hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের দৃষ্টিতে দুর্নীতি প্রতিরোধ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

লেখকঃ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম

ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে দুর্নীতিঃ
মানব সভ্যতায় কবে, কোথায় এবং কার মাধ্যমে দুর্নীতির অনুপ্রবেশ ঘটে তা একটি বিচার্য বিষয় এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলার মত কোন দালীলিক প্রমাণ নেই। তবে ধারণা করা হয় যে, দুর্নীতি কোন সাম্প্রতিক বিষয় নয়, যদিও এ মুহূর্তে ব্যাপকতার কারণে বিষয়টি বহুল আলোচিত। ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, সাধারণ গণ সমর্থনহীন শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের সময় এবং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর মাধ্যমে দুর্নীতি করে থাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের দুর্নীতির সবচেয়ে বেশি প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই ইংরেজ কোম্পানী তাদের এদেশীয় দোসরদের সাথে দুর্নীতির মাধ্যমে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। তারা এদেশীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করে নিজেদের অর্থ যাতে বাড়ে; সে জন্য বিনাশুল্কে ব্যবসা করার জন্য বহু ব্যক্তিকে অসঙ্গতভাবে দস্তক [দস্তক : বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার অধিকারকে ‘‘দস্তক’’ বলা হয়। দ্রষ্টব্য: মেসবাহুল হক, পলাশী যুদ্ধোত্তর মুসলিম সমাজ ও নীল বিদ্রোহ (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ১৯৮৭), পৃ. ৫।] ব্যবহার করতে দিত।

বাংলার শেষ স্বাধীন নবার সিরাজ-উদ-দৌলাকে সিংহাসনচ্যুত করার জন্য সেনাপতি মীর জা‘ফরসহ অসংখ্য নবাব কর্মচারী দুর্নীতির মাধ্যমে ইংরেজদের সাথে হাত মেলায়। অবশ্য ইংরেজরা পূর্ব থেকেই দুর্নীতিতে অভ্যস্থ ছিল। এজন্য তার ‘‘শঠে শঠাং’’ নীতিবাক্য অনুসরণ করে নবাব কর্মচারীদের সাথে জাল চুক্তিনামা করে চরমভাবে প্রতারিত করে। ক্লাইভ ও অন্যান্য ইংরেজ কর্মচারী বাংলার ধনদৌলত লুট করার যে বন্দোবস্ত করল, তা দেখে কারও বুঝতে বাকী রইল না যে কারা প্রকৃত দুর্নীতিবাজ। স্বদেশী ও বিদেশী দুর্নীতিবাজদের দল একত্রিত হয়ে দেশদ্রোহিতা ও চারিত্রিক অধঃপতনের যে জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল তাতে বিশ্ববাসী বিস্ময়ে হতবাক হয়েছিল। [প্রাগুক্ত, পৃ. ১০।] দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে মসনদ থেকে হটানোর পর রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি ও লুটপাট শুরু হয়ে যায়। মীর জা‘ফরকে মসনদে বসিয়ে ক্লাইভ পুরস্কার পেলেন ২,৩৪,০০০ পাউন্ড। কোম্পানীর কর্মচারীরা প্রত্যেকে লাভ করল পঞ্চাশ থেকে আশি হাজার পাউন্ড। ক্লাইভ দলীল দস্তাবেজ জাল করে এমন ব্যবস্থা করল যে,ষড়যন্ত্রকারী উমিচাঁদের ভাগ্যে কিছুই জুটল না। ৮৮০ মাইল এলাকা জুড়ে চবিবশ পরগণার জমিদারী কোম্পানীর হাতে চলে গেল। বছরে এখান থেকে মোটামোটি দেড় লক্ষ পাউন্ড খাজনা আদায় হত। এ চবিবশ পরগণা পরে ক্লাইভকে জায়গীর হিসাবে প্রদান করা হয়। কোষাগার শূন্য হয়ে যাওয়ায় নবাব ক্লাইভকে অনুনয় করে এ শর্তে রাযী করান যে, ক্লাইভ মুর্শিদাবাদের ভুমি রাজস্ব থেকে সাড়ে বার লক্ষ পাবেন। সাড়ে দশ লক্ষ পাবেন বর্ধমান, কৃষ্ণনগর আর হুগলী থেকে; তারপরও বছরে ঊনিশ লক্ষ টাকার জন্য ঐ তিনটি জেলা বন্ধক থাকবে। কেউ কেউ বলেন, কোম্পানী চাকরীজীবীদের বেতন অল্প হওয়ায় তারা উপঢৌকন গ্রহণে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছিল। বলা যায়, পলাশীর পর অর্থ লাভের ব্যপারে মাত্রা জ্ঞান আর কারো রইল না।কামধনুকে দোহন করার জন্য উন্মত্ত আবেগ তখন কর্মচারীদের পেয়ে বসেছিল। কোম্পানীর কর্মচারীদের মধ্যে তখন নিজেদের স্বার্থ যথাসম্ভব দ্রুত বিপুল সমৃদ্ধি সংগ্রহের কামনা উদগ্র হয়ে উঠেছিল। [প্রাগুক্ত, পৃ.১১৪০; সম্পাদনা, অধ্যপক আব্দুল গফুর, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ১৯৮৭ খৃ.), পৃ. ১৪-১৯।]

পরবর্তীতে যারাই ইংরেজদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, যার কর্মকান্ড ইংরেজ স্বার্থে আঘাত লেগেছে; তাকেই ইংরেজরা হয় ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছে অথবা শঠতা, চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করেছে অথবা তাকে দীপান্তর বা নির্বাসনে পাঠিয়েছে। ইংরেজদের দুশো বছরের এ দুঃশাসন অবসানে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের উৎপত্তি ঘটলে, দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রবন্ধ হয়নি বরং রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পাশাপাশি বেসরকারী পর্যায়ে দুর্নীতি শুরু হয়ে যায়। বেসরকারী পর্যায়ে এ সময় কোটি কোটি টাকার সম্পদ পাচার হয়ে যায়, এ সময় উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা, কর্মচারী সরকারী অর্থ আত্মসাতের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। এর ধারাবাহিকতায় আজও এদেশের অধিকাংশ উন্নায়ন প্রকল্পে পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত ব্যাপক দুর্নীতি ঘটছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে পূর্ব পাকিস্তানের সুদীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলন পাকিস্তনী শাসকদের অনমনীয় মনোভাব ও অত্যাচারের কারণে স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপান্তরিত হয় এবং অবশেষে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল অন্যায়, অবিচার, বৈষম্য ও দুর্নীতির বিরূদ্ধে এক সোচ্চার প্রতিবাদ। অথচ স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দুর্নীতি নির্মূল না হয়ে বরং সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। [প্রাগুক্ত, পৃ. ২৬০-২৬৪ ও ২৭৭-২৭৯।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন