hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতের শেষ বৈঠকে বসার পদ্ধতি

লেখকঃ কামাল আহমাদ

১২
আয়েশা (স)-এর হাদীস থেকে দলিল গ্রহণের পর্যালোচনা
ভুল ধারণা-১১: অনুরূপ মুহাদ্দিস আলবানী (রহ) আয়েশা (রা)-এর ‘সহীহ মুসলিমে’ (হা/৮৯৪) বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে লিখেছেন:

“সর্বোপরি দলিলটি থেকে বুঝা যায়, দুই রাকআতবিশিষ্ট সালাতের তাশাহহুদে ইফতিরাশ পদ্ধতিতে হবে।”

সংশোধন-১১: প্রথমে আমরা সম্পূর্ণ হাদীসটি জেনে নেব। আয়েশা (রা) বর্ণনা করেন:

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ يَسْتَفْتِحُ الصَّلَاةَ بِالتَّكْبِيرِ وَالْقِرَاءَةِ بِ ( الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ ) وَكَانَ إِذَا رَكَعَ لَمْ يُشْخِصْ رَأْسَهُ وَلَمْ يُصَوِّبْهُ وَلَكِنْ بَيْنَ ذَلِكَ وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوعِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ قَائِمًا وَكَانَ إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ السَّجْدَةِ لَمْ يَسْجُدْ حَتَّى يَسْتَوِيَ جَالِسًا وَكَانَ يَقُولُ فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى وَكَانَ يَنْهَى عَنْ عُقْبَةِ الشَّيْطَانِ وَيَنْهَى أَنْ يَفْتَرِشَ الرَّجُلُ ذِرَاعَيْهِ افْتِرَاشَ السَّبُعِ وَكَانَ يخْتم الصَّلَاة بِالتَّسْلِيمِ .

“রসূলুল্লাহ (স) সালাত শুরু করতেন তাকবির দ্বারা, আর ক্বিরাআত করতেন ‘আল-হামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন’ দ্বারা। তিনি যখন রুকু করতেন মাথা খুব উপরেও করতেন না, আবার বেশি নিচেও করতেন না, মাঝামাঝি রাখতেন। রুকু হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে না দাঁড়িয়ে সাজদায় যেতেন না। আবার সাজদা হতে মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে না বসে দ্বিতীয় সাজদাতে যেতেন না। আর তিনি বলেছেন: প্রত্যেক দুই রাকআতের পরই বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়তেন। বসার সময় তিনি তার বাম পা বিছিয়ে দিতেন। ডান পা খাড়া রাখতেন। শয়তানের মতো এবং কুকুর বসা বসতে নিষেধ করতেন। সাজদায় পশুর মত মাটিতে দুই যেরা‘ (বাহু/গজহাত) দিতেও নিষেধ করেছেন। নবী (স) সালাম শেষ করতেন সালামের মাধ্যমে।” [সহীহ মুসলিম, মিশকাত (তাহক্বীক্ব) হা/৭৯১]

আলোচ্য হাদীসের যে বাক্যগুলো থেকে দলিল নেয়া হয়েছে তা হল,

فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى

“প্রত্যেক দুই রাকআতের পরই বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়তেন। বসার সময় তিনি তার বাম পা বিছিয়ে দিতেন। ডান পা খাড়া রাখতেন।”

হাদীসটি থেকে ‘তাওয়ার্রুক’ না করার দলিল উল্লেখ করাটা ভুল ও প্রত্যাখ্যাত।

প্রথমত, এই হাদীসটিতেও কেবল বাম পা বিছানোর কথা বলা হয়েছে, কিন্তু এর উপর বসার কথা বলা হয়নি। ফলে এটা ‘তাওয়ার্রুক’-এর বিরোধী হয় না। কেননা তাওয়ার্রুকেও বাম পা বিছানো হয় এবং ডান পাকে খাড়া রাখা যায়। এ মর্মে সাক্ষ্য নিম্নরূপ:

১) বিখ্যাত হানাফি আলেম আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মিরি (রহ) লিখেছেন:

وعارض الأحناف الشافعية بما في مسلم صـ ۱ ٩٤ عن عائشة ذكر الافتراش في القعدتين ، ويمكن لهم أن في التورك أيضاً فرش اليسرى ونصب اليمنى  

“হানাফিগণ শাফেঈদের বিরোধিতায় সহীহ মুসলিমে (পৃ. ১৯৪) বর্ণিত আয়েশা (রা)-এর হাদীস উল্লেখ করে থাকেন, যেখানে দুটি বৈঠকে (তাশাহহুদে) ইফতিরাশ করার বর্ণনা আছে। কিন্তু শাফেঈগণ এটা বলতে পারেন যে, এমনটি তাওয়ার্রুকের ক্ষেত্রেও অনুরূপ হয়, (অর্থাৎ) বাম পা ফরাশ বা বিছানো এবং ডান পাটি খাড়া করার বর্ণনা আছে।” [উরুফুশ শাযি লিলকাশ্মিরি ১/৩৩৩ পৃ.]

২) ‘আল-লামহাতের’ লেখক আল্লামা রইস নদভি সাহেব লিখেছেন:

حدیث عائشہ پر ہم نظر کرتے ہیں اس میں صرف یہ مذکور ہے کہ ہر قعدہ میں آپ داہنا پاؤں کھڑا اور بایاں‌ بچھا ہوا رکھتے تھے ، اس میں مذکور نہیں کہ بچھے ہوئے بائیں‌ پاؤں پر سرین رکھ کر بیٹھتے بھی تھے ، ظاہر ہے یہ روایت قعدہ اخیرہ میں تورک کے یعنی زمین پر سرین رکھ کر بیٹھنے اوربائیں‌پاؤں کو باہر نکال کر بچھادینے کے ہرگز منافی نہیں

“আমরা আয়েশা (রা)-এর হাদীসের প্রতি লক্ষ্য করলে তাতে কেবল এটাই পাই যে, প্রত্যেক বৈঠকে নবী (স) নিজের ডান পা খাড়া রাখতেন এবং বাম পা বিছিয়ে দিতেন। এতে এটা বলা হয় যে, বিছানো বাম পায়ের উপর নিতম্ব রেখে বসেছিলেন। (বরং) এ থেকে এটাই প্রকাশ পায় যে, এই বর্ণনাটি শেষ বৈঠকে ‘তাওয়ার্রুক’ তথা জমিনে নিতম্ব রেখে বসা এবং বাম পাকে বের করে দিয়ে বিছানোর বিরোধী হয় না।” [রসূলে আকরাম কা সহীহ তরিকায়ে নামায পৃ. ৫৩২]

বুঝা যাচ্ছে, فرش শব্দটি কেবল বিছানোর অর্থে ব্যবহৃত হয়। বিছিয়ে তার উপর বসার অর্থবোধক নয়। কেননা, সহীহ মুসলিমের বর্ণনাতে ‘তওয়ার্রুক’ পদ্ধতিতে ডান পায়ের ক্ষেত্রেও فرش শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন-

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ إِذَا قَعَدَ فِى الصَّلاَةِ جَعَلَ قَدَمَهُ الْيُسْرَى بَيْنَ فَخِذِهِ وَسَاقِهِ وَفَرَشَ قَدَمَهُ الْيُمْنَى  

“নবী (স) যখন সালাতের জন্য বসতেন তখন বাম পাকে (ডান পায়ের) উরু ও নলার উপর স্থাপন করতেন, আর ডান পাটি বিছিয়ে দিতেন।” [সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমি) হা/১১৯৪]

এখানে ডান পা-কে বিছানোর ক্ষেত্রে فرش শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। এখন বিরোধী পক্ষের নিকট প্রশ্ন: এখানে ডান পা বিছানো বলতে কি ডান পায়ের উপর বসা অর্থ হবে?

যদিও আভিধানিকভাবে ‘তাওয়ার্রুকের’ প্রসিদ্ধ অর্থ হলো, ডান পা খাড়া রেখে বাম পা-কে ডান পায়ের দিকে বের করে নিতম্বের উপর বসা। কিন্তু সহীহ মুসলিমের উপরের বর্ণনাটিতে ডান পা-কে বিছানোর বর্ণনা রয়েছে। আবার আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা)-এর নিচের বর্ণনাটিতে উভয় পা-কে বের করে তথা বিছিয়ে দেয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। বর্ণনাটি হল,

فَإِذَا كَانَ فِى الرَّابِعَةِ أَفْضَى بِوَرِكِهِ الْيُسْرَى إِلَى الأَرْضِ وَأَخْرَجَ قَدَمَيْهِ مِنْ نَاحِيَةٍ وَاحِدَةٍ

“তারপর চতুর্থ রাকআতে বসার সময় নিজের দুই পা ডান দিকে বের করে বাম নিতম্বের উপর ভর করে বসতেন।” [আবূ দাউদ হা/৭৩১]

দ্বিতীয়ত, আয়েশা (রা)-এর হাদীসটিতে উল্লিখিত হয়েছে:

فِي كُلِّ رَكْعَتَيْنِ التَّحِيَّةَ وَكَانَ يَفْرِشُ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَيَنْصِبُ رِجْلَهُ الْيُمْنَى

“প্রত্যেক দুই রাকআতের পরই বসে আত্তাহিয়্যাতু পড়তেন। বসার সময় তিনি তার বাম পা বিছিয়ে দিতেন। ডান পা খাড়া রাখতেন।”

এ হাদীস থেকেই হানাফিরা চতুর্থ রাকআতে বাম পায়ের উপর বসার পদ্ধতির দলিল নিয়ে থাকে। অথচ হাদীসটিতে দুই রাকআতের বর্ণনার পর সালাম ফেরানোর কথা এসেছে। আর বলা হয়েছে “প্রত্যেক দুই রাকআতে.. বসার সময় তিনি তার বাম পা বিছিয়ে দিতেন।” অর্থাৎ হাদীসটি প্রকারান্তরে দুই রাকআত বিশিষ্ট সালাতেও বাম পা বিছানোর দলিল।

আর যদি বাম পা বিছানো বলতে বাম পায়ের উপর বসা বুঝায় তা হলে, সেটা যে কোনো তাশাহহুদের বৈঠকে হানাফিদের আমলটিই প্রমাণিত হয়। এ পর্যায়ে শায়েখ আলবানী (রহ) লিখেছেন:

وإن كان في " صحيح مسلم " ؛ فهو - معلّ بالانقطاع كما بَيَّنَّاه هناك . ولو صح؛ لقلنا بجواز الافتراش في التشهد الأخير، وأنه سنة أحياناً، لكنه لم يصح

“যদিও হাদীসটি সহীহ মুসলিমে আছে, কিন্তু ইনক্বাতা বা সনদ বিচ্ছিন্নতার ত্রুটিযুক্ত (তথা যঈফ), যেভাবে পূর্বে বর্ণনা করেছি। যদি এটা সহীহ হতো, তা হলে আমি দ্বিতীয় তাশাহহুদে ইফতিরাশ করাও জায়েয বলতাম। নিশ্চয় সেটা (আমল করা) কখনো কখনো সুন্নাত। কিন্তু তা সহীহ নয়।” [আসলি সিফাতে সালাতুন নাবিয়্যি ৩/৯৮৩]

অথচ হাদীসটি নিঃসন্দেহে সহীহ এবং সনদ বিচ্ছিন্নতার দাবি সম্পূর্ণ ভুল। বরং এভাবে বলতে হবে যে, হাদীসটিতে কেবল বাম পা বিছানোর কথা বলা হয়েছে, কিন্তু তার উপর বসার কথা বলা হয়নি। যেহেতু শেষ রাকআতে কীভাবে বসতে হবে তা আবূ হুমায়দ সাঈদির (রা) হাদীসে সুস্পষ্ট হয়েছে যে, বসতে হবে নিতম্বের উপর। সুতরাং কারও দলিলহীন অনুমানের উপর নয়। বরং ‘এক হাদীস আরেক হাদীসের ব্যাখ্যা’- নীতির ভিত্তিতে শেষ রাকআতে বা সালামবিশিষ্ট তাশাহহুদে ‘তাওয়ার্রুক’ করতে হবে। পক্ষান্তরে শেষ রাকআতের সালামবিশিষ্ট তাশাহহুদ না হলে ‘ইফতিরাশ’ পদ্ধতিতে বাম পায়ের উপর বসতে হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন