মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
“আর আমরা এই কুরআনে মানুষের জন্য সকল প্রকার উপমা বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। আর মানুষ সবচেয়ে বেশি তর্ককারী।” [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ৫৪]
অর্থাৎ সবচেয়ে অধিক ঝগড়াকারী ও প্রতিবাদী, সে সত্যের পতি নমনীয় হয় না এবং কোনো উপদেশ-কারীর উপদেশে সে কর্ণপাত করে না। [তাফসীরে কুরতবী ২৪১/৮।]
আলী ইবন আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ও তার মেয়ে ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে তাদের উভয়ের দরজায় পাড়ি দিয়ে উভয়কে জিজ্ঞাসা করে বলেন, তোমরা উভয়ে কি সালাত আদায় করনি? আমরা তাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের জীবনতো আল্লাহর হাতে, তিনি ইচ্ছা করলে আমাদের জাগাতে পারতেন। আমরা এ কথা বলার সাথে সাথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করে ফিরে যান। আমাকে কোনো প্রতি উত্তর করেন নি। তারপর আমি শুনতে পারলাম তিনি যাওয়ার সময় তার রানে আঘাত করে বলছে [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ৪৫] অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দ্রুত উত্তর দেওয়া ও ব্যাপারটি নিয়ে কোনো প্রকার নিজের দুর্বলতা প্রকাশ না করাতে অবাক হন। এ কারণেই তিনি স্বীয় উরুর উপর আঘাত করেন।
তবে এখানে একটি কথা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, তা হলো মানুষ হিসেবে সবার মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ করার গুণ প্রাকৃতিক হলেও কোনো কোনো মানুষ এমন আছে, যার মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ করার গুণ অন্যদের তুলনায় অধিক বেশি এবং সে ঝগড়া করতে অন্যদের তুলনায় অধিক পারদর্শী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাফিরদের নিকট রিসালাতের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করার পর কাফিরদের বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর আমরা তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তুমি এর দ্বারা মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং কলহপ্রিয় কওমকে তদ্বারা সতর্ক করতে পার।” [সূরা মারইয়াম, আয়াত: ৯৭]
এখানে লুদ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, অনর্থক ও অন্যায়ভাবে ঝগড়া-কারী যে সত্যকে গ্রহণ করতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা আহলে বাতিল সম্পর্কে আরো বলেন,
“আর তারা বলে, ‘আমাদের উপাস্যরা শ্রেষ্ঠ নাকি ঈসা’? তারা কেবল কূটতর্কের খাতিরেই তাকে তোমার সামনে পেশ করে। বরং এরাই এক ঝগড়াটে সম্প্রদায়।” [সূরা আয-যুখরফ, আয়াত: ৫৮] অর্থাৎ ঝগড়ায় তারা পারদর্শী।
কোন কোনো মানুষকে আল্লাহ তা‘আলা ঝগড়া-বিবাদ করার জন্য অধিক যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করে থাকেন, তার প্রমাণ হলো, কা‘আব ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর হাদীস। কা‘আব ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যখন তাবুকের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা হতে বিরত থাকেন, তখন তিনি তার নিজের বিষয়ে বর্ণনা দিয়ে বলেন,
«لم أتخلف عن رسول الله في غزوة غزاها إلا في غزوة تبوك، ... قال كعب بن مالك : فلما بلغني أنه توجه قافلا حضرني همي، وطفقت أتذكر الكذب وأقول : بماذا أخرج من سخطه غدا، واستعنت على ذلك بكل ذي رأي من أهلي فلما قيل : إن رسول الله قد أظل قادما زاح عني الباطل، وعرفت أني لن أخرج منه أبدا بشيء فيه كذب، فأجمعت صدقه ... فجئته، فلما سلمت عليه تبسم تبسُّم المغضب، ثم قال تَعالَ فجئت أمشي حتى جلست بين يديه فقال لي « مَا خَلَّفَكَ؟» فقلت : إني والله يا رسول الله لو جلست عند غيرك من أهل الدنيا لرأيت أن سأخرج من سخطه بعذر، ولقد أعطيت جدلا ... الحديث
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যত যুদ্ধ করেছে, একমাত্র তাবুকের যুদ্ধ ছাড়া আর কোনো যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা হতে আমি বিরত থাকিনি। তারপর যখন আমার নিকট খবর পৌঁছল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাফেলা নিয়ে যাত্রা আরম্ভ করেছেন, তখন সব চিন্তা এসে আমাকে গ্রাস করে ফেলল, তখন আমি মিথ্যার অনুসন্ধান করতে লাগলাম। আগামী দিন আমি কি অপারগতা দেখিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আক্রোশ থেকে রেহাই পাব! আমি আমার পরিবারের বিজ্ঞ, জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান লোকদের কাছ থেকে মতামত নিতে থাকি।... তারপর যখন আমাকে জানানো হলো, যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফেরৎ আসছে তখন আমার থেকে যাবতীয় সব ধরনের অনৈতিক ও বাতিল চিন্তা দূর হয়ে গেল। আর আমি প্রতিজ্ঞা করলাম যে, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বাচার জন্য এমন কোনো কথা বলবো না যার মধ্যে মিথ্যার অবকাশ থাকে। আমি সব সত্য কথাগুলো আমার অন্তরে গেঁথে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে উপস্থিত হই। আমি যখন তাকে সালাম দিলাম, তখন সে একটি মুচকি হাসি দিল; একজন ক্ষুব্ধ ও রাগান্বিত ব্যক্তির মুচকি হাসির মত। তারপর সে আমাকে বলে আস! আমি পায়ে হেটে তার দিকে অগ্রসর হয়ে তার সামনে বসে পড়লাম। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করে বলেন, কোনো জিনিস তোমাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ হতে বিরত রাখল? তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ রাসূল! আল্লাহর শপথ করে বলছি! যদি আমি আপনি ছাড়া দুনিয়াদার কোনো লোকের সামনে বসতাম, তাহলে আমি কোনো একটি অপারগতা বা কারণ দেখিয়ে তার আক্রোশ ও ক্ষোভ হতে মুক্তি পেতাম। আমাকে এ ধরনের ঝগড়া ও বিবাদ করার যোগ্যতা দেওয়া হয়েছে...। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪১৮; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৯।]
এখানে হাদীসে কা‘আব ইবন মালেকের أعطيت جدلا কথাটিই হলো আমাদের প্রামাণ্য উক্তি। এখানে তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, আমাকে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে কথা বলার এমন এক যোগ্যতা, শক্তি ও পাণ্ডিত্য দেওয়া হয়েছে, যার দ্বারা আমি আমার প্রতি যে অপবাদ দেওয়া হয়েছে, তা হতে অতি সহজেই বের হয়ে আসতে পারতাম। আমি আমাকে আঠা থেকে চুল যেভাবে বের করে আনে, সেভাবে বের করে আনতে পারতাম।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন তার স্বীয় ঘরের দরজায় ঝগড়ার আওয়াজ শুনতে পেয়ে ঘর থেকে বের হলেন। তারপর তিনি তাদের বললেন,
“অবশ্যই আমি একজন মানুষ। আর আমার নিকট অনেক বিচার ফায়সালা এসে থাকে। আমি দেখতে পাই অনেক এমন আছে যারা বিতর্কে তার প্রতিপক্ষের চেয়ে অধিক পারদর্শী। তখন তার কথার পেক্ষাপটে আমার কাছে মনে হয় সে সত্যবাদী। ফলে আমি তার পক্ষে ফায়সালা করে থাকি। তবে আমি যদি কোনো মুসলিম ভাইয়ের হককে কারো জন্য ফায়সালা করে দিই, মনে রাখবে, তা হলো আগুনের একটি খণ্ড! চাই সে তা গ্রহণ করুক অথবা ছেড়ে যাক”। [বুখারি: ৪৪১৮ সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭৬৯]
মানুষের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ করার এ গুণটি কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে এমনকি কিয়ামত কায়েম হওয়ার পরেও মানুষের মধ্যে ঝগড়া করার গুণটি অবশিষ্ট থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“(স্মরণ কর সে দিনের কথা) যেদিন প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের পক্ষে যুক্তি-তর্ক নিয়ে উপস্থিত হবে এবং প্রত্যেককে ব্যক্তি সে যা আমল করেছে তা পরি পূর্ণরূপে দেওয়া হবে এবং তাদের প্রতি জুলম করা হবে না”। [সূরা আন-নাহাল, আয়াত: ১১১]
অর্থাৎ দুনিয়াতে সে যা করেছে, সে বিষয়ে সে ঝগড়া-বিবাদ করবে এবং প্রমাণ পেশ করবে। আর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চেষ্টা করবে।
আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“একদিন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি হাসি দিলেন। তারপর তিনি আমাদের বললেন, তোমরা কি জান আমি কি কারণে হাসলাম? আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা বললাম আল্লাহ ও তার রাসূ্লই ভালো জানেন। বান্দা তার রবকে সম্বোধন করে যে কথা বলবে, তার কথা স্মরণ করে আমি হাসছি! সে বলবে, হে আমার রব তুমি আমাকে জুলুম থেকে মুক্তি দেবে না। তখন আল্লাহ বলবে অবশ্যই! তখন বান্দা বলবে আমি আমার পক্ষে মাত্র একজন সাক্ষী উপস্থিত করবো আল্লাহ বলবে আজকের দিন তোমার জন্য কিরামান কাতেবীনের অসংখ্য সাক্ষীর বিপরীতে একজন সাক্ষীই যথেষ্ট। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তার মুখের মধ্যে তালা দিয়ে দিবে এবং তার অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে বলা হবে, তোমরা কথা বল! তখন প্রতিটি অঙ্গ তার কর্ম সম্পর্কে বলবে। তারপর তাকে তার কথা মাঝে ছেড়ে দেওয়া হবে। তখন সে তাদের বলবে তোমাদের জন্য ধ্বংস! আমি তোমাদের জন্যই বিতর্ক ও বিবাদ করছি! [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৯৬৯।] আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন কাফিরদের ঝগড়ার বিবরণ দিয়ে বলেন,
“আর যেদিন আমরা তাদের সকলকে সমবেত করব তারপর যারা শিরক করেছে তাদেরকে বলব, ‘তোমাদের শরীকরা কোথায়, যাদেরকে তোমরা (শরীক) মনে করতে?’ অতঃপর তাদের পরীক্ষার জবাব শুধু এ হবে যে, তারপর তারা বলবে, ‘আমাদের রব আল্লাহর কসম! আমরা মুশরিক ছিলাম না’। দেখ, তারা কীভাবে মিথ্যা বলেছে নিজদের ওপর, তারা যে মিথ্যা রটনা করত, তা তাদের থেকে হারিয়ে গেল।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ২২-২৪]
আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“নূহ ‘আলাইহিস সালাম ও তার উম্মতরা আল্লাহর দরবারে আসবে তখন আল্লাহ তা‘আলা নুহকে জিজ্ঞাসা করবে তুমি তাদের দাওয়াত দিয়েছ? বলবে হা, হে আমার রব! তারপর উম্মতদের জিজ্ঞাসা করা হবে তোমাদের নিকট কি দাওয়াত দিয়েছে? তার বলবে না হে আমাদের প্রভু! আমাদের নিকট কোনো নবী আসেনি। তখন আল্লাহ তা‘আলা নূহ ‘আলাইহিস সালামকে বলবে হে নূহ, তোমার পক্ষে কে সাক্ষ্য দেবে? তখন সে বলবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার উম্মতেরা। তারপর আমরা সাক্ষী দেব যে, সে তার উম্মতদের পৌঁছিয়েছে। আর তা হলো, আল্লাহ তা‘আলার বাণী:
“ আর এভাবেই আমরা তোমাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মত বানিয়েছি, যাতে তোমরা মানুষের ওপর সাক্ষী হও এবং রাসূল সাক্ষী হন তোমাদের ওপর”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৪৩]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/718/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।