hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্তর-বিধ্বংসী বিষয়সমূহ ঝগড়া-বিবাদ

লেখকঃ মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জেদ

১৮
প্রশংসনীয় বিতর্কের উদাহরণ
বাতিল পন্থীদের সাথে নবী -রাসূল ও সালফে সালেহীনদের বিতর্কের পদ্ধতির ওপর কয়েটি দৃষ্টান্ত পেশ করা হলো:

১. ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম নমরূদের সাথে তার বাতিলকে প্রতিহত করতে বিতর্ক করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَلَمۡ تَرَ إِلَى ٱلَّذِي حَآجَّ إِبۡرَٰهِ‍ۧمَ فِي رَبِّهِۦٓ أَنۡ ءَاتَىٰهُ ٱللَّهُ ٱلۡمُلۡكَ إِذۡ قَالَ إِبۡرَٰهِ‍ۧمُ رَبِّيَ ٱلَّذِي يُحۡيِۦ وَيُمِيتُ قَالَ أَنَا۠ أُحۡيِۦ وَأُمِيتُۖ قَالَ إِبۡرَٰهِ‍ۧمُ فَإِنَّ ٱللَّهَ يَأۡتِي بِٱلشَّمۡسِ مِنَ ٱلۡمَشۡرِقِ فَأۡتِ بِهَا مِنَ ٱلۡمَغۡرِبِ فَبُهِتَ ٱلَّذِي كَفَرَۗ وَٱللَّهُ لَا يَهۡدِي ٱلۡقَوۡمَ ٱلظَّٰلِمِينَ ﴾ [ البقرة :258]

“তুমি কি সে ব্যক্তিকে দেখ নি, যে ইবরাহীমের সাথে তার রবের ব্যাপারে বিতর্ক করেছে যে, আল্লাহ তাকে রাজত্ব দিয়েছেন? যখন ইবরাহীম বলল, ‘আমার রব তিনিই’ যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমিই জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটাই। ইবরাহীম বলল, নিশ্চয় আল্লাহ পূর্বদিক থেকে সূর্য আনেন। অতএব তুমি তা পশ্চিম দিক থেকে আন। ফলে কাফির ব্যক্তি হতভম্ব হয়ে গেল। আর আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়েত দেন না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৫৮]

এ বিতর্ক ছিল তাওহীদের রুবুবিয়্যাহ বিষয়ে তাই কাফিরটি বলে (আমি জীবিত করি ও মৃত্যু দিই) অর্থাৎ এক লোক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমি তাকে ক্ষমা করে দিই আবার অপরজন নির্দোষ আমি তাকে হত্যা করি। এ বিতর্ক ছিল অবান্তর। কারণ, তাওহীদের রুবুবিয়্যাতে হায়াত দ্বারা উদ্দেশ্য অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্বে আনা। যদি তুমি তোমার দাবীতে সত্য হও তবে অস্তিত্বহীন থেকে অস্তিত্বে নিয়ে আস! কিন্তু ইব্রাহিম আ. যখন দেখতে পেলেন, বিষয়টিতে নমরূদের বিতর্ক করার অবকাশ রয়েছে, তাই তিনি বিষয়টি এমন একদিক ঘুরিয়ে দিলেন, যেখানে নমরুদ বিতর্ক করতে পারবে না। তারপর তিনি বলেন,

﴿فَإِنَّ ٱللَّهَ يَأۡتِي بِٱلشَّمۡسِ مِنَ ٱلۡمَشۡرِقِ فَأۡتِ بِهَا مِنَ ٱلۡمَغۡرِبِ فَبُهِتَ ٱلَّذِي كَفَرَۗ﴾

“নিশ্চয় আল্লাহ পূর্বদিক থেকে সূর্য আনেন। অতএব তুমি তা পশ্চিম দিক থেকে আন। ফলে কাফির ব্যক্তি হতভম্ব হয়ে গেল।

২. অনুরূপভাবে দুই বাগানের মালিক ও একজন নেককার লোকের বিতর্ক। লোকটি তাকে কিভাবে উত্তর দেন? তার নিকট যে নেয়ামত রয়েছে তা দ্ধারা ধোঁকায় না পড়ে তার পরিবর্তে তার কর্তব্য বিষয়ে কিভাবে তাকে পথ দেখান। তারপর সে আল্লাহর থেকে তার প্রত্যাশা কি তা উল্লেখ করেন,

﴿فَعَسَىٰ رَبِّيٓ أَن يُؤۡتِيَنِ خَيۡرٗا مِّن جَنَّتِكَ وَيُرۡسِلَ عَلَيۡهَا حُسۡبَانٗا مِّنَ ٱلسَّمَآءِ فَتُصۡبِحَ صَعِيدٗا زَلَقًا ﴾ [ الكهف :40]

“তবে আশা করা যায় যে, ‘আমার রব আমাকে তোমার বাগানের চেয়ে উত্তম (কিছু) দান করবেন এবং তার ওপর আসমান থেকে বজ্র পাঠাবেন। ফলে তা অনুর্বর উদ্ভিদশূন্য জমিনে পরিণত হবে”। [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ৪০] এবং তাকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, এটি সবই ধ্বংস হবে।

৩. এ ছাড়াও অনেক আহলে ইলম আছেন, যারা নাস্তিক মুরতাদ ও কাফিরদের সাথে বিতর্ক করেন। যেমন, ইমাম আবু হানিফা রহ. দাহরীয়াদের একটি সম্প্রদায়ে সাথে মুনাজারা করেন। তারা বলেন, এ জগতের সৃষ্টি প্রাকৃতিক, জগতের আলাদা কোনো স্রষ্টা নাই, সে নিজেই তার স্রষ্টা। প্রতি ছত্রিশ হাজার বছর পর পৃথিবী আপন কক্ষ পথে ফিরে আসে। আদম আ. আবার জন্ম লাভ করে এবং প্রতি জীবন যেগুলো চলে যায় সে গুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটে। এভাবে তারা মারা যায় আবার ফিরে আসে।

ইমাম আবু হানিফা রহ. বলেন, আচ্ছা বলত, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তোমাদের মতামত কি? যে বলে নদীতে মাঝি ছাড়াই নৌকা চলে, কোনো লোক ছাড়াই নৌকা নিজে নিজে তার মধ্যে মালামাল উঠায়, আবার নামায়।

তারা বলল, যে এ কথা বলে সে পাগল ছাড়া আর কি হতে পারে?

তিনি বললেন, ছোট্ট একটি নৌকা তার জন্য যদি মাঝি লাগে, পরিচালক লাগে, তাহলে এত বড় জগত তার জন্য কি পরিচালক লাগবে না? তা কীভাবে পরিচালক ছাড়া চলতে পারে?

তার কথা শোনে তারা কেঁদে ফেলল এবং হককে স্বীকার করে নিলো।

আমর ইবন উবাইদ সে একজন মুতাযেলা যারা বলে কবীরাগুণাহকারী চির জাহান্নামী। সে একদিন বলে, কিয়ামতের দিন আমাকে আল্লাহর সামনে উপস্থিত করা হলে আল্লাহ বলবে তুমি কেন বললে হত্যাকারী জাহান্নামী? আমি বলব তুমি তা বলছ!

﴿وَمَن يَقۡتُلۡ مُؤۡمِنٗا مُّتَعَمِّدٗا فَجَزَآؤُهُۥ جَهَنَّمُ خَٰلِدٗا فِيهَا وَغَضِبَ ٱللَّهُ عَلَيۡهِ وَلَعَنَهُۥ وَأَعَدَّ لَهُۥ عَذَابًا عَظِيمٗا ﴾ [ النساء :93]

“আর যে ইচ্ছাকৃত কোনো মুমিনকে হত্যা করবে, তার প্রতিদান হচ্ছে জাহান্নাম, সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর আল্লাহ তার ওপর ক্রুদ্ধ হবেন, তাকে লা‘নত করবেন এবং তার জন্য বিশাল আযাব প্রস্তুত করে রাখবেন”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৯৩]

তারপর তাকে কুরাইশ ইবন আনাস বলল, ঘরের মধ্যে তার চেয়ে ছোট আর কেউ নাই, যদি তোমাকে বলে আমি বলছি

﴿إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَغۡفِرُ أَن يُشۡرَكَ بِهِۦ وَيَغۡفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَآءُۚ وَمَن يُشۡرِكۡ بِٱللَّهِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلَٰلَۢا بَعِيدًا﴾ [ النساء :116]

“নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমা করেন না তাঁর সাথে শরীক করাকে এবং এ ছাড়া যাকে চান ক্ষমা করেন। আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে তো ঘোর পথভ্রষ্টটায় পথভ্রষ্ট হলো। [সূরা আন-নিসা আয়াত: ১১৬]

তুমি কীভাবে জানতে পারলে আমি ক্ষমা করতে চাইবো না? এ কথার পর সে আর কোনো উত্তর দিতে পারেনি।

৩ উমার ইবন আব্দুল আযীয রহ. আওন ইবন আব্দুল্লাহকে খারেজিদের সাথে মুনাযারার জন্য পাঠান। তারা ইমামদের কাফির বলত। সে তাদের বলল, তোমরা উমার ইবনুল খাত্তাবের মতে শাসক চেয়েছিলে, কিন্তু যখন উমার ইবন আব্দুল আযীয আসল তোমরাই সর্বপ্রথম তার থেকে পলায়ন করলে?!

তারা বলল, সে তার পূর্বসূরীদের বলয় থেকে বের হতে পারে নি! আমরা শর্ত দিয়েছিলাম তার পূর্বের সব ইমাম ও খলিফাদের অভিশাপ করতে হবে। কিন্তু সে তা করে নি।

সে বলল, তোমরা সর্বশেষ করে হামানকে অভিশাপ করছ?

তারা বলল, না আমরা কখনোই হামানকে অভিশাপ করি নি!

সে বলল, ফেরআউনের উজির যে তার নির্দেশে প্রাসাদ নির্মাণ করল তাকে তোমরা ছাড়তে পারলে অথচ তোমরা উমার ইবন আব্দুল আজীজকে ছাড়তে পারলে না, যে হকের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং আহলে ক্বিবলার কাউকে চাই সে কোনো বিষয়ে ভুল করুক?!

উমার ইবন আব্দুল আযীয তার কথায় খুব খুশি হন এবং বলেন তাদের নিকট তোমাকে ছাড়া আর কাউকে পাঠাবো না।

তারপর সে তাকে বলে, তুমি হামানের কথা বললে ফিরআউনের কথা বললে না?

সে বলে আমি আশংকা করছিলাম ফিরআউনের কথা বললে সে বলবে আমরা তাকে অভিশাপ করি।

* জাহ্হাক আস-সারী নামে একজন খারেজী আবু হানিফা রহ. এর নিকট এসে বলে তুমি তাওবা কর!

তিনি বললেন, কীসের থেকে তাওবা করব?

সে বলল, তুমি যে বলছ, দুই ব্যক্তির মাঝে বিচারক নির্ধারণ করা বৈধ তা হতে। খারেজীরা কোনো হাকীম মানে না তারা বলে, হাকিম একমাত্র আল্লাহ।

আবু হানিফা রহ. বলল, আচ্ছা তুমি কি আমাকে হত্যা করবে নাকি আমার সাথে মুনাযারা করবে?

সে বলল, আমি তোমার সাথে মুনাযারা করব!

বলল, যদি আমরা যে বিষয়ে মুনাযারা করব তাতে যদি আমরা একমত না হতে পারি তাহলে আমার আর তোমার মধ্যে কে ফায়সালা করবে?

সে বলল, যাকে তুমি চাও নির্ধারণ কর।

আবু হানিফা রহ. জাহ্হাক আশ-শারী এক সাথীকে বলল, তুমি বস আমরা যে বিষয়ে বিরোধ করি তাতে তুমি ফায়সালা দিবে।

তারপর সে জাহ্হাককে বলল, তুমি আমার ও তোমার মধ্যে বিচারক হিসেবে তাকে মান?

বলল, হ্যাঁ

আবু হানিফা রহ. বলল, তুমি তো এখন বিচারক নির্ধারণ করাবে বৈধ বললে। তারপর সে নির্বাক হলো এবং চুপ হয়ে গেল। আর কোনো উত্তর দিতে পারল না।

ইবনে আসাকের বর্ণনা করেন, একদা রুমের একজন লোককে কাজী আবু বকর আলা-বাকিল্লানীর নিকট পাঠান ইফকের ঘটনা বিষয়ে বিতর্ক করার জন্য। উদ্দেশ্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে হেয় করা। সে বলল, আল্লাহ তায়ালা কুরআনের মধ্যে একজন মহিলাকে যিনার অপবাদ থেকে পবিত্র করেন, তার নাম কি?

কাজী উত্তরে বললেন, তার হলো, দুইজন মহিলা। তাদের সম্পর্কে লোকেরা অপবাদ দেয় এবং যা বলার বলে। একজন হলো আমাদের নবীর স্ত্রী আর অপর জন হলো, মারয়াম বিনতে ইমরান। আমাদের নবীর স্ত্রী সন্তান প্রসব করেনি আর মারয়াম আ. একজন সন্তান কাঁধে নিয়ে মানুষের মধ্যে ফিরে আসে। আল্লাহ তায়ালা তাদের সম্প্রদায়ের লোকেরা যে অপবাদ দেয়, তা থেকে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও মারয়াম আ. উভয়কে পবিত্র করেন। তুমি তাদের দু’জনের কার কথা জানতে চাও? এ কথা শোনে লোকটি চুপ হয়ে গেল কোনো উত্তর দিতে পারল ন। এর পর তার আর কি বলার আছে?

মোটকথা, বাতিলকে প্রতিহত ও নিরুত্তর করার জন্য এবং বিধর্মী কাফির মুশরিক ও নাসারাদের প্রতিহত করার জন্য বিতর্ক করা মুসলিমদের ওপর ওয়াজিব। একজন মুসলিমের সামনে কুফর পেশ করা হবে, আর সে চুপ করে বসে থাকবে, তা কখনোই বৈধ হতে পারে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন