মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ নামক বইয়ের শেষে ‘বারযাঞ্জি শরীফ’ সংযুক্ত করে ছাপা হয়। যার ভাবার্থ সম্পর্কে লিখা হয় ‘‘মিলাদ শরীফে পাঠ উপযোগী কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ কছিদা। সংকলনে মাওলানা কমরউদ্দীন নজিপুরী।’’
সম্মানিত পাঠক!!
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। যদিও প্রায় সব ভাষাতেই আঞ্চলিকতার সংমিশ্রণ আছে তবুও আমাদের জাতীয় ভাষা বাংলা হওয়ার কারণে আমাদের দেশের সকলেই এ ভাষা বুঝেন এবং এ ভাষায় কথা বলেন। আমাদের জনগণের কাছে অন্যসব ভাষা অর্জিত। যদি কেউ সে ভাষা শিক্ষা ও চর্চা করে থাকেন তাহলে বুঝেন। নতুবা ভিন্ন ভাষা বুঝা দুষ্কর। তথাকথিত ‘বারযাঞ্জি শরীফের যাবতীয় কছিদা আরবী, উর্দু ও ফারর্সী ভাষায় লিখা। বলুন! সাধারণ জনগণের শতকরা কত জন লোক উপরোক্ত তিনটি ভাষা বুঝতে, লিখতে ও পড়তে পারেন?
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, বালাগাল উলাবি কামালিহি একটি কবিতার পংক্তি। সূরের লহরি মিলিয়ে ওয়াজ মাহফিলে পড়ার কারণে সাধারণ জনগণ এটিকে দরূদ বুঝতে বসেছেন এবং ভক্তি মিশ্রিত কন্ঠে তা বারংবার একাকি বা সমস্বরে আবৃত্তি করছেন। মিলাদ মাহফিলগুলোতে একইভাবে আরবী, উর্দূ ও ফারসী ভাষায় রচিত কবিতাসমূহ সূর মিলিয়ে পাঠ করা হয়। আর সরলমতি মুসলিম সমাজ সাওয়াবের আশায় তা আবৃত্তি করতে থাকেন। এসব কবিতার বহুলাংশে যে শিরকী বিষ মিশানো আছে, তা ক‘জন খবর রাখেন।!
আমরা আমাদের এ বইয়ের কলেবর বড় করতে চাই না। সে কারণে তথাকথিত বারযাঞ্জি শরীফের কয়েকটি কবিতা উল্লেখ করব এবং সেগুলোকে কুরআন ও হাদীস হতে গৃহীত নির্ভূল আক্বীদার মানদন্ডে যাচাই করে দেখব ইনশাআল্লাহ। অতঃপর সম্মানিত পাঠক মহল এসব আরবী, উর্দু ও ফারসী কবিতার দ্বারা কী বুঝানো ও শিখানো হচ্ছে, তা সহজেই ধরতে পারবেন। দেশের সরলমতি মুসলিম সমাজকে সতর্ক করা এবং তাদেরকে সঠিক পথনির্দেশনা দেয়াই আমাদের এ ক্ষুদ্র্ প্রচেষ্টার অন্যতম লক্ষ্য। মহান আল্লাহ সে লক্ষেই আমাদের শ্রম কবুল করুন! আমীন!!
সম্মানিত পাঠক!!
আমরা নিম্নে কয়েকটি কবিতা উল্লেখ করছি এবং সেগুলোর সংক্ষিপ্ত জবাব দিচ্ছি :
১- ‘মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ নামক বইয়ের শেষে সংযুক্ত ‘বারযাঞ্জি শরীফ’ পৃষ্ঠা নং ৬৪ এর তৃতীয় লাইন নিমণরূপ :
عبدك المسكين يرجو فضلك الجم الغفير
অর্থ : ‘‘(হে নাবী) আপনার এ মিসকীন বান্দাহ আপনার অসংখ্য অগণিত অনুগ্রহ চায়।’’
এ কবিতাংশে রাসূল ﷺ এর শানে দুটি আক্বীদা সংক্রান্ত বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে। আর তা হচ্ছে:
এক. নিজেকে নাবীর বান্দাহ বলে দাবী করা।
দুই. নাবীর কাছে অনুগ্রহ কামনা করা।
বাড়াবাড়ির পরিণতি তাই হয়ে থাকে। খ্রিস্টানরা মরিয়ামের পুত্র ঈসা নাবী সম্পর্কে বাড়াবাড়ি করেছিল, যা অনেকেরই জানা আছে। তারা ঈসা (আ.) কে আল্লাহর আসনে বসিয়ে দিয়েছিল। আর ইয়াহুদিরা আল্লাহর বান্দাহ উযায়ের এর শানে বাড়াবাড়ি করেছিল। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন:
‘‘হে আহলে কিতাবগণ! তোমরা তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ সম্বন্ধে সত্য ছাড়া (অন্য কিছু) বলো না। মারইয়ামের ছেলে ঈসা মাসীহ তো আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর কালিমা (বাণী), যা তিনি মারইয়ামের প্রতি প্রেরণ করেছিলেন ও তাঁর পক্ষ থেকে একটি রূহ (আদেশ)। সুতরাং তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান আনো এবং বলো না যে, (ইলাহ) ‘তিনজন!’, তোমরা (এটা বলা থেকে) নিবৃত্ত হও, তোমাদের জন্য এটাই কল্যাণকর হবে। (জেনে রেখো) আল্লাহ হচ্ছেন একমাত্র ইলাহ। তাঁর কোন সন্তান হবে- তিনি এটা হতে সম্পূর্ণ পবিত্র। আসমানসমূহে যা কিছু আছে ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই; আর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।’’ [। সূরা নিসা/১৭১]
অপর আয়াতে এ রকম বাড়াবাড়ির অশুভ পরিণাম উল্লেখ করে মহান আল্লাহ এরশাদ করেন :
‘‘(হে নাবী!) বলো, হে আহলে কিতাবগণ! তোমরা তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করো না; আর তোমরা এমন সম্প্রদায়ের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না, যারা ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে, অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সরল পথ হতে বিচ্যুত হয়েছে।’’ [। সূরা আল-মায়েদা/৭৭]
বর্তমানে মিলাদ পড়ুয়ারা আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানদের পথ অনুসরণ করে চলেছেন। ইয়াহুদীরা উযায়ের (আঃ) এর শানে এবং খ্রিস্টানরা ঈসা (আঃ) এর শানে বাড়াবাড়ি করে তাঁদেরকে উলুহিয়্যাতের আসন দান করেছিল। আর বর্তমান যুগের সীমালঙ্ঘনকারীরা আমাদের নাবী মুহাম্মাদ ﷺ এর শানে অনুরূপ বাড়াবাড়ি করছেন, যার বাস্তব দলিল উপরোক্ত কবিতা। কবি নিজেকে রাসূল ﷺ এর বান্দাহ দাবী করেছেন। অথচ মহানাবী ﷺ এরূপ বাড়াবাড়ি হতে উম্মাতকে সর্তক করে বলেন :
قوله عليه السلام : لَا تُطْرُوْنِيْ، كَمَا أَطْرَتْ النَّصَارَى ابْنَ مَرْيَمَ، فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُهٗ، فَقُوْلُوْا عَبْدُ اللهِ، وَرَسُوْلُهٗ
‘‘মরিয়ামের পুত্র ঈসাকে নিয়ে খ্রিস্টানরা যেভাবে বাড়াবাড়ি করেছে, তোমরা আমাকে নিয়ে সেভাবে বাড়াবাড়ি করো না। আমি আল্লাহর বান্দাহ। অতএব, তোমরা বল আল্লাহর বান্দাহ ও তাঁর রাসূল।’’ [। বুখারী হা/৩৪৪৫]
সম্মানিত পাঠক!!
আমরা কি আল্লাহর বান্দাহ নাকি মুহাম্মাদ ﷺ এর বান্দাহ? আমরা কি আলল্লাহর ইবাদত করি নাকি তাঁর রাসূলের ইবাদত করি? আমরা কি আল্লাহকে সিজদাহ করি এবং সাথে সাথে তার রাসূলকেও সিজদাহ করি? (নাউযুবিল্লাহ), অথচ মহান আল্লাহ তো আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কেউ সিজদা/ইবাদত পাওয়ার হকদার নেই। এরশাদ হচ্ছে :
‘‘মুহাম্মাদ একজন রাসূল ব্যতীত কিছুই নয়, নিশ্চয় তার পূর্বেও রাসূলগণ বিগত হয়েছে।’’ [। সূরা আলে ইমরান/১৪৪]
মুসলিম মাত্রই আল্লাহর বান্দাহ এবং রাসূলের উম্মাত। সে আল্লাহর ইবাদত করে। আর আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে তাঁর প্রেরিত রাসূলের অনুসরণ করে। সুতরাং যে বা যারা নিজেকে রাসূলের বান্দাহ হিসেবে দাবি করবে, সে নির্দ্বিধায় সীমালঙ্ঘনকারী মুশরিক হিসেবে গণ্য হবে- তাতে সন্দেহ নেই। এরূপ ব্যক্তিদের জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে আবু বকর (রা.) কতৃর্ক প্রদত্ত ভাষনের নিন্মোক্ত বাণীটি অধিক প্রযোজ্য। তিনি বলেছিলেন :
‘‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি মুহাম্মাদের ইবাদত করে, (সে যেন জেনে নেয় যে,) নিশ্চয় মুহাম্মাদ মৃত্যুবরণ করেছেন। আর তোমদের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে, (সে যেন জেনে নেয় যে,) নিশ্চয় আল্লাহ জীবিত; তিনি মৃত্যুবরণ করেন না।’’ [। বুখারী ২/৬৪০-৬৪১ গৃহীত ‘আল-মুবারকপুরী (আর-রাহীকুল মাখতুম) দারুল মুআয়্যিদ-রিয়াদ/৪৭০]
সম্মানিত পাঠক!!
উপরোক্ত কবিতার মধ্যে আক্বীদাগত দ্বিতীয় ভুলটি হলো- নাবী ﷺ এর কাছে অনুগ্রহ কামনা করা। অথচ অনুগ্রহ দান করা একমাত্র মহান আল্লাহর সিফাত। এতে তাঁর শরীক কেউ নেই। তাছাড়া অনুগ্রহ চাওয়া হচ্ছে দু‘আ। আর দু‘আ আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে করা যায় না। কেননা, আল্লাহ তাঁর কাছে দু‘আ করতে আদেশ করেছেন। এরশাদ হচ্ছে :
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِيْ أَسْتَجِبْ لَكُمْ
‘‘তোমাদের রব বলেন, আমাকে ডাকো; আমি তোমাদের আহবানে সাড়া দিব।’’ [। সূরা আল-গাফের/৬০]
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন শক্তি নেই, যে মানুষের দু‘আ কবুল করতে পারে! মহান আল্লাহ বলেন:
‘‘আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্যকে ডাকে- যে ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দেবে না তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে?’’ [। সূরা আল আহক্বাফ/৫]
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, নাবী ﷺ কি মানুষের দু‘আ কবূল করতে পারেন? মানুষের কল্যাণ অকল্যাণের ক্ষমতা রাখেন? মানুষের ফরিয়াদ শুনেন? উত্তর হলো, মহান আল্লাহ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত আর কেউ ফরিয়াদ শ্রবণকারী নেই।
‘‘বলো! আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তা ব্যতীত আমি আমার নিজের আত্মার মঙ্গল-অমঙ্গলের কোন অধিকারী নই।’’ [। সূরা আল-আ‘রাফ/১৮৮]
মিলাদী শায়খুল হাদীসরা নাবীর কাছে অনুগ্রহ কামনা করছেন। তাঁদের এ দু‘আ যে শিরকী দু‘আ তাতে কি কোন সন্দেহ আছে? মহান আল্লাহ তো স্বয়ং তাঁর রাসূলকে বলতে বলেন :
‘‘(হে নাবী) বলো! আমি তোমাদের অপকার ও উপকার কোন কিছুরই মালিক নই।’’ [। সূরা আল জ্বিন/২০-২১]
২- ‘মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নামক বইয়ের শেষে সংযুক্ত বারযাঞ্জি শরীফ’ পৃষ্ঠা নং ৬৪ এর পঞ্চম লাইন নিমণরূপ:
فأغثني و أجرني يا مجير من السعير
হে (নাবী ) সা‘য়ির বা জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ দানকারী! তুমি আমার ফরিয়াদ শ্রবণ কর এবং আমাকে (জাহান্নাম থেকে) পরিত্রাণ দাও:’’!
সম্মানিত পাঠক!
মিলাদী আল্লামাদের এ কোন ‘আক্বীদাহ? তারা নাবীকে ফরিয়াদ শ্রবণকারী ও পরিত্রাণ দানকারী বলে সম্বোধন করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করেন। বলুন, নাবী ﷺ কি জান্নাত-জাহান্নামের মালিক? অথচ নাবী ﷺ নিজেই তো আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করেছেন। তাহলে তিনি কী করে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ দেবেন? কবরের আযাবের বিবরণ আসার পর হতে শেষকাল অবধী রাসূল ﷺ কবরের আযাব ও জাহান্নাম থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। দু‘আটি নিমণরূপ :
‘‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে কবরের আযাব হতে এবং জাহান্নামের আযাব হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’’ [। মুসলিম হা/৫৮৮ (১৩১)]
নিজ কলিজার টুকরা কন্যা ফাতিমাকে আমল করতে আদেশ করেন এবং ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে তিনি তার কোন কাজে আসবেন না বলে জানিয়ে দেন। তাহলে মিলাদীদের কোন গ্রান্টি আছে যে, নাবী ﷺ তাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন? মা ফাতিমার (রাঃ) এর উদ্দেশ্যে রাসূল ﷺ এর বাণী :
‘‘হে মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমা! আমার নিকট (মাল-সম্পদের) যা খুশী তুমি চেয়ে নাও। কিন্তু আল্লাহর হকের ক্ষেত্রে আমি তোমার কোন কাজে আসব না।’’ [। মুসলিম হা/২০৬ (৩৫১)]
এবারে বিনীত হয়ে জিজ্ঞেস, কোন দলীলের ভিত্তিতে মিলাদ পড়ুয়ারা নাবীর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চান? এ তো প্রকাশ্য শিরক এবং এর পরিণাম জাহান্নাম। প্রিয় নাবী ﷺ বলেন:
‘‘যে ব্যক্তি মারা গেল এ অবস্থায় যে, সে আল্লাহ ছাড়া অন্যকে তাঁর সমক্ষক করে ডাকে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’’ [। বুখারী, মুসলিম হা/৯২]
৩- মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ নামক বইয়ের শেষে সংযুক্ত ‘বারযাঞ্জি শরীফ’ পৃষ্ঠা নং ৬৫ এর উর্দু কছিদার পর্বের ২ নং লাইনে রাসূল ﷺকে খেতাব করে বলা হয়:
آّپ ھی مشکل کشا ھيں خلق کی حجات رواويں شافع روز جزاء ھيں جو کھو اس سے وراھيں
‘‘আপনিই মুশকিল দূরকারী, সৃষ্টির হাজত পুরাকারী। প্রতিদান দিবসে আপনি শাফা‘আতকারী, যা কিছু বল সবই তাঁর পশ্চাতে। অর্থাৎ সবার প্রথমে নাবী।’’
সম্মানিত পাঠক !
আল্লাহর যাবতীয় কাজ ও সিফাত যদি নাবীকে দিয়ে দেয়া হয় এবং আল্লাহর সিফাত সৃষ্টির আদি বা প্রথম যদি রাসূল ﷺ কে বলা হয়। তাহলে আল্লাহ কোথায় যাবেন? (নাউযুবিল্লাহ) মহান আল্লাহ স্বয়ং বলেন:
‘‘আচ্ছা বল দেখি, কে অসহায়ের ডাকে সাড়া দেন, দুঃখ কষ্ট দূর করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে পূর্ববর্তীদের স্থালাভিষিক্ত করেন? সেই আল্লাহর সাথে অন্য কোন ইলাহ থাকতে পারে কি? তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো।’’ [। সূরা আল আন‘আম/৬২] অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন :
‘‘যদি আল্লাহ তোমাকে বিপদাক্রান্ত করেন, তবে তিনি ব্যতীত তা দূর করার আর কেউ নেই। আর যদি তিনি তোমাকে কল্যাণ দ্বারা দান করতে চান, তাহলে এ ব্যাপারেও তিনি সকল কিছুর উপর পূর্ণ ক্ষমতাবান।’’ [। সূরা আল আন‘আম/১৭]
এ তো গেল মুশকিল কুশা’ সম্পর্কে তাদের ভ্রান্ত আক্বীদার কুরআনী জবাব। হেদায়াতের জন্য ইহাই যথেষ্ট। আর হেদায়াতের একচ্ছত্র মালিক আল্লাহ। তাদের দ্বিতীয় প্রার্থনা ﷺ শাফা‘আত। এটি উত্তম দাবী, তবে কার কাছে? কে শাফায়াতের একচ্ছত্র মালিক? মহান আল্লাহ বলেন :
قُلْ لِلّٰهِ الشَّفَاعَةُ جَمِيعًا
‘‘বলো! সকল প্রকার শাফ‘আত কেবল আল্লাহরই।’’ [। সূরা যুমার/৪৪]
নাবী ﷺ ক্বিয়ামতের দিন শাফাআত করবেন। [। মুসলিম হা/৩৩৮ (১১৯)] তবে তা আল্লাহর অনুমতি লাভের পর; আগে নয়। আল্লাহর অনুমতি ছাড়া সেদিন কেউ কথা বলতে পারবে না।
‘‘কে আছে তাঁর অনুমতি ছাড়া শাফা‘আত করতে পারে? ’’ [। সূরা বাক্বারা/২৫৫]
এখন আমরা জানলাম শাফা‘আতের একচ্ছত্র মালিক মহান আল্লাহ। মহানাবী ﷺ আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে শাফা‘আত করবেন। নাবীর শাফা‘আত পাওয়া বড়ই সৌভাগ্যের বিষয়। [। বুখারী হা/৬৫৭০ ফতহুলবারী,কায়রো ১১/৪২৬] তবে তা আল্লাহর কাছেই কামনা করতে হবে। আল্লাহ ভাগ্যে রাখলে সেদিন নাবীর শাফা‘আত পেয়ে ধন্য হবেন। আল্লাহর কাছে না চেয়ে নাবীর কাছে সরাসরি প্রার্থনা করা শিরক। কেননা, সেটি দু‘আ। আর আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে দু‘আ করা প্রকাশ্য শিরক। আল্লাহ বলেন:
فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللهِ أَحَدًا
‘‘অতএব, তোমরা আল্লাহর সাথে আর কাউকে আহবান করো না।’’ [। সূরা জ্বিন/১৮]
মিলাদের উক্ত পংক্তির তৃতীয় ভ্রান্তি হলো : নাবী ﷺ-কে সকল হাজত/ প্রয়োজন পূরাকারী বলে দাবী করা। এ ভ্রান্ত বিশ্বাসের খন্ডনে আমাদের পূর্বোক্ত বক্তব্যকেই আমরা যথেষ্ট মনে করছি। তাই এখানে আর সে কথার পুনরাবৃত্তি না করে এটুকু বলে শেষ করছি। যদি কেউ নাবীর শানে এ ধরনের ভুল বিশ্বাসসহ মারা যায় এবং মৃত্যুর আগে তাওবা না করে, তাহলে তার ঠিকানা জাহান্নাম। প্রিয় নাবী ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করে মারা গেল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। [। বুখারী, মুসলিম হা/৯২ (১৫০) ৯৩ (১৫১)] মহান আল্লাহ বলেন:
‘‘নিশ্চয়ই যে আল্লাহর সাথে শরীক করবে, আল্লাহ তার উপর জান্নাতকে হারাম করে দেবেন; আর তার ঠিকানা জাহান্নাম।’’ [। সূরা আল মায়েদা/৭২]
৪- ‘মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ নামক বইয়ের শেষে সংযুক্ত ‘বারযাঞ্জি শরীফ’ পৃষ্ঠা নং ৬৬ এর উর্দু কাছিদার ৫ম নং লাইনে রাসূল ﷺ কে খেতাব করে বলা হয়:
جان کنی کی وقت انا چھرہ آنور دکھانا
کلمت طيب برهانا ا پنے دامن ميں چهبانا
‘‘(হে নাবী! জান ক্ববজের সময় এসে আপনার চেহেরা মুবারক আমাকে দেখাবেন। আমাকে কালিমা তায়্যিবা পড়াবেন এবং আপনার পার্শ্বদেশে আশ্রয় দেবেন।’’
সম্মানিত পাঠক!
উক্ত পংক্তির অর্থ যা বুঝাচ্ছে, তা অতি মারাত্মক। মিলাদী কবি মিলাদ মাহফিলে পাঠের জন্য যে কবিতা উর্দু ও ফারসী ভাষায় রচনা করেছেন, তার মাঝে আক্বীদাগত ত্রুটিসমূহ নিমণরূপ:
(এক) নাবীকে হাজির-নাযির জানা,
(দুই) নাবীকে গায়েব জানেন বলে দাবী করা,
(তিন) নাবীর আশ্রয় কামনা করা।
প্রথমতঃ রাসূল ﷺ কে হাজির জানা :
এটি একটি অলীক ও ভ্রান্ত বিশ্বাস, যা কুরআন ও সুন্নাহর প্রকাশ্য বিরোধী। আর কুরআন ও হাদীসের বিরোধী কোন ভ্রান্ত বিশ্বাসকে কি কোন মুমিন গ্রহণ করতে পারে? মহান আল্লাহ তাঁর নাবীকে এরূপ ক্ষমতা দেননি। বরং নাবী ﷺ যে হাজির ও নাজির নন, একথার দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা আল কুরআনে এসেছে। মূসা (আঃ) এ ঘটনার বিবরণ প্রসঙ্গে আলোকপাত করতে যেয়ে মহান আল্লাহ তাঁর নাবী মুহাম্মাদ ﷺ কে বলেন:
‘‘মূসাকে যখন আমি নির্দেশনামা দিয়েছিলাম, তখন তুমি পশ্চিম প্রান্তে ছিলে না এবং তুমি প্রত্যক্ষদর্শীও ছিলে না।’’ [। সূরা আল-কবাসাস/৪৪]
মহান আল্লাহ আমাদেরকে যে বিশ্বাস শিখিয়েছেন, তাতে অতিরঞ্জন করার কোন সুযোগ নেই। নাবী ﷺ যে হাজির ও নাজির নন, এর প্রমাণে উপরোল্লিখত আয়াতের ন্যায় অনেক আয়াত আছে। হিদায়াতের জন্য কুরআনের একটি আয়াতই যথেষ্ট। এ সকল ভ্রান্ত বিশ্বাসীরা নাবীর কাছে ফরিয়াদ করেন। তাঁর কাছে নিজ মনের বাসনা পূরণের আবেদন করেন এবং নাবীকে ডাকতে থাকেন। এ সবই শিরকী কর্মকান্ড, যা মানুষকে চিরজাহান্নামী করে দেয়।
দ্বিতীয়তঃ নাবী ﷺ গায়েব জানেন-এ বিশ্বাস করা :
ইলমে গায়েব বা অদৃশ্য বিদ্যার একচ্ছত্র মালিকানা মহান আল্লাহর। এতে কোন সৃষ্টির সামান্যতম কোন অংশ নেই। যা মহান আল্লাহ কেবল ওহীর মাধ্যমে জানিয়েছেন, নাবী ﷺ কেবল তাই জানতেন। এর বেশী তিনি কোন কিছু জানতেন না। এমনকি তিনি ﷺ কখনও এরূপ অবান্তর দাবীও করেননি। কিন্তু মিলাদী শায়খুল হাদীসরা আল্লাহর খাস সিফাতকে তাঁর মাখলুক মুহাম্মাদ ﷺ কে দিয়ে বসেছেন। (নাউযুবিল্লাহ) কেননা, তারা নাবী ﷺ কে তাদের মৃত্যুর সময় হাজির হতে প্রার্থনা জানিয়েছেন। আর সঙ্গত কারণে একথা বিশ্বাস করা আবশ্যক হয়ে পড়ছে যে, কে কোন দিন কোথায় মরবে, তা নাবীর জানা আছে। (নাউযুবিল্লাহ)
উপরন্ত একই সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে একাধিক মিলাদী মারা গেলে নাবীকে অবশ্যই একাধিক রূপ ধারন করে একই সময়ে সব জায়গায় হাজির হওয়া আবশ্যক হয়ে পড়বে। আর তা কি একজন মাখলুকের পক্ষে সম্ভব? অথচ মহান আল্লাহ যে পাঁচ (৫) বিষয়ের ইলম কেবল তাঁরই হাতে রেখে দিয়েছেন, যার একটি হলো কার মৃত্যু কোথায় কোথায় হবে। এটা কী করে নাবী ﷺ জানবেন? এতো আল্লাহর সিফাত, যাতে তিনি একক ও অদ্বিতীয়। মিলাদীরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ কে এক-ই স্বত্তা বলে বিশ্বাস করছেন? (নাউযুবিল্লাহ)
উল্লেখ্য যে, সে পাঁচটি গায়েব নিমণরূপ :
১) ক্বিয়ামত কবে হবে,
২) বৃষ্টি কখন কোথায় হবে,
৩) মায়ের জরায়ূতে কী আছে,
৪) আগামীকাল মানুষ কী কামাবে,
৫) এবং কোথায় কার মৃত্যু হবে। [। সূরা লুকমান এর সর্বশেষ আয়াত ও তার তাফসীর।]
লক্ষ্য করুন! ইলমে গায়েব সম্পর্কে আসমানী বাণী। মহান আল্লাহ বলেন :
‘‘গায়েবের চাবিকাঠি আল্লাহর নিকটে, তিনি ছাড়া আর কেউ তা অবগত নয়।’’ [। সূরা আন‘আম/৫৯]
কুরআন বলছে ইলমে গায়েব এর খাযানা কেবল আল্লাহর হাতে; অন্য কারো তাতে কোন ভাগ নেই। তাহলে মিলাদী শায়খুল হাদীসেরা কোন দলিলের ভিত্তিতে এরূপ বিশ্বাস করেন? নাবী ﷺ গায়েব জানতেন বলে কোন দাবী করেছেন কি? না কি মিলাদ পড়ুয়ারা কোন তন্ত্র-মন্ত্রের সাহায্যে আজগুবী বিশ্বাস বানিয়ে নিয়েছেন। মূলত নাবী ﷺ আল্লাহর দূত। ওহীর বাণী জনগণের কাছে পৌঁছানোই তাঁর একমাত্র কাজ। তিনি কখনও গায়েব জানেন- এ দাবী করেননি। মহান আল্লাহ তাঁর রাসূল ﷺ কে বলতে বলেন :
‘‘বলো! আমি তোমাদেরকে একথা বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার আছে। আমি গায়েব বা অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জানি না। আর আমি তোমাদেরকে এও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা। আমিতো কেবল তাই অনুসরণ করি, যা আমার কাছে ওহী করা হয়।’’ [। সূরা আনআম/৫০]
তৃতীয়তঃ নাবীর আশ্রয় প্রার্থনা :
আশ্রয় প্রার্থনা কি দুআ নয়? আর দু‘আ কি ইবাদত নয়? নিশ্চয়ই; বরং ইবাদতের সার। প্রতি সালাতে আমরা সুরা ফাতিহা পাঠকালে আল্লাহর কাছে নিজ স্বীকারোক্তিতে বলি। (হে আল্লাহ) আমরা কেবলমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং কেবলমাত্র তোমারই কাছে সাহয্য চাই। এ দাবীর পর কী করে আবার নাবীর কাছে সাহায্য কামনা করতে পারি? অনুগ্রহ ও আশ্রয় প্রার্থনা সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে আমরা এ বইয়ে সবিস্তারে আলোকপাত করেছি। তাই এখানে আর পূণরাবৃত্তি না করে শুধু এটুকু বলেই শেষ করছি, এভাবে শিরক করে কিভাবে মিলাদীরা কিয়ামতে নাবী ﷺ এর শাফাআত পাবেন? নাবীতো মুশরিকদের জন্য শাফাআত করবেন না। হে মিলাদী ভাইয়েরা! সময় থাকতে সতর্ক হোন।!!
৫- মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নামক বইয়ের শেষে সংযুক্ত ‘বারযাঞ্জি শরীফ পৃষ্ঠা নং ৬৭ এর উর্দু কাসিদার (শিরোনামে কাছিদায়ে ইসলাম) প্রথম লাইনে রাসূল ﷺ কে খেতাব করে বলা হয়:
نور حق سے نور أحمد سب سے بهتر سب سے أمجد
هو درود حق ان په بے حد صلوات الله عليك
হক্ব তা‘আলার (আল্লাহর) নূর হতে আহমদের (রাসূল ﷺ এর) নূর সর্বোত্তম এবং সর্বোচ্চ। তার উপর বর্ষিত হোক আল্লাহর অসংখ্য দরূদ, হে নাবী তোমার উপর আল্লাহর শান্তি ধারা বর্ষিত হোক!
সম্মানিত পাঠক !
অনুধাবন করুণ, মিলাদীদের কী অবান্তর বিশ্বাস? তাদের একশ্রেণী বলেন নাবী ﷺ আল্লাহর নূর হতে তৈরি, অর্থাৎ তিনি আল্লাহর নূরে একটি অংশ। কিন্তু একি তায়াজ্জুব, কবি মিলাদ মহফিলে পড়ার জন্য উপরোক্ত যে কবিতা রচনা করেছেন, তাতে বলা হয়েছে, নাবীর নূর আল্লাহর নূরের চেয়ে বেশী উত্তম। তাদের কথামতে নাবী ﷺ আল্লাহর নূরের অংশ হলে কি করে অংশ বা শাখামূল নূরের চেয়ে বেশী উত্তম হতে পারে? না কি তারা বলতে চান, নাবীই আসল নূর আর আল্লাহ তার অংশ বা শাখা? (নাউযুবিল্লাহ) দেখা যায়, কবিতার এ পংক্তিতে নাবীর নূরকে আল্লাহর চেয়েও উত্তম বলা হয়েছে। আবার সাথে সাথে আল্লাহর কাছে নাবীর জন্য শান্তিধারা কামনা করা হয়েছে। তাদের কথা কি স্ববিরোধী নয়? আর সর্বোত্তমের জন্য কি উত্তমের কাছে প্রার্থনা করা যায়? তাদের এ ধরনের অবান্তর আক্বীদাহ ও বিশ্বাসের জন্য বড়ই পরিতাপ।!
আসুন আমরা সংক্ষেপে হলেও বিষয়টি কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে পরীক্ষা করে দেখি। আমাদের সমাজের কিছু লোকের ধারণা যে, মুহাম্মাদ ﷺ নূরের তৈরি, তিনি মানুষ নন। তাদের কারো কারো বক্তব্য হচ্ছে : তিনি আল্লাহর জাতি নূরের অংশ বিশেষ। তারা আরও সহজ করে বলে থাকেন, আল্লাহর নূরে মুহাম্মাদ তৈরি, আর মুহাম্মাদের নূরে সারা জাহান তৈরি। এ প্রসঙ্গে কুরআন ও হাদীসের বক্তব্য কি?
মহান আল্লাহ বলেন:
قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِّنَ الرُّسُلِ
‘‘বলুন আমি রাসূলের মাঝে নতুন নই।’’ [। সূরা আহকাফ/৯] বরং তার পূর্বে আরও অনেক নাবী ও রাসূল অতিবাহিত হয়েছেন। এরশাদ হচ্ছে,
‘‘তাদেরকে তাদের নাবী ও রাসূলগন বললেন, আমরা তোমাদের মতই মানুষ; কিন্তু আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের মধ্য হতে যার প্রতি ইচ্ছা অনুগ্রহ করে থাকেন।’’ [। সূরা ইব্রাহীম/১১]
আর মুহাম্মাদ ﷺ কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণকারী একজন মানুষই ছিলেন। আল্লাহ বলেন :
لَقَدْ جَآءَكُمْ رَسُولٌ مِِّنْ أَنْفُسِكُمْ
‘‘নিশ্চয়ই তোমদের নিকট তোমাদের মধ্য হতে একজন রাসূল আগমন করেছেন।&’’ [। সূরা তাওবা /১২৮]
কুরাইশের কাফেররা মুহাম্মাদ ﷺ এর কাছে অলৌকিক কিছু দাবী করলে তাদের অবান্তর দাবীর জবাব শিখিয়ে দিয়ে আল্লাহ বলেনঃ
‘‘আপনার পূর্বে আমি যে সকল নাবী ও রাসূল প্রেরণ করেছি, তারা সকলেই তো আহার করতেন এবং হাট-বাজারে যাতায়াত করতেন।’’ [। সূরা ফুরক্বান/২০]
উপরে বর্ণিত আয়াতসমূহ দ্বারা এটা স্পষ্ট প্রমানিত হয় যে, প্রিয় নাবী ﷺ অন্যান্য নাবী ও রাসূলের ন্যায় একজন মানুষ ছিলেন। এ প্রসঙ্গে তার যবান নিঃসৃত বানী সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। সালাতে ভুল হওয়া বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে তিনি এরশাদ ফরমান :
‘‘নিশ্চয় আমি কেবল তোমাদের মত একজন মানুষ। তোমরা যেমন ভুলে যাও, আমিও তেমনি ভুলে যাই। অতএব, যখন আমি ভুলে যাই তখন তোমরা আমাকে স্বরণ করে দিও।’’ [। মুসলিম হা/৫৭২ (৩৯)]
‘‘মুহাম্মাদ ﷺ মানুষের সিলসিলার একজন মানুষ ছাড়া আর কিছুই নন। তিনি নিজের কাপড় নিজেই ধৌত করতেন, ছাগলের দুধ দোহন করতেন এবং নিজের খিদমত নিজেই করতেন।’’ [। শামায়েলে তিরমিযি, আহমাদ হা/২৫৬, বুখারী আদবুল মুফরাদ হা/ ৫৪৫১, সহীহ ইবনে হিববান হা/২১৩৬ সিলসিলাতুল আহাদীসুস সহীহা লিল আলবানী/৬৭১]
তবে তিনি বিশেষ করে মুমিনদের জন্য আল্লাহর খাছ অনুগ্রহ হিসেবে দুনিয়ার নবুওয়াত ও রিসালাতের দায়িত্ব নিয়ে প্রেরিত হয়েছিলেন। মহান আল্লাহ বলেন,
‘‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য হতে একজন রাসূল প্রেরণ করলেন। যিনি তাদের নিকট আল্লাহর কিতাব পাঠ করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং কিতাব ও জ্ঞানের কথা শিক্ষা দেন। যদিও তারা ইতিপূর্বে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে পতিত ছিল।’’ [। সূরা আলে ইমরান/১৬৪]
উপরন্তু তিনি জগতবাসীর জন্য আল্লাহর রহমত ছিলেন। মহান আল্লাহ বলেন:
‘‘আর আমি আপনাদের সমগ্র জাহানের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’’ [। সূরা আল আম্বিয়া/১০৭]
অতএব, পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পর এ বিষয়ে ভিন্নমত প্রকাশের নূন্যতম অধিকার আর কারো থাকলো না। এর পরও কেউ মুহাম্মাদ ﷺ কে আল্লাহর জাতি নূরের তৈরি ইত্যাদি অবান্তর কথা বলে বা বিশ্বাস করে, তাহলে সে যেন কুরআনকে মিথ্যায়ন করল এবং আল্লহর শরীক বা অংশীদার আছে এই শিরকী আকীদাহ পোষণ করল। (নাউযুবিল্লাহ)। হ্যাঁ! তর্কের খাতিরে কেউ বলতে পারেন যে, মহান আল্লাহ তো এরশাদ করেছেন :
‘‘আল্লাহর পক্ষ হতে তোমাদের নিকট নূর/আলো সুস্পষ্ট কিতাব সমাগত হয়েছে।’’ [। সূরা আল মায়েদা/১৫]
আলোচ্য আয়াতে নূর দ্বারা কী উদ্দেশ্য করা হয়েছে, তা বুঝা দরকার। এখানে নূর দ্বারা ইসলাম উদ্দেশ্য। [। তাফসীর আল-মুনীর ‘দারুল ফিকর’ বাইরুত৬/১৩৩]
কেউ কেউ নূর দ্বারা মুহাম্মাদ ﷺ কেও উদ্দেশ্যে করেছেন। তবে পরবর্তী আয়াতের প্রতি লক্ষ্য করলে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আলোচ্য আয়াতে নূর দ্বারা আল্লাহপ্রদত্ত আসমানী হিদায়াত উদ্দেশ্য। এরশাদ হচ্ছে :
‘‘আল্লাহ তদ্বারা ঐ লোকদেরকে হিদায়াত দান করেন, যারা শান্তির পথে তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে। আর তাদেরকে তিনি স্বীয় অনুমতিক্রমে কুফুরের অন্ধকার হতে ইসলামের আলোর দিকে বের করে আনেন এবং তাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।’’ [। সূরা আল-মায়েদা/১৬]
তাছাড়া এ কথা সহজেই বুঝা যায় যে, এখানে নূর দ্বারা কুরআনই উদ্দেশ্য। [। ইবনে কাসীর ‘‘তাফসীরুল কুরআনিল আজীম’’ দারু-মাকতাবতিল হিলাল বাইরুত ২/২৬৮]
কেননা, তৎপরবর্তী আয়াতে নূর ও কিতাবের প্রতি ইঙ্গিত করার জন্য মহান আল্লাহ একবচনের সর্বনাম ব্যবহার করেছেন। যদি এটা ভিন্ন দুটি বিষয় বুঝাত তাহলে দ্বিবচনের সর্বনাম ব্যবহার সঙ্গত হত। এছাড়া কুরআনে কারীমে নূর দ্বারা কুরআনকেই বুঝানো হয়েছে, যার দলিল আমাদের কাছে স্পষ্ট বিদ্যামান। এ মর্মে মহান আল্লাহ বলেন:
‘‘অতএব তোমরা আল্লাহ, তার রাসূল এবং ঐ নূরের প্রতি ঈমান আন, যা আমি নাযিল করেছি। আর তোমরা যা কর, সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবগত।’’ [। সূরা আত তাগাবুন/৮]
তাছাড়া যদি নূর দ্বারা মুহাম্মাদ ﷺ কে উদ্দেশ্য করা হয়, তাহলে তদ্বারা তিনি যে আল্লাহর জাতি নূরের তৈরি এ রকম শিরকী বিশ্বাস প্রমাণিত হয় না। যেমন আল্লাহর বাণী, আপনাকে আমি সমগ্র জগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছি’’ আয়াত দ্বারা নাবীর শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ বুঝায়। তেমনি নূর দ্বারা কুফুরী ও যুলমাত দূরকারী আলোকবর্তিকা হিসেবে তাঁকে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তা সহজেই বুঝা যায়। যেমন আল্লাহ বলেন,
‘‘হে নাবী! আমি অবশ্যই তোমাকে সাক্ষী, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে এবং আল্লাহর পথে তাঁর অনুমতি সাপেক্ষে আহবানকারী ও উজ্জল প্রদীপরূপে প্রেরণ করেছি।’’ [। সূরা আল আহযাব/৪৫-৪৬]
অতএব এটা স্পষ্ট যে. তিনি হিদায়েতের উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। ‘আল্লাহর নুরে মুহাম্মাদ পয়দা ও মুহাম্মাদের নূরে সারা জাহান পয়দা’ এটা হিন্দুদের বহু ঈশ্বরবাদী বিশ্বাসের অনুরূপ। মহান আল্লাহ এসব হতে পবিত্র। তিনি সকল প্রকারের অংশিদারিত্বের দূরতম সম্ভাবনাকেও স্পষ্ট ভাষায় নাকচ করে দিয়ে এরশাদ ফরমান :
‘‘(হে মুহাম্মদ) তুমি বলো, তিনিই আল্লাহ, তিনি এক ও একক। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তাঁর থেকে কেউ জন্ম নেয়নি, তিনিও কারো থেকে জন্মগ্রহণ করেননি। আর তাঁর সমতুল্য দ্বিতীয় কেউ-ই নেই।’’ [। সূরা ইসলাস]
উল্লেখ্য যে, নাবী ﷺ নূরের তৈরি- এ অলীক বিশ্বাসের দাবীদারগণ তাদের ভিত্তিহীন মতের সমর্থনে আরেকটি দলীল পেশ করে থাকেন। আর তা হচ্ছে :
‘‘যে ব্যাক্তি আমার নামে জেনে শুনে মিথ্যা বলবে, সে যেন তার ঠিকানা স্থির করে নেয় জাহান্নাম।’’ [। বুখারী (আরবী) ফতহুলবারী-১/৫৭২ হা/৩৪৬১]
আর এটা কত স্পষ্ট কথা যে, মহানাবী ﷺ পিতা আব্দুল্লাহর ঔরসে ও মাতা আমিনার কোলে জন্মলাভ করেন। [। আর রাহিকুল মাখতুম (আরবী) দারুল মুআইয়্যিদ জিদ্দা/৫৪] অতঃপর ২৫ বছর বয়সে খাদিজা (রাঃ) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তখন খাদীজার বয়স ছিল চল্লিশ বছর।
তার গর্ভে পর্যায়ক্রমে ছেলে আল কাবসেম, কন্যা, যয়নাব, রুকাইয়্যা, উম্মে কুলসুম ও ফাতিমা জন্ম লাভ করেন। অতঃপর ছেলে আব্দুল্লাহ জন্ম নেন। তাঁকে তাইয়্যাব ও তাহের নামে ডাকা হতো। [। প্রাগুক্ত /৫৪] আর তৃতীয় পুত্র ইব্রাহীম মারিয়া ক্বিবতিয়ার কোলে জন্ম নেন। তিন পুত্রই বাল্যকালে মারা যান। [। মুখতাসার আল-ফিকহুল ইসলামী’’ বায়তুল আফকার আদ দাউলিয়া-রিয়াদ/৮২] এ সকল প্রকাশ্য দলীলের পর কী করে মুহাম্মাদ ﷺ কে নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়। আল্লাহ আমাদের সু-বুদ্ধির উদয় ঘটিয়ে দিন। আমীন!
৬- মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস নামক বইয়ের শেষে সংযুক্ত ‘বারযাঞ্জি শরীফ’ পৃষ্ঠা নং ৬৮ এর উর্দু কাছিদার ৭ম লাইনে রাসূল ﷺ কে খেতাব করে বলা হয়:
خدا عاشق تمهارا اور محبوب تم اسكى
هى ايسا مرتبه كس كا سناؤ يا رسول الله
‘‘আল্লাহ তোমার আশিক, আর তুমি তার প্রিয়। এমন মর্যদার অধিকারী আছে কি কেউ শোনও হে আল্লাহর রাসূল!’’
সম্মানিত পাঠক!!
উপরোক্ত পংক্তিতে যে বিশ্বাসের কথা উল্লেখিত হয়েছে, তা নিমণরূপ:
(১) মহান আল্লাহকে খোদা বলা হয়েছে ,
(২) মহান আল্লাহকে রাসূল ﷺ এর ‘আশিকব বলা হয়েছে,
(৩) রাসূল ﷺ হাজির এ বিশ্বাস পোষণ করা হয়েছে।
প্রথমত : খোদ ফারসী শব্দ। এটি আল্লাহর কোন সিফাতী নাম নয়। যদিও অর্থগত দিক থেকে আল্লাহর একটি সিফাতকে বুঝায়। আল্লাহর নাম ও সিফাতসমূহ প্রসঙ্গে একজন মুমিনের আক্বীদাহ হলো : আল্লাহর নাম ও সিফাত তাওক্বীফি, যা কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রমাণের উপর নির্ভরশীল। যে নাম আল্লাহ তা‘আলা নিজের জন্য এবং তাঁর রাসূল ﷺ আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করেছেন, তা হুবাহুব বিশ্বাস করা। এতে কোনরূপ পরিবর্তন ও পরিবর্ধন না করা। কুরআন ও হাদীসে যে নাম নেই, সে নামে আল্লাহকে না ডাকা। কেননা, আল্লাহর নামের বেলায় নিজ থেকে বাড়াবাড়ি করা জায়েজ নয়।
দ্বিতীয়ত : ‘আশিক্ব অর্থ প্রেমে পাগল। আর মহান আল্লাহ এহেন পাগলামীর দোষ হতে পবিত্র ও সু-মহান। আল ইশক শব্দের কর্তৃবাচ্য বিশেষ্য হচ্ছে ‘আশিক। এটি আরবী শব্দ হলেও কুরআন ও হাদীসের পরিভাষা নয়। মূলত এটি তথাকথিত সূফীবাদীদের ব্যবহৃত পরিভাষা। ইশকের সর্বোচ্চ মঞ্জিল হলো ফানা। অর্থাৎ মা‘শুকের জন্য নিজে নিঃশেষ হয়ে যাওয়া। আর এটি মহান আল্লাহর শানে কখনও শোভনীয় নয়।
পক্ষান্তরে কুরআন ও হাদীসে ভালোবাসা বা পছন্দ বুঝাতে ( الحب ) হুব শব্দটি এসেছে, যা মুহাববাত বা ভালোবাসা অর্থে আসে। আর মুহাববাত কোন মাতলামীর বস্তু নয়; বরং এটি সর্বজন স্বীকৃত শিষ্টাচারপূর্ণ আদর্শিক শব্দ। মুহাববাতের সর্বোচ্চ মঞ্জিল হলো ইহসান। কাজেই মহান আল্লাহর শানে দোষযুক্ত অপূর্ণ কোন গুণজাতীয় পরিভাষা ব্যবহার করা যাবে না।
তৃতীয়ত : রাসূল ﷺ কে হাজির জানা। এটিও একটি ভ্রান্ত বিশ্বাস। এ প্রসঙ্গে আমরা পূর্বোক্ত নিবন্ধে সবিস্তারে আলোচনা করেছি। সঙ্গত করণে আর সে বিষয়ের পুনরাবৃত্তি সমীচীন মনে করছি না।
৭- মিলাদ শরীফের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ নামক বইয়ের শেষে সংযুক্ত ‘বারযাঞ্জি শরীফ’ পৃষ্ঠা নং ৬৮ এর উর্দু কাসিদার ৯ম লাইনে রাসূলকে ﷺ খেতাব করে বলা হয়:
يا مصطفى و امجتبى إرحم على عصياننا
‘‘হে মুস্তফা ও মুজতাবা! পাপের উপর আমাদের প্রতি রহম করো।’’
মুস্তফা ও মুজতাবা, দুটি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সিফাত। যার অর্থ প্রায় কাছাকাছি। অর্থাৎ নির্বাচিত বান্দাহ। মিলাদী কবি রাসূল ﷺ কে আহবান করেছেন এবং তাঁর কাছে গোনাহের ক্ষমা চেয়েছেন। এক্ষণে গোনাহের ক্ষমাকারী কি আল্লাহ না তাঁর রাসূল ﷺ? এতো গায়রুল্লাহর কাছে হাত পাতা। আর তা শিরক। এ ব্যাপারে আমরা ১নং জবাবে যথেষ্ট দলিল পেশ করেছি।
বারযাঞ্জি শরীফের বেশীরভাগ কাছিদা/কবিতা আক্বীদাগত ত্রুটিতে ভরা। এসব কাসিদায় নাবীকে উলুহিয়্যাতের স্থান দেয়া হয়েছে। কোথাও তাঁর কাছে ফরিয়াদ করা হয়েছে। কোথাও জাহান্নাম থেকে মুক্তি কামনা করা হয়েছে। কোথাও আবার মৃত্যুর সময় এসে দেখা দিতে এবং কালিমা পাঠ করাতে আরজ পেশ করা হয়েছে। মোটকথা এভাবে আল্লাহর এসব হতে পূতঃপবিত্র। তিনি শিরক ও মুশরিককে কোন অবস্থাতেই আশ্রয় দেবেন না। হাদীস কুদসীতে আছে,
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি সকল অংশীদার থেকে নিজেই স্বয়ং সম্পূর্ণ, আমার কোনও অংশীদারের প্রয়োজন নেই। যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে, যার মধ্যে সে আমার সাথে অন্যকে অংশীদার করে, আমি তাকে এবং তার শিরককে প্রত্যাখ্যান করি। [। মুসলিম হা/২৯৮৫]
আমরা অতি সংক্ষেপে তথাকথিত ‘বারযাঞ্জি শরীফ এর মূল বক্তব্য পাঠকদের খেদমতে পেশ করলাম এবং কুরআন ও সহীহ হাদীস হতে তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা বিশ্বাসের প্রামাণ্য জবাব দিলাম। মানতে চাইলে এসব স্পষ্ট দলিলসমূহ যথেষ্ট। যে বা যারা নিজেদেরকে আলিম উলামা বলে দাবী করেন, হক প্রকাশের পর বাতিলতার আশ্রয় নেয়া তাদের পক্ষে বড়ই গর্হিত কাজ বলে আমরা মনে করি। হক গ্রহণ না করলে তো গোমরাহী আবশ্যক হয়ে পড়বে। মহান আল্লাহ বলেন :
فَمَاذَا بَعْدَ الْحَقِّ إِلَّا الضَّلَالُ
‘‘অতঃপর হক্বের পর গোমরাহী ছাড়া আর কী রইল।’’ [। সূরা ইউনুস /৩২]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/265/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।