মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
৪১. আপত্তিকারীগণ বলেন, শাস্তির এ বিধান দ্বারা অপরাধীর ব্যক্তিত্বকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে এবং একই অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদেরকে একই শাস্তির যোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে। অথচ তাদের মন মানসিকতা, স্বভাব-প্রকৃতি, পরিবেশ-পারিপার্শিকতা, নীতি-নৈতিকতা, শিক্ষা-দীক্ষা ও সমাজ-সামাজিকতা ইত্যাদির মাপকাঠি এক নয়, বিভিন্ন প্রকার। তাই তাদেরকে অপরাধ থেকে নিবৃত্ত করার পন্থা পদ্ধতিও এক হতে পারে না, বিভিন্ন রকম হওয়া স্বাভাবিক। এ এমন একটি বিষয়, যা কোনো মতেই উপেক্ষা করা যায় না। এ কারণে সকল অপরাধীর একই শাস্তি না হয়ে প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন শাস্তি হওয়া যুক্তিসঙ্গত। তা ছাড়া অপরাধী একজন মানসিক রোগী, ভংগুর ব্যক্তিত্ব ও ভারসাম্যহীন স্বভাব-প্রকৃতির লোক। সুতরাং তাকে উপরোক্ত অবস্থা ও পরিস্থিতির আলোকে বিচার করতে হবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে রোগীর চিকিৎসার মনোভাব নিয়ে। তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণ কিংবা সুস্থ্য-সবল পরিপূর্ণ মানুষ মনে করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।
আপত্তির জবাব
ইসলামী শরী‘আত শাস্তির বিধান প্রবর্তনকালে অপরাধীর ব্যক্তিত্বকে উপেক্ষা করে নি; বরং তা বিবেচনায় রেখেছে ও মূল্যায়ন করেছে। আপত্তিকারীদের সাথে আসল মতভেদ অপরাধীর ব্যক্তিত্বের পরিধি ও বিস্তৃতি নিয়ে। শরী‘আত বলছে, অপরাধী যদি বালেগ হয়, বিবেকবান হয় ও স্বাধীন মতামতের অধিকারী হয়, সেই সাথে চৈতন্যহীন ও পাগল না হয়, কারও চাপে বাধ্য না হয় এবং নিরূপায় ও অজ্ঞ না হয় কেবল তখনই সে শাস্তির যোগ্য হবে। এগুলোই তার ব্যক্তিত্বের বিবেচনার বিষয়। এর কোনো একটি অবস্থা তার মধ্যে পাওয়া গেলে হদ রহিত হয়ে যায় এবং তার পরিবর্তে অন্য শাস্তি দেওয়া হয়, যার বিবরণ ফকীহগণের কিতাবে লিখিত আছে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যভিচার ও চুরির শাস্তিতে শরী‘আত অপরাধীর অবস্থা বিবেচনা করেছে। সুতরাং বিবাহিত ব্যভিচারীর শাস্তি করা হয়েছে রজম আর অবিবাহিত ব্যক্তির মধ্যে কুমারত্ব থাকায় সে এটুকু ছাড় পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত। কিন্তু বিবাহিত ব্যক্তি এ ছাড় পাওয়ার যোগ্য হতে পারে না। অনুরূপ সাধারণ চুরি বা ছোট চুরির ক্ষেত্রে (ফকীহদের পরিভাষায় سرقة الصغرى ) হাত কাটার বিধান আছে। পক্ষান্তরে বড় চুরি বা ডাকাতির বেলায় ( سرقةالكبرى ) শাস্তি বৃদ্ধি করে হাত ও পা কাটার বিধান করা হয়েছে। এটা হলো সে সীমারেখা যেখানে এসে শরী‘আত থেমে গেছে এবং জানিয়ে দিয়েছে, অপরাধীর ব্যক্তিত্ব কতটুকু বিবেচনা করা যাবে এবং তার অবস্থা ও পরিবেশের কতটুকু উপেক্ষা করা হবে না।
এরপর থাকে অপরাধীর স্বভাব, পরিবেশ, ঐতিহ্য, শিক্ষা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য। আপত্তিকারীগণ এগুলোকে অপরাধীর ব্যক্তিত্বের অন্তর্ভুক্ত গণ্য করেন। কিন্তু শরী‘আত তা স্বীকার করে না। কারণ, এর মধ্যে কোনোটিই এসব অপরাধে জড়িত হওয়ার জন্য ওযর হতে পারে না এবং অপরাধী যদি বলেগ, বিবেকবান এবং সিদ্ধামত নেওয়ার যোগ্য হয় তাহলে এসবের দ্বারা তার নির্ধারিত শাস্তি হ্রাসও হতে পারে না। তাছাড়া এ বৈশিষ্ট্যগুলো সদা পরিবর্তনশীল। কোনো মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয় এবং এর কোনো চুড়ান্ত সীমাও নেই। তাই এগুলো যদি বিবেচনায় নেওয়া হয় তাহলে সমাজে অপরাধ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং অপরাধীরা শাস্তির আওতা থেকে বেরিয়ে যাবে। ফলে ছড়িয়ে পড়া এ ভয়াবহ অপরাধের কারণে সমাজ জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠতে বাধ্য হবে। অথচ শাস্তির ভয় তাদেরকে অপরাধ থেকে সংযত থাকতে বাধ্য করত।
আপত্তিকারীগণ সহানুভুতি দেখিয়ে শাস্তিকে রোগীর চিকিৎসার সাথে তুলনা করতে আগ্রহী। আমাদের বক্তব্য হলো, এরূপ সহানুভূতি দেখান শরী‘আতেই একটি প্রতিষ্ঠিত রীতি এবং আলোচ্য শাস্তি বিধানেও তা বিদ্যমান। কারণ শাস্তির মূল দৃষ্টিভঙ্গীই হলো রহমত ও দয়া প্রদর্শন। কিন্তু তারা লক্ষ্য করেন নি যে, চিকিৎসার মধ্যে এমন শর্ত দেওয়া নেই যে, তা রোগীর নিকট কেবল সুস্বাদু ও তৃপ্তিকরই হবে; বরং কখনও কখনও বিস্বাদ ও তিক্তও হয়ে থাকে। চিকিৎসার স্বার্থে রোগীকে অনেক সময় বিভিন্ন রকম অস্ত্রোপচার ও অঙ্গচ্ছেদ করা প্রয়োজন হয়। তা সত্ত্বেও এ কাজকে রোগীর জন্য কল্যাণ ও মঙ্গল বলে গণ্য করা হয়। কেউ একে প্রতিশোধ বলে মনে করে না। ইসলামের শাস্তি ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও এই একই কথা। শাস্তি সেসব লোকের চিকিৎসা হিসেবে দেওয়া হয় যাদেরকে অন্যায় ও পাপকাজ থেকে বিরত রাখতে আদেশ-উপদেশ, সতর্ক-সাবধানরূপ চিকিৎসায় কোনো কাজ হয় নি। অবশেষে তাদের ওপর শাস্তিরূপ চিকিৎসা প্রয়োগ করা জরুরী হয়ে পড়ে। কারণ, উপদেশ চিকিৎসা বারবার প্রয়োগ করলেও কারও কারও ক্ষেত্রে কোনো ফায়দা যে হয় না, অপরাধে জড়িত হওয়াই তার প্রমাণ। বারবার উপদেশ দিয়ে কেবল অপাত্রে ঘি ঢালাই হয়েছে। সে জন্য বিকল্প চিকিৎসা অবলম্বন করা অপরিহার্য। সে চিকিৎসার নাম শাস্তি।
দ্বিতীয় আপত্তি ও তার জবাব
৪৩. সামগ্রিক শাস্তি সম্পর্কে সাধারণভাবে দ্বিতীয় আপত্তি: ইসলামের শাস্তি ব্যবস্থা অত্যন্ত কঠোর ও নিষ্ঠুর। অপরাধের পরিমাণের সাথে শাস্তির কষ্ট-যাতনার কোনো সামঞ্জস্য নেই। এটা সুবিচার নয় বরং যুলুম।
৪৪. এ আপত্তি অগ্রহণযোগ্য ও পরিত্যাজ্য। স্মরণ রাখা দরকার যে, শাস্তিটা কোনো বৈধ পূণ্যময় কর্মের বিনিময় নয় যে, তাতে কঠোরতা ও কষ্ট-যাতনা থাকবে না। শাস্তি হলো কোনো অপকর্ম বা ধবংসাত্মক কাজের সংকল্প করা এবং সেই সংকল্প কাজে পরিণত করার বদলা। তাই এর মধ্যে কষ্ট-যাতনা অবশ্যই থাকবে। অপরাধের সাথে শাস্তির যন্ত্রণার সামঞ্জস্য না থাকার ও সুবিচারপূর্ণ না হওয়ার যে অভিযোগ তারা দেন তা সঠিক নয়। আমার ধারণায় এ অভিযোগের কারণ, তারা তাদের দৃষ্টিকে কেবল শাস্তির মধ্যে নিবব্ধ রেখেছেন। অপরাধের দিকে তাকান নি এবং তার চিন্তাও করেন নি। যদি তারা অপরাধের সাথে শাস্তিকে মিলিয়ে দেখতেন এবং উভয়টার প্রতি সমানভাবে নজর দিতেন তাহলে অবশ্যই তারা অপরাধের সাথে শাস্তির সামঞ্জস্য ও সুবিচার প্রতিষ্ঠিত দেখে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতেন।
উদাহরণস্বরূপ আমরা যদি একজন চোরের কর্মধারা বিশ্লেষণ করি, তা হলে দেখতে পাই, রাতের আঁধারে সে চুপিসারে বেরিয়ে যাচ্ছে, যে বাড়িতে চুরি করবে তার প্রাচীর গাত্রে সিঁধ কাটছে, ঘরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করছে, অস্ত্র উঁচিয়ে ঘুমমত বাসিন্দাদের ভীত সন্ত্রস্ত করছে, বাড়ির ঐতিহ্য ধ্বংস করে ফেলছে। কেউ মোকাবেলায় আসলে তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে আমরা যদি সে ঘরের নারীর কথা চিন্তা করি তাহলে দেখবো মূহুর্তের মধ্যে তার নিদ্রা ভেঙ্গে গেছে, চোখ খুলতেই দেখতে পায় সামনে এক ভয়াল মূর্তি অস্ত্র উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এরূপ ভয়ংকর দৃশ্য দেখে তার জীবনের ওপর দিয়ে বয়ে যায় আতংক ও অস্থিরতার ঝড়। ঘরের শিশু-কিশোরদের কথা যদি ভাবি, তাহলে দেখবো, মায়ের চিৎকারে তাদের ঘুম ভেঙ্গে গেছে। ঘরের মধ্যে বিভৎস ভীতিকর অবস্থা দেখে ভয়ে কাঁপছে। তারা দেখছে, চোরের চক্ষুদ্বয় থেকে ক্রোধের আগুন বিচ্ছুরিত হচ্ছে। সে সাথে তাদের ওপর সে নির্যাতন চালাচ্ছে বা প্রতিহত করছে। আমরা আরও দেখতে পাই, কোথাও চুরির ঘটনা ঘটলে সেখানকার সকল মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা ভয়ে সংকুচিত হয়ে যায়। কেননা চোরের লিপ্সা অর্থ ও মাল আহরণ করা। এরূপ অর্থ ও মাল তাদের সবার কাছেই মজুদ আছে। তাই নিরূপায় হয়ে তারা সহজ শিকারে পরিণত হয়ে। চোরের কর্মকাণ্ড যে অবস্থার সৃষ্টি করল সেগুলো বা তার কিছু অংশ নিয়ে যদি আমরা চিন্তা করি এবং একই সাথে তার পাপিষ্ট হাত কর্তনকে মিলিয়ে দেখি তাহলে কিছুতেই বলা যাবে না যে, তার শাস্তি যুলুম ও অবিচার মূলক হয়েছে কিংবা বলা যাবে না যে, কষ্ট-যাতনার সাথে অপরাধের সামঞ্জস্যতা নেই। ইসলামী শরী‘আতের অন্যান্য শাস্তির ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য। আমাদের উচিৎ এসব অপরাধ সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা মুক্ত কোনো মন্তব্য করার পূর্বে অপরাধীর অপরাধ এবং তার মধ্যে যে সব বাড়াবাড়ি, অনিষ্ট ও ক্ষয়ক্ষতির দিক আছে সেগুলোকে সামনে আনা। এ ধরণের মন্তব্য যেমন সঠিক হয় না তেমন অপরাধের সামগ্রিক দিক পরিবেষ্টনও করে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/370/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।