hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবায়ে কেরামের অবস্থান ও মর্যাদার বিষয়ে আহলে সুন্নাতের আকীদা-বিশ্বাস

লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম

১২
দ্বিতীয়ত: যে ব্যক্তি তাদের কাউকে গালি দেয়, সে তাদের দীনের ব্যাপারে অপবাদ দেয়
যেমন তাদেরকে কাফির বা ফাসিক বলে অপবাদ দেওয়া, যারা হচ্ছেন এমন সাহাবী, যাদের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারে মুতাওয়াতির [কোনো কোনো আলেম এর দ্বারা খলিফাদেরকে নির্দিষ্ট করে থাকেন, আবার কেউ কেউ এর দ্বারা আবূ বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেন। আর আলেমদের মধ্যে কেউ আছেন এমন, যিনি গালির বিধানের মধ্যে তারতম্য করেন এমন বিবেচনায়, যার মর্যাদার ব্যাপারে কুরআন ও সুন্নাহ’র নস বা বক্তব্য মুতাওয়াতির পর্যায়ে উন্নিত হয়েছে অথবা মুতাওয়াতির পর্যায়ে উন্নিত হয় নি, আর সম্ভবত তার পরিসংখ্যান খুবই কাছাকাছি, আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। আর অনুরূপভাবে কেউ কেউ খোলাফায়ে রাশেদীনের গালিদাতাকে কাফির বলে আখ্যায়িত করার বিষয়টিকে তাদের প্রতি কুফুরের অভিযোগ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ করেছেন (অর্থাৎ তাদেরকে কাফির বললেই সে কাফির হবে); আর বাকি সাহাবীদের কাউকে গালি দিলে, তা হবে অপবাদ দেওয়ার শামিল। [অর্থাৎ তার উপর অপবাদের শাস্তি প্রয়োগ হবে] (দ্র. মুহাম্মদ ইবন আবদিল্লাহ আল-ওয়াহাইবী, ‘ই‘তিকাদু আহলে সুন্নাহ ফিস্ সাহাবা’।] পর্যায়ের নস বা বক্তব্য রয়েছে। যেমন, খলিফাগণ। এ জাতীয় কাউকে কাফির বা ফাসিক বলা বিশুদ্ধ মতে কুফরী। কারণ, এর মাধ্যমে মুতাওয়াতির পর্যায়ের বিষয়কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হয়।

আবু মুহাম্মদ ইবন আবু ইয়াযিদ রহ. সাহনূন রহ, থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি আবু বকর, উমার, উসমান ও আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমের ব্যাপারে বলবে যে, তারা ভ্রষ্টতা ও কুফুরীর ওপর বিদ্যমান ছিল, সে ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে। আর যে ব্যক্তি তারা ব্যতীত অপরাপর সহাবীদেরকে অনুরূপ গালি দিবে, সে ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।” [কাযী ‘আইয়াদ্ব, আশ-শিফা: বিশ্লেষণ: আলী-বাজাবী, ২/১১০৯]

হিশাম ইবন ‘আম্মার রহ. বলেন, “আমি মালেক রহ.-কে বলতে শুনেছি “যে ব্যক্তি আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে গালি দিবে, সে ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে গালি দিবে, সে ব্যক্তিকেও হত্যা করা হবে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ব্যাপারে বলেন:

﴿يَعِظُكُمُ ٱللَّهُ أَن تَعُودُواْ لِمِثۡلِهِۦٓ أَبَدًا إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ١٧﴾ [ النور : ١٧ ]

“আল্লাহ তোমাদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন, ‘তোমরা যদি মুমিন হও তবে কখনো যাতে অনুরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি না কর।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ১৭]

সুতরাং যে ব্যক্তি তার প্রতি অপবাদ বা অভিযোগের বাণ নিক্ষেপ করবে, সে ব্যক্তি আল-কুরআনের বিপক্ষে অবস্থান নিবে, আর যে ব্যক্তি আল-কুরআনের বিপক্ষে অবস্থান নিবে, তাকে হত্যা করা হবে।” [আস-সাওয়া‘য়েক আল-মুহরিক্বা, পৃষ্ঠা ৩৮৪]

অপর এক বর্ণনায় ইমাম মালেক রহ.-এর কথা (যে ব্যক্তি আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে গালি দিবে, সে ব্যক্তিকে বেত্রাঘাত করা হবে। আর যে ব্যক্তি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে গালি দিবে, সে ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে। তাকে প্রশ্ন করা হলো: কেন? তখন তিনি বললেন: যে ব্যক্তি তার প্রতি অপবাদ বা অভিযোগের বাণ নিক্ষেপ করবে, সে ব্যক্তি আল-কুরআনের বিপক্ষে অবস্থান নেবে। বিষয়টি খুবই স্পষ্ট। আর আল্লাহই সবচেয়ে বেশি ভালো জানেন।

এখানে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে গালি দেওয়ার বিধান প্রশ্নে ইমাম মালেক রহ.-এর উদ্দেশ্য হলো কুফুরীর চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের অপরাধ। আর ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা’র প্রসঙ্গে তার অবশিষ্ট কথাই তা সুষ্পষ্ট করে দেয়। যেমন, তিনি বলেছেন: (যে ব্যক্তি তার প্রতি অপবাদ বা অভিযোগের বাণ নিক্ষেপ করবে, সে ব্যক্তি আল-কুরআনের বিপক্ষে অবস্থান নেবে।) সুতরাং এটা নির্দিষ্ট গালি, যা প্রয়োগকারী কাফির হবে এবং তা সকল গালিকে অন্তর্ভুক্ত করবে না। আর এটা এ জন্য যে, মালেক রহ. থেকে হত্যা করার কথা বর্ণিত হয়েছে ঐ ব্যক্তির প্রসঙ্গে, যে ব্যক্তি আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর চেয়ে কম মর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তিকে কাফির বলবে।” [কাযী ‘আইয়াদ্ব, আশ-শিফা ( الشفا ), বিশ্লেষণ: আল-বাজাবী, ২/১১০৯]

হাইছামী রহ. আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে গালি দেওয়ার বিধান সম্পর্কে বলেন: হানাফীদের মতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে গালি দেওয়া কুফরী, আর শাফে‘ঈদের মতে, দু’টি দৃষ্টিভঙ্গির কোনো একটিকে গ্রহণ করা। আর মালেক রহ.-এর প্রসিদ্ধ মাযহাব হলো, এর দ্বারা বেত্রাঘাত ওয়াজিব হবে। কারণ, তা কুফুরী নয়। তবে হ্যাঁ, কখনও কখনও তিনি তার এ মত থেকে বের হয়ে যান, যেমনটি তার থেকে বর্ণিত হয়েছে খারেজীদের ব্যাপারে, আর তা হলো সে কাফির হয়ে যাবে। সুতরাং তার নিকট মাসআলাটির দু’টি অবস্থা: “সে যদি কাফির না বলে শুধু গালির ওপর সীমাবদ্ধ থাকে, তবে তিনি তাকে কাফির বলেন নি, তার ব্যতিক্রম হলে, সে কাফির হয়ে যাবে।” [আস-সাওয়ায়েক আল-মুহরিক্বা, পৃষ্ঠা ৩৮৬]

তিনি আরও বলেন: “আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং তার মত যাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতের সুসংবাদ দান করেছেন, তাদেরকে কাফির বলার বিধান সম্পর্কে শাফে‘ঈ মাযহাবের অনুসারীগণ কোনো কথা বলেন নি। আর তিনি এ ব্যাপারে অকাট্যভাবে কুফুরী বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন।” [আস-সাওয়া‘য়েক আল-মুহরিক্বা, পৃষ্ঠা ৩৮৫]

আল-খুরাশী রহ. বলেন: “যে ব্যক্তি ‘আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে অপবাদের বাণে বিদ্ধ করবে, যা থেকে আল্লাহ তাকে নির্দোষ বলে ঘোষণা দিয়েছেন..., অথবা আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সাহাবী বলে অস্বীকার করবে অথবা জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত বিশেষ দশ জনের ইসলাম গ্রহণকে অস্বীকার করবে অথবা সকল সাহাবীর ইসলাম গ্রহণকে অস্বীকার করবে অথবা প্রসিদ্ধ চারজনকে কাফির বলবে অথবা তাদের একজনকে কাফির বলবে, তবে সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে।” [আল-খুরাশী ‘আলা মুখতাসারিন খলীল: ৮/৭৪]

বাগদাদী রহ. বলেন: “আর তারা এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে কাফির বলে আখ্যায়িত করেন, যে ব্যক্তি সে দশ জনের কোনো একজনকে কাফির বলে, যাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জান্নাতের সুসংবাদ দান করেছেন, আবার তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সকল স্ত্রী’র পারস্পরিক বন্ধুত্বের কথা বলেন এবং তারা ঐ ব্যক্তিকে কাফির বলে আখ্যায়িত করেন যে ব্যক্তি তাদেরকে কাফির বলে অথবা তাদের ব্যক্তি বিশেষকে কাফির বলে।” [আল-ফারকু বাইনাল ফিরাক, বিশ্লেষণ: মুহাম্মদ মুহিউদ্দীন আব্দুল হামিদ, পৃষ্ঠা ৩৬০]

আর এ মাসআলাটির মধ্যে খোলামেলা বিতর্ক রয়েছে; সম্ভবত অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য বিধানটি পূর্বে অতিবাহিত হয়েছে। আর যারা এ পরিস্থিতিতে কাফির না হওয়ার কথা বলেন তাদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, কবীরা গুনাহ করার কারণে সে ফাসিক। সাহাবীর মর্যাদা ও গালির ধরণ অনুযায়ী সে তিরস্কার ও শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত হবে।

এর বিস্তারিত বর্ণনা নিম্নরূপ:

হাইছামী রহ. বলেন: “যারা সাহাবীগণের গালিদাতাকে কাফির না হওয়ার কথা বলেন তাদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, তারা ফাসিক।” [আস-সাওয়া‘য়েক আল-মুহরিক্বা, পৃষ্ঠা ৩৮৩]

ইবনু তাইমিয়্যা রহ. বলেন: “ইবরাহীম নখ‘ঈ রহ. বলেন: আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে গালি দেওয়াকে কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত বলা হতো। অনুরূপভাবে আবু ইসহাক আস-সাবি‘ঈ বলেন: আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে গালি দেওয়াটাকে ঐসব কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, যার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِن تَجۡتَنِبُواْ كَبَآئِرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ﴾ [ النساء : ٣١ ]

“যদি তোমরা ঐসব কবীরা গুনাহ থেকে দূরে থাক, যার থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৩১]

আর তাদের গালি দেওয়ার পরিণতি যখন এ পর্যায়ের, তখন তার সর্বনিম্ন বিধান হলো তিরস্কার করা। কারণ, তার বিধান শরী‘আত বিধিবদ্ধ করেছে এমন প্রতিটি অপরাধের জন্য, যার বিধানের মধ্যে হদ তথা শরী‘আত নির্ধারিত শাস্তি ও কাফফারার ব্যবস্থা নেই... আর এটি (হদ ও কাফফারা) এমন বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত, যে বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণ ও তাদের যথার্থ অনুসারী তাবে‘ঈগণ থেকে শুরু করে ফিকাহবিদ ও বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মধ্যে কোনো বিতর্ক আছে বলে আমরা জানি না। সুতরাং তারা সকলেই এ কথার ওপর ঐক্যবদ্ধ যে, উম্মতের উপর আবশ্যক হলো সাহাবীগণের গুণাবলী আলোচনা করা, তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা ও তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা... এবং যে ব্যক্তি তাদের ব্যাপারে মন্দ কথা বলবে, তার শাস্তির ব্যবস্থা করা। [আল-লালকায়ী, শরহু উসূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাত ৮/১২৬২, ১২৬৬; আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৭৮]

আর কাযী ‘আইয়াদ্ব বলেন: “তাদের কাউকে গালি দেওয়া কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, আর আমাদের মাযহাব ও অধিকাংশ আলেমের মাযহাব হলো তাকে তিরস্কার করা হবে, তবে হত্যা করা হবে না।” [সহীহ মুসলিম, ইমাম নাওয়াওয়ীর ব্যাখ্যাসহ: ১২/৯৩]

আর আব্দুল মালেক ইবন হাবিব বলেন: “শিয়াদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে অবজ্ঞা করা ও তার থেকে মুক্ত থাকার ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করবে, তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। আর যদি সে আরও বাড়িয়ে আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকেও অবজ্ঞা করে, তবে তার ওপর কঠোর শাস্তি প্রয়োগ হবে, বারবার তাকে প্রহার করা হবে এবং তাকে দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে বন্দী করে রাখা হবে, শেষ পর্যন্ত সে সেখানে মারা যাবে।” [কাযী ‘আইয়াদ্ব, আশ-শিফা, বিশ্লেষণ: আলী আল-বাজাবী, ২/১১০৯; আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৬৯]

সুতরাং আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে গালি দেওয়ার শাস্তি হিসেবে শুধু বেত্রাঘাতের ওপর সীমাবদ্ধ থাকবে না। কারণ, এ বেত্রাঘাত প্রযোজ্য হবে শুধু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহচর্য পাওয়ার অধিকারের জন্য। সুতরাং যখন সহচর্যের সাথে অন্য আরও এমন কোনো গুণাবলী যুক্ত হয়, যা অতিরিক্ত সম্মান পাওয়ার দাবি করে; যেমন, দীন ও মুসলিম ব্যক্তিবর্গকে সাহায্য করা, তার হাতে কোনো বিজয় অর্জন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খিলাফত পাওয়া ইত্যাদি, তবে এসব বিষয়ের প্রত্যেকটি বিষয়ই তার ওপর কোনো ব্যক্তির স্পর্ধা দেখানোর সময় আবশ্যকীয়ভাবেই অতিরিক্ত শাস্তি দাবি করবে। [আস-সাওয়া‘য়েক আল-মুহরিক্বা, পৃষ্ঠা ৩৮৭]

ইমাম আহমদ রহ. বলেন, “তাদের মন্দ দিকের কোনো কিছু আলোচনা-সমালোচনা করা এবং তাদের কাউকে দোষারোপ করা কোনো ব্যক্তির জন্য বৈধ নয়। সুতরাং যে ব্যক্তি এ কাজ করবে, তাকে শাস্তি দেওয়া প্রশাসকের ওপর আবশ্যক হয়ে পড়বে, তাকে ক্ষমা করার অধিকার তার (প্রশাসকের) নেই; বরং তিনি তাকে শাস্তি দিবেন এবং তাকে তাওবা করতে বলবেন। অতঃপর সে যদি তাওবা করে, তবে তিনি তা গ্রহণ করবেন। আর যদি সে তার কথায় অটল থাকে, তবে তাকে পুনরায় শাস্তি দিবেন এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিবেন, শেষ পর্যন্ত সে সেখানে মারা যাবে অথবা সংশোধন হয়ে ফিরে আসবে।” [ত্ববকাতুল হানাবেলা, ১/২৪; আস-সারিমুল মাসলুল পৃষ্ঠা ৫৬৮]

সুতরাং মুসলিম ভাই আমার! যে ব্যক্তি তাদের কাউকে দোষারোপ করে অথবা কাউকে নিন্দা করে, সে ব্যক্তির ব্যাপারে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের ইমামের কথার প্রতি লক্ষ্য করুন, আরও লক্ষ্য করুন আবশ্যকীয়ভাবে তার ওপর শাস্তির বিধানের প্রতি। আর যখন কোনো কোনো ইমামের নিকট তাদেরকে উল্লিখিত গালি দেওয়াটা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত হয় তবে গালিদাতার হুকুম হবে কুফুরীর মতো অপরাধকে বৈধ বিবেচনাকারীর মতো কবীরা গুনাহ করা ব্যক্তির হুকুমের মতো।

ইমাম মুহাম্মদ ইবন ‘আবদিল ওহহাব রহ. সাহাবীগণকে গালি দেওয়া বৈধ মনে করার বিধান স্পষ্ট করে বলেন: “আর যে ব্যক্তি তাদের কিছু সংখ্যককে গালির মাধ্যমে নির্দিষ্ট করে অতঃপর তিনি যদি এমন সাহাবী হন, যার মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারে মুতাওয়াতির বর্ণনা রয়েছে। যেমন, খলিফাগণ। এমতাবস্থায় গালিদাতা যদি বিশ্বাস করে যে, তাকে গালি দেওয়ার অধিকার তার রয়েছে অথবা সে গালি দেওয়াটাকে বৈধ মনে করে, তবে সে কাফির হয়ে যাবে। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত আছে তাকে (সাহাবীকে) মিথ্যা প্রতিপন্ন করলে, মিথ্যা প্রতিপন্নকারী কাফির বলে গণ্য হবে। আর সে যদি তাকে গালি দেওয়ার অধিকার তার রয়েছে বলে মনে না করে তাকে গালি দেয় অথবা গালি দেওয়াটাকে বৈধ মনে না করে, তবে সে ফাসিক হয়ে যাবে। কারণ, মুসলিম ব্যক্তিকে গালি দেওয়াটা ফাসেকী বা অন্যায়। কোনো কোনো আলেম ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে কাফির বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে ব্যক্তি শায়খাইন তথা আবু বকর ও উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে সাধারণভাবে যে কোনো প্রকার গালি প্রদান করে।” [আর-রাদ্দু ‘আলার-রাফেদা, পৃষ্ঠা ১৯]

যে ব্যক্তি তাদের কাউকে গালি দেয়, তার ব্যাপারে পূর্ববর্তী আলোচনার সারকথা হলো, সে তার দীন ও ন্যায়পরায়ণতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করল, আর তিনি যদি এমন সাহাবী হন, যার মর্যাদার ব্যাপারে মুতাওয়াতির পর্যায়ের বর্ণনা রয়েছে, তবে সে (অভিযোগকারী) মুতাওয়াতির পর্যায়ের বিষয়কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কারণে গ্রহণযোগ্য ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মতের ভিত্তিতে কাফির হয়ে যাবে। তবে যাকে আলেমগণ কাফির বলে আখ্যায়িত করেন নি, তার ব্যাপারে তাদের ঐক্যবদ্ধ মতো হলো -সে কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত একজন এবং সে তিরস্কার ও শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত হবে। আর ইমামের জন্য তাকে ক্ষমা করা বৈধ হবে না। আর সাহাবীর মর্যাদার অবস্থান অনুযায়ী শাস্তির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। আর তাদের মতে, সে ততক্ষণ পর্যন্ত কাফির হবে না, যতক্ষণ না সে তাদেরকে গালি দেওয়াটাকে বৈধ মনে করবে। তবে যে ব্যক্তি গালি দেওয়াটাকে বৈধ মনে করার ক্ষেত্রে অতিরঞ্জিত করবে। যেমন, গালি দেওয়ার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত হবে মনে করবে, তাহলে সে এমন পর্যায়ের কাফির হবে, যে ব্যাপারে কোনো বিতর্ক নেই। এরূপ ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী আলেমদের বক্তব্য সুস্পষ্ট।

আল্লাহ চাহে তো এ প্রকারের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার পরবর্তী প্রত্যেকটি প্রকার খুব সহজেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। এ জন্যই আমরা এ প্রসঙ্গে আলোচনা দীর্ঘায়িত করেছি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন