hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফেরারী নারী

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

১২
সর্বস্বার্থে নারীর ব্যবহার ও বিভ্রান্তির রকমফের
পরহেজগারদের জন্য ‘বোরকা পরা’, উদারপন্থি যুবকের জন্য ‘স্কিন টাইট তরুণী’ ও বয়স্ক পাত্রের জন্য ‘ডিভোর্সি মহিলা’। সব বয়সী ও সব পেশার লোকজনের জন্যই কনে আছে তাদের কাছে। আরও আছে লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা ও সুইডেন প্রবাসী অপূর্ব সব সুন্দরী। তাদের যেমনি রূপ, তেমনি যোগ্যতা। অভাব নেই চাকরি, গাড়ি ও বাড়ির। চাইলে বিদেশ পাড়ি দিতে পারেন সহজেই। জয় করতে পারেন রাজ্যসহ রাজকন্যা। এমন লোভনীয় ও চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে যারাই গেছেন তাদের আস্তানায়, তারা ফিরেছেন নিঃস্ব হয়ে।

যত্রতত্র ও অপাত্রে ব্যবহার করে ধ্বংস করা হচ্ছে নারীর জীবন। সম্ভবত ব্যবসার বাজারে নারীই একমাত্র পণ্য, যা চিত্তাকর্ষক তো বটেই, সর্বত্র ব্যবহারযোগ্যও! ইসলাম ও শরীয়তে বিক্রিতপণ্যকে বলা হয় ‘ مال مبذول ’ অর্থাৎ বিক্রির কারণে সাধারণতই যা বিক্রেতার কাছে আগ্রহ ও কদরহীন বস্তুতে পরিণত হয়ে যায়। একারণে ইসলাম নারীকে কখনই শুধু ‘মূল্যবান বস্তু’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি বরং ‘অমূল্য সম্পদ’ বলে আখ্যায়িত করেছে। এক হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«خَيْرُ مَتَاعِ الدُّنْيَا الْمَرْأَةُ الصَّالِحَةُ»

অর্থাৎ চরিত্রবান নারী হচ্ছে দুনিয়ার অমূল্য সম্পদ।’ [মুসলিম : ১৪৬৭]

অমূল্য সম্পদ কাকে বলে? যা ছাড়া সমাজ চলে না, দেশ চলে না, পৃথিবীর অস্তিত্ব রক্ষা হয় না অথচ তা বিক্রয়যোগ্য কিংবা বিক্রি হওয়ার মতো নগণ্য ও তাচ্ছিলযোগ্য নয়। যেমন, চন্দ্র-সূর্যের আলো, বাতাস, মেঘ-বৃষ্টি ইত্যাদি। মানবজীবন ধারণের জন্য এগুলো অপরিহার্য কিন্তু তা ক্রয়বিক্রয়যোগ্য নয়। কেননা ক্রয়বিক্রয়যোগ্য হলে ওই বস্তু আর অমূল্য থাকে না, মূল্যমানের হয়ে যায়। আর মূল্যমান মানেই ওই বস্তুর কদরহীন হওয়ার প্রমাণ। তাই ইসলাম নারীকে ‘অমূল্য সম্পদ’ বলে আখ্যায়িত করেছে, মূল্যবান বস্তু বলে আখ্যায়িত করেনি। আর এখানেই আঁতে ঘা লেগেছে ইসলামবিদ্বেষী বণিকচক্রের, যারা নারীকে নিছকই মূল্যমান বস্তু হিসেবে সব বাজারে তাদেরকে চালান করে দিতে চায়। অপাত্রে, কুপাত্রে বিক্রি করে নারীসম্ভ্রমকে চরমভাবে লঙ্ঘিত করতে চায়। আর ইসলামপন্থীরা নারীসৃষ্টের এই অবমাননার বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলে তারা রে রে করে ওঠে এবং জীবন বাঁচানোর কৌশল হিসেবে চোরের ‘চোর গেলো’ বলে চিৎকার করার মতো চিৎকার করতে থাকে। আফসোস, ইসলামের চোখে যে নারী অমূল্য সম্পদ, সেই নারীকেই যত্রতত্র ব্যবহার করে তাদের ইজ্জত-আব্রুকে ধূলিধুসরিত করা হচ্ছে। নারীকে আজ কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে না? অপাত্রে ব্যবহার করতে করতে নিয়ে আসা হয়েছে লাঞ্ছনাকর ও চরম ঝুঁকিপূর্ণ পেশায়। এর সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে ম্যারেজ মিডিয়া।

কিছুদিন আগে প্রতারিত এক যুবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব এধরনের এক প্রতারক চক্র শনাক্তে তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১ এর একটি টিম রাজধানীর উত্তরা (পশ্চিম) থানাধীন ৫ নম্বর সেক্টরের ৫/এ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভুয়া ম্যারেজ মিডিয়া সিন্ডিকেটের চার ভুয়া পাত্রীসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করে। এই প্রতারক চক্রের বেশিরভাগ পাত্রীই যুবতী ও মধ্যবয়সী নারী। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে এই প্রতারক চক্রের এক সদস্য হেনা জানায়, সে প্রতি মাসেই নতুন নতুন ক্লায়েন্টের বউ সাজে। পাত্র ধনাঢ্য হলে স্ত্রী হিসেবে রাত কাটায়। চাহিদামাফিক নগদ টাকা হাতে আসলেই হারিয়ে যায়। এভাবে এই পেশায় জড়িয়ে পড়ার দুই বছরে ২৩ জনের বউ হয়েছে। প্রত্যেক স্বামীর কাছ থেকেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আরো কষ্টের বিষয় হচ্ছে, হেনা অবিবাহিত নয়, খোকন মিয়া নামে তার আসল একজন স্বামীও আছে!

সূত্রমতে, বিজ্ঞাপন দেখে কোনো পাত্র যোগাযোগ করলে প্রথমেই জেনে নেয় তার পেশা। বেকার হলে চাকরি খুঁজছে কিনা। প্রবাসী পাত্রী বিয়ে করে বাইরে যাওয়ার ইচ্ছে আছে কিনা। এমন প্রস্তাবে পাত্র দিশাহারা হয়ে পড়েন। বিয়ে করে বাইরে যেতে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে রাজি হন। প্রতারকচক্র তার পছন্দ মতো কনে সাজায়। বিয়ের খরচ, শাড়ি, স্বর্ণালঙ্কার, পাসপোর্ট, ভিসা ও এয়ার টিকিট বাবদ ৪-৫ লাখ টাকা নগদ নিয়ে নেয়। এরপর আয়োজন করে ভুয়া বিয়ের। কেউ মেয়ের চাচা, কেউ মেয়ের পিতা সাজে। আবার কেউ কাজী সেজে বিয়ে পড়িয়ে দেয়। কিন্তু এক বা দুই দিনের মাথায় লাপাত্তা হয়ে যায় প্রবাসী স্ত্রী। স্ত্রীর মোবাইল ফোনে কল করে বন্ধ পান স্বামী। বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

র‌্যাব জানায়, ৩০ বছর বয়সী পারুল আক্তার। তার আসল স্বামী রুমি মিয়া। বাড়ি মাদারীপুর জেলার সদর থানার নতুন বাজারে। স্বামীকে ছেড়ে ভুয়া পাত্রী সেজে বসে থাকে। কখনও ডেইজি, কখনও পরী ছদ্মনামে পাত্রের বিয়ের আসরে বউ সাজে। একইভাবে নরসিংদী জেলার রায়পুর থানার আবদুল্লাহপুর গ্রামের বিবাহিত শামসুন্নাহার (২৫) কুমারীর ছদ্মবেশে তরুণ পাত্রের মনোযোগ আকর্ষণ করে। পাত্রের কাছ থেকে বিয়ের খরচ নিয়ে রাত যাপনের আগেই সটকে পড়ে। গত চার মাসে অন্ততপক্ষে তিন পাত্রকে ঠকিয়েছে সে। তার আসল স্বামীর নাম মানিক মিয়া।

প্রতারকচক্র সর্বকালেই যুগের বিদ্বান। তারা জানে কাকে কী তরিকায় ঠক খাওয়াতে হয়। তাই প্রতারক এই নারীরা পাত্রের চাহিদা অনুযায়ী রূপ বদলায়, কথা পাল্টায়। যেমন, নাজমা বেগম। দাড়িওয়ালা হুজুরদের জন্য বোরকা পরে বসে থাকে পর্দানশীন এই নাজমা! কোরআন-হাদীসের দোহাই দিয়ে বারণ করেন রূপদর্শন। নেককার মহিলা তো! তাই প্রস্তাবদাতা পাত্রকেও চেহারা দেখানো নিষেধ!

এভাবে মুগ্ধ হন হুজুর পাত্র। হবু বধূর নেককারী-দীনদারীতে বর্তে যান। হুজুর পাত্র পটে গেলে বিয়ে পড়ান কাজী। রাতযাপনের আগেই মোহরানা পরিশোধের তাগিদ দিয়ে হাতিয়ে নেয় নগদ টাকা। কারণ নেককার পাত্রী তো! সবকিছুতেই শরীয়তের পূর্ণ পাবন্দি। শরীয়তের বিধান অনুযায়ী নববধূ স্বামীর ঘরে যাওয়ার আগেই কিংবা স্বামী-সম্পর্কের আগেই মহর দাবি করতে পারে এবং একারণে স্বামীকে নিবৃতও রাখতে পারে। সুতরাং দীনদার-নেককার নারী মহর আদায়েই বা শরীয়তের বিধান পালনে গড়িমসি করবে কেন?

বোকা ‘হুজুর’ নেককার পাত্রীর সব আব্দার মিটিয়ে যখন স্ত্রীর কাছে যান তখন জানতে পারেন এ তার স্ত্রী নয়! সে অন্যের ঘরণী এবং তার মতো বহু হুজুরের গত তিন বছরে অন্ততপক্ষে ১০টি ‘ম্যারেজ মিডিয়া’ নামধারী প্রতারক সিন্ডিকেট শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। পাকড়াও করেছে শতাধিক প্রতারক নারী ও পুরুষ সদস্যদের। র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের ব্যবসাকে পুঁজি করে বিভিন্ন পত্রিকায় পাত্র-পাত্রী চাই- মর্মে চটকদারী বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তারা। তাদের এ প্রতারণার ফাঁদে পড়ে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির লোকেরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

‘বিবাহ’র মতো পবিত্র সামাজিক ও ধর্মীয় বন্ধনকে পুঁজি করে রাজধানীতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অসংখ্য প্রতারক চক্র। সেই চক্রতে দেদারছে ব্যবহৃত হচ্ছে অবলা নারী, বিপজ্জনক হয়ে উঠছে তাদের যাপিত জীবন। নানাভাবে প্রতারকদের ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে নারীসত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। এই প্রশ্নবিদ্ধ জীবন নারী কতদিন দীর্ঘ করবে, সেটাই দেখার বিষয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন