HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩টি উপায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ

১১
সালাতে অন্য ইবাদত নিয়ে চিন্তা করার হুকুম
খানযাব নামক শয়তান কতক ভালো মুসল্লির নিকট একটা প্রতারণা নিয়ে হাজির হয়। আর সেটা হচ্ছে, সালাত থেকে তার মনোযোগ হটানোর জন্যে আরেকটি ইবাদতে তাকে মগ্ন করে, যেমন দাওয়াতি কাজের পরিকল্পনা কিংবা ইলমি গবেষণা, ফলে সে সালাতের রাকাত সংখ্যা ভুলে যায়। এ ক্ষেত্রে কখনো কাউকে ধোঁকা দেয় যে, ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাতে যুদ্ধের পরিকল্পনা করতেন। তাই অনেকে ধোঁকায় পড়ে সালাতের ভেতর আরেকটি ইবাদত নিয়ে ভাবতে ভাবতে বিনা একাগ্রতায় সালাত শেষ করে, তাই তার ঘটনাটি বিশ্লেষণধর্মী।

অতএব আমরা ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু র ঘটনার স্বরূপ ও হুকুম জানার জন্যে শায়খুল ইসলাম ইবন তাইমিয়াহ রহ.-এর শরণাপন্ন হব এবং তিনি যে সমাধান দিয়েছেন সেটাই এখানে পেশ করব। তিনি বলেন, “ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়, তিনি বলেছেন, ‘আমি সালাতে জিহাদের পরিকল্পনা করি।’ তিনি এরূপ করতে পারেন, কেননা তার উপর জিহাদের দায়িত্ব ছিল। তিনি আমিরুল মুমিনিন অর্থাৎ মুমিনদের নেতা হওয়ার সুবাদে জিহাদেরও নেতা ছিলেন। তার অবস্থা ছিল অনেকটা ঐ মুসল্লির মতো, যে শত্রু বাহিনী চোখে দেখে সালাত আদায় করে। তিনি যুদ্ধের ময়দানে থাকতেন বা না থাকতেন তার উপর যুদ্ধের দায়িত্ব ছিল, যেমন ছিল তার উপর সালাতের দায়িত্ব। সমানভাবে দু’টি কর্মই তার দায়িত্বে ছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا لَقِيتُمۡ فِئَةٗ فَٱثۡبُتُواْ وَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ كَثِيرٗا لَّعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٤٥﴾ [ الانفال : ٤٥ ]

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন কোনো বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হও, তখন দৃঢ়পদ থাক এবং উদ্দেশ্যে সফলতা অর্জনের জন্যে আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো।’ [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৪৫]

কম-বেশী সবাই জানি যে, যুদ্ধরত ও যুদ্ধহীন অন্তরের একাগ্রতা বরাবর নয়। যদি ধরা হয় জিহাদের পরিকল্পনার জন্যে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু র সালাতে ত্রুটি হয়েছে, তবুও ঘটনাটি তার পূর্ণাঙ্গ ঈমান ও ইবাদতে চির ধরাতে পারে না। কারণ নিরাপদ অবস্থার সালাতের চেয়ে ভয়ের অবস্থার সালাতে শিথিলতা একটু বেশি রয়েছে, যেমন সালাতুল খাওফ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿فَإِذَا ٱطۡمَأۡنَنتُمۡ فَأَقِيمُواْ ٱلصَّلَوٰةَۚ إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتۡ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ كِتَٰبٗا مَّوۡقُوتٗا ١٠٣ ﴾ [ النساء : ١٠٣ ]

‘তারপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।’ [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১০৩]

অতএব নিরাপদ অবস্থায় যেভাবে সালাত আদায় করার নির্দেশ রয়েছে ভয়ের অবস্থায় সে নির্দেশ কিছুটা শিথিল বলাই বাহুল্য। এতদসত্ত্বেও সব মানুষের একাগ্রতা সমান নয়। মুসল্লির ঈমান শক্তিশালী হলে তার মনোযোগ শক্তিশালী হয়, যদিও তাতে আরেকটি ইবাদত নিয়ে চিন্তা করে। আর ওমর তো ওমর, আল্লাহ তার জবান ও অন্তরে সত্যকে গেঁথে দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ইলহামসম্পন্ন বিশেষ ব্যক্তি। তার মত মানুষের সালাতে জিহাদের পরিকল্পনা করেও অন্যদের থেকে অধিক মনোযোগী হওয়া অসম্ভব নয়, তবে তার নিজের ক্ষেত্রে জিহাদের চিন্তাসহ সালাতের চেয়ে জিহাদের চিন্তাহীন সালাত উত্তম বলার অপেক্ষা রাখে না।

এতেও সন্দেহ নেই যে, বাহ্যিক ক্রিয়া-কর্মের বিচারে স্বয়ং আল্লাহর রাসূলের নিরাপদ অবস্থার সালাতের চেয়ে ভয়ের অবস্থার সালাত শিথিল ছিল। আল্লাহ ভয়ের অবস্থার সালাতে বাহ্যিক ওয়াজিব শিথিল করেছেন, অতএব অভ্যন্তরীণ ওয়াজিব (খুশু)ও শিথিল করবেন স্বাভাবিক বিষয়।

মোদ্দাকথা, সময় স্বল্পতার কারণে সালাতে জরুরি বিষয় নিয়ে চিন্তা করা, আর জরুরি নয় এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করা কিংবা জরুরি বিষয় তবে তার চিন্তার জন্যে পর্যাপ্ত সময় আছে, তবুও সালাতে সেটা নিয়ে চিন্তা করা এক কথা নয়। হতে পারে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাত ছাড়া অন্য সময় জিহাদ নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ পান নি। কারণ, তিনি ইমামদের ইমাম ছিলেন, তার ছিল অনেক কর্ম-ব্যস্ততা। দায়িত্ব বেড়ে গেলে সবারই কম-বেশী এরূপ হয়।

সালাতে যেসব বিষয়-বস্তু স্মরণ হয় সাধারণত তার বাইরে সেগুলো স্মরণ হয় না। কিছু হয় শয়তানের কাছ থেকে, যেমন জনৈক সালাফের ঘটনা রয়েছে, কেউ তাকে জিজ্ঞেস করল আমি মাটিতে কিছু সম্পদ পুঁতে রেখেছি কিন্তু তার নির্দিষ্ট জায়গা ভুলে গেছি। তিনি বললেন, যাও গিয়ে সালাতে দাঁড়াও। সে গিয়ে সালাতে দাঁড়াল আর অমনি ঐ বস্তুও তার স্মরণ হলো। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, এটা আপনি কীভাবে জানলেন? তিনি বললেন, আমার মনে হয়েছে সালাতে দাঁড়ালে শয়তান তাকে নিস্তার দিবে না। অবশ্যই এমন কিছু স্মরণ করিয়ে দিবে, যা তাকে সালাত থেকে অন্যমনস্ক করবে। এই মুহূর্তে তার নিকট হারানো বস্তুর জায়গা জানার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেই, তাই শয়তান তাকে সেটাও স্মরণ করিয়ে দিতে পারে। প্রকৃত অর্থে সালাতে যে অন্য কাজের সাথে পূর্ণ একাগ্রতার প্রতি সচেষ্ট থাকে সেই বুদ্ধিমান, তবে আল্লাহর সাহায্য ছাড়া নেকি করার তাওফিক বা পাপ থেকে বিরত থাকার কোনো শক্তি নেই।” [ইবন তাইমিয়ার ফাতওয়া সংকলন ‘মাজমু্উল ফাতাওয়া’: ২২/৬১০।] ইবন তাইমিয়া থেকে সংগৃহীত অংশ শেষ হলো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন