hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ফেরারী নারী

লেখকঃ আবু বকর সিরাজী

২১
বিয়ে ভাঙার সিঁড়ি ভাঙা হচ্ছে ঝড়ো বেগে!
২০১০ সালের ১৪ অক্টোবর একজন প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল শামসুন্নাহারের (ছদ্মনাম)। বিয়ের কিছুদিন পর স্বামী চলে যান মধ্যপ্রাচ্যে তার কর্মস্থলে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই কোলজুড়ে সন্তান আসে শামসুন্নাহারের। কন্যাসন্তান। দীর্ঘ বিরতিতে একবার দেশে আসেন স্বামী কফিল (ছদ্মনাম)। কিন্তু এত দিন পর দেশে এলেও স্ত্রী-সন্তানের প্রতি কোনো টান যেন নেই। অন্য এক নারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বলে ধারণা শামসুন্নাহারের। এমনকি তার মানিব্যাগেও এক দিন দেখতে পান সেই নারীর ছবি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় কলহ। একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন শামসুন্নাহার। কিন্তু স্বামীর মতিগতির পরিবর্তন নেই। অবশেষে অনন্যোপায় হয়ে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন শামসুন্নাহার।

এর ঠিক উল্টো ঘটনাও আছে। সৌদি আরবের রিয়াদে থাকেন মাহমুদুল আলম (ছদ্মনাম)। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে বিয়ে করেন শামীমাকে (ছদ্মনাম)। বিয়ের পর কর্মস্থলে ফিরে যান মাহমুদ। মাঝেমধ্যে দেশে আসেন। ২০১১ সালে দেশে ফিরে স্ত্রীর চালচলনে কেমন একটা পরিবর্তন দেখতে পান। লুকিয়ে মুঠোফোনে কার সঙ্গে যেন কথা বলেন শামীমা। এক দিন মুঠোফোনে সেই ব্যক্তির খুদে বার্তা এলে মাহমুদের সন্দেহ দৃঢ়মূল হয়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর কলহের একপর্যায়ে উভয় পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে সমঝোতা হয়। শামীমা সব দোষ স্বীকার করে ভবিষ্যতে আর এ রকম ঘটবে না বলে কথা দেন।

কিন্তু সমঝোতার মাত্র কয়েক দিন পর ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর নিখোঁজ হয়ে যান শামীমা। বাকলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন স্বামী। স্থানীয় তিনটি দৈনিক পত্রিকায় ছাপানো হয় নিখোঁজ সংবাদ। কিন্তু খোঁজ মেলে না শামীমার। স্বামী মাহমুদের ধারণা, প্রেমিকের আশ্রয়ে কোথাও লুকিয়ে আছে তার স্ত্রী। অবশেষে ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ দেন মাহমুদ।

প্রবাসী আর স্ত্রীর দ্বন্দ্ব-লড়াইয়ে শুধু সংসার ভাঙছে তাই নয়; প্রাণহানী ঘটছে সমানতালে। এগুলোর কোনো কোনো ঘটনা এত মর্মান্তিক যা হৃদয়ের রক্তক্ষরণ ঘটায়। এমনি এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী ইউনা হত্যাকাণ্ড।

অন্যের সঙ্গে ফোনে কথা বলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সোহেল আহমদ হত্যা করে এই লন্ডনি কন্যা ইউনাকে। ঘটনার তিন মাস পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ইউনার প্রেমিক বন্ধু সোহেল পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ৪ অক্টোবর ২০১৩ ইং তারিখে মৌলভীবাজার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন আসামি সোহেল আহমদ। পুলিশকে আরও জানিয়েছেন বিবাহিত ইউনাকে তিনি ভালবাসতেন। ইউনাও তাকে খুব ভালবাসতো। কিন্তু ইউনা চাইতো না সুহেল তার সঙ্গে থাকার সময় অন্য কারও সঙ্গে কথা বলুক ফোনে। কিন্তু এই না চাওয়া হয়েছে তার কাল। মৃত্যু ডেকে এনেছে এই বাসনা।

২৯ জুন ২০১৩ রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোমড়া এলাকায় নিজ প্রাইভেট কারে পাওয়া যায় লন্ডন প্রবাসী সেহলিনাত ইলাত ইউনা (২৪) তরুণীর লাশ। লাশের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও তার মৃত্যুর কারণ ছিল রহস্যাবৃত। জানা গেছে, এ তরুণী নিজেই তার প্রাইভেট কার ড্রাইভ করতেন। ঘটনার পরদিন নিহত তরুণীর ভাই মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার উত্তর মোলাইম নিবাসী জয়নুর রহমানের কন্যা সেহলিনাত ইলাত ইউনার বিয়ে হয় ২০১০ সালে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার নগর (ঢাকা দক্ষিণ) গ্রামের মৃত কলা মাস্টারের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী জামিলুর রশিদের সঙ্গে। গত ২৭ মে যুক্তরাজ্যে স্বামীকে রেখে দেশের বাড়ি মৌলভীবাজারে আসেন ইউনা।

জানা গেছে, সে কখনও থাকতো পিতার বাড়ি আবার কখনও নানীর বাসায়। দেশে আসলে প্রায় সময় নিজে তার প্রাইভেট কার নিয়ে বের হতেন। কখনও সঙ্গে থাকতো ড্রাইভার বা বন্ধু। এ তরুণী ঘটনার কয়দিন আগে তার নানীর বাসা শহরের টিবি হাসপাতাল সড়কে উঠেন। ২৯ জুন সন্ধ্যাবেলা প্রাইভেট কার নিয়ে ঘুরতে বের হন। ঘরে ফেরেন লাশ হয়ে। পরে জানা যায় তাকে ঘটনার দিন রাত অনুমানিক ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে কিছু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। তারপর আঘাত প্রাপ্ত স্থান একটি ব্যবহার করা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে গাড়ি করে নিয়ে ওই স্থানে ফেলে আসা হয়। তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, ইউনার মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করে তখন একটি মোবাইল ফোন নম্বর পাওয়া যায় যে নম্বর থেকে হত্যাকাণ্ডের আগে ইউনার ফোনে কল যায়।

এ ফোনের মালিক সোহেল আহমদ (২৮)-কে আটক করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল পুলিশকে জানায় ইউনার সঙ্গে তার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তারা দু’জন মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল সড়কস্থ একটি বার্গার হাউসে যায়। সেখানে দু’জন কিছু সময় কাটায়। এক পর্যায়ে সোহেলের ফোন বাজলে ইউনা ফোন ধরতে বারণ করে। এ সময় দু’জনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। দুজন সেখান থেকে বের হয়ে ইউনার গাড়ি করে মৌলভীবাজারের দিকে আসার পথে আবার একই ঘটনা ঘটলে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়।

সোহেল ইউনাকে গাড়ি থামাতে বলে। ইউনা গাড়ি থামালে সোহেল নেমে সড়কে একটি আধা ভাংগা ইট পায়। এ সময় ইউনা সিডি লাগাচ্ছিল গাড়ির ক্যাসেট প্লেয়ারে। এ সুযোগে সোহেল ইট দিয়ে ইউনার মাথার পেছনে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যায় ইউনা। একপর্যায়ে তার মৃত্যু হলে সোহেল ঘাবড়ে যায়। পড়ে সে সিট নিচু করে পেছনের সিটে নিয়ে যায় ইউনার নিথর দেহ। গাড়িতে থাকা একটি পুরানো তোয়ালে দিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত স্থান ঢেকে সিটে শুইয়ে রাখে। গাড়ির পেছনের গ্লাস কালো থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগায় সোহেল। পরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে চলে আসে মৌলভীবাজার শহরে।

সোহেল দাবি করে সে ইউনাকে ভালোবাসতো। তবে ইউনার কথা ছিল তার সঙ্গে থাকার সময় অন্য কোনো ফোন ধরতে পারবে না। তবে সে আরও জানিয়েছে সে ইউনাকে হত্যা করার জন্য ইট দিয়ে আঘাত করেনি। [সূত্র : ইন্টারনেট, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০১৩]

এভাবেই স্বামী বা স্ত্রীর অন্য কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া নিয়ে সন্দেহ-অবিশ্বাসের জন্ম। তাতে মন ভাঙে, সংসারও ভেঙে যায়। শুধু পরকীয়া নিয়ে সন্দেহ-অবিশ্বাস নয়। ব্যক্তিত্বের সংঘাত, যৌতুকের দাবি, মাদকাসক্তি নির্যাতন বা প্রতারণা ইত্যাদি নানা কারণে ভাঙছে সংসার। সংসার ভাঙার প্রবণতা প্রবাসী প্রাবল্য এলাকাগুলোতে তুলনামূলক বেশি। যেমন, চট্টগ্রামে গড়ে প্রতি তিন ঘণ্টায় ভাঙছে একটি করে সংসার। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সালিশি আদালত থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সালিশি আদালতের তথ্যানুযায়ী ২০০৯ সালে গড়ে প্রতি পাঁচ ঘণ্টায় একটি করে সংসার ভাঙত।

আদালতে জমা দেওয়া বিবাহবিচ্ছেদের আবেদনের বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গার্মেন্টসে কর্মরত মেয়েদের বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন সবচেয়ে বেশি। বিয়ের পর স্বামীরা তাদের বেতনের টাকা হাতিয়ে নেয়, মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন, নির্যাতন করেন, অন্য নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক রাখেন বা গোপনে অন্যত্র বিয়ে করেন বলেও অভিযোগও করেছেন তারা।

এ ছাড়া প্রবাসে কর্মরত পুরুষেরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন তাদের অনুপস্থিতিতে স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে। উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত পরিবারে দেখা যাচ্ছে ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্ব, যৌতুক, শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে বোঝাপড়ায় সমস্যা ও পরকীয়া প্রেম প্রভৃতি কারণ দেখিয়ে নারী-পুরুষ উভয়ের দিক থেকে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করা হয়।

মনোরোগ চিকিৎসকদের মতে, নৈতিক স্খলনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা। তাদের মতে, প্রবাসীদের সঙ্গে স্ত্রীর বিয়ে বাড়ছে মূলত সন্দেহ-অবিশ্বাস থেকে। বিদেশে হাড়ভাঙা খাটুনির পর স্ত্রীর সঙ্গ পান না তারা। এমনকি তাদের জীবনে অন্য কোনো বিনোদনও নেই। দেশে স্ত্রী কী করছে এই চিন্তায় অস্থির থাকেন তারা। তার ওপর দেশ থেকে অনেক সময় বাবা-মা বা ভাইয়েরা তার স্ত্রীর আচরণ সম্পর্কে নানা অভিযোগ করেন। এগুলো তার মনকে বিষিয়ে দেয়। স্ত্রীকে ফোন করে তারা তখন কটুকাটব্য করতে থাকেন। এতে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে পড়ে।

তবে এ কথাও ঠিক, দীর্ঘকাল স্বামীর অনুপস্থিতিতে অনেকে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এটা একটা জৈবিক কারণ। স্বামীর অনুপস্থিতিতে এই জৈবতাড়নাই তাকে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে প্ররোচিত করে। পোশাক-কর্মীদের মতো যারা নিম্নআয়ের মহিলা, অনেক দরিদ্র পুরুষই তাদের বিয়ে করেন অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য। অনেক সময় স্ত্রীর টাকায় নেশা করেন অনেকে, কেউ বা গোপনে অন্য নারীতে আসক্ত হয়ে পড়েন। এই মেয়েরা এখন অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা হলেও স্বাবলম্বী। তারা এ অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করেন না। তাই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর মতো সিদ্ধান্ত নেন।

উচ্চবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে দেখা যায় স্বামী ব্যবসা বা বড় চাকরি করেন। নিয়মিত মদ্য পান করাকে সোশ্যাল স্ট্যাটাসের অন্তর্ভুক্ত মনে করেন। মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর ওপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেন। এ ছাড়া এ শ্রেণির মেয়েদের মধ্যেও নানা হতাশা থেকে বিয়ে-বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের অনেক নজির আছে। সব মিলিয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে চিড় ধরে, যার অনিবার্য ফল বিবাহবিচ্ছেদ।

মাদকাসক্তি, সন্দেহ-অবিশ্বাস এবং অনৈতিক সম্পর্ক ছাড়াও বিয়ে ভাঙার মারাত্মক আরেকটি কারণ সম্পর্কে সমাজবিদগণ চিন্তিত। নানা অপ্রিয় ও অবাঞ্ছিত ঘটনায় জন্ম নিচ্ছে এই দুশ্চিন্তা। বিয়ের পরে অনেক স্ত্রী আবিষ্কার করেন তার স্বামী তাকে আসলে পর্নোগ্রাফি নায়িকার মতন করে চাচ্ছে।

এই নিকৃষ্ট ভাবনায় ভাঙছে অজস্র সংসার। বিয়ের পরে স্ত্রীকে ভোগ করতে চায় পশুর মতো করে। বহু পরিবারের ভাঙ্গনের কারণ এই পর্নোগ্রাফি। বহু সরলা স্ত্রীরা হতভম্ব হয়ে যান স্বামীর সুশ্রী চেহারার নিচে কদর্য দেখে। পাশ্চাত্যের দেখাদেখি পর্নোগ্রাফি আমাদের সমাজেও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ফেসবুকেও অজস্র পর্নোগ্রাফিক ফটোর ছড়াছড়ি। ছেলে এবং মেয়ে কেউই বাদ যাচ্ছে না এসব ছবি দেখার হাত থেকে। অনেক ছেলেরাই পর্নোগ্রাফি মুভি এবং গল্পসমূহের নেশার শিকার। সমাজ বিজ্ঞানী ও মনোবিদগণ বলছেন, পর্নোগ্রাফি কোনো অভ্যাস নয় শুধু, এটা একটা নেশাও। নিউরোসায়েন্টিস্টরা বিষয়টাকে ভয়াবহ নেশা হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছেন। একসময় অভ্যাস হয়ে তা মনের ভিতরে প্রোথিত হয়ে যায়। ক্রমাগত পর্নোমুভি দেখতে দেখতে অনেকেই মানসিকভাবে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বিয়ের পরেও ছাড়তে পারে না তারা এই ভয়ঙ্কর নেশা।

সময় থাকতে সাবধান না হলে আরো ধ্বংস ও পতন অনিবার্য। এই নেশা কাটিয়ে উঠতে হবে। কেননা স্বামীর মুখে যত ভালো কথাই প্রকাশ পাক না কেন, সবাই স্বামীকে যতই ভালো মানুষ জানুক না কেন, স্ত্রী ঠিকই বুঝতে পারে সেই পুরুষ মূলত কোন্ পর্যায়ের চরিত্রবান।

আজকাল পর্নোগ্রাফি কত শত-সহস্র পরিবার ধ্বংস করছে সেইটা চিন্তা করলেও আতঙ্কে নীল হয়ে যেতে হয়। সাধারণ শারীরিক চাহিদার পূরণের বিষয়টাকে ঘাঁটাতে ঘাঁটাতে নষ্ট করে কত আক্রমণাত্মক, পাশবিক আর অরূচিকর বিষয়ের উপস্থাপনা করছে ওরা। অনলাইন জগতের সবচাইতে বেশি সংখ্যক সাইট তাদেরই এবং এই ইন্ডাস্ট্রির অর্থ উপার্জনের বিশাল মাত্রার কারণেই তাদের আগ্রহও বেশি। কারণ, মানুষ সহজেই এতে আকৃষ্ট হয়।

বস্তুত ভয়ানক এক নেশার প্রতিকৃতি হচ্ছে এই পর্নোগ্রাফি। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর হলগুলোতে নেটওয়ার্কে হাত বাড়ালেই পর্ণমুভি পাওয়া যায়। অজস্র দোকানে, ফুটপাতে পর্ণের ডিভিডি। উঠতি বয়েসি থেকে মধ্যবয়সী ছেলেরা (এখন মেয়েরা তো বটেই) নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে প্রায় প্রতিদিন মাঝরাতে মনিটরে পর্ণ দেখতে দেখতে। এই নেশায় বিয়ের আগেই তারা খুঁজে নেয় শরীর ভোগের কোনো মানুষ। বিয়ের পরেও স্ত্রীকে ভোগ করতে চায় পশুর মতো। সুখ তিরোহিত হয়। বহু পরিবারের ভাঙ্গনের কারণ এই পর্নোগ্রাফি। বহু সরলা স্ত্রীরা হতভম্ব হয়ে যান স্বামীর সুশ্রী চেহারার নিচে কদর্যতা দেখে। বেশিরভাগ মানুষ এই নেশা ছাড়তে পারে না জীবনের শেষ বয়সেও।

বিবাহ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ও পবিত্রতম বন্ধন। এই বন্ধনকে সুদৃঢ়, স্থায়ী এবং মধুময় করে তুলতে শরীয়ত মানুষকে কত রকমের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। অস্থায়ী বিয়ে হারাম করেছে, অশ্লীলতাকে চরমভাবে ঘৃণার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য সম্পর্কে মোহনীয় করতে তাদের মধ্যে হাসি-কৌতুক ও ঠাট্টা-মশকরাকেও ছাওয়াব হাসিলের কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। শরীয়ত নির্দেশিত এই বিধানাবলি উপেক্ষা করে বিয়ে ভাঙার সিঁড়িগুলো কি না মাড়ালেই নয়! মানুষ সাধারণ কাজে যতটা না স্থবির, বিয়ের সম্পর্ক ভাঙার সিঁড়িতে তারা ততই গতিময়, ঝড়োবেগী!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন