মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইসলামের দৃষ্টিতে দুর্নীতি প্রতিরোধ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
লেখকঃ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম
২২
প্রথমত: প্রতিরোধমূলক:
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/198/22
ইসলাম দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য শুমুমাত্র শাস্তির ব্যবস্থা করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং কেউ যেন দুর্নীতি করতে না পারে সেজন্য যুগোপযোগী ও কার্যকরী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। এসম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো
ইবাদাত:
সমাজ থেকে দুর্নীতি দূরীভূত করার জন্য প্রয়োজন সৎ, যোগ্য ও নির্ভীক ব্যক্তি। যারা কোন মানুষের বা শাসনদন্ডের ভয়ে নয় বরং মহান আল্লাহ তা‘আলার ভয় ও ভালাবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যাবতীয় দুর্নীতি প্রতিরোধ করবে। আল্লাহ তা‘আলা মুসলমানদের সে লক্ষ্যে গড়ে তোলার জন্য তাদের উপর কতকগুলো মৌলিক ইবাদাত ফরয করেছেন। যেমন, সালাত, সাওম, হজ্জ ও যাকাত প্রভৃতি। এ সকল ইবাদাতের মাধ্যমে মানুষ প্রকৃত পক্ষেই আদর্শ মানুষে পরিণত হয়। যেমন, সালাত বা নামাযের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেছেন :
‘‘তোমাদের উপর সাওম বা রোযা ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা খোদাভীরু হতে পার।’’ [আল-কুরআন, ২: ১৮৩।](সূরা আল বাকারাহ: ১৮৩)
আর খোদাভীরু ব্যক্তি অবশ্যই দুর্নীতিমূলক কাজ হতে দূরে থাকবে। কাজেই নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, ‘‘ ইবাদাতের মাধ্যমে দুর্নীতির মত অপকর্ম হতে বিরত থাকার মানসিকতা গড়ে তোলা যায়। মানুষকে দুর্নীতি হতে দূরে রাখার জন্য ইবাদাত পালন এক অমোগ ও অব্যর্থ অস্ত্র।
আখিরাতের চেতনা:
দুনিয়ার জীবনই মানুষের শেষ নয় বরং মৃত্যর পর মানুষকে আখিরাতের অনন্ত জীবনে প্রবেশ করতে হবে। সেদিন তাকে আল্লাহ তা‘আলার দরবারে দুনিয়ার জীবনের প্রতিটি কর্মের হিসাব দিতে হবে। মূলত আখিরাতের চেতনা মানুষের জীবনে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে থাকে। যে ব্যক্তি আখিরাতে সত্যিকার বিশ্বাস করে সে কখনও দুর্নীতি করতে পারে না। কেননা মানুষ পৃথিবীতে দীর্ঘদিন ভোগ-বিলাসে আকণ্ঠ নিমগ্ন থাকার জন্য দুর্নীতি করে থাকে। এক্ষেত্রে ইসলাম ঘোষণা করেছে, মানুষের দুনিয়ার জীবন হচ্ছে অতি সংক্ষিপ্ত এবং আখিরাতই হচ্ছে অনন্ত জীবন। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে:
‘‘বরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে বেশী প্রধান্য দিচ্ছ। অথচ আখিরাত সর্বোত্তম এবং চিরস্থায়ী’’ [আল-কুরআন, ৮৭: ১৬-১৭।](সূরা আল আ‘লা: ১৬-১৭ )
এ সম্পর্কে নবী (স) বলেছেন, «الدنيا سجن للمؤمن وجنة للكافر»
‘‘দুনিয়া মুমিনদের জন্য জেলখানা স্বরূপ, আর কাফিরদের জন্য স্বর্গ। [ইমাম মুসলিম, আস- সহীহ, ২য় খন্ড (দেওবন্দ : মাতবা‘উ আসাহ-হিল মাতাবে‘আ, তা. বি.), পৃ. ৪০৭।]
এ চেতনা যখন মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হবে, তখন সে অবশ্যই দুর্নীতি থেকে বিরত থাকবে।
হালাল হারামের দিক-নির্দেশনা :
দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য জনগণকে হালাল-হারামের দিক নির্দেশনামূলক শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে। এ জন্য ইসলাম হালাল বা বৈধ বিষয় উপার্জনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে এবং হারাম উপার্জন বর্জন করার নির্দেশ দিয়েছে, এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘‘আল্লাহ তোমাদের হালাল এবং পবিত্র যা দিয়েছেন তা হতে তোমরা আহার কর এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর , যদি তোমরা কেবল তারই ইবাদত কর।’’ [আল-কুরআন, ১৬ : ১১৪।](সূরা আন নাহল:১১৪ )
এ সম্পর্কে হাদীছে বর্ণিত হয়েছে :
«الرجل يطيل السفر اشعث اغبر يمد يديه إلى السماء ويقول يا رب ومطعمه حرام ومشربه حرام وملبسه حرام وغذى بالحرام فأنى يستجاب لذلك»
‘‘মহানবী (সঃ) বলেন, এক ব্যক্তি দীর্ঘ পথ সফর করল। তার মাথার চুল এলোমেলো, উস্কো-খুস্কো, পদযুগল ধুলা-মলিন। সে তার হাত দু‘টি উপরের দিকে তুলে বার বার দু‘আ করে, আল্লাহ! আল্লাহ! কিন্তু তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিচ্ছদ হারাম, হারাম খাদ্যে সে লালিত-পালিত হয়েছে। এ রূপ ব্যক্তির দু‘আ আল্লাহর কাছে কিভাবে কবুল হতে পারে? [ইমাম মুসলিম, আস- সহীহ, ২য় খন্ড (দেওবন্দ : মাতবা‘উ আসাহ-হিল মাতাবে‘আ, তা. বি.), পৃ. ৩২৬।]
নিবর্তনমূলকঃ
সৎকাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। সমাজের কোথাও দুর্নীতিসহ অন্যান্য অপরাধ-অপকর্ম সংঘটিত হতে দেখলে, তখন প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য ব্যক্তিগতভাবে বা সমষ্টিগতভাবে তা বন্ধ করার চেষ্টা করা। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে:
‘‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, যাদের আবির্ভাব ঘটেছে মানুষের জন্য, তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অন্যায় ও দুর্নীতিমূলক কাজসমূহ প্রতিরোধ করবে। আর আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ঈমান আনবে।’’ [আল-কুরআন, ৩ : ১১০।](সূরা আলে ইমরান :১১০ )
মহানবী (সঃ) অন্যায় কাজ বন্ধের জন্য ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত উভয় পন্থা প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন। এ সম্পর্কে মহানবী (সঃ) বলেন :
«من رأى منكم منكرا فليغيره بيده فإن لم يستطع فبلسانه فإن لم يستطع فبقلبه وذلك أضعف الإيمان»
‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ অন্যায় ও দুর্নীতি সংঘটিত হতে দেখলে, সে যেন উহা শক্তি প্রয়োগে প্রতিহত করে। তাতে সক্ষম না হলে সে সদুপদেশ বা কথার মাধ্যমে প্রতিবিধান করবে। তাতেও সক্ষম না হলে সে যেন আন্তরিকভাবে ঘৃণা করে। আর এটা হলো দুর্বলতম ঈমানের লক্ষণ।’’ [ইমাম মুসলিম, আস- সহীহ, ১ম খন্ড, পৃ. ৫০-৫১।]
সংশোধনমূলকঃ
আল্লাহ তা‘আলার হক [হককুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার হক। আল্লাহ ত‘আলার হক বা অধিকার বলতে বুঝায়, আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে তাঁর ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং মানুষের কর্তব্য হচ্ছে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ তা‘আলার হুকুম মেনে চলা। এজন্য ঈমান আনয়নের পর নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত প্রভৃতি ইবাদাত আদায়ের পাশাপাশি আল্লাহর সাথে শরীক না করা, দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা, শোকর করা প্রভৃতি নিষ্ঠার সাথে পালন করা কর্তব্য। দ্রষ্টব্য : মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম, নৈতিকতা ও মানসিক মূল্যবোধের ধারণা (ঢাকা : আজিজিয়া বুক ডিপো, ২০০৭ খৃ.), পৃ. ১৫০-১৫৮।] সংক্রান্ত ব্যাপারে অপরাধের জন্য অপরাধী তাওবা করলে তার শাস্তি প্রদান করা ইসলামের নীতি নয়। বরং অপরাধী তাওবা করলে তার শাস্তি প্রদান করা ইসলামের নীতি নয়। বরং অপরাধী যদি তার ভুল বুঝতে পেরে অনুশোচনা করে এবং খালিস নিয়তে আল্লাহ তা‘আলার নিকট তাওবা করে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ক্ষমা করে দেন। ফলে সে সংশোধিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে। [আব্দুল কাদির ‘আওদাহ’ আত-তাশরী‘উল জানাইল ইসলামী, ১ম খন্ড ১ম ভাগ (বৈরুত : মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ, ১৯৯৮ খৃ.) পৃ. ৪৮৯-৫০৫। সম্পাদনা পরিষদ, দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০০৪ খৃ.), পৃ, ৪৫৭-৪৫৮।]
মানুষের অধিকার বিষয়কঃ
দুর্নীতির মাধ্যমে যে সমস্ত অপরাধ সংঘটিত হয় তার অধিকাংশই মানুষের অধিকার বিষয়ক। যেমন, যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান, প্রমোশন প্রদান, সুযোগ-সুবিধা, স্বজনপ্রীতি ও অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ ইত্যাদি। মানুষের অধিকার যথাযথ প্রদানের নির্দেশ দিয়ে আল-কুর‘আনে বর্ণিত হয়েছে,
দুর্নীতির কারণ সম্পর্কে গবেষণায় দেখা গেছে, সম্পদের মোহ এবং উচ্চাভিলাষী জীবন-যাপনই দুর্নীতির অন্যতম প্রধান কারণ। মানুষ মৃত্যুর কথা এবং আখিরাতকে ভুলে দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এজন্য আল-কুরআনে বারবার মৃত্যু ও আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে বলা হয়েছে,
‘‘তোমরা তোমাদের প্রভুর পথে প্রজ্ঞার সাথে এবং উত্তম উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর। আর উৎকৃষ্ট যুক্তি প্রয়োগে তাদের মোকাবিলা কর।’’ [আল-কুরআন, ১৬ : ১২৫।](সূরা আন নাহল: ১২৫)
আল্লাহর পথে ব্যয়ে উৎসাহঃ
সম্পদের মোহ মানুষের স্বভাবজাত। এ মোহ সীমা অতিক্রম করলে অন্তর কলুষিত হয়ে পড়ে। ফলে সে অবৈধ সম্পদ অর্জনে ঝুঁকে পড়ে। অন্যদিকে আল্লাহর পথে ব্যয় করার প্রবণতা অর্থের মোহ দূরীভূত হয়ে আখিরাত কেন্দ্রীক জীবন-চেতনা বৃদ্ধি পায়। ফলে অবৈধ সম্পদের লিপ্সা দূরীভূত হয়ে দুর্নীতির মোহ কেটে যায়। এজন্য আল-কুরআন ও হাদীসে আল্লাহর পথে ব্যয় করার জন্য বিভিন্নভাবে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
‘‘যারা সোনা-রূপা জমা করে এবং আল্লাহর রাস্তায় তা খরচ করে না, তাদের আপনি যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সংবাদ দিন। সেদিন ধন-সম্পদ জাহান্নামের আগুনে গরম করা হবে। অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপাল, পাঁজর আর পিঠে দাগ দেয়া হবে। তোমরা যা কিছু নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে এ গুলো তো সেসব ধন-সম্পদ। সুতরাং তোমরা যা কিছু জমা করে রেখেছিলে এখন তার স্বাদ গ্রহণ কর।’’ [আল-কুরআন, ৯ : ৩৪-৩৫।](সূরা আত তাওবা:৩৩-৩৪)
বিত্তহীনদের মর্যাদা দানঃ
মানুষ দ্রুত বিত্তের অধিকারী হওয়ার জন্য সাধারণত দুর্নীতি করে থাকে। কিন্তু মহানবী (সঃ) বিত্তশালীর চেয়ে বিত্তহীনের বেশী গুরুত্ব প্রদান করেছেন। যেমন তিনি (সা.) বলেন,
«إن الفقراء المؤمنين يدخلون الجنة قبل أغنياءهم بنصف يوم خمس مائة عام»
‘‘বিত্তহীনেরা বিত্তশালীদের চেয়ে পাঁচশত বছর পূর্বে বেহেশতে প্রবেশ করবে।’’ [ইবন মাজাহ, আস-সুনান, ৪র্থ খন্ড, পৃ. ৪৭৬।]
ইসলামের দৃষ্টিতে মর্যাদার মাপকাঠি অর্থবিত্ত নয় বরং ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে যে যতবেশী তাকওয়া সম্পন্ন বা খোদাভীরু, সে ততবেশী মর্যাদাবান। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে সেই আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত যে অধিক তাকওয়ার অধিকারী।’’ [আল-কুরআন, ৪৯ : ১৩।]( সূরা আল হুজরাত:১৩)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/198/22
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।