে, মুত‘আ বিয়ের মধ্যে আমাদের মুসলিম বোনদের জন্য বড় ধরনের অপমান নিহিত রয়েছে; আর এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সুযোগ রয়েছে, যে ব্যক্তি স্বামীর দায়িত্বের বোঝা বহন না করেই নারীদেহ উপভোগ করতে চায়? তাতে কি ইসলামের পারিবারিক ব্যবস্থা ধ্বংস হয় না?

হে ভাই ও বোনেরা! আমাদের চিন্তা-ভাবনা করা আবশ্যক যে, সম্ভ্রান্ত শিয়া আলেমগণ তাদের নিকটতম আত্মীয়-স্বজনদেরকে মুত‘আ বিয়ে অনুশীলনের অনুমতি দেয় না। কারণ, তাতে তারা অপমানবোধ করে; অথচ তারা নিজেদের ভিন্ন অন্যদেরকে তার অনুমতি দিয়ে দেয়।

এখনও আরও একটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য, তা হচ্ছে, যে মুত‘আ বিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দিষ্ট পরিসরে বৈধ করেছেন, তাতে তিনি শর্ত করেন নি যে, নারী মুসলিমা অথবা কিতাবীয় হতে হবে, যাতে সুস্পষ্টভাবে শরয়ী বিবাহ থেকে আলাদা করা যায়। [সুতরাং মুত‘আ বিয়ে মূলত: বিয়ে হিসেবেই স্বীকৃত হতে পারে না; কারণ, তাতে কোন শর্ত আরোপ করা হয়নি; যেমনটি বৈধ ও শর‘য়ী বিয়ের ক্ষেত্রে আরোপ করা হয়েছে।]

এই সবের পরেও কিভাবে একজন মুসলিম ব্যক্তির পক্ষে মুত‘আ বিয়ের বৈধতাকে শরীয়তের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হতে পারে, অথবা সে নিজেই তার অনুশীলন করতে পারে; বিশেষ করে উদ্দেশ্য-লক্ষ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে যিনা-ব্যভিচার ও মুত‘আ বিয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই; উভয়ের মধ্যে শুধু যৌনসম্ভোগ ও পরিতৃপ্তি কামনা করা হয়?!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন