HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩টি উপায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ

১০
রুকু ও সাজদায় পঠনীয় কতক দো‘আ
১২. সালাতে একেক সময় একেক সূরা, আয়াত, যিকির ও দো‘আ পড়া। এ নীতির অনুসরণ মুসল্লিকে বিভিন্ন আয়াত ও যিকিরের নতুন নতুন অর্থ ও স্বাদ এনে দেয়। যেসব মুসল্লি হাতে গোনা কয়েকটি সূরা ও যিকির ছাড়া কিছুই জানে না তারা এ স্বাদ থেকে বঞ্চিত। অধিকন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সূরা ও দো‘আ পড়া সুন্নত এবং খুশু অর্জনেও সহায়ক। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই সালাত পড়তেন, যেমন (ক). তাকবিরে তাহরিমায় তিনি বলতেন:

» اللَّهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِي وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ، اللَّهُمَّ نَقِّنِي مِنْ خَطَايَايَ كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ، اللَّهُمَّ اغْسِلْنِي مِنْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ»  .

“হে আল্লাহ, তুমি আমার ও আমার পাপসমূহের মাঝে দূরত্ব তৈরি কর যেরূপ দূরত্ব তৈরি করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে। হে আল্লাহ, আমার পাপসমূহ থেকে আমাকে পবিত্র কর, যেমন সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। হে আল্লাহ, আমার পাপসমূহ থেকে আমাকে পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধৌত কর।”

(খ). উক্ত দো‘আর পরিবর্তে কখনো বলতেন:

«وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ حَنِيفًا، وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ، إِنَّ صَلَاتِي، وَنُسُكِي، وَمَحْيَايَ، وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، لَا شَرِيكَ لَهُ ، وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ» .

“আমি আমার চেহারাকে একান্তভাবে সেই সত্ত্বা অভিমুখী করেছি, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই। নিশ্চয় আমার সালাত, কুরবানি, বেচে থাকা ও মৃত্যু দোজাহানের রব আল্লাহর জন্যে। তার কোনো শরীক নেই, আর তারই আমি আদিষ্ট হয়েছে এবং আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।”

(গ). আবার কখনো বলতেন:

  «سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعالَى جَدُّكَ وَلا إِلَهَ غَيْرُكَ» .

“হে আল্লাহ, আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করি, আপনার প্রশংসা দ্বারাই আপনার প্রশংসা করি। আপনার নাম বরকতময়, আপনার মর্যাদা অতি উচ্চ এবং আপনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই।”

তাকবিরে তাহরিমার পর ও সূরা ফাতিহার আগে পঠনীয় আরো দো‘আ ও যিকির রয়েছে, মুসল্লি খুশু অর্জনের জন্যে সুন্নতের অনুসরণ করে কখনো এটা কখনো ওটা পাঠ করবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিলাওয়াতের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সূরা পাঠ করতেন, যেমন ফজরের সালাতে তিওয়ালে মুফাস্‌সাল থেকে সূরা ওয়াকিয়া, সূরা তুর ও সূরা কাফ; আবার কিসারে মুফাস্‌সাল থেকে সূরা তাকওয়ির, সূরা যিলযাল, সূরা নাস ও সূরা ফালাক পড়েছেন। কখনো সূরা রুম, সূরা ইয়াসিন, সূরা সাফ্‌ফাত প্রভৃতি পড়তেন। আর জুমআর দিন ফজর সালাতে সূরা সাজদাহ ও সূরা দাহর (ইনসান) পড়তেন।

যোহর সালাত সম্পর্কে আছে, প্রথম দু’রাকাতের প্রত্যেক রাকাতে তিনি ত্রিশ আয়াত পরিমাণ পড়তেন। আবার সূরা তারেক, সূরা বুরুজ, সূরা লাইল প্রভৃতি পড়েছেন বর্ণিত আছে।

আসর সালাত সম্পর্কে আছে, প্রথম দু’রাকাতের প্রত্যেক রাকাতে তিনি পনেরো আয়াত পরিমাণ পড়তেন। আবার যোহর সালাতে যেসব সূরা পড়তেন আসরেও সেগুলো পড়েছেন প্রমাণিত আছে।

মাগরিবের সালাতে তিনি কিসারে মুফাস্‌সাল পড়তেন, যেমন সূরা ত্বিন, তবে সূরা মুহাম্মদ, সূরা তুর, সূরা মুরসালাত প্রভৃতি পড়েছেন প্রমাণিত আছে।

এশার সালাতে তিনি আওসাতে মুফাস্‌সাল পড়তেন, যেমন সূরা শামস ও সূরা ইনশিকাক। মুয়ায ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তিনি সূরা আ‘লা, সূরা কালাম ও সূরা লাইল পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

রাতের সালাতে তিনি লম্বা লম্বা সূরা পড়তেন। তাতে দেড় শো, দু’শো আয়াত পড়ারও প্রমাণ আছে। কখনো তার চেয়ে কম পড়েছেন। [মুফাসসাল সূরাগুলোর পরিচয়: একদল আলেম বলেন: তিওয়ালে মুফাসসাল সূরা হুজুরাত থেকে সূরা ইনশিকাক পর্যন্ত। আওসাতে মুফাসসাল সূরা বুরুজ থেকে সূরা বাইয়্যিনাহ পর্যন্ত এবং কিসারে মুফাসসাল সূরা যিলযাল থেকে সূরা নাস পর্যন্ত।আরেক দল আলেম বলেন, তিওয়ালে মুফাসসাল সূরা হুজুরাত থেকে সূরা নাযি‘আত পর্যন্ত। আওসাতে মুফাসসাল সূরা আবাসা থেকে সূরা লাইল পর্যন্ত। কিসারে মুফাসসাল সূরা দোহা থেকে সূরা নাস পর্যন্ত।আরেক দল আলেম বলেন, তিলাওয়ালে মুফাসসাল হচ্ছে সূরা হুজুরাত, সূরা কামার ও সূরা আর-রাহমানের ন্যায় সূরাগুলো। আওসাতে মুফাসসাল হচ্ছে সূরা শামস ও সূরা লাইলের ন্যায় সূরাগুলো। কিসারে মুফাসসাল হচ্ছে সূরা আসর ও সূরা ইখলাসের ন্যায় সূরাগুলো।আরেক দল আলেম বলেন, তিওয়ালে মুফাসসাল সূরা কাফ থেকে সূরা নাবা পর্যন্ত। আওসাতে মুফাসসাল সূরা নাযিআত থেকে সূরা লাইল পর্যন্ত এবং কিসারে মুফাসসাল সূরা দোহা থেকে সূরা নাস পর্যন্ত। সূত্র শায়খ সালিহ আল-মুনাজ্জিদের ওয়েব সাইট www.islamqa.info প্রশ্ন নং ১৪৩৩০১। শায়খ সালিহ ‘আল-মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ’: ৪৮:৩৩ থেকে উদ্ধৃত করেছেন। আর ‘মাওসুআত’ উদ্ধৃত করেছে ইবন হাজার প্রণীত ‘ফাতহুল বারি’: ২:২৪৯ ও সুয়ুতি প্রণীত ‘আল-ইতকান’: ১:১৮০ থেকে। অনুবাদক।]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রুকুর তাসবিহও একাধিক ছিল। যেমন (ক). কখনো سبحان ربي العظيم (আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।) এবং (খ). কখনো سبحان ربي العظيم وبحمده (আমার মহান রবের পবিত্রতা ও তার প্রশংসা জ্ঞাপন করছি।) পড়তেন, (গ). আবার কখনো পড়তেন, «سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ، رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحِ» . (প্রশংসার পাত্র, মহাপবিত্র, মালায়েকা ও রূহের রব।) (ঘ). আবার কখনো পড়তেন,

«اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ أَنْتَ رَبِّي خَشَعَ سَمْعِي وَبَصَرِي وَدَمِي وَلَحْمِي وَعَظْمِي وَعَصَبِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالِمِينَ» .

“হে আল্লাহ, আপনার জন্যে রুকু করেছি, আপনার প্রতি ঈমান এনেছি, আপনার নিকট আত্মসমর্পণ করেছি এবং আপনার উপর তাওয়াক্কুল করেছি। আপনিই আমার রব। আমার কান, চোখ, রক্ত, গোস্ত, হাড্ডি ও স্নায়ু ভীত হয়েছে দোজাহানের রব আল্লাহর জন্যে।”

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুকু থেকে উঠে سمع الله لمن حمده (আল্লাহ তাকে শুনেছেন যে তার প্রশংসা করেছে।) বলার পর বলতেন, ربنا ولك الحمد (হে আমাদের রব, আর আপনার জন্যেই সকল প্রশংসা।) কখনো বলতেন, ربنا لك الحمد (হে আমাদের রব, আপনার জন্যেই সকল প্রশংসা।) কখনো বলতেন, اللهم ربنا (و) لك الحمد (হে আল্লাহ, হে আমাদের রব, আর আপনার জন্যেই সকল প্রশংসা।) আবার কখনো বলতেন, «مِلْءُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ، وَمِلْءُ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ» . (আসমান ও জমিন ভর্তি এবং এগুলো ছাড়া যা চান তা ভর্তি আপনার প্রশংসা।) কখনো তার সাথে আরো যোগ করতেন,

«أَهْلُ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ . اللَّهُمَّ ! لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ   مِنْكَ الْجَدُّ» .

“হে প্রশংসা ও সম্মানের মালিক। হে আল্লাহ, আপনি যা দেন তা আটকে রাখার কেউ নেই এবং আপনি যা আটকে রাখেন তা দান করার কেউ নেই। আর আপনার পাকড়াও থেকে কোনো সম্মানীকে সম্মান নাজাত দিতে পারবে না।)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাজদায় পড়তেন, سبحان ربي الأعلى (আমি আমার মহা উচ্চ রবের পবিত্রতা ঘোষণা করছি।) কখনো পড়তেন, سبحان ربي الأعلى وبحمده (আমি আমার মহা উচ্চ রবের পবিত্রতা এবং তার প্রশংসা করছি।) কখনো পড়তেন, «سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ، رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوحِ» . (আপনি মহা প্রশংসিত, মহা পবিত্র, মালায়েকা ও রূহের—জিবরিলের রব) কখনো পড়তেন, «سُبحانَكَ اللّهمَّ ربَّنا وَبِحمدِكَ، اللّهمَّ اغفِرْ لي» . (হে আল্লাহ, হে আমাদের রব, আপনার পবিত্রতা ও প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন।) আবার কখনো পড়তেন,

«اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ، وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ، تَبَارَكَ الله أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ» .

“হে আল্লাহ, আমি আপনার জন্যেই সাজদাহ করেছি, আপনার প্রতি ঈমান এনেছি এবং আপনার নিকটই আত্মসমর্পণ করেছি। আমার চেহারা সে সত্ত্বাকে সাজদাহ করেছে যে তাকে সৃষ্টি করেছে ও আকৃতি দিয়েছে; এবং তার কান ও চোখ বিদীর্ণ করেছে। আল্লাহ বরকতময় ও সর্বোত্তম স্রষ্টা।”

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই সাজদাহ’র মাঝে স্থিরভাবে বসে পড়তেন «رَبِّ اغْفِرْ لِي رَبِّ اغْفِرْ لِي» . (হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন। হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন।) কখনো এর সাথে যোগ করতেন, «اللهم اغفرلي وارحمني واجبرني وارفعني واهدني وعافني وارزقني» .

(হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করুন, রহম করুন, আমার ক্ষতিপূরণ করুন, আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন, আমাকে হিদায়েত দিন, আমাকে নিরাপদ রাখুন ও আমাকে রিজিক দান করুন।)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশাহহুদের বৈঠকে একাধিক তাশাহহুদ পড়েছেন প্রমাণিত আছে, (ক). যেমন ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তাশাহহুদ,

«التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ» . متفق عليه .

“মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক সকল ইবাদত আল্লাহর জন্যে। হে নবী, আপনার উপর সালাম, আল্লাহর রহমত ও বরকত। আর সালাম আমাদের ওপর ও আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তার বান্দা ও রাসূল।”

(খ). ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে ইমাম মুসলিম ও আবু আওয়ানাহ প্রমুখ বর্ণিত তাশাহহুদ, যেমন:

«التحيات المباركات الصلوات الطيبات لله، السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته، السلام علينا وعلى عباد الله الصالحين، أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمدًا رسول الله» .

“পবিত্র, বরকতময় মৌখিক ও শারীরিক ইবাদতসমূহ আল্লাহর জন্যে। হে নবী, আপনার উপর সালাম, আল্লাহর রহমত ও বরকত। আর সালাম আমাদের উপর ও আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল।”

(গ). আবু মুসা আশ‘আরি রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে ইমাম মুসলিম ও আবু আওয়ানাহ প্রমুখ বর্ণিত তাশাহহুদ, যেমন:

«التحيات الطيبات والصلوات لله ، السلام عليك أيها النبي ورحمة الله وبركاته ، السلام علينا وعلى عباده الصالحين ، أشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له وأشهد أن محمدًا عبده ورسوله» .

“মৌখিক ও শারীরিক পবিত্র ইবাদতসমূহ আল্লাহর জন্যে। হে নবী, আপনার উপর সালাম, আল্লাহর রহমত ও বরকত। আর সালাম আমাদের উপর ও আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, তিনি এক, তার কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তার বান্দা ও রাসূল।”

মুসল্লি যদি কখনো এই তাশাহহুদ কখনো ঐ তাশাহহুদ পড়ে তাহলে সহজে একাগ্রচিত্ত হাসিল হবে। অনুরূপভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর পঠনীয় সালাত ও সালাম বিভিন্ন বাক্যের রয়েছে, যেমন,

1-  «اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ   مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ»

“হে আল্লাহ, মুহাম্মাদ ও তার পরিবারের উপর রহমত নাযিল করুন। যেমন রহমত নাযিল করেছেন ইবরাহিমের উপর ও তার পরিবারের উপর। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ, আপনি মুহাম্মাদের উপর ও তার পরিবারের উপর বরকত দিন, যেমন বরকত দান করেছেন ইবরাহিম ও তার পরিবারের উপর। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।”

2 - «اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ . وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ بَيْتِهِ وَعَلَى أَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ» .

“হে আল্লাহ, মুহাম্মাদের উপর, তার বাড়ির সদস্য এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের উপর রহমত নাযিল করুন, যেমন রহমত নাযিল করেছেন ইবরাহিমের উপর। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। আর আপনি বরকত দিন মুহাম্মাদের উপর, তার বাড়ির সদস্য এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের উপর, যেমন বরকত দান করেছেন ইবরাহিম ও তার পরিবারের ওপর। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।”

3 - «اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ النَّبِيِّ الْأُمِّيِّ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ فِي الْعَالَمِيْنَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ» .

“হে আল্লাহ, উম্মী নবী মুহাম্মাদের ওপর ও তার পরিবারের ওপর রহমত নাযিল করুন, যেমন ইবরাহিমের উপর রহমত নাযিল করেছেন। আর আপনি বরকত দিন উম্মী নবী মুহাম্মাদের উপর ও তার পরিবারের উপর, যেমন বরকত দান করেছেন উভয় জগতে ইবরাহীমের ওপর। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।”

আরো অনেক সালাত ও সালাম রয়েছে। কখনো এটা কখনো ওটা পড়াই সুন্নত, যেমন একটু আগে আলোচিত হয়েছে, তবে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হওয়ার কারণে কিংবা হাদিসের কিতাবসমূহে প্রসিদ্ধ হওয়ার কারণে কিংবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যখন সালাত পাঠ করার পদ্ধতি জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তখন তিনি যেটা যত্নসহ শিখিয়েছেন সেটাকে বিশেষ বিবেচনায় রাখার কারণে কিংবা অন্য কোনো কারণে কোনো একটি সালাত ও সালামকে প্রাধান্য দেওয়া নিন্দনীয় নয়।

জ্ঞাতব্য যে, উল্লিখিত আযকার, তাশাহহুদ, সালাত (দরূদ) ও সালাম আলবানি রাহিমাহুল্লাহ রচিত ‘সিফাতু সালাতিন নবী’ গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করেছি। এগুলো তিনি সেখানে খুব পরিশ্রম করে হাদিসের বিভিন্ন কিতাব থেকে জমা করেছেন।

১৩. সালাতে তিলাওয়াতের সাজদাহ পাঠ করে সাজদাহ করা। আল্লাহ তা‘আলা নবীদের গুণাবলি বর্ণনায় বলেন,

﴿إِذَا تُتۡلَىٰ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتُ ٱلرَّحۡمَٰنِ خَرُّواْۤ سُجَّدٗاۤ وَبُكِيّٗا۩﴾ [ مريم : ٥٨ ]

“যখন তাদের নিকট আল্লাহর আয়াত তিলাওয়াত করা হয় তখন তারা ক্রন্দনরত অবস্থায় সাজদাতে লুটিয়ে পড়ে।” [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৫৮]

ইবন কাসীর রহ. বলেন, “সকল আলিম বলেছেন, উক্ত আয়াত পাঠ করে সাজদাহ করা নবীদের সুন্নত।” [ইবন কাসীর প্রণীত ‘তাফসির’: ৫/২৩৮। ‘দারুশ শা‘ব’ প্রকাশিত।]

দ্বিতীয়ত, সালাতে সাজদার আয়াত পাঠ করে সাজদাহ করলে একাগ্রতা তৈরি হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَيَخِرُّونَ لِلۡأَذۡقَانِ يَبۡكُونَ وَيَزِيدُهُمۡ خُشُوعٗا۩ ١٠٩﴾ [ الاسراء : ١٠٩ ]

“তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ১০৯]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত, তিনি সূরা আন-নাজমের সাজদার আয়াত পাঠ করে সাজদাহ করেছেন। আবু রাফে বলেন, “আমি একদা আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু র সাথে এশার সালাত আদায় করেছি। লক্ষ্য করলাম তিনি সূরা ইনশিকাক তিলাওয়াত করে সাজদাহ করলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সাজদাহ করলেন কেন? তিনি বললেন, আমি এই আয়াত শেষে আবুল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পেছনে সাজদাহ করেছি, সুতরাং তার সাথে সাক্ষাত করার পূর্ব পর্যন্ত সাজদাহ করে যাব।” [সহীহ বুখারি, কিতাবুল আযান, বাবুল জাহরি বিল এশা।]

সাজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সাজদাহ করা একাগ্রতা অর্জনের জন্যে সহায়ক, অধিকন্তু তিলাওয়াতের সাজদার কারণে শয়তান তুচ্ছ ও লাঞ্ছিত সাব্যস্ত হয়, ফলে মুসল্লিকে কেন্দ্র করে তার ষড়যন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে যায়, যেমন আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إذا قرأ ابن آدم السجدة، اعتزل الشيطان يبكي، يقول : يا ويله، أمر بالسجود فسجد، فله الجنة، وأمرت بالسجود فعصيت، فلي النار» .

“বনু আদম যখন সাজদার আয়াত তিলাওয়াত করে তখন শয়তান কাঁদতে কাঁদতে প্রস্থান করে, আর বলে, ওহে ধ্বংস! সাজদার নির্দেশ পেয়ে সে সাজদাহ করছে, ফলে তার জন্যে জান্নাত। আর আমাকে সাজদাহ’র আদেশ করা হয়েছিল আমি তার অমান্য করেছি, ফলে আমার জন্যে জাহান্নাম।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৩।]

১৪. আল্লাহর নিকট শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা। শয়তান আমাদের শত্রু, তার শত্রুতার একটি অংশ হচ্ছে মুসল্লিকে কুমন্ত্রণা দেওয়া, যেন তার খুশু চলে যায় ও তার সালাত সন্দেহ যুক্ত হয়। বস্তুত, যে কেউ যিকির বা ইবাদতে মগ্ন হয় তার ভেতর সংশয় আসবেই, তবে তার কাজ হচ্ছে একাগ্রতায় স্থির থাকা ও ধৈর্য ধরা এবং ইবাদতে অটল থাকা, অস্থির হয়ে ছেড়ে না দেওয়া। কারণ স্থির থাকলে শয়তানের ষড়যন্ত্র ধীরেধীরে দুর্বল ও দূরীভূত হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿إِنَّ كَيۡدَ ٱلشَّيۡطَٰنِ كَانَ ضَعِيفًا ٧٦ ﴾ [ النساء : ٧٦ ]

“নিশ্চয় শয়তানের ষড়যন্ত্র দুর্বল।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৭৬]

বান্দা যখন অন্তর দিয়ে আল্লাহর প্রতি মনোনিবেশ করে তখন বিভিন্ন ওয়াসওয়াসা এসে তাকে হানা দেয়। কারণ, শয়তান ডাকাতের ন্যায়, বান্দা যখন আল্লাহর রাস্তায় চলার ইচ্ছা করে তখন সে তার পথ রুদ্ধ করে দাঁড়ায়।

কতক সালাফকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: “ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানেরা বলে আমাদের ওয়াসওয়াসা আসে না। তিনি বললেন: সত্য বলেছে, কারণ শয়তান নষ্ট ঘর দিয়ে কী করবে?” [ইমাম ইবন তাইমিয়ার ফাতওয়া সংকলন ‘মাজমুউল ফাতাওয়া’: ২২/৬০৮।]

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, “ঈমান যার ভেতর আছে শয়তান তাকেই ওয়াসওয়াসা দেয়। তার একটি উদাহরণ, তিনটি ঘর রয়েছে, একটি বাদশাহর ঘর, যেখানে তার অর্থ, মূল্যবান জিনিস-পত্র ও মণিমুক্তা রয়েছে। আরেকটি তার প্রজার ঘর, যেখানে প্রজার অর্থ, মূল্যবান জিনিস-পত্র ও মণিমুক্তা রয়েছে, তবে বাদশাহর ঘরের ন্যায় মণিমুক্তা ও মূল্যবান জিনিস-পত্র তাতে নেই। আরেকটি ঘর খালি, যেখানে কিছুই নেই। ইত্যবসরে চোর এসেছে চুরি করতে, সে কোন্ ঘরে চুরি করবে?” [ইবনুল কাইয়্যেম প্রণীত ‘আল-ওয়াবিলুস সায়্যিব’: পৃ.৪৩।]

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. অন্যত্র বলেন, “বান্দা যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন শয়তান হিংসার আগুনে ছটফট করে। কারণ, সে আল্লাহর নৈকট্যপূর্ণ ইবাদত ও তার মহান দরবারে দাঁড়িয়েছে, যা শয়তানের গোস্বার উত্তেজক ও তার জন্যে কঠিন পীড়াদায়ক। তাই সে বান্দার ইবাদত নষ্ট করতে প্রাণপণ চেষ্টা ও সবটুকু সাধ্য ব্যয় করে, তাকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও প্রলোভন দেয় এবং অন্যমনস্ক করার মেহনত করে। তার উপর নিজের অশ্ব ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, যেন সে সালাতে অবহেলা করে এবং এক পর্যায়ে তা ছেড়ে দেয়। যদি শয়তান এতে পরাস্ত হয় এবং বান্দা তাকে অবজ্ঞা করে ইবাদতে মগ্ন থাকে, তাহলে আল্লাহর দুশমন ধীরে-ধীরে অগ্রসর হয় এবং বান্দা ও তার নফসে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে। তারপর বান্দা ও তার অন্তরের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং তাকে স্মরণ করিয়ে দেয় এমন কিছু, যা সালাতে প্রবেশ করার পূর্বে তার স্মৃতিতেই ছিল না। কখনো এমন হয়, মুসল্লি যে জিনিস বা প্রয়োজন ভুলে একেবারে নিরাশ হয়ে গিয়েছে তাও তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যেন তার অন্তর সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে এবং তাকে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে আনতে সমর্থ হয়। শয়তানের এরূপ নিরন্তর চেষ্টার কারণে মুসল্লি নিজের অজান্তেই এক সময় বিনা খুশুতে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, ফলে সে তার সুদৃষ্টি, সম্মান ও নৈকট্য থেকে বঞ্চিত হয়, যা লাভ করে উপস্থিত অন্তর নিয়ে সালাত আদায়কারী। ফলশ্রুতিতে মুসল্লি পাপ ও গুনাহের যে বোঝা নিয়ে সালাতে দাঁড়িয়েছিল তা নিয়েই সালাত শেষ করে, তার পাপের বোঝা আর হালকা হয় না। কারণ, সালাত দ্বারা তার পাপের বোঝাই হালকা হয় যে নিজের মন ও শরীরসহ সালাতে দাঁড়ায় এবং পূর্ণ একাগ্রতা ও হকসহ তা আদায় করে।” [ইবনিল কাইয়্যেম প্রণীত ‘আল-ওয়াবিলুস সায়্যিব’:: পৃ.৩৬।]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিম্নের হাদিসে শয়তানের ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও তার ওয়াসওয়াসা দূর করার জন্যে একটি পদ্ধতি বলেছেন, সাহাবী আবুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল, শয়তান আমার ও আমার সালাতের মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় এবং আমার তিলাওয়াতে সন্দেহ সৃষ্টি করে। তিনি বললেন,

«ذاك شيطان يُقال له خنزب فإذا أحسسته فتعوّذ بالله منه واتفل على يسارك ثلاثا . قال : ففعلت ذلك فأذهبه الله عني» .

“সে এক প্রকার শয়তান, তাকে খানযাব বলা হয়। যখন তুমি তাকে অনুভব কর আল্লাহর কাছে তার থেকে আশ্রয় চাও এবং তোমার বাম পাশে তিনবার থুতু নিক্ষেপ কর। আবুল-আস বলেন, আমি তাই করেছি, ফলে আল্লাহ তাকে আমার থেকে দূর করে দিয়েছেন।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২০৩।]

মুসল্লিকে কেন্দ্র করে শয়তানের আরেকটি ষড়যন্ত্র ও তার প্রতিকার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إن أحدكم إذا قام يصلي جاء الشيطان فلبس عليه -يعني خلط عليه صلاته وشككه فيها- حتى لا يدري كم صلى . فإذا وجد ذلك أحدكم فليسجد سجدتين وهو جالس» .

“তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন শয়তান এসে তার ভেতর সন্দেহ সৃষ্টি করে (অর্থাৎ বিভিন্ন কল্পনায় লিপ্ত করে তাকে সন্দিহান করে), ফলে সে কত রাকাত পড়েছে বলতে পারে না। তোমাদের কেউ যখন এরূপ অনুভব করে তখন বসাবস্থায় দু’টি সাজদাহ করবে।” [সহীহ বুখারি, ফরয ও নফল সালাতে সাহু করার পরিচ্ছেদ।]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শয়তানের আরেকটি ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বলেন:

«إذا كان أحدكم في الصلاة فوجد حركة في دبره أحدث أو لم يحدث، فأشكل عليه، فلا ينصرف حتى يسمع صوتًا أو يجد ريحًا» .

“তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে, তারপর গুহ্যদ্বারে হরকত অনুভব করে সন্দিহান হয় ওযু আছে না টুটে গেছে, সে যতক্ষণ না শব্দ শুনবে কিংবা গন্ধ শুঁকবে ততক্ষণ সালাত ছাড়বে না।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৮৯।]

শয়তানের ষড়যন্ত্র আরো অদ্ভুত। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলো, যে সালাতে থাকলে সন্দেহ হয় বায়ু ত্যাগ করেছে, যদিও সে বায়ু ত্যাগ করে নি। তিনি বললেন:

«إن الشيطان يأتي أحدكم وهو في صلاته حتى يفتح مقعدته فيخيل إليه أنه أحدث ولم يُحدث، فإذا وجد أحدكم ذلك فلا ينصرفن حتى يسمع صوت ذلك بأذنه أو يجد ريح ذلك بأنفه» .

“তোমাদের কেউ যখন সালাতে থাকে তখন তার কাছে শয়তান এসে তার পায়ুপথ উন্মুক্ত করে তাকে সন্দিহান করে যে, সে বায়ু ত্যাগ করেছে যদিও সে বায়ু ত্যাগ করে নি। তোমাদের কেউ যখন এটা অনুভব করবে যতক্ষণ না সে ঐ শব্দ কানে শুনবে কিংবা ঐ গন্ধ নাকে শুঁকবে সালাত ছাড়বে না।” [ইমাম তাবরানি সংকলিত ‘মুজামুল কাবির’: খ.১১, পৃ.২২২, হাদীস নং ১১৫৫৬। হায়সামি ‘আল-মাজমা’: ১/২৪২ গ্রন্থে বলেছেন, হাদীসটি যারা বর্ণনা করেছেন তাদের সবার থেকেই সহীহ হাদীস বর্ণিত আছে।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন