hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সালাতের শেষ বৈঠকে বসার পদ্ধতি

লেখকঃ কামাল আহমাদ

কিছু সংশয়ের জবাব
[এই অংশটি ইন্টারনেট থেকে শায়েখ কিফায়াতুল্লাহ সানাবিলি’র লেখনীর ছায়া অবলম্বনে লিখিত।]

ভুল ধারণা-১: প্রাধান্যপ্রাপ্ত সিদ্ধান্ত হল, তাওয়ার্রুক এমন প্রত্যেক সালাতের দ্বিতীয় তাশাহহুদে হবে, যেখানে দুই তাশাহহুদ থাকবে। সুতরাং একটি তাশাহহুদ-বিশিষ্ট সালাতে ইফতিরাশ হবে।

সংশোধন-১: এটা কেবলই দাবি। কেননা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, হাদীসে যেসব শব্দ রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-

ক) যে রাকআতটি দ্বারা সালাত শেষ হবে তাতে তাওয়ার্রুক করা,

খ) যে শেষ সাজদার পর সালাম ফিরাতে হবে তাতে তাওয়ার্রুক করা,

গ) যে রাকআতটি শেষ হবে তাতে নিতম্বের উপর বসা… প্রভৃতি।

এই শব্দগুলো ‘আম বা ব্যাপক অর্থে এমন সব বৈঠক, যার পরে সালাম রয়েছে বা রাকআতটি দ্বারা সালাত শেষ হবে, সেক্ষেত্রে তাওয়ার্রুক করাটাই বিধান। সেটা এক রাকআত হোক বা দুই, তিন, পাঁচ, সাত কিংবা নয় রাকআত-বিশিষ্ট সালাত- সবক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

যদি আবূ হুমায়দ সাঈদির চার রাকআত সালাতের বর্ণনা দ্বারা খাস করা হয়, তা হলে তো মাগরিবের তিন রাকআত সালাতের ক্ষেত্রে তাওয়ার্রুক প্রযোজ্য হয় না। অথচ বিরোধী পক্ষ এ ক্ষেত্রে ক্বিয়াস করে মাগরিবকে দুই তাশাহহুদ-বিশিষ্ট বানিয়ে তাওয়ার্রুককে জায়েয করেন। অথচ তাদের দলিল হল, চার রাকআতের হাদীস। পক্ষান্তরে তারা যদি শেষ রাকআতের ‘আম বর্ণনা দ্বারা দলিল নিতেন, তা হলে মাগরিবের তৃতীয় রাকআতের তাওয়ার্রুক করা সংগত হয়। অন্যথায় চার রাকআতে দলিল দিয়ে মাগরিবের তৃতীয় রাকআতে তাওয়ার্রুক করাটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

আবার সাত ও নয় রাকআতে বিতরের ক্ষেত্রেও দুই তাশাহহুদ রয়েছে। এ পর্যায়ে ‘যে রাকআত দ্বারা সালাত শেষ হবে’ বা ‘যে সাজদার পরে সালাম ফিরাতেন’ বাক্যগুলো দ্বারা দলিল গ্রহণ অহেতুক বিতর্ক থেকে দূরে রাখে।

ভুল ধারণা-২: ইমাম মালিক (রহ) ও মালেকিগণ হানাফিদের বিপরীতে প্রত্যেক তাশাহহুদের তাওয়ার্রুকের কথা বলেছেন। [আল-ইসতিযকার লিইবনি আব্দুল বার ৪/৪৬২, আল-মাদওয়ানাতুল কুবরা ১/২৭]

সংশোধন-২: ইমাম মালিক (রহ)-এর ছাত্র ইমাম মুহাম্মাদ (রহ) বলেন:

وبهذا نأخذ وهو قول أبي حنيفة رحمه الله - وكان مالك بن أنس يأخذ بذلك في الركعتين الأوليين وأما في الركعة الرابعة فإنه كان يقول : يفضي الرجل بأليتيه إلى الأرض ويجعل رجليه إلى الجانب الأيمن

“আমাদের এবং ইমাম আবূ হানিফারও মতামত এটাই (ইফতিরাশ পদ্ধতিতে সালাতে বসা)। ইমাম মালেক (রহ) প্রথম বৈঠকে এভাবে (ইফতিরাশ পদ্ধতিতে) বসতে বলেন, কিন্তু চার রাকআত (শেষ বৈঠকে) সম্পর্কে বলেন, নিতম্ব মাটিতে ঠেকিয়ে বসবে এবং উভয় পা ডান কাতে বের করে দেবে (অর্থাৎ তাওয়ার্রুক পদ্ধতিতে বসতে হবে)।” [মুয়াত্তা মুহাম্মাদ (আহসান পাব:, ২০০৩ ঈসায়ী) হা/১৫৪-এর শেষাংশ, পৃ. ৮৫]

সুস্পষ্ট হল, ইমাম মুহাম্মাদ (রহ) তাঁর উস্তায ইমাম মালিক (রহ) সম্পর্কে এই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, ইমাম মালিক (রহ) প্রথম তাশাহহুদে তাওয়ার্রুক পদ্ধতির বদলে বাম পায়ের উপর বসার ফাতওয়া দিয়েছেন। অর্থাৎ ইমাম শাফেঈ (রহ)-এর মতো ইমাম মালিক (রহ) থেকেও প্রথম তাশাহহুদে ইফতিরাশ পদ্ধতি এবং শেষ তাশাহহুদে তাওয়ার্রুক পদ্ধতি প্রমাণিত।

ভুল ধারণা-৩: ইমাম আহমাদ (রহ)-এর সিদ্ধান্ত হল, এমন প্রত্যেক সালাতে শেষ তাশাহহুদে তাওয়ার্রুক করতে হবে, যেখানে দুটি তাশাহহুদ রয়েছে।

সংশোধন-৩: অথচ ইমাম আহমাদ (রহ)-এর থেকে অপর একটি মত রয়েছে যে, সালাতের কোনো বৈঠকেই তাওয়ার্রুক করা যাবে না। অর্থাৎ ইমাম আবূ হানিফা (রহ)-এর মতের অনুরূপ। যেমন, হাফেয ইবনু হাজার (রহ) লিখেছেন: وَاخْتَلَفَ فِيهِ قَوْلُ أَحْمَدَ “অর্থাৎ তাওয়ার্রুকের ক্ষেত্রে ইমাম আহমাদের বিভিন্ন মত রয়েছে।” [ফতহুল বারী ২/৩০৯ (অন্য সংস্করণ: ২/৪৪০ পৃ.) - والمشهور عنه اختصاص التورك بالصلاة التي فيها تشهدان “তাঁর থেকে প্রসিদ্ধ হল, দুটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতে তাওয়ার্রুক খাস (সুনির্দিষ্ট)।”]

অপর মত সম্পর্কে সুনানে আবূ দাউদের ব্যাখ্যাকারী শামসুল হক্ব আযিমাবাদি (রহ) লিখেছেন:

لكن احمد يقول يفترش في التشهد الثاني كالأول

“কিন্তু ইমাম আহমাদ (রহ) বলেছেন, দ্বিতীয় তাশাহহুদেও প্রথম তাশাহহুদের ন্যায় ইফতিরাশ করতে হবে।” [আওনুল মা‘বুদ শরহে আবি দাউদ ৮/৯৯]

সুতরাং আরব আলেমগণ কর্তৃক ইমাম আহমাদ (রহ)-এর বক্তব্যের সমর্থনে কেবল তাঁরই একটি সিদ্ধান্তের প্রতি ঝোঁকা ও তা প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ় থাকাটা সংগত নয়।

ভুল ধারণা-৪: ইমাম শাফেঈ (রহ) কর্তৃক ‘সুনানে আবূ দাউদের’ সালাম-সম্পর্কিত দলিল থেকে প্রত্যেক সালামবিশিষ্ট তাশাহহুদে তাওয়ার্রুক করার দলিল নেয়া হয়েছে, যা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। কেননা, এক্ষেত্রে সালাম-সম্পর্কিত তাশাহহুদের দাবিও চতুর্থ রাকআত। যেভাবে অন্য হাদীসে স্পষ্ট হয়েছে।

সংশোধন-৪: যদি সাহাবী আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা)-এর হাদীস থেকে দ্বিতীয় তাশাহহুদে ‘তাওয়ার্রুক’ করার বর্ণনা থেকে এটা বাধ্যতামূলক হয় যে, কেবল দ্বিতীয় তাশাহহুদের ক্ষেত্রে সেটা খাস (সুনির্দিষ্ট)। সেক্ষেত্রে সহীহ মুসলিমে বর্ণিত তাশাহহুদের বৈঠকের শেষাংশে বর্ণিত দুআর হাদীসটিও কেবল দুইটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের জন্য হবে। পক্ষান্তরে ফজরের ন্যায় একটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের জন্য প্রযোজ্য হয় না। দুআর হাদীসটি নিম্নরূপ:

۔۔۔۔ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : " إِذَا فَرَغَ أَحَدُكُمْ مِنَ   التَّشَهُّدِ الْآخِرِ، فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللهِ مِنْ أَرْبَعٍ : مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ، وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ، وَمِنْ شَرِّ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ

“সাহাবী আবূ হুরায়রা (রা) বলেন, রসূলুল্লাহ (স) বলেছেন: যখন তোমাদের কেউ শেষ তাশাহহুদটি সম্পন্ন করে, তখন সে যেন আল্লাহ নিকট চারটি বিষয় থেকে আশ্রয় চায়- জাহান্নামের আযাব থেকে, ক্ববরের আযাব থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং মাসিহ দাজ্জালের ক্ষতি থেকে।” [সহীহ মুসলিম, মিশকাত (তাহক্বীক্ব) হা/৯৪০ (এমদাদিয়া, ২/৮৭৯)]

বুঝা যাচ্ছে, দুটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের শেষ তাশাহহুদে দুআটি পড়তে হবে। আপনারা কি সেটা করেন? কখনো না। বরং ফজরের সালাত- যেখানে একটি তাশাহহুদ, আর এক্ষেত্রে এটাই শেষ তাশাহহুদ। তাইতো আপনারাও ফজরের সালাতে দুআটি পড়ে থাকেন।

দ্বিতীয়ত, যদি দুটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের দ্বিতীয় তাশাহহুদে ‘তাওয়ার্রুক’ খাস বা সুনির্দিষ্ট হওয়ার কারণ এটা হয় যে, সাহাবী আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা)-এর হাদীসে ‘তাওয়ার্রুকের’ বর্ণনাটি দ্বিতীয় তাশাহহুদের ক্ষেত্রে বর্ণিত হয়েছে, তা হলে এটাও মানতে হবে যে-

‘ইফতিরাশ’ পদ্ধতিটিও দুই তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের মাঝামাঝিতে হওয়াটা খাস বা সুনির্দিষ্ট। অর্থাৎ ‘ইফতিরাশ’ এমন তাশাহহুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যা সালাতের মাঝামাঝিতে হয়ে থাকে। কেননা আবূ হুমায়দ (রা)-এর হাদীসের আলোকে ইফতিরাশের বর্ণনাটি সালাতের শেষাংশ বা শেষ তাশাহহুদের বসার পদ্ধতি হিসেবে প্রযোজ্য নয়।

কেউ কেউ বলেছেন: ‘তাওয়ার্রুকের’ বর্ণনাটি কেবল দুটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতে বর্ণিত হয়েছে, আর ‘তাওয়ার্রুক’ এর দ্বিতীয় তাশাহহুদে। সুতরাং ‘তাওয়ার্রুক’ কেবল দুটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের দ্বিতীয় তাশাহহুদের জন্য খাস।

এ পর্যায়ে আমরাও বলতে পারি, যে হাদীসে কেবল ‘ইফতিরাশ’-এর বিবরণ আছে, সেখানেও দুটি তাশাহহুদের বর্ণনা আছে। আর ‘ইফতিরাশ’ ঐ সালাতের মাঝামাঝি অংশে। সুতরাং ‘ইফতিরাশ’ দুই সালাতবিশিষ্ট সালাতের মধ্যবর্তী অংশে বসার পদ্ধতি, কোনো সালাতের শেষাংশে এই পদ্ধতিটি প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ এক তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের ক্ষেত্রে ‘ইফতিরাশ’ প্রযোজ্য নয়। কেননা এই তাশাহহুদটি দুটি তাশাহহুদের মাঝে নেই।

তৃতীয়ত, সাহাবী আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা)-এর হাদীসে ‘তাওয়র্রুকের’ বর্ণনাটি দ্বিতীয় তাশাহহুদের ক্ষেত্রে এসেছে। কিন্তু তাঁরই অপরাপর বর্ণনা থেকে সুস্পষ্ট হয়, দ্বিতীয় তাশাহহুদকে খাস করাটা এখানে উদ্দেশ্য নয়। বরং ‘তাওয়ার্রুকের’ দাবি শেষ বৈঠকের সাথে খাস। যেমন-

১) সহীহ বুখারীর বাক্য : … إِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ “আর যখন তিনি শেষ রাক‘আতে বসতেন।” [সহীহ বুখারী হা/৮২৮]

২) তিরমিযীর বাক্য : … حَتَّى كَانَتِ الرَّكْعَةُ الَّتِي تَنْقَضِي فِيهَا صَلَاتُهُ “এমনকি, যে রাকআতটি দ্বারা তিনি (স) তাঁর সালাত শেষ করতেন…।” [তিরমিযী হা/৩০৪]

৩) আবূ দাউদের বাক্য : … حَتَّى إِذَا كَانَتِ السَّجْدَةُ الَّتِي فِيهَا التَّسْلِيمُ “এমনকি, যখন (শেষ) সাজদা করতেন, যাতে (যে তাশাহহুদে) তিনি সালাম ফেরাতেন…।” [আবূ দাউদ হা/৭৩০]

৪) সহীহ ইবনু হিব্বানের বাক্য: … حَتَّى إِذَا كَانَتِ السَّجْدَةُ الَّتِي تَكُونُ خَاتِمَةَ الصَّلَاةِ “এমনকি, যখন (শেষ) সাজদা করতেন যা দ্বারা সালাত শেষ হতো…।” [সহীহ ইবনু হিব্বান হা/১৮৭০]

সুস্পষ্ট হয়, উপরিউক্ত বাক্যগুলো সালাতের সমাপ্তি বা শেষ বৈঠকের ক্ষেত্রেই বিশেষভাবে খাস। হাদীসগুলোর দাবি দ্বিতীয় তাশাহহুদে বসার পদ্ধতি বর্ণনা করা উদ্দেশ্য নয়, বরং সালাতের সমাপ্তি বা শেষ বৈঠক বর্ণনা করা উদ্দেশ্য।

চতুর্থত, সালাত সমাপ্ত করার বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে- একটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাত সাহাবী আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা) বর্ণিত দুটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের দ্বিতীয় বা শেষ তাশাহহুদের পদ্ধতির অনুরূপ। পক্ষান্তরে বর্ণনাটির প্রথম তাশাহহুদের সাথে একটি তাশাহহুদ দ্বারা সালাত সমাপ্ত করার বৈঠকটির সাদৃশ্য নেই।

ভুল ধারণা-৫: সুনানের আবূ দাউদের (হা/৭৩১) বর্ণনাতে সাহাবী আবূ হুমায়দ (রা)-এর শব্দগুলো হলো: فإذا كان في الرابعة أفضى بوركه “আর যখন তিনি চতুর্থ রাকআতে থাকতেন তখন তাওয়ার্রুক করতেন।”

অনুরূপ কিতাবুল উম্ম (১/১০১), মুসনাদে শাফেঈ (পৃ. ৫৯, হা/২৭৭)-এর শব্দগুলো হলো: فإذا جلس في الأربع “যখন চতুর্থ বৈঠকে বসতেন।” [উর্দু সংস্করণ: হা/২৫৫]

এই বর্ণনাগুলো থেকে ‘একটি হাদীস অপর হাদীসের ব্যাখ্যা’ নীতিমালার আলোকে এটাই সুস্পষ্ট হয় যে, ‘তাওয়ার্রুক’ চতুর্থ রাকআতে হবে। ইমাম আহমাদ (রহ) ও অন্যরা এভাবেই দলিল গ্রহণ করেছেন।

সংশোধন-৫: সহীহ বুখারীতে الركعة الآخرة ‘শেষ রাকআত’ বাক্যটি এসেছে। ফলে আবূ দাউদ ও অন্য বর্ণনাতে ‘চার রাকআতের’ বর্ণনার দাবিও মূলত ‘শেষ রাকআতের’ দাবির সাথে যুক্ত। মূলত এখানে ‘শেষ রাকআত’-ই মৌলিক, ‘চার রাকআত’ কেবলই বর্ণনামূলক। কেননা, মাগরিবের সালাত তিনি রাকআত-বিশিষ্ট। ‘চার রাকআত’ বাক্যকে এখানে মৌলিক গণ্য করলে মাগরিবের সালাতে দুটি তাশাহহুদ থাকা সত্ত্বেও সেখানে ‘তাওয়ার্রুক’ করা যাচ্ছে না। পক্ষান্তরে সহীহ বুখারীর ‘শেষ রাকআত’ শব্দকে মৌলিক গণ্য করলে মাগরিব ও ফজর উভয় সালাতে ‘তাওয়ার্রুক’ করা যাচ্ছে।

ভুল ধারণা-৬: ইমাম শাফেঈ (রহ)-এর সিদ্ধান্তটি দুর্বল হওয়ার কারণ হল, সাহাবী আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা) বর্ণিত সংক্ষিপ্ত হাদীসে প্রথম তাশাহহুদের বর্ণানাটি উহ্য রেখে দ্বিতীয় তাশাহহুদের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এর দ্বারা ইমাম শাফেঈ (রহ) ও অন্যরা সালামবিশিষ্ট তাশাহহুদে ‘তাওয়ার্রুকের’ দাবিকে ‘আমভাবে প্রযোজ্য করেছেন। অথচ ঘটনা সেটা নয়।

সংশোধন-৬: ইমাম শাফেঈ (রহ) সম্পর্কে মন্তব্যটি অসংগত। কেননা ইমাম শাফেঈ (রহ) বিস্তারিত দলিল ছেড়ে সংক্ষিপ্ত দলিল দ্বারা বিষয়টি ভুল বুঝেছেন- এটা অসম্ভব। আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা) বর্ণিত ‘চার রাকআতে’র বর্ণনার সাথে সাথে তাঁরই বর্ণিত অন্যান্য বাক্য:

ক) যে রাকআত দ্বারা সালাত শেষ করতেন,

খ) যে সাজদার পর সালাম ফিরাতেন,

গ) যখন শেষ রাকআতে বসতেন-

প্রভৃতি বাক্যগুলো ‘চার রাকআত’-কে সালাতের সর্বশেষ অবস্থা বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন- সালাত শুরু করার ক্ষেত্রে ঐ আবূ হুমায়দ (রা) থেকে একই হাদীসে বর্ণিত হয়েছে: إِذَا كَبَّرَ جَعَلَ يَدَيْهِ حِذَاءَ مَنْكِبَيْهِ “যখন তাকবির দিতেন তখন কাঁধ পর্যন্ত হাত তুলতেন।” [সহীহ বুখারী হা/৮২৮]

এখন প্রশ্ন হল, তাকবীরে তাহরিমার এই পদ্ধতিটি কি কেবল চার রাকআতবিশিষ্ট সালাতের জন্য খাস হবে? কেননা বর্ণিত হাদীসে চার রাকআতে বর্ণনা আছে। ঐ একই হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:

وَإِذَا جَلَسَ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ قَدَّمَ رِجْلَهُ الْيُسْرَى وَنَصَبَ الْأُخْرَى وَقَعَدَ عَلَى مَقْعَدَتِهِ

“আর যখন তিনি শেষ রাকআতে বসতেন তখন বাম পা এগিয়ে দিয়ে অপর (ডান) পা খাড়া করে নিতম্বের উপর বসতেন।” [সহীহ বুখারী হা/৮২৮]

এই হাদীসটিতে উল্লিখিত ‘শেষ রাকআত’ বাক্যটি প্রমাণ করে, যেকোনো রাকআত সংখ্যার সালাতের ‘শেষ রাকআতের’ ক্ষেত্রে বাক্যটি প্রযোজ্য। যেভাবে ‘তাকবিরে তাহরিমার’ বর্ণনাটিও সালাত শুরুর পদ্ধতিমাত্রই গ্রহণযোগ্য, তার রাকআত সংখ্যা যা-ই হোক না কেন।

ভুল ধারণা-৭: এ কারণে হাফেয ইবনু ক্বাইয়েম (রহ) ইমাম শাফেঈ (রহ)-এর মতটি খণ্ডনে লিখেছেন:

فھذا السیاق ظاھر في اختصاص ھذا الجلوس بالتشھد الثاني

“হাদীসের ধারাবাহিকতা থেকে সুস্পষ্ট হয়, এই (তাওয়ার্রুক) পদ্ধতিটি দ্বিতীয় তাশাহহুদের ক্ষেত্রে খাস (সুনির্দিষ্ট)।” [যাদুল মা‘আদ ১/৪৫৪ পৃ.]

অর্থাৎ তৃতীয় ও চতুর্থ রাকআতের ক্ষেত্রেই কেবল ‘তাওয়ার্রুক’ পদ্ধতিটি প্রযোজ্য।

সংশোধন-৭: হাদীসের ধারাবাহিকতা থেকে আমরাও এটা বুঝি যে,

১) ‘ইফতিরাশ’ (বাম পায়ের উপর বসার) পদ্ধতিটি ঐ তাশাহহুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যেখানে সালাত শেষ হয় না বরং পুনরায় দাঁড়িয়ে তৃতীয়/ চতুর্থ প্রভৃতি রাকআত পূর্ণ করতে হয়।

২) হাদীসটির ধারাবাহিকতায় তৃতীয় রাকআতে বসার পদ্ধতি বর্ণিত হয়নি। যদি চার রাকআতের বর্ণনা দ্বারা ঐ রাকআতের সাথে ‘তাওয়ার্রুক’ খাস হয়, তা হলে সেটা কীভাবে তৃতীয় রাকআতের জন্য প্রযোজ্য হবে? পক্ষান্তরে যে হাদীসে শেষ রাকআতে ‘তাওয়ার্রুক’ করার বর্ণনা এসেছে, সেটাকে মৌলিক দলিল গণ্য করলে চতুর্থ রাকআতসহ দুই/তিন প্রভৃতি রাকআতের সালাতের ক্ষেত্রেও ‘তাওয়ার্রুক’ পদ্ধতিটি প্রযোজ্য হয়। কেননা আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা)-এর বর্ণিত হাদীসে এটাও আছে: ক) যে সাজদার পর সালাম ফেরাতেন, খ) যে রাকআত শেষ করতেন- এই শব্দগুলোরও শরিয়াতি গুরুত্ব রয়েছে।

৩) যদি বলা হয়, এখানে ‘চার রাকআত’ নয় বরং ‘দুটি তাশাহহুদ’ হওয়াকে মূল্যায়ন করতে হবে। তখন মাগরিবের ন্যায় তিন রাকআতবিশিষ্ট সালাতের ক্ষেত্রেও ‘ইফতিরাশ’ পদ্ধতিটি প্রয়োগযোগ্য হয়। অথচ সাহাবী আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা)-এর হাদীসে তিন রাকআতে বৈঠকের বর্ণনা নেই। তা ছাড়া তাঁর (রা) হাদীসে দুই রাকআত, চার রাকআত, শেষ রাকআত, শেষ সালাম বাক্যগুলো ব্যবহৃত হলেও ‘একটি/দুটি তাশাহহুদ’ বাক্যগুলো ব্যবহৃত হয়নি। এ থেকে বুঝা যায়, ‘একটি/দুটি তাশাহহুদ’ দ্বারা রসূলুল্লাহ (স)-এর বৈঠকের পদ্ধতি বর্ণনা করা তাঁর (রা) উদ্দেশ্য না। বরং দুই রাকআত, চার রাকআত, শেষ রাকআত, শেষ সালাম বাক্যগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে বৈঠকের পদ্ধতি বর্ণনা করাই উদ্দেশ্য।

৪) যে নীতির ভিত্তিতে হাফেয ইবনু ক্বাইয়েম (রহ) ‘তাওয়ার্রুক’-কে দ্বিতীয় তাশাহহুদের জন্য খাস করেছেন, ঐ একই নীতির আলোকে তিনি প্রথম তাশাহহুদে দরুদ ও দুআ পাঠকে অস্বীকার করেছেন। তিনি (রহ) লিখেছেন:

ولم يُنقل عنه في حديث قطُّ أنه صلى عليه وعلى آله في هذا التشهد، ولا كان أيضاً يستعيذُ فيه مِن عذاب القبر وعذابِ النَّار، وفِتنة المحيا والممات، وفِتنةِ المسيح الدَّجال، ومن استحبَّ ذلك، فإنما فهمه من عمومات وإطلاقات قد صح تبيينُ موضعها، وتقييدُها بالتشهد الأخير .

“নবী (স) থেকে এমন কোনো হাদীস নেই, যেখানে তিনি (স) এই তাশাহহুদে নিজের প্রতি বা তাঁর পরিবারের প্রতি দরুদ পড়ার কথা বলেছেন। তা ছাড়া এ তাশাহহুদে তিনি জান্নাত কামনা এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার দুআও করতেন না। জীবনে ও মরণে ফিতনা থেকে মুক্ত থাকা এবং দাজ্জালের বিপদ থেকে মুক্তি লাভের কামনাও এতে করতেন না। যারা এসব মুস্তাহাব মনে করেন, তারা ‘আম ও পরিপূরক দাবি থেকে এটা মনে করেন এবং শেষ তাশাহহুদে তা বলাটা সীমাবদ্ধ করেন।” [যাদুল মাআদ ১/২৩২ পৃ.]

অথচ দুই তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের উভয় তাশাহহুদে দরুদ ও দুআ পড়ার নিয়ম রয়েছে। [. বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন: সালাহুদ্দিন ইউসুফ, তাফসিরে আহসানুল বায়ান, সূরা আহযাবের ৫৬ নং আয়াতের তাফসির দ্র:।] এ মর্মে আয়েশা (রা) নয় রাকআত বিতর সালাতের বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন:

كَانَ رَسُولُ اللَّهِ إِذَا أَوْتَرَ بِتِسْعِ رَكَعَاتٍ لَمْ يَقْعُدْ إِلَّا فِي الثَّامِنَةِ، فَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيَذْكُرُهُ وَيَدْعُو، ثُمَّ يَنْهَضُ وَلَا يُسَلِّمُ، ثُمَّ يُصَلِّي التَّاسِعَةَ، فَيَجْلِسُ فَيَذْكُرُ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ وَيَدْعُو، ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمَةً يُسْمِعُنَا،

“রসূলুল্লাহ (স) যখন নয় রাকআত বিতর দ্বারা বিজোড় করতেন কেবলমাত্র অষ্টম রাকআতেই বসতেন এবং আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও যিকির করতেন এবং দুআ করতেন। তারপর উঠে দাঁড়াতেন এবং সালাম ফিরাতেন না। অতঃপর নবম রাকআত আদায় করে বসে যেতেন এবং আল্লাহর যিকর ও দুআ করতেন। তারপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন, যা আমরা শুনতে পেতাম।” [নাসাঈ হা/১৭১৯- শায়েখ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন]

নাসাঈর পরবর্তী বর্ণনাতে (হা/১৭২০) আছে:

لَا يَجْلِسُ فِيهِنَّ إِلَّا عِنْدَ الثَّامِنَةِ، وَيَحْمَدُ اللَّهَ، وَيُصَلِّي عَلَى نَبِيِّهِ وَيَدْعُو بَيْنَهُنَّ، وَلَا يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا، ثُمَّ يُصَلِّي التَّاسِعَةَ وَيَقْعُدُ ـ وَذَكَرَ كَلِمَةً نَحْوَهَا ـ وَيَحْمَدُ اللَّهَ وَيُصَلِّي عَلَى نَبِيِّهِ ، وَيَدْعُو ثُمَّ يُسَلِّمُ تَسْلِيمًا يُسْمِعُنَا

“তিনি (নয় রাকআতের) অষ্টম রাকআত ছাড়া কোথাও বসতেন না। (বসে) তিনি আল্লাহর প্রশংসা করতেন, তাঁর নবী (স)-এর প্রতি দরুদ পড়তেন এবং দুআ করতেন। তারপর উঠে যেতেন, সালাম ফিরাতেন না। এরপর নবম রাকআত আদায় করতেন এবং বসে যেতেন, (বসে) তিনি প্রশংসা করতেন, তাঁর নবী (স)-এর প্রতি দরুদ পড়তে এবং দুআ করতেন। তারপর এমনভাবে সালাম ফিরাতেন যা আমরা শুনতে পেতাম।” [নাসাঈ হা/১৭২০- শায়েখ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন]

বিতর ছাড়াও এক্ষেত্রে নবী (স)-এর নির্দেশমূলক হাদীস রয়েছে, যা সব সালাতের ক্ষেত্রেই ‘আমভাবে প্রযোজ্য। যেমন, তিনি (স) বলেছেন:

إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ، فَلْيَبْدَأْ بِتَمْجِيدِ رَبِّهِ جَلَّ وَعَزَّ، وَالثَّنَاءِ عَلَيْهِ، ثُمَّ يُصَلِّي عَلَى النَّبِيِّ ، ثُمَّ يَدْعُو بَعْدُ بِمَا شَاءَ

“তোমাদের কেউ সালাত আদায়কালে যেন সর্বপ্রথম তার রবের হামদ ও সানা বর্ণনা করে। এরপর তাঁর নবী (স)-এর প্রতি দরুদ পড়বে। অতঃপর ইচ্ছানুযায়ী দুআ করবে।” [আবূ দাউদ হা/১৪৮১; শায়েখ আলবানী হাদীসটিকে ‘সহীহ’ ও শায়েখ যুবায়ের আলী যাঈ তাঁদের স্ব স্ব তাহক্বীক্ব আবূ দাউদে হাদীসটিকে ‘হাসান’ বলেছেন।]

বুঝা যাচ্ছে, হাফেয ইবনু ক্বাইয়েম (রহ) যেহেতু প্রথম তাশাহহুদকে দ্বিতীয় তাশাহহুদ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক গণ্য করেছেন, এ কারণে তাঁর উসূলের আলোকে ফজরের সালাতের ন্যায় এক তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতের ক্ষেত্রে সালাম পূর্ব বৈঠকে কেবল তাশাহহুদ পড়তে হবে এবং দুরুদ ও দুআ পড়া যাবে না। কেননা তিনি একটি তাশাহহুদবিশিষ্ট সালাতে ‘ইফতিরাশ’ পদ্ধতিটি এখানে প্রযোজ্য করেছেন, যা তাঁর উক্ত নীতি মোতাবেক দরুদ ও দুআহীন হতে হবে।

আমরা লক্ষ করলাম, দুই তাশাহহুদ-বিশিষ্ট বিতরের সালাতের উভয় বৈঠকে নবী (স) তাশাহহুদের সাথে সাথে দুরুদ ও দুআ পাঠ করেছেন। এ কারণে ইমাম শওকানি (রহ) হাফেয ইবনু ক্বাইয়েমের (রহ) মতকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন:

والتفصيل الذي ذهب إليه أحمد يرده قول أبي حميد في حديثه الآتي فإذا جلس في الركعة الأخيرة . وفي رواية لأبي داود حتى إذا كانت السجدة التي فيها التسليم . وقد اعتذر ابن القيم عن ذلك بما لا طائل تحته۔

“ইমাম আহমাদ (রহ) এক্ষেত্রে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা আবূ হুমায়দের বক্তব্য দ্বারা খণ্ডন হয়। তাঁর হাদীসে এসেছে, ‘যখন রসূলুল্লাহ (স) শেষ রাকআতে বসতেন’। আর আবূ দাউদের বর্ণনাতে আছে, ‘যখন তিনি (স) ঐ সাজদাতে থাকতেন যেখানে (পরে) সালাম রয়েছে’। আর এক্ষেত্রে ইবনু ক্বাইয়েম (রহ) যে অজুহাত পেশ করেছেন তাতে কোনো ফায়দা নেই।” [নায়লুল আওতার ২/৩০৬]

ভুল ধারণা-৮: প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ) তাঁর ‘সিফাতুস সালাতিন নাবিয়্যি’-এ এবং শায়েখ মুহাম্মাদ উমার বাযমুল তাঁর ‘জুযউ হাদীস আবি হুমায়দ সাঈদি ফি সিফাতে সালাতুন নাবিয়্যি (স)’-তে আবূ হুমায়দ সাঈদি (রা)-এর হাদীস সম্পর্কে বলেছেন: তাঁর হাদীস থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে, তাওয়ার্রুক তিন বা চার রাকআতবিশিষ্ট সালাতের দ্বিতীয় তাশাহহুদে করতে হবে। এ কারণে ইমাম ইবনু ক্বাইয়েম (রহ) ও অন্য মুহাদ্দিসগণের ব্যাখ্যার পর এটা সুস্পষ্ট হয় যে, এই মাসআলাটিতে ইমাম শাফেঈ (রহ)-এর মতটি অগ্রহণযোগ্য। আর হাদীসটির সহীহ অর্থ সেটাই, যা হাফেয ইবনু ক্বাইয়েম, রহমানি ও শায়েখ আলবানী (রহ) প্রমুখ উল্লেখ করেছেন।

সংশোধন-৮: উক্ত শায়েখদের বিশ্লেষণ মৌলিক দলিল থেকে ভিন্ন দিকে যাওয়ায়- তা অগ্রহণযোগ্য। এ কারণে সহীহ সিদ্ধান্ত সেটাই, যা নিম্নলিখিত আলেমদের উপস্থাপনাতে রয়েছে, তথা শেষ বৈঠক হলেই তাতে তাওয়ার্রুক করতে হবে:

১) উসূলে ফিক্বাহর উদ্ভাবক ইমাম শাফেঈ (রহ),

২) ইমাম দারুল হিজরাত (মদীনা) ইমাম মালেক (রহ)- তাঁর সম্পর্কে প্রসিদ্ধ রয়েছে তিনি উভয় তাশাহহুদ বা বৈঠকেই ‘তাওয়ার্রুক’ করার মত দিয়েছেন। অথচ কিছু পূর্বে তাঁর ছাত্র ইমাম মুহাম্মাদ (রহ) থেকে আমরা জেনেছি, তাঁর মতটি ইমাম শাফেঈ (রহ)-এর মতের অনুরূপ।

৩) সুনানে নাসাঈর সংকলক ইমাম নাসাঈ (রহ),

৪) সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাকারী ইমাম নাওয়াবি (রহ), (প্রসিদ্ধ বাংলা: ইমাম নববী)

৫) নায়লুল আওতারের লেখক ইমাম শওকানি (রহ),

৬) সুনানে তিরমিযীর ব্যাখ্যাকারী আব্দুর রহমান মুবারকপুরী (রহ),

৭) ‘আল-লামহাতে’র লেখক মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ রইস নদভী (রহ),

৮) সহীহ বুখারী উর্দু অনুবাদক- দাউদ রায (রহ),

৯) আনওয়ার মাসাবিহের লেখক নাযির আহমাদ আমলাভী (রহ),

১০) মুহাম্মাদিয়াতের লেখক মুহাম্মাদ জুনাগঢ়ী (রহ), প্রমুখ।

উপরিউক্ত শায়েখদের উদ্ধৃতিগুলোর জন্য দেখুন শায়েখ কিফায়াতুল্লাহ সানাবালির دفع الشبهات عن مشروعية التورك في جميع الصلوات (দাফউশ শুবহাত আন মাশরুয়িয়্যাতুত তাওয়ার্রুক ফি জামিয়িস সালাত)।

ভুল ধারণা-৯: ইমাম ইবনু কাসির (রহ)-এর ‘মুসনাদে ফারুকে’ (১/৬৬১)-এ নবী (স)-এর সাথে সম্পর্কিত সালামবিশিষ্ট তাশাহহুদে তাওয়ার্রুক করার বর্ণনাটিও অভিযুক্ত। কেননা, আবূ বকর (রা)-এর গোলাম আব্দুল্লাহ বিন ক্বাসেম মাজহুল রাবী। যদিও হাফেয ইবনু হিব্বান (রহ) ‘কিতাবুস সিক্বাতে’ (৫/৬৪) উল্লেখ করেছেন। এই নিয়মটি প্রসিদ্ধ যে, হাফেয সাহেব এ ধরনের মাজহুল রাবীদেরকে নিজের কিতাবের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ কারণেটি হাদীস আব্দুল্লাহ বিন ক্বাসেমের জাহালাতের কারণে যঈফ।

সংশোধন-৯: আব্দুল্লাহ বিন ক্বাসেমকে মাজহুল বলাটা খুবই আজব ও দুর্বল উপস্থাপনা। আমরা নিচে তাঁর সমর্থনে মুহাদ্দিসগণের তাওসিক্ব পেশ করছি:

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন