মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
একাধিক বিয়ের আবেদন, চার বোনের আত্মহত্যা ও প্রাসঙ্গিক কথা
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/655/8
বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে অথচ বিয়ে না হওয়ায় ‘আইবুড়ি’র অপমান সহ্য করতে হচ্ছিল প্রতিনিয়ত। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে একসঙ্গে পাঁচ বোন আত্মহত্যা করতে নদীতে ঝাঁপ দেন। এর মধ্যে চারজনই মারা যান। সবচেয়ে ছোট বোনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের সবার বয়স যথাক্রমে ৪৫, ৪৩, ৩৮, ৩৫ ও ৩১ বছর। ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মাইলসি নামের এক শহরে। পাকিস্তানের দ্য নেশন এ খবর জানিয়েছে।
এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বশির আহমেদ রাজপুত নামে এক গরিব বাবা যৌতুক জোগাড় করতে না পারায় পাঁচ মেয়ের বিয়ে দিতে পারেননি। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে মেয়েদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে পাঁচ মেয়ে একসঙ্গে খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এদের মধ্যে মাত্র একজনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়। [অনলাইন ডেস্ক : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩]
ডিম থেকে বাচ্চারা যেমন খাদ্য বাসনা নিয়ে জন্মায় ঠিক ততটাই যেন মায়ের গর্ভ থেকে একজন নারীও মাতৃত্বের তৃষ্ণা নিয়ে জন্মায়। এ কারণে একজন নারীর সার্বক্ষণিক কল্পনা থাকে একটা সুন্দর ও পরিপাটি সংসার, মাতৃত্বের শ্বাশ্বত বাসনা। নারীরা সবচেয়ে বেশি আপ্লুত হয় মাতৃত্বকেন্দ্রিক এই ভাবনা নিয়ে, সবচেয়ে বেশি আহতও হয় ঠিক একই ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটায়। নারীজীবনের সবচেয়ে বড় হতাশা হচ্ছে মাতৃত্বের সুখ থেকে বঞ্চিত হওয়ার দুরূহ বোঝা। এই বোঝা যখন কোনো নারীকে ন্যুব্জ করে তখন তার স্বাভাবিক জ্ঞান লোপ পায় এবং জীবননাশী সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। সম্ভবত একারণেই পাকিস্তানের এই পাঁচবোন কঠিন এই পথে পা বাড়িয়েছেন। সত্যিকার অর্থে একসঙ্গে এই পাঁচবোনের আত্মহত্যার ঘটনা মানবসভ্যতার জন্য এক নিষ্ঠুর ইতিহাস বৈ কি?
একটা সমাজ কতটা সর্বগ্রাসী যৌতুক লোভী হলে একটা পরিবারের পাঁচ পাঁচটা মেয়ে সদস্যকে আইবুড়ির অপবাদ মাথায় এই মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হয় তা কল্পনা করা যায়? কল্পনাশক্তির স্বল্পতা কিংবা বিবেচনাবোধের ঘাটতির কারণে আমরা অনেক তিক্ত সত্যকে মেনে নিতে পারি না, হজম করতে পারি না আল্লাহর বিধানের যৌক্তিকতাকে। এক্ষেত্রে ইসলামের একাধিক বিয়ের ভাবনা ও বিধান যদি সমাজে সাধারণ চোখে দেখা হতো তবে কি রচিত হতো এমন মর্মান্তিক ইতিহাস। সমাজের হাজার প্রগতিবাদী নারীর মায়াকান্নার চেয়ে এই পাঁচবোনের জীবনকান্না কি ভারি নয়? নারী-আধিক্য ও নারী সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজে যারা একাধিক বিয়েকে সহজভাবে মেনে নিতে পারে না তারা কি পেরেছে এই পাঁচবোনের দুঃখ ঘোচাতে? চোখের পানিতে এরা যখন ওড়না ভিজিয়েছে তখন কি কোনো প্রগতিবাদীরা এদের দুঃখের সান্ত্বনা হয়েছে?
অতিশয় স্বল্পজ্ঞানের অধিকারী মানুষ কোন সাহসে ইসলামের বিধানের যৌক্তিকতা চ্যালেঞ্জ করে? যারা যৌক্তিকতা চ্যালেঞ্জ করে তারা পারে না কেন নারীর দুঃখ ঘোচাতে? ‘কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কী সে, কভু আশুবিষে দংশেনি যারে’ কবির কথাটা বুঝি পরীক্ষার নাম্বার সংগ্রহ আর শ্রবণমাধুর্যের জন্য লিখিত হয়েছে? নারীজন্মের এই বেদনা কেবল ভুক্তভোগী নারীরাই উপলব্ধি করতে পারে এবং বাস্তবে দেখা গেলও তাই। পড়ুন নিচের রিপোর্টটি :
সৌদি কলেজ ছাত্রীদের আহ্বান : ৪ স্ত্রী রাখুন : সৌদি মেয়েদের চিরকুমারী থাকার সমস্যা কমানোর লক্ষ্যে দেশটির দাহরান অঞ্চলের একদল কলেজ ছাত্রী একই সময়ে কয়েকজন স্ত্রী রাখতে পুরুষদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে টুইটারে প্রচার অভিযান শুরু করেছে।
এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে চিরকুমারীত্ব রোধে প্রত্যেক পুরুষকে চার স্ত্রী রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। দেশটির দাহরান অঞ্চলের একদল কলেজ ছাত্রী টুইটার প্রচারণায় এ আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে এরই মধ্যে তারা টুইটাইরে প্রচার অভিযান জোরদার করেছেন।
তারা ইসলাম ধর্মের এ সংক্রান্ত বিধানের আলোকে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে আর্থিক ও শারীরিক দিক থেকে সক্ষম পুরুষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।
গণমাধ্যম জানায়, সৌদি আরবে মেয়েদের চিরকুমারী থাকার সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। দেশটিতে এ ধরণের নারীর সংখ্যা ২০১২ সালেই ১০ লাখে উন্নীত হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে অনেকেই চিরকুমারীত্ব রোধে এ প্রচার অভিযানের প্রশংসা করলেও সৌদি আরবের বিবাহিত মহিলারা এর বিরোধিতা করেছেন।
অন্যদিকে সৌদি পুরুষরা বলছেন, তারা এক স্ত্রীকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ তাতে সংসারে অশান্তি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একজন সৌদি পুরুষ বলেছেন, কেউ যখন এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারবেন যে তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী উভয়ের সঙ্গেই ন্যায়বিচারপূর্ণ আচরণ করতে পারবেন কেবল তখনই তিনি এ ধরনের বিয়ের কথা ভাবতে পারেন।
সামিয়া আল দানদাশি নামের এক সৌদি নারী এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, প্রত্যেক সৌদি পুরুষ যদি চারজন স্ত্রী রাখেন এবং তার প্রত্যেক স্ত্রী যদি গড়ে আটজন সন্তান জন্ম দেন তাহলে নারীদের চিরকুমারিত্ব সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি এ দেশটির জনসংখ্যাও বেড়ে যাবে।
প্রসঙ্গত অর্থনৈতিক সংকট ও বিয়ের জন্য পুরুষদের অপ্রয়োজনীয় বিপুল অর্থসম্পদ মহর ও স্ত্রীর জন্য শ্বশুরপক্ষকে যৌতুক হিসেবে দেওয়ার ব্যয়বহুল প্রথা সৌদি মেয়েদের অবিবাহিত থাকার সবচেয়ে দুটি বড় কারণ। দেশটির অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জরিপে দেখা গেছে, ২০১১ সালে সেখানে ৩০ বছর বয়সী অবিবাহিত নারীর সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ২৯ হাজার ৪১৮জন। [তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট ২৭ অক্টোবর ২০১৩ ইং ও ঢাকা রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর]
পাঠক চিন্তা করুন, একটা দেশের লাখ লাখ বিবাহ উপযোগী নারী যদি কুমারী থেকে যায় তবে সেই দেশের নারীকুলের মর্যাদা থাকে কোথায়? মানুষ কি কাঠের পুতুল? নারী কি জৈবিকসত্তা নয়? বৈধ ও স্বাভাবিকপন্থায় তাদের জৈবিক চাহিদা নিবৃত করার অধিকার নেই? পুরুষ স্বল্পতার কারণে একটা দেশের লাখ লাখ নারী তার প্রকৃতিগত ও স্বভাবজাত অধিকার থেকে বঞ্ছিত থাকবে কেন? তাদেরকে বঞ্ছিত রাখার অধিকার কে কাকে দিয়েছে? শুধুই কি জৈবিক চাহিদা? সমাজ-সংসার, স্বামী-সন্তান ও স্বাভাবিক জীবনের অধিকার থেকেই কি তাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে না? শুধু অধিকার বঞ্চিতের কথা কেন বলি, এই কারণে কি পৃথিবী জুড়ে মানবিক ও চারিত্রিক অধপতনের ডঙ্কা বেজে উঠবে না?
সৌদি আরবে না হয় এখনো ইসলামী আইন কার্যকর থাকায় অনেক অপ্রীতিকর অবস্থা ও যিনা-ব্যভিচারের রাশ টেনে রাখা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু যেসব দেশে ইসলামী আইন চালু নেই সেসব দেশে এত সংখ্যক নারী যদি ‘আইবুড়ি’র অপবাদ নিয়ে বাঁচতে হয় তবে সেদেশে মানবিক বিপর্যয় নামা এবং যিনা-ব্যভিচারের দরজা খুলে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। আজ আমরা বিশ্বের বিভিন্নপ্রান্তরে সেই ঘৃণ্য বাস্তবতাই পরতে পরতে প্রত্যক্ষ করে চলেছি। হাদীসের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে দিন যত গড়াবে পৃথিবীতে পুরুষের সংখ্যার চেয়ে তুলনামূলক নারীর সংখ্যা অধিকহারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। পরিবর্তিত সেই বিশ্বে তখন নারীর অধিকার ও সম্মান রক্ষা হবে কীসে? সুতরাং নারীজীবনের এই শ্বাশ্বত অধিকার রক্ষার একমাত্র উপায় হচ্ছে একাধিক বিবাহ সম্পর্কিত ইসলামী মতাদর্শ।
একাধিক বিবাহ সম্পর্কে ইসলামের ভাবনা : একাধিক বিবাহের গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা, এসম্পর্কিত বিতর্ক, ঐতিহাসিক বাস্তবতা, বিশ্বের সকল ধর্মে একাধিক বিবাহের স্বীকৃতি ও প্রচলন, বৈজ্ঞানিক অপরিহার্যতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বহু আলোচনা, পর্যালোচনা হয়েছে এবং চূড়ান্তভাবে আল্লাহ তা‘আলার বিধান ও মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শই অকাট্যভাবে সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা সে আলোচনায় যাব না। সংক্ষিপ্তভাবে শুধু সাহাবা, তাবেঈ ও বুজুর্গানে কেরাম এই বিষয়টি কীরূপ গুরুত্ব প্রদান করতেন তা তুলে ধরার প্রয়াস পাবো।
এ ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত একটা কথা না বললেই নয়, জগতের মানুষ বহুবৈচিত্রের অধিকারী। তাদের জীবনযাপন পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন। কোনো মানুষের জন্য সামান্য আহারই যথেষ্ট। কিন্তু অন্যজনের জন্য সামান্য আহারে বেঁচে থাকাই কষ্ট। এই বিষয়টি যেমন যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক সত্য, তেমনিভাবে মানুষের শারীরিক সক্ষমতার তারতম্য হওয়ার বিষয়টিও ততোধিক যৌক্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত। তাহলে একজন মানুষ তার প্রয়োজনে অন্যের তুলনায় অধিক আহার গ্রহণ করলে নিন্দনীয় না হলে একই কারণে একাধিক বিবাহ করলে সে নিন্দনীয় হবে কেন? জীবন বাঁচানোর জন্য যদি বেশি খাবারের প্রয়োজন হয় তবে কোনো ব্যক্তির এক নারী যথেষ্ট না হলে এবং সে কারণে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার কারণে জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হয়ে দাঁড়ালে সেক্ষেত্রে জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য একাধিক বিয়ে করতে পারবে না?
মনে রাখা উচিত, দুনিয়ার জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত, তাই এই সংক্ষিপ্ত জগতের জন্য যতটুকু করা চাই, আখেরাতের চিরকালীন যিন্দেগীর জন্য করা চাই তার চেয়ে কোটি গুণ বেশি। আর ইসলামের এই দর্শন সামনে রেখেই সাহাবা, তাবেঈ ও সম্মানিত পূর্বসুরীগণ একাধিক বিয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
সাঈদ ইবন যুবায়েরকে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু জিজ্ঞেস করেন, তুমি কি বিয়ে করেছো? তিনি বললেন, জী না। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন,
‘তুমি বিয়ে করো, কেননা এ উম্মতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হচ্ছেন তিনি, যিনি অধিক নারীর স্বামী। [বুখারী : ৫০৬৯]
আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার ওফাতের পর মাত্র সাতদিনের মাথায় বিয়ে করেছিলেন। আর প্রিয়নবীর দৌহিত্রের ফযীলত, মর্যাদা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামর নিকট তাঁদের আপন হওয়ার বিষয়টি কারো অজানা নয়। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন,
لم يكن أحد أشبه برسول الله صلى الله عليه و سلم من الحسن
‘হাসান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর চেয়ে বেশি অন্য কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাদৃশ্য ছিলেন না।’
মুহাদ্দিসগণ বলেন, সাদৃশ্যের একাধিক কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে, একাধিক বিয়ের সুন্নতী আমল। সাহাবায়ে কেরামের অধিকাংশই একাধিক বিয়ের অধিকারী ছিলেন। তাঁদের এক বিয়ের ঘটনা একেবারেই বিরল বললেও ভুল হবে না। সুফিয়ান ইবনে উয়ায়না রহিমাহুল্লাহ বলেন,
كثرة النساء ليست من الدنيا لأن عليا رضي الله عنه كان أزهد أصحاب رسول الله صلى الله عليه و سلم وكان له أربع نسوة وسبع عشرة سرية
‘অধিক স্ত্রী দুনিয়ার অংশ নয়। কেননা আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ছিলেন দুনিয়াবিমুখ সাহাবীগণের অন্যতম। অথচ তাঁর চার স্ত্রী এবং সতেরজন দাসী ছিলেন।’
وكان عمر رضي الله عنه يكثر النكاح ويقول ما أتزوج إلا لأجل الولد
‘আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অধিকহারে বিয়ে করতেন এবং বলতেন, আমি একমাত্র সন্তান লাভের আশায় অধিক বিয়ে করি।’
অনেক সময় মধ্য বয়সে কিংবা পৌঢ় বয়সে কোনো কোনো পুরুষের স্ত্রী মারা যায়। এমন পরিস্থিতিতে অনেক ক্ষেত্রেই সক্ষমতা ও প্রয়োজনীয়তা থাকা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েদের বাধা, পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা, লোকলজ্জা ইত্যাদি কারণে সংশ্লিষ্ট পুরুষ বিবাহ করতে পারে না। এটা মারাত্মক একটা সামাজিক ব্যাধি। এক্ষেত্রে বিয়ের বিষয়টিকে স্বাভাবিক নজরে দেখলে অনেক সমস্যারই সমাধান হতো। বহু নারী মানবেতর জীবনযাপন থেকে রক্ষা পেত।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সবদেশের একটা বড় সমস্যা হচ্ছে বিধবা নারীদের মানবেতর জীবন। অসহায় এই নারীদের সমাজে মর্যাদার স্থান হওয়ার জন্য বিপত্নীক পুরুষদের বৈবাহিক বন্ধনের সূত্রে এগিয়ে আসার দ্বারা সমাজের এই বিরাট সমস্যাটা সহজেই দূর হতে পারত। আর এটা শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবসেবার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; ইসলামেরও মহান বিধান। সাহাবায়ে কেরাম অবিবাহিত অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার সঙ্গে সাক্ষাত হওয়াকে নিজেদের দীনদারী ও ধার্মিকতার ত্রুটি বলে মনে করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলতেন-
لو لم يبق من عمري إلا عشرة أيام لأحببت أن أتزوج لكيلا ألقى الله عزبا
‘আমার যদি জীবনের মাত্র দশটি দিন অবশিষ্ট থাকে তখনও আমি চাইব বিয়ে করতে। যাতে আল্লাহর সঙ্গে বিপত্নীক অবস্থায় আমাকে সাক্ষাৎ করতে না হয়।’
ومات امرأتان لمعاذ بن جبل رضي الله عنه في الطاعون وكان هو أيضا مطعونا فقال زوجوني فإني أكره أن ألقى الله عزبا
‘প্লেগ মহামারীতে মু‘আয ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর দুই স্ত্রী মারা যান। তিনি নিজেও মহামারীতে আক্রান্ত ছিলেন। সেই অবস্থায় তিনি বললেন, আমাকে বিয়ে করিয়ে দাও, আমাকে বিয়ে করিয়ে দাও। কেননা আমি আল্লাহ তা‘আলার সঙ্গে বিপত্নীক অবস্থায় সাক্ষাত করতে অপছন্দ করি।’
إن أحمد تزوج في اليوم الثاني لوفاة أم ولده عبد الله وقال أكره أن أبيت عزبا
‘বর্ণিত আছে, আহমাদ ইবনে হাম্বল রহিমাহুল্লাহর প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর দ্বিতীয় দিনে বিয়ে করেন এবং বলেন, আমি বিপত্নীক অবস্থায় রাতযাপন করা অপছন্দ করি।’
বস্তুত একজন নেককার স্ত্রী স্বামীকে দুনিয়া ও আখেরাতের কাজে নানাভাবে সহযোগিতা করে এবং এতে পুরুষের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন সহজ ও মধুময় হয়।
মোটকথা, একাধিক বিবাহের মধ্যে এমন কতক চিরন্তন সত্য উপকারিতা রয়েছে যা অস্বীকার করার জো নেই এবং এই আমল বাস্তবায়ন ছাড়া তা কখনই অনুধাবন করা সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে এটাও বাস্তব যে, এই বিষয়টি বাঁকা চোখে দেখার কারণে সমাজে নানারকমের অশান্তি দেখা যায় এবং পাপের বহু রকম পথ খুলে যায়।
পাকিস্তানের চারবোনের একসঙ্গে আত্মহত্যা, পুরুষদের প্রতি সৌদি নারীদের চার বিয়ের আবেদন এবং কুরআন-হাদীসের আদেশ ও দিকনির্দেশনা জানার পরও কি কেউ একাধিক বিয়ের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করতে পারে? বস্তুত যারা একাধিক বিয়ের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করে তারা মূলত নারীর অধিকার রক্ষার জন্য করে না, পুরুষকে বহুগামী আর নারীকে বহুবিছানার সঙ্গী হওয়ার নিকৃষ্ট চারিত্রিক অধঃপতন দেখতে চায় বলেই এরূপ করে।
অবশ্য সৌদি নারীদের এই আবেদনের অপর দিকে ঐতিহ্যগত একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া আছে এবং অতি যৌক্তিকতার কারণেই সৌদি নারীগণ এধরনের বিবাহবন্ধনের বিষয়টি স্বীকৃত ও গ্রহণীয় বলে মেনে নিয়েছেন। কিছুদিন আগে ‘স্ত্রীর শেষ ইচ্ছায় এক সৌদির ৯০ বছরে বিয়ে’ শিরোনামে পত্রিকায় একটি খবর বের হলো। খবরে প্রকাশ :
ঘটনাটি ঘটেছে সৌদিতে। সৌদি নিবাসী ফাতিস আল থাকাফি’র (৯০) স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তার সন্তানেরা মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ করার জন্য তার ওপর বিয়ের জন্যে চাপ সৃষ্টি করে। ফাতিসের প্রয়াত স্ত্রীর শেষ ইচ্ছা ছিল তিনি যেন পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এরপর ৫ মেয়ের জোরাজুরিতে ৯০ বছর বয়সেই দ্বিতীয় বিয়েতে সম্মত হন বৃদ্ধ ফাতিস। তিন মাস খোঁজার পর বাবার জন্য পাত্রীর সন্ধান পান মেয়েরা। ৫৩ বছরের নিঃসন্তান এক বিধবাকে খুঁজে তারা দ্বিতীয় মা হিসেবে বেছে নেন। বিয়েতে ফাতিস তার নতুন স্ত্রীকে ২৫০০ সৌদি রিয়াল দেনমোহর প্রদান করেছেন। [তথ্যসূত্র: ঢাকা রিপোর্ট টোয়েন্টিফোর.কম/এম.]
নারীদের এমন উদারতা থাকাই কাম্য। অনেক মহিলা মৃত্যুর আগে স্বামীর কাছে ওয়াদা নেয় তার মৃত্যুর পর যেন স্বামী অন্য কোনো নারীকে বিয়ে না করে! কী ধরনের মানসিকতা এটা! ভালোবাসার নামে এ কোন দায়বদ্ধতা? তথাকথিত ভালোবাসার এসব দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করছে হাজারও অপ্রীতিকর ঘটনা। এসব অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্বাভাবিক ও শরীয়তসিদ্ধ এই বিধানটা কি সহজভাবে মেনে নেওয়া যায় না? আলোচনা শেষ করব একটা হাদীস দিয়ে। যে কোনো মুমিনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন নবী-রাসূলগণের সঙ্গে জান্নাতে বসবাস। আর এই সুযোগ লাভের প্রধান উপায় তাঁদের সুন্নাতের অনুসরণ করা। নবী-রাসূলগণের সামগ্রিক ও সাবর্জনীন কিছু সুন্নাত রয়েছে। ইমাম সুয়ূতী রহিমাহুল্লাহ বর্ণনা করেন-
‘রাসূলগণের প্রধান সুন্নাতগুলো হচ্ছে, ধৈর্য-সহনশীলতা, লজ্জাশীলতা, শিঙ্গা লাগানো, মেসওয়াক করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং একাধিক বিবাহ।’ [জামেউস সাগীর]
আমরা কি পারি না একাধিক বিবাহের বিষয়টি মনেপ্রাণে গ্রহণ করে নারীদের পুনর্বাসনের সঙ্গে সঙ্গে নবী-রাসূলগণের সঙ্গে বসবাস করার অধিকারী হতে?
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/655/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।