hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মাতৃদুগ্ধদানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

লেখকঃ ড. হুসাইন আহমাদ

মাতৃদুগ্ধ পান
একটি শিশু আত্মপ্রকাশ করার সাথে সাথেই শাখা যেরূপ তার মূলের প্রতি মুখাপেক্ষী থাকে, শিশুও তার মায়ের প্রতি সে রকম মুখাপেক্ষী থাকে। সে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন রক্তরূপে যে আহার্য গ্রহণ করতো এখনও তাকে অনুরূপ আহার্য গ্রহণ করতে হয়। তবে এ রক্ত আল্লাহর বিশেষ কুদরতে তাঁর জ্ঞান ও ইচ্ছায় দুগ্ধে পরিণত হয় যা শিশুর শরীর গঠনে প্রয়োজনীয় সকল উপাদানে সমৃদ্ধ। আর এ দুগ্ধ প্রবাহিত মায়ের স্তনে এসে উপনীত হয় এবং শিশু আল্লাহর বিশেষ দিক নির্দেশ তার সন্ধান প্রাপ্ত হয়ে চুষতে থাকে। আল-কুরআনে এমন সব নীতিমালার কথা উল্লেখ করা হয়েছে যা মাতৃদগ্ধদানের বিষয়ে মানুষকে উৎসাহিত করে এবং মা ছাড়া অন্য মহিলার স্তন থেকে দুগ্ধপান করার ক্ষেত্রে তার দুগ্ধদান সম্পর্কিত নীতিমালা নিয়ন্ত্রণ করে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ এরশাদ করেন:

﴿وَٱلۡوَٰلِدَٰتُ يُرۡضِعۡنَ أَوۡلَٰدَهُنَّ حَوۡلَيۡنِ كَامِلَيۡنِۖ لِمَنۡ أَرَادَ أَن يُتِمَّ ٱلرَّضَاعَةَۚ ﴾ [ البقرة : 233]

‘‘যে জননী সন্তানদেরকে পুরো সময় পর্যন্ত দুগ্ধপান করতে ইচ্ছে রাখে, তাঁরা নিজেদের শিশুদের পুরো দু’বছর ধরে দুগ্ধ পান করাবে।’’ [. আল-কুরআন, ২: ২৩৩।] এ আয়াত দ্বারা স্তন্যদান সংক্রান্ত নিম্নোক্ত দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়:

এক. শিশুকে স্তন্যদান মাতার জন্য ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকলে মা যেন তাঁর সন্তানকে তার স্তন্যপান থেকে বঞ্চিত না করে, ক্রোধের বশর্বতী হয়ে বা অসন্তুষ্টির কারণে শিশুকে স্তন্যদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা বৈধ নয়। [. মুফতী মুহাম্মদ শাফী, মা’আরেফুল কুরআন(হারামাইন শরীফাইন ফাহাদ কুরআন মুদ্রণ প্রকল্প, হি. ১৪১৩), পৃ. ১৩০।] বিবাহ বন্ধনে থাকাকালীন স্ত্রী স্বামীর নিকট থেকে স্তন্যদানের জন্য কোন প্রকার বেতন বা বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে না। তবে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী বা স্তন্যদানে নিয়োগকৃত ধাত্রী বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে। [. ড. মুহাম্মদ মুস্তফিজুর রহমান, তাবিলাত আহলুসসুন্নাহ (আব্দুল মানসুর আল-মাতুরুদী), ঢাকা: ইফাবা, খৃ. ১৯৮৬), পৃ. ৫৮৪।]

দুই. উক্ত আয়াতে স্তন্যদানের সময়সীমা দু’বছরের কথা বলা হয়েছে। ইমাম শাফয়ী, সাবেবাইন’ [. ‘সাহেবাইন’ ফিক্হশাস্ত্রে ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদকে একত্রে সাহেবাইন বলা হয়। ইসলামী জ্ঞানকোষ, মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ঢাকা: আল বারাকা লাইব্রেরী), পৃ. ১২৮।]স্তন্য দানের সময়সীমা দু’বছর বলে মত প্রকাশ করেছেন। তবে ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম যুফারের একমত স্তন্যদানের সময়সীমা আড়াই বাছর বা ত্রিশ মাস বলা হয়েছে। [. আহমাদ মুল্লা জিওন, আত-তাফসিরাত আল- আহমাদিয়া, (পিশওয়ার: মাকতাবাহ হাক্কানীয়াহ, তা.বি) পৃ. ১৩৯।] তারা তাদের মতের পক্ষে আল্লাহ তা’আলার দলীল হিসেবে পেশ করেছেন:

﴿وَفِصَٰلُهُۥ ثَلَٰثُونَ شَهۡرًاۚ﴾ [ الأحقاف :15]

‘‘তার গর্ভ ও দুধপান করানোর সময়কাল ত্রিশ মাস।’’ [. আল-কুরআন, ৪৬:১৫।] অন্যত্র এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:

﴿وَوَصَّيۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيۡهِ حَمَلَتۡهُ أُمُّهُۥ وَهۡنًا عَلَىٰ وَهۡنٖ وَفِصَٰلُهُۥ فِي عَامَيۡنِ﴾ [ لقمان : 14]

‘‘আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার ব্যাপারে নসিহত করছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে নিজের পেটে বহন করেছে। আর তাকে দুধ ছাড়াতে দুই বছর লেগেছে।’’ [. আল-কুরআন, ৩১:১৪।]

তিন: কুরআনের নির্ধারিত সময়সীমা তথা দুবছর পূর্ণ হওয়ার আগেও কেউ চাইলে দুধ ছাড়িয়ে নিতে পারবে, তবে এ শর্ত থাকবে যে, এতে স্বামী-স্ত্রী পারস্পারিক আলোচনার পর, দুধ ছাড়িয়ে নিলে দুগ্ধপায়ী শিশুর কোন ক্ষতি হবে না এ ব্যাপারে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। এ সম্পর্কে কুরআনের বিধান হচ্ছে:

﴿فَإِنۡ أَرَادَا فِصَالًا عَن تَرَاضٖ مِّنۡهُمَا وَتَشَاوُرٖ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِمَاۗ وَإِنۡ أَرَدتُّمۡ أَن تَسۡتَرۡضِعُوٓاْ أَوۡلَٰدَكُمۡ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ﴾ [ البقرة :233]

‘‘যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়েই পারস্পারিক পরামর্শ ও আলোচনার ভিত্তিতে দুধ ছাড়িয়ে নিতে চায়, তাহলে সেক্ষেত্রে তাদের কারো কোন গুণাহ হবে না।’’ [. আল-কুরআন, ২:২৩৩।] রাসূল (সা) শিশু অধিকারের কথা চিন্তা করে মাতৃদুগ্ধ পানকালে স্ত্রী সহবাস নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। যেমন- এরশাদ হয়েছে:

«لقد هممت أن أنهى عن الغيلة حتى ذكرت ان الروم وفارس يصنعون ذلك فلايضر أولادهم

‘‘দুগ্ধপায়ী শিশুর মায়ের সাথে স্বামীর সহবাস আমি নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চেয়েছিলাম; কিন্তু পারস্য ও রোমকদের সম্পর্কে আমাকে জানানো হল যে, তারা এ কাজ করে, তবে তাদের সন্তানদের কোন ক্ষতি হচ্ছে না।’’ [. মুসলিম ইবন আল-হাজ্জাল আল-কুশাইরী, সহীহ মুসলিম, খ. ১ কিতাবুল নিকাহ(দিল্লী: কুতুবখানা রশীদিয়া, তা.বি), পৃ. ৪৬৬; আবু দাউদ, কিতাবুল ত্বীব ৬১; তিরমিজি, কিতাবুল ত্বীন-১৭০।]

চার. পিতার কর্তব্য হচ্ছে শিশুকে দুধ খাওয়ানো সময়ে দুগ্ধধাত্রী মাকে তাঁর শিশুর দুগ্ধপান সম্পর্কিত সমস্ত প্রয়োজনীয় বস্ত্ত সরবরাহ করা। তবে তাতে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে দেয় ‘‘ভরণপোষণ’’ [. ‘‘ভরণ পোষণ’ কোন ব্যক্তির পরিশ্রমের বিনিময়ে তাকে অপর ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত প্রয়োজনীয় জীবনোপকরণকে ‘‘ভরণপোষণ’’ বলে। ভরণপোষণ দ্বারা সাধারণত খাদ্য, পোষাক ও বাসস্থান এই তিনটি জিনসিকে বুঝায়। কিন্তু অন্যান্য আবশ্যকীয় বস্ত্ত যেমন তৈল, সাবান, ঔষধ যাহা নারীর জীবন ধারণ ও সুখ স্বাচ্ছন্দের জন্য জরুরী তাহাও ইহার মধ্যে অন্তভূক্ত। (কিতাবুল ফিক্হ আলাল মাযাহিবুল আরবাআহ, খ. ৪, পৃ. ৫৫৩)।] এ কোন প্রকার প্রভাব পড়বে না। এতে করে এ কথা প্রমাণিত হয় যে, শিশুকে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে দুগ্ধদান ও এমন এক ব্যাপার, যার পাশাপাশি মায়ের জন্যে অতিরিক্ত কোন দায়িত্বভার নেয়া সম্ভব নয়। কেননা পিতার বর্তমানেও মাকে শিশুর সার্বিক দেখাশুনার সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে হয়। তাছাড়া পুত্র সন্তান বালেগ না হওয়া পর্যন্ত এবং কন্যা সন্তানের বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতার উপর বর্তায়, তার সামর্থ্য অনুযায়ী। [. ইসলামী আইন বিধিবন্ধকরণ বোর্ড, বিধিবদ্ধ ইসলামী আইন( ঢাকা: ইফা. খৃ. ১৯৯৫), পৃ. ৬০১।] পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে:

﴿وَعَلَى ٱلۡمَوۡلُودِ لَهُۥ رِزۡقُهُنَّ وَكِسۡوَتُهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ لَا تُكَلَّفُ نَفۡسٌ إِلَّا وُسۡعَهَاۚ﴾ [ البقرة : 233]

‘‘জনকের কর্তব্য যথারীতি তাদের (মাতাগণের) ভরণপোষণ করা। কাউকেও তার সাধ্যাতীত কার্যভার দেয়া হয় না।’’ [. আল-কুরআন, ২:২৩৩।] ইসলামে পরিবার পরিজনের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করাকে সদকার সমতুল্য সাওয়াবের কাজ করা হয়েছে। যেমন হাদীস শরীফে এসেছে:

«اذا انفق المسلم نفقة على اهله وهو يحسبها كانة له صدقة

‘‘কোন মুসলিম ব্যক্তি সাওয়াবের আশায় তার পরিবার-পরিজনের জন্যে যা কিছু ব্যয় করে তা তার জন্য সদকা হিসেবে গণ্য হয়।’’ [. সহীহ বুখারী, কিতাবুয যাকাত, বাবু ফাদলিন নাফাকাতি আলাল আহলি, সহীহ্ মুসলিম, কিতাবুয যাকাত, হাদীস নং ৪৮।]

পাঁচ: ইসলাম পিতার অনুপস্থিতে বা মারা গেলে তার কোন একজন আত্মীয়কে শিশুর লালন-পালন এবং দুগ্ধধাত্রীর প্রয়োজনসমূহ ও সার্বিক দেখাশুনার দায়িত্ব প্রদান শিশু সন্তানের উদ্দেশ্যেই করেছে। ইসলাম এর মজবুত সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

ছয়: মায়ের দুগ্ধদানের শক্তি ও সামর্থ্য থাকা অবস্থায় তাঁর পরিবর্তে অন্য কোন ধাত্রীর সাহায্যে শিশুকে স্তন্যদানের ব্যবস্থাকরণ এমন একটি বিষয়, যা ইসলাম আদৌ উৎসাহিত করেনি। অনুরূপভাবে দুগ্ধদানের বিনিময়ে ইসলাম বৈষয়িক আকর্ষণও সৃষ্টি করেছে, যেমন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ ঘটলে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে দুগ্ধধাত্রী মাকে স্তন্যদানের বিনিময় প্রদানের বিধান রেখেছে। [] এ ব্যবস্থার পেছনে কারণ হচ্ছে এই যে, যাতে করে মহিলা শিশুর ব্যাপারকে তুচ্ছ বা হেয় করে না দেখে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন