hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফেরারী নারী

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

নরকচিতায় হকের ঝাণ্ডাবাহী একজন সাহসী কুলকার্নি
বলিউডের এক সময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় থেকে দূরে অবস্থান করে দর্শকদের রীতিমতো হতাশ করছিলেন। দর্শকরা সময়ের এই হিট নায়িকার শুভ প্রত্যাগমনের দিন গুণছিল। কবে তিনি মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে ‘ফিরে আসার সময় হলো’ বলে একটা সাক্ষাৎকার দিবেন ভেবে দর্শকরা রুদ্ধশ্বাসে প্রতীক্ষা করছিল। তিনি সেই সাক্ষাতকার দিলেন বটে কিন্তু তাতে শুধু ভারতবাসীই নয়; বিশ্ববাসীও সমান চমকে উঠেছেন। নব্বইয়ের দশকের এই জনপ্রিয় নায়িকা জানালেন, তিনি মুসলিম হয়েছেন! এমনকি দুইবছর আগে তার স্বামীও মুসলিম হয়েছেন!

বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি জানার চেষ্টা করছি আসলে মানুষের মূল গন্তব্য কোথায়? আমরা আসলে কী? আমাদের কী করা উচিত? সেই চেষ্টা থেকেই আমি হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

আবার চলচ্চিত্রে ফেরা সম্পর্কে বলেন, ঘি আবার দুধে পরিণত হতে পারে। ঋষি বাল্মিকি ফিরে আগের ভিল্লা হতে পারে। নায়ক শাহরুখ, আমির, সালমানও বদলে যেতে পারে। কিন্তু মমতাকে আর মিডিয়ার পর্দার সামনে পাওয়া যাবে না। এটা একেবারেই অসম্ভব।’ [তথ্যসূত্র : পার্বত্য নিউজ, খবরনামা]

এমন একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রীর আলোর পথে ফিরে আসা সত্যিই মুগ্ধকর, আশাজাগানিয়া। আরো অবাক বিষয় হচ্ছে তাঁর সাহসিকতা ও মনোবলের দৃঢ়তা। তিনি বলছেন, ‘মমতাকে আর মিডিয়ার পর্দার সামনে পাওয়া যাবে না। এটা একেবারেই অসম্ভব।’

মমতা যেন হাদীসের বাক্যেরই প্রতিধ্বনি করছেন। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

« ثَلاَثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ حَلاَوَةَ الإِيمَانِ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا ، وَأَنْ يُحِبَّ الْمَرْءَ لاَ يُحِبُّهُ إِلاَّ لِلَّهِ ، وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِى الْكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِى النَّارِ » .

‘তিনটি বস্তু যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে ঈমানের স্বাদ গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। এক. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্য সবকিছুর চেয়ে প্রিয় হওয়া। দুই. মানুষকে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যই ভালোবাসা এবং তিন. কুফর থেকে ফিরে আসার পর পুনরায় কুফরে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতোই অপছন্দ করা।’ [বুখারী : ১৬; মুসলিম : ৬০]

বস্তুত আল্লাহ তা‘আলা যখন কারো অন্তর খুলে দেন তখন তার জন্য পৃথিবীর যাবতীয় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা সহজ ও সম্ভব হয়ে ওঠে। পৃথিবীর সকল তাগুতী শক্তির কাছে তিনি থাকেন অদম্য, অপ্রতিরোধ্য। সচেতন নাগরিকমাত্রই জানেন হিন্দুস্তান একটি অতি উগ্র হিন্দুত্ববাদী দেশ, যেদেশের বাসিন্দারা মুসলিমদেরকে সহ্য করতে পারে না, এমনকি কোনো মুসলিম তাদের গাড়ি-বিমানে উঠে আল্লাহ তা‘আলার নাম নেয়াও বরদাশত করে না। পাঠকদের মনে আছে কিনা জানি না, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের এক উড়োজাহাজ কোম্পানির হিন্দুস্তানী মালিক তাদের এয়ারবাসে ‘ইনশাআল্লাহ’, ভ্রমণের দু‘আ ‘বিসমিল্লাহ ওয়া মাজরিহা’ তথা ইসলামী আচরণ ও যাবতীয় দু‘আ-দরূদ নিষিদ্ধ করেছিল। ভারতের শাসনক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং নাগরিকরাও পছন্দ করে এমন লোকদেরকে, যারা মুসলিম শিশু বাচ্চাকে তার মায়ের পেট থেকে কেটে বের করে মায়ের সামনে টুকরো টুকরো করতে পারে। এমন উগ্র হিন্দুদেরকে ভারতবাসী শ্রদ্ধা করে, যারা মুসলিম নারী-পুরুষকে জোর করে পেট্রোল খাইয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পেট্টোলবাহী জীবন্ত মানুষটার তাজা দেহ ভস্মিভূত হওয়ার তীব্র ও ভয়ানক করুণ দৃশ্য দেখে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। ভারতে প্রায় পঞ্চাশটির মতো এমন উগ্র ও হিংস্র সংগঠন, সংস্থা ও রাজনৈতিক দল আছে যারা সর্বদা মুসলিমের রক্ত, লাশ ও অগ্নিদগ্ধ পোড়া দেহের গন্ধে নিজেদেরকে আপ্লুত দেখতে চায়। গুজরাটের দাঙ্গা, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের চিত্র এবং বিশ্ব ইতিহাসের বড় বড় সব দাঙ্গার জন্ম দেওয়া হিন্দুস্তান সেগুলোর রাজসাক্ষী।

সুতরাং এমন একটি উগ্রবাদী ও কট্টর হিন্দুরাষ্ট্রে খোদ হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে একজন জনপ্রিয় ও দর্শকনন্দিত অভিনেত্রীর আলোর পথে আসা এবং প্রকাশ্যে ইসলামের ঘোষণা দেওয়া নিতান্ত সাধারণ ব্যাপার নয়। আজকের মমতা, আমার বোন, মুসলিমের এক নতুন সদস্য যেন ফিরআউনের জাদুকরদের মতোই সাহসী হয়ে উঠেছেন। জাদুকররা বিশাল-বিস্তৃতি মাঠে আল্লাহ হওয়ার দাবিদার ফিরআউন ও তার বিশাল বাহিনীর সামনে হকের দাবি নিয়ে দণ্ডায়মান এক মুসা ‘‘আলাইহিস সালামের অবিচলতা দেখে বিস্মিত, বিমোহিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। নিঃসন্দেহে এটা ছিল এক বিরাট চ্যালেঞ্জের বিষয়, অসম লড়াই। কারণ ফিরআউন তৎক্ষণাত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ডান হাত ও বাম পা কর্তন করে তাদেরকে চিরতরে পঙ্গু করার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু কী অদ্ভুত ব্যাপার যে, যারা এক মুহূর্ত আগে স্রষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছিল তারাই এখন মুসা ‘আলাইহিস সালামের ঈমানী শক্তির বদৌলতে নকল স্রষ্টার বিরুদ্ধে, কাট্টা কাফেরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন!

মমতা এপর্যন্ত বাংলা, হিন্দি, তামিল, তেলেগু, মালায়লাম ও কানাড়ি শিল্পে প্রায় অর্ধশতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ অভিনীত ছবি ছিল ২০০২ সালে। বলিউডে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং আবেদনময়ী নায়িকা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। সেই মমতার পক্ষে এমন একটা প্লাটফর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করার মতো দুঃসাহস দেখানো নিঃসন্দেহে নারীজাতির দীপ্তপদচারণার নজির হয়ে থাকবে।

অনেক সময় পথভ্রষ্ট করার চক্রান্ত পথহারা পথিকের সুপথ পাওয়ার মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। এর নজির আমরা জানতে পারি ইসলামের ইতিহাসে, মক্কার কুরায়শদের কুচক্রান্তের ঘটনায়। রাসূসুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় হজ করতে আসা লোকদেরকে দীনের দাওয়াত প্রদান করবেন এই আশঙ্কায় মক্কার অলিতে গলিতে আগে থেকেই লোক বসিয়ে দেওয়া হয় তাঁর নামে কুৎসা রটনা করতে। নেতাদের আদেশ মোতাবেক এই চেলা-চামুন্ডারা রাস্তার মোড়ে মোড়ে নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর আনীত দীনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করতে থাকে। এতে হিতে বিপরীত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তর থেকে আগত লোকেরা এই নতুন ধর্মের প্রবর্তক নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং এভাবেই অসংখ্য মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেন। মক্কার কুরাইশরা কুৎসা রটনা না করলে তারা নবী সম্পর্কে জানতেনই না এবং ইসলাম গ্রহণেরও সুযোগ মিলত না।

ঠিক কুরাইশদের দেখানো পথেই হাঁটছে আজকের ইসলামবিদ্বেষীচক্র। ওরা বিভিন্নভাবে নারী সমাজকে ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষীপ্ত করতে গিয়ে অনেক বিধর্মী নারীকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে, ইসলামকে মানতে অনুপ্রাণিত করছে। এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০০০ সালের তুলনায় ২০১১ সালে নারীদের মধ্যে ইসলাম গ্রহণের প্রবণতা ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রবণতা এমন সব রাষ্ট্রে বেশিমাত্রায় পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেখানে ইসলামের বিরুদ্ধে, পর্দার বিরুদ্ধে অলঙ্ঘনীয় সংবিধান চালু করে রেখেছে! ইনশাআল্লাহ, শত্রুরা না চাইলেও এভাবেই অব্যাহত থাকবে ইসলামের অগ্রযাত্রা, বিজয় নিশান। ভারতের মতো ইসলামবিদ্বেষী রাষ্ট্রগুলোতেও ফিরআউনের জাদুকরদের মতো গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে মমতা কুলকার্নির মতো নারীরা ইসলামের পতাকাতলে আশ্রিত হবেন। তাই নারীরা শুধু অবলার দুর্বলতায় অভিযুক্তই নয়; সাহসের উপমা হিসেবেও সমান দক্ষ। সালাম, মমতা তোমাকে!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন