HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩টি উপায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ

১৩
দ্বিতীয়ত, একাগ্রতা বিনষ্টকারী উপকরণসমূহ
১৯. যেসব বস্তু দ্বারা মুসল্লির একাগ্রতা বিনষ্ট হয় সেগুলো সালাতের জায়গা থেকে দূর করা। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আয়েশা—রাদিয়াল্লাহু আনহা—র ‘কিরাম’ ছিল, অর্থাৎ নকশি কাপড় ছিল, কারো মতে ‘কিরাম’ অর্থ রঙ্গিন কাপড়, সেটা দিয়ে তিনি ঘরের এক পাশ ঢেকে রেখেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

«أميطي -أزيلي- عني فإنه لا تزال تصاويره تعرض لي في صلاتي» .

‘এটা আমার কাছ থেকে দূরে সরাও, কারণ তার ছবিগুলো আমার সালাতে ভেসে উঠছিল।” [সহীহ বুখারির ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘ফতহুল বারি’: ১০/৩৯১।]

আবুল কাসিম রহ. বলেন, “আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে ছবিযুক্ত একটা রঙিন কাপড় ছিল, সেটা তিনি ছোট রোম সৃষ্টিকারী ঘরের মাঝের (পার্টিশনের) দেয়ালের সঙ্গে টাঙ্গিয়ে রেখেছিলেন, যে দিকে ফিরে সালাত পড়তেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একদা তিনি বললেন,

«أخّريه عني فإنه لا تزال تصاويره تعرض لي في صلاتي فأخرته فجعلته وسائد» .

‘এটা আমার থেকে পেছনে হটাও, কারণ তার ছবিগুলো আমার সালাতে ভেসে উঠছিল, ফলে আয়েশা সেটা পেছনে সরিয়ে নেন এবং তা দিয়ে বালিশ তৈরি করেন।” [সহীহ মুসলিম: ৩/১৬৬৮।]

একই অর্থের আরেকটি ঘটনা, আবু দাউদ রহ. বলেন, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত পড়ার জন্যে কা‘বায় প্রবেশ করেন, সেখানে তিনি ভেড়ার দু’টি শিং দেখতে পান, সালাত শেষ করে উসমান আল-হাজাবিকে বলেন,

«إني نسيت أن آمرك أن تخمر القرنين فإنه ليس ينبغي أن يكون في البيت شيء يشغل المصلي» .

‘আমি তোমাকে শিং দু’টি ঢেকে রাখার হুকুম দিতে ভুলে গিয়েছি। মনে রেখ, কাবার ভেতর এমন জিনিস থাকা বাঞ্ছনীয় নয় যা মুসল্লিকে অন্যমনস্ক করে।” [আবু দাউদ, হাদীস নং ২০৩০। ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ২৩০৪।]

মানুষের চলাচলের জায়গা, শোরগোলের স্থান, বিরক্তিকর শব্দ, গল্পকারদের আড্ডা, গান-বাজনার আসর ও নজর কাড়া দৃশ্যের দিকে ফিরে সালাত আদায় করা ঠিক নয়। সম্ভবপর হলে প্রচণ্ড গরম ও কনকনে শীতের স্থান থেকে সরে সালাত আদায় করা। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গরমের জন্যে যোহর সালাত ঠাণ্ডা করে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, “প্রচণ্ড গরম মুসল্লির খুশু ও একাগ্রতা দূর করে দেয় এবং তাতে সে অপ্রসন্ন ও অনীহাভাব নিয়ে ইবাদত করে। তাই শরীয়ত প্রণেতা বিশেষ হিকমতবশত প্রচণ্ড গরমে দেরি করে সালাত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন, যেন গরম পড়ে যায় এবং মুসল্লি অন্তর নিয়ে সালাত পড়তে সমর্থ হয়, তবেই সালাতের বিশেষ উদ্দেশ্য অর্থাৎ খুশু ও আল্লাহর প্রতি পূর্ণ মনোযোগ হাসিল হবে।” [ইবনুল কাইয়্যেম ‘আল-ওয়াবিলুস সায়্যিব’: পৃ.২২; দারুল বায়ান প্রকাশিত।]

২০. যেসব কাপড়ে নকশা, লেখা, ক্যালিগ্রাফি, বিভিন্ন রঙ বা ছবি রয়েছে, যা মুসল্লিকে অন্যমনস্ক করে, সেগুলো গায়ে জড়িয়ে সালাত আদায় না করা। ইমাম মুসলিম বর্ণিত হাদীসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটা ছবিযুক্ত ‘খামিসায়’ অর্থাৎ সেলাই করা চতুষ্কোণ বিশিষ্ট ছবিযুক্ত কাপড়ে সালাত পড়তে দাঁড়ালেন, কাপড়ের ছবিতে তার চোখ আটকে গেল, তাই সালাত শেষে বললেন,

«اذهبوا بهذه الخميصة إلى أبي جهم بن حذيفة و أتوني بأنبجانيّه -كساء ليس فيه تخطيط ولا تطريز ولا أعلام-، فإنها ألهتني آنفًا في صلاتي» وفي رواية : ««شغلتني أعلام هذه» وفي رواية : «كانت له خميصة لها علم، فكان يتشاغل بها في الصلاة» .

‘তোমরা কাপড়টা আবু জাহাম ইবন হুযায়ফার কাছে নিয়ে যাও এবং একটা আনবিজানিয়া অর্থাৎ কারুকার্য বিহীন সাদাসিদে কাপড় নিয়ে আস। কারণ, এক্ষণে এটা আমাকে আমার সালাতে অন্যমনস্ক করে দিয়েছে।’ অপর বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, ‘এটার নকশাগুলি আমাকে অন্যমনস্ক করে দিয়েছে।’ অপর বর্ণনায় এসেছে, আয়েশা বলেন, ‘তার নকশাওয়ালা একটা কাপড় ছিল, সালাতে সেটা নিয়ে তিনি অন্যমনস্ক হয়ে যান।” [সহীহ মুসলিম: ১/৩৯১, হাদীস নং ৫৫৬। সবক’টি বর্ণনা সহীহ মুসলিম থেকে গৃহীত।]

অতএব যেসব কাপড়ে ছবি রয়েছে, বিশেষত প্রাণীর ছবি, তাতে সালাত আদায় না করা, বর্তমান যুগে যা মহামারির আকার ধারণ করেছে।

২১. যদি খাবার সামনে উপস্থিত হয় এবং তার প্রতি মনের আকর্ষণ থাকে, তাহলে আগে খাবার খেয়ে নেওয়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لا صلاة بحضرة طعام» .

“খাবারের উপস্থিতিতে কোনো সালাত নেই।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬০।]

অতএব যদি খাবার পেশ করা হয়, আগে তার থেকে অবসর হওয়া সালাতে একাগ্রতা অর্জনের জন্যে সহায়ক। কারণ, খাবার রেখে সালাত পড়লে একাগ্রতা নষ্ট হয়। এমতাবস্থায় মুসল্লি সালাত পড়বে ঠিক কিন্তু তার নফস থাকবে খাবারে, তাই প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করে সালাত আদায় করাই শ্রেয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إذا قرِّب العَشاء وحضرت الصلاة، فابدؤوا به قبل أن تصلوا صلاة المغرب . ولا تعجلوا عن عشائكم» وفي رواية : ««إذا وُضع عشاء أحدكم وأقيمت الصلاة فابدؤوا بالعشاء ولا يعجلنّ حتى يفرغ منه» .

“যদি রাতের খাবার পরিবেশন করা হয় আর সালাতও হাজির হয়, তবে মাগরিবের সালাতের আগে খাবার খেয়ে নাও। আর তাড়াহুড়ো করো না।” অন্য বর্ণনায় এসেছে, “যখন তোমাদের কারো খাবার রাখা হয় আর সালাতের ইকামতও আরম্ভ হয়, তাহলে আগে খাবার খেয়ে নাও এবং প্রয়োজন শেষ না হতে খাবার থেকে উঠবে না।” [সহীহ বুখারি, আযান অধ্যায়; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৫৯, ৫৫৭।]

২২. পেশাব-পায়খানা চেপে সালাত না পড়া। কারণ, পেশাব-পায়খানার চাপ সালাতের একাগ্রতা দূর করে দেয়। এ জন্যেই হাদীসে এসেছে,

«نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم أن يصلي الرجل وهو حاقن» .

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ব্যক্তিকে পেশাব-পায়খানা চেপে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।” [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৬১৭। ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ৬৮৩২।]

অতএব কেউ যদি পেশাব-পায়খানার চাপ অনুভব করে আগে তার থেকে অবসর হবে, জামাতের যতটুকু ছুটে যায় যাক। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إذا أراد أحدكم أن يذهب الخلاء وقامت الصلاة فليبدأ بالخلاء» .

“তোমাদের কেউ যখন বাথরুমে যাওয়ার ইচ্ছা করে, আর সালাতও দাঁড়িয়ে যায়, সে আগে বাথরুম সারবে।” [আবু দাউদ, হাদীস নং ৮৮; ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ২৯৯।]

উপরন্তু সালাতের মাঝেও যদি পেশাব-পায়খানার বেগ হয় সালাত ছেড়ে দিবে, তারপর ওযু করে সালাত পড়বে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«لا صلاة بحضرة طعام ولا وهو يدافعه الأخبثان» .

“খাবারের উপস্থিতিতে ও পেশাব-পায়খানা চেপে কোনো সালাত নেই।” [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৬০।] উল্লেখ্য যে, বায়ু চেপে রাখাও বাথরুম চেপে রাখার ন্যায় একাগ্রতার বিপরীত, তাই বায়ু চেপেও সালাত আদায় করবে না।

২৩. তন্দ্রার ভাব নিয়ে সালাত আদায় না করা। আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إذا نعس أحدكم في الصلاة فلينم حتى يعلم ما يقول» .

“যখন তোমাদের কেউ সালাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয় তখন ঘুমিয়ে নিবে, যতক্ষণ না সে যা বলে তা বুঝতে পারে।” [সহীহ বুখারি, হাদীস নং ২১০।]

অর্থাৎ প্রয়োজন অনুপাতে ঘুমিয়ে তন্দ্রা দূর করে সালাত পড়বে। এর কারণ বর্ণিত হয়েছে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার হাদীসে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إذا نعس أحدكم و هو يصلي فليرقد، حتى يذهب عنه النوم فإن أحدكم إذا صلى وهو ناعس لا يدري لعله يستغفر فيسب نفسه» .

“যখন তোমাদের কেউ সালাতে ঝিমোয়, তখন সে শুয়ে পড়বে, যতক্ষণ না তার ঘুম চলে যায়। কেননা, তোমাদের কেউ যখন তন্দ্রার অবস্থায় সালাত পড়বে, তখন সে বলতে পারবে না, হয়তো ইস্তেগফার করতে গিয়ে নিজেকে গালি দিবে।” [সহীহ বুখারি, হাদীস নং ২০৯।]

ইবন হাজার বলেন, “কিয়ামুল লাইলে অনেক সময় এরূপ হয়। তখন দো‘আ কবুলের মুহূর্তে নিজের অজান্তে নিজেকে বদ দো‘আ করবে হয়তো। এ হাদীস ফরয সালাতকেও অন্তর্ভুক্ত করে, যদি সময় শেষ হওয়ার আশঙ্কা না হয় ফরয সালাতও তখন আদায় করবে না।” [ইবন হাজার প্রণীত ‘ফাতহুল বারি’, শারহু কিতাবুল ওযু, বাবুল ওযু মিনান নাওম।]

২৪. ঘুমন্ত ব্যক্তি বা গল্পকারদের পেছনে সালাত আদায় না করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لا تصلوا خلف النائم ولا المتحدث» .

“তোমরা ঘুমন্ত ও আলাপীর পেছনে সালাত পড় না।” [আবু দাউদ, হাদীস নং ৬৯৪; ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ৩৭৫। আলবানি হাদীসটি হাসান বলেছেন।]

অর্থাৎ মুসল্লি যদি আলাপীর পশ্চাতে সালাত পড়ে, তাহলে স্বভাবত সে তাকে আলাপ দ্বারা অন্যমনস্ক করতে পারে। অনুরূপ ঘুমন্ত ব্যক্তি হতে অযাচিত কিছু প্রকাশ পেলে তার একাগ্রতা নষ্ট হতে পারে।

খাত্তাবি রহ. বলেন, “ইমাম শাফি ও আহমদ ইবন হাম্বল বলেছেন আলাপীর দিকে ফিরে সালাত পড়া মাকরূহ। কারণ, আলাপীর আলাপ মুসল্লিকে সালাত থেকে গাফিল করে দেয়।” [শারফুল হক আযিম আবাদি প্রণীত আবু দাউদের ব্যাখ্যা: ‘আওনুল মাবুদ: ২/৩৮৮।]

উল্লেখ্য যে, ঘুমন্ত ব্যক্তির পেছনে সালাত পড়ার নিষেধাজ্ঞার দলিলগুলোকে অনেক আলেম দুর্বল বলেছেন, যেমন ইমাম আবু দাউদ ‘বিতর’ অধ্যায়ে এবং হাফিয ইবন হাজার ‘ফাতহুল বারি’-র ‘বাবুস সালাত খালফান নায়িম’ অনুচ্ছেদে।

ইমাম বুখারি রহ. তার সহীহ গ্রন্থে একটি অধ্যায় কায়েম করেছেন, ‘বাবুস সালাতি খালফান-নায়েম’ অর্থাৎ ঘুমন্ত ব্যক্তির পেছনে সালাত পড়ার অধ্যায়। সেখানে তিনি আয়েশা—রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে উল্লেখ করেন,

«كان النبي صلى الله عليه وسلم يصلي وأنا راقدة معترضة على فراشه» .

“নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত পড়তেন, আর আমি তার শয্যায় বাধা হয়ে শুয়ে থাকতাম।” [সহীহ বুখারি, সালাত অধ্যায়।]

ইমাম মালিক, মুজাহিদ, তাউস প্রমুখ ঘুমন্ত ব্যক্তির পেছনে সালাত পড়াকে মাকরূহ বলেছেন, কারণ, হয়তো তার কাছ থেকে লজ্জাকর কিছু প্রকাশ পাবে, যা মুসল্লিকে তার সালাত থেকে অন্যমনস্ক করবে। [ইবন হাজার প্রণীত ‘ফাতহুল বারি’, সালাত অধ্যায়।] এরূপ আশঙ্কা না থাকলে ঘুমন্ত ব্যক্তির পেছনে সালাত পড়া মাকরূহ নয়।

২৫. সালাত পড়াবস্থায় সাজদার জায়গার ধুলো-বালি সমতল না করা। ইমাম বুখারি সাহাবী মুআইকিব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাজদার স্থানের মাটি সমতলকারীকে বলেছেন, «إن كنت فاعلاً فواحدة» “যদি তোমাকে করতেই হয় তাহলে একবার।” [ইবন হাজার প্রণীত ‘ফাতহুল বারি’: ৩/৭৯।] তিনি আরো বলেছেন,

«لا تمسَح وأنت تصلي فإن كنتَ لا بدَّ فاعِلا فواحدة» .

“তুমি সালাত পড়াবস্থায় সাজদার জায়গা মুছবে না, যদি মুছতেই হয় তাহলে একবার।” [আবু দাউদ, হাদীস নং ৯৪৬। ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ৭৪৫২।]

সালাতের একাগ্রতা ঠিক রাখা ও তাতে অহেতুক হরকত কম করার স্বার্থেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ নিষেধাজ্ঞা। আর যদি সাজদার জায়গা সমতল করতে হয় সালাতের পূর্বেই করে নিবে। কপাল ও নাক পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও একই বিধান। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও মাটি ও পানির উপর সাজদাহ করেছেন, যার আলামত তার চেহারায় সালাত শেষে দেখা গেছে, তিনি সাজদাহ থেকে উঠার সময় তা ঝেড়ে পরিষ্কার করেন নি। সত্যিকার অর্থে সালাতের খুশু ও একাগ্রতা কপালের ধুলো-ময়লা ভুলিয়ে দেয়। এ জন্যেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, «إن في الصلاة شغلاً» “নিশ্চয় সালাতে ব্যস্ততা রয়েছে।” [সহীহ বুখারি, দেখুন ‘ফতহুল বারি’: ৩/৭২।]

ইবন হাজার বলেন, “ইবন আবি শায়বাহ রহ. স্বীয় ‘মুসান্নাফ’ গ্রন্থে আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, ‘আরবদের সবচেয়ে প্রিয় লাল উটের বিনিময়েও সালাত পড়াবস্থায় সাজদার জায়গা হতে ধুলো-বালি সরানো পছন্দ করি না।’ কাযী ইয়াদ্ব রহ. বলেন, ‘সালাফগণ সালাত শেষ না করে কপাল মুছা পছন্দ করতেন না।” [ইবন হাজার প্রণীত ‘ফতহুল বারি’: ৩/৭৯।]

২৬. সূরা-কিরাত উচ্চস্বরে পড়ে অন্যদের সালাত নষ্ট না করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«ألا إن كلكم مناج ربه، فلا يؤذين بعضكم بعضًا، ولا يرفع بعضكم على بعض في القراءة» . أوقال : «في الصلاة» .

“স্মরণ রেখ! তোমরা প্রত্যেকে তার রবের সাথে কথোপকথন কর। খবরদার, একে অপরকে কষ্ট দিবে না এবং কিরাতের সময় কেউ কারো উপর আওয়াজ উঁচু করবে না।” অথবা বলেছেন, “সালাতের সময়…।” [আবু দাউদ, হাদীস নং ২/৮৩, ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ৭৫২।] অপর বর্ণনায় এসেছে,

«لا يجهر بعضكم على بعض بالقرآن»

“কুরআন নিয়ে তোমাদের কেউ কারো উপর আওয়াজ উঁচু করবে না।” [ইমাম আহমদ সংকলিত ‘মুসনাদ’: ২/৩৬; ‘সহীহ আল-জামি’, হাদীস নং ১৯৫১।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন