hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামের দৃষ্টিতে দুর্নীতি প্রতিরোধ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

লেখকঃ অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম

২৩
দ্বিতীয়ত : শাস্তিমূলকঃ
ইসলাম সমাজ থেকে দুর্নীতি চিরতরে উচ্ছেদ করতে চায়। এ জন্য ইসলাম শুধুমাত্র উপদেশ, সতর্কবাণী ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা করেই তার দায়িত্ব শেষ করে নি। বরং কোন ব্যক্তি যদি এ সকল ব্যবস্থার পরও দুর্নীতি করে, তাহলে তার জন্য ইসলাম শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। দুর্নীতির শাস্তি তা‘যীর [তা‘যীর আরবী শব্দ। এর অভিধানিক অর্থ তিরস্কার করা, শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া, নিবৃত্ত করা, উপদেশ দেয়া, সংশোধন করা, শৃংখলা বিধান করা, সাহায্য-সহযোগিতা করা ইত্যাদি। শরী‘আতের পরিভাষায়-এর অর্থ যে সব অপরাধের ক্ষেত্রে হদ্দ ও কাফফারার বিধান নেই, সে অপরাধের কারণে শাস্তি দেয়া। কেউ কেউ বলেন, যেসব অপরাধের কোন সুনির্দিষ্ট শাস্তি বা কাফফারার বিধান ব্যবস্থা ইসলামী শরী‘আতে নেই, সেসব অপরাধের জন্য বিচারক স্বীয় সুবিবেচনার দ্বারা অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থাকেই তা‘যীর বলা হয়। যেমন, মিথ্যা সাক্ষ্য দান, ঘুষ গ্রহণ, সুদী কারবার করা, আমানতে খিয়ানত করা, অপরাধীদের আত্মগোপনে সাহায্য করা, যিনা ছাড়া অন্য কোন অপরাধ মিথ্যামিথ্যি কারও উপর আরোপ করা এবং নামায রোযা, যাকাত, প্রভৃতি ফরয কাজ ত্যাগ করা ইত্যাদি। দ্রষ্টব্য : আত-তাশরী‘উল জানাইল ইসলামী, ১ম খন্ড, ১ম ভাগ, পৃ. ৬৮৫-৬৮৬; ড. আহমদ ফাতহী ভ্যনসী, আল-উকুবাতু ফীল ফিকাহিল ইসলামী ( বৈরুত : দারুস শুরুক, ১৯৮৩ খৃ.), পৃ. ১২৯; ‘আলী ইবন মুহাম্মদ ইবন হাবীব আল-বাগদাদী আল-মাওরিদী, আল-আহকামুস সুলতানিয়্যাহ (বৈরুত : দারুল কুতুবিল ‘ইসলামীয়্যাহ, ১৯৮৫ খৃ.), ২৯৩; ইবন কুদামাহ, আল-মুগনী. ৫ম খন্ড ( বৈরম্নত : দারুল ফিকর, ১৯৯৭ খৃ.) পৃ. ৩৪২-৩৪৩ ইসলামের দন্ডবিধি, পৃ. ২৩৪-২৪৪।] পর্যায়ে অপরাধ অর্থাৎ বিচারক তাকে অপরাধের মাত্রা ও প্রকৃতি অনুযায়ী আল-কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে হদ্দের শা [হদ্দ : হদ্দ এর বহুবচন হুদূদ। এর শাব্দিক অর্থ, প্রতিরোধ, বাধাদান, চৌহদ্দী, দু‘টি বিষয় বা বস্ত্তর মধ্যকার প্রতিবন্ধক, যা একটিকে অপরটি হতে পৃথক করে। শরী‘আতের পরিভাষায় আল্লাহর অধিকার লংঘনের কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে অথবা তার রসূলের পক্ষ যে শাস্তি নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে, তাকে হদ্দ বলে। ইসলামী শরী‘আতের হদ্দের প্রকার নিম্নরূপ : ১. চুরি, ২. ডাকাতি, ৩. ব্যবিচার, ৪. ব্যভিচারের অপবাদ। এ চারটির শাস্তি আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। ৫. মাদক গ্রহণ। এটি সাহাবায়ে কেরামের ইজমা‘ দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে। অনুরূপভাবে ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহকে কোন কোন ফিকহ বিশারদ হদ্দের আওতাভুক্ত অপরাধ হিসাবে আলোচনা করেছেন এবং কেউ কেউ স্বতন্ত্র ভাবে আলোচনা করেছেন। অতএব বলা যায়, উক্ত ছয়টি বিষয় হদ্দের আওতাভুক্ত অপরাধ। দ্রষ্টব্য: আল‘কুবাতু ফীল ফিকহিল ইসলামী, পৃ. ১২৩-১২৪; ‘আব্দুর রহমান আল-জাযায়িরী, কিতাবুল ফিকহি আলা মাযাহিবিল আরবা‘আ, ৫ম খ-, ( বৈরুত : দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, তা. বি.), পৃ. ১১-১২; দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম, পৃ. ৪৫৮-৪৫৯; সম্পাদনা বোর্ড, গাযী শামছুর রহমান, বিধিবদ্ধ ইসলামী আইন, ১ম খন্ড, ১ম ভাগ, ( ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ১৯৯৫ খৃ.), পৃ. ২৪২; সম্পদনা পরিষদ, ফাতাওয়া ও মাসাইল, ৫ম খন্ড, (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০০১ খৃ. ), পৃ. ১৬৬-১৬৭।]স্তি ব্যতিরেকে, দলীয়করণ, মিথ্যাচার, স্বজনপ্রীতি, সরকারী অর্থ আত্মসাৎ, প্রশাসনিক মিথ্যা সাক্ষ্য, হয়রানী করা, কাজে ফাঁকি দেওয়া ও ঘুষ গ্রহণ ইত্যাদি। এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো:

ক. অর্থ আত্মসাৎঃ

রাজনৈতিক ও ক্ষমতাসীন ব্যক্তিবর্গ অনেক সময় সরকারী ও বেসরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে থাকেন। ইসলাম অবৈধভাবে যে কোন প্রকার অর্থ আত্মসাৎকে হারাম ঘোষণা করেছে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لَا تَأۡكُلُوٓاْ أَمۡوَٰلَكُم بَيۡنَكُم بِٱلۡبَٰطِلِ ﴾ [ النساء : ٢٩ ]

‘‘হে ইমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ কর না।’’ [আল-কুরআন, ৪ : ২৯।](সূরা আন নিসা: ২৯)

এ সম্পর্কে মহনবী (সাঃ) বলেন-

«من أخذ من الأرض شيئا بغير حقه خسف به يوم القيامة إلى سبع أرصين»

‘‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে অন্যের জমির কিয়দাংশ আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন তাকে সপ্ত জমির নীচে ঢুকিয়ে দেয়া হবে’’। [ইমাম বুখারী, আস- সহীহ, ১ম খন্ড, পৃ. ৩৩২।]

এ ছাড়া এটা তা‘যীর পর্যায়ের অপরাধ। এর জন্য তা‘যীরের শাস্তি প্রযোজ্য হবে। কেউ কেউ বলেন, আত্মসাৎ ইসলামী শরী‘আতে চুরির হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং ইসলামী রাষ্ট্রে কেউ যদি অন্যায়ভাবে আত্মসাতে লিপ্ত হয়, তবে চুরির আইন অনুযায়ী তার হাতকাটা হতে পারে। চুরির শাস্তি সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,

﴿ وَٱلسَّارِقُ وَٱلسَّارِقَةُ فَٱقۡطَعُوٓاْ أَيۡدِيَهُمَا جَزَآءَۢ بِمَا كَسَبَا نَكَٰلٗا مِّنَ ٱللَّهِۗ ٣٨ [ المائ‍دة : ٣٨ ]

চোর পুরুষ হোক অথবা নারী হোক উভয়ের হাত কেটে দাও। এটা তাদের কৃতকর্মের ফল।’’ [আল-কুরআন, ৫ : ৩৮।](সূরা আল মায়িদাহ: ৩৮ )

খ. দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতিঃ

চাকুরি, টেন্ডার ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ইত্যদি সততা, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নয় বরং দলের কর্মী বা নেতার আত্মীয় হওয়ার সুবাদে প্রদান, ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ নয়। এ সমস্ত চাকুরি, টেন্ডার, ডিলার, পারমিট, লাইসেন্স, ও এল, সি প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গের নিকট আমানত। ইসলাম এ সমস্ত আমানত তার যোগ্য প্রাপকদের নিকট পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ ۞إِنَّ ٱللَّهَ يَأۡمُرُكُمۡ أَن تُؤَدُّواْ ٱلۡأَمَٰنَٰتِ إِلَىٰٓ أَهۡلِهَا ﴾ [ النساء : ٥٨ ]

‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা যেন আমানত তার যথার্থ মালিককে প্রত্যার্পণ কর।’’ [আল-কুরআন, ৪: ৫৮।]( সূরা আন নিসা: ৫৮)

মহানবী (সঃ) বলেন:

« كلكم راع وكلكم مسؤل عن رعيته»

‘‘তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। প্রত্যেকে তার দায়িত্ব সম্পর্কে কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হবে।’’ [ইমাম বুখারী, আস- সহীহ, ২য় খন্ড, পৃ. ১০৫৭; ইমাম মুসলিম, আস- সহীহ, ২য় খন্ড, পৃ. ১২২।] এটা তা‘যীর পর্যায়ের অপরাধ। বিচারক এজন্য তা‘যীরের আওতায় শাস্তি প্রদান করতে পারেন। [ইসলামের দন্ডবিধি, পৃ. ২৩৪-২৪।]

গ. মিথ্যাচার :

মিথ্যাচার সকল যুগ ও ধর্মেই অপরাধ ও দুর্নীতি হিসাবে বিবেচিত এবং এটি বহু দুর্নীতির উৎস হিসাবে স্বীকৃত। মিথ্যাচার পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা, বিদ্বেষ ও ঘৃণা সৃষ্টি করে থাকে। এ জন্য ইসলামে মিথ্যাচার কবীরা গুনাহ ও মহা পাপের অন্তর্ভুক্ত। [আফীফ আব্দুল ফাত্তাহ তাব্বারা, ইসলামের দৃষ্টিতে অপরাধ (আল-খাতায়ু ফী নযরিল ইসলাম) (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২০০৪ খৃ.) পৃ. ১৭২-১৭৩।] এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,

﴿ فَٱجۡتَنِبُواْ ٱلرِّجۡسَ مِنَ ٱلۡأَوۡثَٰنِ وَٱجۡتَنِبُواْ قَوۡلَ ٱلزُّورِ ٣٠ ﴾ [ الحج : ٣٠ ]

‘‘ সুতরাং তোমরা মূর্তি পূজার অপবিত্রতা বর্জন কর এবং মিথ্যা কথন থেকে দূরে থাক।’’ [আল-কুরআন, ২২ : ৩০।](সূরা আল হজ্ব: ৩০)

আল্লাহ তা‘আলার খাঁটি বান্দাহ হওয়ার জন্য মিথ্যা কথা বর্জন করা অত্যাবশ্যক। এছাড়া এটি তা‘যীর পর্যায়ের অপরাধ। ইসলামে মিথ্যাচার মুনাফিকের নিদর্শন বলে বর্ণিত হয়েছে। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (স.)বলেন

«آية المنافق ثلاث إذا حدث كذب»

‘‘মুনাফিকীর লক্ষণ তিনটি। এর মধ্যে একটি হলো, যখন সে কথা বলে তখন মিথ্যা বলে।’’ [ইমাম বুখারী, আস- সহীহ, ১ম খন্ড, পৃ. ৯; ইমাম মুসলিম, আস- সহীহ, ১ম খন্ড, পৃ. ৫৬; ইামাম আবু দাউদ, আস-সুনান, ২য় খণ্ড ( দেওবন্দ : মাতবাউ‘ আসাহলিল মাতাবে‘আ, তা. বি.) পৃ. ৬৮১।] আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,

﴿ إِنَّ ٱلۡمُنَٰفِقِينَ فِي ٱلدَّرۡكِ ٱلۡأَسۡفَلِ مِنَ ٱلنَّارِ ﴾ [ النساء : ١٤٥ ]

‘‘মুনাফিকদের স্থান হবে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে।’’ [আল-কুরআন, ৪ : ১৫।](সূরা আন নিসা: ১৫)

ঘ. সরকারী অর্থ অপচয় ও অপব্যয় :

ইসলামের দৃষ্টিতে অর্থ অপব্যয় ও অপচয় করা নিষিদ্ধ। রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রী, এম.পি. সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ সরকারি অর্থের আপচয় ও অপব্যয় করে থাকেন। ইসলামে এ ধরনের অপচয় ও অপব্যয় নিষিদ্ধ। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন,

إن كره لكم ثلاثا قيل واضاعة المال وكثرة السؤال» «

‘‘আল্লাহ তোমাদের জন্যে তিনটি জিনিস অপছন্দ করেছেন। ১. অনর্থক ও বাজে কথা বলা ২. সম্পদ অপচয় ও অপব্যয় করা ৩. অত্যাধিক প্রশ্ন করা।’’ [ইমাম বুখারী, আস- সহীহ, ১ম খন্ড, পৃ. ২০০।]

ঙ. ওয়াদা খেলাফ করাঃ

ইসলামের দৃষ্টিতে ওয়াদা খেলাফ করা মারাত্মক অপরাধ। সাধারণত রাজনীতি বিদগণ ভোট পাওয়ার জন্য এবং সরকারি কর্মকর্তাগণ স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন ওয়াদা করে থাকেন, কিন্তু পরবর্তীতে তারা সেসব ওয়াদার কথা ভুলে যান। ইসলাম ওয়াদা ভঙ্গ করাকে হারাম বলে ঘোষণা করেছে। ওয়াদা পালন সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَوۡفُواْ بِٱلۡعُقُودِۚ ﴾ [ المائ‍دة : ١ ]

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ওয়াদা পূর্ণ কর।’’ [আল-কুরআন, ৫ : ১।](সূরা আল মায়িদাহ: ১)

মহানবী (স.) বলেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি। ১. যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে ২. যখন ওয়াদা করে তা ভঙ্গ করে এবং ৩. তার নিকট যখন আমানত রাখা হয়, সে তার খেয়ানত করে। [ইমাম বুখারী, আস- সহীহ, ১ম খন্ড, পৃ. ৩২।]

চ. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়াঃ

ডাক্তারগণ বিভিন্ন সময় আসামী বা বাদীর মেডিক্যাল রিপোর্ট লিখতে মিথ্যার আশ্রয় নেন, পুলিশ অফিসাররা কেসের চার্জশীট প্রদানে মিথ্যার আশ্রয় রের। এভাবে অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মূলত মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া হয় যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বা হারাম।

এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন,

«أكبر الكبائر ثلاثة الإشراك بالله وعقوق الوالدين وشهادة الزور»

‘‘মহাপাপসমূহের মধ্যে অতি জঘন্যতম হলো, আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা মাতার সাথে দুর্ব্যবহার এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। [ইমাম বুখারী, আস- সহীহ, ১ম খন্ড, পৃ. ৩৬২।]

ছ. কর্মে ফাঁকি দেয়াঃ

ইসলামী নীতি অনুযায়ী কর্মচারী বা শ্রমিকের পক্ষে চুক্তিবদ্ধ কাজে কোন প্রকার ফাঁকি না দিয়ে পূর্ণ সামর্থ অনুযায়ী কাজ করা উচিত। পূর্ণ মজুরী বা বেতন নিয়ে কাজ কম করলে তা অবৈধ হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَيۡلٞ لِّلۡمُطَفِّفِينَ ١ ٱلَّذِينَ إِذَا ٱكۡتَالُواْ عَلَى ٱلنَّاسِ يَسۡتَوۡفُونَ ٢ وَإِذَا كَالُوهُمۡ أَو وَّزَنُوهُمۡ يُخۡسِرُونَ ٣ ﴾ [ المطففين : ١، ٣ ]

‘‘তাদেরকে বেদনাদায়ক শাস্তি দেওয়া হবে যারা মাপে কম বেশী করে, নিজের হক দেওয়ার সময় পুরোপুরি আদায় করে কিন্তু অন্যকে দিতে গেলেই কম দেয়।’’ [সূরাহ আল-মুতাফ্ফিফীন : ১-৩।]( সূরা মুতাফফিফীন: ১-৩ )

জ.মজুদদারীঃ

আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে মজুদদারী মারাত্মক অপরাধ। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আটকিয়ে রেখে অস্বাভাবিকভাবে মুনাফা হাসিল করাকে ইহতিকার বা মজুদদারী বলা হয়। মজুদ্দারীর ফলে সমাজে দুর্ভিক্ষ ও অনাচার দেখা দেয়। এ জন্য ইসলাম মজুদ্দারীকে চিরতরে হারাম ঘোষণা করেছে এবং মজুদদার ব্যক্তিকে একজন অভিশপ্ত ও পাপী বলে উল্লেখ করেছে। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘‘পণ্যদ্রব্য আটক করে অধিক মূল্যে বিক্রয়কারী অবশ্যই পাপী’’। [; ইমাম মুসলিম, আস- সহীহ, ২য় খন্ড, পৃ. ৩১; ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান, ১ম খ-, ( দেওবন্দ : মাতবাউ‘ আসাহলিল মাতাবে‘আ, তা. বি.) পৃ. ১৫২; দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম, পৃ. ৫১৩-৫১৬।]

ঝ. ঘুষঃ

ঘুষ হচ্ছে স্বাভাবিক ও বৈধ উপায়ে যা কিছু পাওয়া যায় তার পরও অবৈধ পন্থায় অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ করা। কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী তার উপর দায়িত্বপালনের জন্য নিয়মিত বেতন/ভাতা পাওয়া সত্ত্বেও যদি রাড়তি কিছু অবৈধ পন্থায় গ্রহণ করে তাহলে তা ঘুষ হিসাবে বিবেচিত। অনেক সময় স্বীয় অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ঘুষ দেয়া হয়। আবার অনেক সময় টাকা-পয়সা ছাড়াও উপহারের নামে নানা সমগ্রী প্রদান করা হয়। সুতরাং যেভাবেই হোক, আর যে নামেই হোক তা ঘুষের অমত্মর্ভুক্ত। ইসলামে ঘুষ সম্পূর্ণরূপে হারাম। এ সম্পর্কে মহানবী (স.) বলেন,

«لعنة الله على الراشى والمرتشي»

‘‘ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহিতা উভয়ের উপর আল্লাহ তা‘আলার লা‘নত’’। [প্রাগুক্ত, পৃ. ৫১৬; হাদীস ও সামাজিক বিজ্ঞান, পৃ. ২২১-২২২।]

ঞ.সন্ত্রাসঃ

সন্ত্রাস বিবেকহীন মানুয়ের অস্বাভাবিক ও পাশবিক আচরণেরই ফল। ইসলাম সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসীকে মোটেই পছন্দ করে না। ইসলাম সন্ত্রাসকে নিষিদ্ধ করেছে এবং এর জন্য কঠিন শাসিত্মর নির্দেশ দিয়েছে। এ সম্পর্কে আল-কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,

﴿ إِنَّمَا جَزَٰٓؤُاْ ٱلَّذِينَ يُحَارِبُونَ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَيَسۡعَوۡنَ فِي ٱلۡأَرۡضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوٓاْ أَوۡ يُصَلَّبُوٓاْ أَوۡ تُقَطَّعَ أَيۡدِيهِمۡ وَأَرۡجُلُهُم مِّنۡ خِلَٰفٍ أَوۡ يُنفَوۡاْ مِنَ ٱلۡأَرۡضِۚ ذَٰلِكَ لَهُمۡ خِزۡيٞ فِي ٱلدُّنۡيَاۖ وَلَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ ٣٣ ﴾ [ المائ‍دة : ٣٣ ]

‘‘যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরম্নদ্ধে লড়াই করে এবং পৃথিরীতে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাসিত্ম এই যে, তাদেরকে হত্যা করা অথবা শুলবিদ্ধ করা হবে অথবা তাদের হাত বা পা বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে কিংবা তাদেরকে নির্বাসিত করা হবে। এটি হলো তাদের কৃতকর্মের শাসিত্ম।’’ [আল-কুরআন, ৫ : ৩৩।]( সূরা আল মায়িদাহ: ৩৩)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন