HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মিলাদ মাহফিল

লেখকঃ মুহাম্মাদ হারুন হুসাইন

১২
বিদআতের পরিণাম
বিদআত দু‘প্রকার। এক. আক্বীদাগত বিদআত। দুই. আমলের বিদআত। আক্বীদাগত বিদআত ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়- রাফেজী শিয়া, মু‘তাযিলা, আশ‘আরী ও মাতুরিদী ইত্যাদি মতবাদসমূহ। পরবর্তীতে এর সাথে যোগ দেয় ইলমে তাসাউফ এর নামে সূফী- সন্যাসীদের সৃষ্টি করা নানা ভ্রান্তিমূলক আক্বিদাহ।

পক্ষান্তরে আমলের মাঝে সৃষ্ট বিদআতসমূহও অতি মারাত্মক। এসব বিদআতের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো মিলাদ মাহফিল, কুলখানি, ইমাম মুসল্লি মিলে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত শেষে সম্মিলিত দু‘আ-মুনাজাত করা, শবেবরাত পালন করা, সে রাতে হালুয়া-রুটি খাওয়া, দলে দলে কবর যিয়ারত করা, কুলখানি ও মৃত্যু দিবস পালন করা এবং বিভিন্ন প্রকার খতম পড়া ইত্যাদি। তবে মিলাদ মাহফিলে রাসূল ﷺ হাজির হন- এ বিশ্বাসে দাঁড়িয়ে ক্বিয়াম করা আক্বীদাহগত বিদআতের অন্তর্ভুক্ত। বিদআতের পরিণাম অতি ভয়াবহ। নিমেণ বিশেষ কয়েকটি পরিণাম উল্লেখ করা হলো :

১. আমল প্রত্যাখ্যাত হবে :

মহান আল্লাহ বলেন:

قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْاَخْسَرِيْنَ اَعْمَالًا (১০৩) اَلَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ اَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًا (১০৪) اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِاٰيَاتِ رَبِّهِمْ وَلِقَآئِه فَحَبِطَتْ اَعْمَالُهُمْ فَلَا نُقِيْمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَزْنًا

‘‘বল, আমি কি তোমাদেরকে সেসব লোকদের সংবাদ দেব, যারা আমলের দিক দিয়ে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। তারা সেই লোক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনে বিভ্রান্ত হয়; অথচ তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম করছে। তারা তো সেই লোক, যারা তাদের রবের নিদর্শণাবলি এবং তাঁর সাথে সাক্ষাতের বিষয় অস্বীকার করে। ফলে তাদের আমলসমূহ বাত্বিল হয়ে যায়। সুতরাং ক্বিয়ামত দিবসে আমি তাদের আমলের কোন ওজনই করব না (গুরুত্ব দেব না)।’’ [। সূরা আল-কাহাফ/১০৩-১০৫]

এ প্রসঙ্গে রাসূল ﷺ বলেন :

قوله عليه السلام مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هٰذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ

‘‘যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনে নতুন কিছু আবিষ্কার করল, যা তাতে নেই তা প্রত্যাখ্যাত।’’ [। বুখারী, ফাতহ ৫/২৬৯৭ মুসলিম হা/১৭১৮]

অপর বর্ণনায় এসেছে। রাসূল ﷺ এরশাদ ফরমান :

قوله عليه السلام : مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ

‘‘যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করল, যাতে আমাদের কোন হুকুম নেই- তা প্রত্যাখ্যাত।’’ [। বুখারী ও মুসলিম, মুসলিম হা/১৭১৮]

২. রাসূল ﷺ এর উম্মাতের তালিকাভুক্ত না হওয়া :

রাসূল ﷺ বিদআতীকে তাঁর উম্মাত বহির্ভূত বলে আখ্যা দিয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে :

مَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي

‘‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত হতে মুখ ফিরিয়ে নিল, সে আমার উম্মাতভূক্ত নয়।’’ [। বুখারী হা/৫০৬৩ মুসলিম হা/১৪০১]

উপরোক্ত দৃঢ়তাব্যঞ্জক বাণীটি রাসূল ﷺ কখন করেছিলেন? কখন এতবড় ধমক দিলেন যে, তাঁর সুন্নাত থেকে মুখ ফিরালে আর তাঁর উম্মাত বলে দাবী করা যাবে না? উল্লেখিত হাদীসখানা, যা আমরা দলীল হিসেবে পেশ করেছি তা সাহাবী আনাস বিন মালিক (রা.) হতে বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হাদীসের শেষাংশ। মা আয়েশা (রা.) কে রাসূলের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতঃ যে তিন সাহাবী যথাক্রমে সারারাত জেগে জেগে সালাত আদায়, যুগভর সিয়াম পালন ও বিবাহ না করার সংকল্প করেছিলেন, তাদের এ সংকল্প রাসূল ﷺ এর সুন্নাতের বাইরে হওয়ার কারণে তাদের প্রতি তিনি এ কঠিন ধমক দিয়েছিলেন। ভেবে দেখুন! মিলাদ যার ভিত্তিই শরীয়াতে নেই, তা করলে কী পরিণাম হবে ?

৩. তাওবা ক্ববুল না হওয়া :

বিদআত না ছাড়া পর্যন্ত বিদআতীর তাওবা ক্ববুল হবে না। এ মর্মে সাহাবী আনাস (রা.) রাসূল ﷺ হতে বর্ণনা করেন । রাসূল ﷺ বলেন:

عَنْ اَنَسٍ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ ا للهِ إنّ اللّٰهَ احْتَجَرَ التَّوْبَةَ عَلٰى كُلِّ صَاحِبِ بِدْعَةٍ

আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক বিদআতী হতে তওবা সরিয়ে নিয়েছেন। [সিলসিলা সহীহাহ হা/১৬২০; জামেউল আহাদীস হা/৬৬১৪; শু‘আবুল ঈমান হা/৯৪৫৬; ইসহাক ইবনে রাহওয়াইহ হা/৩৯৮; মু‘জামুল আওসাত, হা/৪২০২।]

৪. হাউজে কাউসার থেকে বঞ্চিত হওয়া :

রাসূল ﷺ কে মহান আল্লাহ যে বিশেষ নিয়ামত দ্বারা বিশেষত্ব দান করেছেন, তম্মধ্যে হাউজে কাউসার অন্যতম। রোজ কিয়ামতে তাঁর উম্মতরা সে হাউজ থেকে পানি পান করে পিপাসা নিবারণ করবেন। কিন্তু বিদআতীরা এ নিয়ামত হতে বঞ্চিত হবে। এদের জন্য এর চেয়ে বড় আফসোস আর কী হতে পারে? হাদীসে রয়েছে :

عَنْ سَهْلَ بْنَ سَعْد ، يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ : ‏ اَنَا فَرَطُكُمْ، عَلَى الْحَوْضِ، مَنْ وَرَدَهٗ شَرِبَ مِنْهُ، وَمَنْ شَرِبَ مِنْهُ لَمْ يَظْمَأْ بَعْدَهٗ اَبَدًا، لَيَرِدُ عَلَىَّ اَقْوَامٌ اَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُوْنِيْ، ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُمْ ‏‏ . قَالَ اَبُوْ حَازِمٍ فَسَمِعَنِي النُّعْمَانُ بْنُ اَبِيْ عَيَّاشٍ، وَاَنَا اُحَدِّثُهُمْ، هٰذَا فَقَالَ هٰكَذَا سَمِعْتَ سَهْلًا، فَقُلْتُ نَعَمْ‏ . ‏ قَالَ وَاَنَا اَشْهَدُ، عَلٰى اَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ لَسَمِعْتُهٗ يَزِيْدُ فِيْهِ قَالَ : ‏ اِنَّهُمْ مِنِّيْ‏ . ‏ فَيُقَالُ اِنَّكَ لَا تَدْرِيْ مَا بَدَّلُوْا بَعْدَكَ فَاَقُوْلُ سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ بَدَّلَ بَعْدِيْ

সাহল ইবনে সা‘দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী ﷺ-কে বলতে শুনেছি, আমি হাউজে কাউসারে তোমাদের অগ্রগামী প্রতিনিধি হব। যে ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত হবে সে তা হতে পানি পান করবে; আর যে পান করবে সে আর কখনো তৃষ্ণার্ত হবে না। আর এমন সব লোকদেরকে আমার নিকট উপস্থিত করা হবে, যাদেরকে আমি (উম্মত হিসেবে) চিনতে পারব, আর তারাও আমাকে চিনতে পারবে। তারপর আমার এবং তাদের মাঝে পর্দা পড়ে যাবে। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) অতিরিক্ত শব্দে বর্ণনা করেন, তখন নাবী ﷺ বলবেন, তারা তো আমার (উম্মত)। বলা হবে আপনি জানেন না, আপনার পর তারা (দ্বীনের বিষয়ে) কী কী পরিবর্তন করেছে। তখন আমি বলব, দূর হও দূর হও! যারা আমার পরে (দ্বীনের মধ্যে) পরিবর্তন এনেছ। [সহীহ বুখারী হা/৭০৫১; সহীহ মুসলিম হা/৬১০৮-৯; মুসনাদে আহমাদ হা/২৬৫৮৮।]

৫. গোমরাহী ও জাহান্নাম অবধারিত :

রাসূল ﷺ এর সুন্নাত ছেড়ে দিয়ে যারা বিদআতের প্রচলন ঘটায়, তারা যে ভ্রান্ত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মহান আল্লাহ এদের পরিণাম সম্পর্কে বলেনঃ

وَمَنْ يُّشَاقِقِ الرَّسُوْلَ مِنْ ۢبَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدٰى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيْلِ الْمُؤْمِنِيْنَ نُوَلِّه مَا تَوَلّٰى وَنُصْلِه جَهَنَّمَؕ وَسَآءَتْ مَصِيْرًا

‘‘যে কেউ রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার নিকট সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সে মুমিনদের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে থাকে। আমি তাকে সে পথেই ফিরিয়ে দেব- যে দিকে সে ফিরেছে এবং আমি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাব, আর তা কতই না নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থল।’’ [। সূরা নিসা /১১৫]

অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন :

وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ خَاشِعَةٌ ،عَامِلَةٌ نَاصِبَةٌ ، تَصْلٰى نَارًا حَامِيَةً

‘‘অনেক মুখমন্ডল সেদিন লাঞ্চিত হবে। অধিক আমলে পরিশ্রান্ত, ক্লিষ্ট ও ক্লান্ত। তারা জ্বলন্ত আগুনে পতিত হবে।’’ [। সূরা গাশিয়া ১১৫]

কেন সেই পরিণতি? তা এজন্য যে তারা দুনিয়ায় ভ্রান্ত পথের আমল করত। আমল করে ক্লান্ত হয়ে পড়তো, কিমুত এ আমলই তাদেরকে জাহান্নামে ফেলে দেবে। এ সম্পর্কে প্রিয় নাবী ﷺ বলেন,

إِ يَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُوْرِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ

তোমাদের উপর আবশ্যক হচ্ছে প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহ হতে বেঁচে থাকা। কেননা প্রত্যেক নব উদ্ভাবিত বিষয়সমূহই হচ্ছে বিদআত। আর প্রত্যেক বিদআতই হচ্ছে গোমরাহী। [মুসনাদে আহমদ হা/১৭১৪৪; সুনানে ইবনে মাজাহ হা/৪২।]

আল্লাহ আমাদেরকে সকল প্রকার বিদআত হতে বিরত থাকার তাওফীক দিন! আমীন!!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন