hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবায়ে কেরামের অবস্থান ও মর্যাদার বিষয়ে আহলে সুন্নাতের আকীদা-বিশ্বাস

লেখকঃ ড. মো: আমিনুল ইসলাম

২২
ষষ্ঠ অধ্যায়: সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমের সম্মান ও মর্যাদা
সাহাবীগণ হলেন আল্লাহর তা‘আলার নবী ও রাসূলগণের পরে দুনিয়ার সকল মানুষের মধ্য সবচেয়ে সম্মানিত ও মর্যদাবান মানুষ। আর ঈমানের দিক থেকে তারা হলেন নবী-রাসূলগণের পর অগ্রগামী পূর্বপুরুষ এবং দয়াময় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকারী ব্যক্তিবর্গ। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿كُنتُمۡ خَيۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ﴾ [ ال عمران : ١١٠ ]

“তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানব জাতির কল্যাণের জন্য যাদের আগমন হয়েছে।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১১০]

তিনি আরও বলেন:

﴿وَكَذَٰلِكَ جَعَلۡنَٰكُمۡ أُمَّةٗ وَسَطٗا لِّتَكُونُواْ شُهَدَآءَ عَلَى ٱلنَّاسِ وَيَكُونَ ٱلرَّسُولُ عَلَيۡكُمۡ شَهِيدٗا﴾ [ البقرة : ١٤٣ ]

“আর এভাবে আমরা তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী (সর্বোত্তম) জাতিতে পরিণত করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির ওপর স্বাক্ষী হও এবং রাসূল তোমাদের ওপর সাক্ষী হতে পারেন”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৪৩]

এ আয়াত দু’টি সকল সাহাবীর মর্যাদার ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণাপত্র। কেননা, এ বক্তব্যের দ্বারা সরাসরি সম্বোধিত ব্যক্তিবর্গ হলেন সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম। তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলা সাহাবীগণের উপমা পেশ করেছেন তাওরাত ও ইঞ্জীলের মতো প্রসিদ্ধ আসমানী কিতাবে, যে কথা তিনি পবিত্র কুরআনে বলেছেন এভাবে:

﴿مُّحَمَّدٞ رَّسُولُ ٱللَّهِۚ وَٱلَّذِينَ مَعَهُۥٓ أَشِدَّآءُ عَلَى ٱلۡكُفَّارِ رُحَمَآءُ بَيۡنَهُمۡۖ تَرَىٰهُمۡ رُكَّعٗا سُجَّدٗا يَبۡتَغُونَ فَضۡلٗا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِضۡوَٰنٗاۖ سِيمَاهُمۡ فِي وُجُوهِهِم مِّنۡ أَثَرِ ٱلسُّجُودِۚ ذَٰلِكَ مَثَلُهُمۡ فِي ٱلتَّوۡرَىٰةِۚ وَمَثَلُهُمۡ فِي ٱلۡإِنجِيلِ كَزَرۡعٍ أَخۡرَجَ شَطۡ‍َٔهُۥ فَ‍َٔازَرَهُۥ فَٱسۡتَغۡلَظَ فَٱسۡتَوَىٰ عَلَىٰ سُوقِهِۦ يُعۡجِبُ ٱلزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ ٱلۡكُفَّارَۗ وَعَدَ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ مِنۡهُم مَّغۡفِرَةٗ وَأَجۡرًا عَظِيمَۢا ٢٩﴾ [ الفتح : ٢٩ ]

“মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। আর তার সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, তাদের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু‘ ও সাজদায় অবনত দেখবেন। তাদের লক্ষণ তাদের মুখমণ্ডল সাজদাহ’র প্রভাবে পরিস্ফুট। এটাই তাওরাতে তাদের দৃষ্টান্ত। আর ইঞ্জীলে তাদের দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন একটি চারাগাছ, যা থেকে নির্গত হয় কচিপাতা, তারপর তা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে যা চাষীর জন্য আনন্দদায়ক। এভাবে আল্লাহ মুমিনদের সমৃদ্ধি দ্বারা কাফিরদের অন্তর্জ্বালা সৃষ্টি করেন। যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপ্রতিদানের।” [সূরা আল-ফাতহ, আয়াত: ২৯]

তাছাড়া আল-কুরআনের আরও কতগুলো আয়াত রয়েছে যেগুলোতে সাহাবীগণের প্রশংসা, মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের বিবরণ রয়েছে, রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের প্রতি ক্ষমা ও সন্তুষ্টির সুস্পষ্ট ঘোষণা, যে আয়াতগুলো আমরা এ গ্রন্থের শুরুর দিকে বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ আলোচনা করেছি।

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তার সাহাবীগণের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে বলেছেন,

«لاَ تَسُبُّوا أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِى، فَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَوْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلاَ نَصِيفَهُ» .

“তোমরা আমার সাহাবীগণের কাউকে গালি দিবে না; কারণ, তোমাদের কেউ যদি ওহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ স্বর্ণও দান করে, তবে সে তাদের এক মুদ বা তার অর্ধেক পরিমাণ দানের সাওয়াবও অর্জন করতে পারবে না।” [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: সাহাবীদের ফযীলত, পরিচ্ছেদ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: আমি যদি অন্তরঙ্গ বন্ধু গ্রহণকারী হতাম, হাদীস নং ৩৪৭০; মুসলিম, অধ্যায়: সাহাবীদের ফযীলত, পরিচ্ছেদ: সাহাবা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমকে গালি দেওয়া হারাম, হাদীস নং ৬৬৫২]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,

«خير أمتي قرني ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم . قال عمران : فلا أدري أذكر بعد قرنه قرنين أو ثلاثا» .

“আমার যুগের উম্মত হলো আমার শ্রেষ্ঠ উম্মত, অতঃপর তাদের সাথে যারা সম্পৃক্ত হবে তারা শ্রেষ্ঠ, তারপর তাদের সাথে যারা সম্পৃক্ত হবে তারা শ্রেষ্ঠ। ‘ইমরান বলেন: আমি জানি না, তিনি তাঁর যুগের পরে দু’টি যুগের কথা উল্লেখ করেছেন, নাকি তিনটি যুগের উল্লেখ করেছেন।” [সহীহ বুখারী, অধ্যায়: সাহাবীদের ফযীলত, পরিচ্ছেদ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীদের ফযীলত, হাদীস নং ৩৪৫০; মুসলিম, অধ্যায়: সাহাবীদের ফযীলত, পরিচ্ছেদ: সাহাবী, তৎপরবর্তী ও তৎপরবর্তীদের ফযীলত, হাদীস নং ৬৬৩৮]

আর সাহাবায়ে কেরামের সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য ছাড়াও বিশেষ ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে আরও অনেক বক্তব্য পাওয়া যায়, তন্মধ্যে কিছু বক্তব্য নিম্নরূপ:

১. আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহ ‘আনহুমা বলেন,

«لَا تَسُبُّوا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمُقَامُ أَحَدِهِمْ سَاعَةً معَ النَّبيِّ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرٌ مِنْ عَمَلِ أَحَدِكُمْ أربعين سنة» .

“তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণকে গালি দিও না; কারণ, তাদের কোনো একজনের এক ঘন্টা সময় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে অবস্থান করার মূল্যমান তোমাদের কোনো একজনের চল্লিশ বছরের আমলের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম।” [শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যা, শরহু লামিয়া ৮ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১১ (মাকতাবা শামেলা, আল-ইসদার আস-সানী)]

২. আর ওকী‘ রহ.-এর অপর এক বর্ণনায় আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহ ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,

«لَا تَسُبُّوا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمُقَامُ أَحَدِهِمْ سَاعَةً خَيْرٌ مِنْ عبادة أَحَدِكُمْ عُمْرَهُ » .

“তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবীগণকে গালি দিও না; কারণ, তাদের কোনো একজনের এক ঘন্টা সময় (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে) অবস্থান করার মূল্যবান তোমাদের কোনো একজনের গোটা জীবনের ইবাদতের চেয়েও অনেক বেশি উত্তম।” [ইমাম আহমদ, ফাযায়েলুস সাহাবা: ১/৫৭; ইবনু মাজাহ, ১/৩১ (আল-আ‘যামী); ইবনু আবি ‘আসেম, ২/৪৮৪; আল-বুসাইরী ‘যাওয়ায়েদু ইবন মাজাহ’ এর মধ্যে (১/২৪) খবরটিকে সহীহ বলেছেন; আল-মাতালেবুল ‘আলীয়া, ৪/১৪৬]

৩. মুজাহিদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,

«لا تسبوا أصحاب محمد إن الله قد أمر بالاستغفار لهم وقد علم أنهم سيقتتلون» .

“তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহাবীগণকে গালি দিও না। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি জানেন যে, তারা অচিরেই নিজেদের মধ্যে মারামারি করবে।” [আস-সারিমুল মাসলুল, পৃষ্ঠা ৫৭৪; আরও দেখুন: মিনহাজুস সুন্নাহ, ২/১৪; আছার, ইমাম আহমদ তা ফাযায়েল অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন, হাদীস নং ১৮৭, ১৭৪১; তার সনদকে শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যা, ইবন বাত্তার মিনহাজুস সুন্নাহতে হাদীসটি সংযোজন করেছেন: ২/২২]

৪. ইমাম আহমদ রহ. তার আকীদা প্রসঙ্গে বলেন, “সাহাবীগণের মধ্য থেকে একজন নগণ্য সাহাবীর মর্যাদা ঐ যুগের সকল ব্যক্তির চেয়েও শ্রেষ্ঠ, যারা তাকে দেখে নি, যদিও তারা তাদের সকল আমল নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করে।” [আল-লালকায়ী, শরহু উসূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাত ১/১৬০]

৫. ইমাম নাওয়াওয়ী রহ. বলেন, “এক মুহূর্তের জন্য হলেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহচর্য পাওয়ার মর্যাদার সমতুল্য কোনো আমলই হতে পারে না; আর কোনো কিছুর বিনিময়ে তার সমমর্যাদা অর্জন করা সম্ভব নয়। আর ফযীলত বা মর্যাদার বিষয়টি কিয়াসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয় না। এটা হচ্ছে আল্লাহর অনুগ্রহ, যা তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন।” [নাওয়াওয়ীর ব্যাখ্যাসহ মুসলিম: ১৬/৯৩]

৬. আর আবু উমার ইবন আবদিল বার রহ ‘আল-ইস্তি‘য়াব’ গ্রন্থে বলেন,

«قد كُفينا البحثَ عن أحوالِهم، لإجماع أهل الحقِّ من المسلمين، وهم أهلُ السنة والجماعة؛ على أنهم كلُّهم عدول» .

“তারা সকলেই ন্যায়পরায়ণ -এ কথার ওপর মুসলিমগণের মধ্য থেকে হকপন্থীগণের ইজমা‘র কারণে আমাদেরকে তাদের অবস্থা সম্পর্কে অনুসন্ধানীয় আলোচনা-পর্যালোচনা করতে নিষেধ করা হয়েছে আর হকপন্থীগণ হলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত।” [উদ্ধৃত: ড. নূর উদ্দিন ‘আতর, ‘মানহাজুন্ নাকদ ফী ‘উলুমিল হাদীস’, পৃষ্ঠা ১২২]

৭. মুহাম্মাদ ইবনুল ওযীর আল-ইয়ামানী সাহাবীগণের ন্যায়পরায়ণতার প্রশ্নে সংঘটিত ‘ইজমা’-এর বর্ণনা নকল করেছেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের পক্ষ থেকে এবং শী‘আয়ে যায়েদিয়া ও মু‘তাযিলাদের পক্ষ থেকেও। আর অনূরূপ বক্তব্য আস-সানা‘য়ানী রহ.-এরও। [প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা ১২২]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন