hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবায়ে কেরামের অবস্থান ও মর্যাদার বিষয়ে আহলে সুন্নাতের আকীদা-বিশ্বাস

লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম

১৯
গালির অপরিহার্য পরিণতির কিছু বিষয়ের ব্যাখ্যা আমার পাঠক ভাইয়ের সামনে পেশ করা হলো:
প্রথমত: সাহাবীগণকে গালিদানকারীর কথার ওপর ভিত্তি করে অল্প সংখ্যক সাহাবী ব্যতীত অধিকাংশ সাহাবী কাফির, মুরতাদ বা ফাসিক হয়ে যাওয়াটা আবশ্যক হয়ে পড়ে। আরও আবশ্যক হয়ে পড়ে আল-কুরআনুল কারীম ও হাদীসে নববীর মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হওয়া। আর এটি এ জন্য যে, সংকলনকারীগণ অপবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত হলে, সংকলিত বিষয় বা বস্তুও সে অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে পড়ে। কারণ, কীভাবে আমরা এমন একটি কিতাবের ওপর আস্থা রাখব, যে কিতাবটি আমাদের পর্যন্ত বহন করে নিয়ে এসেছে ফাসিক ও মুরতাদগণ (না‘উযুবিল্লাহ)। আর এ জন্যই সাহাবীগণকে গালি দানকারী কিছুসংখ্যক পথভ্রষ্ট ও বিদ‘আতের অনুসারী ব্যক্তিবর্গ স্পষ্ট করে বলে যে, সাহাবীগণ আল-কুরআনকে বিকৃত করেছেন এবং তাদের কেউ কেউ এটাকে গোপন করেছেন। আর তাদের দাবী অনুযায়ী হাদীসে নববীর বেলায়ও অনুরূপটি সংঘটিত হওয়া আবশ্যক হয়ে পড়ে; কারণ যখন সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমকে তাদের ‘আদালত তথা ন্যায়পরায়ণতার ব্যাপারে দোষারোপ করা হয়, তখন সনদসমূহ মুরসাল বা মাকতু‘ হয়ে যায়, যা সে ব্যাপারে দলীল হতে পারে না। এ সত্ত্বেও তাদের কেউ কেউ আল-কুরআনের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাসের কথা বলে। অতএব, আমরা তাদের উদ্দেশ্যে বলব: আল-কুরআনের প্রতি ঈমান থেকে আবশ্যক হয়ে পড়ে তার মধ্যে যা কিছু আছে তার প্রতি ঈমান স্থাপন করা। আর আমরা জানি যে, তার মধ্যে যা কিছু আছে, তা হলো: সাহাবীগণ হলেন শ্রেষ্ঠ উম্মত বা জাতি, আল্লাহ তাদেরকে অপমানিত করবেন না এবং তিনি তাদের প্রতি সন্তুষ্ট ইত্যাদি। সুতরাং যে ব্যক্তি তাদের ব্যাপারে এ তথ্যকে সত্য বলে স্বীকার করবে না, সে ব্যক্তি আল-কুরআনের মধ্যে যা কিছু আছে তাতে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী এবং তার প্রতি বিশ্বাস লঙ্ঘনকারী।

দ্বিতীয়ত: গালি দানকারীদের এ কথা দাবি করে যে, নিশ্চয় এ জাতি হলো (না‘উযুবিল্লাহ) নিকৃষ্ট জাতি, যাদেরকে মানবজাতির কল্যাণে প্রেরণ করা হয়েছে; আর এ জাতির পূর্ববর্তীগণ হলো জাতির নিকৃষ্ট সন্তান। আর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হলো প্রথম শতাব্দীর প্রজন্ম, তাদের সকলেই ছিল কাফির অথবা ফাসিক এবং নিশ্চয়ই তারা হলো সকল শতাব্দীর নিকৃষ্ট ব্যক্তি। [আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৮৭]

তাদের মুখ থেকে কত জঘন্য কথা বের হয়, এরা তো শুধু মিথ্যাই বলে।

তৃতীয়ত: এ কথা থেকে দু’টি বিষয়ের কোনো একটি আবশ্যক হয়: তাদের কথা থেকে হয় আল্লাহ তা‘আলার সাথে মূর্খতার সম্পর্ক যুক্ত হয়ে যায়, অথবা (আল-কুরআনের) এসব বক্তব্যে তিনি সাহাবীগণের ব্যাপারে যে প্রশংসা ও গুণগান করেছেন, তা নিরর্থক হয়ে যায়। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা যদি তাদের কথা না জেনে থাকেন যে, তারা অচিরেই কাফির হয়ে যাবে এবং তা সত্ত্বেও তিনি তাদের প্রশংসা ও গুণগান করেছেন এবং তাদেরকে উত্তম প্রতিশ্রুতি দান করেছেন, তবে তা হলো এক ধরনের মূর্খতা আর আল্লাহ তা‘আলার ওপর মূর্খতার অভিযোগ আনা অসম্ভব। অন্যদিকে আল্লাহ তা‘আলা যদি জানেন যে, তারা অচিরেই কাফির হয়ে যাবে, তবে তাদের জন্য তাঁর উত্তম প্রতিশ্রুতি এবং তাদের ওপর তাঁর সন্তুষ্ট হওয়ার কোনো অর্থই হয় না। আর আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে নিরর্থক কোনো কাজ হওয়া একেবারেই অসম্ভব। [দেখুন: মুহাম্মদ ইবনুল ‘আরাবী আত-তাবানী, ইত্তিহাফু যবিউন নাজাবা, দারুল আনসার, পৃষ্ঠা ৭৫]

তাছাড়া এ অপবাদ বা অভিযোগ আল্লাহ তা‘আলার হিকমত বা কর্মকৌশলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, যেমন তিনি তাদেরকে পছন্দ ও বাছাই করেছেন তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহচর্যের জন্য। অতঃপর তারা তাঁর সাথে জিহাদ করেছেন, তাকে শক্তি যুগিয়েছেন এবং সাহায্য করেছেন, আর তিনি তাদেরকে তাঁর আত্মীয় হিসেবে গ্রহণ করেছেন, এমনকি তিনি তাঁর দুই কন্যাকে যূন-নূরাইন উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে বিয়ে দিয়েছেন এবং তিনি আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার কন্যাদ্বয়কে বিয়ে করেছেন। সুতরাং তারা অচিরেই কাফির হয়ে যাবে (যেমনটি অপবাদ দানকারীরা বলে থাকে) -এ কথা তাঁর জানা থাকা সত্ত্বেও তিনি কীভাবে তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য তাদেরকে সাহায্যকারী ও আত্মীয়-স্বজন হিসেবে মনোনীত করেছেন?

চতুর্থত: সাহাবীগণকে প্রশিক্ষণ দানের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে অসম্ভব পরিশ্রম করেছেন, এমনকি শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলার একান্ত অনুগ্রহে চরিত্রে, ত্যাগ-তিতিক্ষায়, তপস্যায় এবং তাকওয়া বা ধার্মিকতায় একটি আদর্শ সমাজ গঠিত হয়েছে। সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক বা প্রশিক্ষক।

কিন্তু (গালির অপরিহার্য পরিণতি) অবস্থাকে তার বিপরীত করে দেয়। কারণ, যে জামা‘আতটি ইসলাম ও ইসলামের নবীর সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার দাবি করে, তারা এ সমাজের জন্য সম্পূর্ণ বিপরীত একটা রূপরেখা পেশ করে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ময়দানে যেসব চেষ্টা-সাধনা ও কষ্ট স্বীকার করেছেন, তা ধ্বংস করে এবং তাঁর ওপর ব্যর্থতার এমন অভিযোগ চাপিয়ে দেয়, যা নিয়ে কোনো সংস্কারক বা প্রশিক্ষক তাঁর মুখোমুখি হয় নি। একনিষ্ঠ সংবাদ বাহক হিসেবে তিনি আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে আদিষ্ট ছিলেন না, ইত্যাদি ইত্যাদি...। [ঐসব বড় বড় কল্পনাবিলাসী, অপবাদদানকারী ও পথভ্রষ্টদের কেউ কেউ স্পষ্ট ভাষায় বলে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফল হন নি। আর এ ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে যিনি সফল হবেন, তিনি হলেন তাদের ধারণাকৃত অদৃশ্য মাহদী (অর্থাৎ তাদের মাহদী)। দেখুন: আল-আশকার, আর-রাসূল ওয়ার রিসালাত, পৃষ্ঠা ২১২, ২১৩]

আর ইমামীয়া শিয়ারা (বর্তমান সময়ের ইরান, ইরাকের শিয়ারা) মনে করে যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে জোর-জবরদস্তিমূলক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, কোনো কোনো বর্ণনা অনুযায়ী তা শুধু তিনজন অথবা চারজনের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়েছে, যারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর পর্যন্ত ইসলামকে আঁকড়ে ধরেছিলেন, বাকিরা তাঁর মৃত্যুর পর পরেই ইসলামের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে (না‘উযুবিল্লাহ) এবং তারা দাবী করছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহচর্য ও তাঁর শিক্ষা ব্যর্থ হয়েছে এবং তার কোনো প্রকার প্রভাবই পরিলক্ষিত হয় নি।

আর এ ধারণা মানবতার সংস্কারের ক্ষেত্রে হতাশাজনক অবস্থার দিকে নিয়ে যায়, আরও নিয়ে যায় ইসলামী জীবন পদ্ধতি এবং শিক্ষাদান ও নৈতিক চরিত্র গঠনে তার শক্তি ও সামর্থ্যের ক্ষেত্রে অবিশ্বাসের দিকে, অনুরূপভাবে এ ধারণা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতকে সন্দেহের দিকে নিয়ে যায়; কারণ তাদের দাবীর অত্যাবশ্যক পরিণতি দাঁড়ায়, যে দীন বিশ্বের জন্য হাতে গোণা কয়েকজন বাস্তববাদী সফল আদর্শ নেতা উপস্থাপন করতে সক্ষম হয় নি, আরও সক্ষম হয় নি দা‘ঈ বা আহ্বায়ক ও তার রিসালাতের প্রথম দায়িত্বশীলের যুগেই একটি আদর্শ সমাজ উপহার দিতে; তাহলে কীভাবে নবুওয়াতের যুগ থেকে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তার এ অনুসারীগণ তা দিতে সক্ষম হবে?!

আর (অপবাদদানকারীদের দাবী অনুযায়ী) যখন এ দা‘ওয়াতের প্রতি বিশ্বাসীগণ যথাযথ ঐকান্তিকতার ওপর অটল থাকতে সক্ষম হয় নি এবং তাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মহান বন্ধুর নিকট চলে যাবার পরে তাঁর দেওয়া অঙ্গীকারগুলো অনুশীলন করে নি, যে‌ সঠিক পথের ওপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অনুসারীদেরকে রেখে গেছেন সে পথের ওপর শুধু চারজন ব্যতীত আর কে‌উ অটল থাকতে পারে নি। সুতরাং কীভাবে আমরা মেনে নেব যে, এ দীন আত্মার পরিশুদ্ধি ও নৈতিক চরিত্র গঠনের উপযুক্ত ভূমিকা রাখতে পারবে? আর কীভাবে তা মানুষকে বিশৃঙ্খলা ও দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে এবং তাকে মানবতার শিখরে উঠাতে সক্ষম হবে? বরং কখনও কখনও বলা হয়, যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নবুওয়াতে সত্যবাদী হতেন, তাহলে তাঁর শিক্ষাসমূহও প্রভাব বিস্তারকারী হত, সেখানে এমন কাউকে পাওয়া যেত, যে তাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিশ্বাস করত এবং তাদের বিশাল সংখ্যার মধ্য থেকে এমন অনেককে পাওয়া যেত, যারা তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করত এবং ঈমানের ওপর অটল থাকত। সুতরাং তাঁর সাহাবীগণ যদি কয়েকজন ব্যতীত বাকি সকলেই তাদের ধারণা অনুযায়ী মুনাফিক ও মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) হয়ে যেত, তাহলে কে ইসলামকে অব্যাহত রাখবে? আর কোন ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দ্বারা উপকৃত হবে? আর কীভাবেই বা তিনি জগতসমূহের জন্য রহমত (রাহমাতুল লিল ‘আলামীন) বলে বিবেচিত হবেন?! [শাইখ আবূল হাসান আন-নদভী, সূরাতানে মুতাদাম্মাতান, শব্দের রূপ পরিবর্তন করে, পৃষ্ঠা ১৩/৫৩/৫৪/৫৮/৫৯]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন