hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

জামা‌‘আতের সাথে নামায আদায় কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তার তাৎপর্য, ফযীলত, আহকাম, উপকারিতা ও আদাবসমূহ

লেখকঃ ড. সায়ীদ ইবন আলী ইবন ওয়াহফ আল্ ক্বাহতানি

তৃতীয় পরিচ্ছেদ: জামা‘আতে নামাযের উপকারিতা:
জামা‘আতে নামাযের উপকারিতা অনেক এবং তার বিড়াট কল্যান রয়েছে, তার রয়েছে বিভিন্নমূখী উপকারিতা, যে কারণে ইসলামী শরীয়তে জামা‘আত ওয়াজিব করেছে। আর ইহা এই প্রমাণই করে যে, হিকমাত বা প্রজ্ঞার দাবী হল জামা‘আতে নামায ফরজে আইন। যে সকল উপকারিতা ও হিকমতের জন্য জামা‘আতে নামায আদায় করা শরীয়ত ওয়াজিব করেছে তন্মধ্যে কিছু নিম্নরূপ:

১/ এই উম্মতের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে সমবেত হওয়ার উত্তম বিধান আল্লাহ তা‘আলা নির্ধারণ করেছেন, যেগুলোর কিছু হল দিন রাতের সাথে সংশ্লিষ্ট, যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামায, আর কিছু রয়েছে যা সপ্তাহের সাথে সংশ্লিষ্ট, আর তা হল জুম’য়ার নামায, আর কিছু রয়েছে যা বছরে বার বার হয়, তা হল প্রত্যেক শহরের জন্য জামা‘আতের সাথে ঈদের নামায, আর কিছু রয়েছে যা বছরে একবার সার্বজনীন ভাবে পালিত হয়, তা হল আরাফাতে অবস্থান; যা পরস্পরের সম্পর্ক অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে (বিড়াট ভূমিকা পালন করে থাকে) এর মাঝে রয়েছে: অনুগ্রহ, সহানুভূতি, তত্ত্বাবধান এবং অন্তরের পরিচ্ছন্নতা, কথা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহর পথে আহবান।

২/ এই সমবেত হওয়ার মাধ্যমে সওয়াবের উদ্দেশ্যে, আল্লাহর শাস্তির ভয়ে এবং তাঁর নিকট মজুদ নেয়ামাতরাজি পাওয়ার আশায় তাঁর ইবাদত করা।

৩/ পারস্পারিক ভালবাসা অর্থাৎ পরস্পর হৃদ্যতা পোষণ করা; যাতেকরে পরস্পরের অবস্থা জানা যায়, যেমন রোগীকে দেখতে যাওয়া, মৃত ব্যক্তিকে বিদায় জানানো, দু:খ-ভারাক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করা, অভাবীদের সহায়তা দান করা; কেননা মানুষের পরস্পরের দেখা সাক্ষাৎ করা ভালবাসা ও হৃদ্যতা অবধারিত করে দেয়।

৪/ পরিচিতি লাভ: কেননা মানুষ যখন পরস্পর মিলে নামায আদায় করে তখন তাদের মাঝে পরিচয় ঘটে এবং কখনও কখনও এই পরিচয় থেকে তাদের কোন কোন আত্নীয়ের পরিচয় মিলে এবং নৈকট্যের ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, কখনও প্রবাসী অপরিচিত লোকের পরিচয় পাওয়া যায় এবং মানুষ তার অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়।

৫/ ইসলামের মহান নিদর্শন সমূহের অন্যতম নিদর্শন প্রদর্শন করা; কেননা মানুষেরা সবাই যদি তাদের বাড়ীতে নামায পড়ে তাহলে এই পরিচয় পাওয়া যায় না যে, সেখানে কোন নামায আছে।

৬/ মুসলিমদের মর্যাদা প্রকাশ করা, কেননা তাঁরা যখন সমবেতভাবে মসজিদে প্রবেশ করবে এবং মসজিদ থেকে বের হবে তখন তা মুনাফিক ও কাফেরদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলবে এবং তাদের সাথে সাদৃস্যপূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে দূরত্ব সৃষ্টি হবে, তাদের পথ চলার পন্থা থেকে দুরে অবস্থান করা হবে।

৭/ মূর্খকে শিক্ষাদান; কেননা অনেক লোক জামা‘আতে নামাযের মাধ্যমে শরীয়তের অনেক বিধান শিক্ষা লাভ করে থাকে, প্রকাশ্য ক্বেরাত শুনতে পায়, উপকৃত হয়, শিখতে পারে এবং সে নামাযের পরের জিকির বা দু‘আ গুলো শুনতে পায়, তা মুখস্থ করে, সে ইমামের ও তার পার্শ্বে ও সামনে যারা আছে তাদের অনুসরণ করে। এভাবে নামাযের বিধিবিধান শিখে এবং মূর্খ ব্যক্তি শিক্ষীত ব্যক্তির থেকে শিক্ষা লাভ করে।

৮/ জামা‘আতে অনুপস্থিত ব্যক্তিকে উৎসাহ দান, তাকে পথ নির্দেশনা ও উপদেশ প্রদান করা, অধিকারের ব্যাপারে পরস্পর সদুপদেশ বা পরামর্শ দেওয়া এবং তার উপর ধৈর্য্য ধারন করা।

৯/ মুসলিম উম্মাহকে একতাবদ্ধ থাকার এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হওয়ার অনুশীলন করা; কেননা উম্মাত (মুসলিম উম্মাহ) শাসনকর্তার আনুগত্যের ব্যাপারে একমত, আর জামা‘আতের সাথে এই নামায হচ্ছে একটি ছোট্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা; কেননা তারা একজন ইমামের আনুগত্য করে তাকে পরিপুর্ণ অনুসরণ করে, সুতরাং ইহা সাধারণ ভাবে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গী প্রতিষ্ঠা করে থাকে।

১০/ আত্ননিয়ন্ত্রনের প্রতি মানুষকে অভ্যস্ত করা, কেননা যখন সে ইমামের পুংখানুপুংখ অনুসরণ করার অভ্যাস করে, তার পূর্বে তাকবীর দেয়না, তার আগে কিছু করেনা, তার থেকে খুব বেশী দেরীও করেনা, তার একেবারে সাথে সাথেও করেনা বরং তাঁকে অনুসরণ করে সে আত্ননিয়ন্ত্রনের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে যায়।

১১/ মুসলিম ব্যক্তির জিহাদের ময়দানে এক লাইনে দন্ডায়মান হওয়ার অনুভূতি জাগ্রত হয়, যেমনটি আললাহ তায়ালা বলেছেন:

﴿ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلَّذِينَ يُقَٰتِلُونَ فِي سَبِيلِهِۦ صَفّٗا كَأَنَّهُم بُنۡيَٰنٞ مَّرۡصُوصٞ ٤ ﴾ [ الصف : ٤ ]

অর্থ: ‘‘যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে সারিবদ্ধভাবে সুদৃঢ় প্রাচীরের মত, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন’’। (আছ-ছফ-৪)

সুতরাং এই ব্যক্তিরা যারা জিহাদের ময়দানে এক কাতারবন্দী হয়ে গেল নিঃসন্দেহে তারা যদি উহা পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে অভ্যস্ত হয় তাহলে উহা জিহাদের ময়দানে তাদের জন্য তাদের নেতার নেতৃত্ব অনুসরণ করার ওসীলা (মাধ্যম) হবে, অতএব তার আদেশের আগেও বাড়বেনা এবং পিছেও সরবে না।

১২/ মুসলিমদের সমানাধিকারের অনুভূতি এবং সামাজিক পার্থক্য ভেঙ্গে ফেলা; কেননা তারা মসজিদে একত্রিত হয়: সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি সবচেয়ে দরিদ্র ব্যক্তির পার্শ্বে, আমীর মা’মুরের (অধীনস্ত ব্যক্তির) পার্শ্বে, শাসক শাসীতের পার্শ্বে, ছোট ব্যক্তি বড় ব্যক্তির সাথে দন্ডায়মান হয় ফলে মানুষ এই উপলব্ধি করে যে, তারা সবাই এক সমান, আর এমনি ভাবে সম্পৃতির সৃষ্টি হয়; এজন্যই নবী কাতার সমূহ সোজা করার আদেশ করেছেন এমনকি তিনি বলেন: (তোমরা পরস্পর মতভেদ করনা, তা করলে তোমাদের অন্তর সমূহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে)। (মুসলিম)

১৩/ ফকীর-মিসকীনদের অবস্থার খোজ খবর নেয়া এবং রোগীদের ও নামাযের ব্যাপারে অবহেলা কারীদের খোজ খবর নেয়া; কেননা মানুষ যখন অপর মানুষকে দেখে যে, সে অতি পুরাতন কাপড় পরিধান করছে এবং তার উপর ক্ষুধারচি ‎‎‎ হ্ণ ফুটে উঠেছে তখন তার প্রতি দয়া করে, তাকে অনুগ্রহ করে, আর যখন তাদের কেহ কেহ জামা‘আতে অনুপস্থিত থাকে, তখন তারা জানতে পারে যে, সে অসুস্থ ছিল, অথবা সে অপরাধী ছিল (জামা‘আতে অনুপস্থিত থাকার কারণে) এতে করে তাকে নছীহত করে, এভাবে পুণ্য ও আল্লাহ ভীতির পথে পরস্পর সহযোগিতা সংঘটিত হয়, ন্যায়ের সাথে পরস্পর সুপরামর্শ দেওয়া হয় এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের ক্ষেত্রে পরস্পর সহায়তা দান অর্জন হয়।

১৪/ এই উম্মতের পরবর্তী ব্যক্তিদের সে বিষয়ের উপলব্ধি করা, যার উপর উম্মতের প্রথম ব্যক্তিগণ প্রতিষ্ঠিত ছিলেন; কেননা সাহাবাগণ রাসূল এর অনুসরণ করতেন। সুতরাং ইমাম অনুভব করে যে, সে রাসূল এর স্থানে অবস্থান করছে, মা’মুম (ইমামের পিছনে নামাযরত ব্যক্তি) অনুভব করে যে, সে সাহাবাদের (রা:) স্থানে অবস্থান করছে এবং এই অনুভূতি উম্মতকে নবী ও তাঁর সাহাবা (রা:) এর অনুসরণ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করে।

১৫/ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে বরকত অবতীর্ণ হওয়ার উপায় লাভের আশায় মসজিদে মুসলিমদের সমবেত হওয়া।

১৬/ মুসলিমের কর্ম তৎপরতা বৃদ্ধি পায়, আর তা এই ভাবে যে যখন সে এবাদত বন্দেগীতে প্রাণবন্ত ব্যক্তিদের উৎসাহ উদ্যম দেখতে পায়, আর এতে রয়েছে বিরাট উপকার।

১৭/ নেকী দ্বিগুন হয় এবং সাওয়াব বৃদ্ধি পায়।

১৮/ কথা ও কাজের দ্বারা আল্লাহ তা‘আলার পথে আহবান করা, এছাড়াও অন্যান্য প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। (হাশিয়াতুর রওদুল মুরবি’, আলএহকাম, মাজমু’ ফাতাওয়া, শারহুল মুমতি’, সালাতুল জামা‘আহ)

১৯/ নির্দিষ্ট সময়ে মুসলিমদের সমবেত হওয়া তাদেরকে সময়ের প্রতি যত্নবান হওয়ার শিক্ষা দান করে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন