মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সাহাবায়ে কেরামের অবস্থান ও মর্যাদার বিষয়ে আহলে সুন্নাতের আকীদা-বিশ্বাস
লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম
৯
তৃতীয় পরিচ্ছেদ: কোনো কিছুই সাহাবীগণের মর্যাদার সমান নয়
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/65/9
বিজ্ঞ আলেমদের মতে, সাহাবীগণকে সম্মান করা এবং তাদের মর্যাদা সম্পর্কে জানা একটি স্বীকৃত বিষয় যদিও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ব্যক্তির (সাহাবীর) সাক্ষাতের সময়কাল কম হউক। আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে গেছেন।
হাফেয ইবন হাজার ‘আসকালানী রহ. এ বিষয়টির ওপর প্রমাণ উল্লেখপূর্বক বলেন: “সুতরাং এ বিষয়ে প্রমাণ করে আমি লেখক মুহাম্মদ ইবন কুদামা আল-মাররুযীর লিখিত ‘আখবারুল খাওয়ারিজ’ নামক গ্রন্থে যা পাঠ করেছি। অতঃপর তিনি তার সনদ উল্লেখ করেছেন এ পর্যন্ত যে, তিনি বলেন: নুবাইজ আল-‘আনাযী থেকে বর্ণিত, তিনি আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, আমরা তার নিকট ছিলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। অতঃপর আলী ও মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহ ‘আনহুমা সম্পর্কে আলোচনা করলাম। অতঃপর মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহ ‘আনহুর পক্ষের এক ব্যক্তি এসে আলোচনায় শামিল হলো। অতঃপর আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু সোজা হয়ে বসে তার সেই কাহিনী বর্ণনা করলেন, যখন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্যে ছিলেন এবং সাথে ছিলেন আবু বকর রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু ও জনৈক আরব বেদুইন...। আবু সা‘ঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু বলেন, অতঃপর আমি ঐ বেদুইনকে উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহ ‘আনহুর নিকট নিয়ে আসতে দেখলাম এমতাবস্থায় যে, সে আনসারদেরকে তিরস্কার করল। তখন উমার রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
«لولا أن له صحبة من رسول الله صلى الله عليه وسلم لكفيتكموه ولكن له صحبة من رسول الله صلى الله عليه وسلم» .
“যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তার সহচর্য না থাকত, তবে আমি তোমাদেরকে তার জন্য যথেষ্ট মনে করতাম; কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তার সহচর্য রয়েছে।” [উমার রাদিয়াল্লাহ ‘আনহুর বক্তব্য ব্যতীত ইমাম আহমদ রহ. হাদীসখানা বর্ণনা করেন, ৩/৫১; আর আলী ইবনুল জা‘য়াদ হাদীসখানা অবিকল শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করেন, ২/৯৫৬; হাইছামী (৪/৯২) বলেন: হাদিসের বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত এবং ইবন হাজার ইয়াকুব ইবন শায়বার বর্ণনার কারণে হাদিসটিকে আযীয বলেছেন, যেমনটি তার থেকে বর্ণিত হাদিসের সনদের মধ্যে দেখা যায়, ১/২০; আর শাইখুল ইসলাম আবু যর আল-হারবীর বর্ণনার কারণে হাদিসটিকে আযীয বলেছেন, আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৯০]
হাফেয ইবন হাজার ‘আসকালানী রহ. বলেন, এ হাদীসের বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত।
সুতরাং উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু তাকে শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে শুধু তিরস্কার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন। কারণ, তিনি জানতে পেরেছেন যে, সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন আর এ কথার মধ্যে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, তারা বিশ্বাস করতেন -নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহচর্যের মর্যাদার সমান আর কিছুই হতে পারে না।
আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন ওকী‘ রহ., তিনি বলেন: আমি সুফিয়ানকে আল্লাহ তা‘আলার বাণী
“বলুন, সকল প্রশংসা আল্লাহর এবং শান্তি তাঁর মনোনীত বান্দাদের প্রতি।”[সূর আন-নামল, আয়াত: ৫৯]-এর ব্যাপারে বলতে শুনেছি যে, তারা হলেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী। [তাবারী, আসার, প্রকাশনা: দারুল মা‘রেফা, ২০/৩; আরও দেখুন: ইবনু কাছীর, প্রকাশনা: দারুল মা‘রেফা, ৩/৩৬৯] এ সূত্রের সংযুক্তি করা হয়েছে ‘আল-ইসাবা’ নামক গ্রন্থে। [আল-ইসাবা, প্রকাশনা: দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ইবন আবদিল বাররের ‘আল-ইসতি‘য়াব’ নামক গ্রন্থের হাশিয়াসহ, ১/২০-২২]
সুতরাং এ নির্বাচন ও বাছাইকরণটি একটি অকল্পনীয় বিষয়, যা অনুধাবন করা যায় না এবং বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা অনুমানও করা যায় না। আর সেখান থেকেই অন্যদের সাথে তাদের মর্যাদার তুলনা করার অবকাশ নেই, তাদের কর্মকাণ্ড যত উচ্চ মানেই পৌঁছায় না কেন।
“তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণকে গালি দিও না। কারণ, তাদের কোনো একজনের একটু সময় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে অবস্থান করার মূল্যমান তোমাদের কোনো একজনের চল্লিশ বছরের আমলের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম।” [শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যা, শরহু লামিয়া, ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১ (মাকতাবা শামেলা, দ্বিতীয় সংস্করণ)]
আর ওকী‘ রহ. এর এক বর্ণনায় আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণকে গালি দিও না। কারণ, তাদের কোনো একজনের একটু সময় (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে) অবস্থান করার মূল্যমান তোমাদের কোনো একজনের গোটা জীবনের ইবাদতের চেয়েও অনেক বেশি উত্তম।” [ইমাম আহমদ, ফাযায়েলুস সাহাবা: ১/৫৭; ইবন মাজাহ, ১/৩১ (আল-আ‘যামী); ইবন আবি ‘আসেম, ২/৪৮৪; আল-বূসীরী ‘যাওয়ায়েদু ইবনে মাজাহ’ এর মধ্যে (১/২৪) খবরটিকে সহীহ বলেছেন; আল-মাতালেবুল ‘আলীয়া, ৪/১৪৬]
আর অধিকাংশ আলেমের মতে, কোনো আমলই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহচর্যের সমতুল্য হতে পারে না। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রত্যক্ষদর্শী মানে হলো -যিনি তাকে রক্ষা করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন হিজরত অথবা সাহায্যের মাধ্যমে, তার দিকে এগিয়ে গিয়েছেন অথবা তার নিকট থেকে প্রাপ্ত শরী‘আতকে আঁকড়ে ধরেছেন এবং তা পরবর্তী প্রজন্মের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন। সুতরাং তাঁর পরে যাদের আগমন হয়েছে, তাদের কেউই তাঁর সমতুল্য হতে পারে না। কারণ, পূর্ববর্তী ব্যক্তির কোনো একটি বৈশিষ্ট্যের ওপর তার পরবর্তী কোনো ব্যক্তি আমল করলে সে (পূর্ববর্তী ব্যক্তি) তার সমপরিমাণ প্রতিদান পাবে। অত্রএব, তাদের ফযীলতের বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে গেল। [ফতহুল বারী, ৭/৭]
ইমাম আহমদ রহ. তার আকীদা প্রসঙ্গে বলেন: “সাহাবীগণের মধ্য থেকে একজন নগণ্য সাহাবীর মর্যাদা ঐ যুগের সকল ব্যক্তির চেয়েও শ্রেষ্ঠ, যারা তাকে দেখে নি, যদিও তারা তাদের সকল আমল নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করে।” [আল-লালকায়ী, শরহু উসূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাত, ১/১৬০]
ইমাম নাওয়াওয়ী রহ. বলেন: “এক মুহূর্তের জন্য হলেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহচর্য পাওয়ার মর্যাদার সমতুল্য কোনো আমলই হতে পারে না আর কোনো কিছুর বিনিময়ে তার সমমর্যাদা অর্জন করা সম্ভব নয় এবং ফযীলত বা মর্যাদার বিষয়টি কিয়াসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় না। এটি হচ্ছে আল্লাহর অনুগ্রহ, যা তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন।” [নাওয়াওয়ীর ব্যাখ্যাসহ সহীহ মুসলিম: ১৬/৯৩]
আর তাদের অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধতাও আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে হয়েছে, যিনি অন্তরের খবর জানেন। যেমন তাঁর বাণী:
﴿فَعَلِمَ مَا فِي قُلُوبِهِمۡ ﴾ [ الفتح : ١٨ ]
“অতঃপর তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি জেনে নিয়েছেন।” [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ১৮]
“অবশ্যই আল্লাহ মুমিনগণের ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন, যখন তারা গাছের নিচে আপনার কাছে বাই‘আত গ্রহণ করেছিল। অতঃপর তাদের অন্তরে যা ছিল তা তিনি জেনে নিয়েছেন। ফলে তিনি তাদের ওপর প্রশান্তি নাযিল করলেন এবং তাদেরকে আসন্ন বিজয়ে পুরস্কৃত করলেন।” [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ১৮]
তাদের এ প্রতিটি ব্যাপারকে তাঁর সাথে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সুতরাং তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এ ধরনের তাযকীয়া বা পরিশুদ্ধতা কীভাবে সম্ভব হবে?
কিন্তু কোনো কোনো প্রবক্তা [যারা এ উক্তি করেছেন, তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ হলেন ইমাম ইবন ‘আব্দুল বার। আর উল্লেখিত দলীল তার দলীলসমূহ থেকে শক্তিশালী। আর অধিকাংশ আলেম তার বিপরীত মত পোষণ করেন, যেমন আমরা পূর্বে ইঙ্গিত দিয়েছি।] বলেন: “কিছু কিছু বর্ণনায় বর্ণিত হয়েছে, আমি যা উল্লেখ করেছি, তার বিপরীত প্রমাণ করে। যেমন, আবু ছা‘লাবা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«تأتي أيام للعامل فيهن مثل أجر خمسين، قيل يارسول الله أجر خمسين منا أو منهم؟ قال : بل أجر خمسين منكم» .
“এমন কতগুলো দিন আসবে, যেসব দিনে একজন (সৎ) আমলকারী ব্যক্তির জন্য পঞ্চাশ জনের সমপরিমাণ প্রতিদানের ব্যবস্থা করা হবে। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের থেকে পঞ্চাশ জনের সমপরিমাণ প্রতিদান পাবে, নাকি তাদের থেকে পঞ্চাশ জনের সমপরিমাণ প্রতিদান পাবে? জবাবে তিনি বললেন, বরং তোমাদের মধ্য থেকে পঞ্চাশ জনের সমপরিমাণ প্রতিদান পাবে।” [আবূ দাউদ: ৪৩৪১; তিরমিযী: ২/১৭৭; ইবন মাজাহ: ৪০১৪; ইবনু হিব্বান, (আল-ইহসান), ৩৮৫, আর ১৮৫০ মাওয়ারিদু যামআন। ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন: হাদীসটি হাসান, গরীব; আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।]
আর অনুরূপভাবে আবু জাম‘আ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«تغدينا مع رسول الله صلى الله عليه و سلم ومعنا أبو عبيدة بن الجراح قال : فقال : يا رسول الله ! هل أحد خير منا؟ اسلمنا معك وجاهدنا معك؟ قال : نعم، قوم يكونون من بعدكم يؤمنون بي ولم يروني» .
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে দুপুরের খাবার গ্রহণ করলাম আর আমাদের সাথে আবু ওবায়দা ইবনুল জাররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি (আবু ওবায়দা) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের চেয়ে উত্তম কেউ আছে কি? আমরা আপনার সাথে ইসলাম গ্রহণ করেছি এবং আপনার সাথে জিহাদ করেছি। জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হ্যাঁ, এমন এক সম্প্রদায় আছে, যারা তোমাদের পরবর্তীতে আসবে, তারা আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে অথচ তারা আমাকে দেখে নি।” [আহমদ, ৪/১০৬; দারেমী ও তাবারানী, ৪/২২-২৩; হাকেম হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন এবং যাহাবীও তার মতো অভিমত ব্যক্ত করেছেন, ৪/৮৫; ইবন হাজার বলেন: তার সনদ হাসান পর্যায়ের; আল-ফাতহ: ৭/৬; দেখুন: আল-ফাতহুর রাব্বানী, ১/১০৩-১০৪]
আর আলেমগণ এ হাদীসসমূহ ও পূর্বোক্ত হাদীসসমূহ একত্রিত বা সমন্বয় করেছেন কয়েকটি কারণে; তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো:
প্রথম কারণ: للعامل فيهن مثل أجر خمسين “তাতে একজন আমলকারী ব্যক্তির জন্য পঞ্চাশ জনের সমপরিমাণ প্রতিদানের ব্যবস্থা রয়েছে” -হাদীসটি শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ বহন করে না। কারণ, শুধু কিছু আমলের সাওয়াব বৃদ্ধি করে দেওয়ার বিষয়টি সাধারণভাবে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণকে আবশ্যক করে না।
দ্বিতীয় কারণ: কখনও কখনও শ্রেষ্ঠত্ব বা মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে যার ওপর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে এমন বৈশিষ্ট্য ও ফযীলত পাওয়া যায়, যা মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মধ্যে নেই; কিন্তু সামগ্রিক বৈশিষ্ট্যের বিবেচনায় সে মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সমান হতে পারে না।
তৃতীয় কারণ: অনুরূপভাবে বলা হয়: নিশ্চয় উভয়ের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি শুধু ঐ ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যাতে উভয়ের অংশগ্রহণ সম্ভব। আর তা হলো সকল মুমিনের মধ্যে সাধারণ ও সমন্বিত আনুগত্যের বিষয়। সুতরাং তখন এ ক্ষেত্রে কিছু কিছু বিষয়ে কোনো কোনো সাহাবীর ওপর মর্যাদার বিষয়টি বিদূরিত হয় না, তবে সহাবীগণ যা দ্বারা বিশেষিত হয়েছেন এবং সফলতা লাভ করেছেন। যেমন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে দৃশ্য অবলোকন এবং তাঁর পবিত্র সত্তাকে দেখা, তা হলো একটি যুক্তিসংগত বিষয়। কারণ, কারো পক্ষে সম্ভব নয় যে, সে এমন কোনো মর্যাদাপূর্ণ কাজ করবে, যার দ্বারা সে তাঁর মতো হওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছে যাবে। [হাইছামী, আস-সাওয়ায়েক আল-মুহার্রিকা, পৃষ্ঠা ৩২১]
চতুর্থ কারণ: বর্ণনাকারীগণ আবু জাম‘আ রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের শব্দের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ নন। কারণ, তাদের কেউ কেউ তা বর্ণনা করেছেন الخيرية (সর্বোত্তম) শব্দ দ্বারা, যেমনটি পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। আবার তাদের কেউ কেউ তা বর্ণনা করেছেন এরূপ শব্দ দ্বারা:
( قلنا يا رسول الله ! هل من قوم أعظم منا أجرا ؟ - أخرجه الطبراني )
“আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সাওয়াব অর্জনের দিক থেকে আমাদের চেয়ে মহান কোনো সম্প্রদায় আছে কি? –তাবরানী হাদীসটি বর্ণনা করেন।” [তাবারানী, ৪/২২/২৩]
হাফেয ইবন হাজার ‘আসকালানী রহ. ‘আল-ফাতহ’-এর মধ্যে বলেন: এ বর্ণনার সনদ পূর্ববর্তী বর্ণনার সনদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী আর তা আবু ছা‘লাবা’র হাদীসের সাথে সমাঞ্জস্যপূর্ণ। তার জওয়াব পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। আল্লাহই সবচেয়ে বেশি জানেন।
পরিশেষে এ শেষ অনুচ্ছেদে দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত যে, এ প্রসঙ্গে অধিকাংশ আলেম ও অন্যান্যদের মধ্যকার বিরোধ খোলাফায়ে রাশেদীন ও বাকি ‘আশারা মুবাশ্বারা এবং যাদের ব্যাপারে বিশেষ ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, তাদের মতো বড় বড় সাহাবীগণকে অন্তর্ভুক্ত করে না। যেমন, ‘আকাবার শপথে অংশগ্রহণকারী এবং বদর, তাবুক...ইত্যাদির মতো যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবীগণ। আর বিতর্কের সূত্রপাত হয় ঐসব সাহাবীগণকে নিয়ে, যাদের শুধু আল্লাহর রাসূলকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। আর এ জন্যই ইমাম ইবন ‘আবদিল বার বদরের যুদ্ধে ও হুদায়বিয়ার সন্ধির অভিযানে অংশগ্রহণকারী সাহাবীগণকে পৃথক করেছেন। [ফতহুল বারী: ৭/৭]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/65/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।