hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফেরারী নারী

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

১৭
ক্ষমতার জন্য নারী না নারীর জন্য ক্ষমতা?
উলামায়ে কেরামের নারী বিষয়ক ভাবনা ও ধ্যান-ধারণাকে ইসলামবিদ্বেষীরা সর্বদা অপব্যাখ্যা করে থাকে। পক্ষান্তরে তারা নারীদের ক্ষমতায়নের নামে তাদের চূড়ান্ত সর্বনাশ ডেকে আনে। প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, উলামায়ে কেরাম নারীদের আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত ক্ষমতা, মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক, তা মনেপ্রাণে কামনা করেন এবং নানাভাবে সে কথাটাই প্রকাশ করে থাকেন। পক্ষান্তরে যারা নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেন, তারা প্রকৃতপক্ষে নারীর ক্ষমতা নয়, নিজেদের ক্ষমতায়নের জন্য তারা নারীদেরকে ব্যবহার করে থাকেন। বিষয়টি খুবই পরিষ্কার। একারণেই আল্লামা আহমদ শফী নারীদের বিষয়ে কোনো কথা বললে তা হয়ে যায় নারী বিদ্বেষ। আর ইসলামবিদ্বেষীরা নারীদের অপমানসূচক কিংবা ব্যাঙ্গাত্মক কথা বললেও তা হয়ে যায় নারী অধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন! যে কথাটা ওরা বললে বাহবা পায়, সেই কথাটা বললে উলামায়ে কেরাম হন নিন্দিত, নারীবিদ্বেষী! একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর বক্তব্যে নারীদেরকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তার বক্তব্যের মর্ম হচ্ছে :

‘ডিজিটাল বিলবোর্ডের কারণে অনেক সময় চালকের দৃষ্টিভ্রম হয়। বিভিন্ন পণ্যের বিলবোর্ডে সুন্দরী নারীদের ছবি দেওয়া হচ্ছে। গাড়িচালকরাও তো মানুষ। রাস্তা দিয়ে চলার সময় চালকদের সেদিকে নজর যাচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে।’

উপরের কথাগুলো ওই মন্ত্রীর একটি বক্তব্যের অংশ। এটি গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়। সংবাদগুলোর শিরোনাম ছিল : ‘সুন্দরী নারীদের বিলবোর্ড দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ’।

গত ২১ জুন ‘১৩ ইং সালের ঘটনা এটি। ওই দিনই বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় এবং তার পরের দিন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে মন্ত্রীর এ বক্তব্যটি ছাপা হয়েছে। ওই দিন থেকে মাসের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। সুন্দরী নারীদের বিলবোর্ড নিয়ে মন্ত্রীর বক্তব্যের পক্ষে বিপক্ষে কোনো কথা দেখলাম না, কোনো গণমাধ্যমেই না। কাউকেই বলতে দেখলাম না, নারী বিজ্ঞাপনকর্মী কিংবা জটিল নাম সর্বস্ব নারী সংগঠনগুলোরও কেউ না। একটু অবাকই হলাম; একটু স্বস্তিও পেলাম।

অবাক হলাম এ জন্য যে, এ দেশে এখন নারী সমাজের পক্ষ সেজে হুংকার দিয়ে রাস্তায় লাফিয়ে পড়ার মতো নারী সংগঠন তো একটি দু’টি নয়। কোনো বিবৃতি দিলেও দেখা যায় সেখানে সংগঠনের সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি পার হয়ে গেছে। তা হলে মন্ত্রীর এমন বিতর্কিত বক্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া হলো না কেনো? ‘সুন্দরী নারীদের ছবির দিকে চোখ যাওয়ার কারণে চালকরা দুর্ঘটনা ঘটায়।’ এতবড় ‘পশ্চাৎপদ, অন্ধকারাচ্ছন্ন ও প্রগতিবিরোধী’ বক্তব্য দিয়েও মন্ত্রী মহোদয় পুরোপুরি পার পেয়ে গেলেন! নারীবাদী সংগঠনের নেত্রীরা কি সব পিকনিকে চলে গিয়েছেন? আহা! আমাদের সর্বকর্মে পারদর্শী প্রগতিশীল মিডিয়া-বন্ধুরা তো ছিলেন। তারাও তো একটা হৈ চৈ লাগাতে পারতেন। না, তারাও এগিয়ে আসেন নি। নারীর এতবড় ‘অবমাননা’ তারা একদম নীরবেই সয়ে গেলেন। বিস্ময়েরই ব্যাপার! তবে স্বস্তি পেয়েছি এ জন্য যে, মন্ত্রীর বক্তব্যটা বাস্তব ছিল এবং সত্যও ছিল। নারী সম্পর্কিত সত্য একটা কথা এ সরকারের একজন মন্ত্রী বলেই ফেলেছেন। লোকলজ্জার ভয়ে তিনি আড়ষ্ট হননি। দলের নারীবাদী সহকর্মীদের তোয়াক্কা করেননি। অন্যরাও তাকে ঘাটাতে যায়নি। তার মানে হচ্ছে, সমাজে নারীর উন্মুক্ত প্রদর্শনীর ক্ষতিকর দিকগুলো এখন মানুষ মেনে নিচ্ছে। এটা নিঃসন্দেহে শুভ বুদ্ধির পরিচায়ক একটি ব্যাপার। এ জন্য স্বস্তিবোধ করা যেতেই পারে।

কিন্তু স্বস্তির এ ঘোরটা কেটে গেলো কয়েকদিন পরেই। জুলাই মাসের শুরুতেই একটি ভিডিও ফুটেজ ছেড়ে দেওয়া হলো ইন্টারনেটে। সেখানে বাংলাদেশের প্রবীণ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব পরনারীর বিষয়ে প্রত্যেক পুরুষকে সংযত ও আত্মসংবরণে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন নারী তেঁতুলের মতো আকর্ষণীয়। নারীদের দেখলে পুরুষের মনের ভেতর প্রলুব্ধতা তৈরি হয়। তাই তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।

ব্যস্ আর যায় কোথায়! ওই ফুটেজের বক্তব্য প্রমাণিত কি না যাচাই করা হলো না। ওটা কারো কারসাজি কিনা খোঁজ নেওয়া হলো না। প্রথমেই উগ্রপন্থী নারীবাদী নারীদের ২৭ কিংবা ৭২টি সংগঠন বিবৃতি দিয়ে বসলো। প্রভাবশালী টিভি চ্যানেল ও পত্রিকায় দিনের পর দিন অশ্রাব্য বিষোদগার চলতে থাকল। যেন এক ভয়ংকর নারীবিদ্বেষী হঠাৎ আবিষ্কৃত হয়ে গেছে। যেন দুনিয়ার সব নারীর দেহ ও সৌন্দর্যের সব মাধুর্য ও কমনীয়তা মুহূর্তেই উধাও হয়ে গেছে। নারীরা যেন সব ইট, পাথর, বৃক্ষের মতোই আকর্ষণহীন উপাদানে পরিণত হয়েছে।

এক কাতারে নেমে এসেছে সব। উগ্র নারীবাদী সংগঠনের ঘরভাঙ্গা নারী নেত্রী, সিনেমা-টিভির নর্তকী-অভিনেত্রী আর ফরমালিনযুক্ত মিডিয়ার খেলোয়াড়রা সব একসঙ্গে হু হু বাতাস দিল। অপরদিকে বাম-রাম রাজনীতিক, অসৎ-মদ্যপ চরিত্রহীন সুশীলরাও ঝাঁপিয়ে পড়ল। জাহাঙ্গীরনগরে ধর্ষণের সেঞ্চুরি, ইডেন কলেজের নারী কর্মীদের নিয়ে নেতাদের ভোগ-ফূর্তি আর দেশে-বিদেশে অহরহ নারী সহকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার কৃতিত্বে উজ্জ্বল ক্ষমতাধররা হঠাৎ ‘তেঁতুল’ নিয়ে যেন মাতোয়ারাই হয়ে গেল। যেন এক ‘তেঁতুল’ দিয়েই তারা তাদের নারী নিগৃহ, নারী নির্যাতনের সব দাস্তান মানুষকে ভুলিয়ে দিতে চাইলো। চাইলো তেঁতুলের নামে নিজেদের সব হত্যা, লুট ও বর্বরতার কালোঅধ্যায় আড়াল করতে। কিন্তু তাতো হবার নয়। মন্ত্রীর সুন্দরী নারীদের বিলবোর্ডের কথায় স্পষ্ট হয়ে গেছে, বাস্তবতা ঢেকে রাখা যায় না। তাই একযাত্রার দুইফলও মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। [সৌজন্যে : শরীফ মুহাম্মাদ, মাসিক আলকাউসার]

আজকের নারীবাদী সংগঠনগুলো যে নারী ধ্বংসের সংগঠনে পরিণত হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ভিকারুন্নিছা, ইডেন ও বদরুন্নেছার ঘটনায় তাদের মুখোশ খানিকটা উন্মোচিত হয়েছিল। ওই সময় মিডিয়া ঝড়ে এলোমেলো হয়েছিল তাদের ভালো মানুষির মুখোশ। কীভাবে নারীনেত্রীরা তাদের অধীনস্ত ও নবীন ছাত্রীদেরকে নেতাদের বাসায় পাঠাতো তাদের মনোরঞ্জনের জন্য, সে সংবাদ পাঠ করে বাংলাদেশের মানুষ আঁতকে উঠেছিল। সেই মুখোশধারী নারীনেত্রীরাই আজ নারীর ইজ্জত গেলো বলে দুই বছর আগের ওয়াজ মাহফিলের সাধারণ একটা উপমার বিষয়কে কেন্দ্র করে এদেশের বিখ্যাত আলেমের বিরুদ্ধে নোংরামি করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে? কই ওদের তো সে সময় নারীর ইজ্জত হরণের তাজা সংবাদে মুখ খুলতে দেখা গেলো না! আসলে নারীর শত্রু আজ নারী। নারীরা চিনতে পারছে না তাদের মূল শত্রুদেরকে। তাই শত্রুকে আপন ভেবে কাছে টেনে নিচ্ছে আর বন্ধুকে দুশমন ভেবে দিচ্ছে দূরে ঠেলে। ফলে বন্ধুবেশী শত্রুর গুপ্ত হামলা থেকেও রেহাই পাচ্ছে না, আবার প্রকৃত বন্ধু ও কল্যাণকামীদের দূরে ঠেলে রাখার কারণে বিপদের সময় তাদের সহযোগিতাও নিতে পারছে না। তাই নারীমুক্তির প্রথম ধাপ হচ্ছে শত্রু-মিত্র নির্ণয়ে বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়া এবং শাহবাগীয় নারীমুক্তির স্লোগানধারীর ভয়ংকর ষড়যন্ত্র থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন