মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল্লাহ তা‘আলা তার বান্দাদের একমাত্র ঐ সব বিষয় থেকে বিরত থাকতে বলেন, যার মধ্যে নগদে বা ভবিষ্যতে কোনো না কোনো ক্ষতি নিহিত রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বান্দাদের ঝগড়া-বিবাদ থেকে নিষেধ করেছেন। কারণ, ঝগড়া-বিবাদ মানুষের অনেক ক্ষতির কারণ হয় এবং অনিষ্টটা সৃষ্টি করে। এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতি উল্লেখ করা হলো:
১. মহা কল্যাণ হতে বঞ্চিত হওয়া
আল্লামা আওযায়ী বলেন, আল্লাহ তা‘আলা যখন কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি কামনা করেন, তখন তাদের ওপর ঝগড়া-বিবাদ চাপিয়ে দেন এবং তাদের কাজের থেকে বিরত রাখেন।
মুয়াবিয়া ইবন কুরাহ বলেন, তোমরা ঝগড়া-বিবাদ থেকে বেচে থাক! কারণ, তা তোমাদের আমলসমূহকে ধ্বংস করে দেয়।
২. ইলম থেকে বঞ্চিত
তোমরা জান না যে, আল্লাহ তা‘আলা ক্বদর রজনীর ইলমকে কেবল ঝগড়ার কারণে তুলে নেন।
উবাদাহ ইবন সামেত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত,
«رسول الله خرج يخبر بليلة القدر، فتلاحى رجلان من المسلمين فقال : «إنِّي خَرَجْتُ لِأخْبِرَكُمْ بلِيلْةِ القَدْرِ -أي : ليعينها-، وَإِنَّهُ تَلَاحَى فُلَانٌ وَفُلَانٌ فَرُفِعَتْ، وَعَسَى أَنْ يَكُونَ خَيْراً لَكُمْ، الْتَمِسُوهَا فِي السَّبْعِ وَالتِّسْعِ وَالخَمْسِ»
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কদর রজনী সম্পর্কে খবর দিতে আমাদের নিকট বের হন, তারপর দুই মুসলিমকে দেখেন, তারা দুইজন ঝগড়া করছে। আমি তোমাদের নিকট বের হয়েছিলাম তোমাদের কদর রজনী সম্পর্কে সংবাদ দিতে। কিন্তু অমুক অমুক লোক ঝগড়া করতে থাকলে তার ইলম তুলে নেয়া হয়। হতে পারে এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে। তোমরা সাতাশ, উনত্রিশ ও পঁচিশ তারিখ রজনীতে কদর রজনীকে তালাশ কর।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৯।]
ওবাদাহ ইবন সামেত থেকে বর্ণিত, হাদীস দ্বার প্রমাণিত হয়, ঝগড়া বিবাদ করা একটি নিন্দনীয় কাজ; যার কারণে মানুষ শাস্তি ভোগ করতে হয় এবং কল্যাণ হতে বঞ্চিত হয়। দুই লোকের ঝগড়া, বাক বিতণ্ডা ও বিবাদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিতিতে মসজিদে সংঘটিত হয়। ফলে কদর রাত্রির ইলম থেকে আমরা মাহরুম হই।
ইউনুস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার নিকট মাইমুন ইবন মাহরান লিখেন, সাবধান! দীনের বিষয়ে ঝগড়া-বিবাদ করা থেকে বিরত থাকবে। কোনো আলিম বা জাহেল কারো সাথে কখনো বিবাদ করবে না।
এক লোক বর্ণনা করে যে, এক ব্যক্তি আলিমদের সাথে বিবাদ করার কারণে ইলম হাসিল করা হতে বঞ্চিত হয়। শেষ পর্যন্ত সে লজ্জিত হয় এবং বলে, আফসোস যদি আমি তাদের সাথে বিবাদ না করতাম!
৩. উম্মতের ধ্বংস
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“তোমাদের পূর্বের উম্মতরা অধিক প্রশ্ন করা ও তাদের নবীদের সাথে বিরোধ করার কারণে ধ্বংস হয়েছে।”
উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু যিয়াদ ইবন হাদীরকে জিজ্ঞাসা করে বলে, তুমি কি জান কোনো জিনিস ইসলামকে ধ্বংস করে? সে বলল, না। তারপর বলল, ইসলাম ধ্বংস করে আলিমদের পদস্খলন, মুনাফেকদের বিবাদ করা আল্লাহর কিতাব বিষয়ে এবং ভ্রষ্ট ইমামদের ফায়সালা দেয়।
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
إنما هلك من كان قبلكم بالمراء والخصومات في الدين»
“তোমাদের পূর্বের লোকেরা দীনের ব্যাপারে বিবাদ করার কারণে ধ্বংস হয়েছে।”
৪. অন্তরকে কঠিন করে ও শত্রুতা সৃষ্টি করে
ইমাম শাফে‘ঈ রহ. বলেন, ঝগড়া বিবাদ করা মানুষের অন্তরকে কঠিন করে দেয় এবং পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা তৈরি করে।
অনেক মানুষ আছে কেবল মজলিশে বিতর্ক করার কারণে তাদের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়। যার কারণে তারা একে অপরের সাথে কথা বলে না, একজন অপরজনকে দেখতে যায় না। এ কারণে মনীষীরা বিতর্ক করা থেকে সতর্ক করেন। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তোমার যুলুমের জন্য তুমি ঝগড়াটে হওয়াই যথেষ্ট। আর তোমার গুণার জন্য তুমি বিবাদ কারী হওয়াই যথেষ্ট।
মুহাম্মাদ ইবন আলী ইবন হুসাইন বলেন, ঝগড়া দীনকে মিটিয়ে দেয়, মানুষের অন্তরে বিদ্বেষ জন্মায়।
আব্দুল্লাহ ইবন হাসান বলেন, বিবাদ প্রাচীন বন্ধুত্বকেও ধ্বংস করে, সুদৃঢ় বন্ধনকে খুলে দেয়, কমপক্ষে তার চড়াও হওয়ার মানসিকতা তৈরি করে যা হলো, সম্পর্কচ্ছেদের সবচেয়ে মজবুত উপায়।
ইবরাহীমে নখয়ী আল্লাহ তা‘আলার এ বাণীর তাফসীরে বলেন,
“আর ইয়াহূদীরা বলে, ‘আল্লাহর হাত বাঁধা’। তাদের হাতই বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবং তারা যা বলেছে, তার জন্য তারা লা‘নতগ্রস্ত হয়েছে। বরং তার দু’হাত প্রসারিত। যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন এবং তোমার ওপর তোমার রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফুরী বাড়িয়েই দিচ্ছে। আর আমরা তাদের মধ্যে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত শত্রতা ও ঘৃণা ঢেলে দিয়েছি। যখনই তারা যুদ্ধের আগুন প্রজ্বলিত করে, আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন। আর তারা জমিনে ফ্যাসাদ করে বেড়ায় এবং আল্লাহ ফাসাদকারীদের ভালবাসেন না।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৬৪]
অর্থাৎ দীনের ব্যাপারে ঝগড়া-বিবাদ করা।
৫. ভালো কাজের তাওফীক থেকে বঞ্চিত
আল্লাহ তা‘আলা যে মজলিশে বিতর্ক করা হয় এবং তাতে আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য থাকে না, তাদের আল্লাহ তায়ালা ভালো কাজ করার তাওফিক হতে বঞ্চিত করেন।
৬. অন্তর আল্লাহর স্মরণ হতে বিরত থাকে
যে বিতর্কে আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্য থাকে না তা মানুষকে আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। এমনকি সালাতেও তার অন্তর আল্লাহর স্মরণ করাকে বাদ দিয়ে বিতর্কের দিকে তার অন্তর সম্পৃক্ত থাকে।
কোনও একজন মনীষী বলেন, দীনকে নষ্ট, মরুয়তকে দুর্বল এবং অন্তরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখার জন্য ঝগড়া বিবাদ থেকে এত বেশি মারাত্মক আমি আর কিছুই দেখিনি।
৭. পদস্খলনের কারণ
মুসলিম ইবন ইয়াসের বলেন, তোমরা ঝগড়া-বিবাদ পরিহার কর। কারণ, তা হলো আলেমের মূর্খতার মুহূর্ত। শয়তান এ মুহূর্তেই তার পদস্খলন কামনা করে।
৮. সম্মানহানী
কোন এক আরব বলছিল, যারা মানুষের সাথে বিবাদ করে তাদের সম্মান নষ্ট হয়। যে বেশি ঝগড়া করে সে তা অবশ্যই বুঝতে পারে।
ইমাম শাফে‘ঈ রহ. বলেন,
قَالُوا سَكتَّ وَقَدْ خُوصِمْتَ، قُلْتُ لَهُمْ
إنَِّ الجَوَابَ لبابِ الشَّرِّ مِفْتَاحُ
وَالصَّمْتُ عَنْ جَاهِلٍ أَوْ أَحمَقٍ شَرَفٌ
وَفيِهِ أَيْضاً لصِوْنِ العِرْضِ إصِلَاحُ
أَمَا تَرَى الُأسَد تُخَشى وَْهَي صامِتَةٌ
وَالكلْبُ يخْسَى لَعَمْرِي وَهْوَ نَبَّاحُ
“তুমি চুপ থাকলে অথচ তোমার সাথে বিতর্ক করা হচ্ছে! আমি তাদের বললাম উত্তর দেওয়া অন্যায়ের দরজার চাবি স্বরুপ। কোনো জাহেল বা আহমকের কথার উত্তর দেওয়ার চেয়ে চুপ থাকা মর্যদাকর। এছাড়াও তাতে রয়েছে ইজ্জত সংরক্ষনে নিশ্চয়তা। তুমি কি দেখনা বাঘ চুপ থাকে অথচ তাকে সবাই ভয় করে। আর কুকুরকে সবাই ঘৃণা করে অথচ সে সব সময় ঘেউ ঘেউ করতেই থাকে”।
৮. বিদআতের বিকাশ ও প্রবৃত্তির অনুকরণ
উমার ইবন আব্দুল আযীয রহ. বলেন, যে ব্যক্তি দীনকে বিতর্কের জন্য লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত করে তার নকল করার প্রবণতা বেড়ে যায়। অর্থাৎ এক বিদ‘আত থেকে আরেক বিদ‘আতের দিকে যায়।
হাকাম ইবন উতাইবা আল কূফীকে জিজ্ঞাসা করা হলো, মানুষকে বিদ‘আতে প্রবেশে কিসে বাধ্য করছে? তিনি বললেন, ঝগড়া ও বিবাদ।
সাহাল ইবন আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করা হলো, একজন মানুষ কীভাবে বুঝতে পারবে যে সে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেন, যখন সে দশটি গুণ তার নিকট আছে বলে বুঝতে পারবে! সে জামা‘আত ছাড়বে না, এ উম্মতের বিরুদ্ধে তলোয়ার উত্তোলন করবে না, ভাগ্যকে অস্বীকার করবে না, ঈমান বিষয়ে সন্দেহ করবে না, দীনের বিষয়ে বিবাদ করবে না, আহলে কিবলার কোনো অপরাধী মারা গেলে তার ওপর সালাত আদায় ছাড়বে না। মোজার উপর মাসেহ করা ছাড়বে না, যালিম বা ইনসাফগার বাদশাহর পিছনে সালাত আদায় করা ছাড়বে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/718/19
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।