hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মুসলিম উম্মাহর জন্য গুরুত্বপূর্ণ দরসের সাথে সংশ্লিষ্ট বিধান

লেখকঃ শাইখ আবদুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায

চতুর্থ দরস: তাওহীদ
তাওহীদের প্রকার, তাওহীদের সংজ্ঞা:

যাবতীয় ইবাদতে আল্লাহকেই উদ্দেশ্য করা।

তাওহীদ (আল্লাহর একত্ববাদ) তিন প্রকার। যথা:

১. তাওহীদের রবুবিয়্যাহ (আল্লাহর প্রভূত্বে তাওহীদ)

২. তাওহীদে উলুহীয়্যাহ (আল্লাহর ইবাদতে তাওহীদ)

৩. তাওহীদে আসমা ও ছিফাত (আল্লাহর নাম ও গুণাবলীতে তাওহীদ)

১- প্রভুত্বে তাওহীদ: এর অর্থ এই বিশ্বাস স্থাপন করা যে, আল্লাহ পাকই সবকিছুর একক স্রষ্টা, রিযিক দাতা এবং সবকিছুর নিয়ন্ত্রণকারী। তিনি একক তাঁর কোনো শরীক নেই। এ প্রকারের তাওহীদকে মক্কার মুশরিকরাও স্বীকার করত। কিন্তু তা স্বত্বেও তারা মুসলিম হিসেবে গণ্য হয় নেই। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَئِن سَأَلۡتَهُم مَّنۡ خَلَقَهُمۡ لَيَقُولُنَّ ٱللَّهُۖ فَأَنَّىٰ يُؤۡفَكُونَ ٨٧﴾ [ الزخرف : ٨٧ ]

“আর তুমি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা কর, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ।’ তবু তারা কীভাবে বিমুখ হয়”? [সূরা আয-যুখরুফ, আয়াত: ৮৭]

২- ইবাদতে তাওহীদ: এর অর্থ এই বিশ্বাস স্থাপন করা যে আল্লাহ পাকই সত্যিকার মা‘বুদ, এতে তাঁর কোনো শরীক নেই। কোনো ধরনের ইবাদতে আল্লাহ কোনো শরীক নেই। যেমন, মহব্বত, ভয়, আশা করা, ভরসা করা ও দো’আ করা ইত্যাদি। এটাই কালেমা ‘লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ-এর মর্মার্থ। কেননা, এর প্রকৃত অর্থ হলো: আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার আর কোনো মা‘বুদ নেই। সবপ্রকার ইবাদাত যেমন, সালাত, সাওম ইত্যাদি একমাত্র আল্লাহরই উদ্দেশ্যে নিবেদিত করা অপরিহার্য। কোনো প্রকার ইবাদাত অন্য কারো উদ্দেশ্যে নিবেদিত করা বৈধ নয়। এ প্রকারের তাওহীদকেই মুশরিকরা সবাই অস্বীকার করে।

৩- নাম ও গুণাবলীতে তাওহীদ: এর অর্থ এই যে, আল্লাহ তা‘আলা নিজে তার স্বীয় কিতাবে নিজ সম্পর্কে যেসব গুণাগুণ উল্লেখ করেছেন অথবা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব গুণাগুণ আল্লাহ সম্পর্কে স্বীয় বিশুদ্ধ হাদীসে বর্ণনা করেছেন সেসব গুণাবলীকে আল্লাহর জন্য আল্লাহর বড়ত্ব, মহত্ব ও তার শান অনুযায়ী তার জন্য সাব্যস্ত করা। এ প্রকারের তাওহীদকে কতক মুশরিকও স্বীকার করত। আর কতক মুশরিক হৎকারিতা ও অজ্ঞতাবশতঃ অস্বীকার করত।

এগুলোকে আল্লাহ তা‘আলার শানের উপযোগী পর্যায়ে এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করা যাতে কোনো অপব্যাখ্যা, নিষ্ক্রিয়তা, উপমা অথবা বিশেষ কোনো ধরণ বা সাদৃশ্যপনার লেশ না থাকে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন.

﴿قُلۡ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ ١ ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ ٢ لَمۡ يَلِدۡ وَلَمۡ يُولَدۡ ٣ وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدُۢ ٤ ﴾ [ الاخلاص : ١، ٥ ]

“(হে রাসূল) বলুন! তিনিই আল্লাহ এক, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কারো জন্ম দেন নি এবং কেউ তাঁকে জন্ম দেয় নি, আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।” [সূরা আল-ইখলাস, আয়াত: ১-৫]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿لَيۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَيۡءٞۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ ١١﴾ [ الشورى : ١١ ]

“তার মতো কেউ নেই, তিনিই সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ১১]

কোনো কোনো আলেম তাওহীদকে দুই প্রকারে বিভক্ত করেছেন এবং নাম ও গুণাবলীর তাওহীদকে প্রভুত্বে তাওহীদের অন্তর্ভুক্ত করে ফেলেন। এতে কোনো বাধা নেই, কেননা, উভয় ধরনের প্রকার বিন্যাসের উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট।

আর শির্ক হলো তিন প্রকার যথা: ১. বড় শির্ক ২. ছোট শির্ক এবং ৩. গোপন শির্ক।

বড় শির্ক:

বড় শির্কের ফলে মানুষের আমল নষ্ট হয়ে যায় এবং তাকে জাহান্নামে চিরকাল থাকতে হয়। আল্লাহ বলেন,

﴿وَلَوۡ أَشۡرَكُواْ لَحَبِطَ عَنۡهُم مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٨٨﴾ [ الانعام : ٨٨ ]

“এবং তারা যদি আল্লাহর সাথে শির্ক করে তাহলে তাদের সব কার্যক্রম নিষ্ফল হয়ে যায়।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৭৭]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿مَا كَانَ لِلۡمُشۡرِكِينَ أَن يَعۡمُرُواْ مَسَٰجِدَ ٱللَّهِ شَٰهِدِينَ عَلَىٰٓ أَنفُسِهِم بِٱلۡكُفۡرِۚ أُوْلَٰٓئِكَ حَبِطَتۡ أَعۡمَٰلُهُمۡ وَفِي ٱلنَّارِ هُمۡ خَٰلِدُونَ ١٧﴾ [ التوبة : ١٧ ]

“মুশরিকদের জন্য আল্লাহর ঘর মসজিদ সংস্থানের কোনোই প্রয়োজন নেই। অথচ নিজেরা কুফুরীর সাক্ষ্য দিচ্ছে। ঐ সকল লোকদের কৃতকর্মসমূহ ধ্বংস করে দেওয়া হবে এবং তারা চিরকাল জাহান্নামে অবস্থান করবে”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১৭]

এ প্রকার শির্কের ওপর কারো মৃত্যু হলে তাকে কখনও ক্ষমা করা হবে না এবং জান্নাত তার জন্য হারাম হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ وَمَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدِ ٱفۡتَرَىٰٓ إِثۡمًا عَظِيمًا ٤٨﴾ [ النساء : ٤٨ ]

“নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তা‘আলা শির্কের গুনাহ ক্ষমা করেন না। তা ছাড়া যা ইচ্ছা ক্ষমা দিতে পারেন”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৪৮]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿إِنَّهُۥ مَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ حَرَّمَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ ٱلۡجَنَّةَ وَمَأۡوَىٰهُ ٱلنَّارُۖ وَمَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ أَنصَارٖ ٧٢﴾ [ المائ‍دة : ٧٢ ]



নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শির্ক করে, তার জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যায় এবং তার অবস্থান হয় জাহান্নামে। অবশ্যই অত্যাচারীদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই। [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৭২] [[সূরা আল-মায়িদাহ, আয়াত: ৭২]]

এ প্রকার শির্কের আওতায় পড়ে মৃত লোক ও প্রতিমাকে ডাকা, তাদের আশ্রয় প্রার্থনা করা, তাদের উদ্দেশ্যে মান্নত ও জবাই করা ইত্যাদি।

ছোট শির্ক:

ছোট শির্ক বলতে এমন কর্ম বুঝায় যাকে কুরআন বা হাদীসে শির্ক বলে নামকরণ করা হয়েছে, তবে তা বড় শির্কের আওতায় পড়ে না। যেমন, কোনো কোনো কাজে রিয়া বা কপটতার আশ্রয় গ্রহণ, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে শপথ করা, আল্লাহ এবং অমুক যা চাইছেন তা হয়েছে” বলা ইত্যাদি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أخوف ما أخاف عليكم الشرك الأصغر»

“তোমাদের ওপর যে বিষয়টির সবচেয়ে বেশি ভয় করি তা হলো ছোট শির্ক”। এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সেটা হলো রিয়া অর্থাৎ কপটতা। এ হাদীস ইমাম আহমদ, তাবরানী ও বায়হাকী মাহমুদ ইবন লবীদ আনছারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুরাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণনা করেছেন। আর তাবরানী কতিপয় বিশুদ্ধ সনদে মাহমুদ ইবন লবীদ থেকে, তিনি রাফে‘ ইবন খাদীজ থেকে বর্ণনা করেছেন। অপর এক হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«من حلف بشيء دون الله فقد أشرك»

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর নামে শপথ করবে, তার এ কাজ শির্ক বলে গণ্য হবে।”

ইমাম আহমদ বিশুদ্ধ সনদে উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবু দাউদ ও তিরমিযী আব্দুল্লাহ ইবন উমার থেকে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত এক হাদীসে আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«من حلف بغير الله فقد كفر أو أشرك»

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নামে শপথ করলো সে আল্লাহর সাথে কুফুরী বা শির্ক করলো”।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,

«لا تقولوا ما شاء الله وشاء فلان ولكن قولوا ما شاء الله ثم شاء فلان»

“তোমরা এ কথা বল না যে আল্লাহ এবং অমুক যা চাইছেন তা-ই হয়েছে, বরং এভাবে বল ‘আল্লাহ যা চাইছেন এবং পরে অমুক যা চাইছেন তা-ই হয়েছে।”

এ হাদীস আবু দাউদ বিশুদ্ধ সনদে হুযাইফা ইবন ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন।

এ প্রকার শির্ক অর্থাৎ ছোট শির্কের কারণে বান্দা ধর্মত্যাগী হয় না বা ইসলাম থেকে সে বের হয়ে যায় না এবং জাহান্নামে সে চিরস্থায়ীও থাকবে না; বরং তা অপরিহার্য্ পূর্ণ তাওহীদের পরিপন্থী এক পাপ বিশেষ।

তৃতীয় প্রকার শির্ক: গোপন শির্ক: এর প্রমাণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিম্নোক্ত হাদীস। তিনি বলেন,

«ألا أخبركم بما هو أخوف عليكم عندي من المسيح الدجّال؟» قالوا : بلى يا رسول الله، قال : «الشرك الخفي، يقوم الرجل فيصلي فيزين صلاته لما يرى من نظر الرجل إليه»

“হে সাহাবীগণ, আমি কি তোমাদের সেই বিষয়ের খবর দিব না, যা আমার দৃষ্টিতে তোমাদের পক্ষে মসীহ-দাজ্জাল থেকেও ভয়ঙ্কর? সাহাবীগণ উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, বলুন হে আল্লাহর রাসূল। তখন তিনি বললেন, সেটা হলো গোপন শির্ক। কোনো কোনো ব্যক্তি সালাতে দাঁড়িয়ে নিজের সালাত সুন্দর করার চেষ্টা করে এই ভেবে যে, অপর লোক তার প্রতি তাকাচ্ছে।”

ইমাম আহমদ তার মাসনদে এ হাদীস আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন।

যাবতীয় শির্ক মাত্র দুই প্রকারেও বিভক্ত করা যেতে পারে: ছোট শির্ক এবং বড় শির্ক। কারণ গোপন বা গুপ্ত শির্ক ছোট এবং বড় উভয় প্রকার হতে পারে।

কখনও তা বড় শির্কের পর্যায়ে পড়ে। যেমন, মুনাফিকদের শির্ক যা বড় শির্ক হিসেবে পরিগণিত। তারা নিজেদের ভ্রান্ত বিশ্বাস গোপন রেখে প্রাণের ভয়ে কপটতা বা রিয়ার মাধ্যমে ইসলামের ভান করে চলে।

এভাবে গোপন শির্ক ছোট শির্কের পর্যায়েও পড়তে পারে। যেমন, ‘রিয়া’ বা ‘কপটতা’ যার উল্লেখ মাহমুদ ইবন লবীদ আনছারী ও আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত উপরোক্ত হাদীসদ্বয়ে রয়েছে। আল্লাহই আমাদের তাওফীক দানকারী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন