HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
পকেট সালাত
লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী
গোসল করার সময় প্রথমে দু’হাত কব্জি পর্যমত্ম তিন বার ধৌত করতে হবে। তারপর লজ্জাস্থান পরিষ্কার করতে হবে। অতঃপর দু’পা ব্যতীত নামাযের অযুর ন্যায় অযু করতে হবে। পরে মাথায় তিন বার পানি ঢেলে সম্পূর্ণ শরীর ধৌত করতে হবে, যাতে শরীরের কোন জায়গা শুকনো না থাকে। সব শেষে দু’পা ধৌত করতে হবে। (সহীহ বুখারী, হা/২৪৮; আবু দাউদ, হা/২৪২)
(১) প্রথমে মনে মনে অযুর নিয়ত করতে হবে।
(২) তারপর بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) বলবে।
(৩) তারপর ডান হাতে পানি নিয়ে দু’হাত কব্জি পর্যমত্ম ধৌত করতে হবে এবং আঙ্গুলসমূহ খিলাল করতে হবে।
(৪) তারপর ডান হাতে পানি নিয়ে কুলি করতে হবে এবং পরে বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে নাক ঝাড়তে হবে। তবে সিয়ামরত অবস্থায় কুলি করা ও নাকে পানি দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবে।
(৫) তারপর কপালের গোড়া থেকে দু’কানের লতি হয়ে থুতনীর নিচ পর্যমত্ম সম্পূর্ণ মুখমন্ডল ধৌত করতে হবে এবং দাড়ি খিলাল করতে হবে। এজন্য এক অঞ্জলি পানি নিয়ে থুতনীর নিচে দিতে হবে।
(৬) তারপর প্রথমে ডান ও পরে বাম হাত কনুই পর্যমত্ম ধৌত করতে হবে।
(৭) তারপর পানি নিয়ে দু’হাতের ভিজা আঙ্গুলগুলো মাথার সম্মুখ হতে পেছনে ও পেছন হতে সম্মুখে বুলিয়ে একবার পুরো মাথা মাসাহ করতে হবে। একই সাথে ভিজা শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে কানের ভেতরের অংশ ও বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে পেছনের অংশ মাসাহ করতে হবে।
(৮) তারপর প্রথমে ডান পা ও পরে বাম পা টাখনু পর্যমত্ম ভালোভাবে ধৌত করতে হবে এবং বাম হাতের আঙ্গুল দিয়ে উভয় পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করতে হবে। (আবু দাউদ, হা/১৪২; তিরমিযী, হা/৭৮৮; নাসাঈ, হা/৮৭; ইবনে মাজাহ, হা/৪০৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১০৮৭।)
(২) তারপর بِسْمِ اللهِ (বিসমিলস্নাহ) বলবে।
(৩) তারপর ডান হাতে পানি নিয়ে দু’হাত কব্জি পর্যমত্ম ধৌত করতে হবে এবং আঙ্গুলসমূহ খিলাল করতে হবে।
(৪) তারপর ডান হাতে পানি নিয়ে কুলি করতে হবে এবং পরে বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে নাক ঝাড়তে হবে। তবে সিয়ামরত অবস্থায় কুলি করা ও নাকে পানি দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবে।
(৫) তারপর কপালের গোড়া থেকে দু’কানের লতি হয়ে থুতনীর নিচ পর্যমত্ম সম্পূর্ণ মুখমন্ডল ধৌত করতে হবে এবং দাড়ি খিলাল করতে হবে। এজন্য এক অঞ্জলি পানি নিয়ে থুতনীর নিচে দিতে হবে।
(৬) তারপর প্রথমে ডান ও পরে বাম হাত কনুই পর্যমত্ম ধৌত করতে হবে।
(৭) তারপর পানি নিয়ে দু’হাতের ভিজা আঙ্গুলগুলো মাথার সম্মুখ হতে পেছনে ও পেছন হতে সম্মুখে বুলিয়ে একবার পুরো মাথা মাসাহ করতে হবে। একই সাথে ভিজা শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে কানের ভেতরের অংশ ও বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে পেছনের অংশ মাসাহ করতে হবে।
(৮) তারপর প্রথমে ডান পা ও পরে বাম পা টাখনু পর্যমত্ম ভালোভাবে ধৌত করতে হবে এবং বাম হাতের আঙ্গুল দিয়ে উভয় পায়ের আঙ্গুলগুলো খিলাল করতে হবে। (আবু দাউদ, হা/১৪২; তিরমিযী, হা/৭৮৮; নাসাঈ, হা/৮৭; ইবনে মাজাহ, হা/৪০৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/১০৮৭।)
রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উত্তম ও পূর্ণরূপে অযু করবে এবং নিচের দু‘আটি পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খোলা থাকবে। ফলে সে যেকোন দরজা দিয়ে তাতে প্রবেশ করতে পারবে।
اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَه ، وَاَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলস্নাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর বান্দা ও রাসূল। (সহীহ মুসলিম, হা/ ৫৭৬; আবু দাউদ, হা/১৬৯)
اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَه ، وَاَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলস্নাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর বান্দা ও রাসূল। (সহীহ মুসলিম, হা/ ৫৭৬; আবু দাউদ, হা/১৬৯)
প্রত্যেক সালাত তার নির্ধারিত ওয়াক্তের মধ্যে আদায় করতে হবে। তবে আউয়াল ওয়াক্তে অর্থাৎ শুরম্নর সময়ে আদায় করা আলস্নাহ তাআলার কাছে অধিকতর পছন্দনীয়।
যারা কাজ-কর্মকে বেশি গুরম্নত্ব দিয়ে সালাত দেরিতে পড়াকে অভ্যাসে পরিণত করে তারা গাফেলদের অমত্মর্ভূক্ত হয়ে যায়। তাদের সম্পর্কে আলস্নাহ তাআলা বলেন,
﴿فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَ الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَ ﴾
ঐ সকল সালাত আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা তাদের সালাতের ব্যাপারে গাফিল। (সূরা মাঊন: ৪-৫)
আর গাফেল হলো ঐসব লোক, যারা পেছাতে পেছাতে সালাত শেষ ওয়াক্তে পড়ে এবং হুকুম-আহকামগুলো ঠিকমতো আদায় করে না।
যারা কাজ-কর্মকে বেশি গুরম্নত্ব দিয়ে সালাত দেরিতে পড়াকে অভ্যাসে পরিণত করে তারা গাফেলদের অমত্মর্ভূক্ত হয়ে যায়। তাদের সম্পর্কে আলস্নাহ তাআলা বলেন,
﴿فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَ الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَ ﴾
ঐ সকল সালাত আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা তাদের সালাতের ব্যাপারে গাফিল। (সূরা মাঊন: ৪-৫)
আর গাফেল হলো ঐসব লোক, যারা পেছাতে পেছাতে সালাত শেষ ওয়াক্তে পড়ে এবং হুকুম-আহকামগুলো ঠিকমতো আদায় করে না।
সিজদার জায়গার একটু সামনে কমপক্ষে আধহাত উঁচু একটি লাঠি বা অন্য কিছু দিয়ে সুতরা দেবে। সুতরা ও মুসলস্নীর দাঁড়ানোর মাঝখান দিয়ে সালাত চলাকালীন হাঁটা-চলা নিষিদ্ধ। বিশেষ করে সালাতীর সামনে দিয়ে কোন (সাবালিকা) নারী, গাধা বা কালো কুকুর যাতায়াত করলে সালাত ভঙ্গ হয়ে যায় (মুসলিম : ৫১০)। সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে। অতঃপর বিনম্র হয়ে খুশূ ও খুযূর সাথে সালাতের জন্য দাঁড়াবে। পূর্ণ কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়াবে।
সালাতের মূল কাঠামোর মধ্যে পুরম্নষ ও মহিলাদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। দাঁড়ানোর পদ্ধতি, বুকে হাত বাঁধা, রম্নকূ, সিজদা ও বৈঠক এসবই পুরম্নষ ও মহিলারা একই নিয়মে আমল করবেন। রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর যামানায় পুরম্নষ ও মহিলারা একই পদ্ধতিতে সালাত আদায় করতেন। তবে তাদের সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোতে বিশেষ কিছু বিধানের অনুসরণ করবেন।
(১) মেয়েরা শুধুমাত্র মুখমন্ডল ও দুই হাত ছাড়া বাকি আপাদমসত্মক ঢেকে দাঁড়াবেন। পায়ের গোড়ালির নিচ পর্যমত্ম কাপড় ঝুলিয়ে পা ঢেকে রাখবেন। কিন্তু পুরম্নষদের জন্য পায়ের গোড়ালির নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম।
(২) জামআতে সালাত পড়লে মেয়েরা পুরম্নষদের একেবারে পেছনে দাঁড়াবেন।
(৩) মহিলাদের জামায়াতে মহিলারা ফরয ইমামতি করতে পারবেন।
(৪) ফরয সুন্নাত সকল সালাতে শুধুমাত্র মেয়েরা জামাআত করলে মহিলা ইমাম সামনে না গিয়ে কাতারের মাঝে মুক্তাদিদের সারিতে দাঁড়াবেন।
(৫) ইমামের কোন ভুল হলে মহিলা মুক্তাদিরা হাতের উপর হাত রেখে তালি দেবে। তবে পুরম্নষরা লুকমা দেবে ‘সুবহানালস্নাহ’ শব্দ বলে।
(৬) মহিলারা পুরম্নষদের সাথে একই জামাআতে সালাত পড়লে সালাম ফেরানোর পর পর মহিলারা আগে বেরিয়ে যাবে। এরপর বের হবে পুরম্নষ মুসলস্নীরা। তবে মেয়েদের জন্য আলাদা গেট থাকলে আগে-পরে বের হওয়াতে কোন দোষ নেই।
(৭) মহিলারা সালাতের আযান দিবে না। আযান দেয়া শুধুমাত্র পুরম্নষদের কাজ। তবে অধিকাংশ ফকীহদের মতে মেয়েদের জামায়াতে নারীরা ইকামত দিতে পারবে।
(১) মেয়েরা শুধুমাত্র মুখমন্ডল ও দুই হাত ছাড়া বাকি আপাদমসত্মক ঢেকে দাঁড়াবেন। পায়ের গোড়ালির নিচ পর্যমত্ম কাপড় ঝুলিয়ে পা ঢেকে রাখবেন। কিন্তু পুরম্নষদের জন্য পায়ের গোড়ালির নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা হারাম।
(২) জামআতে সালাত পড়লে মেয়েরা পুরম্নষদের একেবারে পেছনে দাঁড়াবেন।
(৩) মহিলাদের জামায়াতে মহিলারা ফরয ইমামতি করতে পারবেন।
(৪) ফরয সুন্নাত সকল সালাতে শুধুমাত্র মেয়েরা জামাআত করলে মহিলা ইমাম সামনে না গিয়ে কাতারের মাঝে মুক্তাদিদের সারিতে দাঁড়াবেন।
(৫) ইমামের কোন ভুল হলে মহিলা মুক্তাদিরা হাতের উপর হাত রেখে তালি দেবে। তবে পুরম্নষরা লুকমা দেবে ‘সুবহানালস্নাহ’ শব্দ বলে।
(৬) মহিলারা পুরম্নষদের সাথে একই জামাআতে সালাত পড়লে সালাম ফেরানোর পর পর মহিলারা আগে বেরিয়ে যাবে। এরপর বের হবে পুরম্নষ মুসলস্নীরা। তবে মেয়েদের জন্য আলাদা গেট থাকলে আগে-পরে বের হওয়াতে কোন দোষ নেই।
(৭) মহিলারা সালাতের আযান দিবে না। আযান দেয়া শুধুমাত্র পুরম্নষদের কাজ। তবে অধিকাংশ ফকীহদের মতে মেয়েদের জামায়াতে নারীরা ইকামত দিতে পারবে।
প্রত্যেক মুসলিস্ন স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াবে। কেউ কেউ দু’পায়ের মাঝে চার আঙ্গুল পরিমাণ ফাঁকা রাখাকে সুন্নত মনে করে। অথচ চার আঙ্গুল ফাঁকা রাখার কোন কথা হাদীসে নেই। তাই দু’পায়ের মাঝে খুব বেশি ফাঁক করবে না, আবার মাত্র চার আঙ্গুল ফাঁক রেখেও দাঁড়াবে না; বরং শরীরের মাপ অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরম্নষ সবাই সমান।
না, এটা বে-আদবী নয়; বরং সুন্নাহ। জামাআতে দাঁড়ানের সময় সাহাবাগণ পরস্পর একে অপরের পায়ের সাথে পা ও কাঁধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে কাতার সোজা করে মিশে মিশে দাঁড়াতেন। আনাস (রাঃ) বলেন,
وَكَانَ أَحَدُنَا يَلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَقَدَمَهُ بِقَدَمِهِ
আমাদের কেউ কেউ তাঁর পাশের মুসলিস্নর কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিশিয়ে দাঁড়াত।
(বুখারী : ৭২৫, ইফা ৬৮৯)
সাহাবীগণ দুজনের মাঝে কোন ফাঁকা রাখতেন না।
জামায়াতে সালাতের ক্ষেত্রে দুজন মুসলিস্নর মাঝে কোন ফাঁকা রাখা জায়েয- এমন কোন হাদীস নেই; বরং ফাঁকা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা ফাঁকা থাকলে সেখানে শয়তান ঢুকে পড়ে। আপনার ডানে ও বামে শয়তান সাথে নিয়ে সালাত পড়বেন- এটা হতে পারে না। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন,
رُصُّوا صُفُوفَكُمْ وَقَارِبُوا بَيْنَهَا وَحَاذُوا بِالأَعْنَاقِ فَوَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ إِنِّى لأَرَى الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ مِنْ خَلَلِ الصَّفِّ كَأَنَّهَا الْحَذَفُ
তোমরা তোমাদের কাতারে পরস্পর মিলে মিলে দাঁড়াও, একে অপরের নিকটবর্তী হও এবং ঘাড়গুলোকে সমানভাবে সোজা রেখে দাঁড়াও। সেই মহান সত্তা (আলস্নাহর) কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি দেখতে পাই কাতারে কোথাও ফাঁকা থাকলে সেখানেই কালো ভেড়ার বাচ্চার আকৃতিতে শয়তান ঢুকে পড়ে। (আবু দাউদ : ৬৬৬)
وَكَانَ أَحَدُنَا يَلْزِقُ مَنْكِبَهُ بِمَنْكِبِ صَاحِبِهِ وَقَدَمَهُ بِقَدَمِهِ
আমাদের কেউ কেউ তাঁর পাশের মুসলিস্নর কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিশিয়ে দাঁড়াত।
(বুখারী : ৭২৫, ইফা ৬৮৯)
সাহাবীগণ দুজনের মাঝে কোন ফাঁকা রাখতেন না।
জামায়াতে সালাতের ক্ষেত্রে দুজন মুসলিস্নর মাঝে কোন ফাঁকা রাখা জায়েয- এমন কোন হাদীস নেই; বরং ফাঁকা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা ফাঁকা থাকলে সেখানে শয়তান ঢুকে পড়ে। আপনার ডানে ও বামে শয়তান সাথে নিয়ে সালাত পড়বেন- এটা হতে পারে না। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন,
رُصُّوا صُفُوفَكُمْ وَقَارِبُوا بَيْنَهَا وَحَاذُوا بِالأَعْنَاقِ فَوَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ إِنِّى لأَرَى الشَّيْطَانَ يَدْخُلُ مِنْ خَلَلِ الصَّفِّ كَأَنَّهَا الْحَذَفُ
তোমরা তোমাদের কাতারে পরস্পর মিলে মিলে দাঁড়াও, একে অপরের নিকটবর্তী হও এবং ঘাড়গুলোকে সমানভাবে সোজা রেখে দাঁড়াও। সেই মহান সত্তা (আলস্নাহর) কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি দেখতে পাই কাতারে কোথাও ফাঁকা থাকলে সেখানেই কালো ভেড়ার বাচ্চার আকৃতিতে শয়তান ঢুকে পড়ে। (আবু দাউদ : ৬৬৬)
জামাআতে সালাতের ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কেরাম কাতার সোজা করে দাঁড়াতেন। রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন,
سَوُّوا صُفُوفَكُمْ فَإِنَّ تَسْوِيَةَ الصَّفِّ مِنْ تَمَامِ الصَّلاَةِ
তোমরা কাতারগুলো সোজা করে দাঁড়াও, কেননা কাতার সোজা করা সালাতের পূর্ণতার অংশ।
(মুসলিম : ৪৩৩)
ক. নুমান ইবনে বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- عَلَى النَّاسِ بِوَجْهِهِ فَقَالَ « أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ » . ثَلاَثًا « وَاللهِ لَتُقِيمُنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ
রাসূলুলস্নাহ ﷺ মুসলিস্নদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন এবং বলতেন, তোমরা কাতারগুলো সোজা কর। এ কথাটি তিনি ৩ বার বললেন, আলস্নাহর কসম করে বলছি! তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে নাও। নতুবা আলস্নাহ তোমাদের অমত্মরে বিভেদ সৃষ্টি করে দিবেন। অর্থাৎ কাতার বাঁকা রাখলে ঐ মুসলিস্নর অমত্মর বাঁকা করে দেবেন। (মুসলিম : ৪৩১)
আর কাতার সোজা করার নির্দেশ দেবেন ইমাম, মুয়াযযিন নন।
কাতার হওয়ার জন্য কমপক্ষে দুজন হওয়া আবশ্যক। তবে মহিলা মুসলিস্ন একজন হলেও পেছনে আলাদা কাতারে দাঁড়াবে।
سَوُّوا صُفُوفَكُمْ فَإِنَّ تَسْوِيَةَ الصَّفِّ مِنْ تَمَامِ الصَّلاَةِ
তোমরা কাতারগুলো সোজা করে দাঁড়াও, কেননা কাতার সোজা করা সালাতের পূর্ণতার অংশ।
(মুসলিম : ৪৩৩)
ক. নুমান ইবনে বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أَقْبَلَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- عَلَى النَّاسِ بِوَجْهِهِ فَقَالَ « أَقِيمُوا صُفُوفَكُمْ » . ثَلاَثًا « وَاللهِ لَتُقِيمُنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ قُلُوبِكُمْ
রাসূলুলস্নাহ ﷺ মুসলিস্নদের দিকে মুখ করে দাঁড়াতেন এবং বলতেন, তোমরা কাতারগুলো সোজা কর। এ কথাটি তিনি ৩ বার বললেন, আলস্নাহর কসম করে বলছি! তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে নাও। নতুবা আলস্নাহ তোমাদের অমত্মরে বিভেদ সৃষ্টি করে দিবেন। অর্থাৎ কাতার বাঁকা রাখলে ঐ মুসলিস্নর অমত্মর বাঁকা করে দেবেন। (মুসলিম : ৪৩১)
আর কাতার সোজা করার নির্দেশ দেবেন ইমাম, মুয়াযযিন নন।
কাতার হওয়ার জন্য কমপক্ষে দুজন হওয়া আবশ্যক। তবে মহিলা মুসলিস্ন একজন হলেও পেছনে আলাদা কাতারে দাঁড়াবে।
না! কোন কোন মুসলিস্ন বা ইমাম মসজিদে প্রবেশ করেই বসে পড়েন। অথচ সরাসরি এভাবে বসে পড়তে রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিষেধ করেছেন। আবু কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন,
إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمْ الْمَسْجِدَ فَلَا يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ
তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে সে অমত্মত, দু’রাকাআত সালাত আদায় করা ছাড়া যেন না বসে। (বুখারী- ১১৬৩)
এমনকি জুমু‘আর খুৎবার সময়ও যদি কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তাকেও রাসূলুলস্নাহ ﷺ সে সময় দু’রাকআত তাহিয়্যাতুল মসজিদে সালাত আদায় করে বসতে নির্দেশ দিয়েছেন। জাবির ইবনে আব্দুলস্নাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
جَاءَ رَجُلٌ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ النَّاسَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَقَالَ أَصَلَّيْتَ يَا فُلَانُ قَالَ لَا قَالَ قُمْ فَارْكَعْ
(কোন এক) জুমু‘আর দিন নবী ﷺ লোকদের সামনে খুৎবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে [বসে পড়ল। রাসূলুলস্নাহ ﷺ] তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে অমুক! তুমি কি সালাত আদায় করেছ? সে বলল, না; তিনি তখন বললেন, উঠ! সালাত আদায় করে নাও। (বুখারী : ৯৩০, ইফা : ৮৮৩)
إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمْ الْمَسْجِدَ فَلَا يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّيَ رَكْعَتَيْنِ
তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে সে অমত্মত, দু’রাকাআত সালাত আদায় করা ছাড়া যেন না বসে। (বুখারী- ১১৬৩)
এমনকি জুমু‘আর খুৎবার সময়ও যদি কেউ মসজিদে প্রবেশ করে তাকেও রাসূলুলস্নাহ ﷺ সে সময় দু’রাকআত তাহিয়্যাতুল মসজিদে সালাত আদায় করে বসতে নির্দেশ দিয়েছেন। জাবির ইবনে আব্দুলস্নাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
جَاءَ رَجُلٌ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ النَّاسَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَقَالَ أَصَلَّيْتَ يَا فُلَانُ قَالَ لَا قَالَ قُمْ فَارْكَعْ
(কোন এক) জুমু‘আর দিন নবী ﷺ লোকদের সামনে খুৎবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে [বসে পড়ল। রাসূলুলস্নাহ ﷺ] তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে অমুক! তুমি কি সালাত আদায় করেছ? সে বলল, না; তিনি তখন বললেন, উঠ! সালাত আদায় করে নাও। (বুখারী : ৯৩০, ইফা : ৮৮৩)
আযানের শব্দগুলো জোড় বা দু’বার করে বলতে হয়। আর ইকামাতের শব্দগুলো বেজোড় বা একবার করে বলতে হয় (বুখারী : ৬০৫-৬০৭)। তবে (আলস্নাহ আকবার) এবং قَدْ قَامَتِ الصَّلَاةُ ‘কাদকামাতিস সালাহ’ দু’বার বলতে হবে। আবার ইকামাতের শব্দগুলো দু’বার বলাও সহীহ । একাকী ফরজ সালাত এবং দ্বিতীয় জামাআতের সময়ও ইকামাত দেয়া সুন্নত। ইকামত শেষ হওয়ার পর ইমাম সাহেব ডানে-বামে তাকিয়ে কাতার সোজা করার নির্দেশ দিবেন।
কোন কোন এলাকায় ইকামতের শুরম্নতেই মুসলিস্নরা না দাঁড়িয়ে তারা দাঁড়ান حَىَّ عَلَى الصَّلَاة ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ বলার পর। এমন কোন নিয়ম হাদীসে আসেনি; সাহাবায়ে কেরামের আমল থেকেও এমনটি প্রমাণিত নয়। সঠিক পদ্ধতি হলো ইমামতের শুরম্নতেই দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করা।
কোন কোন এলাকায় ইকামতের শুরম্নতেই মুসলিস্নরা না দাঁড়িয়ে তারা দাঁড়ান حَىَّ عَلَى الصَّلَاة ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ বলার পর। এমন কোন নিয়ম হাদীসে আসেনি; সাহাবায়ে কেরামের আমল থেকেও এমনটি প্রমাণিত নয়। সঠিক পদ্ধতি হলো ইমামতের শুরম্নতেই দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করা।
নিয়ত না হলে কোন ইবাদাতই বিশুদ্ধ হয় না। নিয়ত শব্দের অর্থ হলো ইচ্ছা পোষণ করা। ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল যে সালাতই হোক বা যত রাকআতই হোক, মনে মনে এর নিয়ত করবে। আরবী বা বাংলায় মুখে এর নিয়ত উচ্চারণ করবে না। কেউ কেউ ‘নাওয়াইতু আন উসালিস্নয়া.......’ পড়ে থাকেন- এটাও ঠিক নয়। কারণ রাসূলুলস্নাহ ﷺ সালাতের নিয়ত কখনো মুখে মুখে উচ্চারণ করেননি; করেছেন মনে মনে। নিয়ত মূলত অমত্মরের কাজ; মুখে উচ্চারণের বিষয় নয়। তাই শরীয়তের বিধান হলো মনে মনে নিয়ত করা। আর নিয়তের স্থান হলো কলব বা অমত্মর, জিহবা নয়।
সালাতের শুরম্নতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ তার দু’হাত কখনো কাঁধ আবার কখনো কান বরাবর উঠাতেন (আবু দাউদ : ৭২৮)। রাসূলুলস্নাহ ﷺ হাত উঠিয়ে ‘আলস্নাহু আকবার’ বলে তাকবীর দিয়েছেন (বুখারী : ৭৩৭, ইফা ৭০১)। তবে কানের লতি ছোয়া সুন্নত নয়। হাত তোলার সময় আঙ্গুলগুলো সোজা রাখবে এবং হাত কিবলামুখী করে রাখবে।
রাসূলুলস্নাহ ﷺ সালাতে বুকের উপর হাত রাখতেন।
ক. সাহাবী ওয়াইল বিন হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى ثُمَّ يَشُدُّ بَيْنَهُمَا عَلَى صَدْرِهِ وَهُوَ فِى الصَّلاَةِ .
আমি নবী ﷺ এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি দেখেছি) তিনি তাঁর বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখেছেন। (সহীহ ইবনু খুযাইমা : ৯০৬, পৃষ্ঠা ২, আবু দাউদ : ৭৫৯)
খ. সাহল ইবনে সাদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلَاةِ
সালাতে লোকদেরকে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখার নির্দেশ দেয়া হতো।
(বুখারী : ৭৪০, ইফা : ৭০৪)
আরবীতে ذراع ‘যিরা’ অর্থ হলো, হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগ থেকে কনুই পর্যমত্ম পূর্ণ এক হাত। অতএব উক্ত হাদীসের মর্ম ও নির্দেশ অনুযায়ী ডান হাতের আঙ্গুলগুলো বাম কনুইর কাছাকাছি থাকবে।
(আবু দাউদ : ৭৫৯, আলবানী)
কেউ কেউ বলেছেন, নাভির নিচে হাত বাঁধা সুন্নত। তবে নাভির নিচে হাত বাঁধার হাদীসগুলো দুর্বল। (আলবানীর যঈফ আবু দাউদ- ৭৫৬, ৭৫৮)।
তাই সহীহ হাদীসের উপর আমল করা কর্তব্য।
আবার কেউ কেউ বলেন, নারীরা বুকে বাঁধবে আর পুরম্নষরা বাঁধবে নাভির নিচে। এ বিষয়ে রাসূলুলস্নাহ ﷺ কোন পার্থক্য করেননি। তাহলে আমরা কীভাবে পার্থক্য করব? হাদীসের নির্দেশ পুরম্নষ ও নারী সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। অর্থাৎ বুকের উপর হাত রাখা নারী-পুরম্নষ সকলের জন্যই সুন্নত।
ক. সাহাবী ওয়াইল বিন হুজর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَضَعُ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى يَدِهِ الْيُسْرَى ثُمَّ يَشُدُّ بَيْنَهُمَا عَلَى صَدْرِهِ وَهُوَ فِى الصَّلاَةِ .
আমি নবী ﷺ এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি দেখেছি) তিনি তাঁর বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখেছেন। (সহীহ ইবনু খুযাইমা : ৯০৬, পৃষ্ঠা ২, আবু দাউদ : ৭৫৯)
খ. সাহল ইবনে সাদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
كَانَ النَّاسُ يُؤْمَرُونَ أَنْ يَضَعَ الرَّجُلُ الْيَدَ الْيُمْنَى عَلَى ذِرَاعِهِ الْيُسْرَى فِي الصَّلَاةِ
সালাতে লোকদেরকে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখার নির্দেশ দেয়া হতো।
(বুখারী : ৭৪০, ইফা : ৭০৪)
আরবীতে ذراع ‘যিরা’ অর্থ হলো, হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগ থেকে কনুই পর্যমত্ম পূর্ণ এক হাত। অতএব উক্ত হাদীসের মর্ম ও নির্দেশ অনুযায়ী ডান হাতের আঙ্গুলগুলো বাম কনুইর কাছাকাছি থাকবে।
(আবু দাউদ : ৭৫৯, আলবানী)
কেউ কেউ বলেছেন, নাভির নিচে হাত বাঁধা সুন্নত। তবে নাভির নিচে হাত বাঁধার হাদীসগুলো দুর্বল। (আলবানীর যঈফ আবু দাউদ- ৭৫৬, ৭৫৮)।
তাই সহীহ হাদীসের উপর আমল করা কর্তব্য।
আবার কেউ কেউ বলেন, নারীরা বুকে বাঁধবে আর পুরম্নষরা বাঁধবে নাভির নিচে। এ বিষয়ে রাসূলুলস্নাহ ﷺ কোন পার্থক্য করেননি। তাহলে আমরা কীভাবে পার্থক্য করব? হাদীসের নির্দেশ পুরম্নষ ও নারী সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। অর্থাৎ বুকের উপর হাত রাখা নারী-পুরম্নষ সকলের জন্যই সুন্নত।
ছানাকে দু‘আ ইসতিফতাহও বলা হয়। ছানা কয়েক প্রকারের আছে। যে সালাতই হোক, এর শুরম্নতে শুধু ১ম রাকআতে যে কোন একটি ছানা পড়বেন। এখানে দুটি ছানা দেয়া হলো-
প্রথম ছানা :
اَللّٰهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِيْ وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَّ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ ‐ اَللّٰهُمَّ نَقِّنِيْ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْاَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ ‐ اَللّٰهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ
হে আলস্নাহ! তুমি আমার এবং আমার গোনাহগুলোর মধ্যে এমন ব্যবধান সৃষ্টি করে দাও যেরূপ ব্যবধান সৃষ্টি করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আলস্নাহ! তুমি আমাকে এমনভাবে পাপমুক্ত করে দাও যেভাবে সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। হে আলস্নাহ! তুমি আমার পাপসমূহ পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও। (বুখারী : ৭৪৪, ইফা ৭০৮, মুসলিম : ৫৯৮)
দ্বিতীয় ছানা :
এ ছানাটি পড়াও সুন্নত-
سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالٰى جَدُّكَ وَلَا اِلٰهَ غَيْرُكَ
হে আলস্নাহ! আমরা আপনার প্রশংসার সাথে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আপনার নাম বড়ই বরকতময়, আপনার মর্যাদা সকলের উপর। আপনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।
(তিরমিযী, হা/২৪২; আবু দাঊদ, হা/৭৭৫)
হে আলস্নাহ! আপনার প্রশংসার সাথে পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আপনার নাম মহিমান্বিত, আপনার সত্তা অতি উচ্চ। আর আপনি ছাড়া ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য কোন উপাস্য নেই। (আবু দাউদ : ৭৭৬, তিরমিযী : ২৪৩)
কেউ কেউ সালাতের শুরম্নতে জায়নামাযের দু‘আ হিসেবে ইন্নী ওয়াজজাহতু পড়েন। এটা ঠিক নয়। কারণ انى وجهت .... (ইন্ন ওয়াজ্জহ্তু....) একটি ছানা। আর ছানা পড়তে হয় তাকবীরে তাহরীমা পর। (মুসলিম : ৭৭১)
প্রথম ছানা :
اَللّٰهُمَّ بَاعِدْ بَيْنِيْ وَبَيْنَ خَطَايَايَ كَمَا بَاعَدْتَّ بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ ‐ اَللّٰهُمَّ نَقِّنِيْ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْاَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ ‐ اَللّٰهُمَّ اغْسِلْ خَطَايَايَ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ
হে আলস্নাহ! তুমি আমার এবং আমার গোনাহগুলোর মধ্যে এমন ব্যবধান সৃষ্টি করে দাও যেরূপ ব্যবধান সৃষ্টি করেছ পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে। হে আলস্নাহ! তুমি আমাকে এমনভাবে পাপমুক্ত করে দাও যেভাবে সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। হে আলস্নাহ! তুমি আমার পাপসমূহ পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা ধৌত করে দাও। (বুখারী : ৭৪৪, ইফা ৭০৮, মুসলিম : ৫৯৮)
দ্বিতীয় ছানা :
এ ছানাটি পড়াও সুন্নত-
سُبْحَانَكَ اَللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالٰى جَدُّكَ وَلَا اِلٰهَ غَيْرُكَ
হে আলস্নাহ! আমরা আপনার প্রশংসার সাথে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আপনার নাম বড়ই বরকতময়, আপনার মর্যাদা সকলের উপর। আপনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।
(তিরমিযী, হা/২৪২; আবু দাঊদ, হা/৭৭৫)
হে আলস্নাহ! আপনার প্রশংসার সাথে পবিত্রতা বর্ণনা করছি। আপনার নাম মহিমান্বিত, আপনার সত্তা অতি উচ্চ। আর আপনি ছাড়া ইবাদাত পাওয়ার যোগ্য কোন উপাস্য নেই। (আবু দাউদ : ৭৭৬, তিরমিযী : ২৪৩)
কেউ কেউ সালাতের শুরম্নতে জায়নামাযের দু‘আ হিসেবে ইন্নী ওয়াজজাহতু পড়েন। এটা ঠিক নয়। কারণ انى وجهت .... (ইন্ন ওয়াজ্জহ্তু....) একটি ছানা। আর ছানা পড়তে হয় তাকবীরে তাহরীমা পর। (মুসলিম : ৭৭১)
২৩
২২. সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়ার নিয়ম কী? অতঃপর সূরা ফাতিহা অর্থাৎ আলহামদুলিলস্নাহ সূরা পুরোটা পড়বে। রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, সূরা ফাতিহা পাঠ করা ছাড়া কোন সালাত হয় না।সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা রাসূলুলস্নাহ ﷺ প্রতি আয়াতের পর থেমে থেম পড়তেন। যেমন - بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ অতঃপর থামতেন, আবার পড়তেন اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ অতঃপর থামতেন, আবার পড়তেন اَلرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ তারপর থেমে আবার পড়তেন مَالِكِ يَوْمِ الدِّيْنِ এভাবে প্রতি আয়াত শেষে থেমে থেমে পূর্ণ সূরা পাঠ করতেন।
(আবু দাউদ : ৪০০১, ইবনে মাজাহ : ৮৬৭)
(আবু দাউদ : ৪০০১, ইবনে মাজাহ : ৮৬৭)
সশব্দে ও নিঃশব্দে পঠিত সকল সালাতে মুক্তাদিগণও ইমামের পেছনে সূরা ফাতিহা পড়বেন। কারণ রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাতে সূরা ফাতিহা পড়ল না তার সালাত হলো না (বুখারী : ৭৫৬, ইফা ৭২০)। আর ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) এর এক মতানুসারে ইমাম যখন সশব্দে কিরাআত পড়েন তখন মুক্তাদীগণ না পড়ে চুপ করে শুনবে। আর নিঃশব্দে পঠিত সালাতে মুক্তাদীরা অবশ্যই সূরা ফাতিহা পড়বে।
তবে যদি ইমামকে রম্নকু অবস্থায় পেয়ে জামাআতে শরীক হয় তাহলে সে ঐ রাকআত পেয়ে গেল।
তবে যদি ইমামকে রম্নকু অবস্থায় পেয়ে জামাআতে শরীক হয় তাহলে সে ঐ রাকআত পেয়ে গেল।
সূরা ফাতিহার পর ইমাম ও মুক্তাদী সবাই আমীন বলবে। আমীন শব্দের অর্থ হলো হে আলস্নাহ, কবুল করম্নন। হাদীসে আছে, মুসলস্নীগণ যখন আমীন বলে তখন ফেরেশতারা তাদের সাথে আমীন বলে। যখন উভয় গ্রম্নপর আমীন বলার আওয়াজ এক হয়ে যায়, তখন এ মুসলস্নীদের পূর্ববর্তী সব গোনাহ মাফ হয়ে যায়। (বুখারী : ৭৮০, ইফা ৭৪৪)
আমীন চুপে চুপে ও সশব্দে পড়া যায়। তবে সশব্দে পঠিত কিরাআতবিশিষ্ট সালাতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ ও সাহাবায়ে কিরাম জোরে আওয়াজ করে আমীন বলতেন।
এ সুন্নাত অনুযায়ী রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর যামানা থেকে শুরম্ন করে এখন পর্যমত্ম কাবা ঘর ও মসজিদে নববীতে জোরে আওয়াজের সাথে আমীন বলার সুন্নাত চালু রয়েছে। তবে ইমামের আমীন বলার সাথে মুক্তাদীগণ আমীন বলবে, ইমামের আগে বলবে না।
আমীন চুপে চুপে ও সশব্দে পড়া যায়। তবে সশব্দে পঠিত কিরাআতবিশিষ্ট সালাতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ ও সাহাবায়ে কিরাম জোরে আওয়াজ করে আমীন বলতেন।
এ সুন্নাত অনুযায়ী রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর যামানা থেকে শুরম্ন করে এখন পর্যমত্ম কাবা ঘর ও মসজিদে নববীতে জোরে আওয়াজের সাথে আমীন বলার সুন্নাত চালু রয়েছে। তবে ইমামের আমীন বলার সাথে মুক্তাদীগণ আমীন বলবে, ইমামের আগে বলবে না।
আমীন বলার পর একটু চুপ থেকে (সাক্তা করে) কুরআন থেকে তিলাওয়াত করবে।
ক. সকল প্রকার সালাতের প্রথম দু’রাকআতে ফাতিহা পাঠের পর অপর একটি সূরা পড়বে, অথবা কোন সূরার অংশবিশেষ পড়বে।
খ. আর তৃতীয় ও চতুর্থ রাকআতে সূরা ফাতিহার পর রাসূলুলস্নাহ ﷺ কখনো সূরা মিলাতেন, আবার কখনো মিলাতেন না।
গ. প্রথম রাকআতে সূরা পাঠ তুলনামূলকভাবে একটু দীর্ঘায়িত করতেন।
ঘ. যোহর ও আসরের সালাতে ইমামের পেছনে প্রথম দু’রাকআতে মুক্তাদীগণও সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা পড়তে পারে। আবার শুধু ফাতিহা পাঠ করেও ক্ষামত্ম হতে পারে।
ঙ. একই রাকআতে সূরার অংশবিশেষ বা পূর্ণ সূরা বা একাধিক সূরা পাঠ করা জায়েয।
ক. সকল প্রকার সালাতের প্রথম দু’রাকআতে ফাতিহা পাঠের পর অপর একটি সূরা পড়বে, অথবা কোন সূরার অংশবিশেষ পড়বে।
খ. আর তৃতীয় ও চতুর্থ রাকআতে সূরা ফাতিহার পর রাসূলুলস্নাহ ﷺ কখনো সূরা মিলাতেন, আবার কখনো মিলাতেন না।
গ. প্রথম রাকআতে সূরা পাঠ তুলনামূলকভাবে একটু দীর্ঘায়িত করতেন।
ঘ. যোহর ও আসরের সালাতে ইমামের পেছনে প্রথম দু’রাকআতে মুক্তাদীগণও সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা পড়তে পারে। আবার শুধু ফাতিহা পাঠ করেও ক্ষামত্ম হতে পারে।
ঙ. একই রাকআতে সূরার অংশবিশেষ বা পূর্ণ সূরা বা একাধিক সূরা পাঠ করা জায়েয।
রম্নকূতে যাওয়ার সময় রাসূলুলস্নাহ ﷺ পুনরায় দু’হাত কাঁধ বা কান বরাবর উঠাতেন। রম্নকূতে যাওয়ার সময় এবং রম্নকূ থেকে মাথা উঠানোর সময় সাহাবায়ে কেরামও এভাবে দু’হাত উঠাতেন। (বুখারী : ৭৩৬-৭৩৮, ইফা ৭০০-১০২, মুসলিম : ৩৯১)
রম্নকূতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ হাঁটুতে হাত রাখতেন এবং পিঠ সোজা রাখতেন। অর্থাৎ মাথা থেকে কোমর পর্যমত্ম বরাবর থাকত। (ইবনে মাজাহ : ৮৭২)
রম্নকূতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ হাঁটুতে হাত রাখতেন এবং পিঠ সোজা রাখতেন। অর্থাৎ মাথা থেকে কোমর পর্যমত্ম বরাবর থাকত। (ইবনে মাজাহ : ৮৭২)
(ক) নিম্নোক্ত তাসবীহ তিন বা ততোধিক বার পাঠ করবেন : سُبْحَانَ رَبِّىَ الْعَظِيمِ অর্থাৎ আমি আমার মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
(খ) কখনো কখনো রম্নকূতে এ দু‘আও পড়বেন :
سُبْحَانَ ذِى الْجَبَرُوْتِ وَ الْمَلَكُوْتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَ الْعَظْمَةِ
আমি পবিত্রতা বর্ণনা করছি সেই মহান সত্তার যিনি প্রতাপশালী, রাজত্ব, বড়ত্ব ও মহত্বের মালিক। (আবূ দাঊদ, হা/৮৭৩, নাসায়ী হা/১১৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০২৬)
যে ব্যক্তি রম্নকূ ও সিজদা পরিপূর্ণভাবে আদায় করে না রাসূলুলস্নাহ ﷺ ঐ ব্যক্তিকে সালাত চোর বলে আখ্যায়িত করেছেন। (ইবনু আবী শাইবা : ১/৮৯/২)
(খ) কখনো কখনো রম্নকূতে এ দু‘আও পড়বেন :
سُبْحَانَ ذِى الْجَبَرُوْتِ وَ الْمَلَكُوْتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَ الْعَظْمَةِ
আমি পবিত্রতা বর্ণনা করছি সেই মহান সত্তার যিনি প্রতাপশালী, রাজত্ব, বড়ত্ব ও মহত্বের মালিক। (আবূ দাঊদ, হা/৮৭৩, নাসায়ী হা/১১৩২; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৪০২৬)
যে ব্যক্তি রম্নকূ ও সিজদা পরিপূর্ণভাবে আদায় করে না রাসূলুলস্নাহ ﷺ ঐ ব্যক্তিকে সালাত চোর বলে আখ্যায়িত করেছেন। (ইবনু আবী শাইবা : ১/৮৯/২)
অতঃপর রম্নকূ থেকে মাথা উঠানোর সময়ও রাসূলুলস্নাহ ﷺ তাকবীরে তাহরীমার মতোই তাঁর দু‘হাত কাঁদ (বা কান) বরাবর উঠাতেন। এ কাজকে আরবীতে ‘রাফউল ইয়াদাইন’ বলা হয়। তবে সিজদা করার সময় ‘রাফউল ইয়াদাইন’ করতেন না। (বুখারী : ৭৩৫, ইফা ৬৯৯, মুসলিম : ৩৯০)
রাসূলুলস্নাহ ﷺ তাঁর নামাযে ‘রাফউল ইয়াদাইন’ করতেন মর্মে ৩৩টির মতো সহীহ হাদীস রয়েছে। অতএব এই আমল করলে সাওয়াবও অনেক বেশি হবে- ইনশাআলস্নাহ।
ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেছেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ আজীবন রাফউল ইয়াদাইন করেছেন। অতএব বিষয়টি নিয়ে একে অপরকে কটাক্ষ না করি। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন যাবত রাফউল ইয়াদাইনে অভ্যসত্ম নয়, তারাও মনে দ্বিধা-সংকোচ না রেখে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর মহববতে এ সুন্নতটির উপর আমল করা উচিত।
রম্নকূ থেকে উঠার নাম কাওমা। রম্নকূতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ যে পরিমাণ সময় ব্যয় করতেন রম্নকূ থেকে উঠেও তিনি প্রায় সেই পরিমাণ বা তার কাছাকাছি সময় পরিপূর্ণ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
(বুখারী : ৭৯২, ইফা ৭৫৬)
রাসূলুলস্নাহ ﷺ ইমাম হয়ে বা একাকী সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে রম্নকূ থেকে মাথা উঠানোর সময় বলতেন سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهٗ অর্থাৎ যে ব্যক্তি আলস্নাহর প্রশংসা করে আলস্নাহ তার কথা শুনেছেন।
(বুখারী ৭৮৯, ইফা ৭৫৩)
রাসূলুলস্নাহ ﷺ তাঁর নামাযে ‘রাফউল ইয়াদাইন’ করতেন মর্মে ৩৩টির মতো সহীহ হাদীস রয়েছে। অতএব এই আমল করলে সাওয়াবও অনেক বেশি হবে- ইনশাআলস্নাহ।
ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেছেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ আজীবন রাফউল ইয়াদাইন করেছেন। অতএব বিষয়টি নিয়ে একে অপরকে কটাক্ষ না করি। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন যাবত রাফউল ইয়াদাইনে অভ্যসত্ম নয়, তারাও মনে দ্বিধা-সংকোচ না রেখে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর মহববতে এ সুন্নতটির উপর আমল করা উচিত।
রম্নকূ থেকে উঠার নাম কাওমা। রম্নকূতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ যে পরিমাণ সময় ব্যয় করতেন রম্নকূ থেকে উঠেও তিনি প্রায় সেই পরিমাণ বা তার কাছাকাছি সময় পরিপূর্ণ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
(বুখারী : ৭৯২, ইফা ৭৫৬)
রাসূলুলস্নাহ ﷺ ইমাম হয়ে বা একাকী সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে রম্নকূ থেকে মাথা উঠানোর সময় বলতেন سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهٗ অর্থাৎ যে ব্যক্তি আলস্নাহর প্রশংসা করে আলস্নাহ তার কথা শুনেছেন।
(বুখারী ৭৮৯, ইফা ৭৫৩)
ক. সোজা হয়ে দাড়ানো অবস্থায় ইমাম, মুক্তাদী ও একাকী সালাত আদায়কারী সকলেই বলবেন,
(ক) رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ অর্থাৎ হে আমাদের রব! তোমারই জন্য সকল প্রশংসা। (বুখারী : ৭৪৫)
(খ) رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُّبَارَكًا فِيْهِ
অর্থাৎ হে আমাদের রব! তোমারই জন্য অধিক বরকতময় ও উত্তম প্রশংসা। (বুখারী : ৭৯৯; ইফা ৭৬৩)
উপরোক্ত দু‘আটির ব্যাপারে একবার রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, আমি দেখলাম এ দু‘আ পাঠের সওয়াব (এত বেশি যে, পাঠকের আমলনামায় তা) কে আগে লিখবে এ নিয়ে ৩০ জনের অধিক ফেরেশতা প্রতিযোগিতা লেগে গেছে।
(বুখারী : ৭৯৯, ইফা ৭৬৩)
(ক) رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ অর্থাৎ হে আমাদের রব! তোমারই জন্য সকল প্রশংসা। (বুখারী : ৭৪৫)
(খ) رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُّبَارَكًا فِيْهِ
অর্থাৎ হে আমাদের রব! তোমারই জন্য অধিক বরকতময় ও উত্তম প্রশংসা। (বুখারী : ৭৯৯; ইফা ৭৬৩)
উপরোক্ত দু‘আটির ব্যাপারে একবার রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, আমি দেখলাম এ দু‘আ পাঠের সওয়াব (এত বেশি যে, পাঠকের আমলনামায় তা) কে আগে লিখবে এ নিয়ে ৩০ জনের অধিক ফেরেশতা প্রতিযোগিতা লেগে গেছে।
(বুখারী : ৭৯৯, ইফা ৭৬৩)
রাসূলুলস্নাহ ﷺ সিজদায় যাওয়ার সময় ‘আলস্নাহু আকবার’ বলতেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, মাটিতে হাটু রাখার পূর্বে হাত রাখবে। (আবু দাউদ : ৮৪০; নাসাঈ : ১০৯৪; হাদীসটি সহীহ)। অন্য হাদীসে আছে, তিনি আগে দুই হাঁটু মাটিতে রাখতেন
(আবু দাউদ : ৮৩৮, ৮৩৯)
(আবু দাউদ : ৮৩৮, ৮৩৯)
নবী করীম ﷺ সিজদারত অবস্থায় হাতের তালু মাটিতে বিছিয়ে রাখতেন। সাতটি অঙ্গের উপর ভর দিয়ে সিজদা করতেন (ক) কপাল ও নাক। (খ) দুই হাত, (গ) দুই হাঁটু। (ঘ) দুই পায়ের আঙ্গুলসমূহের অগ্রভাগ।
তিনি হাতের আঙ্গুলগুলো সোজা করে নরমভাবে কিবলামুখী করে রাখতেন। দুই পায়ের গোড়ালি একত্রে ভালোভাবে মিলিয়ে রাখতেন
(সহীহ ইবনে খু্যাইমা : ৬৫৪)
সে সময় রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর মুখমন্ডল তাঁর দুই হাতের মধ্যবর্তী স্থানে কাঁধ বা কান বরাবর রাখতেন। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। সিজদা লম্বা হবে এবং পিঠ সোজা থাকবে। রাসূলুলস্নাহ ﷺ পেট থেকে উরম্ন এতটুকু পরিমাণ দূরে রাখতেন, যাতে উক্ত ফাঁকা অংশ দিয়ে একটি বকরির বাচ্চা আসা-যাওয়া করতে পারে (মুসলিম : ৪৯৬)। তাছাড়া দুই উরম্নর মধ্যখানে একটু ফাঁকা থাকবে। পুরম্নষ ও মহিলা উভয়েই এই একই পদ্ধতিতে সিজদা করবে।
মেয়েদের আলাদা পদ্ধতিতে সিজদা করার কোন কথা সহীহ হাদীসে নেই। মেয়েদের কেউ হাত ও কনুই পর্যমত্ম বাহু জমিনে বিছিয়ে বিছানার সাথে একেবারে মিশে গিয়ে সিজদা করে। অথচ এমনভাবে সিজদা করতে আলস্নাহর রাসূল ﷺ নিষেধ করেছেন। সিজদা করার এ পদ্ধতিকে রাসূলুলস্নাহ ﷺ কুকুরের বসার সাথে তুলনা করেছেন। আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, وَلَا يَبْسُطْ أَحَدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ انْبِسَاطَ الْكَلْبِ সিজদার সময় তোমাদের কেউই যেন দুই বাহু বিছিয়ে না দেয়, যেভাবে কুকুর বিছিয়ে দেয় ।
(বুখারী : ৮২২, ইফা ৭৮৪)
তিনি হাতের আঙ্গুলগুলো সোজা করে নরমভাবে কিবলামুখী করে রাখতেন। দুই পায়ের গোড়ালি একত্রে ভালোভাবে মিলিয়ে রাখতেন
(সহীহ ইবনে খু্যাইমা : ৬৫৪)
সে সময় রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর মুখমন্ডল তাঁর দুই হাতের মধ্যবর্তী স্থানে কাঁধ বা কান বরাবর রাখতেন। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। সিজদা লম্বা হবে এবং পিঠ সোজা থাকবে। রাসূলুলস্নাহ ﷺ পেট থেকে উরম্ন এতটুকু পরিমাণ দূরে রাখতেন, যাতে উক্ত ফাঁকা অংশ দিয়ে একটি বকরির বাচ্চা আসা-যাওয়া করতে পারে (মুসলিম : ৪৯৬)। তাছাড়া দুই উরম্নর মধ্যখানে একটু ফাঁকা থাকবে। পুরম্নষ ও মহিলা উভয়েই এই একই পদ্ধতিতে সিজদা করবে।
মেয়েদের আলাদা পদ্ধতিতে সিজদা করার কোন কথা সহীহ হাদীসে নেই। মেয়েদের কেউ হাত ও কনুই পর্যমত্ম বাহু জমিনে বিছিয়ে বিছানার সাথে একেবারে মিশে গিয়ে সিজদা করে। অথচ এমনভাবে সিজদা করতে আলস্নাহর রাসূল ﷺ নিষেধ করেছেন। সিজদা করার এ পদ্ধতিকে রাসূলুলস্নাহ ﷺ কুকুরের বসার সাথে তুলনা করেছেন। আনাস বিন মালেক (রাঃ) হতে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, وَلَا يَبْسُطْ أَحَدُكُمْ ذِرَاعَيْهِ انْبِسَاطَ الْكَلْبِ সিজদার সময় তোমাদের কেউই যেন দুই বাহু বিছিয়ে না দেয়, যেভাবে কুকুর বিছিয়ে দেয় ।
(বুখারী : ৮২২, ইফা ৭৮৪)
সিজদায় রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিম্নের তাসবীহটি তিন বার পড়েছেন :
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلٰى
অর্থাৎ আমি আমার সুউচ্চ মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
সিজদা অবস্থায় বান্দা আলস্নাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। তাই রাসূলুলস্নাহ ﷺ সে সময় বেশি বেশি দু‘আ করতে বলেছেন (মুসলিম : ৪৮২)। কেননা এটি দু‘আর উত্তম মুহূর্ত। তা ফরয বা নফল যে কোন সালাতেই হোক না কেন। সিজদায় রাসূলুলস্নাহ ﷺ বহু ধরনের দু‘আ করতেন। তন্মধ্যে একটি হলো :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ ذَنْبِىْ كُلَّهٗ دِقَّهٗ وَجِلَّهٗ وَاَوَّلَهٗ وَاٰخِرَهٗ وَعَلَانِيَّتَهٗ وَسِرَّهٗ
হে আলস্নাহ! আমার সব গোনাহ তুমি ক্ষমা করে দাও, হোক না ছোট বা বড়, আগের বা পরের, প্রকাশ্য বা গোপন। (মুসলিম : ৪৮৩)
আবার কোন কোন তাসবীহ রাসূলুলস্নাহ ﷺ রম্নকূ ও সিজদাহ উভয় অবস্থাতেই পড়তেন, আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী (সা) রম্নকূ ও সিজদায় পড়তেন-
سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَ الْرُّوْحِ
অর্থাৎ আমাদের এবং সমসত্ম ফেরেশতা ও জিবরীলের প্রতিপালক অত্যমত্ম পূত-পবিত্র। (মুসলিম : ৪৮৭)
উলেস্নখ্য, রম্নকূ ও সিজদা অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত নিষেধ। তবে কুরআনে বর্ণিত দু‘আগুলো সিজদায় দু‘আ হিসেবে পড়া যেতে পারে। কোন কোন ফকীহ সিজদায় আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দু‘আ না করাই উত্তম বলে মত ব্যক্ত করেছেন। আবার কেউ কেউ সিজদাতে আরবী ছাড়া অন্য ভাষায়ও দু‘আ করার জায়েয মনে করেন।
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْاَعْلٰى
অর্থাৎ আমি আমার সুউচ্চ মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
সিজদা অবস্থায় বান্দা আলস্নাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। তাই রাসূলুলস্নাহ ﷺ সে সময় বেশি বেশি দু‘আ করতে বলেছেন (মুসলিম : ৪৮২)। কেননা এটি দু‘আর উত্তম মুহূর্ত। তা ফরয বা নফল যে কোন সালাতেই হোক না কেন। সিজদায় রাসূলুলস্নাহ ﷺ বহু ধরনের দু‘আ করতেন। তন্মধ্যে একটি হলো :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِىْ ذَنْبِىْ كُلَّهٗ دِقَّهٗ وَجِلَّهٗ وَاَوَّلَهٗ وَاٰخِرَهٗ وَعَلَانِيَّتَهٗ وَسِرَّهٗ
হে আলস্নাহ! আমার সব গোনাহ তুমি ক্ষমা করে দাও, হোক না ছোট বা বড়, আগের বা পরের, প্রকাশ্য বা গোপন। (মুসলিম : ৪৮৩)
আবার কোন কোন তাসবীহ রাসূলুলস্নাহ ﷺ রম্নকূ ও সিজদাহ উভয় অবস্থাতেই পড়তেন, আয়েশা (রাঃ) বলেন, নবী (সা) রম্নকূ ও সিজদায় পড়তেন-
سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَ الْرُّوْحِ
অর্থাৎ আমাদের এবং সমসত্ম ফেরেশতা ও জিবরীলের প্রতিপালক অত্যমত্ম পূত-পবিত্র। (মুসলিম : ৪৮৭)
উলেস্নখ্য, রম্নকূ ও সিজদা অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত নিষেধ। তবে কুরআনে বর্ণিত দু‘আগুলো সিজদায় দু‘আ হিসেবে পড়া যেতে পারে। কোন কোন ফকীহ সিজদায় আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দু‘আ না করাই উত্তম বলে মত ব্যক্ত করেছেন। আবার কেউ কেউ সিজদাতে আরবী ছাড়া অন্য ভাষায়ও দু‘আ করার জায়েয মনে করেন।
সিজদায় যে পরিমাণ সময় ব্যয় করবে এখানেও প্রায় সে পরিমাণ সময় লম্বা করবে। কারণ রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর রম্নকূ, সিজদা, দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠক এবং রম্নকূ থেকে মাথা উঠানোর পরবর্তী কিয়ামের সময়ের পরিমাণ প্রায় সমান সমান বা তার কাছাকাছি ছিল। (বুখারী ৭৯২, ইফা ৭৮৭)
এর পর ‘আলস্নাহু আকবার’ বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে এবং প্রথম সিজদার ন্যায় তাসবীহ ও দু‘আ পড়বে।
(বুখারী : ৮২৫, ইফা ৭৮৭)
এর পর ‘আলস্নাহু আকবার’ বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে এবং প্রথম সিজদার ন্যায় তাসবীহ ও দু‘আ পড়বে।
(বুখারী : ৮২৫, ইফা ৭৮৭)
প্রথম রাকআত ছাড়া পরবর্তী কোন রাকআতে আর ছানা পড়তে হয় না এবং আউযুবিলস্নাহ পড়ারও দরকার নেই। তবে প্রতি রাকআতেই সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরার শুরম্নতে ‘বিসমিলস্নাহ’ পড়া মুসত্মাহাব। আর বাকি সব নিয়ম-কানুন প্রথম রাকআতের মতোই। তবে প্রথম রাকআতের তুলনায় দ্বিতীয় রাকআতের কিরাআত একটু ছোট হতে পারে। (মুসলিম : ৪৫১)
দু’রাকআত সালাত শেষে রাসূলুলস্নাহ ﷺ ‘আলস্নাহু আকবার’ বলে সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে পুরোপুরি সোজা হয়ে বসতেন। সে সময় বাম পা বিছিয়ে এর উপর বসতেন এবং ডান পা খাড়া করে (পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে) বসতেন। বসা অবস্থায় দুই হাত উরম্নতে রাখতেন। এ কায়দার বৈঠককে ‘ইফতিরাশ’ বলা হয়। (নাসাঈ : ১২৬৪; তিরমিযী : ২৯২)।
বাম হাত বাম উরম্নর উপর রেখে আঙ্গুলগুলোকে স্বাভাবিক অবস্থায় রাখবেন। আর ডান হাত ডান উরম্নর উপর রেখে ডান হতের কনিষ্ঠা ও অনামিকা এ দুটি আঙ্গুল গুটিয়ে এনে বৃদ্ধা ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটির মাথা একত্র করে গোলাকার বৃত্তের মতো করে ধরে রাখবেন এবং শাহাদাত আঙ্গুলটি তখন মৃদুভাবে নাড়াবেন। আর মুসলস্নীর এ কাজটি শয়তানের জন্য খুবই কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
উলেস্নখ্য, আঙ্গুলটি ইশারা করেই সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে ফেলবেন না; বরং সালাম ফেরানোর পূর্ব পর্যমত্ম শাহাদাত আঙ্গুলটি খাড়া করে মৃদুভাবে নেড়ে দু‘আ করতে থাকবেন। অর্থাৎ দু‘আগুলোর অর্থের দিকে খেয়াল রাখবেন এবং আলস্নাহুম্মা শব্দ উচ্চারণ হলেই আলস্নাহর দিকে ইঙ্গিত করবেন।
উলেস্নখ্য, আঙ্গুলটি ইশারা করেই সঙ্গে সঙ্গে নামিয়ে ফেলবেন না; বরং সালাম ফেরানোর পূর্ব পর্যমত্ম শাহাদাত আঙ্গুলটি খাড়া করে মৃদুভাবে নেড়ে দু‘আ করতে থাকবেন। অর্থাৎ দু‘আগুলোর অর্থের দিকে খেয়াল রাখবেন এবং আলস্নাহুম্মা শব্দ উচ্চারণ হলেই আলস্নাহর দিকে ইঙ্গিত করবেন।
দুই সিজদার মধ্যবর্তী সময়ে বৈঠকে রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিম্নবর্ণিত দু‘আগুলো পড়তেন :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ
হে আলস্নাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি রহম কর, আমাকে হেদায়াত দাও, আমাকে সুস্থ ও নিরাপদে রাখ এবং আমাকে রিয্ক দান কর।
(আবু দাউদ : ৮৫০)
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ
হে আলস্নাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি রহম কর, আমাকে হেদায়াত দাও, আমাকে সুস্থ ও নিরাপদে রাখ এবং আমাকে রিয্ক দান কর।
(আবু দাউদ : ৮৫০)
যদি প্রথম বৈঠক হয়, তাহলে দ্বিতীয় রাকআতের পর শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়বে। আর যদি শেষ বৈঠক হয়, তাহলে প্রথমে আত্তাহিয়্যাতু, এরপর দরূদ, তারপর দু‘আ মাসূরা এবং সম্ভব হলে একাধিক দু‘আ মাসূরা পড়বে। রাসূলুলস্নাহ ﷺ এভাবেই করেছেন।
ক. প্রথমে নিম্নবর্ণিত আত্তাহিয়্যাতু পড়বে-
اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِىُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ، اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ
(আমার মৌখিক ও দৈহিক) সকল প্রশংসা, সালাত ও পবিত্র বাক্যসমূহ। হে নবী! আপনার উপর আলস্নাহর শামিত্ম, রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। আমাদের উপর এবং নেক বান্দাদের উপরও শামিত্ম অবতীর্ণ হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলস্নাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ আলস্নাহর বান্দা ও রাসূল।
(সহীহ বুখারী, হা/৮৩১; সহীহ মুসলিম, হা/৯২৪)
খ. অতঃপর রাসূলুলস্নাহ ﷺ এ দরূদটি পড়তেন, যাকে দরূদে ইবরাহীমও বলা হয়ে থাকে :
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ‐ - اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
হে আলস্নাহ! আপনি মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারের প্রতি রহমত নাযিল করম্নন, যেভাবে রহমত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম এবং তাঁর পরিবারের প্রতি। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আলস্নাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর বংশধরদের প্রতি বরকত নাযিল করম্নন, যেভাবে বরকত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর বংশধরদের প্রতি, নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। (সহীহ বুখারী, হা/৩৩৭০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮১৫৮)
গ. সবশেষে পড়বে দু‘আ মাসূরা (নিম্নবর্ণিত যে কোন এক বা একাধিক)
اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَّ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اَنْتَ فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ اِنَّكَ اَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
হে আলস্নাহ! আমি আমার নিজের উপর অনেক যুলুম করেছি, আর তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারে না। সুতরাং তুমি নিজ ক্ষমা দ্বারা আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার প্রতি রহম করো। নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল ও অতি দয়ালু। (সহীহ বুখারী, হা/৮৩৪; তিরমিযী, হা/৩৫৩১; নাসাঈ, হা/১৩০২)
اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
হে আলস্নাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি জাহান্নামের আযাব থেকে। হে আলস্নাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি কবরের আযাব থেকে, মাসীহে দাজ্জালের ফিতনা হতে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে। হে আলস্নাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি পাপ ও ঋণ হতে। (সহীহ বুখারী, হা/৮৩২; সহীহ মুসলিম, হা/১৩৫৩; আবু দাউদ, হা/৮৮০)
ক. প্রথমে নিম্নবর্ণিত আত্তাহিয়্যাতু পড়বে-
اَلتَّحِيَّاتُ لِلّٰهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَيُّهَا النَّبِىُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ، اَلسَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ اَشْهَدُ اَنْ لَّا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَاَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ
(আমার মৌখিক ও দৈহিক) সকল প্রশংসা, সালাত ও পবিত্র বাক্যসমূহ। হে নবী! আপনার উপর আলস্নাহর শামিত্ম, রহমত ও বরকত অবতীর্ণ হোক। আমাদের উপর এবং নেক বান্দাদের উপরও শামিত্ম অবতীর্ণ হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলস্নাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবুদ নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ ﷺ আলস্নাহর বান্দা ও রাসূল।
(সহীহ বুখারী, হা/৮৩১; সহীহ মুসলিম, হা/৯২৪)
খ. অতঃপর রাসূলুলস্নাহ ﷺ এ দরূদটি পড়তেন, যাকে দরূদে ইবরাহীমও বলা হয়ে থাকে :
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ‐ - اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
হে আলস্নাহ! আপনি মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারের প্রতি রহমত নাযিল করম্নন, যেভাবে রহমত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম এবং তাঁর পরিবারের প্রতি। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আলস্নাহ! মুহাম্মাদ ও তাঁর বংশধরদের প্রতি বরকত নাযিল করম্নন, যেভাবে বরকত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম ও তাঁর বংশধরদের প্রতি, নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত। (সহীহ বুখারী, হা/৩৩৭০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮১৫৮)
গ. সবশেষে পড়বে দু‘আ মাসূরা (নিম্নবর্ণিত যে কোন এক বা একাধিক)
اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَّ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلَّا اَنْتَ فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ اِنَّكَ اَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
হে আলস্নাহ! আমি আমার নিজের উপর অনেক যুলুম করেছি, আর তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারে না। সুতরাং তুমি নিজ ক্ষমা দ্বারা আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার প্রতি রহম করো। নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল ও অতি দয়ালু। (সহীহ বুখারী, হা/৮৩৪; তিরমিযী, হা/৩৫৩১; নাসাঈ, হা/১৩০২)
اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ وَاَعُوْذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ
হে আলস্নাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি জাহান্নামের আযাব থেকে। হে আলস্নাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি কবরের আযাব থেকে, মাসীহে দাজ্জালের ফিতনা হতে, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে। হে আলস্নাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি পাপ ও ঋণ হতে। (সহীহ বুখারী, হা/৮৩২; সহীহ মুসলিম, হা/১৩৫৩; আবু দাউদ, হা/৮৮০)
ডানে ও বামে اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ বলে সালাম ফিরিয়ে সালাত সমাপ্ত করবে।
সালাম দু’দিকে ফিরালেও মূলত এটাকে একটি কাজ ধরা হয়। সে জন্য একদল ফকীহ এর মতে, সবচেয়ে সহীহ পদ্ধতি হলো, ইমাম সাহেবের দ্বিতীয় সালাম ফেরানো শেষ হলে মুক্তাদিরা প্রথম সালাম শুরম্ন করবে। অতঃপর দ্বিতীয় সালাম ফেরাবে।
মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারার মাসজিদুল হারাম ও মাসজিদুন নববীসহ সে দেশের মসজিদগুলোতে মুসলিস্নরা এভাবেই সালাম ফেরায়।
সালাম দু’দিকে ফিরালেও মূলত এটাকে একটি কাজ ধরা হয়। সে জন্য একদল ফকীহ এর মতে, সবচেয়ে সহীহ পদ্ধতি হলো, ইমাম সাহেবের দ্বিতীয় সালাম ফেরানো শেষ হলে মুক্তাদিরা প্রথম সালাম শুরম্ন করবে। অতঃপর দ্বিতীয় সালাম ফেরাবে।
মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারার মাসজিদুল হারাম ও মাসজিদুন নববীসহ সে দেশের মসজিদগুলোতে মুসলিস্নরা এভাবেই সালাম ফেরায়।
ইমাম যখন সামি‘আলস্নাহু লিমান হামিদাহ বলবে মুক্তাদি তখন বলবে রববানা লাকাল হামদ। এছাড়া আলস্নাহু আকবার, তাসবীহ, তাশাহ্হুদ, দু‘আ-দরূদ ও সূরা ফাতিহা ইমাম যেমন পড়বেন, মুক্তাদিরাও হুবহু তাই পড়বে। বিশেষ করে নীরবে পঠিত সালাতে মুক্তাদিদের সূরা ফাতিহা পড়াকে অধিকাংশ আলেম ফরয বলেছেন।
জামাআতে নামাযে ইমাম ভুল করলে পেছন থেকে পুরম্নষ মুসলস্নীরা ‘সুবহানালস্নাহ’ বলবে, ‘আলস্নাহু আকবার’ বলবে না। ‘আলস্নাহু আকবার’ বলে লুকমা দেয়ার পক্ষে কোন দলীল পাওয়া যায় না। মহিলা মুসলস্নীরা ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠে মেরে তালি দিয়ে আওয়াজ করবে। নারীরা মুখে কিছুই বলবে না।
(বুখারী ১২০৩; ও মুসলিম ৪২২)
(বুখারী ১২০৩; ও মুসলিম ৪২২)
ভুলক্রমে কোন ওয়াজিব ছুটে গেলে অথবা কোন ওয়াজিব বা রূকন আদায়ের ক্ষেত্রে কোন সন্দেহ সৃষ্টি হলে অথবা কোন ওয়াজিব বা রম্নকন অতিরিক্ত হয়ে গেলে সাহু সিজদা দিতে হয়।
প্রচলিত নিয়মে শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়ার পরে ডান দিকে একবার সালাম ফিরিয়ে দুটি সাহু সিজদা দেয়া হয়। এরপর আবার তাশাহ্হুদ, দুরূদ ও দু‘আ মাসূরা পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করা হয়। কিন্তু এ পদ্ধতি সহীহ নয়।
সাহু সিজদার বিশুদ্ধ পদ্ধতি হলো শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দরূদ ও দু‘আ মাসূরা পড়া শেষ হলে আলস্নাহ আক্বার বলে দুটি সিজদা করবে। অতঃপর ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করবে। এটিই হলো বিশুদ্ধ পদ্ধতি। (বুখারী : ১২৩০)
প্রচলিত নিয়মে শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ পড়ার পরে ডান দিকে একবার সালাম ফিরিয়ে দুটি সাহু সিজদা দেয়া হয়। এরপর আবার তাশাহ্হুদ, দুরূদ ও দু‘আ মাসূরা পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করা হয়। কিন্তু এ পদ্ধতি সহীহ নয়।
সাহু সিজদার বিশুদ্ধ পদ্ধতি হলো শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দরূদ ও দু‘আ মাসূরা পড়া শেষ হলে আলস্নাহ আক্বার বলে দুটি সিজদা করবে। অতঃপর ডানে বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করবে। এটিই হলো বিশুদ্ধ পদ্ধতি। (বুখারী : ১২৩০)
ফরয সালাতের সালাম শেষে রাসূলুলস্নাহ ﷺ অনেক দু‘আ ও যিকর করেছেন। তন্মধ্যে নিম্নে কিছু যিকর উলেস্নখ করা হলো :
(ক) তিনবার আসতাগ্ফিরম্নলস্নাহ’ বলবে।
(খ) অতঃপর এ দু‘আটি পড়বে :
اَللّٰهُمَّ اَنْتَ السَّلَامُ - وَمِنْكَ السَّلَامُ - تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلَالِ وَالْاِكْرَامِ
হে আলস্নাহ! আপনি শামিত্ম, আপনার থেকেই শামিত্ম আসে। হে সম্মান ও মহত্ত্বের অধিকারী! আপনি বরকতময়। (সহীহ মুসলিম, হা/১৩৬২; নাসাঈ, হা/১৩৩৭; তিরমিযী, হা/৩০০)
(গ) রাসূলুলস্নাহ ﷺ প্রত্যেক ফরয সালাতের শেষে এ দু‘আটিও পড়তেন
لَا اِلٰهَ اِلَا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ ‐ اَللّٰهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا اَعْطَيْتَ ، وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ ، وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
আলস্নাহ ব্যতীত আর কোন প্রকৃত ইলাহ (মাবুদ) নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই। সমসত্ম প্রশংসা তাঁর জন্য নির্দিষ্ট, তিনি সবকিছুর ব্যাপারে ক্ষমতাবান। হে আলস্নাহ! তুমি যা দিতে চাও তা বাধা দেয়ার কেউ নেই এবং যা তুমি বাধা দাও তা দেয়ার কেউ নেই। আর তোমার ইচ্ছার বিরম্নদ্ধে প্রচেষ্টাকারীর প্রচেষ্টারও কোন মূল্য নেই। (সহীহ বুখারী, হা/৮৪৪; সহীহ মুসলিম, হা/১৩৬৬; আবু দাউদ, হা/১৫০৭)
(ঘ) তিন তাস্বীহ : রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক সালাতের পরে ‘সুবহানালস্নাহ’ ৩৩ বার ‘আল হাম্দুলিলস্নাহ’ ৩৩ বার এবং ‘আলস্নাহু আকবার’ ৩৩ বার পাঠ করার পর নিম্ন বর্ণিত দু‘আটি ১ বার পড়ে মোট ১০০ বার পূর্ণ করবে তার সমসত্ম সগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যাবে- যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়। (মুসলিম : ৫৯৭)
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
আলস্নাহ ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই। তিনি একক, তার কোন শরীক নেই। সমসত্ম রাজত্ব তার জন্য এবং সমসত্ম প্রশংসাও তার জন্য। আর তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
(ঙ) আয়াতুল কুরসী পাঠ : রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পড়বে, তাকে মৃত্যু ছাড়া আর কোন জিনিসই জান্নাতে পৌঁছতে বাঁধা দিতে পারবে না।
(নাসাঈ ১০০; তাবারানী ৭৫৩২)
(চ) তারপর ফজর ও মাগরিবের পরে পড়বে সূরা ইখ্লাস ৩ বার, সূরা ফালাক্ব ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার। অন্যান্য ফরয সালাতের শেষে এ ৩টি সূরা পড়বে ১ বার করে। (আবু দাঊদ ; ১৫২৩)
এছাড়াও যদি কেউ অন্য কোন যিকির-আযকার করতে চান, তাহলে তা একাকী করতে পারবে। তাছাড়া তাস্বীহ আঙ্গুলে গুণে পড়া সুন্নাত।
উলেস্নখ্য যে, ফরয সালাত শেষে রাসূলুলস্নাহ ﷺ জামাআতবদ্ধভাবে কখনো হাত তুলে দু‘আ করেননি। মক্কা, মদীনা ও আরাফাতের সর্ববৃহৎ জামাআতেও এ ধরনের দু‘আর প্রচলন নেই। অনেক উলামায়ে কেরাম এ পদ্ধতির মুনাজাতকে বিদআত বলেছেন।
(ক) তিনবার আসতাগ্ফিরম্নলস্নাহ’ বলবে।
(খ) অতঃপর এ দু‘আটি পড়বে :
اَللّٰهُمَّ اَنْتَ السَّلَامُ - وَمِنْكَ السَّلَامُ - تَبَارَكْتَ يَاذَا الْجَلَالِ وَالْاِكْرَامِ
হে আলস্নাহ! আপনি শামিত্ম, আপনার থেকেই শামিত্ম আসে। হে সম্মান ও মহত্ত্বের অধিকারী! আপনি বরকতময়। (সহীহ মুসলিম, হা/১৩৬২; নাসাঈ, হা/১৩৩৭; তিরমিযী, হা/৩০০)
(গ) রাসূলুলস্নাহ ﷺ প্রত্যেক ফরয সালাতের শেষে এ দু‘আটিও পড়তেন
لَا اِلٰهَ اِلَا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ ‐ اَللّٰهُمَّ لَا مَانِعَ لِمَا اَعْطَيْتَ ، وَلَا مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ ، وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
আলস্নাহ ব্যতীত আর কোন প্রকৃত ইলাহ (মাবুদ) নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই, সার্বভৌমত্ব একমাত্র তাঁরই। সমসত্ম প্রশংসা তাঁর জন্য নির্দিষ্ট, তিনি সবকিছুর ব্যাপারে ক্ষমতাবান। হে আলস্নাহ! তুমি যা দিতে চাও তা বাধা দেয়ার কেউ নেই এবং যা তুমি বাধা দাও তা দেয়ার কেউ নেই। আর তোমার ইচ্ছার বিরম্নদ্ধে প্রচেষ্টাকারীর প্রচেষ্টারও কোন মূল্য নেই। (সহীহ বুখারী, হা/৮৪৪; সহীহ মুসলিম, হা/১৩৬৬; আবু দাউদ, হা/১৫০৭)
(ঘ) তিন তাস্বীহ : রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক সালাতের পরে ‘সুবহানালস্নাহ’ ৩৩ বার ‘আল হাম্দুলিলস্নাহ’ ৩৩ বার এবং ‘আলস্নাহু আকবার’ ৩৩ বার পাঠ করার পর নিম্ন বর্ণিত দু‘আটি ১ বার পড়ে মোট ১০০ বার পূর্ণ করবে তার সমসত্ম সগীরা গুনাহ মাফ হয়ে যাবে- যদিও তা সমুদ্রের ফেনা পরিমাণ হয়। (মুসলিম : ৫৯৭)
لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
আলস্নাহ ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই। তিনি একক, তার কোন শরীক নেই। সমসত্ম রাজত্ব তার জন্য এবং সমসত্ম প্রশংসাও তার জন্য। আর তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
(ঙ) আয়াতুল কুরসী পাঠ : রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পড়বে, তাকে মৃত্যু ছাড়া আর কোন জিনিসই জান্নাতে পৌঁছতে বাঁধা দিতে পারবে না।
(নাসাঈ ১০০; তাবারানী ৭৫৩২)
(চ) তারপর ফজর ও মাগরিবের পরে পড়বে সূরা ইখ্লাস ৩ বার, সূরা ফালাক্ব ৩ বার, সূরা নাস ৩ বার। অন্যান্য ফরয সালাতের শেষে এ ৩টি সূরা পড়বে ১ বার করে। (আবু দাঊদ ; ১৫২৩)
এছাড়াও যদি কেউ অন্য কোন যিকির-আযকার করতে চান, তাহলে তা একাকী করতে পারবে। তাছাড়া তাস্বীহ আঙ্গুলে গুণে পড়া সুন্নাত।
উলেস্নখ্য যে, ফরয সালাত শেষে রাসূলুলস্নাহ ﷺ জামাআতবদ্ধভাবে কখনো হাত তুলে দু‘আ করেননি। মক্কা, মদীনা ও আরাফাতের সর্ববৃহৎ জামাআতেও এ ধরনের দু‘আর প্রচলন নেই। অনেক উলামায়ে কেরাম এ পদ্ধতির মুনাজাতকে বিদআত বলেছেন।
কিছু কিছু মুসলস্নী পরবর্তী সুন্নাত সালাত আদায়ের জন্য ফরযের সালাম ফেরানোর পরপরই দাঁড়িয়ে যায় - এটি ঠিক নয়। বরং এটি সুন্নাহর পরিপন্থী। এতে মুসলিস্নগণ সুন্নাহর অনুসরণ ও বড় ধরনের সওয়াবের কাজ থেকে বঞ্চিত হয়। সুন্নাত হলো ফরয আদায়ের পর একই জায়গায় বসে থেকে নীরবে একাকী মাসনূন দু‘আ, যিকর ও তাসবীহ তাহলীল পড়া। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْمَلَائِكَةُ تُصَلِّي عَلَى أَحَدِكُمْ مَا دَامَ فِي مُصَلَّاهُ الَّذِي صَلَّى فِيهِ مَا لَمْ يُحْدِثْ تَقُولُ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ
তোমাদের কেউ যদি ওযূ ভঙ্গ না হওয়া পর্যমত্ম সালাতের জায়গায় বসে থাকে, তবে তার জন্য ফেরেশতারা এ বলে দু‘আ করে যে, হে আলস্নাহ! তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও, হে আলস্নাহ! তুমি তাকে রহমত কর। (বুখারী : ৬২৬, ইফা : ৬১৯)
অতএব যারা ফরয সালাতের সালাম ফিরানোর পরপরই দাঁড়িয়ে যায় বা মসজিদ থেকে বের হয়ে যায়, তারা ফেরেশতাদের এ উত্তম দু‘আর অপূর্ব সুযোগ হারাচ্ছেন।
اَلْمَلَائِكَةُ تُصَلِّي عَلَى أَحَدِكُمْ مَا دَامَ فِي مُصَلَّاهُ الَّذِي صَلَّى فِيهِ مَا لَمْ يُحْدِثْ تَقُولُ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ
তোমাদের কেউ যদি ওযূ ভঙ্গ না হওয়া পর্যমত্ম সালাতের জায়গায় বসে থাকে, তবে তার জন্য ফেরেশতারা এ বলে দু‘আ করে যে, হে আলস্নাহ! তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও, হে আলস্নাহ! তুমি তাকে রহমত কর। (বুখারী : ৬২৬, ইফা : ৬১৯)
অতএব যারা ফরয সালাতের সালাম ফিরানোর পরপরই দাঁড়িয়ে যায় বা মসজিদ থেকে বের হয়ে যায়, তারা ফেরেশতাদের এ উত্তম দু‘আর অপূর্ব সুযোগ হারাচ্ছেন।
অনেকে জামাআতে সালাত পড়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও একাকী ফরজ সালাত পড়েন। আবার অনেক এলাকায় মসজিদের জামাআত হয়ে যাওয়ার পর আগত মুসলিস্নদের অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে একাকী ফরয সালাত আদায় করে থাকেন। অথচ দু’জন-তিনজন মিলে জামাআতে তা পড়া সুন্নাত এবং এতে জামাআতে সালাতের সাওয়াব অর্জিত হয়, যা একা সালাতের তুলনায় উত্তম বলা হয়েছে।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ أَنَّ رَجُلًا دَخَلَ الْمَسْجِدَ وَقَدْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - بِأَصْحَابِهِ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - : « مَنْ يَتَصَدَّقُ عَلَى ذَا فَيُصَلِّي مَعَهُ » ؟ فَقَامَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ فَصَلَّى مَعَهُ
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্নিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুলস্নাহ ﷺ সালাত শেষ করার পর এক লোক মসজিদে প্রবেশ করল। তখন নবী ﷺ বললেন, তোমাদের মধ্যে কেউ আছে যে, এ ব্যক্তির সাথে দাঁড়িয়ে (জামাআতের সালাত আদায় করে) সাদাকা প্রদান করার সাওয়াব অর্জন করবে? তখন এক লোক উঠে দাঁড়িয়ে আগত ব্যক্তির সাথে পুনরায় (জামাআতে) সালাত আদায় করলেন। (মুসনাদে আহমদ- ১১৪২৬ )
অতএব এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, মূল জামাআত হয়ে যাওয়ার পরও বিলম্বে আগমনকারী মুসলিস্নরা জামাআতে সালাত আদায় করবে এবং এতে অধিক ফযীলত রয়েছে। তবে দেরিতে হাজির হওয়া অভ্যাসে পরিণত করা যাবে না।
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ أَنَّ رَجُلًا دَخَلَ الْمَسْجِدَ وَقَدْ صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - بِأَصْحَابِهِ ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صلى الله عليه وسلم - : « مَنْ يَتَصَدَّقُ عَلَى ذَا فَيُصَلِّي مَعَهُ » ؟ فَقَامَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ فَصَلَّى مَعَهُ
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্নিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুলস্নাহ ﷺ সালাত শেষ করার পর এক লোক মসজিদে প্রবেশ করল। তখন নবী ﷺ বললেন, তোমাদের মধ্যে কেউ আছে যে, এ ব্যক্তির সাথে দাঁড়িয়ে (জামাআতের সালাত আদায় করে) সাদাকা প্রদান করার সাওয়াব অর্জন করবে? তখন এক লোক উঠে দাঁড়িয়ে আগত ব্যক্তির সাথে পুনরায় (জামাআতে) সালাত আদায় করলেন। (মুসনাদে আহমদ- ১১৪২৬ )
অতএব এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, মূল জামাআত হয়ে যাওয়ার পরও বিলম্বে আগমনকারী মুসলিস্নরা জামাআতে সালাত আদায় করবে এবং এতে অধিক ফযীলত রয়েছে। তবে দেরিতে হাজির হওয়া অভ্যাসে পরিণত করা যাবে না।
কোন কোন মুসলিস্ন জামায়াতে সালাত চলাকালীন সময়েও সুন্নত সালাত পড়তে থাকেন, বিশেষ করে ফজরের সালাতে, অথচ রাসূলুলস্নাহ ﷺ এরূপ করতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন,
إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ صَلاَةَ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةُ
যখন জামায়াতের ইকামত হয়ে যায়, তখন ফরয সালাত ব্যতীত আর কোন সালাত নেই।
(মুসলিম : ৭১০)
অতএব যখনই জামায়াতে সালাত চলমান দেখবেন তখনই মুসলস্নীর কর্তব্য হলো কোন প্রকার সুন্নতের নিয়ত না করে সঙ্গে সঙ্গে জামায়াতে শরীক হয়ে যাওয়া। ফজরের সালাতের বেলাও একই মাসআলা। ফজরের বাদ পড়ে যাওয়া দু‘রাকআত সুন্নাত ফরযের পরপরই আদায় করা জায়েয আছে (আবু দাউদ ১২৬৭)। তাছাড়া সূর্যোদয়ের পরও তা আদায় করা যায়।
إِذَا أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلاَ صَلاَةَ إِلاَّ الْمَكْتُوبَةُ
যখন জামায়াতের ইকামত হয়ে যায়, তখন ফরয সালাত ব্যতীত আর কোন সালাত নেই।
(মুসলিম : ৭১০)
অতএব যখনই জামায়াতে সালাত চলমান দেখবেন তখনই মুসলস্নীর কর্তব্য হলো কোন প্রকার সুন্নতের নিয়ত না করে সঙ্গে সঙ্গে জামায়াতে শরীক হয়ে যাওয়া। ফজরের সালাতের বেলাও একই মাসআলা। ফজরের বাদ পড়ে যাওয়া দু‘রাকআত সুন্নাত ফরযের পরপরই আদায় করা জায়েয আছে (আবু দাউদ ১২৬৭)। তাছাড়া সূর্যোদয়ের পরও তা আদায় করা যায়।
নিচে বর্ণিত যে কোন কাজ করলে সালাত ভঙ্গ হয়ে যায়। পরে এ সলাত আবার আদায় করতে হবে। আর তা হলো :
১. সালাতের শর্ত ভঙ্গকারী কোন কাজ করা। যেমন- পবিত্রতা নষ্ট হওয়া, সতর খুলে যাওয়া, সালাতে কিবলা পরিবর্তন করে ফেলা ইত্যাদি।
২. জেনে-শুনে স্বেচ্ছায় সালাতের কোন রম্নকন বা ওয়াজিব ছেড়ে দেয়া।
৩. স্মরণ থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বলা।
৫. ইচ্ছাকৃতভাবে কোন কিছু খাওয়া বা পান করা।
৬. বিনা কারণে বার বার বেহুদা নড়াচড়া করা।
৭. কোন রম্নকন বাদ দেয়া।
৮. সালাতে কোন রম্নকন ইচ্ছাকৃতভাবে বৃদ্ধি করা।
৯. ইচ্ছাকৃত কোন রাকআত অতিরিক্ত যোগ করা।
১০. ইচ্ছাকৃতভাবে ইমামের আগে মুক্তাদীর সালাম ফিরানো।
১. সালাতের শর্ত ভঙ্গকারী কোন কাজ করা। যেমন- পবিত্রতা নষ্ট হওয়া, সতর খুলে যাওয়া, সালাতে কিবলা পরিবর্তন করে ফেলা ইত্যাদি।
২. জেনে-শুনে স্বেচ্ছায় সালাতের কোন রম্নকন বা ওয়াজিব ছেড়ে দেয়া।
৩. স্মরণ থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে কথা বলা।
৫. ইচ্ছাকৃতভাবে কোন কিছু খাওয়া বা পান করা।
৬. বিনা কারণে বার বার বেহুদা নড়াচড়া করা।
৭. কোন রম্নকন বাদ দেয়া।
৮. সালাতে কোন রম্নকন ইচ্ছাকৃতভাবে বৃদ্ধি করা।
৯. ইচ্ছাকৃত কোন রাকআত অতিরিক্ত যোগ করা।
১০. ইচ্ছাকৃতভাবে ইমামের আগে মুক্তাদীর সালাম ফিরানো।
নিঁচে মাকরূহ অর্থাৎ অপছন্দনীয় কাজের একটি বিবরণ দেয়া হলো। সালাতের আদব রক্ষার জন্য এগুলো থেকে দূরে থাকা উচিত।
১. অনর্থক এদিক-সেদিক তাকানো।
২. আকাশের দিকে দৃষ্টি দেয়া। এ বিষয়ে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এমনকি দৃষ্টি কেড়ে নেয়ার শাসিত্মর কথাও উলেস্নখ করা হয়েছে।
৩. মাটিতে হাত বিছিয়ে সিজ্দা করা।
৪. বিনা প্রয়োজনে চোখ বন্ধ করে থাকা।
৫. সালাত থেকে অমনোযোগী করে এমন বস্ত্তর দিকে দৃষ্টি দেয়া। যেমন ছবি, কোন লেখা বা এ জাতীয় কোন কিছু।
৬.নামাযরত মুসলস্নীর সামনে এমনকিছু রাখা, যা মুসলস্নীকে সালাত থেকে অন্যমনষ্ক করে।
৭. চতুষ্পদ জন্তুর মতো হাঁটু গেঁড়ে বসা।
৮. নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে অনর্থক খেলা করা।
৯. আঙ্গুলের ভেতর আঙ্গুল ঢুকানো বা আঙ্গুল ফুটানো।
১০. খাবার নিয়ে আসলে না খেয়ে ক্ষুধার্ত অবস্থায় সালাত শুরম্ন করা।
১১. পেশাব-পায়খানার বেগ নিয়ে সালাত আদায় করা।
১২. মুসলস্নীর সামনে কিংবা ডানে থুথু নিক্ষেপ করা।
১৩. চুল, দাড়ি ও কাপড় টানাটানি করা।
১৪. সালাতে চুল বাঁধা।
১৫. মুখ ঢেকে রাখা।
১৬. ইমাম ব্যতীত অন্যের জন্য মসজিদে সালাতের স্থান নির্দিষ্ট করে নেয়া।
১৭. বৈঠকে হাতে ভর দিয়ে বসা।
১৮. হাই উঠলে মুখ হা করে রাখা।
১৯. কাতারে পৌঁছার আগেই তাড়াহুড়া করে রম্নকূ করা।
২০. কাঁচা পেঁয়াজ, রসূন ও দুর্গন্ধযুক্ত কিছু খেয়ে মসজিদে সালাত আদায় করতে যাওয়া।
২১. তন্দ্রাছন্ন হয়ে সালাত আদায় করা।
১. অনর্থক এদিক-সেদিক তাকানো।
২. আকাশের দিকে দৃষ্টি দেয়া। এ বিষয়ে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। এমনকি দৃষ্টি কেড়ে নেয়ার শাসিত্মর কথাও উলেস্নখ করা হয়েছে।
৩. মাটিতে হাত বিছিয়ে সিজ্দা করা।
৪. বিনা প্রয়োজনে চোখ বন্ধ করে থাকা।
৫. সালাত থেকে অমনোযোগী করে এমন বস্ত্তর দিকে দৃষ্টি দেয়া। যেমন ছবি, কোন লেখা বা এ জাতীয় কোন কিছু।
৬.নামাযরত মুসলস্নীর সামনে এমনকিছু রাখা, যা মুসলস্নীকে সালাত থেকে অন্যমনষ্ক করে।
৭. চতুষ্পদ জন্তুর মতো হাঁটু গেঁড়ে বসা।
৮. নিজের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে অনর্থক খেলা করা।
৯. আঙ্গুলের ভেতর আঙ্গুল ঢুকানো বা আঙ্গুল ফুটানো।
১০. খাবার নিয়ে আসলে না খেয়ে ক্ষুধার্ত অবস্থায় সালাত শুরম্ন করা।
১১. পেশাব-পায়খানার বেগ নিয়ে সালাত আদায় করা।
১২. মুসলস্নীর সামনে কিংবা ডানে থুথু নিক্ষেপ করা।
১৩. চুল, দাড়ি ও কাপড় টানাটানি করা।
১৪. সালাতে চুল বাঁধা।
১৫. মুখ ঢেকে রাখা।
১৬. ইমাম ব্যতীত অন্যের জন্য মসজিদে সালাতের স্থান নির্দিষ্ট করে নেয়া।
১৭. বৈঠকে হাতে ভর দিয়ে বসা।
১৮. হাই উঠলে মুখ হা করে রাখা।
১৯. কাতারে পৌঁছার আগেই তাড়াহুড়া করে রম্নকূ করা।
২০. কাঁচা পেঁয়াজ, রসূন ও দুর্গন্ধযুক্ত কিছু খেয়ে মসজিদে সালাত আদায় করতে যাওয়া।
২১. তন্দ্রাছন্ন হয়ে সালাত আদায় করা।
১. নফল সালাতে কুরআন মাজীদ দেখে তিলাওয়াত করা।
২. দু’পায়ের নিচে বা বাম পাশে থুথু ফেলা।
৩. ভুলবশত কোন কিছু পানাহার করা।
৪. প্রয়োজন হলে পুরম্নষদের সুবহানালস্নাহ বলা ও মেয়েদের হাত তালি দেয়া।
৫. প্রয়োজন হলে শিশু বহন করে বা কোলে নিয়ে সালাত আদায় করা।
৬. জান্নাত বা জাহান্নামের আয়াত শুনে কান্না এসে যাওয়া।
৭. সিজদায় দু‘আ করা।
৮. সালাতরত অবস্থায় সামনের কাতারের ফাঁকা বন্ধ বা কাতার সোজা করতে একটু হাঁটা বা এগিয়ে যাওয়া।
৯. অন্য কেউ না থাকলে একামত্ম প্রয়োজনে আগন্তুকের জন্য দরজা খুলে দেয়া।
১০. সালাতের সামনে দিয়ে কেউ হাঁটলে হাত বাড়িয়ে বাধা প্রদান করা।
১১. দাঁড়ানো ও বসা অবস্থায় সালাতে ঘুম এসে যাওয়া।
২. দু’পায়ের নিচে বা বাম পাশে থুথু ফেলা।
৩. ভুলবশত কোন কিছু পানাহার করা।
৪. প্রয়োজন হলে পুরম্নষদের সুবহানালস্নাহ বলা ও মেয়েদের হাত তালি দেয়া।
৫. প্রয়োজন হলে শিশু বহন করে বা কোলে নিয়ে সালাত আদায় করা।
৬. জান্নাত বা জাহান্নামের আয়াত শুনে কান্না এসে যাওয়া।
৭. সিজদায় দু‘আ করা।
৮. সালাতরত অবস্থায় সামনের কাতারের ফাঁকা বন্ধ বা কাতার সোজা করতে একটু হাঁটা বা এগিয়ে যাওয়া।
৯. অন্য কেউ না থাকলে একামত্ম প্রয়োজনে আগন্তুকের জন্য দরজা খুলে দেয়া।
১০. সালাতের সামনে দিয়ে কেউ হাঁটলে হাত বাড়িয়ে বাধা প্রদান করা।
১১. দাঁড়ানো ও বসা অবস্থায় সালাতে ঘুম এসে যাওয়া।
প্রথম পদ্ধতি : প্রথমে দুই রাকআত পড়ে সালাম ফিরিয়ে নেবেন। অতঃপর পৃথকভাবে আরেক রাকআত পড়ে রম্নকূর আগে বা পরে দু‘আ কুনূত পড়ে সিজ্দা শেষে আবার বসে সালাম ফিরাবেন।
(মুসলিম : ১২৫২)
দ্বিতীয় পদ্ধতি : প্রথম ও দ্বিতীয় রাকআত পড়বে। তবে দ্বিতীয় রাকাআতের পর তাশাহ্হুদের জন্য না বসে সরাসরি দাঁড়িয়ে যাবে। তৃতীয় রাকাআতে কিরাআত পাঠ শেষে দু‘আ কুনূত পড়ে রম্নকূতে চলে যাবে অথবা কিরাআত পাঠের পর রম্নকূ দিয়ে আবার উঠে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু‘আ কুনূত পড়ে একেবারে সিজদায় চলে যাবে। এর পর আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ ইব্রাহীম ও দু‘আ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নেবে।
আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ তিন রাকাআত বিতরের সালাত আদায় করতেন। এর মাঝে তাশাহহুদের জন্য বসতেন না। একাধারে তিন রাকাআত পড়ে শেষ রাকআতে বসতেন ও তাশাহ্হুদ পড়তেন। এভাবে উমর (রাঃ)-ও বিতর পড়তেন। (হাকেম : ১১৪০)
আমাদের দেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে ২য় রাকাআত শেষে বসে তাশাহ্হুদ পড়া হয়। রাসূলুলস্নাহ ﷺ এ পদ্ধতিতে বিতর পড়তে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, তোমরা বিতরকে মাগরিবের সালাতের মতো আদায় করো না। (দারে কুতনী ১৬৫০, পৃষ্ঠা ২/৩৪৪, সহীহ ইবনু হিববান : ২৪২৯)।
বিতর সালাত সংক্রামত্ম মাসআলা :
১. বিশুদ্ধ মতে বিতরের সালাত ওয়াজিব নয়, এ সালাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ।
২. বিতর ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১ ও ১৩ রাকাআত পর্যমত্ম পড়া যায়। (আবু দাউদ : ১৪২২, নাসাঈ : ১৭১২)
৩. এ সালাতের ওয়াক্ত হল ইশার পর থেকে ফজর উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যমত্ম। শেষ রাতে ফজরের পূর্বে আদায় করা উত্তম। কেননা সে সময় আলস্নাহ প্রথম আসমানে নেমে আসেন। আর সে সময় দু‘আ কবুল হয়ে থাকে। তবে ঘুম থেকে উঠতে না পরার আশঙ্কা থাকলে ইশার সালাতের পরই বিতর পড়ে নেয়া ভালো।
৪. এ সালাতের প্রথম রাকাআতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা কাফিরূন এবং তৃতীয় রাকাআতে সূরা ইখলাছ পড়া সুন্নাত। তবে যে কোন সূরা দিয়ে পড়া বৈধ।
৫. বিতরে দু‘আ কুনূত পড়া ওয়াজিব নয় বরং সুন্নাত। তাই কখনো কুনূত ছুটে গেলে সালাতের কোন ক্ষতি হবে না। দো’আ কুনূত কেউ না জানলে শেখার চেষ্টা করবে। এর বিকল্প হিসেবে অন্য কিছু পড়ার দরকার নেই।
৬. দু‘আ কুনূত শেষ রাকাআতে পড়তে হয়। কিরাআত শেষ করার পর রম্নকূর আগে বা রম্নকূ থেকে উঠার পর উভয় অবস্থায় দু‘আ কুনূত পড়া জায়েয। (বুখারী : ১০০১, ১০০২)
৮. দু‘আ কুনূত পড়ার শুরম্নতে ‘তাকবীরে তাহরীমা’র মতো পুনরায় দু’হাত উঠানো অর্থাৎ ‘রাফউল ইয়াদাইন করা এবং সে সময় ‘আলস্নাহু আকবার’ বলে তাকবীর দেয়ার পক্ষে কোন সহীহ হাদীস খোঁজে পাওয়া যায় না। কাজেই এটা করা সুন্নাহর পরিপন্থী।
৯. দুআ কুনূত যেহেতু দু‘আ, সেহেতু ঐ সময় হাত উত্তোলন করা মুসত্মাহাব। অনেক সাহাবী দু‘আ কুনূত পড়ার সময় বুক বরাবর দু‘হাত তুলতেন। উমার (রাঃ) জোরে জোরে দু‘আ কুনূত পড়েছেন।
(বায়হাকী : ২/২১২)
১০. দু‘আর পর দু‘হাত মুখে মুছার পক্ষে কোন সহীহ হাদীসের প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই দুআর পর হাত ছেড়ে দিতে হবে।
১১. বিতরের সালাম ফিরানোর পর অন্য তাসবীহ পড়ার আগে ‘সুবহানাল মালিকিল কুদ্দূস’ এটি শব্দ করে তিন বার বলা সুন্নাত।
১৩. ভুলে বিতর না পড়ে থাকলে পরবর্তী দিনের বেলায় এটা আদায় করা যেতে পারে।
১৪. এক রাতে দু‘বার বিতর আদায় করতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিষেধ করেছেন।
১৫. যদি কেউ বিতর পড়ে ঘুমিয়ে যায়। পরে আবার রাতে জেগে তাহাজ্জুদ পড়ে, তাহলে দ্বিতীয় বার বিতর পড়ার দরকার নেই।
১৭. দু‘আ কুনূত এক বা একাধিক পড়া যায়। হাদীসে বর্ণিত যত দু‘আ আছে সেগুলোও পড়া যেতে পারে।
প্রসিদ্ধ দুটি দু‘আ কুনূত নিচে দেয়া হলো :
দু‘আ কুনূত- ১
اَللّٰهُمَّ اهْدِنِيْ فِيْمَنْ هَدَيْتَ ‐ وَعَافِنِيْ فِيْمَنْ عَافَيْتَ ‐ وَتَوَلَّنِيْ فِيْمَنْ تَوَلَّيْتَ ‐ وَبَارِكْ لِيْ فِيْمَا أعْطَيْتَ ‐ وَقِنِيْ شَرَّ مَا قَضَيْتَ ‐ إنَّكَ تَقْضِيْ وَلَا يُقْضٰى عَلَيْكَ ‐ وَإنَّه لَا يَذِلُّ مَنْ وَّالَيْتَ ‐ وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ ‐ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ ‐ نَسْتَغْفِرُكَ وَ نَتُوْبُ اِلَيْكَ ‐ وَ صَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِىِّ
হে আলস্নাহ! আমাকে হেদায়াত দান করম্নন, যাদেরকে হেদায়াত দান করেছেন তাদের সাথে মিলিয়ে। আমাকে নিরাপত্তা দিন, যাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছেন তাদের অমত্মর্ভুক্ত করে। আর আমাকে সাহায্য করম্নন, যাদেরকে সাহায্য করেছেন তাদের সাথে মিলিয়ে। আমাকে যা কিছু দান করেছেন তার মধ্যে বরকত দিন। আর আমাকে রক্ষা করম্নন আপনার ফায়সালাকৃত অমঙ্গল থেকে। নিশ্চয় আপনার আইনই চূড়ামত্ম, আপনার উপর কারো নির্দেশ জারী হয় না। আপনি যার সহায় সে কখনো অপমানিত হয় না। আর আপনি যাকে ত্যাগ করেন সে কখনো সম্মান পায় না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি বরকতময় আর আপনি মহান, আমরা আপনার কাছেই ক্ষমা চাই। আর আমরা আপনার দিকেই ফিরে আসি, আলস্নাহ নবীর প্রতি রহমত নাযিল করম্নন। (আবু দাউদ : ১৪২৭; নাসাঈ : ১৭৪৫; ইবনে মাজাহ : ১১৭৮; তিরমিযী : ৪৬৪)
দু‘আ কুনূত- ২
اَللّٰهُمَّ إنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَ نَسْتَغْفِرُكَ وَ نُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلَانَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ - اَللّٰهُمَّ إيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَإلَيْكَ نَسْعٰى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشٰى عَذَابَكَ إنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
হে আলস্নাহ! আমরা আপনার সাহায্য চাই, আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার প্রতি ঈমান রাখি, আপনার উপর ভরসা করি, আর আপনার উত্তম গুণগান বর্ণনা করি, আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং আপনার অকৃজ্ঞতা প্রকাশ করি না। যে আপনার নাফরমানী করে (গোনাহের কাজ করে) আমরা তাকে ত্যাগ করি ও বর্জন করে চলি। হে আলস্নাহ! আমরা কেবল আপনারই ইবাদাত করি, আপনার জন্যই সালাত পড়ি, আপনাকেই সিজদা করি এবং আপনার সমত্মুষ্টি তালাশের জন্য দ্রম্নত অগ্রসর হই। আর আমরা আপনার রহমতের আশা রাখি, আর আপনার আযাবকে ভয় করি, নিশ্চয় আপনার আযাব কাফিরদের জন্য অবধারিত।
(তাবারানী : ৭৫০; ইবনে খুযাইমা : ১১০০)
(মুসলিম : ১২৫২)
দ্বিতীয় পদ্ধতি : প্রথম ও দ্বিতীয় রাকআত পড়বে। তবে দ্বিতীয় রাকাআতের পর তাশাহ্হুদের জন্য না বসে সরাসরি দাঁড়িয়ে যাবে। তৃতীয় রাকাআতে কিরাআত পাঠ শেষে দু‘আ কুনূত পড়ে রম্নকূতে চলে যাবে অথবা কিরাআত পাঠের পর রম্নকূ দিয়ে আবার উঠে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু‘আ কুনূত পড়ে একেবারে সিজদায় চলে যাবে। এর পর আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ ইব্রাহীম ও দু‘আ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নেবে।
আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ তিন রাকাআত বিতরের সালাত আদায় করতেন। এর মাঝে তাশাহহুদের জন্য বসতেন না। একাধারে তিন রাকাআত পড়ে শেষ রাকআতে বসতেন ও তাশাহ্হুদ পড়তেন। এভাবে উমর (রাঃ)-ও বিতর পড়তেন। (হাকেম : ১১৪০)
আমাদের দেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে ২য় রাকাআত শেষে বসে তাশাহ্হুদ পড়া হয়। রাসূলুলস্নাহ ﷺ এ পদ্ধতিতে বিতর পড়তে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, তোমরা বিতরকে মাগরিবের সালাতের মতো আদায় করো না। (দারে কুতনী ১৬৫০, পৃষ্ঠা ২/৩৪৪, সহীহ ইবনু হিববান : ২৪২৯)।
বিতর সালাত সংক্রামত্ম মাসআলা :
১. বিশুদ্ধ মতে বিতরের সালাত ওয়াজিব নয়, এ সালাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ।
২. বিতর ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১ ও ১৩ রাকাআত পর্যমত্ম পড়া যায়। (আবু দাউদ : ১৪২২, নাসাঈ : ১৭১২)
৩. এ সালাতের ওয়াক্ত হল ইশার পর থেকে ফজর উদয় হওয়ার পূর্ব পর্যমত্ম। শেষ রাতে ফজরের পূর্বে আদায় করা উত্তম। কেননা সে সময় আলস্নাহ প্রথম আসমানে নেমে আসেন। আর সে সময় দু‘আ কবুল হয়ে থাকে। তবে ঘুম থেকে উঠতে না পরার আশঙ্কা থাকলে ইশার সালাতের পরই বিতর পড়ে নেয়া ভালো।
৪. এ সালাতের প্রথম রাকাআতে সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা কাফিরূন এবং তৃতীয় রাকাআতে সূরা ইখলাছ পড়া সুন্নাত। তবে যে কোন সূরা দিয়ে পড়া বৈধ।
৫. বিতরে দু‘আ কুনূত পড়া ওয়াজিব নয় বরং সুন্নাত। তাই কখনো কুনূত ছুটে গেলে সালাতের কোন ক্ষতি হবে না। দো’আ কুনূত কেউ না জানলে শেখার চেষ্টা করবে। এর বিকল্প হিসেবে অন্য কিছু পড়ার দরকার নেই।
৬. দু‘আ কুনূত শেষ রাকাআতে পড়তে হয়। কিরাআত শেষ করার পর রম্নকূর আগে বা রম্নকূ থেকে উঠার পর উভয় অবস্থায় দু‘আ কুনূত পড়া জায়েয। (বুখারী : ১০০১, ১০০২)
৮. দু‘আ কুনূত পড়ার শুরম্নতে ‘তাকবীরে তাহরীমা’র মতো পুনরায় দু’হাত উঠানো অর্থাৎ ‘রাফউল ইয়াদাইন করা এবং সে সময় ‘আলস্নাহু আকবার’ বলে তাকবীর দেয়ার পক্ষে কোন সহীহ হাদীস খোঁজে পাওয়া যায় না। কাজেই এটা করা সুন্নাহর পরিপন্থী।
৯. দুআ কুনূত যেহেতু দু‘আ, সেহেতু ঐ সময় হাত উত্তোলন করা মুসত্মাহাব। অনেক সাহাবী দু‘আ কুনূত পড়ার সময় বুক বরাবর দু‘হাত তুলতেন। উমার (রাঃ) জোরে জোরে দু‘আ কুনূত পড়েছেন।
(বায়হাকী : ২/২১২)
১০. দু‘আর পর দু‘হাত মুখে মুছার পক্ষে কোন সহীহ হাদীসের প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই দুআর পর হাত ছেড়ে দিতে হবে।
১১. বিতরের সালাম ফিরানোর পর অন্য তাসবীহ পড়ার আগে ‘সুবহানাল মালিকিল কুদ্দূস’ এটি শব্দ করে তিন বার বলা সুন্নাত।
১৩. ভুলে বিতর না পড়ে থাকলে পরবর্তী দিনের বেলায় এটা আদায় করা যেতে পারে।
১৪. এক রাতে দু‘বার বিতর আদায় করতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ নিষেধ করেছেন।
১৫. যদি কেউ বিতর পড়ে ঘুমিয়ে যায়। পরে আবার রাতে জেগে তাহাজ্জুদ পড়ে, তাহলে দ্বিতীয় বার বিতর পড়ার দরকার নেই।
১৭. দু‘আ কুনূত এক বা একাধিক পড়া যায়। হাদীসে বর্ণিত যত দু‘আ আছে সেগুলোও পড়া যেতে পারে।
প্রসিদ্ধ দুটি দু‘আ কুনূত নিচে দেয়া হলো :
দু‘আ কুনূত- ১
اَللّٰهُمَّ اهْدِنِيْ فِيْمَنْ هَدَيْتَ ‐ وَعَافِنِيْ فِيْمَنْ عَافَيْتَ ‐ وَتَوَلَّنِيْ فِيْمَنْ تَوَلَّيْتَ ‐ وَبَارِكْ لِيْ فِيْمَا أعْطَيْتَ ‐ وَقِنِيْ شَرَّ مَا قَضَيْتَ ‐ إنَّكَ تَقْضِيْ وَلَا يُقْضٰى عَلَيْكَ ‐ وَإنَّه لَا يَذِلُّ مَنْ وَّالَيْتَ ‐ وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ ‐ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ ‐ نَسْتَغْفِرُكَ وَ نَتُوْبُ اِلَيْكَ ‐ وَ صَلَّى اللهُ عَلَى النَّبِىِّ
হে আলস্নাহ! আমাকে হেদায়াত দান করম্নন, যাদেরকে হেদায়াত দান করেছেন তাদের সাথে মিলিয়ে। আমাকে নিরাপত্তা দিন, যাদেরকে নিরাপত্তা দিয়েছেন তাদের অমত্মর্ভুক্ত করে। আর আমাকে সাহায্য করম্নন, যাদেরকে সাহায্য করেছেন তাদের সাথে মিলিয়ে। আমাকে যা কিছু দান করেছেন তার মধ্যে বরকত দিন। আর আমাকে রক্ষা করম্নন আপনার ফায়সালাকৃত অমঙ্গল থেকে। নিশ্চয় আপনার আইনই চূড়ামত্ম, আপনার উপর কারো নির্দেশ জারী হয় না। আপনি যার সহায় সে কখনো অপমানিত হয় না। আর আপনি যাকে ত্যাগ করেন সে কখনো সম্মান পায় না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি বরকতময় আর আপনি মহান, আমরা আপনার কাছেই ক্ষমা চাই। আর আমরা আপনার দিকেই ফিরে আসি, আলস্নাহ নবীর প্রতি রহমত নাযিল করম্নন। (আবু দাউদ : ১৪২৭; নাসাঈ : ১৭৪৫; ইবনে মাজাহ : ১১৭৮; তিরমিযী : ৪৬৪)
দু‘আ কুনূত- ২
اَللّٰهُمَّ إنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَ نَسْتَغْفِرُكَ وَ نُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلَانَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ - اَللّٰهُمَّ إيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَإلَيْكَ نَسْعٰى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشٰى عَذَابَكَ إنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
হে আলস্নাহ! আমরা আপনার সাহায্য চাই, আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার প্রতি ঈমান রাখি, আপনার উপর ভরসা করি, আর আপনার উত্তম গুণগান বর্ণনা করি, আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং আপনার অকৃজ্ঞতা প্রকাশ করি না। যে আপনার নাফরমানী করে (গোনাহের কাজ করে) আমরা তাকে ত্যাগ করি ও বর্জন করে চলি। হে আলস্নাহ! আমরা কেবল আপনারই ইবাদাত করি, আপনার জন্যই সালাত পড়ি, আপনাকেই সিজদা করি এবং আপনার সমত্মুষ্টি তালাশের জন্য দ্রম্নত অগ্রসর হই। আর আমরা আপনার রহমতের আশা রাখি, আর আপনার আযাবকে ভয় করি, নিশ্চয় আপনার আযাব কাফিরদের জন্য অবধারিত।
(তাবারানী : ৭৫০; ইবনে খুযাইমা : ১১০০)
জানাযার সালাতে ৪টি তাকবীর দিতে হয়। মনে মনে নিয়ত করে প্রথম তাকবীর দিয়ে হাত বাঁধবেন। অতঃপর ‘আউযুবিলস্নাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম’ ও ‘বিস্মিলস্নাহির রাহমানির রাহীম’ পড়ে সূরা ফাতিহা পড়বেন। এরপর অন্য একটি সূরা পড়বেন। তারপর দ্বিতীয় তাকবীর দিয়ে নামাযে পঠিত দরূদ পড়বেন। অতঃপর তৃতীয় তাকবীর দিয়ে নিম্নের যে কোন একটি অথবা দুটি দু‘আ-ই পড়বেন। সর্বশেষ চতুর্থ তাকবীর দিয়ে সালাম ফিরিয়ে জানাযার সালাত শেষ করবেন।
(ক) ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه و سلم قَرَأَ عَلَى الْجَنَازَةِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ
নবী ﷺ জানাযার সালাতে সূরা ফাতিহা পড়তেন। (তিরমিযী : ১০২৬)
(খ) তালহা ইবনে আবদুলস্নাহ ইবনে আউফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
صَلَّيْتُ خَلْفَ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَلَى جَنَازَةٍ فَقَرَأَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ قَالَ لِيَعْلَمُوا أَنَّهَا سُنَّةٌ **********
আমি আব্দুলস্নাহ ইবনে আববাস (রাঃ) এর পেছনে জানাযার সালাত আদায় করেছি। তাতে তিনি সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন এবং জানাযা শেষে বললেন, লোকেরা যেন জেনে নেয় যে, জানাযার সালাতের এই পদ্ধতি।
(বুখারী : ১৩৩৫, ইফা : ১২৫৪)।
উলেস্নখ্য, কেউ কেউ প্রথম তাকবীরের পর শুধু ছানা (অর্থাৎ সুবহানাকা আলস্নাহুম্মা......) পড়েন; অথচ এর সপক্ষে কোন সহীহ হাদীস খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই প্রথম তাকবীরের পর আউযুবিলস্নাহ ও বিসমিলস্নাহ এবং পরে সূরা ফাতিহা পড়বে; কিন্তু ছানা পড়বে না।
জানাযার দু‘আ- ১
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ যখন জানাযার সালাত পড়াতেন, তখন এই দু‘আ পড়তেন :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَ ذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا ‐ اَللّٰهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهٗ مِنَّا فَأَحْيِهٖ عَلَى الْاِسْلَامِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهٗ مِنَّا فَتَوَفَّهٗ عَلَى الْاِيْمَانِ -‐ اَللّٰهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَهٗ وَلَا تُضِلَّنَا بَعْدَهٗ
হে আলস্নাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিত-অনুপস্থিত, ছোট-বড়, নর-নারী সকলকে ক্ষমা করে দাও। হে আলস্নাহ! আমাদের মাঝে যাদেরকে জীবিত রাখো,তাদেরকে ইসলামের উপর জীবিত রাখো, আর যাদেরকে মৃত্যু দান কর, তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান করো। হে আলস্নাহ! আমাদেরকে তার নেকী হতে বঞ্চিত করো না এবং তার মৃত্যুর পর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করো না। (আবু দাউদ, হা/৩২০৩; ইবনে মাজাহ, হা/১৪৯৮; তিরমিযী, হা/১০২৪; মিশকাত, হা/১৬৭৫)
জানাযার দু‘আ- ২
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهٗ وَارْحَمْهُ وَعَافِهٖ وَاعْفُ عَنْهُ وَأَكْرِمْ نُزُلَهٗ وَوَسِّعْ مَدْخَلَهٗ وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّهٖ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْاَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِهٖ وَأَهْلًا خَيْرًا مِّنْ أَهْلِهٖ وَزَوْجًا خَيْرًا مِّنْ زَوْجِهٖ وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَ مِنْ عَذَابِ النَّارِ
হে আলস্নাহ! তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও, তার উপর রহম করো, তাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দান করো, তাকে ক্ষমা করো, মর্যাদার সাথে তার আপ্যায়ণ করো, তার বাসস্থান প্রশসত্ম করো। তুমি তাকে ধৌত করে দাও পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা। তুমি তাকে পাপ হতে এমনভাবে পরিষ্কার করো, যেমনভাবে সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। তাকে দুনিয়ার ঘরের পরিবর্তে উত্তম ঘর দান করো। তাকে দুনিয়ার পরিবারের চেয়ে উত্তম পরিবার দান করো এবং তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। আর তাকে কবরের আযাব এবং জাহান্নামের আযাব হতে বাঁচাও। (সহীহ মুসলিম, হা/২২৭৬; নাসাঈ, হা/১৯৮৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬০২১; মিশকাত, হা/১৬৫৫)
জানাযার বিষয়ে কয়েকটি মাসআলা
১. জানাযার সালাত ফরযে কেফায়াহ।
২. ওযু করে সতর ঢেকে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াবে।
৪. মাইয়্যেতের মাথা উত্তর দিকে রাখবে।
৫. চতুর্থ তাকবীরের পর রাসূলুলস্নাহ ﷺ একটু থামতেন, অতঃপর সালাম ফিরাতেন।
৬.দু’দিকে সালাম ফিরানোর যেমন নিয়ম রয়েছে, তেমনই একদিকে তথা শুধু ডান পাশে সালাম ফিরানোও জায়েয। এর পক্ষেও সহীহ দলীল রয়েছে।
৭. প্রতি তাকবীরের পর দু’হাত কাঁধ বা কান বরাবর উঠানো জায়েয। তবে এটার সবপক্ষের হাদীসকে কেউ কেউ দুর্বল বলেছেন। আবার অনেকে বিশুদ্ধও বলেছেন।
৮. শিশুদের জানাযা হলে দু‘আর শেষে এটুকু বাড়িয়ে পড়বে-
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سَلَفًا وَفَرَطًا وَذُخْرًا وَاَجْرًا
হে আলস্নাহ! তুমি এ শিশুকে আমাদের জন্য পূর্ববর্তী ও অগ্রগামী এবং পরকালের ধনভান্ডার ও পুরস্কার বানিয়ে দাও।
৯. পর্দার সাথে মেয়েরাও পুরম্নষদের পেছনে জানাযার সালাত পড়তে পারে। মক্কা ও মদীনায় এখনো এ রীতি চালু আছে।
১০. জানাযা পুরো না পেলে যতটুক পায় ততটুকু পড়ে ইমামের সাথে সালাম ফিরাবে।
১১. জানাযায় ইমাম যা যা পড়বেন, পেছনে মুক্তাদিরাও তা-ই পড়বেন। অর্থাৎ মুক্তাদিরাও তাকবীর বলবেন এবং দু‘আগুলো পড়বেন।
১২. নিজের সমত্মান বা আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে কেউ জানাযার ইমামতি করাকে ফকীহগণ উত্তম বলে মনে করেন। তবে এর পক্ষে সরাসরি কোন হাদীস পাওয়া যায় না।
১৩. জানাযার পর মাইয়্যেতের মুখ দেখতে হাদীসে কোন নিষেধাজ্ঞা আসেনি।
১৪. একাধিক মাইয়্যেতের জানাযা একসঙ্গে দেয়া জায়েয।
১. কাতারগুলো বেজোড়সংখ্যক হতে হবে এ ধরনের কোন কথা হাদীসে পাওয়া যায় না।**
৩. পুরম্নষ হলে ইমাম দাঁড়াবেন লাশের মাথা বরাবর আর মহিলা হলে দাঁড়াবেন কোমর বরাবর।
৫. জানাযর সালাতের পর সম্মিলিত কোন হাত তzুল মুনাজাত নেই। তবে লাশ দাফনের পর মাইয়্যেতের জন্য ইসতিগফার করা সুন্নত।
(ক) ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন,
أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه و سلم قَرَأَ عَلَى الْجَنَازَةِ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ
নবী ﷺ জানাযার সালাতে সূরা ফাতিহা পড়তেন। (তিরমিযী : ১০২৬)
(খ) তালহা ইবনে আবদুলস্নাহ ইবনে আউফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
صَلَّيْتُ خَلْفَ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَلَى جَنَازَةٍ فَقَرَأَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ قَالَ لِيَعْلَمُوا أَنَّهَا سُنَّةٌ **********
আমি আব্দুলস্নাহ ইবনে আববাস (রাঃ) এর পেছনে জানাযার সালাত আদায় করেছি। তাতে তিনি সূরা ফাতিহা পাঠ করলেন এবং জানাযা শেষে বললেন, লোকেরা যেন জেনে নেয় যে, জানাযার সালাতের এই পদ্ধতি।
(বুখারী : ১৩৩৫, ইফা : ১২৫৪)।
উলেস্নখ্য, কেউ কেউ প্রথম তাকবীরের পর শুধু ছানা (অর্থাৎ সুবহানাকা আলস্নাহুম্মা......) পড়েন; অথচ এর সপক্ষে কোন সহীহ হাদীস খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই প্রথম তাকবীরের পর আউযুবিলস্নাহ ও বিসমিলস্নাহ এবং পরে সূরা ফাতিহা পড়বে; কিন্তু ছানা পড়বে না।
জানাযার দু‘আ- ১
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ যখন জানাযার সালাত পড়াতেন, তখন এই দু‘আ পড়তেন :
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَ ذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا ‐ اَللّٰهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهٗ مِنَّا فَأَحْيِهٖ عَلَى الْاِسْلَامِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهٗ مِنَّا فَتَوَفَّهٗ عَلَى الْاِيْمَانِ -‐ اَللّٰهُمَّ لَا تَحْرِمْنَا أَجْرَهٗ وَلَا تُضِلَّنَا بَعْدَهٗ
হে আলস্নাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিত-অনুপস্থিত, ছোট-বড়, নর-নারী সকলকে ক্ষমা করে দাও। হে আলস্নাহ! আমাদের মাঝে যাদেরকে জীবিত রাখো,তাদেরকে ইসলামের উপর জীবিত রাখো, আর যাদেরকে মৃত্যু দান কর, তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান করো। হে আলস্নাহ! আমাদেরকে তার নেকী হতে বঞ্চিত করো না এবং তার মৃত্যুর পর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করো না। (আবু দাউদ, হা/৩২০৩; ইবনে মাজাহ, হা/১৪৯৮; তিরমিযী, হা/১০২৪; মিশকাত, হা/১৬৭৫)
জানাযার দু‘আ- ২
اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهٗ وَارْحَمْهُ وَعَافِهٖ وَاعْفُ عَنْهُ وَأَكْرِمْ نُزُلَهٗ وَوَسِّعْ مَدْخَلَهٗ وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَنَقِّهٖ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْاَبْيَضُ مِنَ الدَّنَسِ وَأَبْدِلْهُ دَارًا خَيْرًا مِّنْ دَارِهٖ وَأَهْلًا خَيْرًا مِّنْ أَهْلِهٖ وَزَوْجًا خَيْرًا مِّنْ زَوْجِهٖ وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَ مِنْ عَذَابِ النَّارِ
হে আলস্নাহ! তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও, তার উপর রহম করো, তাকে পূর্ণ নিরাপত্তা দান করো, তাকে ক্ষমা করো, মর্যাদার সাথে তার আপ্যায়ণ করো, তার বাসস্থান প্রশসত্ম করো। তুমি তাকে ধৌত করে দাও পানি, বরফ ও শিশির দ্বারা। তুমি তাকে পাপ হতে এমনভাবে পরিষ্কার করো, যেমনভাবে সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিষ্কার করা হয়। তাকে দুনিয়ার ঘরের পরিবর্তে উত্তম ঘর দান করো। তাকে দুনিয়ার পরিবারের চেয়ে উত্তম পরিবার দান করো এবং তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। আর তাকে কবরের আযাব এবং জাহান্নামের আযাব হতে বাঁচাও। (সহীহ মুসলিম, হা/২২৭৬; নাসাঈ, হা/১৯৮৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬০২১; মিশকাত, হা/১৬৫৫)
জানাযার বিষয়ে কয়েকটি মাসআলা
১. জানাযার সালাত ফরযে কেফায়াহ।
২. ওযু করে সতর ঢেকে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াবে।
৪. মাইয়্যেতের মাথা উত্তর দিকে রাখবে।
৫. চতুর্থ তাকবীরের পর রাসূলুলস্নাহ ﷺ একটু থামতেন, অতঃপর সালাম ফিরাতেন।
৬.দু’দিকে সালাম ফিরানোর যেমন নিয়ম রয়েছে, তেমনই একদিকে তথা শুধু ডান পাশে সালাম ফিরানোও জায়েয। এর পক্ষেও সহীহ দলীল রয়েছে।
৭. প্রতি তাকবীরের পর দু’হাত কাঁধ বা কান বরাবর উঠানো জায়েয। তবে এটার সবপক্ষের হাদীসকে কেউ কেউ দুর্বল বলেছেন। আবার অনেকে বিশুদ্ধও বলেছেন।
৮. শিশুদের জানাযা হলে দু‘আর শেষে এটুকু বাড়িয়ে পড়বে-
اَللّٰهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا سَلَفًا وَفَرَطًا وَذُخْرًا وَاَجْرًا
হে আলস্নাহ! তুমি এ শিশুকে আমাদের জন্য পূর্ববর্তী ও অগ্রগামী এবং পরকালের ধনভান্ডার ও পুরস্কার বানিয়ে দাও।
৯. পর্দার সাথে মেয়েরাও পুরম্নষদের পেছনে জানাযার সালাত পড়তে পারে। মক্কা ও মদীনায় এখনো এ রীতি চালু আছে।
১০. জানাযা পুরো না পেলে যতটুক পায় ততটুকু পড়ে ইমামের সাথে সালাম ফিরাবে।
১১. জানাযায় ইমাম যা যা পড়বেন, পেছনে মুক্তাদিরাও তা-ই পড়বেন। অর্থাৎ মুক্তাদিরাও তাকবীর বলবেন এবং দু‘আগুলো পড়বেন।
১২. নিজের সমত্মান বা আত্মীয়-স্বজনের পক্ষ থেকে কেউ জানাযার ইমামতি করাকে ফকীহগণ উত্তম বলে মনে করেন। তবে এর পক্ষে সরাসরি কোন হাদীস পাওয়া যায় না।
১৩. জানাযার পর মাইয়্যেতের মুখ দেখতে হাদীসে কোন নিষেধাজ্ঞা আসেনি।
১৪. একাধিক মাইয়্যেতের জানাযা একসঙ্গে দেয়া জায়েয।
১. কাতারগুলো বেজোড়সংখ্যক হতে হবে এ ধরনের কোন কথা হাদীসে পাওয়া যায় না।**
৩. পুরম্নষ হলে ইমাম দাঁড়াবেন লাশের মাথা বরাবর আর মহিলা হলে দাঁড়াবেন কোমর বরাবর।
৫. জানাযর সালাতের পর সম্মিলিত কোন হাত তzুল মুনাজাত নেই। তবে লাশ দাফনের পর মাইয়্যেতের জন্য ইসতিগফার করা সুন্নত।
ঈদের সালাত আমাদের দেশে বেশির ভাগ এলাকায় অতিরিক্ত ৬ তাকবীরের সাথে আদায় করা হয়। কিন্তু রাসূলুলস্নাহ ﷺ অতিরিক্ত ১২ তাকবীরের সাথে ঈদের সালাত আদায় করতেন। এ মর্মে হাদীস বর্ণনা করেছেন আয়েশা (রাঃ) এবং ইবনে আববাস (রাঃ)। আর তা হলো, প্রথম রাকআতের শুরম্নতে অতিরিক্ত ৭ তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকআতের শুরম্নতে অতিরিক্ত ৫ তাকবীর। সর্বমোট ১২ তাকবীর।
আবু দাউদ : ১১৪৯; বায়হাকী : ৩/৪০৭।
এটাই হলো উত্তম পদ্ধতি। তাছাড়া মক্কা, মদীনাসহ পৃথিবীর বহু দেশে ঈদের সালাত ১২ তাকবীরে আদায় করে থাকে।
উক্ত আমলের পক্ষে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা অনেক বেশি এবং সনদের দিক থেকেও সর্বাধিক বিশুদ্ধ। তাই অতিরিক্ত ১২ তাকবীরের সাথে সালাত আদায় করা উচিত।
আবু দাউদ : ১১৪৯; বায়হাকী : ৩/৪০৭।
এটাই হলো উত্তম পদ্ধতি। তাছাড়া মক্কা, মদীনাসহ পৃথিবীর বহু দেশে ঈদের সালাত ১২ তাকবীরে আদায় করে থাকে।
উক্ত আমলের পক্ষে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা অনেক বেশি এবং সনদের দিক থেকেও সর্বাধিক বিশুদ্ধ। তাই অতিরিক্ত ১২ তাকবীরের সাথে সালাত আদায় করা উচিত।
অনেক মানুষ মাযহাবের মতের বিপরীত হলে অনেক ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ হাদীস পরিত্যাগ করেন। কারণ, ঐ হাদীসটিকে মেনে নেয়ার মানেই হলো এ কথা স্বীকার করে নেয়া যে, তার মাযহাবের ইমাম সিদ্ধামত্ম প্রদানের ক্ষেত্রে ভুল করেছেন। আর তাদের মতে এরূপ চিমত্মাধারা বেয়াদবি।
অথচ রাসূলুলস্নাহ ﷺ ব্যতীত অন্য যেকোন মানুষের কথা গৃহীত হতে পারে আবার পরিত্যাজ্যও হতে পারে। সুতরাং যদি কেউ এমন মতামত পেশ করে যা সহীহ হাদীস বিরোধী, তাহলে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর বক্তব্যের উপর ইমামের মতকে প্রাধান্য দেয়া স্বয়ং ইমামদের অবস্থানেরই সম্পূর্ণ বিপরীত।
এ ব্যাপারে ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর কিছু কথা এখানে উলেস্নখ করা হলো। কথাগুলো হচ্ছে,
إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ
১. হাদীস যখন সহীহ হবে সেটাই হবে আমার মাযহাব। অর্থাৎ যখন কোন সহীহ হাদীস পাওয়া যাবে তখন সেটাই আমার মতামত বলে বিবেচিত হবে। [রাদ্দুল মুহতার, ১/৪৬২ পৃঃ; ফতওয়ায়ে শামী, ১/৪৬ পৃঃ।]
لَا يَحِلُّ لِاَحَدٍ اَنْ يَّأْخُذَ بِقَوْلِنَا مَا لَمْ يَعْلَمْ مِّنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ
২. আমরা কোথা থেকে কথাটি নিলাম এটা না জানা পর্যমত্ম কারো জন্য আমাদের কথা গ্রহণ করা বৈধ নয়। [বাহরুর রায়িক ৬/২৯৩ পৃঃ, মুকাদ্দমাতুল হেদায়াহ, ১/৯৩ পৃঃ।]
حَرَامٌ عَلٰى مَنْ لَّمْ يَعْرِفْ دَلِيْلِيْ اَنْ يُّفْتِيَ بِكَلَامِيْ
৩. যে আমার কথার প্রমাণ জানে না তার পক্ষে আমার কথার দ্বারা ফতওয়া প্রদান করা হারাম। [আস সালাফিয়্যুন ওয়াল আইম্মাহ, ১/২৯ পৃঃ; হুজ্জাতুলস্নাহিল বালিগাহ, হা/১/৩৩১।]
وَيْحَكَ يَا يَعْقُوْبُ ( هُوَ أَبُوْ يُوْسُفَ ) لَا تَكْتُبْ كُلَّ مَا تَسْمَعُ مَتٰى فَإِنِّيْ قَدْ أَرٰى الرَّأْيَ الْيَوْمَ وَأَتْرُكُهٗ غَدًا وَأَرٰى الرَّأْيَ غَدًا وَأَتْرُكُهٗ بَعْدَ غَدٍ
৪. হে হতভাগা ইয়াকুব! (আবু ইউসুফ) তুমি আমার থেকে যা শোন তা লেখো না, কেননা আমি আজ এক মত পোষণ করি আর আগামীকাল তা পরিহার করি। আবার আগামীকাল এক মত পোষণ করি আর পরশুদিন তা পরিত্যাগ করি। [সুনানে দারেমী, হা/১৯৭; তারীখে বাগদাদ ৭/৪০৩ পৃষ্ঠা।]
اِذَا قُلْتُ قَوْلًا يُخَالِفُ كِتَابَ اللهِ تَعَالٰى وَخَبَرَ الرَّسُوْلِ فَاتْرُكُوْا قَوْلِيْ
৫. যখন আমি এমন কথা বলি, যা আলস্নাহ তা‘আলার কিতাব ও রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর হাদীস বিরোধী তাহলে তোমরা আমার কথা পরিত্যাগ করবে। [ইকাযু হুমামি উলিল আবসার- ১/৬২।]
سُئِلَ اَبُوْ حَنِيْفَةَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى اِذَا قُلْتَ قَوْلًا وَكِتَابُ اللهِ يُخَالِفُهٗ قَالَ اَتْرُكُوْا قَوْلِيْ بِكِتَابِ اللهِ فَقِيْلَ اِذَا كَانَ خَبْرُ رَسُوْلِ اللهِ يُخَالِفُهٗ قَالَ اُتْرُكُوْا قَوْلِيْ بِخَبْرِ رَسُوْلِ اللهِ فَقِيْلَ اِذَا كَانَ قَوْلُ الصَّحَابَةِ يُخَالِفُهٗ قَالَ اُتْرُكُوْا قَوْلِيْ بِقَوْلِ الصَّحَابَةِ
৬. ইমাম আবু হানীফা (রহ.) কে বলা হলো আপনি যখন কোন কথা বলেন, আর পবিত্র কুরআন তার বিরোধী হয় তাহলে কী করা হবে? তিনি উত্তরে বললেন, আপনারা কুরআনের মোকাবেলায় আমার কথা প্রত্যাখ্যান করম্নন। তারপর বলা হলো, আপনার কথা যদি হাদীসের বিরোধী হয়? তখন উত্তর দিলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর হাদীসের মোকাবেলায় আমার কথা পরিহার করম্নন। তারপর জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার কথা যদি সাহাবীগণের কথার বিরোধী হয়? তখন উত্তর দিলেন, সাহাবীগণের কথার মোকাবেলায় আমার কথা পরিত্যাগ করম্নন। [ঈকদুল জীদ, ৫৩ পৃঃ।]
اِذَا قُلْتُ قَوْلًا فَاَعرِضُوْا عَلٰى كِتَابِ اللهِ رَسُوْلِه فَاِنْ وَافَقَهُمَا فَاقْبَلُوْهُ وَمَا خَالَفَهُمَا فَرُدُّوْهُ وَاضْرِبُوْا بِقَوْلِيْ عَرَضَ الْحَائِطِ
৭. আমি যখন কোন কথা বলি তা পবিত্র কুরআন ও রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর হাদীসের সাথে যাচাই করো। যদি ঐ দুটির সাথে আমার কথা মিলে, তাহলে গ্রহণ করো। আর যদি বিরোধী হয়, তাহলে প্রত্যাখ্যান করো ও দেয়াল পৃষ্ঠে নিক্ষেপ করো। [হুজ্জাতুলস্নাহিল বালিগাহ, ১/১৬৩ পৃঃ ; মীযানে কুবরা, ১/৫৭ পৃঃ।]
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর নিকট কোন সমস্যার সমাধানের জন্য গেলে তার নিকট সে বিষয়ের হাদীস বিদ্যমান না থাকলে তিনি ফতওয়া দিয়ে বলতেন,
هٰذَا رَأْيُ النُّعْمَانِ بْنِ ثَابِتٍ يَعْنِيْ نَفْسَهُ وَهُوَ أَحْسَنُ مَا قَدَرْنَا عَلَيْهِ فَمَنْ جَاءَ بِأَحْسَنَ مَنْهُ فَهُوَ أَوْلٰى بَالصَّوَابِ
৮. এটা নু‘মান বিন সাবিতের সিদ্ধামত্ম। আমাদের ক্ষমতা অনুসারে এটাই সর্বোৎকৃষ্ট উক্তি। কিন্তু যদি কেউ এটা অপেক্ষা অধিক বলিষ্ঠতর সিদ্ধামেত্ম উপনীত হতে সক্ষম হয় তাহলে সে সিদ্ধামত্মই সঠিক। [হুজ্জাতুলস্নাহিল বালিগাহ, ১৬২ পৃঃ ; মীযানুল কুবরা, ১/৬০ পৃঃ।]
তিনি আরো বলতেন, যদি দলীল পেশ হয়ে যায় তাহলে তোমরা তদানুযায়ী কথা বলবে। [রাদ্দুল মুহতার, ১/৪৭ পৃঃ।]
اِيَّاكُمْ وَالْقَوْلَ فِيْ دِيْنِ اللهِ بِالرَّأْيِ وَعَلَيْكُمْ بِاتِّبَاعِ السُّنَّةِ فَمَنْ خَرَجَ عَنْهَا ضَلَّ
৯. সাবধান! তোমরা আলস্নাহর দ্বীনে নিজেদের অভিমত প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকো। সকল অবস্থাতেই সুন্নাহর অনুসরণ করো। যে ব্যক্তি সুন্নাহ থেকে বের হবে, সে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। [মীযানুল কুবরা, ১/৯ পৃঃ।]
وَاَصْحَابُ اَبِيْ حَنِيْفَةَ رَحِمَهُ اللهُ مُجْمِعُوْنَ عَلٰى اَنَّ مَذْهَبَ اَبِيْ حَنِيْفَةَ اَنَّ ضَعِيْفَ الْحَدِيْثِ عِنْدَهٗ أَوْلٰى مِنَ الْقِيَاسِ وَالرَّأْيِ
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর সকল অনুসারীরা এ ব্যাপারে একমত যে, যঈফ বা দুর্বল হাদীস ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর কাছে কিয়াস ও তাঁর অভিমতের চেয়েও অনেক উত্তম। [ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন- ১২/৮২ পৃঃ।]
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর এ মনোভাব ছাত্রদেরকে তার মতের অন্ধ অনুসরণ করা থেকে বিরত রেখেছে এবং নিজেদের পাশাপাশি অপরের মতামতকেও শ্রদ্ধা করার মানসিকতা সৃষ্টিতে সহায়তা করেছে।
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) তার নিজের ও তার ছাত্রদের মতামত অন্ধভাবে অনুসরণ করার বিরম্নদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তিনি ও তার ছাত্রবৃন্দ কোন্ মূলনীতি বা প্রমাণের আলোকে মত দিয়েছেন তা না জেনে তিনি সে মতের অন্ধ অনুসরণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
আবু হানীফা (রহ.) তার সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে সব সময়ই সজাগ ছিলেন। তাই তিনি তার ছাত্রবৃন্দ ও অন্যদের কাছে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট করেছেন যে, সঠিক ও ভুলের চূড়ামত্ম মানদন্ড হলো কুরআন ও সুন্নাহ। যা কিছু এর সাথে সংগতিপূর্ণ তা-ই সঠিক, আর যা কিছু সংগতিপূর্ণ নয় তা-ই ভুল।
ইমামগণের ছাত্ররা কী করতেন?
মহান ইমামগণ তাদের ছাত্রদেরকে অন্ধ অনুসরণের ব্যাপারে কাঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। এ কারণে তারা কোন বিষয়ে নতুন কোন হাদীস জানতে পারলে নিজ শিক্ষকের মতের বিপরীত সিদ্ধামত্ম গ্রহণ করতে কখনো দ্বিধা করতেন না। কারণ ইমামগণ তাদের এমনটি করারই নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর সাথে তারই ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ প্রায় এক তৃতীয়াংশ সিদ্ধামেত্মর ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। [আল-হাশিয়্যাহ, ১/৬২ পৃঃ।]
ইমাম ইবনে ইউসুফ আল বালাখি ছিলেন ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আল-হাসানের ছাত্র এবং আবু ইউসুফের ঘনিষ্ঠ অনুসারী। তিনি অনেক ক্ষেত্রেই আবু হানীফা ও তার এই দুই ছাত্রের সিদ্ধামত্ম থেকে ভিন্নমত দিয়েছেন। কারণ কিছু বিষয়ের প্রমাণ তাদের কাছে পৌঁছায়নি, কিন্তু পরবর্তীকালে ইবনে ইউসুফ আল বালাখি সেগুলো জানতে পেরেছিলেন। [রাসমুল মুফতী, ১/২৭ পৃঃ।]
একইভাবে আল মুযানি ও অন্যান্য ছাত্রবৃন্দ অনেক সিদ্ধামেত্মর ক্ষেত্রে তাদের শিক্ষক ইমাম শাফেয়ী (রহ.) এর সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
প্রধান চার ইমাম ও তাদের ছাত্রবৃন্দ সুন্নার পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের দাবি করেছেন এবং তাদের ব্যক্তিগত মতের অন্ধ অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। তাদের বক্তব্য একেবারেই স্পষ্ট এবং যুক্তিযুক্ত। এগুলোর অপব্যাখ্যা করার কোন অবকাশ নেই।
সুন্নার অনুসরণ করতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে কোন ইমামের মতের বিপরীত হয়ে যেতে পারে। এর দ্বারা কেউ ইমামের বিরম্নদ্ধে গিয়েছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। কেবল ইমামদের মতের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে নির্ভরযোগ্য হাদীসকে পরিত্যাগ করা হলে তা হবে স্বয়ং ইমামদের অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত। অধিকমত্মু নির্ভরযোগ্য হাদীস প্রত্যাখ্যান সরাসরি আলস্নাহ ও তার রাসূলের বিরম্নদ্ধাচরণের নামামত্মর। আলস্নাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা আমাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করম্নন আমীন!!
দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা ফরজ
ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, ইলম বা জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয। (ইবনে মাজাহ, হা/২২৪)
অথচ রাসূলুলস্নাহ ﷺ ব্যতীত অন্য যেকোন মানুষের কথা গৃহীত হতে পারে আবার পরিত্যাজ্যও হতে পারে। সুতরাং যদি কেউ এমন মতামত পেশ করে যা সহীহ হাদীস বিরোধী, তাহলে তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর বক্তব্যের উপর ইমামের মতকে প্রাধান্য দেয়া স্বয়ং ইমামদের অবস্থানেরই সম্পূর্ণ বিপরীত।
এ ব্যাপারে ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর কিছু কথা এখানে উলেস্নখ করা হলো। কথাগুলো হচ্ছে,
إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ
১. হাদীস যখন সহীহ হবে সেটাই হবে আমার মাযহাব। অর্থাৎ যখন কোন সহীহ হাদীস পাওয়া যাবে তখন সেটাই আমার মতামত বলে বিবেচিত হবে। [রাদ্দুল মুহতার, ১/৪৬২ পৃঃ; ফতওয়ায়ে শামী, ১/৪৬ পৃঃ।]
لَا يَحِلُّ لِاَحَدٍ اَنْ يَّأْخُذَ بِقَوْلِنَا مَا لَمْ يَعْلَمْ مِّنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ
২. আমরা কোথা থেকে কথাটি নিলাম এটা না জানা পর্যমত্ম কারো জন্য আমাদের কথা গ্রহণ করা বৈধ নয়। [বাহরুর রায়িক ৬/২৯৩ পৃঃ, মুকাদ্দমাতুল হেদায়াহ, ১/৯৩ পৃঃ।]
حَرَامٌ عَلٰى مَنْ لَّمْ يَعْرِفْ دَلِيْلِيْ اَنْ يُّفْتِيَ بِكَلَامِيْ
৩. যে আমার কথার প্রমাণ জানে না তার পক্ষে আমার কথার দ্বারা ফতওয়া প্রদান করা হারাম। [আস সালাফিয়্যুন ওয়াল আইম্মাহ, ১/২৯ পৃঃ; হুজ্জাতুলস্নাহিল বালিগাহ, হা/১/৩৩১।]
وَيْحَكَ يَا يَعْقُوْبُ ( هُوَ أَبُوْ يُوْسُفَ ) لَا تَكْتُبْ كُلَّ مَا تَسْمَعُ مَتٰى فَإِنِّيْ قَدْ أَرٰى الرَّأْيَ الْيَوْمَ وَأَتْرُكُهٗ غَدًا وَأَرٰى الرَّأْيَ غَدًا وَأَتْرُكُهٗ بَعْدَ غَدٍ
৪. হে হতভাগা ইয়াকুব! (আবু ইউসুফ) তুমি আমার থেকে যা শোন তা লেখো না, কেননা আমি আজ এক মত পোষণ করি আর আগামীকাল তা পরিহার করি। আবার আগামীকাল এক মত পোষণ করি আর পরশুদিন তা পরিত্যাগ করি। [সুনানে দারেমী, হা/১৯৭; তারীখে বাগদাদ ৭/৪০৩ পৃষ্ঠা।]
اِذَا قُلْتُ قَوْلًا يُخَالِفُ كِتَابَ اللهِ تَعَالٰى وَخَبَرَ الرَّسُوْلِ فَاتْرُكُوْا قَوْلِيْ
৫. যখন আমি এমন কথা বলি, যা আলস্নাহ তা‘আলার কিতাব ও রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর হাদীস বিরোধী তাহলে তোমরা আমার কথা পরিত্যাগ করবে। [ইকাযু হুমামি উলিল আবসার- ১/৬২।]
سُئِلَ اَبُوْ حَنِيْفَةَ رَحِمَهُ اللهُ تَعَالٰى اِذَا قُلْتَ قَوْلًا وَكِتَابُ اللهِ يُخَالِفُهٗ قَالَ اَتْرُكُوْا قَوْلِيْ بِكِتَابِ اللهِ فَقِيْلَ اِذَا كَانَ خَبْرُ رَسُوْلِ اللهِ يُخَالِفُهٗ قَالَ اُتْرُكُوْا قَوْلِيْ بِخَبْرِ رَسُوْلِ اللهِ فَقِيْلَ اِذَا كَانَ قَوْلُ الصَّحَابَةِ يُخَالِفُهٗ قَالَ اُتْرُكُوْا قَوْلِيْ بِقَوْلِ الصَّحَابَةِ
৬. ইমাম আবু হানীফা (রহ.) কে বলা হলো আপনি যখন কোন কথা বলেন, আর পবিত্র কুরআন তার বিরোধী হয় তাহলে কী করা হবে? তিনি উত্তরে বললেন, আপনারা কুরআনের মোকাবেলায় আমার কথা প্রত্যাখ্যান করম্নন। তারপর বলা হলো, আপনার কথা যদি হাদীসের বিরোধী হয়? তখন উত্তর দিলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর হাদীসের মোকাবেলায় আমার কথা পরিহার করম্নন। তারপর জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার কথা যদি সাহাবীগণের কথার বিরোধী হয়? তখন উত্তর দিলেন, সাহাবীগণের কথার মোকাবেলায় আমার কথা পরিত্যাগ করম্নন। [ঈকদুল জীদ, ৫৩ পৃঃ।]
اِذَا قُلْتُ قَوْلًا فَاَعرِضُوْا عَلٰى كِتَابِ اللهِ رَسُوْلِه فَاِنْ وَافَقَهُمَا فَاقْبَلُوْهُ وَمَا خَالَفَهُمَا فَرُدُّوْهُ وَاضْرِبُوْا بِقَوْلِيْ عَرَضَ الْحَائِطِ
৭. আমি যখন কোন কথা বলি তা পবিত্র কুরআন ও রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর হাদীসের সাথে যাচাই করো। যদি ঐ দুটির সাথে আমার কথা মিলে, তাহলে গ্রহণ করো। আর যদি বিরোধী হয়, তাহলে প্রত্যাখ্যান করো ও দেয়াল পৃষ্ঠে নিক্ষেপ করো। [হুজ্জাতুলস্নাহিল বালিগাহ, ১/১৬৩ পৃঃ ; মীযানে কুবরা, ১/৫৭ পৃঃ।]
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর নিকট কোন সমস্যার সমাধানের জন্য গেলে তার নিকট সে বিষয়ের হাদীস বিদ্যমান না থাকলে তিনি ফতওয়া দিয়ে বলতেন,
هٰذَا رَأْيُ النُّعْمَانِ بْنِ ثَابِتٍ يَعْنِيْ نَفْسَهُ وَهُوَ أَحْسَنُ مَا قَدَرْنَا عَلَيْهِ فَمَنْ جَاءَ بِأَحْسَنَ مَنْهُ فَهُوَ أَوْلٰى بَالصَّوَابِ
৮. এটা নু‘মান বিন সাবিতের সিদ্ধামত্ম। আমাদের ক্ষমতা অনুসারে এটাই সর্বোৎকৃষ্ট উক্তি। কিন্তু যদি কেউ এটা অপেক্ষা অধিক বলিষ্ঠতর সিদ্ধামেত্ম উপনীত হতে সক্ষম হয় তাহলে সে সিদ্ধামত্মই সঠিক। [হুজ্জাতুলস্নাহিল বালিগাহ, ১৬২ পৃঃ ; মীযানুল কুবরা, ১/৬০ পৃঃ।]
তিনি আরো বলতেন, যদি দলীল পেশ হয়ে যায় তাহলে তোমরা তদানুযায়ী কথা বলবে। [রাদ্দুল মুহতার, ১/৪৭ পৃঃ।]
اِيَّاكُمْ وَالْقَوْلَ فِيْ دِيْنِ اللهِ بِالرَّأْيِ وَعَلَيْكُمْ بِاتِّبَاعِ السُّنَّةِ فَمَنْ خَرَجَ عَنْهَا ضَلَّ
৯. সাবধান! তোমরা আলস্নাহর দ্বীনে নিজেদের অভিমত প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকো। সকল অবস্থাতেই সুন্নাহর অনুসরণ করো। যে ব্যক্তি সুন্নাহ থেকে বের হবে, সে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। [মীযানুল কুবরা, ১/৯ পৃঃ।]
وَاَصْحَابُ اَبِيْ حَنِيْفَةَ رَحِمَهُ اللهُ مُجْمِعُوْنَ عَلٰى اَنَّ مَذْهَبَ اَبِيْ حَنِيْفَةَ اَنَّ ضَعِيْفَ الْحَدِيْثِ عِنْدَهٗ أَوْلٰى مِنَ الْقِيَاسِ وَالرَّأْيِ
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর সকল অনুসারীরা এ ব্যাপারে একমত যে, যঈফ বা দুর্বল হাদীস ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর কাছে কিয়াস ও তাঁর অভিমতের চেয়েও অনেক উত্তম। [ই‘লামুল মুওয়াক্কিঈন- ১২/৮২ পৃঃ।]
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর এ মনোভাব ছাত্রদেরকে তার মতের অন্ধ অনুসরণ করা থেকে বিরত রেখেছে এবং নিজেদের পাশাপাশি অপরের মতামতকেও শ্রদ্ধা করার মানসিকতা সৃষ্টিতে সহায়তা করেছে।
ইমাম আবু হানীফা (রহ.) তার নিজের ও তার ছাত্রদের মতামত অন্ধভাবে অনুসরণ করার বিরম্নদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তিনি ও তার ছাত্রবৃন্দ কোন্ মূলনীতি বা প্রমাণের আলোকে মত দিয়েছেন তা না জেনে তিনি সে মতের অন্ধ অনুসরণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
আবু হানীফা (রহ.) তার সীমাবদ্ধতার ব্যাপারে সব সময়ই সজাগ ছিলেন। তাই তিনি তার ছাত্রবৃন্দ ও অন্যদের কাছে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট করেছেন যে, সঠিক ও ভুলের চূড়ামত্ম মানদন্ড হলো কুরআন ও সুন্নাহ। যা কিছু এর সাথে সংগতিপূর্ণ তা-ই সঠিক, আর যা কিছু সংগতিপূর্ণ নয় তা-ই ভুল।
ইমামগণের ছাত্ররা কী করতেন?
মহান ইমামগণ তাদের ছাত্রদেরকে অন্ধ অনুসরণের ব্যাপারে কাঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। এ কারণে তারা কোন বিষয়ে নতুন কোন হাদীস জানতে পারলে নিজ শিক্ষকের মতের বিপরীত সিদ্ধামত্ম গ্রহণ করতে কখনো দ্বিধা করতেন না। কারণ ইমামগণ তাদের এমনটি করারই নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর সাথে তারই ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ প্রায় এক তৃতীয়াংশ সিদ্ধামেত্মর ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। [আল-হাশিয়্যাহ, ১/৬২ পৃঃ।]
ইমাম ইবনে ইউসুফ আল বালাখি ছিলেন ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আল-হাসানের ছাত্র এবং আবু ইউসুফের ঘনিষ্ঠ অনুসারী। তিনি অনেক ক্ষেত্রেই আবু হানীফা ও তার এই দুই ছাত্রের সিদ্ধামত্ম থেকে ভিন্নমত দিয়েছেন। কারণ কিছু বিষয়ের প্রমাণ তাদের কাছে পৌঁছায়নি, কিন্তু পরবর্তীকালে ইবনে ইউসুফ আল বালাখি সেগুলো জানতে পেরেছিলেন। [রাসমুল মুফতী, ১/২৭ পৃঃ।]
একইভাবে আল মুযানি ও অন্যান্য ছাত্রবৃন্দ অনেক সিদ্ধামেত্মর ক্ষেত্রে তাদের শিক্ষক ইমাম শাফেয়ী (রহ.) এর সাথে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
প্রধান চার ইমাম ও তাদের ছাত্রবৃন্দ সুন্নার পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের দাবি করেছেন এবং তাদের ব্যক্তিগত মতের অন্ধ অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। তাদের বক্তব্য একেবারেই স্পষ্ট এবং যুক্তিযুক্ত। এগুলোর অপব্যাখ্যা করার কোন অবকাশ নেই।
সুন্নার অনুসরণ করতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে কোন ইমামের মতের বিপরীত হয়ে যেতে পারে। এর দ্বারা কেউ ইমামের বিরম্নদ্ধে গিয়েছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই। কেবল ইমামদের মতের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে নির্ভরযোগ্য হাদীসকে পরিত্যাগ করা হলে তা হবে স্বয়ং ইমামদের অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত। অধিকমত্মু নির্ভরযোগ্য হাদীস প্রত্যাখ্যান সরাসরি আলস্নাহ ও তার রাসূলের বিরম্নদ্ধাচরণের নামামত্মর। আলস্নাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা আমাদের সকলকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করম্নন আমীন!!
দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা ফরজ
ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ ﷺ বলেছেন, ইলম বা জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয। (ইবনে মাজাহ, হা/২২৪)
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন