মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আমরা যখন কোনো বিষয়ে বিতর্ক করতে যাব, তখন আমাদের বিতর্কে যাওয়ার পূর্বে কি কি শর্তাবলী মেনে চলা উচিৎ, তা অবশ্যই জানা থাকতে হবে।
প্রশংসনীয় বিতর্কের শর্তাবলী নিম্নরূপ:
এক. বিতর্ক হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য। বিতর্ক দ্বারা বরকত লাভ ও ফায়েদা হাসিলের জন্য এখলাস হলো পূর্বশর্ত। কারণ, তর্কের উদ্দেশ্য হলো, সত্য উদঘাটন করা এবং হককে জানা। এ কারণে এ বিষয়ে বিতর্কে যাওয়ার পূর্বে আল্লাহর ভয় অন্তরে বিদ্যমান থাকতে হবে এবং সদিচ্ছা ও সুন্দর নিয়ত থাকতে হবে। তাহলেই বিতর্ক দ্বারা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছা যাবে।
দুই. বিতর্ক হতে হবে উত্তম পদ্ধতিতে।
তিন. বিতর্ক করতে হবে ইলমের দ্বারা। অর্থাৎ যে বিষয়ে বিতর্ক করবে, সে বিষয়ে অবশ্যই তার জ্ঞান থাকতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“সাবধান! তোমরা তো সেসব লোক, বিতর্ক করলে এমন বিষয়ে, যার জ্ঞান তোমাদের রয়েছে। তবে কেন তোমরা বিতর্ক করছ সে বিষয়ে যার জ্ঞান তোমাদের নেই? আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৬৬]
চার. আল্লাহ তা‘আলার নামের মাধ্যমে বিতর্ক শুরু করবে। সুতরাং, উভয় পক্ষ আল্লাহর নাম ও বিছমিল্লাহ দ্বারা বিতর্ক শুরু করবে। যদি মুখে উচ্চারণ করতে না পারে, তবে তাকে অবশ্যেই অন্তরে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে হবে।
পাঁচ. মজলিশের আদব ও প্রতিপক্ষের সম্মান রক্ষা করতে হবে এবং তার সামনে সুন্দর ও বিনম্র-ভাবে বসবে।
ছয়. প্রবৃত্তির পূজা করা হতে বের হতে হবে। তর্কের মাঝে যদি কোনো মানুষ বুঝতে পারে, সে ভুলের ওপর আছে এবং তার প্রতিপক্ষ হকের ওপর, তখন তার উচিৎ হলো, সে তার ভুল থেকে ফিরে আসবে এবং প্রতি পক্ষের কথা মেনে তার নিকট আত্মসমর্পণ করবে। যে ব্যক্তি সালফে সালেহীনদের জীবনী পাঠ করবে, তার জন্য ভুল থেকে ফিরে আসা অনেকটা সহজ হবে।
মুহাম্মদ ইবন কা‘ব থেকে বর্ণিত, এক লোক আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি তার মতামত দেন। কিন্তু লোকটি তাকে বলল, বিষয়টি এমন নয় বরং বিষয়টি এ রকম। তখন আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলল, তুমি সঠিক বলছ আর আমি ভুল করছি। আল্লাহ বলেন,
﴿وَفَوۡقَ كُلِّ ذِي عِلۡمٍ عَلِيمٞ﴾ [ يوسف :76]
“এবং প্রত্যেক জ্ঞানীর ওপর রয়েছে একজন জ্ঞানী। [সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৭৬]
তাউস রহ. বর্ণনা করেন, যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উভয় তাওয়াফে বিদা করার আগে কোনো মহিলার মাসিক আরম্ভ হলে তার বিধান কি হবে, এ নিয়ে মতবিরোধ করেন। মহিলাটি কি তাওয়াফে বিদা না করে বিদায় নিবে, নাকি সে তাওয়াফ করবে? ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, সে বিদায় নিবে, আর যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন সে বিদায় নিবে না। তারপর যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নিকট গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, সে বিদায় নিবে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার উত্তর শুনে যায়েদ ইবন সাবেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মুচকি হেসে বের হন এবং আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন, কথা সেটাই যা তুমি বলছ।
ইবনে আব্দুল বার রহ. বলেন, এটাই হলো ইনসাফ! যায়েদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হলেন ইবন আব্বাসের শিক্ষক। তারপরও তিনি তার ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করেননি। আমরা কেন তাদের অনুকরণ করব না। আল্লাহ আমাদের সাহায্য করুন।
আমরা জানি ইমাম আবু হানিফা রহ. ছিলেন বিতর্কে অত্যন্ত পারদর্শী ও বুদ্ধিমান বিতর্ককারীদের একজন। যারা সত্য ও হককে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিতর্ক করত তিনি ছিলেম তাদের অন্যতম ও বিখ্যাত। কিন্তু তিনি তার ছেলেকে বিতর্ক করতে নিষেধ করেন। তখন তার ছেলে তাকে বলে আপনাকে আমি বিতর্ক করতে দেখছি, অথচ আপনি আমাদের না করছেন!
উত্তরে তিনি বলেন, আমরা যখন কথা বলতাম, তখন আমাদের প্রতিপক্ষের সম্মানহানি হওয়ার ভয়তে এমন করে বসতাম, যেন আমাদের মাথার ওপর পাখি বসে আছে। আর বর্তমানে তোমরা বিতর্ক কর, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও সম্মানহানি করার জন্যই।
ইমাম শাফে‘ঈ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কল্যাণ কামনা করা ছাড়া কখনোই কারো সাথে বিতর্ক করি নি। আর কারো সাথে এ জন্য বিতর্ক করিনি যে সে ভুল করুক। [দেখুন: তারিখে দেমশক ৩৮৪/৫১] অর্থাৎ আমরা এ কামনা করে কখনোই বিতর্ক করিনি যে, আমার প্রতিপক্ষ হেরে যাক। কারণ, আমাদের উদ্দেশ্য ছিল সত্যকে উদঘাটন করা সেটা চাই আমার পক্ষ থেকে হোক বা তার পক্ষ থেকে হোক।
বর্ণিত আছে একবার ইমাম শাফে‘ঈ রহ. একটি বিষয় যার মধ্যে দুইটি মতামত বিদ্যমান, তা নিয়ে কোনো এক আহলে ইলমের সাথে বিতর্ক করেন। তারপর ইমাম শাফে‘ঈ রহ. তার প্রতিপক্ষের মতকে গ্রহণ করেন আর প্রতিপক্ষ ইমাম শাফে‘ঈর মতকে গ্রহণ করে। এভাবেই তাদের বিতর্কের সমাপ্তি হয়।
সাত. ধৈর্য ও সহনশীলতা থাকতে হবে। কারণ, ধৈর্য ও সহনশীলতা ছাড়া বিতর্ক তিক্ততা ও খারাপ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে।
আট. বিতর্কের সময় ধীরস্থিরিতা থাকতে হবে। শুধু তাড়াহুড়া করলে চলবে না। কারণ, শুধু আমি আমার কথা বলতে থাকলাম আমার প্রতিপক্ষকে কথা বলার সুযোগ দিলাম না তাহলে শুধু কথা বলাই হবে। প্রতিপক্ষের নিকট কি আছে তা শোনা বা জানা হবে না।
নয়. সত্য কথা বলার ওপর অটল অবিচল থাকতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর যে বিষয় তোমার জানা নাই তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তকরণ- এদের প্রতিটির ব্যাপারে সে জিজ্ঞাসিত হবে।” [সুরা আল-ইসরা, আয়াত: ৩৬]
দশ. প্রতিপক্ষের সাথে বিনম্র আচরণ করতে হবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, আমরা যখন কোনো বিষয়ে তর্ক করি আমাদের উদ্দেশ্য হলো, ফলাফল বের ও সত্য উদঘাটন করা। আমাদের উদ্দেশ্য সময় নষ্ট করা বা প্রতিপক্ষের ওপর বিজয় লাভ করা নয়।
সুতরাং প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করা, মানুষের সামনে তাকে নির্বাক ও হেয় প্রতিপন্ন করা, তাকে কথা বলার সুযোগ না দেওয়া বা তার সাথে এমন কথা বলা, যা তার অন্তরে আঘাত আনে ও ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার শামিল হয় এবং মানুষের সামনে তাকে ঠাট্টা বিদ্রূপ ও হাসির পাত্র বানিয়ে ফেলে, তা কোনো ক্রমেই উচিৎ নয়।
এগার. প্রতিপক্ষ ফিরে আসার জন্য পথকে উম্মূক্ত রাখবে। সে যদি হেরে যায় তাহলে তাকে হেয় করবে না। তার সাথে কোনো প্রকার দুর্ব্যবহার করবে না। তার কথা ভালোভাবে শুনবে। কারণ, তার কথা ভালোভাবে শুনা দ্বারা তুমি অর্ধেক ফলাফলে পৌঁছে যাবে।
বার. ইনসাফ করা। যদি তোমার প্রতিপক্ষ কোনো সত্য কথা বলে, তা স্বীকার করে নেয়া এবং তার মান-মর্যাদার স্বীকৃতি দেওয়া।
আবু মুহাম্মদ ইবন হাযাম বলেন, একবার আমি আমার এক সাথীর সাথে মুনাযারা করি। তার মুখের মধ্যে তোতলামি থাকাতে আমি তার ওপর বিজয় লাভ করি। আমাকে মজলিশে বিজয়ী ঘোষণা করে মজলিশ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আমি যখন মজলিশ শেষ করে ঘরে ফিরি, তখন আমার অন্তরে সন্দেহ হলে আমি কিতাবের শরণাপন্ন হই এবং কিতাবে একটি বিশুদ্ধ প্রমাণ দেখতে পাই যা আমার প্রতিপক্ষের কথাকে বিশুদ্ধ আর আমার কথাকে বাতিল বলে প্রমাণ করে। আমার সাথে একজন সাথী ছিল যে আমাদের তর্কের মজলিসে উপস্থিত ছিল। আমি তাকে কিতাবের বিষয়টি অবহিত করলে সে বলে তুমি এখন কি করতে চাও? আমি বললাম কিতাবটি নিয়ে তার কাছে গিয়ে পেশ করবো এবং তাকে বলব তুমি হক আর আমি বাতিল। আর তার কথা কবুল করে নেব। সে বলল, তুমি তোমাকে হেয় করবে? আমি বললাম হা! আমি যদি এ মুহূর্তে তা করতে পারতাম তাহলে আগামীর জন্য অপেক্ষা করতাম না। তবে আমি এখনই আমার মতকে প্রত্যাখ্যান করে তার মতের দিকে ফিরে আসলাম।
তের. মার্জিত ও সম্মান সূচক বাক্য ব্যবহার করে কথা বলবে। চিৎকার করবে না ও অমার্জিত কথা বলবে না। কোনো এক ব্যক্তি মজলিশে চিৎকার করলে পরিচালনাকারী বলেন, হে আব্দুস সামাদ সত্য তো সঠিক কথার মধ্যে কঠিন আওয়াজে নয়। সুতরাং চিৎকার দ্বারা কোনো ফায়সালা হয় না।
চৌদ্দ. ঝগড়া পরিহার করা। অনেক লোক আলিমদের ইলম থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তাদের সাথে বিবাদ করার কারণে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কোনো এক ছাত্র বলছিল, আমি যদি ইবন আব্বাসের সাথে বন্ধুত্ব করতাম, তাহলে তার থেকে আরো অনেক ইলম শিখতে পারতাম। [দেখুন তারিখে দামেশক [২৯৭/২৯]] ইবন জুরাইয রহ. বলেন, আমি যত কিছু আতা থেকে শিখেছি তা তার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ দ্বারাই শিখছি। [দেখুণ: মিফতাহুস সাআদাত [১৬৯/১]]
পনের. বিতর্কের জন্য শর্ত হলো, তা আলিমদের সম্মুখে হবে যাহেলদের সম্মুখে নয়।
ষোল. মতামতের পার্থক্য বন্ধুত্ব নষ্ট করতে পারবে না। ইমাম আহমদ রহ. একবার আলী ইবনুল মাদিনীর সাথে বিতর্ক করতে গিয়ে মজলিশে তারা একে অপরের সাথে উচ্চ বাচ্য করেন। কিন্তু আলী ইবনুল মাদীনি যখন মজলিশ থেকে উঠে চলে যেতে লাগল, তখন ইমাম আহমদ উঠে তার ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরে তাকে বিদায় দেন।
সতের. যে সব কথা মানুষের চিন্তা চেতনা ও বিশ্বাসের পরিপন্থী ঐ ধরনের কথা হতে বিরত থাকা উচিৎ।
আঠার. সব ধরনের হিলা ও ষড়যন্ত্র পরিহার করবে। আর একজন বিচারক নির্ধারণ করবে যে উভয় পক্ষের কথা নোট করবে, যাতে কেউ কোনো কথা বলে অস্বীকার করতে না পারে।
উনিশ. কতক লোক আছে তাদের সাথে বিতর্ক সম্পূর্ণ বর্জন করতে হবে। যেমন, মূর্খ যে তার মূর্খতাকে স্বীকার করে না, সীমালঙ্ঘন কারী, আহাম্মক এবং যে মিথ্যা সাক্ষী দেয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/718/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।