মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সাহাবায়ে কেরামের অবস্থান ও মর্যাদার বিষয়ে আহলে সুন্নাতের আকীদা-বিশ্বাস
লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম
১১
প্রথমত: যে ব্যক্তি সকল সাহাবীকে অথবা অধিকাংশকে কাফির, মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) বা ফাসিক বলে গালি দিবে তার বিধান
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/65/11
যে ব্যক্তি এমন কথা বলবে, সে ব্যক্তি কাফির হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই, আর এ কাফির হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে, তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হলো:
১. এ কথার অর্থ হলো কুরআন ও সুন্নাহর সংকলনকারীগণ কাফির বা ফাসিক। আর এ কারণে আল-কুরআন ও হাদীসসমূহের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হবে। কারণ, সংকলনকারীদেরকে অপবাদ দেওয়ার অর্থ হলো তাদের দ্বারা সংকলিত বিষয়ে অপবাদ দেওয়া।
২. এর মধ্যে ঐ বিষয়টিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়, যে বিষয়ে কুরআন বক্তব্য পেশ করেছে। যেমন, তাদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্ট হওয়ার কথা এবং তাদের গুণগান করা। কারণ, ‘আল-কুরআন ও হাদীসের ভাষ্যসমূহ থেকে অর্জিত জ্ঞান অকাট্যভাবে তাদের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ বহন করে।’ [আর-রাদ্দু ‘আলা আর-রাফেদা, পৃষ্ঠা ১৯] আর যে ব্যক্তি আকাট্য দলীলকে অস্বীকার করে, সে কাফির হয়ে যায়।
৩. এর মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেওয়ার ব্যাপার রয়েছে। কারণ, তারা হলেন তার সঙ্গী-সাথী ও বিশেষ ব্যক্তিবর্গ। সুতরাং তাঁর বিশেষ ব্যক্তিবর্গকে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক গালি দেওয়া এবং তাদের প্রতি অপবাদ দেওয়াটা তাকে নিঃসন্দেহে কষ্ট দেয় আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দেওয়া কুফুরী যা সর্বজন স্বীকৃত।
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যা রহ. এ প্রকার গালির বিধান সুস্পষ্টভাবে বর্ণনাপূর্বক বলেন: “আর যে ব্যক্তি এ ব্যাপারে সীমা অতিক্রম করে বলবে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পরে তাদের (সাহাবীগণের) অল্প সংখ্যক ব্যক্তি, যাদের সংখ্যা দশ জনের বেশি হবে না, এমন সংখ্যক ব্যক্তি ছাড়া সকলেই মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে গেছে অথবা তারা সকলেই ফাসিক হয়ে গেছে, তবে এ ধরনের কথাও নিঃসন্দেহে তার কুফুরীর মধ্যে পড়ে। কারণ, সে আল-কুরআনের একাধিক জায়গায় প্রদত্ত বক্তব্যকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী। যেমন, তাদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্ট হওয়ার কথা এবং তাদের গুণগান করা। বরং যে ব্যক্তি এ ধরনের কুফুরীর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে, তবে তা তার কুফুরী হিসেবে বিবেচিত হবে... তিনি বলেন: দীন ইসলামের বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে যা জানা যায়, তা থেকেই এটা কুফুরী বলে গণ্য।” [আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৮৬, ৫৮৭]
হাইছামী রহ. বলেন: “অতঃপর আলোচনা বা সমালোচনা তথা বিতর্ক হলো শুধু তাদের কিছু সংখ্যককে গালি দেওয়ার ব্যাপারে, তবে তাদের সকলকে গালি দেওয়া যে নির্ভেজাল কুফুরী তাতে কোনো প্রকার সন্দেহ ও সংশয় নেই।” [হাইছামী, আস-সাওয়ায়েক আল-মুহরিকা, পৃষ্ঠা ৩৭৯]
আর পূর্ববর্তী পূর্ণাঙ্গ দলীলসমূহের সুস্পষ্টতা সত্ত্বেও কোনো কোনো আলেম আরও কিছু ব্যাখ্যামূলক দলীলের উল্লেখ করেন, তন্মধ্য থেকে কয়েকটি নিম্নরূপ:
প্রথমত: আমাদের নিকট আলেমদের পক্ষ থেকে সূরা আল-ফাতহ’র শেষ আয়াতের যে তাফসীর উপস্থাপিত হয়েছে:
“মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। আর তার সহচরগণ কাফিরদের প্রতি কঠোর, তাদের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল... যাতে তিনি তাদের (মুমিনদের) সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন...।” [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ২৯]
ইমাম মালেক রহ. এ আয়াত থেকে মাসআলা উদ্ভাবন করেছেন, যে ব্যক্তি সাহাবীগণকে অবজ্ঞা করে, সে কাফির। কারণ, সাহাবীগণ তাদেরকে ক্রোধান্বিত করে। আর যে ব্যক্তিকে সাহাবীগণ রাগান্বিত করে, সে কাফির। আর ইমাম শাফে‘ঈ রহ. ও অন্যান্যরাও তার মতো অভিমত ব্যক্ত করেন। [আস-সাওয়া‘য়েক আল-মুহরিক্বা, পৃষ্ঠা ৩১৭; তাফসীরে ইবন কাছীর: ৪/২০৪; খাল্লালের ‘আস-সুন্নাহ’ এর মধ্যে খবরটি সনদসহ আছে, পৃষ্ঠা ৪৭৮, নং (৭৬০), বিশ্লেষণ: ড. ‘আতিয়াতুয যাহরানী।]
দ্বিতীয়ত: পূর্বে আলোচিত ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহ. কর্তৃক সংকলিত আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীস, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«آية الإيمان حب الأنصار، وآية النفاق بغض الأنصار» .
“আনসারদেরকে ভালোবাসা ঈমানের লক্ষণ আর আনসারদেরকে ঘৃণা করা নিফাকীর লক্ষণ।” [সহীহ বুখারী: ৭/১১৩; সহীহ মুসলিম: ১/৮৫]
অপর এক বর্ণনায় আছে:
«لا يحبهم إلا مؤمن، ولا يبغضهم إلا منافق ... » .
“তাদেরকে শুধু মুমিনরাই ভালোবাসে আর তাদেরকে শুধু মুনাফিকরাই ঘৃণা করে ...।” [সহীহ বুখারী: ৭/১১৩; সহীহ মুসলিম: ১/৮৫ (হাদিসটি বারা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত)।]
আর ইমাম মুসলিম রহ. কর্তৃক বিশুদ্ধ সনদসহ আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান স্থাপন করে এমন কোনো লোক আনসারদেরকে ঘৃণা বা অবজ্ঞা করবে না।” [সহীহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: আনসার ও আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমকে ভালোবাসা ঈমান ও তার নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত এবং তাদের অবজ্ঞা করাটা নিফাকীর লক্ষণের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দলীল, হাদীস নং ২৪৪]
সুতরাং যে ব্যক্তি তাদেরক গালি দিবে সে তাদের প্রতি আরও বেশি অবজ্ঞা প্রদর্শন করল। সুতরাং তার মুনাফিক হওয়াটা আবশ্যক হয়ে যায়, যে আল্লাহ ও পরকাল বিশ্বাস করে না। [আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৮১]
তৃতীয়ত: যা আমীরুল মুমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে সাব্যস্ত ও প্রমাণিত। তিনি ঐ ব্যক্তিকে দোররা দ্বারা আঘাত করেছেন, যে ব্যক্তি তাকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর ওপর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে। অতঃপর উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
«أبو بكر كان خير الناس بعد رسول الله صلى الله عليه وسلم في كذا وكذا»
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে এই এই ক্ষেত্রে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ছিলেন সর্বোত্তম মানুষ।” অতঃপর উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
«من قال غير هذا أقمنا عليه ما نقيم على المفتري»
“যে ব্যক্তি এর ব্যতিক্রম বলবে, আমরা তার ওপর ঐ শাস্তি প্রয়োগ করব, যে শাস্তি আমরা অপবাদ দানকারীর ওপর প্রয়োগ করে থাকি।” [ইমাম আহমদ, ফাযায়েলুস সাহাবা: ১/৩০০; ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা আস-সারিমুল মাসলুল এর মধ্যে হাদীসটি বা আছারটিকে সহীহ বলেছেন: পৃষ্ঠা ৫৮৫]
আর অনুরূপভাবে আমীরুল মুমিনীন আলী ইবন আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন:
» لا يفضلني أحد على أبي بكر و عمر إلا جلدته حد المفتري «
“যে কেউ আমাকে আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা’র ওপর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করবে, আমি তাকে অপবাদ দানকারীর জন্য নির্ধারিত শাস্তির মতো বেত্রাঘাত করব।” [ইমাম আহমদ, ফাযায়েলুস সাহাবা: ১/৮৩; ইবনু আবি ‘আসিম, ‘আস-সুন্নাহ’: ২/৫৮৫, হেকাম ইবন জাহলের সনদে বর্ণিত, তার সনদটি আবূ ‘ওবায়দা ইবনুল হেকামের দুর্বলতার কারণে দুর্বল। দেখুন: ফাযায়েলুস সাহাবা: ১/৮৩; কিন্তু তার কতিপয় প্রত্যয়নকারী ( شواهد ) সনদ রয়েছে, তন্মধ্যে ইবন আবি ‘আসিমের মতে একটি হলো ‘আলী থেকে ‘আলকামা -এ সনদে, ‘আস-সুন্নাহ’: ২/৪৮, আলবানী তার সনদকে হাসান বলেছেন, আর আল-লালকায়ী’র (৭/১২৯৫) মতে- অপর সনদটি হলো: ‘আলী থেকে সুওয়াঈদ ইবন গাফালা।]
সুতরাং খোলাফায়ে রাশেদীনের অন্যতম দু’জন খলিফা উমার ও আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা যখন ঐ ব্যক্তিকে অপবাদ দানকারীর জন্য নির্ধারিত শাস্তির মতো বেত্রাঘাত করতেন, যে ব্যক্তি আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা’র ওপর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করত, অথবা যে ব্যক্তি উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু’র ওপর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করত। অথচ শুধু একজনকে অন্যের ওপর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করার মধ্যে কোনো প্রকার গালি ও দোষ নেই। সুতরাং জেনে রাখা দরকার, তাদের উভয়ের নিকট গালির শাস্তি এর চেয়ে আরও কত বেশি ভয়ানক হতে পারে! [আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৮৬]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/65/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।