মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘বাঙালিয়ানার’ নতুন সংজ্ঞা উঠে এসেছে জনৈকা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীর মুখ থেকে। তার সংজ্ঞায় সে মন্তব্য করেছে, ‘মাথায় কাপড় ও নেকাব বা হিজাব পরা নারীরা কখনোই বাঙালি নয়।’ সেই সঙ্গে সে বাঙালিয়ানা থেকে দাড়ি-টুপিকেও বাদ দিয়েছে। আর তার এমন মন্তব্যে ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে। কিছুদিন আগে একাত্তর টিভিতে ‘সংস্কৃতিজনের রাজনীতি ভাবনা’ শীর্ষক এক টকশোতে সে বাঙালিয়ানা নিয়ে এমন মন্তব্য করে। মিথিলা ফারজানার উপস্থাপনায় টকশোতে সে ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন নাট্যকার মামুনুর রশীদ, অভিনেতা তারিক আনাম খান।
আলোচনার এক পর্যায়ে মিতা হক বলে, ‘আজকে তুমি (সঞ্চালক মিথিলা ফারজানা) আর আমি শাড়ি পড়ে বসেছি। মামুন ভাই (নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদ), তারিক ভাই (নাট্যব্যক্তিত্ব তারিক আনাম) পাঞ্জাবি পরে বসেছে। কেউ দাড়ি-টুপি লাগিয়ে নেই। কেউ লম্বা সিঁদুর পরেও নেই। কেউ হিন্দু, শিখ। আমাদের কমন পরিচয় আছে। ছেলেরা একরকম পোশাক পরবে, মেয়েরা একরকম পরবে।’
সে আরো বলে, ‘আমাদের না আইডেন্টি ক্রাইসিসটা এতো বাজে। আজকাল বাংলাদেশে রাস্তায় বেরিয়ে, কোনো ডাক্তারখানায় বা হাসপাতালে গিয়ে, যেখানে একটু লোকজনের সমাগম বেশি, যেখানে ওয়েটিং রুম আছে, লোকজন অপেক্ষা করছে, সেখানে দেখি যে, একমাত্র আমিই বাঙালি। আমি শাড়ি পরে গেছি আর আমার মাথায় ঘোমটা নেই। আজকাল তারা এইটুকু মুখ (নেকাব বা হিজাবের শুধু চোখ ছাড়া সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা) বের করে রাখছে। এতে তারা আর যাই হোক বাঙালি নয়।’
সে যে দেশে বাস করে সেই দেশ যে তার বাপের তালুক নয় এবং তার মতো স্বল্পশিক্ষিত নারীর সংজ্ঞায় দেশের নাগরিকদের সংজ্ঞা নিরূপিত হয় না সে তথ্য সম্ভবত সে জানেই না। আসলে দেশটা আজ অদ্ভুত প্রতিযোগিতার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে। পুচকি-পাচকা লোকেরা টিভি কিংবা সাংবাদিক ক্যামেরার সামনে পড়লেই নিজেকে উঁচুদরের কেউ মনে করে খিস্তিখেউর করে যাচ্ছে এবং বেছে বেছে টার্গেট করছে ইসলামকে। নইলে গায়িকার পেশার মতো একটা পেশায় জড়িত এ নারী কোন সাহসে নির্ণয় করে দেশের নাগরিকদের সংজ্ঞা? বাঙালিয়ানাকে সে ইসলাম ও পর্দা থেকে আলাদা করার দুঃসাহস পায় কোথা থেকে? সে কি জানে বাংলাদেশ হওয়া পর্যন্ত এদেশ রচিত হওয়ার পূর্ণ ইতিহাস? জানবে কি করে? এদের মতো ভোঁতা ও ক্ষুদ্র জ্ঞানের লোকেরা ইতিহাসের মতো কঠিন জ্ঞান হাসিল করতে পারে?
সঙ্গত কারণেই তার এই মূর্খতাসুলভ হইচই সাধারণ মানুষ মেনে নিতে পারেনি। এ বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
আবু সুফিয়ান লিখেছেন, ‘.. (ওই মহিলার) তত্ত্ব অনুযায়ী শেখ হাসিনা বাঙ্গালী না। বঙ্গমাতাও বাঙ্গালী না। কারণ বঙ্গমাতা মাথায় কাপড় দিতেন। শেখ হাসিনাও মাঝে মাঝে মাথায় কাপড় দেন।’
এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একেএম ওয়াদিদুজ্জামান লিখেছেন, ‘আমি বাঙ্গালী’ কিনা? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে তো জানতে হবে যে আমি নিজেকে ‘বাঙ্গালী’ বলে দাবী করেছি কী না? প্রাচীন ‘বঙ্গ’ রাজ্যের ‘বাঙ্গাল’রা কখনোই বৃটিশ শাসনের বাই প্রোডাক্ট কোলকাতাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী সমাজের সঙ্গায়িত ‘বাঙ্গালী’ পরিচয়ে পরিচিত হতে চায় নাই, এখনো চায় না। বৃটিশ আমলেই প্রখ্যাত কৌতুক অভিনেতা সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায় (ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়) ‘বাঙ্গাল’কে পুংলিঙ্গ এবং ‘বাঙ্গালী’কে স্ত্রী লিঙ্গ বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন।
কোলকাতাকেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবীদের নেতৃত্বে বাহ্মণ্যবাদীরা থাকায় তাদের সৃষ্ট এই ‘বাঙ্গালী’ ভাবধারাটি প্রায় সর্বোতভাবে অন্য ধর্মের সাংস্কৃতিক উপাদানকে অস্বীকার করে এসেছে। যে কারণে শতবর্ষ পুরাতন শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে ‘বাঙ্গালী বনাম মুসলিমদের ফুটবল ম্যাচ’ এর বিবরণ পাওয়া যায়। দীর্ঘদিনের সেই প্রকৃত ‘বাঙ্গালী’ সংঙ্গাটি এ মহিলা আবার আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে। সে যথাযথই বলেছে; আমিও উনার সঙ্গে একমত যে, ‘হিজাব, ঘোমটা ও দাড়ি-টুপিওয়ালারা আর যাই হোক বাঙ্গালী না’। ঘোমটা মাথায় গায়ের বধূ, খালেদা জিয়া বা শেখ হাসিনা কখনোই ‘বাঙ্গালী’ নন। মহিলার এই বক্তব্যের পর মাথায় ঘোমটা দিয়ে বা হিজাব পরে কিংবা দাড়ি রেখে, মাথায় টুপি দিয়ে নিজেদের যারা ‘বাঙ্গালী’ দাবী করেন বা ‘বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ’ এর তত্ত্বকথা শোনান, তাদের পরিচয় সংকটের অবসান ঘটবে। হয় তারা এখন থেকে আর নিজেদের ‘বাঙ্গালী’ দাবী করবে না, নয়তো নিজেদের ঘোমটা-হিজাব ও দাড়ি-টুপি বর্জন করবে!
ফাহাম আব্দুস সালাম লিখেছেন, ‘... আইডেন্টিটি ক্রাইসিসটা আপনার, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশীর না- যেটা আপনি অন্যের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আপনার অল্প বুদ্ধি ও মেধার প্রায়শ্চিত্ত করেন। রাস্তাঘাটে আপনার মতো শাড়ি না পরা মেয়েদেরই শুধু আপনার চোখে পড়ে। কারণ এর বেশি কিছু দেখার জন্য যে সফিস্টিকেশান, প্রস্তুতি ও পড়াশোনো প্রয়োজন সেটা আপনার নেই। এই ঘাটতিকে আপনি পুষিয়ে নিতে চান শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে, বড় টিপ দিয়ে, ভান করে। আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারি, যে বিষয় নিয়ে আপনার অগাধ আস্থা, সেই বাঙালিত্ব নিয়েও আপনার তেমন কোনো পড়াশোনো নেই, জানাশোনো নেই।
দাড়ি-টুপি দেখলেই আপনি অস্বস্তিতে ভোগেন কেননা আপনি প্রগ্রেসিভ না ভীষণ ধরনের ট্রাইবাল মেন্টালিটির মানুষ। সবাইকে আপনার নিজের মতো না দেখলে মনে করেন যে সবকিছু হাতছাড়া হয়ে গেলো। আপনার আগ্রহ আসলে ‘আইল দেয়ায়’, নাহলে আপনি ইনসিকিউরড হয়ে পড়েন, তাই অভিযোগ সবাই কেন আপনার মতো না।
আপনি বাঙালিত্ব ও ইসলামকে এক সঙ্গে ধারণ করতে পারেন না, সাধারণ মানুষ যে এই সাধারণ কাজটা করতে সক্ষম সেটা আপনি বোঝেন না। এই দেশের মানুষ তার স্পিরিচুয়ালিটির ক্ষুধা মেটায় ধর্ম দিয়ে, সংস্কৃতির ক্ষুধা মেটায় বাঙালিত্ব দিয়ে। এ ধরনের কাজের কোনো হ্যান্ডবুক হয় না, তাই তাকে আপোস করতে হয়। কোনো সময় তার বাঙ্গালিত্বে খামতি হয়, কোনো সময় ইসলামে, বাট য়ু নো ওয়াট, ইট রিয়ালি ডাজন ম্যাটার মাচ। তারা আপনার মতো অলস সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণির ঘ্যান ঘ্যান করা মানুষ না। তাদের কাজ আছে।
আপনিই আসলে সেকেলে ধারণার মানুষ, আপনার কাছে আইডেন্টিটির অনুষঙ্গ হলো কেবল শাড়ি পরা, পাঞ্জাবি পরা। এসবের কারণ হচ্ছে, এরচেয়ে গভীরে বুঝতে হলে যে মেধার প্রয়োজন হয় সেটা আপনার নেই। তারচেয়েও বড় কথা আপনি শিখেছেন শুধুই ঘৃণার ব্যবসা করতে। এই কাজ করতে কাউকে না কাউকে আপনার ইনফেরিয়র প্রমাণ করতে হবেই। যেহেতু আপনার জীবিকার জন্য দাড়ি-টুপিকে ছোটো করতে হয় সেহেতু আপনি দাড়ি-টুপিকে ছোটো করছেন। যদি জীবিকার জন্য বাঙালিত্বকে ছোটো করতে হতো- আপনার যে মেধা- আপনি বড় বড় টিপ দেওয়া নিয়েই টিপ্পনি কাটতেন।
(দয়া করে মনে করবেন না আপনি যে বিরক্তি উদ্রেক করেন তার কারণ এই যে আপনি বাঙালিত্ব নিয়ে আপ্লুত এবং এ দেশে ইসলামের প্রসার নিয়ে উদ্বিগ্ন। আপনার অসহনীয় ঠেকে, কারণ প্লেইন এন্ড সিম্পল- আপনি একজন অল্প বুদ্ধি এবং খুবই অল্প পড়াশোনো জানা মানুষ।)’
এদিকে ফেসবুকে একজন (মওলা বাবা) ওই মহিলাকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, ‘আপনার কাছে আমার কিছু প্রশ্ন আছে;
প্রশ্ন ১- আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু মাথায় কাপড় দেন। তাহলে কি উনি বাঙালি না? তবে এই অবাঙালীকে প্রকাশ্যে এভাবে সমর্থন করছেন কেন?
প্রশ্ন ২- আমাদের বিরোধীদলীয় নেত্রীও কিন্তু মাথায় কাপড় দেন, তবে কি উনিও বাঙালি না?
প্রশ্ন ৩- মুক্তিযুদ্ধের কোনোও বীরাঙ্গনা যদি মাথায় কাপড় দেন তবে কি উনি বাঙালি থাকবেন না?
শেষ প্রশ্ন, কোনো পাকিস্তানি বা ভারতীয় যদি মাথায় কাপড় না দেয় তবে কি তারা বাঙালি হয়ে যাবে? উত্তর দিতে পারবেন?’
পাঠক ও সচেতন মহল অবশ্যই দুর্বৃত্তায়নের বাজারে মোটাবুদ্ধির অচলতা সত্ত্বেও কেবল ইসলামবিদ্বেষের কারণে কোনো মতে রুটি-রোজগারে ব্যস্ত ওই মহিলার আসল পরিচয় উদ্ধার করে ফেলেছেন এবং পর্দা, হিজাব, দাড়ি-টুপিকে বাঙালিয়ানার সংজ্ঞার বাইরে ফেলে দেয়ার মাজেজাও সম্ভবত বুঝতে বাকি নেই। কিন্তু কথা আছে না সব শিয়ালের এক রা? ফেসবুক ও যোগাযোগ মাধ্যমে এই মোটা বুদ্ধির মহিলার তীব্র সমালোচনা হতে শুরু করলে তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে আরেক ‘মহাজ্ঞানী’ ও ‘বাঙালী বিশেষজ্ঞ’ মডেল ও অভিনয়শিল্পী সোহানা সাবা। সে তার ফেসবুকে লিখেছে, বোরকা সেই দেশের পোশাক যেসব দেশে ভৌগোলিক কারণে নারী-পুরুষ সবাই জোব্বা পরেন। কিন্তু আর যাই হোক বোরকাধারীরা বাঙালি নন।’
দেশে আজ যে হারে বুদ্ধিজীবী, সংজ্ঞাবিশেষজ্ঞের আবির্ভাব ঘটছে, তাতে আগামী দশবছরের মধ্যে বাংলাদেশকে অভিধানের দেশ নামে আলাদা কোনো সার্টিফিকেট দেওয়া হয় কিনা সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকতে হবে বলে মনে হচ্ছে!
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/655/11
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।