HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতে একাগ্রতা অর্জনের ৩৩টি উপায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ

১৫
খুশু বিহীন সালাতের হুকুম
মাসআলা: সালাতে যদি ওয়াসওয়াসার সংখ্যা বেশি হয়, তাহলে সালাত কি সহীহ আছে, না পুনরায় পড়তে হবে?

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, “যদি জিজ্ঞেস করা হয় খুশু বিহীন সালাতের বিধান কী, সহীহ কি সহীহ না?

এ জিজ্ঞাসার দু’টি উত্তর, (ক.) সাওয়াবের বিবেচনায়, (খ.) দুনিয়াবি বিধান মতে। (ক.) যদি জিজ্ঞাসা করা হয় সাওয়াবের বিবেচনায় সহীহ কি না, তার উত্তর হচ্ছে খুশু বিহীন সালাত সহীহ নয়। কারণ, মুসল্লি যে পরিমাণ সালাত বুঝে ও সজ্ঞানে পড়ে এবং যে পরিমাণ খুশু রক্ষা করে সে পরিমাণ তার সাওয়াব হয়।

ইবন আব্বাস বলেন: ‘তোমার সালাতের তুমি ততটুকু হকদার যতটুকু সজ্ঞানে পড়েছ।’ ইমাম আহমদের মুসনাদ গ্রন্থে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত,

«إن العبد ليصلي الصلاة، و لم يكتب له إلا نصفها، أو ثلثها أو ربعها حتى بلغ عشرها» .

‘বান্দা সালাত পড়ে বটে, তবে তার জন্যে সালাতের অর্ধেক বা তৃতীয়াংশ বা চতুর্থাংশ এমন কি দশমাংশ সাওয়াব ছাড়া কিছুই লেখা হয় না।’ তাছাড়া মুসল্লির সফলতাকে আল্লাহ তা‘আলা খুশুর সাথে সম্পৃক্ত করেছেন, তার অর্থ যার সালাত খুশু বিহীন সে সফল নয়। যদি খুশু বিহীন সালাত দুরস্ত হত, আল্লাহ তাকেও সফল বলতেন।

(খ.) আর যদি জিজ্ঞেস করা হয় দুনিয়াবি বিধান মতে সহীহ কি না, তার দ্বারা মুসল্লির ওয়াজিব আদায় হবে কি না? তাহলে কথা হচ্ছে, যদি খুশুর পরিমাণ বেশি হয় এবং মুসল্লি সজ্ঞানে সালাত পড়ে, সবার মতেই তার সালাত সহী। আর তার সালাতে যেসব ত্রুটি হয়েছে তার প্রতিবিধান করবে নফল সালাত ও সালাত পরবর্তী যিকিরসমূহ। আর যদি সালাতে খুশু বিহীন অংশ বেশি হয় এবং অধিকাংশ সালাত না বুঝে পড়ে, তাহলে পুনরায় তাকে সালাত পড়তে বলা হবে কি না ফকিহগণ ইখতিলাফ করেছেন। ইমাম আহমদের সাথী ইবন হামিদ বলেছেন খুশু ওয়াজিব। এ থেকে খুশু সম্পর্কে দু’টি মতের সৃষ্টি হয়েছে। দু’টিই ইমাম আহমদের মাযহাব। প্রথম মতের অনুসারী ইমাম আহমদের সাথী ইবন হামিদ বলেন, ওয়াসওয়াসার পরিমাণ বেশি হলে পুনরায় সালাত পড়া ওয়াজিব। দ্বিতীয় মতের অনুসারী অধিকাংশ ফকিহ বলেন ওয়াজিব নয়।

দ্বিতীয় মতাবলম্বীরা বলেন, সালাতে ভুল করলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি ভুলের সাজদাহ করতে বলেছেন, পুনরায় পড়তে বলেন নি, যদিও একটা বড় ভুলের কথা তিনি নিম্নের হাদিসে বলেছেন,

«إن الشيطان يأتي أحدكم في صلاته فيقول : أذكر كذا، أذكر كذا، لما لم يكن يذكر، حتى يُضل الرجل أن يدري كم صلى» .

‘নিশ্চয় শয়তান তোমাদের কারো সালাতে এসে বলে, এটা স্মরণ কর, এটা স্মরণ কর, যতক্ষণ না সে স্মরণ করবে। এভাবে এক সময় তাকে ভুলিয়ে দেয়, ফলে সে কত রাকাত পড়েছে বলতে পারে না।’

ফকিহদের ঐকমত্যে এরূপ সালাতের সাওয়াব নেই, তবে যতটুকু অংশ অন্তর ও খুশুসহ পড়েছে ততটুকু অংশের সাওয়াব হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إن العبد لينصرف من الصلاة ولم يكتب له إلا نصفها، ثلثها، ربعها، حتى بلغ عشرها» .

‘বান্দা সালাত শেষ করে বটে, কিন্তু তার জন্যে তার অর্ধেক, তৃতীয়াংশ, চতুর্থাংশ, এমন কি দশমাংশ ছাড়া কোনো সাওয়াব লেখা হয় না।’ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,

«ليس لك من صلاتك إلا ما عقلت منها» .

‘তোমার সালাত থেকে তুমি ততটুকু হকদার যতটুকু তুমি বুঝেছ।’

অতএব শরীয়তের উদ্দেশ্য দেখে বিচার করলে খুশু বিহীন সালাত সহীহ নয়, যদিও আমরা সেটাকে এ অর্থে সহীহ বলি যে, পুনরায় পড়তে বলি না।” [ইবনুল কাইয়্যেম প্রণীত ‘মাদারিজুস সালিকিন’: ১/১১২।] ইবনুল কাইয়্যেম থেকে আহৃত অংশ শেষ হলো।

ইবনুল কাইয়্যেম অন্যত্র বলেন, “সহীহ গ্রন্থে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত, তিনি বলেছেন,

«إذا أذن المؤذن بالصلاة أدبر الشيطان وله ضراط، حتى لا يسمع التأذين، فإذا قضى التأذين أقبل، فإذا ثوب بالصلاة أدبر، فإذا قضى التثويب أقبل، حتى يخطر بين المرء ونفسه، يقول : اذكر كذا اذكر كذا، ما لم يكن يذكر، حتى يظل لا يدري كم صلى، فإذا وجد أحدكم ذلك فليسجد سجدتين وهو جالس» .

“যখন মুয়াজ্জিন সালাতের আযান দেয় তখন শয়তান বায়ু ত্যাগ করতে করতে পালিয়ে যায়, যেন আযান শুনতে না পায়। যখন আযান শেষ হয় এগিয়ে আসে। আবার যখন ইকামত শুরু হয় পালিয়ে যায়, ইকামত শেষ হলে ফিরে আসে, এতটাই কাছে আসে যে, মুসল্লির নফসে ওয়াসওয়াসা দিতে সমর্থ হয় এবং বলে, এটা স্মরণ কর, এটা স্মরণ কর, যা পূর্বে স্মরণ করতে পারত না, যদ্দরুন এক সময় বলতে পারে না কত রাকাত পড়েছে। যখন তোমাদের কেউ এরূপ অনুভব করে তখন বসাবস্থায় দু’টি সাজদাহ করবে।

দ্বিতীয় মতের ফকিহরা আরো বলেন, যদি শয়তান মুসল্লিকে এতটাই গাফিল করে যে, কত রাকাত পড়েছে তাও ভুলে যায়, তবুও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দু’টি সাজদাহ করতে বলেছেন, দ্বিতীয়বার পড়তে বলেন নি। যদি তার সালাত বাতিল হত, যেরূপ আপনারা বলেন, তাহলে অবশ্যই তাকে পুনরায় সালাত পড়ার নির্দেশ দিতেন।

দ্বিতীয় মতের ফকিহরা আরো বলেন, এটাই সাহু সাজদার রহস্য, অর্থাৎ শয়তান বান্দাকে ধোঁকা দিয়ে, বান্দা ও তার সালাতের খুশু নষ্ট করে বাহ্যিকভাবে সামান্য সাফল্য লাভ করেও আনন্দিত হওয়ার পরিবর্তে লাঞ্ছিত হয়। এ জন্যেই সাহুর দু’টি সাজদাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাঞ্ছিতকারী বলেছেন।” [ইবনুল কাইয়্যেম প্রণীত ‘মাদারিজুস সালিকিন’: ১/৫২৮-৫৩০।] আহৃত অংশ শেষ হলো।

অতএব যদি খুশুর ফল ও ফায়দা লাভ করার জন্যে মুসল্লিকে পুনরায় সালাত আদায় করতে বলা হয়, তবে সেটা তার ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল, সে চাইলে হাসিল করবে, অন্যথায় তার থেকে বঞ্চিত হবে। আর যদি পুনরায় পড়তে বলার অর্থ হয়, তাকে সালাত দোহরাতে বাধ্য করা, না পড়লে শাস্তি প্রদান করা ও তার উপর সালাত না পড়ার বিধান জারি করা, তাহলে আমরা সেটা মানতে নারাজ। দু’টি অভিমত থেকে দ্বিতীয় মতটি অধিক বিশুদ্ধ। আল্লাহ ভালো জানেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন